কবি দীন কৃষ্ণদাসের বৈষ্ণব পদাবলী
*
সোঙরো নব গৌরচন্দ্র
কবি দীন কৃষ্ণদাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ১৫শ পল্লব,
রসালস, পদসংখ্যা ১০৮৫।

রসালসোপযুক্তরূপং যথা।

.        শ্রীগৌরচন্দ্রঃ।

.        ॥ ভৈরবী॥

সোঙরো নব                        গৌরচন্দ্র
.                নাগর বনয়ারি।
নবদ্বীপ-ইন্দু                        করুণা সিন্ধু
.                ভক্ত-বত্সলকারী॥ ধ্রু॥
.                বদন-চন্দ অধর অঙ্গ
.                নয়নে গলত প্রেম-তরঙ্গ
.                চন্দ্র কোটি ভানু কোটি
.                                শোভা নিছয়ারি।
.                কুসুম-শোভিত চাঁচর চিকুর
.                ললাটে তিলক নাসিকা উজোর
.                দশন মোতিম আমিয়া হাস
.                                দামিনি ঘনয়ারি॥
.                মকর-কুণ্ডল ঝলকে গণ্ড
.                মণি-কৌস্তুভ-দীপ্ত কণ্ঠ
.                অরুণ বসন করুণ বচন
.                                শোভা অতি ভারি।
.                মাল্য-চন্দন-চর্চ্চিত অঙ্গ।
.                লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
.                অঙ্গদ বলয়া রতন নূপুর
.                                যজ্ঞ-সূত্রধারি॥
.                ছত্র ধরত ধরণিধরেন্দ্র
.                গাওত যশ ভকতবৃন্দ
.                কমলা-সেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                                বলিয়ে বলিহারি।
.                কহত দীন কৃষ্ণদাস
.                গৌর-চরণে করত আশ।
.                পতিত-পাবন নিতাই চান্দ
.                                প্রেম দানকারী॥

ই পদটি, দেবীপ্রসন্ন রায়চৌধুরী সম্পাদিত “নব্যভারত” পত্রিকার, ভাদ্র ১৩০০ সংখ্যায় (অগাস্ট ১৮৯৩)
প্রকাশিত, হারাধন দত্তর "বঙ্গের বৈষ্ণব কবি (২)" প্রবন্ধে এভাবে দেওয়া রয়েছে।

.                ॥ রাগ ভৈঁর - একতাল॥

সোঙর নব, গৌউর সুন্দর, নাগর বনয়ারি।
নদীয়া ইন্দু, করুণাসিন্ধু, ভকতবত্সলকারি॥
বদনচন্দ্র, অধর কন্দ, নয়নে গলত প্রেমতরঙ্গ,
চন্দ্র কোটি, ভানুমুখ, শোভা নিছুয়ারী॥
কুসুম শোভিত চাঁচর চিকুর, ললাটে তিলক নাসিকা উপর
দশন মতিম, আমিয়া হাস, দামিনী ঘনয়ারি॥
মকরকুণ্ডল, ঝলকে গণ্ড, মণি কৌস্তুভ দীপ্তকণ্ঠ,
অরুণ বসন, করুণ বচন, শোভা অতি ভারি॥
মাল্য চন্দন, চর্চ্চিত অঙ্গ, লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ,
চন্দন বলয়া, রতন নূপুর, যজ্ঞসূত্রধারি॥
ধরেন্দ্র গাওত, যশোক্তবৃন্দ কমলা সেবিত পাদদ্বন্দ্ব,
ঠমকে চলত, মন্দ মন্দ, যাহু বলিহারি!
কত দীন কৃষ্ণদাস, গৌর চরণে করত আশ,
পতিতপাবন, নিতাই চাঁদ, প্রেমদান কারি॥ (পদসমুদ্র) ৭২২৪। @

