রামীর অন্যান্য পদ -                                                                      পাতার উপরে . . .   
চণ্ডীদাসের মৃত্যু ছাড়া রামীর তিনটি পদ, আউল মনোহর দাস সংকলিত ১৫০০০ পদবিশিষ্ট সংকলন
"পদসমুদ্র" গ্রন্থে ( গ্রন্থটির অস্তিত্ব ও বিশালতা নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন! ) পাওয়া
গিয়েছে। পদটি ১৮৯৬সালে প্রকাশিত রমণীমোহন মল্লিকের সম্পাদনায় “চণ্ডীদাস” গ্রন্থে সন্নিবেশ করা হয়।
পরে ১৯৩০ সালে, যোগেন্দ্রনাথ গুপ্তের “বঙ্গের মহিলা কবি” গ্রন্থেও তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আমরাও মিলনসাগরে মনে করছি যে এই ঘটনাটি যখন জনশ্রুতিতে ছিলই, রামীর পদ আবিষ্কারের পর তা
সত্য বলে ধরে নেওয়া অন্যায় হবে না। সেই মত আমরা রামীকে বাংলারভাষার প্রথম মহিলা কবি হিসেবে
এখানে প্রকাশিত করলাম।

আমরা
মিলনসাগরে কবি রামী রজকিনী বা রামমণির পদাবলী তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে
পারলে এই প্রচেষ্টার সার্থকতা।


কবি রামীর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন


উত্স :
দীনেশচন্দ্র সেন, বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (ইংরেজ প্রভাবের পূর্ব্ব পর্য্যন্ত), ১৮৯৬।
যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, বঙ্গের মহিলা কবি, ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ (১৯৩০ খৃষ্টাব্দ)।
  

আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ২০.৯.২০১১
পাতার পরিবর্ধিত সংস্করণ - ৩০.৬.২০১৮
...
রামী-চণ্ডীদাসের প্রেম     
চণ্ডীদাসের মৃত্যু নিয়ে রামীর পদ    
রামীর অন্যান্য পদ    
বৈষ্ণব পদাবলী নিয়ে মিলনসাগরের ভূমিকা     
বৈষ্ণব পদাবলীর "রাগ"      
কৃতজ্ঞতা স্বীকার ও উত্স গ্রন্থাবলী     
মিলনসাগরে কেন বৈষ্ণব পদাবলী ?     
*

এই পাতার উপরে . . .
*

এই পাতার উপরে . . .
*

এই পাতার উপরে . . .
*

এই পাতার উপরে . . .
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন গ্রন্থের সম্পাদক এবং পুঁথির আবিষ্কারক বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্ বল্লভ মনে করতেন যে এঁরা
একই ব্যক্তি।
ছোটবেলা থেকেই সেই মন্দিরের সেবিকা ছিলেন রামমণী বা রামী। তিনি জাতিতে ছিলেন
রজক বা ধোপা। তাই বিভিন্ন স্থানে রামী কে রজকিনী রামী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
*
রামী-চণ্ডীদাসের প্রেম -                                                                    পাতার উপরে . . .   
শৈশবে রামী আহার-অন্বেষণে ঘুরে বেড়াতেন দেখে গ্রামের মানুষ তাঁকে বাঁশুলী দেবীর মন্দিরের সেবিকা
নিযুক্ত করে দিয়েছিলেন। তিনিও কায়মনোবাক্যে দেবীর সেবায় নিজেকে উত্সর্গ করে দিলেন।

কিন্তু ক্রমে চণ্ডীদাসের সাথে তাঁর কামগন্ধহীন প্রেমের
(platonic love) সূচনা হয়। চণ্ডীদাসের পদ থেকেই তা
বোঝা যায় যে তিনি রামীকে কখনও মাতা বা কখনও গুরু বলে সম্বোধন করেছিলেন।

চণ্ডীদাস লিখেছিলেন ....
.        শুন রজকিনী রামী
ও-দুটি-চরণ,                শীতল জানিয়া
.        শরণ লইনু আমি।
এক নিবেদন,                করি পুনঃ পুনঃ
.        শুন রজকিনী রামী।
*
চণ্ডীদাসের মৃত্যু নিয়ে রামীর পদ -                                                   পাতার উপরে . . .   
দীনেশচন্দ্র সেন তাঁর “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ২১৭) জানিয়েছেন যে চণ্ডীদাসের মৃত্যু সম্বন্ধে রামীর
রচিত এবং ভণিতাযুক্ত একটি গীতিকা আবিষ্কার করেন, বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্ বল্লভ (১৮৬৫- ১৯৫২)।  

