লঘু কবিতা কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ১৩ আগস্ট ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
রহস্যময় জলখাবার, তোমাকে আমি খেতেই পারছি না।
তোমাকে আমি ... তোমাকে আমি, আচ্ছা করে সাপটে নিয়ে তুলে
ঠোঁটের কাছে রাখতে চাই, . জলখাবার , জল খাবার ভুলে বিষম খেয়ে মরেছি আমি সেই দিনই তো, যখন তোমার হলাম।
রহস্যময় জলখাবার, তোমার দিকে যখনই মন দিলাম
তুমি দিয়েছ স্বপ্ন, যাদু, তুমি দিয়েছ বানানো সব গল্প
নিজেকে তুমি লুকিয়ে রাখো , আড়ালে রাখো . যেভাবে লুচি জড়িয়ে থাকে ময়ানে আর ময়দায়
যেভাবে আসে শরীরহীন চটুল গন্ধ, যেভাবে টানে তীব্র জিভ, . জিবে-গজা , না, মালপো
রহস্যময় জলখাবার, তোমাকে আমি লালায় . নেব মেখে এবং সেভাবে চেখে চেখে
অনেকদিন অনেকদিন লুকিয়ে খাব, প্রথমে কিছু দিন তো যাবে . না খেয়ে শুধু হাতের তেলোয় রেখে এই তো হাত, এই তো তালু । জলখাবার , আমাকে দিও স্পর্শ ।
রহস্যময় জলখাবার, সত্যি তুমি . খাবার মত হয়ত
আস্ত নও , মস্ত নও , হয়ত তুমি . কাল্পনিক খুবই
আমি তো জানি স্বপ্নে পাওয়া জলখাবার নিজের সঙ্গে নিজেই আমি ডুবি
এবং তুমি শক্ত কিনা, পোক্ত কিনা জানি না আমি, দূর থেকে দেখেছি
বুঝি না আমি এতটা লোভ কেন আমার কেন যে আমি তোমাকে এত চাই
শব্দশিল্প কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২ আগস্ট ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
ছিবড়ে একটা সীমানাহারানো স্বপ্ন তোমাদের ভুলে ওকে ছেড়ে দিয়ে এসেছি কোথায়, মরতে ? এখন ফেঁদেছি নিজের আকাল ...অর্ধলিখিত দর্পে ?
মিশ্রি আঙুলে ঘেঁটে তোলা ঘৃত কর্পূর আরামে লিখিত বিশ্রি এবং বেদনাপ্রবণ স্বর্গ এইসব শাদা, হলুদ হয়েছে ক্রমশ
অথবা এটাই হৃতসম্পদ যোজনা এখনো ঘটেনি কারুবাসনার গর্তে বজ্রপাতের ঘটনা, অথবা শৈশব ! এখনো উথাল, পাতালে ঘটিত কৃত্তিবাসীয় কারুকাজ খায়নি সমূলে হার্মাদ। যারা কৃতাঞ্জলি ও ন্যুব্জ। এখনো আসেনি হতপরিবার রাজাদের প্রিয় খাজানা ।
ছিবড়ে একটা সীমানাহারানো স্বপ্ন ভাষা পরিসরে তামাদি, লুকনো, রক্তিম থুবড়ে পড়েছে ক্রিমিনাল কটু রূপরং ভাষা করিডোরে হাতে হ্যারিকেন খুঁজো না, উহাকে খুঁজো না।
শব্দ আমার বন্দুক, আমি দ্রুততা জানাই , স্পষ্ট, আবেগ আমার স্বপ্নে লিখিত রচনা? প্রশ্ন : আমি তো ঝুঠা কসরতে, কবিতা তাহলে কদ্দূর?