@ - (পদসমুদ্র) ৭২২৪।
থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, পদটি হারাধন দত্ত মহাশয় পেয়েছিলেন পদসমুদ্র গ্রন্থ থেকে
এবং সম্ভবত সেই গ্রন্থের এটি ৭২২৪ সংখ্যক পদ ছিল। এখানে উল্লেখনীয় এই যে, "পদসমুদ্র" গ্রন্থটি
বহুচর্চিত হলেও সেটিকে তাঁর মালিক, এই প্রবন্ধের রচয়িতা, হারাধন দত্ত (ভক্তনিধি), কখনো সর্বসমক্ষে
দেখাতে রাজি হন নি। এতে নাকি ১৫০০০ পদ ছিল। এই নিয়ে মিলনসাগরে
বৈষ্ণবদাসের পরিচিতির
পাতায়
,পূর্বে আমরা যা লিখেছি তা পাঠকের সুবিধার জন্য এখানে আবার দেওয়া হলো . . .

"
সম্পাদক সতীশচন্দ্র রায় তাঁর পদকল্পতরু গ্রন্থের ৫ম খণ্ডের "ভুমিকা"-য়, "পদ-সমুদ্র" নামের একটি পুথির
উল্লেখ করেছেন যাতে নাকি ১৫০০০ পদ সংকলিত হয়েছিল। হুগলী জেলার বদনগঞ্জ নিবাসী হারাধন দত্ত
ভক্তিনিধি নাকি নানা সময়ে নানা পত্র-পত্রিকায় লিখেছিলেন যে, তাঁর অতিবৃদ্ধপিতামহের সমসায়িক বাবা
আউল মনোহর দাস নামের এক বৈষ্ণব মোহন্ত এই ১৫০০০ (পনেরো হাজার) পদ বিশিষ্ট পদ-সমুদ্র পুথিটি
সংকলন করেন। গৌরপদতরঙ্গিণীর সংকলক জগবন্ধু ভদ্র এই গ্রন্থের অস্তিত্ব বিশ্বাস করেন নি। তিনি
দীনেশচন্দ্র সেনকে উদ্ধৃত করে লিখেছিলেন যে একবার কোন এক ব্যক্তি ২০০০টাকার বিনিময় ওই পুথিটি
কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভক্তিনিধি মহাশয় তা বিক্রী করেন নি। তিনি কখনও এই গ্রন্থটি, কাউকে
দেখতেও দেন নি। তাই তাঁরা এই পুথির অস্তিত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান ছিলেন। সতীশচন্দ্র রায় মনে করতেন যে
গ্রন্থটি ভক্তিনিধি মহাশয়ের কাছে হয়তো খণ্ডিত অবস্থায় ছিল তাই তিনি দেখাতে চান নি। তিনি নাকি এই
পুথি থেকেই বিদ্যাপতির আত্ম পরিচয় বিষয়ক "জনমদাতা মোর গণপতি ঠাকুর" ও রামী রজকিনীর
"কোথা যাও ওহে প্রাণ-বঁধু মোর" পদদুটি উদ্ধৃত করেছিলেন
।"

ই পদটি, ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী
সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৯৪-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

.                        ॥ ভৈরব একতাল॥

সোঙর নব                                        গৌরসুন্দর
.                নাগর বনোয়ারি।
নদীয়া ইন্দু                                        করুণাসিন্ধু
.                ভকত বত্সলকারী॥ ধ্রু॥
বদন চন্দ অধর কন্দ                        নয়নে গলত প্রেমতরঙ্গ
.        চন্দ্র কোটি ভানু কোটি মুখশোভা বিছুয়ারি।
কুসুমশোভিত চাঁচর চিকুর             ললাট তিলক নাসিকা উপর
.        দশন মোতিম আমিয় হাস দামিনী ঘনয়ারী॥
মকরকুণ্ডল ঝলকে গণ্ড                        মণি-কৌস্তুভ-দীপ্ত কণ্ঠ
.        অরুণ বসন করুণ বচন শোভা অতি ভারি।
মাল্যচন্দন-চর্চ্চিত অঙ্গ                 লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
.                চন্দন বলয়া রতন নূপুর যজ্ঞসূত্রধারী॥
ধারত গাওত ভকতবৃন্দ                     কমলাসেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                ঠমকে চলত মন্দ মন্দ যাউ বলিহারি।
কহত দীন কৃষ্ণদাস                        গৌর-চরণে করত আশ।
.                পতিতপাবন নিতাইচাঁদ         প্রেমদানকারী॥

