রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য
কবি রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গলের পরিচিতির পাতায় . . .
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি
ঘরে ছিল পাটরাণী বাহির হইল |
গাজন সমুখে আসি দরশন দিল ||
রাজকন্যা নূতনযৌবনা বিনোদিনী |
অঙ্গের বরণ আভা কাঁচ-সোনা জিনি ||
সমুখে মানিক রাখি দন্ডবৎ করে |
গলায় কাপড় দিয়া রহিলেন দূরে ||
ধর্ম্মের গাজনে জয় জয় শব্দ হৈল |
পুত্রবতী বলি তারে আশীর্ব্বাদ দিল ||
সবিনয় বচনে সহজে জোড়-পাণি |
বড় মনুষ্যের বেটী অন্তরে বাখানি ||
শুন অহে পন্ডিত বচন হয় নয় |
কাহার করহ পূজা দিয়া জয় জয় ||
এমন পূজিলে তার কোন বর পায় |
কহিবে সকল কথা কহিল তোমায় ||
কতদিনে মানুষ দেবতা এই কি |
অভাগিনী রঞ্জাবতী বেণুরায়ের ঝি ||
রাজার সমাজে ভাই দিল বন্ধ্যা বাণী |
মনে  [ অভিলাষ বড় হব পুত্রখানি ]  ||
উপদেশ সকল কহিয়া দিবে তুমি |
পুত্র-হেতু নিয়ম করিতে চাই আমি ||
এত শুনি রামাই পন্ডিত আনন্দিত |
বলিতে লাগিল কিছু পূজার বিহিত ||
রামাঞী পন্ডিত বলে শুন রঞ্জাবতী |
ধর্ম্ম সেবা কর তুমি হবে পুত্রবতী ||
উপদেশ বলি আমি তাহে দেয় মন |
মন দড় হৈলে হয় ধর্ম্মের পূজন ||
একমনে পূজা দিলে হয়্যা যায় পার |
দু-মন করিলে রাণী হয় মহামার ||
শাপের ঠাকুর ধর্ম্ম ধন্ধ নাই দেই |
অনেক তপের ফলে উদ্ধারিয়ে নেই ||
এক মনে সেবিলে অবশ্য পাই বর |
ধনে বংশে বাড়ে তার নাই ছাড়ে পর ||

এই দেখ পুরদত্ত বারুই ছায়াল |
ধর্ম্মপূজা-হেতু বংশে বাড়িব তত্কাল ||
আদ্যপূজা শোন আগে জাজপুর স্থান |
নীলপুরে সোল বাতি গাইল পুরাণ ||
বল্লুকা নদীর তীরে মদনা মহিষী |
আট দন্ড কৈল পূজা পাঁচ দন্ড নিশি ||
পাটে বসে পাটরাণী পুত্রবর পায়্যা |
সন্ন্যাসী ভকিতা নাচে জয় জয় দিয়া ||
লুইচন্দ্র অবতার জানে সর্ব্বজন |
ধর্ম্মপূজা কর রাণী হবেক নন্দন ||
এত উপদেশ যদি রামাই কহিল |
লোটাইয়া রঞ্জাবতী চরণে পড়িল ||
কহ কহ উপদেশ পন্ডিত গোসাঞী |
তোমার সমান গুরু আর কোথা নাঞী ||
অনাদ্যের মায়া কহনে নাঞী যায় |
শ্রীধর্ম্মমঙ্গল দ্বিজ রূপরাম গায় ||

রামাঞী পন্ডিত কহে উপদেশ-বাণী |
আমার বচন শোন রঞ্জাবতী রাণী ||
স্নান করি রঞ্জাবতী আস্য বিদ্যমান |
শুভক্ষণে তোর কানে মন্ত্র দিব দান ||
অদীক্ষিত জনে দয়া না করে দেবতা |
মন্ত্র উপদেশ দিলে কয়্যে দিব কথা ||
শঙ্খ হাতে রামাঞী পন্ডিত যদি বলে |
স্নান করে রঞ্জাবতী তোলা গঙ্গাজলে ||
পরিধান বসন রাণী পরিল তখন |
মহাবিদ্যা পন্ডিত তবে করাঅ গ্রহণ ||
মহাবিদ্যা রঞ্জাবতী শুনিল বর্ণ দশ |
দিল বীজ ধর্ম্মের আগম পূজা রস ||
তিন বার বাম কানে করিল জপন |
রামাই পন্ডিত বলে হবেক নন্দন ||
[ জপিবে ] অঙ্গুলে বীজ পুরাণ পরব ( ? )  |
অঙ্গুলে রাখিএ তবে দেখাইল জপ ||
এইরূপে মহামন্ত্র করহ স্মরণ |
তবে পুত্রবর দিব প্রভু নিরঞ্জন ||
আর কথা বলি ঝিয়ে অবধান কর |
পূজা কর গিয়া ধর্ম্ম চাঁপাই ভিতর ||
গাজন সাজিএ চল চাঁপাই সেবিতে |
সেইখানে ঠাকুর পূজিবে নাটগীতে ||
গাজন দেহারা দিবে সহরের মাঝে |
চারি সন্ধ্যা তথা যেন জোড়া ঢাক বাজে ||
ধ্বজা দিবে সুন্দর পতাকা চারি কোণে |
উত্সর্গিয়া ঘর দিবে পূর্ণমাসীর দিনে ||
চারিদিগে গাজন করিবে আরম্ভন |
পাঁচ দিনে যাবে নদী চাঁপাই ভুবন ||

.   


                                           
রঞ্জার বিবাহ পালার পরের পৃষ্ঠায় . . .  
.                                                                 
এই পাতার উপরে . . .     


মিলনসাগর
রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল
||  রঞ্জার বিবাহ পালা  ||
পৃষ্ঠা                 
রঞ্জার বিবাহ পালার আগের পৃষ্ঠায় . . .
১    বন্দনা  পালা     
.          
গনেশ বন্দনা    
.          
ধর্ম্ম বন্দনা    
.          
ঠাকুরাণী বন্দনা     
.          
চৈতন্য বন্দনা    
.          
সরস্বতী বন্দনা     
.          
বিপ্র বন্দনা      
.          
দিগ্ বন্দনা    
২   
আত্মকাহিনী    
৩   
স্থাপনা পালা    
৪    
আদ্য ঢেকুর পালা    
.           
গজেন্দ্র মোক্ষণ    
৫    
রঞ্জার বিবাহপালা     
৬   
লুইচন্দ্র পালা     
৭   
শালেভর পালা    
৮   
লাউসেনের জন্মপালা      
.            
পরিশিষ্ট, জন্মপালা      
৯   
লাউসেন চুরিপালা    
১০
আখড়া পালা     
১১
ফলানির্মাণ পালা     
১২
মল্লবধ পালা      
১৩
বাঘজন্মপালা     
১৪
বাঘবধ পালা      
১৫
জামতি পালা      
১৬
গোলাহাটপালা      
১৭
হস্তিবধপালা      
১৮
কাঙুরযাত্রাপালা      
১৯
কলিঙ্গাবিভাপালা     
২০
লৌহগন্ডারপালা       
২১
কানড়াবিভাপালা      
২২
অনুমৃতাপালা     
২৩
ইছাইবধপালা     
২৪
অঘোরবাদলপালা     
২৫
জাগরণপালা     
২৬
স্বর্গারোহণপালা