দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর লোকে তোমায় বলে, তাই তোমাকে চুপি চুপি মনের কথা কই একটু সহজ করে কেন লিখলে না গো বই ?
সহজ করে লিখলে কিছু হত কি-গো ভুল কঠিন কঠিন বানান ভরা ‘বর্ণপরিচয়ে’ পড়ার সময় দেখি শুধু চোখে সর্ষে ফুল ‘য’ ফলারা জড়িয়ে ধরে লাগে শুধু ভয় ঠাকুরমায়ের আঁচলে তাই মুখ লুকিয়ে রই ||
‘জাড্য’ বানান করতো দেখি,---- বড়দা এসে বলে, বিজীগীষা বানানে ভুল কানটা যে দেয় মলে’ সকাল-বিকাল শাসন করে দেখো না-কি তাও ‘ফটো’র থেকে নেমে এস, দেখতে যদি চাও |
রাখাল বড় দুষ্টু ছেলে পালায় যে ইসকুল ইচ্ছে করে পড়াশোনায় কেবলি দেয় ফাঁকি সন্ধ্যেবেলায় তাইতে দু’চোখ ঘুমে ঢুল্ ঢুল্ দয়ার সাগর এসব খবর তুমি রাখো না কি সুবোধ হতে চাই না আমি রাখাল যেন হই ||
কথা - শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় সুর ও শিল্পী- অংশুমান রায়
বলি, ও খোকার মা . পান খেয়ে গাল পুড়েছে এখন তোকে কি করে আদর করি বল্ সন্দেহ তুই করিস্ না রে . ভাবিস্ না এ-ছল্ ||
আমায় পান দিয়েছে দোকানী পানের ভিতর কি ছিল, দেখেনি সেই পান খেয়ে চোখে শুধু ঝরে জল সন্দেহ তুই করিস্ না রে . ভাবিস্ না এ-ছল্ || পানের পাতা মিঠা মেয়ের মিঠা মিঠা হাসি খয়ের গুঁড়া গুঁড়া আর সুপারিটা বেশি |
তখন কেন আমি বুঝিনি বোধহয়, পানেতে দেওয়া ছিল মোহিনী হাতে হাতে তাই পাচ্ছি প্রতিফল সন্দেহ তুই করিস্ না রে . ভাবিস্ না এ-ছল্ ||
ও বাবু, পান খেয়ে যান, পান খেয়ে যান ‘মন মোহিনী’র পান বাংলা পাতা খয়ের ছাড়া মিষ্টি, সাদা পান মৌরী, এলাচ, চমন-বাহার আর দেব কিমাম মন মোহিনীর পানের খিলি ষাট পয়সা দাম ||
মন-মোহিনীর হাতের সাজা পানের অনেক গুণ পুড়বে না গাল, লাগবে না ঝাল একটা খেয়ে দেখুন মৌতাতে মন থাকবে মজে করতে হবে নাম মন মোহিনীর পানের খিলি ষাট পয়সা দাম |
সাহেব-বিবি-গোলাম সবাই পানের খরিদ্দার বারে বারে আসতে হবে খেলে একটিবার সু-নাম ছড়ায় মুখে মুখে শহর থেকে গ্রাম মন মোহিনীর পানের খিলি ষাট পয়সা দাম ||
ও ননদী বল্ দেখি তুই এক্ লা থাকি কি করে তোর দাদা যে কেমন মানুষ বে-আক্কেলে দেলম বেহুঁশ সেই যে গেল, ‘আসছি’ বলে আর কি ফেরার নাম করে ? মন আমার ঘর-বার ঘর-বার করে ||
হায়, বলতে আমার পরান ফাটে . রেতের বেলায় একলা কাটে ছার-পোকাতে কাটে আমার . বুঝবে কি তা’ অপরে মন আমার ছট্ ফট্ ছট্ ফট্ করে ||
এই জনমের শত্রু আমার . জ্বালায় পোড়ায় হাড় জেরবার যদি দেখার হ’ত দেখিয়ে দিতাম . আগুন জ্বলে অন্তরে মন আমার ধুক্ পুক্ ধুক্ পুক্ করে ||
এক এক্কে এক দুই এক্কে দুই পড়শীরা সব দেখে বলে ‘বুড়ি’ না কি মুই তিন পেরিয়ে চারের কোটা হয়তো বা ছুঁই-ছুঁই তবু খোকার বাপের কাছে ‘সদ্য ফোটা যুঁই . আমি সদ্য ফোটা যুঁই ||
দুই দুগুণে চার যোগ গুণ ভাগ বিয়োগ করো . বাড়বে না সে আর থম্ কে আছে তেনার চোখে . বয়সটা আমার যেন, লক্ লকিয়ে লতিয়ে ওঠা . বর্ষাকালের পুঁই ||
আট দুগুণে ষোল ঘরের কথা পরের কাছে . বলব কত বলো ? দু’দিন বাপের বাড়ি গেলে . চক্ষু ছলো ছলো ‘ডিস্ কো’ নাচের তালে ঘরের . ভাঙ্ বে সব কিছুই ||
ভারতবর্ষ : সূর্যের এক নাম . আমরা রয়েছি সেই সূর্যের দেশে লীলা চঞ্চল সমুদ্রে অবিরাম . গঙ্গা যমুনা ভাগিরথী যেথা মেশে ||
ভারতবর্ষ : মানবতার এক নাম . মানুষের লাগি মানুষের ভালবাসা প্রেমের জোয়ারে এ-ভারত ভাসমান . যুগে যুগে তাই বিশ্বের যাওয়া-আসা সব তীর্থের আঁকা-বাঁকা পথ ঘুরে . প্রেমের তীর্থ ভারততীর্থে মেশে ||
ভারতবর্ষ : সাম্যের এক নাম . অস্পৃশ্যতা হিংসা ও দ্বেষ ভুলে কন্ঠে সবার একতার জয়গান . ভেদাভেদ ভুলে বক্ষে নিয়েছে তুলে দেবতা এ-দেশে মানুষ হয়েছি জানি . মানুষকে দেখি গণ দেবতার বেশে ||
ভারত আমার ভারতবর্য . স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো তোমাতে আমরা লভিয়া জনম . ধন্য হয়েছি ধন্য গো || কিরীট ধারিনী তুষার শৃঙ্গে . সবুজে সাজানো তোমার দেশ তোমার উপমা তুমিই তো মা . তোমার রূপের নাহিতো শেষ সঘন গহন তমসা সহসা . নেমে আসে যদি আকাশে তোর হাতে হাত রেখে মিলি একসাথে . আমরা আনিব নতুন ভোর ||
শক্তি দায়িনী দাও মা শক্তি . ঘুচাও দীনতা ভীরু আবেশ আঁধার রজনী ভয় কি জননী . আমরা বাঁচাব এ-মহাদেশ রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ . বীর সুভাষের মহান দেশ নাহি তো ভাবনা, করি না চিন্তা . হৃদয়ে নাহি তো ভয়ের লেশ ||