ভুজ্যিকথা কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ১২ মে ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
পৃথুলা ভোজ্যের পিন্ড পৃথিবীকে যত খায় তত জনগণ ঘৃত ও কর্পূরযুক্ত বিশাল মোদক বলে মনে হয় পাতে ভুবনায়নের ছলে কোন্ বা ভেজালক্রমে মিশেছিল তাতে ভাজাভাজা হয়ে যাওয়া আরো কিছু মানুষ, মানুষ, তুচ্ছজন আহা, এ কি অপূর্ব রন্ধন
পৃথুলা ভুজ্যির পিন্ড, বুঝলাম, কার পিন্ড বটে ? প্রজন্ম প্রজন্ম ধরে যত মৃত্যু চেটে খাই , আরো মৃত্যু রটে তাও এত ক্ষুধা থাকে, অগণ্য মক্ষিকাবর্গ মেলে আছে অগণিত লোভাতুর চোখ সেই সে বুভুক্ষু দৃষ্টি এসে পড়ে শস্যমধ্যে, সে-শস্যও তো, শেষ অবধি, অগণন মানুষের শব! পাবলিকের কথা ভেবে স্নেহশীলা মায়ের মতন সেই সব মৃত্যুকেও চেটে লালারস কে মাখায় ? আরে, লালাতেই যেন মিশে আছে স্বাদের বৈভব অলস মাছির মত চেটে খায় ভাইবন্ধুসন্তানের টুকরো হত্যারব ... দুর্গন্ধ-অবশ খাদ্যাখাদ্যে খুঁজে নিজের বিষয় সাত বাসি খবরের কাগজে বসে ঝিমোচ্ছে এখন...
এ গোটা পৃথিবী যদি তপ্ত তাওয়া, ক্ষুধার্ত উনোন আর কতকাল ধরে চুষে খাব এই দেশ? বহুবর্ণে মাখা? ... ওহো! সেই ভুক্তশেষ, ছিঁড়ে পড়ে থাকা ভারতবর্ষের চিত্র ? ছোট্ট থেকে দেখে আসছি যে অদ্ভুত আশ্চর্য় পরোটা আনাড়ি বোনের হাতে বেলা যেন, অসমান গলিত ত্রিকোণ...? মা বলেছে, ফেলতে নেই, খা , খা...
চায়ের টেবিল, বারান্দায় কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ১২ মে ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
১ সমস্ত গরল তুমি ঝেড়ে কাশো, নিত্য নব মনখারাপ আমাকে পরাও নতুন জামার মত, সপ্তাহান্তে পুরনো জামায় ফিরে এসো ঢলঢলে ম্যাক্সির মত ঘৃণা আমি পরে আছি কতকাল ধরে, অনায়াসে সমস্ত গরল তুমি ঝেড়ে দাও, বন্ধুসঙ্গে, চায়ের টেবিলে আমি রোজ নব নব ঘৃণা ছেড়ে, টাইট পোশাক পরে অফিসে বেরিয়ে যেতে পারি।
২ দীর্ঘদেহী সে পুরুষগুলিকে আমি তো ভাবিনি উল্লাস, ওইসব প্রেম আমার কাপের কফি নয় নরম বালক, গালে জমা দাড়ি, শরীরে তামাকগন্ধ ভাল জানে চোরা চাহনি এবং অভিনয় ...
সে সব প্রেমিকে আমাদের ছিল মনন এবং দগ্ধ যৌনতা ছিল পুরোপুরি ক্লিশে, হারবাল ওষুধের মত, ভালবাসা আর সেক্সের সে কি ফিউশন ছিল, মুগ্ধ! আমাদের ছিল প্রস্তরীভূত সঙ্গম...