ই পদটি, ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-
মালা”, ৬৭-পৃষ্ঠায় এই রূপে রয়েছে।

.        শ্রীগৌরাঙ্গ-স্মরণ

.        ॥ ভৈরবী॥

সোঙর নব                        গৌর সুন্দর
.                নাগর বনোয়ারি।
নবদ্বীপ ইন্দু                        করুণা সিন্ধু
.                ভক্ত-বত্সলকারী॥
বদন-চন্দ অধর অঙ্গ
নয়নে গলত প্রেমতরঙ্গ
চন্দ্র কোটি ভানু কোটি
.                শোভা নিছয়ারি।
কুসুম-শোভিত চাঁচর চিকুর
ললাটে তিলক নাসিকা উজোর
দশন মোতিম আমিয়া হাস
.                দামিনী ঘনয়ারি॥
মকর কুণ্ডল ঝলকে গণ্ড
মণি-কৌস্তুভ দীপ্ত কণ্ঠ
অরুণ বসন করুণ বচন
.                শোভা অতি ভারি।
মাল্য-চন্দন-চর্চ্চিত অঙ্গ।
লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
অঙ্গদ বলয়া রতন নূপুর
.                যজ্ঞ সূত্র ধারি॥
ছত্র ধরত ধরণী ধরেন্দ্র
গাওত যশ ভক্তবৃন্দ
কমলা সেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                বলিয়া বলিহারী।
কহত দীন কৃষ্ণদাস
গৌরাঙ্গ-চরণে করত আশ।
পতিত পাবন নিতাই চাঁদ
.                প্রেমদান কারী॥

ই পদটি, ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ৫৩৫-পৃষ্ঠায় এভাবে রয়েছে।

.        শ্রীগৌরাঙ্গ বর্ণনা

.                ॥ ভৈরবী॥

সোঙরো নব                        গৌরচন্দ্র
.                নাগর বনয়ারি।
নদীয়া ইন্দু                        করুণা সিন্ধু
.                ভকতবত্সলকারী॥ ধ্রু॥
.                বদনচন্দ অধর অঙ্গ
.                নয়নে গলত প্রেম-তরঙ্গ
.                চন্দ্র কোটি ভানু কোটি
.                                শোভা নিছয়ারি।
.                কুসুম-শোভিত চিকুর চাঁচর
.                ললাটে তিলক নাসিকা উজোর
.                দশন মোতিম আমিয়া হাস
.                                দামিনি ঘনয়ারি॥
.                মকর-কুণ্ডল ঝলকে গণ্ড
.                মণিকৌস্তুভদীপ্ত কণ্ঠ
.                অরুণ বসন করুণ বচন
.                                শোভা অতি ভারি।
.                মাল্যচন্দন চর্চ্চিত অঙ্গ।
.                লাজে লজ্জিত কোটি অনঙ্গ।
.                অঙ্গদ বলয়া রতন নূপুর
.                                যজ্ঞসূত্রধারি॥
.                ছত্র ধরত ধরণিধরেন্দ্র
.                গাওত যশ ভকতবৃন্দ
.                কমলা-সেবিত পাদদ্বন্দ্ব
.                                বলিয়ে বলিহারি।
.                কহত দীন কৃষ্ণদাস
.                গৌর-চরণে করত আশ।
.                পতিত-পাবন নিতাই চান্দ
.                                প্রেম দানকারী॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
খেলত ফাগু গোরা দ্বিজ-রাজ
কবি দীন কৃষ্ণদাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), দ্বিতীয় খণ্ড,
তৃতীয় শাখা, ২৭শ পল্লব, প্রকারান্তর হোরি-লীলা, পদসংখ্যা ১৪৬৪। এই পদটি, ১৯৪৬
সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ৫৩৫-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ বসন্ত॥