“চণ্ডীদাসের মৃত্যু” পদটি ১৮৯৬ সালে প্রকাশিত, দীনেশচন্দ্র সেনের “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (ইংরেজ প্রভাবের
পূর্ব্ব পর্য্যন্ত)”, ২১৭-পৃষ্ঠায় দেওয়া রয়েছে। ২২০-পৃষ্ঠায় এই পদটির প্রাপ্তি সম্বন্ধে দীনেশচন্দ্র লিখেছেন,  
একখানি পাতা। উপকরণ--তুলোট কাগজ। আকার, ১৫ ১/৪ x ৫ ইঞ্চি। প্রতি পৃষ্ঠায় ১১ পংক্তি, অক্ষর প্রাচীন।
সাহিত্য-পরিষৎ পুস্তকাগারে রক্ষি
ত।”

জানা যায় যে চণ্ডীদাস, গৌড়ের নবাবের রাজসভায় গান গাইবার আমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে যান। তাঁর গান শুনে
নবাবের বেগম, চণ্ডীদাসের অনুরাগিনী হয়ে পড়েন। এ কথা তিনি নির্ভীকভাবে নবাবের সামনে স্বীকারও
করেন। এরপর ক্রুদ্ধ নবাবের আদেশে চণ্ডীদাসকে, তাঁর অত্মীয় পরিজনদের সমক্ষে হাতির পিঠে বেঁধে
কষাঘাত করা হয়, যার ফলে চণ্ডীদাসের মৃত্যু হয়। এই দৃশ্য রামী ও বেগম দুজনকেই প্রত্যক্ষ করতে হয়।
বেগম এই দৃশ্য দেখে মূর্চ্ছিত হন এবং তাঁর জ্ঞান আর না ফিরলে, তিনি মারা যান। আরো জানা যায় যে
বেগমের প্রতি চণ্ডীদাসও আকৃষ্ট হয়েছিলেন।

দীনেশচন্দ্র সেন আরও লিখেছেন, “
গৌড়ের এই সম্রাট কে? আমার মনে হয়, রাজা গণেশের পুত্র যদু
(জালালুদ্দিন)ই চণ্ডীদাস হন্তার কুপ্রতিষ্ঠার দাবী করিতেছেন। তিনি স্বধর্মত্যাগী ও স্বজাতি দ্রোহী। বিশেষ
তাঁহার অন্দরমহলে অনেক হিন্দু বেগম ছিলেন, তাঁহারা যদিওবা স্বামীর সঙ্গে ধর্ম্মত্যাগ করিয়া থাকেন,
রাধাকৃষ্ণের লীলা বিষয়ক সংগীতের অনুরাগিণী হওয়া তাঁহাদের মধ্যে কোন একটিরই হওয়া স্বাভাবিক।
অন্ততঃ খাঁটি মুসলমান রমণী হইতে তাঁহাদেরই হিন্দুগানের সমজদার হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।
জালালুদ্দিনের রাজত্বকালও চণ্ডীদাসের সমসাময়িক
।”

“বঙ্গের মহিলা কবি” গ্রন্থের রচয়িতা যোগেনেদ্রনাথ গুপ্ত লিখেছেন যে “....একটি দেশব্যাপী জনশ্রুতি যখন
দুইশত বত্সরের প্রাচীন হস্তলিপি সম্বলিত প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হইতেছে, তখন তাহা আমরা
ঐতিহাসিক সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে বাধা দেখিতেছি না।”
*
কবি রামী রজকিনী বা রামমণী -
বংশ পরম্পরায় পিতার প্রয়াণের পরে,
বর্ধমান জেলার নান্নুর-এর বাঁশুলী দেবীর
মন্দিরের পুজারী নিযুক্ত হয়েছিলেন সুগায়ক
ও কবি চণ্ডীদাস। কবি চণ্ডীদাস ও চৈতন্য-
পূর্ব বড়ু চণ্ডীদাস একই ব্যক্তি কি না তা
নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।