বৈষ্ণবদাস ও উদ্ধবদাসের পদে গোকুলানন্দের উল্লেখ - পাতার উপরে . . .
আমরা জানি শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর সংকলক বৈষ্ণবদাসের আসল নাম ছিল গোকুলানন্দ সেন। কিন্তু এই
গোকুলানন্দ শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর সংকলক বৈষ্ণবদাস নন। কারণ স্বয়ং বৈষ্ণবদাসের “গৌরাঙ্গচাঁদের প্রিয়
পরিকর” পদে (শ্রীশ্রীপদকল্পতরু, প্রথম খণ্ড, প্রথম শাখা, প্রথম পল্লব, মঙ্গলাচরণ, পদসংখ্যা ১৭) তিনি
দ্বিজ হরিদাসের বন্দনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দুই পুত্র, শ্রীনিবাস ঠাকুরের শিষ্য, শ্রীদাস এবং গোকুলানন্দেরও
বন্দনা করেছেন।
উল্লিখিত শ্রীচৈতন্যদেবের পরিকর দ্বিজ হরিদাসের পুত্র এবং শ্রীদাসের ভাই গোকুলানন্দ এই পাতার
পদাবলীর রচয়িতা হতেও পারেন। কিন্তু তা আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। জগদ্বন্ধু ভদ্র তাঁর
গৌরপদতরঙ্গিণীতে ১০জন গোকুল দাস ও গোকুলানন্দের উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনিও নিশ্চিতভাবে
কাউকে পদকর্তা বলে যান নি। . . .
গৌরাঙ্গচাঁদের প্রিয় পরিকর
. দ্বিজ হরিদাস নাম।
কীর্ত্তন-বিলাসী প্রেম-সুখরাশি
. যুগল রসের ধাম॥
তাহার নন্দন প্রভু দুই জন
. শ্রীদাস গোকুলানন্দ।
প্রেমের মূরতি যুগল-পিরিতি
. আরতি-রসের কন্দ॥
গোরা-গুণময় সদয় হৃদয়
. প্রেমময় শ্রীনিবাস।
আচার্য্য ঠাকুর খেয়াতি যাহার
. দোহে রহে তার পাশ॥
পিতৃ-অনুমতি জানিয়া এ দোহে
. হইলা তাহার শাখা।
শাখা গণনাতে প্রভুর সহিতে
. অভেদ করিয়া লেখা॥
গৌরাঙ্গচাঁদের প্রিয় অনুচর
. জয় দ্বিজ হরিদাস।
জয় জয় মোর আচার্য ঠাকুর
. খ্যাতি নাম শ্রীনিবাস॥
জয় জয় মোর শ্রীদাস ঠাকুর
. জয় শ্রীগোকুলানন্দ।
করুণা করিয়া লেহ উদ্ধারিয়া
. অধম পতিত মন্দ॥
ইহা সভাকার বংশ পরিবার
. যতেক ঠাকুরগণ।
সভার চরণে রতি মতি মাগে
. বৈষ্ণব দাসের মন॥
বৈষ্ণবদাসের বন্ধু কৃষ্ণকান্ত মজুমদার, যিনি উদ্ধবদাস ভণিতায় পদ রচনা করেছিলেন, তাঁর “জয় রে জয় রে
শ্রীনিবাস নরোত্তম” পদেও (শ্রীশ্রীপদকল্পতরু, ৪র্থ খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ৩৬শ পল্লব, প্রার্থনা, পদসংখ্যা ৩০৯২)
আমরা এই গোকুলানন্দ এবং শ্রীদাসের উল্লেখ পাই . . .
জয় রে জয় রে শ্রী নিবাস নরোত্তম
. রামচন্দ্র শ্রীগোবিন্দ দাস।
জয় শ্রীগোবিন্দ গতি অগতি জনার গতি
. প্রেম-মূরতি পরকাশ॥
শ্রীদাস গোকুলানন্দ চক্রবর্ত্তী শ্রীগোবিন্দ
. শ্রীরামচরণ শ্রীল ব্যাস। . . .
সম্পূর্ণ পদটি পড়তে কবি উদ্ধব দাসের পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন . . .
আমরা মিলনসাগরে কবি গোকুলানন্দ-এর বৈষ্ণব পদাবলী আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে এই
প্রচেষ্টার সার্থকতা।
গোকুল ভণিতার কবির পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
গোকুল দাস ভণিতার কবির মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
গোকুলানন্দ ভণিতার কবির পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
গোকুলানন্দ দাস ভণিতার কবির পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
গোকুলচন্দ্র ভণিতার কবির পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
গোকুলচন্দ্র দাস ভণিতার কবির পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
আমাদের ই-মেল - srimilansengupta@yahoo.co.in
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ২৩.১.২০১৮।
একটি নতুন পদ সংযোজন ও কবি-পরিচিতির পরিবর্ধিত সংস্করণ - ২৮-৬-২০২০।
...
কবি গোকুলানন্দ - শ্রীনিবাস আচার্য্য পরবর্তী সপ্তদশ শতকের কবি। তিনি জন্মগ্রহণ করেন বীরভূম
জেলার সদর স্টেশন সিউড়ী থেকে দশ মাইল দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত মঙ্গলডিহি গ্রামে। ছোট ভাই ছিলেন
পদকর্তা নয়নানন্দ।
আমরা বিভিন্ন পদাবলী সংকলনে, পদকর্তা গোকুল দাস ও গোকুলানন্দ নামে “গোকুল”, “গকুলদাস”,
“গোকুলানন্দ”, “গোকুলানন্দ দাস”, “গোকুলচন্দ্র”, “গোকুলচন্দ্র দাস” ভণিতাযুক্ত পদ পেয়েছি। এঁরা ভিন্ন ভিন্ন
পদকর্তা না কি একই ব্যক্তি, তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা প্রত্যেক ভণিতার জন্য আলাদা পাতা
করেছি।
এই পাতায় থাকছে কবি গোকুলানন্দের “গোকুলানন্দ” ভণিতার পদাবলী।
বীরভূম জেলার হেতমপুর এস্টেটের মহারাজ মহিমারঞ্জন চক্রবর্ত্তী সম্পাদিত এবং তাঁর অর্থানুকুল্যে ১৯১৬
সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় দ্বারা প্রকাশিত, বীরভূম-বিবরণ ১ম খণ্ড, মঙ্গলডিহি কাহিনী থেকে
জানা যায় যে, গোকুলানন্দের ছোট ভাই ছিলেন পদকর্তা নয়নানন্দ। পিতার নাম গোপালচরণ। পিতামহের
নাম কানুরাম। কানুরামকে তাঁর অন্য চার ভ্রাতা অনন্ত, কিশোর, হরিচরণ ও লক্ষ্মণ এর সাথে দত্তক
নিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সমসাময়িক মঙ্গলডিহির পান ব্যাবসায়ি ও অলৌকিক শক্তির অধিকারী
পর্ণিগোপাল ঠাকুর বা পানুয়া ঠাকুর বা গোপালচন্দ্র।