সবাই তো মেনে নিলো আমি বড়ো হয়েছি মা যে শুধু মানল না | আমার কি দোষ গুণ, সকলেই জেনে গেল মাই শুধু জানলো না | শিশু ভেবে এখনও সে মা আমার কড়া কড়া বকুনিও দিয়ে যায়, আমি আর ছোট নই, মায়ের এ ধারনাটা কিছুতেই কোনো মতে ভাঙলো না আমার কি দোষ গুণ --- জানলো না | আর কেউ বোঝে না তো, মা যে ঠিক বুঝে নেয় আমার কখনো কিছু হলে আমার মাথায় রাখি, মায়ের স্নেহের হাত নিমেষে দুঃখ যায় চলে মনে হয় মা আমায় বলে যায় শিশু তুই আজও বড়ো অসহায় আর জানুক কেউ মায়ের এ ভালোবাসা দুহাত বাড়িয়ে কেউ আনলো না আমার কি দোষ গুণ --- জানলো না | সবাই তো মেনে নিলো ---
আমি তফাৎ বুঝি না দুজনার তফাৎ বুঝি না, আমার জন্মদাত্রী মা-ই আমার ঠাকুর মা আমি তফাৎ বুঝি না-- যখন মায়ের কাছে আসি দেখি মায়ের মুখে হাসি আমার দুচোখ দ্যাখো দুটি মা নয় একটি মায়ের একই প্রতিমা আমি তফাৎ বুঝি না মা হওয়া নয় মুখের কথা মাকে দেখেই বুঝি ভালোবাসার শেষ ঠিকানা, মায়ের কাছেই খুঁজি মা কখনো হয় কি দুভাগ ভিন্ন কি হয় মায়ের সোহাগ আমার মানবী মা দেবী মায়ের মানবী মা দেবী মায়ের, হৃদয়ে যে একই করুণা আমি তফাৎ বুঝি না, দুজনার তথাৎ বুঝি না আমার জন্মদাত্রী মা আমার---
আমার জীবন তরীর হালটি ধরি, আছেন তারিণী তাই নদী ছেড়ে খালে নালায় ডুবতে পারি না | আমার জীবন তরীর এই তরীকে বসুন্ধরায় পেলাম সেদিন মায়ের দয়ায় সেদিন থেকেই মা ছাড়া আর কারো হাতে হাল তো ছাড়িনি আমার জীবন তরীর হালটি || আমার মাথায় মায়ের আশীষ সারা দেহে মার মমতা | আমার ক্ষতি করবে কে আর কতোটুকু কার ক্ষমতা আমার মাথার মায়ের আশীষ সারা দেহে মার মমতা | জলের নীচে পাহাড় রাখো তবু তরী ডুববে না কো মার চালনায় চলবো আমি কোথাও আজও তাইতো হারিনি আমার জীবন তরীর হালটি ধরে----
মা মাগো মা আমায় ছেড়ে কোথাও তুমি চলে যেও না মা মাগো মা || রাত দুপুরে কিংবা কোনো কাক ভোরে যেন চোখ চাইতেই দেখি তোমায় চোখ ভরে আমার ঘরের দোরে যাক না ঝরে তোমার সূর্য্য সোনা, চাঁদের জোছনা, মা মাগো মা--- কাজের দিনে কিংবা ছুটির দিন এলে যেন পূজো করি ছেলেবেলা যাই খেলে কোনো দুঃখ পেলে মন ভাঙলে পাই যেন মা তোমার স্বান্তনা মা মাগো মা আমায় ছেড়ে কোথও তুমি চলে যেও না, মা মাগো মা--