খেলত ফাগু গোরা দ্বিজ-রাজ।
গদাধর নরহরি দোঁহার সমাজ॥
নিতাই অদ্বৈত সহ খেলই রসাল।
খেনে গালি খেনে কেলি প্রেমে মাতোয়াল॥
সার্ব্বভৌম সঙ্গে খেলে রায় রামানন্দ।
শ্রীবাস স্বরূপ সহ মুরারি মুকুন্দ॥
দোঁহে দোঁহে খেলে ফাগু করি হরি-ধ্বনি।
গদাধর সহ খেলে গোরা দ্বিজমণি॥
কেহ নাচে কেহ গায় করতালি দিয়া।
দীন কৃষ্ণদাসে কহে আনন্দে ভাসিয়া॥

ই পদটি, ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২১৮-পৃষ্ঠায় এইরূপে
দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ বসন্ত - একতালি॥

খেলত ফাগু গোরা দ্বিজরাজ।
গদাধর নরহরি দুহুঁক সমাজ॥
নিতাই অদ্বৈত সহ খেলই রসাল।
ক্ষণে গালি ক্ষণে কেলি প্রেমে মাতোয়াল॥
সার্ব্বভৌম সঙ্গে খেলে রায় রামানন্দ।
শ্রীবাস স্বরূপ সঙ্গে মুরারি মুকুন্দ॥
দোহে দোহে ফাগু খেলে হোরি হোরি ধ্বনি।
গদাধর সহ খেলে গোরা দ্বিজমণি॥
কেহ নাচে কেহ গায় করতালি দিয়া।
দীন কৃষ্ণদাসে কহে আনন্দে ভাসিয়া॥

ই পদটি, ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫৭৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ বসন্ত॥

খেলত ফাগু গোরা দ্বিজরাজ।
গদাধর নরহরি গোহার সমাজ॥
নিতাই অদ্বৈত সহ খেলত রসাল।
ক্ষণে গালি ক্ষণে কেলি প্রেমে মাতোয়াল॥
সার্ব্বভৌম সঙ্গে খেলে রায় রামানন্দ।
শ্রীবাস স্বরূপ সহ মুরারি মুকুন্দ॥
দোঁহে দোঁহে ফাগু খেলে হরি হরি ধ্বনি।
গদাধর সহ খেলে গোরা দ্বিজমণি॥
কেহ নাচে কেহ গায় করতালি দিয়া।
দীন কৃষ্ণদাসে কহে আনন্দে ভাসিয়া॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
ঠাকুর পণ্ডিতের বাড়ী গোরা নাচে ফিরি ফিরি
কবি দীন কৃষ্ণদাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ২৫শ পল্লব,
শ্রীগৌরভক্তবৃন্দের চরিত্র-বর্ণন, পদসংখ্যা ২৩৫৮। এই পদটি, ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়
সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৫৩৮-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ ভাটিয়ারি॥

ঠাকুর পণ্ডিতের বাড়ী                                গোরা নাচে ফিরি ফিরি
নিত্যানন্দ বলে হরি হরি।
কান্দি গৌরীদাস বলে                                    পড়ি প্রভুর পদ-তলে
কভু না ছাড়িবে মোর বাড়ী॥
আমার বচন রাখ                                          অম্বিকানগরে থাক
এই নিবেদন তুয়া পায়।
যদি ছাড়ি যাবে তুমি                                     নিশ্চয় মরিব আমি
রহিব সে নিরখিয়া কায়॥
তোমরা যে দুটি ভাই                                   থাক মোর এই ঠাঞি
তবে সভার হয় পরিত্রাণ।
পুন নিবেদন করি                                         না ছাড়িহ গৌরহরি
তবে জানি পতিত-পাবন॥
প্রভু কহে গৌরীদাস                                        ছাড়হ এমত আশ
প্রতিমূর্ত্তি সেবা করি দেখ।
তাহাতে আছিয়ে আমি                                 নিশ্চয় জানিহ তুমি
সত্য মোর এই বাক্য রাখ॥
এত শুনি গৌরীদাস                                        ছাড়ি দীর্ঘনিশ্বাস
ফুকরি ফুকরি পুন কান্দে।
পুন সেই দুই ভাই                                       প্রবোধ করয়ে তায়
তমু হিয়া থির নাহি বান্ধে॥
কহে দীন কৃষ্ণদাস                                        চৈতন্য-চরণে আশ
দুই ভাই রহিলা তথায়।
ঠাকুর পণ্ডিতের প্রেমে                                 বন্দী হৈলা দুই জনে
ভকত-বত্সল তেঞি গায়॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
নাচে গোরা প্রেমে ভোরা
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, পৃষ্ঠা-৫৩৫।

