ভিখারীর ভীরুতারে বক্ষোমাঝে
দাক্ষিণ্যের দক্ষিণারে কুড়ায়ে কুড়
স্বপ্নময়ী উড়ে চল শ্লথবল্গ তব ম
করুণা-কৃপণা তুমি, নাহি চাও পি
সেদিন গোধূলি-লগ্নে ফুটেছিল আ
সে-তারার মায়াস্পর্শ তব মনে ফু
সহসা কহিল ধীরে,----‘যাবেন না,
সে তব সুরের সুরা পান করি হ
জানি সখি, এও তব ক্ষণিকের খে
তবু এ তোমারি গড়া বাসনার ল
রঙের বাহার নিয়ে আকাশেতে
ধরিতে পারি না তবু তারি পিছে
সুগভীর প্রেম নহে, নহে সখি নিবি


. রয়েছে ভাষা |
. ৫
ঠিক দুদিন পরেই বাসা বদলে এদিকে
. তুমি আসবে চলে ;
আর তাহারো দুদিন পরে ধরবে পিছু ;
ওহে বাড়িয়ে বলি নি আমি তেমন কিছু,-----
. ছেলে তোমার মত
. দেখে এলাম কত !
শেষে নাম ও ঠিকানা সব যোগাড় হলে
প্রেম- পত্র গোপনে কত লেখাও চলে,
এর একটি কথাও আমি বানিয়ে বলি নি,
. বলো লাভ কি বলে !
ঠিক দুদিন পরেই বাসা বদল এদিকে
. তুমি আসবে চলে |
. ৬
সেই মেয়েটি বিকেলে যায় আমার ঘরের
. ঠিক সামনে দিয়ে ;
খুব ক্লান্ত তখন তার মুখটি দেখায়
আজ ক্লান্ত যেমন আমি কবিতা লেখায়,
. ------আজ কলেজ ছুটি,
. থাক্, এবার উঠি ;------
প্রেমে পড়তে আমার বাধা ছিল না কিছু,
শুধু তোমরা সকলে তার ধরলে পিছু ;
শেষে আমার ভাগে যে এক কণাও পড়ে না
. দেখি বাঁটতে গিয়ে |
আজ কলেজ ছুটি আর দাঁড়িয়ে কি লাভ,
সে তো যাবে না এখন আর সামনে দিয়ে |
. **************
. সূচিতে...
মিলনসাগর
. রূপে পুলকিত তনু, মহীয়সী, লীলায়িত লাস্যে ;
. কখনো করুণাময়ী, কখনো কৃপণা ঔদাস্যে,
মৌন মধুর হাসি, হাসিতে ঝরিছে সদা অর্থ ;
. সে হাসি কখনো টানে, কখনো ঠেলিয়া ফেলে সুদূরে |
সে যেন কাব্য এক, প্রতিটি শ্লোকের হয় দ্ব্যর্থ,
. কভু প্রাঞ্জল কভু দুর্বোধ ছলনাই শুধু রে !
. ৩
বৌদির ছোট বোন আলাপ চালায় ভাব-বাচ্যে,
. অল্পই কথা বলে, না-বলে-যা আভাসে তা পূর্ণ ;
চারিদিকে লোকজন, [ এদিকেই সকলে তাকাচ্ছে ! ]
. শঙ্কা হৃদয়ে জাগে কখন স্বপন হয় চূর্ণ !
. প্রাণের কথাটি তাই বলিতে মরিতে হয় সরমে ;
. কেবল না-বলা বাণী জানা আছে মরমে ও মরমে |
আঁখির মুখর চাওয়া, নববধূ-সম কভু লজ্জা,
. কখনো ব্যগ্র ভাব, কখনো অল্পেতেই ক্ষুব্ধ ;
কবু আগোছালা বেশ, কখনো বর্ম-সম সজ্জা ;
. পরশে শিহর কভু, কভু সে স্বপনে করে লুব্ধ |
. ৪
বৌদির ছোট বোন, নামহীন মধু সম্বন্ধ,
. নহে নিকটের বধূ, নহে সুদূরের অভিসারিণী ;
সে যেন বাতাসে-ভাসা হাস্নুহানার মৃদু গন্ধ ;
. ধরা -ছোঁয়া যায় না কো, অথচ সুরভি মনোহারিণী !
. কখনো কাজের ছলে দেখা দিয়ে যায় দূরে সরিয়া,
. কখনো ছলনা ক’রে বিনা ডোরে কাছে রাখে ধরিয়া ;
আশে-পাশে আছে তবু ধরা নাহি যায় কভু বক্ষে,
. কখনো চিনিতে পারি, কখনো পারি না তারে চিনতে,
নেপথ্য আনাগোনা, যোগাযোগ লঘু প্রীতি-সখ্যে ;
. মগ্নচেতন-লোকে ফুটে আছে সুকুমার বৃন্তে |
. ৫
বৌদির ছোট বোন, তার সাথে প্রেম করা চলতো,
. স্বপ্ন সফল হতো, প্রিয়া হতো, ---- ছিল সম্ভাবনা,
‘হতো যা হয় না কেন !’ ---দাবি আর আছে বাহুবল তো ;
. তবে আর কেন তারে একান্ত বধূ করে পাব না ?