টানা বারান্দা , ওতেই চলত, ওটাই প্রেমের শীর্ষ, কতটা দাঁড়ানো, কতটা বসার সংযম আমরা এখন প্র্যাকটিস করি চোখাচুখি, আর দূরত্ব মাপি আঙ্গুলের বেতের মোড়ায় বিদ্যুতবাহী টি পটে... তুমি তো আমার খর চোখ দেখে বাঙ্ময়।
পিম্প মিসট্রেস (the other mistress....) কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২৩ মে ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
এই মেয়েটিকে আমি অবিরত পাশে পাশে রাখি ভুল করলে হাত রাখি পিঠে, কিন্তু ওর পায়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া আটকাতে পারি না আর, রাস্তার ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া আটকাতে পারিনা
ওর পায়ে পায়ে ফেরা নিজের পেজেই ফের, লেংচিয়ে, ক্ষতচিহ্নে ব্যান্ডেড বেঁধে ঠোঁট কালশিটেময়, অপমানে ঝাঁ ঝাঁ করা কান দেখি আর ভাবি , যদি সব ভুল একবারে স্টেপলারে চেপে বেঁধে ফেলা যেত আর ডেফিনিশনের মধ্যে নেওয়া যেত সমস্ত সামলিয়ে
পারিনা, পারিনা, তরজা, আদেখলা, পুরনো মর্ত্যে এসে পড়ে জাহ্নবীসমান সমস্ত শরীর তার কেঁপে ওঠে এক্সাইটিং কারুকাজে
আজকাল তাকে দেখি ফেসবুকে, এগিয়ে, বাড়িয়ে দিতে ওয়ালে ওয়ালে , ওপেন কমেন্ট সে কিচ্ছু করে না , শুধু পুরুষ লেলিয়ে দেয়। তার নিজ-দেহে নয়, নিজেরই বছর বিশ আগেকার যুবতী ছবিতে...।
কোন ধর্ষিতার প্রতি কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ৮ মার্চ ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
‘যাই বল , ওটা তুমি একটুও কি এনজয় করোনি?’ এরকমই ভাবে ওরা, পুরুষেরা । অথবা নারীরা ? ‘যাক বাবা বেঁচে গেছি, তাছাড়া যে সেজেগুজে তুমি বিদঘুটে পোষাক পরে চরতে গেছ আদাড়ে বাদাড়ে কামকুক্কুরী হবে , নইলে কেউ পড়ে ওইসব লোকের পাল্লায় ? ছি ছি! ভাবতেই পারছি না কী বেহায়া!’
এক চুল এদিকে ওদিকে শুধু খেলে যায় হাওয়ার মতন ধর্ষণ ধর্ষণ খেলা আর সত্যি ধর্ষণের মানে - পর্নো ছবি মর্মে যায়, লালেঝোলে ভেজা মধ্যরাতে নীরবে নিভৃতে চলে কাল্পনিক শাড়িখুলেনেওয়া যখন, প্রতিষ্ঠা পায় নারী মানে নর্দমার ছিদ্র, কুড়াদান...
হে ধর্ষিতা, তুমি জান, শরীর কোথায় শেষ হয় কোথা থেকে শুরু হয় অদ্ভুত, দ্বিতীয় অপমান...
ঘাঁটা শব্দকোষ কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
রেসিপি কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
১২ টা ডিম আনো । পাত্রে রাখো । আর সিদ্ধ করে ফেলো জল দিয়ে। মানুষ টোমাটোর প্রকৃত দাস। ছেঁচো পাথরে আদা আর রসুন। পাথরে এনে ফেল ধনেপাতার গাঢ় সবুজ উৎসাহ, থেঁতো কর... ১২ টা ডিম থেকে খোসা ছাড়াও। ১২ টা আলু কাটো । আলুর খোসা ফেল । আলুটা ভেজে তোল । লোহা গরম। তেলের কড়াইয়ের ওপরে ধোঁয়া ওঠে। গরম তেলে শুধু ফোড়ন দাও। ১২ টা চোখ শুধু লোভী ও উৎসুক ... ‘ডিমের ঝোলটার কত দেরি?’
পকেট মারার কাহিনি কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)
পাগল আমাকে বিবিধ পাগল করেছ বাইকে চড়িয়ে নিয়ে যেতে চেয়ে নিরালায় অথচ পারোনি, অথচ সমূহ লোকালয় অসুখের মত ধাবমান পিছু পিছু আর –
দুধ ও দইয়ের দিনগুলি কবি যশোধরা রায়চৌধুরী ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১১ (আমরা কৃতজ্ঞ কবির কাছে এই জন্য যে তিনি কবিতাটি নিজে টাইপ করে তাঁর ফেসবুক-এর পাতায় তুলেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে কবিতাটি তুলেছি।)