শ্রীগৌরচন্দ্র

॥ তুড়ি॥

নাচে গোরা                                  প্রেমে ভোরা
ক্ষণে ক্ষণে বলে হরি হরি।
ক্ষণে বৃন্দাবন                                করয়ে স্মরণ
ক্ষণে ক্ষণে প্রাণেশ্বরী॥
যাবকবরণ                                   কটির বসন
শোভা করে গোরা গায়।
কখন কখন                                 যমুনা বলিয়া
সুরধুনীতীরে ধায়॥
তাথই তাথই                                  মৃদঙ্গ বাজই
ঝনঝন করতাল।
নয়নঅম্বুজে                                   বহে সুরনদী
গলে দোলে বনমাল॥
আনন্দ-কন্দ                                        গৌরচন্দ্র
অকিঞ্চনে বড় দয়া।
( দীন ) কৃষ্ণদাস                                করত আশ
ও পদপঙ্কজছায়া॥

ই পদটি, “কৃষ্ণদাস” ভণিতায় পাওয়া গিয়েছে, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী (হরিবল্লভ দাস) দ্বারা আনুমানিক
১৭০০ সালে  সংকলিত ও বিরচিত এবং ১৯২৪ সালে, রাধানাথ কাবাসী দ্বারা সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “শ্রীশ্রীক্ষণদা-গীতচিন্তামণি”, বিংশ ক্ষণদা - শুক্লা পঞ্চমী, পৃষ্ঠা-১৫২-এ এইরূপে।

শ্রীগৌরচন্দ্রস্য

॥ তুড়ী॥

নাচে গোরা                                  প্রেমে ভোরা
ক্ষণে বলে হরি।
ক্ষণে বৃন্দাবন                                করয়ে স্মরণ
ক্ষণে ক্ষণে প্রাণেশ্বরী॥
যাবক-বরণ                                   কটির বসন
শোভা করে গোরা-গায়।
কখন কখন                                   যমুনা বলিয়া
সুরধুনী-তীরে ধায়॥
তা থই তা থই                                 মৃদঙ্গ বাজই
ঝন ঝন করতাল।
নয়ন-অম্বুজে                                   বহে সুরনদী
গলে দোলে বনমাল॥
আনন্দ-কন্দ                                       গৌরচন্দ্র
অকিঞ্চনে বড় দয়া।
কৃষ্ণদাস                                        করত আশ
ও পদ-পঙ্কজ-ছায়া॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
মঙ্গল আরতি গৌর কিশোর
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯৩৭ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদালী
সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৫৮৬-পৃষ্ঠা। এই পদটি, ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র
সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম
সংস্করণ ১৯০২), ১৫৬-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ মঙ্গল রাগ, দশকুশী॥

মঙ্গল আরতি গৌর কিশোর।
মঙ্গল নিত্যানন্দ জোরহি জোর॥
মঙ্গল শ্রী অদ্বৈত ভকতহি সঙ্গে।
মঙ্গল গাওত প্রেম তরঙ্গে॥
মঙ্গল বাজত খোল করতাল।
মঙ্গল হরিদাস নাচত ভাল॥
মঙ্গল ধূপদীপ লৈয়া স্বরূপ।
মঙ্গল আরতি করে অনুরূপ॥
মঙ্গল গদাধর হেরি পহুঁ হাস।
মঙ্গল গাওত দীন কৃষ্ণদাস॥

ই পদটি, ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫৭৫-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ বিভাষ রাগ, একতালী তাল॥

মঙ্গল আরতি গৌর কিশোর।
মঙ্গল নিত্যানন্দ জোরহি জোর॥
মঙ্গল শ্রীঅদ্বৈত ভকতহি সঙ্গে।
মঙ্গল গায়ত প্রেম তরঙ্গে॥
মঙ্গল বাজত খোল করতাল।
মঙ্গল হরিদাস নাচত ভাল॥
মঙ্গল ধূপদীপ লৈয়া স্বরূপ।
মঙ্গল আরতি করে অনুরূপ॥
মঙ্গল গদাধর হেরি পহুঁ হাস।
মঙ্গল গাওত দীন কৃষ্ণদাস॥