. স্বপ্ন ও শিহরণ, আশা আর দুরাশার দ্বন্দ্বে
. নিবেদন করিলাম সব কথা প্রণয়-প্রবন্ধে ;
ছিঁড়িল স্বপ্ন-জাল, হেরিনু চক্ষু দুটি রগড়ে,
. প্রকাশ্য দিবালোকে জ্যোত্স্না মোটেই শোভা পায় না ;
কহিল লজ্জানতা,----- ‘নিবেদিতা হয়ে আছি অগ্রে-----
. ------ আপনাকে ভালো লাগে, ----- ভালবাসা দুজনকে যায় না’ |
. **************
. সূচিতে...
মিলনসাগর
চোখে ঘুম নেই ?--- নয়নে কি যেন রুপালী আলোর আবেশ মাখা !
আঁধার-বিহারী প্রাণ বুঝি আজ আলো-জাগরণ বাসিছে ভালো?
. নিশীথ আকাশ মুখর হয়েছে পূর্ণিমাতে ------
. মাতাল মলয় হল গীতময় সুরভি-বনে,
. কোন্ আনন্দে ধরা অনন্ত-নৃত্যে মাতে---
. মুক্তি-পাগল সে নেশা লেগেছে তোমারো মনে?
দিনের আলোয় জাগে না যে-কথা, আঁধারে যে-কথা ঘুমায়ে রয়,
জ্যোত্স্না-নিশীথে তারি গান শুনি ভুবন-ভুলানো তারার গানে ;
তাহারি গমকে প্রাণের গোপন কামনা হয়েছে ছন্দোময়,
সুদূরবাসিনী, সেই সুর বুঝি পরশ করেছে তোমারো প্রাণে?
পূর্ণিমা-নিশি প্রেম-দেবতার পূর্ণ-প্রেমের মিলন-সাধ-----
আলোছায়াময় আমার জীবনে অক্ষয় হোক জ্যোত্স্না-আলো,
অক্ষয় হোক এই মুহূর্ত যখন প্রেমের নেই প্রমাদ,
অক্ষয় হোক এ-মন আমার যে-মন তোমায় বাসিছে ভালো |
. কাল নিশি-ভোরে জ্যোত্স্নার আলো মিলায়ে যাবে,
. আকাশ-পরীরা দিনের আলোয় কভু কি জাগে ?
. এমন স্বপন মাটির জীবন কাল কি পাবে ?
. ----- অক্ষয় করে রেখে যাব আমি এ অনুরাগে |
কুহেলি-মাখানো স্তিমিত আলোয় এস গো মরণ গোপনচারী,
এই মুহূর্ত শাশ্বত কতরে নাও তুলে নাও মৃত্যু-পার ;
শাশ্বত হোক পূর্ণ এ প্রেম, শাশ্বত হোক স্বপন তারি,
শাশ্বত হোক প্রেমিক প্রাণের জ্যোত্স্না-আলোর মিলন-হার |
. **************
. সূচিতে...
মিলনসাগর
কৈশোর-সরসী-নীরে ফোটে রাঙা চিত্ত-শতদল---
তাহাও চাহিনা সখি, প্রিয়তমে দিয়ো সে-কমল ;
আমার কামনা শুধু প্রেমের যা লঘু অপচয় |
পূর্ণপাত্রে লোভ নাই, শুধু যাহা উথলিয়া পড়ে
তাহারি মদিরালুব্ধ চিত্ত মোর সুখ-স্বপ্ন গড়ে |
. **************
. সূচিতে...
মিলনসাগর
তুমি আছ মিশে তায় রূপসী অসূর্যস্পর্শা---
অন্ধের অন্তরে আলোকের মঞ্জীর-মন্দ্রা |
ঘন নীল রাত্রিতে হেরি নীল শাড়ি চক্ষে,
তুমি এস মিশে তায় তৃষাতুর বিরহীর বক্ষে |
. **************
. সূচিতে...
মিলনসাগর
. ছন্দ নামিবে বুঝি এখনি!
ভারতীরে কহিলাম,----সত্বর ধরা দাও,
. সার্থক করি নব সৃষ্টি |
শুনিনু আকাশ-বাণী, ----‘মুখরতা ভুলে যাও,
. চোখে চোখে হোক শুভদ়ৃষ্টি |
. **************
. সূচিতে...
মিলনসাগর
. ১
রোজ বিকেল বেলা এই
. ঠিক সামনে দিয়ে,
ওই ঘড়ির কাঁটায় সওয়া
এই রাস্তা বেয়ে ধীরে
. তুমি চিনবে ওকে
. তার করুণ চোখে,
খুব ক্লান্ত বিষন্নতা
খান তিনেক পুথিও আর
যাবে আপন মনেই তার
. ছাতা বাঁ হাতে
রোজ বিকেল বেলা এই
কলেজ-গার্ল
"কলেজবয়" ছদ্মনামে লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ব্ল্যাকবোর্ড" থেকে
জগদীশ ভট্টাচার্য
. ঠিক সামনে দিয়ে |
. ২
মানে কলেজ-ফেরৎ যায় একটি তরুণী
. তার বাসার পানে,
তার বয়েস, যেমন হয়---- উনিশ-কুড়ি
তবু ওদের মতন হয়ে যায় নি বুড়ী ;
. তাকে দেখলে পরে
. মনে খট্ কা ধরে-----
অত অল্প বয়সে মেয়ে পড়ছে বি-এ ?
