কবি ঘনরাম এর ধর্মমঙ্গল কাব্য
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
আত্মপরিচয়
ঘনরাম কবিরত্ন
১৯৯৯ সালে প্রকাশিত, সুকুমার সেন সম্পাদিত  “বাংলা কবিতা সমুচ্চয়” (প্রথম খণ্ড)
সংকলন থেকে।

মাতা যায় মহাদেবী সতী সাধ্বী সীতা
কবি কান্ত শান্ত দান্ত গৌরীকান্ত পিতা।
প্রভু যার কৌশল্যানন্দন কৃপাবান্
ঘনরাম কবিরত্ন মধুরস গান॥ . . .

শ্রীরাম দাসের দাস দ্বিজ ঘনরাম
কবিরত্ন ভণে প্রভু পুর মনসকাম।
শ্রীরাম পূর্বকে প্রভু গোপাল গোবিন্দে
তথাপি শ্রীরামকৃষ্ণ রাখিবে আনন্দে।
জগৎ জানিল রায় ধার্মিক সুধীর
মহারাজা পূণ্যবন্ত নিষ্পাপ শরীর।
জগৎ রায় পূণ্যবন্ত পূণ্যের প্রভায়
মহারাজ চক্রবর্তী কীর্তিচন্দ্র রায়।
আশীর্ব্বাদ করি তায় বসিয়া বিরামে
কইয়ড় পরগণা বাটি কৃষ্ণপুর গ্রামে।
শ্রীরামের পাদপদ্মে প্রণতি প্রার্থনা
নাথ নিবারিও মোর যমের যন্ত্রণা।
রাজার মঙ্গল চিন্তি দেশের কল্যাণ
দ্বিজ ঘন্রাম কবিরত্ন রস গান॥

সঙ্গীত আরম্ভকাল নাইক স্মরণ
শুন তবে যে কালে হইল সমাপন।
শক লিখে রামগুণ রস সুধাকর
মার্গকাদ্য আংশে হংস ভার্গব বাসর।
সুলক্ষ বলক্ষপক্ষ তৃতীয়াখ্যা তিমি
যাম সংখ্য দিনে সাঙ্গ সঙ্গীতের পুথি॥

.          ************************          
.                                                                                   
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
ঘনরাম চক্রবর্তী
ধর্ম্মমঙ্গল কাব্য থেকে
( মাধুকরী কাব্য সংকলন থেকে )

করিয়া প্রণতি স্তুতি                বন্দি মাতা সরস্বতী
বিশ্বপতি বিষ্ণুর দুর্লভা।
ধবর-কমলাসনা                     ধৌত-ধুতি-পরিধানা
কুন্দকান্তি কলেবর শোভা॥
গলে দোলে মণিহার                 কি দিব তুলনা তার
অংশু অন্ধকার করে দূর।
যেখানে যে শোভা পায়                রত্ন আভরণ গায়
চিত্তচোর চরণে নুপূর॥
বৈণিক পুস্তক ন্যস্ত                    মণ্ডিত মায়ের হস্ত
অঞ্জনে রঞ্জিত সুলোচনা।
কৃতাঞ্জলি করি কর                   বন্দে যাঁরে নিরন্তর
ব্রহ্মা হরি হর হর্ষমনা॥
তোমার চরণ দেবী                   আদরে একান্ত সেবি
মহাকবি ব্যাস আদি যত।
মোক্ষদ পাতক-অন্ত                   প্রকাশিলা নানা গ্রন্থ
বেদাঙ্গ পুরাণ ভক্তিমত॥
দেবতা গন্ধর্ব নাগ                      আদি যত মহাভাগ
ছয় রাগ ছত্রিশ রাগিণী।
গৃহী যতি বাণপ্রস্থ                      তোমার চরণ-ন্যস্ত
শ্রুতি মন্ত্রে পূজে পুটপাণি॥
অখিলে অতুল্য ভাগ্য                 জন্মিয়া জীবন শ্লাঘ্য
সেই ধন্য সংসার ভিতরে।
করতলে তার স্বর্গ                       অনায়াসে চতুর্বর্গ
তুমি কৃপা কর যেই নরে॥
তোমার অকৃপা যায়                   মূর্থমতি বলি তায়
সভায় সে শোভা নাহি পায়।
নিবাসে নাহিক সুখ                     কুকর্মে পাষাণ বুক
মান অপমান সম তায়॥
হেন মূর্খ মিথ্যাজ্ঞানী              আমি কি তোমারে জানি
পতিত-পাবনী নাম শুনি।
আসরে আসিয়া ঊর                   দাসের আশায় পূর
মোর কণ্ঠে বৈস গো জননী॥
তাল মান গান যন্ত্র                      না জানি লিখন মন্ত্র
আপনি সু-যন্ত্র করি গাও।
ঘনরাম নিবেদ                           ধরি তব শ্রীচরণ
করুণ নয়নকোণে চাও॥

.          ************************          
.                                                                                              
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
সত্যের মহিমা
ঘনরাম চক্রবর্তী
ধর্ম্মমঙ্গল কাব্য থেকে
( মাধুকরী কাব্য সংকলন থেকে )

কতেক কাতর উক্তি কহেন কর্পুর।
কালি সত্য করে কেন আজি কর দূর॥
পশ্চিমে উদিতে যদি হয় দিবাকর।
ফুটে যদি পদ্মফুল পর্বত উপর॥
অগ্নিও শীতল হয় প্রচলে পর্বত।
তথাপি সজ্জন বাক্য নহে অন্য মত॥
হরিশচন্দ্র মহারাজ পুরাণে প্রমাণ।
সত্য পালি সংসারে দাঁড়াতে নাহি স্থান॥
সপ্তদ্বীপা দান দিল দক্ষিণার তরে।
বনিতা বালক বন্দী ব্রাহ্মণের ঘরে॥
আপনি হইলা রাজা ব্রাহ্মণের দাস।
অঙ্গীকার-বচন-লঙ্ঘন ভাবি ত্রাস॥
মহারাজ দশরথ সত্যের কারণে।
ত্রিলোকের নাথ রামে পাঠাইল বনে॥
বিভীষণ সুগ্রীবের রাজত্ব সত্য পালি।
কোথা গেল দুর্জয় বানররাজ বালী॥
বলি যে পাতালে গেল প্রমাণ পুরাণ।
হেন সত্য করি দাদা কেন কর আন॥

.          ************************          
.                                                                                              
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর