ফাল্গুন পূর্ণিমা মঙ্গলের সীমা ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, দ্বাদশ তরঙ্গ, ৭৬৪-পৃষ্ঠা।
এই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৪২-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। নরহরি চক্রবর্তী বিরচিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থের “নরহরি” ও “নরহরি দাস” ভণিতাযুক্ত পদের মধ্য থেকে নেওয়া বলে এই পদটি নরহরি চক্রবর্তীর পদ বলে বিবেচিত হয়েছে।
ফাল্গুন পূর্ণিমা শুভক্ষণে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, দ্বাদশ তরঙ্গ, ৭৬৪-পৃষ্ঠা।
॥ পুনর্বসন্তঃ॥
ফাল্গুন পূর্ণিমা শুভক্ষণে। পুত্র প্রসবিয়া শচী চাহে পুত্র পানে॥ তিলে তিলে কত উঠে চিতে। কনক নবনী ভ্রমে নারে পরশিতে॥ কত না যতনে কোলে করে। পুত্রের জনম জানাইয়া মিশ্রবরে॥ জগন্নাথ বিপ্র শিরোমণি। ভাসে সুখসমুদ্রে পুত্রের জন্ম শুনি॥ কত সাধে চলয়ে ধাইয়া। না ধরে ধৈরয চান্দমুখ নিরখিয়া॥ লইয়া আপন প্রিয়গণে। করয়ে মঙ্গল কর্ম্ম পুত্রের কল্যাণে॥ চতুর্দ্দিগে জয় জয় ধ্বনি। সবে কহে ধন্য ধন্য জনক জননী॥ সবার অন্তরে বাঢ়ে সুখ। সুরধুনী ধরণী বিসরে সব দুখ॥ দশ দিক্ হইল উজ্জ্বল। পশু পক্ষী বৃক্ষ লতা প্রফুল্ল সকল॥ নরহরি কহিতে কি আর। গৌরচন্দ্রোদয়ে গেল তাপ অন্ধকার॥
এই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ৪২-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। নরহরি চক্রবর্তী বিরচিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থের “নরহরি” ও “নরহরি দাস” ভণিতাযুক্ত পদের মধ্য থেকে নেওয়া বলে এই পদটি নরহরি চক্রবর্তীর পদ বলে বিবেচিত হয়েছে।
রাই কানু রসের আবেশে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪৩৬-পৃষ্ঠা।
কি বলিব ওগো জগতে অতুল ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪২৭-পৃষ্ঠা।
॥ পুনস্তত্রৈব॥ কামোদঃ॥
কি বলিব ওগো, জগতে অতুল, রাধামাধবের পিরীতি খানি। প্রাণ এক তনু, ভিন ভিন কেবা, গড়িয়াছে কত আনন্দ মানি॥ যদি বল দুঁহু, এক ইথে কেন, হইল দোহার বরণ ভিনো। তাহ তুয়া প্রতি, কহয়ে কিঞ্চিৎ, যতন করিয়া সে কথা শুনো॥ বিবিধ বরণ, আছে তাথে শ্যাম, গৌরবরণের অধিক শোভা। তাহার অবধি, দেখা’য়া জগতে, হাসে জনগণ নয়নলোভা॥ আর বলি ওহে, কালিয়া চঞ্চল, যখন দেখয়ে রঙ্গিণী রাধে। আতুর হইয়া, তখন দুবাহু, পসারিয়া কোরে করয়ে সাধে॥ সে সময়ে যদি, বিপক্ষ লোকেতে, হঠাৎ নিকটে দেখে এ রীতি। ঘন তড়িতাদি, ভ্রমে ভুলে কেহ, লখিতে নারয়ে কৌতুক অতি॥ আর বলি সেই, সুকবি বিধাতা, বহুজনে অনেক আনন্দ দিতে। নিরখিয়া শ্যাম, গৌর রুচির, উপমা রচিব অনেক মতে॥ এই হেতু কত, কত ভিন নহে, রাইপ্রেমে গঢ়া শ্যামের দেহা। রাধা কাণু তনু, প্রেমময় এই, জগতে বিদিত দেহের লেহা॥ এ দোঁহার রীতি, আনে কি জানিব, জানয়ে কেবল রসিকজনে। এ রসে বঞ্চিত, যে হইল নর,-হরি তাহে পশু সমান গণে॥
ওহে প্রাণসম সখি সুখময়ি ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪২৬-পৃষ্ঠা।
॥ গীতে যথা---পৌরবী॥
ওহে প্রাণসম সখি সুখময়ি!, বিকাইনু মুই তোমার গুণে॥ এবে কহি শুন, শ্যামসুন্দরের অধিক পিরীতি যাহার সনে॥ চন্দ্রাবলী ব্রজে, বিদিতা সুন্দরী, অপরূপরূপে লজ্জিতা রমা। নবীনযৌবনী, রসিকিনী ধনি, সে গুণ চরিতে নাহিক সমা॥ সুবলিত নব,-নিকুঞ্জমন্দিরে, শ্যামসহ রঙ্গে বিলসে নিতি। শ্যামরয়ময়, মাতয়ে তেমতি, তাঁর প্রেমাধীন কে বুঝে রীতি॥ পরানন্দসিন্ধু, মাঝে ভাসে যবে, সে ধনি রতন-পরশ ক’রে। মখশশি সুধা, পানে নিমগন, তখন নাগরে কিছু না স্ফুরে॥ যদি সে সমরে, রাধা তনুগন্ধ, কিঞ্চিৎ সে নাসা পরশে গিয়া। তখনি তাহারে, তেজিয়া চঞ্চল কালা ধায় যেন পাগল হৈয়া॥ কি আর বলিব, ইথে জানো চিতে, যা সনে কাণুর অধিক লেহা। নরহরি হেন, প্রেমের নিছনি, গণইতে গুণ কে বাঁধে থেহা॥