কেন তোমাকে ঠকাবো বাজে ধাপ্পা দিয়ে !
সে যে আই,এ-তে প্রথম হোলো সে কথা জান না ?
. সে ত সবাই জানে ;
রোজ কলেজ-ফেরৎ যায় সেই যে মেয়েটি
. তার বাসার পানে |
. ৩
তার গায়ের রঙের মত অমন দেখো নি
. আর, বলতে পারি |
ঠিক মেঘের পরেই যদি রৌদ্র ওঠে
তবে নতুন পাতার রঙ যেমন ফোটে,
. ঠিক তাহার মত
. সে যে সুশ্রী কত,
বলে বুঝানো যায় না কভু সে-সব কথা,
দেখে সবারই বুকে আসে চঞ্চলতা
তার সুডোল মুখটি আর পাতলা গড়ন
. বড় চমৎকারই !
তার গায়ের রঙের মত অমন দেখো নি
. আর, বলতে পারি |
. ৪
তার দুটি চোখের মাঝে
. রয়েছে ভাষা |
মানে, আকাশ হতেও চোখ
তার চাউনি দেখেই প্রেমে
. যদি মনের ভুলে
. চায় নয়ন তুলে
তবে তোমার দফাটি সারা
মানে পাগল হতেও আর
যত অন্যমনাই হও,
. বুকে বাঁধবে বাসা |
তার দুইটি চোখের মাঝে
. ১
বৌদির ছোট বোন, তার সাথে প্রেম
. ষোড়শী-সপ্তদশী, ভর্তি
প্রথম প্রেমের ভাষা স্বপ্নের মত করে
. কিশোরীর মত ভীরু, ছেলেমা
. বৌদির ছোট বোন
. ভাব-ব্যঞ্জনাময়ী, মঞ্জু
কুমারী অনাঘ্রাতা, বিশ্বের সুন্দরী শ্রে
. নবনী-কোমল তনু, মুখে
নব-যৌবন-বনে সে আমার মৌ-বন-প্রে
. স্বপ্ন-সাগর মথি ল
. ২
বৌদির ছোট বোন আজিও অনাদৃতা
. শ্যালিকা ও পরকীয়া সেখানে
কবিরা দেয় নি ঠাঁই রসময় দৃশ্যে কি
. তবুও সে রসময়ী, করে নি
বৌদির ছোট বোন
"কলেজবয়" ছদ্মনামে লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ব্ল্যাকবোর্ড" থেকে
জগদীশ ভট্টাচার্য
ক্ষণ-শাশ্বতী
"ক্ষণ-শাশ্বতী" থেকে
জগদীশ ভট্টাচার্য
জ্যোত্স্না-ধারায় বিশ্ব ডুবেছে, আলোক-
সুনীল গগনে পান্ডুচন্দ্র মদির নেশায় তন্দ্র
সাধ যায় সখি, তুমি এসে মোর চুপি চুপি
প্রথম-মিলন-রসভ-আবেশে আমরা শুনি
. পুষ্পশাখীতে স্বপন নে
. সন্ধ্যামালতী বিকাশের
. মল্লিকা-বন পুলকি উ
. গন্ধগরবী রজনীগন্ধা নি
কুজ্ ঝটিকার অবগুন্ঠনে ইন্দ্রজালের মো
তারকার মালা নভো-নীলিমায় পুষ্পশয়ন
স্বপনবিলাসী প্রেমিক-প্রাণের কত না বা
সে বাসনা সখি, জ্যোত্স্নার সাথে শেষ
পুর্ণিমা রাতে তোমারো প্রাণের প্রেমবিহ
নিদ্ মহলের অন্ধ অতলে প্লাবন এনেছে
বেলা |
দক্ষিণা
"ক্ষণ-শাশ্বতী" থেকে
জগদীশ ভট্টাচার্য
কৃষ্ণপক্ষ নিশি
আমারে ঘিরিয়া
স্নিগ্ধ সুনীল তা
স্বপ্নের সন্ধানী
জাগরণ আর ন
তোমার মনের
তাই দিয়ে ঘিরে
রাত্রি কি প্রেমম
আসুক আকাশে
আসুক নয়নে মো
অভিলাষ
"ক্ষণ-শাশ্বতী" থেকে
জগদীশ ভট্টাচার্য
চুপ করে চেয়ে দে
.
জ্যোত্স্নার সুধা দি
.
কলরব করিও না,
.
প্রণয়ের দর্পণে চিনে
.
কাব্যের খাতা খুলে
.
আশে-পাশে শুনিতে
শুভদৃষ্টি
"ক্ষণ-শাশ্বতী" থেকে
জগদীশ ভট্টাচার্য