ই পদটি, ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-মালা”, ৬৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে রয়েছে।

শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গের মঙ্গল আরতি।

.        ॥ বিভাস॥

মঙ্গল আরতি গৌর কিশোর।
মঙ্গল নিত্যানন্দ জোরহি জোর॥
মঙ্গল শ্রীঅদ্বৈত ভকতহি সঙ্গে।
মঙ্গল গায়ত প্রেম তরঙ্গে॥
মঙ্গল বাজত খোল করতাল।
মঙ্গল হরিদাস নাচত ভাল॥
মঙ্গল ধূপদীপ লৈয়া স্বরূপ।
মঙ্গল আরতি করে অনুরূপ॥
মঙ্গল গদাধর হেরি পহুঁ হাস।
মঙ্গল গাওত দীন কৃষ্ণদাস॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
জয় জয় মহাপ্রভু জয় গৌরচন্দ্র
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী
সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৩-পৃষ্ঠায়।

.        ॥ তুড়ী॥

জয় জয় মহাপ্রভু জয় গৌরচন্দ্র।
জয় বিশ্বম্ভর জয় করুণার সিন্ধু॥
জয় শচীসুত জয় পণ্ডিত নিমাঞি।
জয় মিশ্র পুরন্দর জয় শচী আই॥
জয় জয় নব-দ্বীপ জয় সুরধনী।
জয় লক্ষ্মী বিষ্ণুপ্রিয়া প্রভুর গৃহিণী॥
জয় জয় নবদ্বীপ-বাসী ভক্তগণ।
জয় জয় নিত্যানন্দ অদ্বৈত-চরণ॥
নিত্যানন্দ-পদ-দ্বন্দ্ব সদা করি আশ।
নাম-সংকীর্ত্তন গায় দীন কৃষ্ণদাস॥

ই পদটি উপরোক্ত প্রথম গ্রন্থে অর্থাৎ জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ
সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী”, ১৯৩৪, ১৫-পৃষ্ঠায় “কৃষ্ণদাস” ভণিতায়
এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ কৌ॥

জয় জয় মহাপ্রভু জয় গৌরচন্দ্র।
জয় বিশ্বম্ভর জয় করুণার সিন্ধু॥
জয় শচীসুত জয় পণ্ডিত নিমাঞি।
জয় মিশ্র পুরন্দর জয় শচী মাই॥
জয় জয় নবদ্বীপবাসি-ভক্তগণ।
জয় জয় নিত্যানন্দ অদ্বৈতচরণ॥
নিত্যানন্দপদদ্বন্দ্ব সদা করি আশ।
নামসংকীর্ত্তন গাইল কৃষ্ণদাস॥

ই পদটি, আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং
সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ (১৯২৭),
৪র্থ খণ্ড, ৪র্থ শাখা-২য় ভাগ, ৩২শ পল্লব, অষ্টকালীয় নিত্য-লীলা, পদসংখ্যা ২৮৪৭ এবং
১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৫৩৬-
পৃষ্ঠায় এবং ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”,
৫৭৫-পৃষ্ঠায় “কৃষ্ণদাস” ভণিতায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে।

.        অথ প্রাতঃকাল-লীলা

.        শ্রীগৌরচন্দ্রো যথা।

.        ॥ কৌ॥

জয় জয় মহাপ্রভু জয় গৌরচন্দ্র।
জয় বিশ্বম্ভর জয় করুণার সিন্ধু॥
জয় শচীসুত জয় পণ্ডিত নিমাঞি।
জয় মিশ্র পুরন্দর জয় শচী আই॥
জয় জয় নব-দ্বীপ জয় সুরধনী।
জয় লক্ষ্মী বিষ্ণুপ্রিয়া প্রভুর গৃহিণী॥
জয় জয় নবদ্বীপ-বাসী ভক্তগণ।
জয় জয় নিত্যানন্দ অদ্বৈত-চরণ॥
নিত্যানন্দ-পদ-দ্বন্দ্ব সদা করি আশ।
নাম-সংকীর্ত্তন গাইল কৃষ্ণদাস॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আরে রে নিন্দুক ভাই তোর কি রে বোধ নাই
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-
তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১০-পৃষ্ঠায়।

