ধ্যানাসন-সমাসীন ধৃতগ্রন্থ প্রতীকপুরুষ জলাশয়ধারে যেন মহাকাল-প্রহরীপ্রতিম, বকরূপী ধর্মের মতোই দিলেন সতর্কীকরণ – ‘জলে নামবার আগে দাও আমার প্রশ্নের উত্তর!’ কিন্তু তাতে হবে হুঁশ – বাঙালি বিপ্লবী নয় সে-রকম ধর্মের পুত্তর! সুতরাং সেই মহাভারতীয় ধ্রুপদী মরণ এলো তারও, যদিও তা অন্য ঢঙে – সে মেনেছে অন্য যে শাস্তর, জবাব সে দেয়নাকো, তূণে তার ঘৃণা যে অসীম – সে-আয়ুধে মাথা কাটে ধ্যানমূর্তির, ভাবে নিজে নিরঙ্কুশ, পায়না শুনতে স্বর – ভেসে আসে ঋজু, সুমহিম :--- ‘পেয়েছি উত্তর আমার, ঠিক আছে কার্য ও কারণ!’
গোলদীঘি-পারে চলে হট্টগোল তারপরে বড়ো – অবিশ্রান্ত সভা বসে –প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, ধিক্কার ;--- বাঙলার বিবেক নাকি আক্রান্ত –এইমতো কত, অপুর্ব সে প্রদর্শনী, সুবিচিত্র, চীৎকৃত ব্যাপার! শতাব্দীর প্রহরী সে-প্রতিজ্ঞাপুরুষ ধ্যানলীন বসে বসে দেখে যান – ছিন্নমস্ত মূর্তি সে তো জড়, মালা-মাইক- মন্ত্রীর তামাশাও চলে অবিরত – অতঃপর করা হয় পুনরায় মুন্ড-সংস্থাপন ; যদিও প্রহরী ছিল সতর্কিত, উঁচিয়ে সঙ্গীন! শোনা যায়নাকো শুধু সেদিন সে মহাডামাডোলে সেই পুরুষের স্বর, আশ্রয় যার শিলাসন :--- “সাত-পুরু চেঁছে ফেলে এ-মাটিতে যদি কিছু ফলে!” . *************************