এই রাত শেষ রাত হয়তো এ জীবনের, একটু আমার কাছে আরো থেকে যাও যে নতুন নাম দিয়ে ডেকেছে প্রথম দিনে, সে নামে আবার তুমি কাছে ডেকে নাও নিভে আসা এই দীপালিতে ডাকবো না আর আলো দিতে | শুধু আজ শেষবার দুহাতে আড়াল করে, ক্লান্ত শিখাটি তার দাও ঢেকে দাও | কত যে হয়েছি খুশী কি করে বোঝাই, কি গরবে হাসি মুখে আমি চলে যাই, হয় তো বা কোন মাঝ রাতে দেখবে না আমি আছি সাথে শুধু শেষবার আমার দুচোখ ভরে কি চাওয়া রেখেছি তুমি যাও দেখে যাও |
তোমায় কিছুই বলিনিতো ভালো বা মন্দ কিছু কি হোলো তোমার বলে যাও, বলে যাও | তুমি কিসে আঘাত পেলে কেন ও ভাবে চলে যে গেল সেই মাথাটি নামালে যে উঁচু মাথাটি কখনো করো না নীচু কি করে ভাবলে তোমার প্রেমের করবে গো অপমান তোমার দানের বিনিময়ে আমি দেবো এই প্রতিদান আমি তোমায় রেখেছি বুকে বহু স্বপ্ন পাওয়ার সুখে আমি কখনো চলিনি নকল আলোর আলেয়ার পিছু পিছু |
আমি সারারাত শুধু যে কেঁদেছি বুঝিনি এভাবে তুমি চলে যাবে জানিনা কি অপরাধ করেছি | পারিনি কিছুতে নিজেকে বোঝাতে কি ভুলে সবই যে হলো হারাতে পারিনি যে রাতে তোমায় ফেরাতে একেছি এ আঁখি পুণ্য দুহাতে তবে কি ভুলের স্বর্গই গড়েছি, জানিনা পেলে কি তুমি এ খেলাতে সুখেরই ছবিটি ছিঁড়ে ফেলাতে জানি না তোমাকে আমি কি দিয়েছি কি যে চেয়েছি কী বা পেয়েছি চোখেরই জলেতে মুক্তাই যে ধরেছি |
মা গো মা, মা গো আমি এলাম তোমার কোলে তোমার ছায়ায় তোমার মায়ায় মানুষ হবো বলে | দূর অজানার কল্প লোকের ওপার হতে সাত সাগরের অন্ধকারের অকুল স্রোতে সূর্য সোনার আশীর্বাদে আমি আলোয় এলাম চলে | তোমার রক্ত কণায় ঠাঁই দিলে মা ধন্য হলাম আমি চোখ মেলতে তোমার দুচোখ দেখতে পেলাম আমি | আমার জন্য সইলে তুমি অশেষ ব্যথা, বুঝিয়ে দিলে মা হওয়া নয় মুখের কথা | আমার কান্না হলো মধুর হাসি তোমার মন্ত্র বলে |
আমি রাজী রাখো বাজী এক ডুবে ভরা নদী হয়ে যাব পার, আমি কাটবো সাঁতার | তরুণ এ প্রাণে কোন ভয় ডর নেই তো আমার গা ছমছমানো শ্মশানের রাস্তায় বটগাছ হতে ঘোর অমাবশ্যায় রাত দশটার কাকের বাসাটি থেকে কোকিল ছানাকে আমি একা একা করি উদ্ধার | যখনি ডাকবে কেউ আমায় পাবে তখনই মন আমার দৌড়ে যাবে দুঃখী আতুরের সেবায় পরিত্রাণে আমি থাকি তাই সবার আনন্দে আমি গান গাইআমার নতুন চোখে পুরানো পৃথিবীকে ভেঙে চুড়ি গড়ি বার বার |
এসো যৌবন এসো হে বন্ধু এসো এসো জীবন আমার করো ধন্য, আমি দিন গুনেছি তোমারি জন্য | আরো ভাষা দাও প্রাণে আরো সুর দাও গানে ছন্দ দোলায় উঠুক দুলে পুষ্পিত বন অরণ্য, দাও আরো ভালোবাসা আরো বেশী প্রত্যাশা সম্ভাবনা স্বপ্ন দিয়ে আমায় করো অনন্য |