॥ ধানশী॥

আরে রে নিন্দুক ভাই                         তোর কি রে বোধ নাই
বৃথাই ধরিলা দোন আঁখি।
সব অবতারসার                                   শ্রীগৌরাঙ্গ অবতার
তুমি তারে রৈয়াছ উপেখি॥
সুরাপান অত্যাচার                                ভ্রুণহত্যা ব্যভিচার
তন্ত্রধর্ম্মে ভারত ব্যাপিল।
যক্ষ রক্ষ বিষহরি                                   নানা উপহার করি
জীব সবে পূজিতে লাগিল॥
দেখিয়া জীবের দৈন্য                                প্রভু মোর শ্রীচৈতন্য
নবদ্বীপে প্রকট হইলা।
তারক ব্রহ্ম হরিনাম                                যাচি সবে করি দান
ধর্ম্মের সে গ্লানি ঘুচাইলা॥
জগাই মাধাই আদি                                    দুষ্কৃতের নিরবধি
হরিনামের করিলা উদ্ধার।
ব্রাহ্মণ যবনে মিলি                                  করাইলা কোলাকুলি
পরতেকে দেখ একবার॥
নাস্তিকে করিলা ভক্ত                                খঞ্জে কৈলা গতিশক্ত
অন্ধের করিলা চক্ষুদান।
কহে দীন কৃষ্ণদাস                                     নহিলে ইথে বিশ্বাস
তোর আর নাহি পরিত্রাণ॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
রাঢ় দেশে নাম, একচক্রা গ্রাম, হাড়াই পণ্ডিত ঘর
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-
তরঙ্গিণী”, (প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২৭৩-পৃষ্ঠায়।

॥ শ্রীরাগ॥

রাঢ় দেশে নাম, একচক্রা গ্রাম, হাড়াই পণ্ডিত-ঘর।
শুভ মাঘ মাসি, শুক্লা ত্রয়োদশী, জনমিলা হলধর॥
হাড়াই পণ্ডিত, অতি হরষিত, পুত্র-মহোত্সব করে।
ধরণী মণ্ডল, করে টলমল, আনন্দ নাহিক ধরে॥
শান্তিপুর-নাথ, মনে হরষিত, করি কিছু অনুমান।
অন্তরে জানিলা, বুঝি জনমিলা, কৃষ্ণের অগ্রজ রাম॥
বৈষ্ণবের মন, হৈল প্রসন্ন, আনন্দ-সাগরে ভাসে।
এ দীন পামর, হইবে উদ্ধার, কহে দীন কৃষ্ণদাসে॥

ই পদটি, আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ১৭শ
পল্লব, জন্মলীলা, পদসংখ্যা ১১১৬ এবং ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব
পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৫৩৬-পৃষ্ঠায়, “দুখী কৃষ্ণদাস” ভণিতায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

ততঃ শ্রীনিত্যানন্দচন্দ্রাবির্ভাবঃ।

॥ শ্রীরাগ॥

রাঢ়দেশে নাম                                  একচক্রা গ্রাম
হাড়াই পণ্ডিত-ঘর।
শুভ মাঘ-মাসি                                শুক্লা ত্রয়োদশী
জনমিলা হলধর॥
হাড়াই পণ্ডিত                                অতি হরষিত
পুত্র-মহোত্সব করে।
ধরণী-মণ্ডল                                     করে টলমল
আনন্দ নাহিক ধরে॥
শান্তিপুর-নাথ                                   মনে হরষিত
করি কিছু অনুমান।
অন্তরে জানিলা                                বুঝি জনমিলা
কৃষ্ণের অগ্রজ রাম॥
বৈষ্ণবের মন                                    হৈল পরসন্ন
আনন্দ-সাগরে ভাসে।
এ দীন পামর                                    হইবে উদ্ধার
কহে দুখী কৃষ্ণদাসে॥