রাধা সুধামুখী সুখি সখীগণে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪২২-পৃষ্ঠা।
সুন্দরী সখীসহ করিয়া যুগতি ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪২০-পৃষ্ঠা।
॥ গীতে যথা। যথা রাগঃ॥
সুন্দরী সখীসহ, করিয়া যুগতি, শ্যামে মিলিবারে চলয়ে রঙ্গে। নিকুঞ্জে প্রবেশি, বৈসে একা সুখে, সুচারু বসন ঝাপিয়া অঙ্গে॥ নাগর বর ত,-রুতলে তরল, রাই পথ হেরে প্রেমের ভরে। কুঞ্জেতে সে ধনি,-পানে চা’য়া ধা’য়া, যা’য়া পুছে বৃন্দাদেবীরে ধীরে॥ কহ কহ নব,-নিকুঞ্জে একাকী, কেবা বসিযাছে অপূর্ব্ব বেশে। হেন শোভা কভু, না দেখি ভূমাঝে, উমার মূরতি উপমা কিসে॥ শুনি বৃন্দা, ব্রজরাজ সুত প্রতি, কহে ইহ এই নিকুঞ্জদেবী। মোর যত পরা,-ক্রম তাহা তুমি, জানিহ উঁহার চরণ সেবি॥ শুনি বাণী বিদ,-গদ গতিপর, পরমাদর দরশ আশে। চঞ্চলচিত, চারুকুঞ্জে গিয়া, দাঁড়ায় ও নব দেবীর পাশে॥ যুড়ি দুই কর, কহে আজু সব, সাধ সিধি হবে তোমারে সেবি। বঞ্চনা না করি, কর দয়া সুখ,-হবে নিবেদিয়ে শুনহ দেবী!॥ মোর প্রাণপ্রিয়া, হিয়ার পুতলি, বৃষভানু সুতা রমণি মণি। তাঁর অদরশ, না সহে পরাণে, কত শত যুগ ক্ষণেকে গণি॥ তেঁহ কুলবত, অতি মৃদু সদা, প্রাণ কাঁপে গুরুজনের ডরে। তাহে শুভঙ্করী, এই ক‘রো যেন, তাঁরে কেহ কিছু কহিতে নারে॥ এত কহি কাণু, প্রণময়ে পদ, পরশি কুসুম অঞ্জলি দিয়া। তা দেখি ললিতাদি, থাকিয়া গুপতে, হাসে অতিশয় পুলক হিয়া॥ বৃন্দাদেবী কহে, কি কর কালিয়া, এরূপ পূজনে কি ফল পা’বে। প্রতি অঙ্গ দিয়া, পূজ প্রতি অঙ্গ, তবে সে এ দেবী প্রসন্ন হবে॥ শুনি শশিমুখী, ঘুঙটে বদন,-রাখি মৃদু হাসে আনন্দে ভাসি। নেত্রকোণে নিবা,-রয়ে যে বৃন্দারে, সে প্রকাশয়ে পুন ঈষত হাসি॥ মদন মদে মাতিয়া নাগর, হেরি হাসি ভাসি আনন্দ জলে। আইস আইস মোর প্রাণ প্রিয়া দেবি!, ইহা বুলি তুলি করয়ে কোলে॥ ললিতা লতামাঝ, তেজিয়া নিকটে, আসি কহে কত বুঝাব আমি। কুঞ্জ দেবী বলি, ভয় নাহি কারো, বিপরীত রতি লম্পট তুমি॥ ইথে, দোষ না মানো ?, শুনিয়া কহয়ে, যাবে দোষ তুহা পরশ পা’য়া। ইহা শুনি নর,-হরি সহসহ,-চরী হাসে মুখে বসন দিয়া॥
সখীসহ রাই শ্যামরায় ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪১৭-পৃষ্ঠা।
আজু কি নব পুণিম নিশা ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪১৬-পৃষ্ঠা।
॥ পুনঃ কেদারঃ॥
আজু কি নব পুণিম নিশা। যমুনা পুলিংন ঝলকহ রাসে শশি উজোর এ দিশা॥ রাই কাণু কি মধুর ছাঁদে। নাচে দুহুঁ অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়া ভুজা আরোপিয়া কাঁধে॥ তিলে তিলে কি কৌতুক চিতে। দোঁহেবায় বাঁশি, মিশাইয়া মুখ, তার কি উপমা দিতে॥ চারুনয়নে নয়ন নিয়া। অধরে অধর, পরশয়ে রস, আবেশে উলাস হিয়া॥ বাম দক্ষিণ যুগলকরে। প্রকাশয়ে কত, ভাঁতি অভিনয়, মদন ধৈরয হরে॥ তা তা তাথৈ তাথৈ কহে। অনিবার রব বচনচান্দে কি অমিয়া ধারা বহে॥ দৃমি দৃমিকি মৃদঙ্গ বাজে। মহীতলে তাল, ধরয়ে চরণে, কি নব নূপুর সাজে॥ ললিতাদি দেখি সে না শোভা। নটন ভঙ্গিতে, গায় নানা মতে, নরহরি মনলোভা॥
নাচে রাই রমণীর মণি ভণিতা নরহরি কবি নরহরি চক্রবর্তী নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত ও সংকলিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, পঞ্চম তরঙ্গ, ৪১৫-পৃষ্ঠা।