ই পদটি, ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-
মালা”, ৪১-পৃষ্ঠায় “দীন কৃষ্ণদাস” ভণিতায় এই রূপে দেওয়া হয়েছে।

॥ শ্রীরাগ॥

রাঢ়দেশে নাম                                 একচাকা গ্রাম
হারাই পণ্ডিত ঘর।
শুভ মাঘ মাসি                                শুক্লা ত্রয়োদশী
জনমিলা হলধর॥
হারাই পণ্ডিত                                 অতি হরষিত
পুত্র মহোত্সব করে।
ধরণী মণ্ডল                                      করে টলমল
আনন্দ নাহিক ধরে॥
শান্তিপুর নাথ,                                   মনে হরষিত,
করি কিছু অনুমান।
অন্তরে জানিলা,                                বুঝি জনমিলা,
কৃষ্ণের অগ্রজ রাম॥
বৈষ্ণবের মন                                       হৈল প্রসন্ন
আনন্দ সাগরে ভাসে।
এ দীন পামর,                                    হইবে উদ্ধার
কহে দীন কৃষ্ণদাসে॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আজু কুঞ্জে রাধা মাধব ঝুলরি
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-
পদলহরী”, ৫৭৫-পৃষ্ঠা।

॥ কল্যাণী রাগ - চঞ্চুপুট তাল॥

আজু কুঞ্জে রাধা মাধব ঝুলরি।
সখীগণ মেলি করত গান,
ঘন ঘন ঘন মুরলী সান,
লোচনে লোচনে তোড়ই মান,
নাসায় বেশয় লোলরি॥
হিন্দোলা রচিত কুসুম পুঞ্জ,
অলিকুল তাহে বিহরে গুঞ্জ,
সারি শুক পিক বেঢ়ল কুঞ্জ,
ঘেরি ঘেরি ঘেরি বোলরি।
ঝুলনা ধমকে চমকে রাই,
বিহসি মাধব ধরই তাই,
আনন্দে অবশ পরশ পাই,
চাপি ধরই কোলরি॥
প্রিয় সহচরী টানই ভোরি,
অলসে অবশ হইলা গোরি,
ঘুমা অল ধনী রসে বিভোরি,
দীন কৃষ্ণদাস বোলরি॥

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
পাসরা না যায় আমার গোরাচাঁদের লীলা
কবি দীন কৃষ্ণদাস
১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-
তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২০-পৃষ্ঠায় এই পদটি নরহরির ভণিতায় রয়েছে। টীকায় উল্লেখ
রয়েছে যে, কোন কোন গ্রন্থে এই পদটি কৃষ্ণদাসের ভণিতায় পাওয়া গিয়েছে, এই রূপে।

॥ বিভাষ॥

পাসরা না যায় আমার গোরাচাঁদের লীলা।
যাঁর গুণে পশুপাখী ঝুরয়ে, গড়িয়া পড়য় শিলা॥ ধ্রু॥
যাঁহার নামের লাগি                                     মহেশ হইলা যোগী
বিরিঞ্চি ভাবয়ে অনুক্ষণে।
ব্রহ্মার দুর্ল্লভ নাম                                       সুলভ করিয়া পহুঁ
যাচিঞা দেওল ত্রিভুবনে॥
শ্রীগৌরাঙ্গ অঙ্গে শোভে                                পুলক কদম্ব তাহে
অপরূপ শ্রীঅঙ্গের শোভা।
আনন্দ সলিলে ভাসে                                   এই দীন কৃষ্ণদাসে
দেখিয়া সে কনকের আভা॥১

১। - কোন কোন গ্রন্থে এই পদটি কৃষ্ণদাসের ভণিতায় পাওয়া গিয়েছে। সেখানে ভণিতার পংক্তি এইরূপ
“আনন্দে বিভোর অতি, নরহরি দাস তথি”। এই পদটি অনির্দিষ্ট নরহরির পাতায়ও আমরা তুলে দিয়েছি।

.            *************************              
.                                                                                 
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর