কবি নরহরি সরকারের নির্দিষ্টভাবে জ্ঞাত পদাবলী
*
রাই বিপতি শুনি বিদগদ শিরোমণি
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
১৬৪৩-১৬৭৬ সময়কালে “গোপাল দাস” ভণিতার কবি রামগোপাল দাসের সংকলিত ও বিরচিত, কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, সুকুমার সেন ও প্রফুল্লচন্দ্র পাল
সম্পাদিত মুদ্রিত, “রসকল্পবল্লী” গ্রন্থের, অষ্টম কোরকে, ১১২ পৃষ্ঠা।


অথ কৃষ্ণস্য অভিসার তত্র পদং শ্রীসরকার ঠাকুর---

রাই বিপতি শুনি                                বিদগদ শিরোমণি
পুছইতে গদগদ ভাষা।
নিজ মন্দির তেজি                                চলু বরনাগর
পুন পুন পরসই নাসা॥ ইতি

ই পদটি, “হরিবল্লভ” ভণিতার কবি বিশ্বনাথ চক্রবর্তী সংকলিত “ক্ষণদা গীত চিন্তামণি” গ্রন্থের চতুর্দশ
ক্ষণদা - কৃষ্ণা চতুর্দশী, ১১১-পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ রূপে রয়েছে। এই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী
মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”, ৫০৩-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ পঠমঞ্জরী॥

রাইর বিপতি শুনি                                বিদগদ-শিরোমণি
পুছই গদ গদ ভাষা।
নিজ মন্দির তেজি                                চলু বর নাগর
পুন পুন পরশই নাসা॥
বিছুরল চরণ-                                        রণিত মণি-মঞ্জীর
বিছুরল মুরলীকো রন্ধ্রে।
বিছুরস বেশ                                ভূষণ ভেল বিগলিত
বিগলিত শিখি-পুচ্ছ-চন্দ্রে॥
মলয়জ-পরিমলে                        দশ দিশ আমোদিত
যামিনী বহে অতি পুঞ্জে।
লালস দরশ                                পরশে দুহুঁ আকুল
চিরদিনে মিলল কুঞ্জে॥
দুহুঁ মুখ হেরইতে                        অথির ভেল দুহুঁ তনু
পরশিতে ভুজে ভুজে কাঁপ।
নরহরি হৃদি মাঝে                                অপরুপ জাগল
জলধরে বিধুবর ঝাঁপ॥

টীকা -
রাধার বিপত্তির কথা শুনিয়া রসিকশ্রেষ্ঠ শ্রীকৃষ্ণ গদগদ হইয়া তাঁহার কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। সেই
শ্রেষ্ঠ নাগর নিজের গৃহ ত্যাগ করিয়া চলিলেন ; যাইতে যাইতে বরংবার নাসা স্পর্শ করিতে লাগিলেন---খুব
দ্রুতবেগে যাইবার জন্য নিশ্বাস জোরে জোরে পড়িতে লাগিলেন---খুব দ্রুতবেগে যাইবার জন্য নিশ্বাস জোরে
জোরে পড়িতে লাগিল। তিনি চরণের মণিনূপুর ভুলিলেন, মুরলীর রন্ধ্র ভুলিলেন, বেশ ভুলিলেন, অলঙ্কার
খুলিয়া পড়িতে লাগিল, মাথার চূড়াও খুলিয়া যাইতে লাগিল।
সেই সময়ে চন্দনের গন্ধে দশ দিক্ আমোদিত হইল ; রাত্রি তখন গভীর। দুই জনেই দুইজনকে দেখিবার ও
স্পর্শ করিবার জন্য ব্যাকুল। বহুদিন পরে উভয়ের কুঞ্জে মিলন হইল। নরহরির হৃদয়ের মাঝে এক অপরূপ
চিত্র জাগিল---যেন মেঘ (শ্যামমেঘ) চন্দ্রকে (রাধাকে) ঝাঁপিল।
---বিমান বিহারী মজুমদার, “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”, ৫০৩-পৃষ্ঠা॥

ই পদটি ১৮৪৯ সালে প্রকাশিত, গৌরমোহন দাস সংকলিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “পদকল্পলতিকা”,
৫০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

শ্রীকৃষ্ণের অভিসার।
॥ কামোদ॥
রাই বিপতি শুনি বিদগধ শিরোমণি পুছই গদ গদ ভাষা।
নিজ মন্দির ত্যজি চলু বর নাগর পুনঃ পুনঃ পরশিয়া নাসা॥ ধ্রু॥
কিছুরল চরণে রণিত মণি মঞ্জীর বিছুরণ মুরলীক রন্ধ্রে।
বিগলিত কেশ বসন ভেল বিগলিত বিগলিত শিখি পুচ্ছ চন্দ্রে॥
পরিমলে আকুল ভরল দশ দিশ যামিনী রহু রহু পুঞ্জে।
চিরদিন দরশন পরশ রস লালস ত্বরিতহি মিলল কুঞ্জে॥
দুহু মুখ দরশনে মুগধ ভেল দুহু জন কর ধরইতে দুহু কাঁপি।
নরহরি হৃদয় মাঝে অপরুপ জাগল জলধরে বিধুবর ঝাঁপি॥

ই পদটি ১৮৭০ সাল নাগাদ চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা সংগৃহীত এবং রাজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা
১৯২২ সালে প্রকাশিত “শ্রীশ্রীপদামৃতসিন্ধু”, ২৩১-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

রূপোল্লাস।
॥ কামোদ॥
রাই বিপদি শুনি, বিদগধ শিরোমণি, পুছই গদ গদ ভাষা।
নিজ মন্দির তেজি, চলু বর নাগর, পুন পুন পরশিয়া নাসা॥ ধ্রু॥
বিছুরল চরণে বলিত মণিমঞ্জীর, বিছুরল মুরলীক রন্ধ্রে।
বিগলিত কেশ, বসন ভেল বিগলিত, বিগলিত শিখীপুচ্ছ চন্দ্রে॥
পরিমলে আকুল, ভরল দশ দশ, যামিনী রহু রহু পুঞ্জে।
চিরদিন দরশন, পরশ রস লালস, ত্বরিতহিঁ মিলল কুঞ্জে॥
দুহুঁ মুখ দরশনে, মুগধ ভেল দুহুজন, কর ধরইতে দুহুঁ কাঁপি।
নরহরি হৃদয় মাঝে, অপরুপ জাগল, জলধরে বিধুবর ঝাঁপি॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
কি না হৈল সে মোরে কানুর পিরিতি
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
রাধামোহন ঠাকুর (রাধামোহন দাস) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সালে সংকলিত ও বিরচিত
এবং ১৮৭৮ সালে, রামনারায়ণ বিদ্যারত্ন দ্বারা সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “পদামৃত সমুদ্র”, ৪২৭ পৃষ্ঠা। রাধামোহন ঠাকুর নরহরি চক্রবর্তীর পূর্বতন অথবা
সমসাময়িক কবি ও সংকলক ছিলেন। তাঁর পদামৃত সমুদ্র গ্রন্থে এই একটি মাত্র নরহরি
ভণিতার পদ রয়েছে। তাই এই পদটি নরহরি সরকার ঠাকুরের পদ বলেই ধরে নেও যায়।

॥ ভাটিআরিরাগৈক তালিতালাভ্যাং॥

কি না হৈল সৈ মোরে কানুর পিরিতি।
আখি ঝুরে পুলকিত প্রাণ কান্দে নিতি॥
খাইতে সো আথ নাই নিন্দ গেল দূরে।
নিরবধি প্রাণ মোর কাহ্ণু লাগু ঝুরে॥
যে না জানে এনা রস সেই আছে ভাল।
মরমে রহল মোর কাহ্ণু প্রেম শেল॥
নবীন পাউখ মীন মরণ না জানে।
শ্যাম অনুরাগে চীত ধৈরজ না মানে॥
আগমে পিরিতি মোর নিগমেতে রাস।
কহে নরহরি মুঞি পড়িলুঁ পাথার॥

ই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর
পদাবলী-সাহিত্য”, ৩৯৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। তাঁরাও পদটি রাধামোহন
ঠাকুরের “পদামৃত সমুদ্র” থেকেই পেয়েছিলেন।

কি না হৈল সই মোরে কাহ্নুর পিরিতি।
আঁখি ঝুরে পুলকিত প্রাণ কান্দে নিতি॥
খাইতে সোআস্ত নাই নিন্দ গেল দূরে।
নিরবধি প্রাণ মোর কাহ্নু লাগি ঝুরে॥
যে না জানে এনা রস সেই আছে ভাল।
মরমে রহল মোর কাহ্নু প্রেম শেল॥
নবীন পাউখ মীন মরণ না জানে।
শ্যাম অনুরাগে চীত ধৈরজ না মানে॥
আগমে পিরিতি মোর নিগমেতে সার।
কহে নরহরি মুঞি পড়িলু পাথার॥

পাঠান্তক ও টীকা -
কীর্তনানন্দে (গৌরসুন্দর দাস সংকলিত), ২৮৬-পৃষ্ঠায় এই পদটি চণ্ডীদাসের ভণিতায়
রয়েছে। সেই পদের শেষ দুটি পংক্তি . . .

নিগূঢ় পিরিত আগুনের ঘর।
ইথে চণ্ডীদাস বড় হইল ফাঁফর॥

ডঃ সুকুমার সেন বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের ৯৮২ সংখ্যক পুথিতে পদটি “নরহরি” ভণিতায়
পাইয়াছেন। কিন্তু শ্রীযুক্ত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, সা.কু. এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের
২৯৩ পুথিতে “বড়ু চণ্ডীদাস” ভণিতায়, ঢাকা মিউজিয়াম ৫ এ “দ্বিজ চণ্ডীদাস” ভণিতায়,
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৮ সংখ্যক পুথিতে শুধু “চণ্ডীদাস” ভণিতায় এবং ১৬৬৩
শকের অনুলিখিত ঢাকা মিউজিয়ামের এক পুথিতে “জ্ঞানদাস” ঠাকুরের নামে পাইয়াছেন।
---বিমান বিহারী মজুমদার, “পাঁচশত বত্সরের পদাবলী”॥
---বিমান বিহারী মজুমদার, “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
কি লাগিয়া মোর গৌর-সুন্দর
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫), ১ম খণ্ড, ১ম শাখা, ৪র্থ পল্লব,
বসন্তকালোচিত বাসকসজ্জা, পদসংখ্যা ৩০৭। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র
রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা।

অথ বাকসজ্জা।
তদুচিত-শ্রীগৌরচন্দ্র।
॥ ধানশী॥

কি লাগিয়া মোর                               গৌর-সুন্দর
বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন                                     রতন-ভূষণ
সাজয়ে অঙ্গের মাঝে॥
আপন বপুর                                   ছাহ হেরিয়া
চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ                                না মিলল পহুঁ
এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি                                মোর গৌরহরি
ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল নয়ানে                                চাহে পথ পানে
কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদ বিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১১৪-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রাগিণী ধানশী॥

কি লাগিয়ে মোর গৌর-সুন্দর বসিএ গৃহের মাঝে।
বসন ভূষণ রতন আসন সাজএ অঙ্গের সাঝে॥
আপন বপু ছাহ হেরিএ চমকি উঠএ মনে।
কি লাগিএ পহু না মিলে অবহু এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি মোর গৌরহরি ভাবিয়া রাইর দশা।
সজল নয়ানে চাহে পথ পানে কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৯৬-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া
রয়েছে। এই পদের রচয়িতা কোন নরহরি তা বলা সম্ভব হয় নি। নরহরি সরকার ও নরহরি চক্রবর্তী
ছাড়াও অন্য কোনো কবি নরহরির পদ কি না তাও বা কে বলতে পারে!

॥ ধানশী॥

কি লাগিয়ে আমার গৌরাঙ্গসুন্দর বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন রতন ভূষণ সাজয়ে অঙ্গের সাজে॥
আপন বপুর ছাছ নেহারিয়া চমকি উঠিয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ না মিলল পহুঁ, এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি, মোর গৌরহরি, ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল-নয়নে, চাহে পথ পানে, কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-
মালা”, ৩৪৪-পৃষ্ঠা। প্রথম পংক্তির ভিন্নতার জন্য  আমরা “কি লাগি আমার গৌরাঙ্গ সুন্দর” শিরোনামে
একটি স্বতন্ত্র পদ হিসেবেও এখানে তুলছি।

॥ ধানশী॥

কি লাগি আমার                              গৌরাঙ্গ সুন্দর
বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন                                      রতন ভূষণ
সাজায় অঙ্গের সাজে॥
আপন বপুর                                     ছাছ হেরিয়া
চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহু                                 না মিলল পহু
এত বা বিলম্ব কেন (কেনে ?)॥
কহে নরহরি                                 মোর গৌরহরি
ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল নয়ানে                                 চাহে পথ পানে
কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ১৪৫-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

॥ তথারাগ॥

কি লাগি আমার                                গৌরাঙ্গ সুন্দর
বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন                                       রতন ভূষণ
ত্যজয়ে অঙ্গের সাঝে॥
আপন বপুর                                  ছায়া নেহারিয়া
চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ                                  না মিলল পহুঁ
এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি                                   মোর গৌরহরি
ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল নয়নে                                  চাহে পথ পানে
কহে গদগদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত, ৩৪৪৫টি পদ বিশিষ্ট, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত  পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, পদ সংখ্যা- ৩১, ২৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি কবিরাজ অর্থাৎ
চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

কি লাগি আমার গৌরাঙ্গ সুন্দর
.                                        বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন রতন ভূষণ      
.                                        ত্যজয়ে অঙ্গের সাঝে॥
আপন বপুর ছায়া নেহারিয়া
.                                        চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ না মিলল পহুঁ
.                                        এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি মোর গৌরহরি
.                                        ভাবিয়া রাইএর দশা।
সজল নয়নে চাহে পথ পানে
.                                        কহে গদগদ ভাষা॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
নয়ানের দাগ বয়ানে লেগেছে
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর বা নরহরি চক্রবর্তী।
১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-মালা”,
৩৬১-পৃষ্ঠা।

॥ বিভাষ॥

নয়ানের দাগ                                বয়ানে লেগেছে
কালোর উপর কাল।
প্রভাতে উঠিয়া                                বদন দেখিনু
দিন যাবে আজু ভাল॥
তাম্বুলের দাগ                                বয়ানে লেগেছে
ঘুমে ঢুলু ঢুলু আঁখি।
আমা পানে চাঞা                        ফিরিয়া দাঁড়াও হে
ভাল করি রূপ দেখি॥
নীল কমল                                        বদন সুন্দর
ঝামর হয়্যাছে দেহ।
কোন রসবতী                                পায়্যা রসনিধি
নিঙ্গাড়ি লয়্যাছে সেহ॥
কোন রসবতী                                পায়্যা প্রাণপতি
সব রস হেরি নেল।
কমল বদনে                                    মধু পিবইতে
ভ্রমর বরণ ভেল॥
কুটিল নয়ানে                                 কহিছে সুন্দরী
করিয়া অধিক তাড়া।
কহে নরহরি                                  আপন স্বভাব
ছাড়িতে না পারে চোরা॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
সোণার বরণ গৌরাঙ্গসুন্দর
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ (১৯২৩), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ১১শ পল্লব, দশ দশা,
পদসংখ্যা ১৯০৮। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই
পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা।

অথ ব্যাধি-দশা।
তদুচিত শ্রীগৌরচন্দ্রো যথা।
॥ কামোদ॥

সোণার বরণ                                  গৌরাঙ্গসুন্দর
পাণ্ডুর ভৈ গেল দেহ।
শীতে ভীত যেন                                কাঁপায়ে সঘন
সোঙরি পুরব লেহ॥
কিছু না কহই                                   দীঘ নিশ্বাসই
চিত্রের পুতলী পারা।
নয়নযুগল                                   বাহি পড়ে জল
যেন মন্দাকিনী-ধারা॥
ঘামে তিতি গেল                                সব কলেবর
না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত                                     কখন রোদন
কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি                                   মোর গৌরহরি
চাহয়ে রঙ্কের পারা।
হরি হরি বোলে                                ভুজ যুগ তোলে
মরম বুঝিবে কারা॥

ই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ৪২৬-পৃষ্ঠায়
এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রাগিণী কামোদ তালোচিত॥

সোণার বরণ গৌরাঙ্গ সুন্দর পাণ্ডুর ভৈ গেল দেহ।
শীত ভীত জেন কাপয়ে সঘন শোঙরি পুরুব লেহ॥
কিছুই না হই দীর্ঘ নিশ্বাসহি চিত্তের পুথলি পারা।
নয়নযুগল বহি পড়ে জল জেন মন্দাকিনীধারা॥
ঘামে তিতি গেল সব কলেবর না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত কখন রোদন কিবা করু পরলাপে॥
কহে নরহরি মোর গৌরহরি চাহএ রেএর পারা।
হরিহরি বোলে ভুজযুগ তুলি মরম বুঝিবে কেবা॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ২০৪-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে
। এই পদের রচয়িতা কোন নরহরি তা বলা সম্ভব হয় নি। নরহরি সরকার ও নরহরি চক্রবর্তী ছাড়াও
অন্য কোনো কবি নরহরির পদ কি না তাও বা কে বলতে পারে!

॥ কামোদ॥

সোনার বরণ, গৌরসুন্দর পাণ্ডুর ভৈগেল দেহ।
শীত ভীত কেন, কাঁপয়ে সঘন, সোঙরি পূরব লেহ॥
কিছু না কহই, দীঘ নিশ্বাসই, চিত্রের পুতলি পারা।
নয়নযুগল, বাহি পড়ে জল, যেন মন্দাকিনী ধারা॥
ঘামে তিতি গেল, সব কলেবর, না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত, কখন রোদন, কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি, মোর গৌরহরি, চাহয়ে রঙ্কের পারা।
হরি হরি বোলে, ভুজযুগ তোলে, মরম বুঝিবে কেবা॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”,
৫২৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ কামোদ॥

সোণার বরণ                                  গৌরাঙ্গসুন্দর
পাণ্ডুর ভৈ গেল দেহ।
শীতে ভীত যেন                                কাঁপায়ে সঘন
সোঙরি পুরব লেহ॥
কিছু না কহই                                  দীঘ নিশ্বাসই
চিত্রের পুতলী পারা।
নয়নযুগল                                     বাহি পড়ে জল
যেন মন্দাকিনী-ধারা॥
ঘামে তিতি গেল                                সব কলেবর
না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত                                     কখন রোদন
কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি                                   মোর গৌরহরি
চাহয়ে রঙ্গের পারা।
হরি হরি বোলে                              ভুজ যুগ তোলে
মরম বুঝিব কারা॥
ই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-
মালা”, ৪২৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

ব্যাধি দশা।
তস্য শ্রীগৌরচন্দ্র।
॥ কামোদ॥

সোণার বরণ                                গৌরাঙ্গ সুন্দর
পাণ্ডুর ভৈগেল দেহ।
শীতে ভীত যেন                                কাঁপয়ে সঘন
সঙরি পূরব লেহ॥
কিছু না কহই                                দীঘ নিশ্বাসই
চিত্রের পুতলী পারা।
নয়ন যুগল                                 বাহি পড়ে জল
যেন মন্দাকিনী ধারা॥
ঘামে তিতি গেল                               সব কলেবর
না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত                                   কখন রোদন
কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি                                মোর গৌরহরি
চাহয়ে রঙ্গের পারা।
হরি হরি বোলে                            ভুজ যুগ তোলে
মরম বুঝিবে কারা॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ১৪৫-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

॥ তথারাগ॥

সোণার বরণ                                গৌরাঙ্গ সুন্দর
পাণ্ডুর ভৈগেল দেহ।
শীতে ভীত যেন                                কাঁপয়ে সঘন
সোঙরি পূরুব নেহ॥
কিছু না কহই                                   দীঘ নিশ্বাসই
চিত্রের পুতলি পারা।
নয়ন যুগল                                   বাহি পড়ে জল
যেন মন্দাকিনী ধারা॥
ঘামে তিতি গেল                               সব কলেবর
না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত                                    কখন রোদন
কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি                                মোর গৌরহরি
চাহয়ে রঙ্কের পারা।
হরি হরি বোলে                                ভুজযুগ তোলে
মরম বুঝিবে কারা॥

ই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”,
৩২২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি কোন নরহরির পদ তা বলা হয়নি।

সোণার বরণ                                 গৌরাঙ্গসুন্দর
পাণ্ডুর ভৈ গেল দেহ।
শীতে ভীত যেন                                কাঁপায়ে সঘন
সোঙরি পুরব লেহ॥
কিছু না কহই                                   দীঘ নিশ্বাসই
চিতের পুতলী পারা।
নয়ন যুগল                                     বাহি পড়ে জল
যেন মন্দাকিনী ধারা॥
ঘামে তিতি গেল                                 সব কলেবর
না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত                                      কখন রোদন
কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি                                    মোর গৌরহরি
চাহয়ে রঙ্কের পারা।
হরি হরি বোলে                                ভুজ যুগ তোলে
মরম বুঝিবে কারা॥

টীকা -
বিরহভাবের বশে প্রভুর দেহে পাণ্ডুরতা বা বৈবর্ণ্য, কম্প, দীর্ঘশ্বাস, অশ্রু, স্বেদ প্রভৃতি
সাত্ত্বিক চিহ্ন দেখা গেল।
চিতের পুতলী পারা - পটে আঁকা ছবি বা চিত্রে অঙ্কিত পুত্তলিকা যেমন কথা বলিতে
পারে না, প্রভুও তেমনি নির্ব্বাক্। অথচ তাঁহার বুক কাঁপিয়া দীর্ঘশ্বাস পড়িতেছে।
---বিমান বিহারী মজুমদার, “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য`॥

ই পদটি ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, পদ
সংখ্যা-৫৩, ২৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি কবিরাজ অর্থাৎ চৈতন্য
সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

সোণার বরণ গৌরাঙ্গ সুন্দর
পাণ্ডুর ভৈগেল দেহ।
শীতে ভীত যেন কাঁপয়ে সঘন
সোঙরি পূরুব নেহ॥
কিছু না কহই দীঘ নিশাসই
চিত্রের পুতলি পারা।
নয়ন যুগল বাহি পড়ে জল
যেন মন্দাকিনী ধারা॥
ঘামে তিতি গেল সব কলেবর
না জানি কেমন তাপে।
কখন সঙ্গীত কখন রোদন
কিবা করে পরলাপে॥
কহে নরহরি মোর গৌরহরি
চাহয়ে রঙ্কের পারা।
হরি হরি বোলে ভুজযুগ তোলে
মরম বুঝিবে কারা॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
মো মেন মনু গোরাচান্দেরে দেখিয়া
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫), ১ম খণ্ড, ১ম
শাখা, ৫ম পল্লব, পূর্ব্ব-রাগ, পদসংখ্যা ১০৩। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের
ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি
নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা।

.        ॥ ধানশী॥

মো মেন মনু গোরাচান্দেরে দেখিয়া।
অপরূপ রূপ কাচা কাঞ্চন জিনিয়া॥
খেনে শীঘ্রগতি চলে মারে মালসাট।
খেনে থির হৈয়া চলে সুরধুনী-বাট॥
অরুণ নয়ানে ঘন চাহে অনিবার।
হানিলে নয়ান-বাণ হিয়ার মাঝার॥
আজানুলম্বিত ভুজ দোলে দুই দিগে।
যুবতি যৌবন দিতে চাহে অনুরাগে॥
খেনে মন্দ মন্দ হাসি খেনে উতরোল।
না বুঝিয়া নরহরি হইল বিভোর॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১১৩-পৃষ্ঠায়
এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায়
“শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই
পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

.        ॥ ধানশী॥

মো মেন মনু গোরাচাঁদেরে দেখিয়া।
অপরূপ রূপ কাঁচা কাঞ্চন জিনিয়া॥
ক্ষণে শীঘ্রগতি চলে মারে মালসাট।
ক্ষণে থির হৈয়া চলে সুরধুনী পাট॥
অরুণ-নয়ানে ঘন চাহে অনিবার।
হানিল নয়ান-বাণ হিয়ার মাঝার॥
আজানুলম্বিত ভুজ দোলে দুই দিগে।
যুবতি যৌবন দিতে চাহে অনুরাগে॥
ক্ষণে মন্দ মন্দ হাসে ক্ষণে উতরোল।
না বুঝিয়া নরহরি হইল বিহ্বোল॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৪২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি
সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

.        ॥ তথারাগ॥

মো মেনে মনু গোরাচাঁদেরে দেখিয়া।
অপরূপ রূপ কাঁচা কাঞ্চন জিনিয়া॥
ক্ষণে শীঘ্রগতি চলে মারে মালসাট।
ক্ষণে থির হৈয়া চলে সুরধুনী বাট॥
অরুণ নয়ানে কোণে চাহে বার বার।
হানিল নয়ান বাণ হিয়ার মাঝার॥
আজানুলম্বিত ভুজ দোলে দুই দিগে।
যুবতি যৌবন দিতে চাহে অনুরাগে॥
ক্ষণে মন্দ মন্দ হাসে ক্ষণে উতরোল।
না বুঝিয়া নরহরি হইল বিভোল॥

ই পদটি ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, পদ সংখ্যা-৪৯, ২৮-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি
কবিরাজ অর্থাৎ চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

মো মেনে মনু গোরাচাঁদেরে দেখিয়া।
অপরূপ রূপ কাঁচা কাঞ্চন জিনিয়া॥
ক্ষণে শীঘ্র গতি চলে মারে মাল সাট।
ক্ষণে থির হৈয়া চলে সুরধুনি বাট॥
অরুণ নয়ান কোণে চাহে বার বার।
হানিল নয়ান বাণ হিয়ার মাঝার॥
আজানুলম্বিত ভুজ দোলে দুই দিগে।
যুবতি যৌবন দিতে চাহে অনুরাগে॥
ক্ষণে মন্দ মন্দ হাসে ক্ষণে উতরোল।
না বুঝিয়া নরহরি হৈল বিভোল॥


.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫), ১ম খণ্ড, ২য়
শাখা, ১১শ পল্লব, অধীরা মধ্যা খণ্ডিতা, পদসংখ্যা ৪০৮। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের
ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি
নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ৫৫১ সংখ্যাক পদ।

অথ অধীরা মধ্যাস্বভাবেন যথা।
.        খণ্ডিতা।
.        তত্র শ্রীগৌরচন্দ্র।
.        ॥ সুহই॥

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়।
পুরুব প্রেমভরে মৃদু চলি যায়॥
অরুণ নয়ন মুখ বিরস হইয়া।
কোপে কহয়ে পহুঁ গদ-গদ হিয়া॥
জানলুঁ তোহারে তোর কপট পিরীতি।
যা সঞে বঞ্চিলা নিশি তাহাঁ কর নতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গের গর-গর মন।
ভাবের তরঙ্গে যেন নিশি-জাগরণ॥
কহে নরহরি রাধার ভাবে হৈল হেন।
পাই আশোয়াস বঞ্চিত হৈল যেন॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত,
বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব
চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত,
১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১২২-পৃষ্ঠায় এইরপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ গ্রীষ্ম পদোচিত গৌরচন্দ্র নিম্নভাগে লেখা জায় সহ মতে॥

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়। পুরূব প্রেমের ভাবে ঢুলি চলি যায়॥
অরুণ নয়ান মুখ বিরস হইএ। কোপে কহত পুন গদগদ হএ॥
জানলু তোঁহারে তোর কপট পিরিতি। জা সঙে বঞ্চিলা নিশি তাহাঁ কর নতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গে গদগদ মন। ভাবের তরঙ্গে রজনী জাগরণ॥
কহে নরহরি রাধাভাবে হৈল হেন। পাইএ সন্তাপ বঞ্চিত হৈল হেন॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৯৮-পৃষ্ঠায়
এইরূপে দেওয়া রয়েছে। এই পদের রচয়িতা কোন নরহরি তা বলা সম্ভব হয় নি। নরহরি
সরকার ও নরহরি চক্রবর্তী ছাড়াও অন্য কোনো কবি নরহরির পদ কি না তাও বা কে
বলতে পারে!

.        ॥ সুহই॥

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গরায়।
পূরুব প্রেমভরে মৃদু চলি যায়॥
অরুণ-নয়ন মুখ বিরস হইয়া।
কোপে কহয়ে পহুঁ গদ গদ হিয়া॥
জানলুঁ তোহারে, তোর কপট পিরীতি।
যা সঞে বঞ্চিলা নিশি তাহা কর নতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গের গর গর মন।
ভাবের তরঙ্গে যেন নিশি জাগরণ॥
কহে নরহরি রাধাভাবে হৈল হেন।
পাই আশোয়াস বঞ্চিত হৈল যেন॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫৩০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ সুহই॥

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়।
পূরুব প্রেম ভরে মৃদু চলি যায়॥
অরুণ নয়ন মুখ বিরস হইয়া।
কোপে কহয়ে পহুঁ গদ গদ হিয়া॥
জাননু তোহারে তোর কপট পিরীতি।
যা সঞে বঞ্চিলা নিশি তাহা কর নতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গের গর গর মন।
ভাবের তরঙ্গে যেন নিশি জাগরণ॥
কহে নর হরি রাধার ভাবে হৈল হেন।
পাই আশোয়াস বঞ্চিত হৈল যেন॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৪৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি
সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

॥ তথারাগ॥

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়।
পূরুব প্রেমভরে মৃদু চলি যায়॥
অরুণ নয়ন মুখ বিরস হইয়া।
কোপে কহয়ে পহুঁ গদ গদ হিয়া॥
জানলুঁ তোহারে তোর কপট পিরীতি।
যা সঙ্গে বঞ্চিলা নিশি তাহাঁ কর গতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গের গর গর মন।
ভাবের তরঙ্গে যেন নিশি জাগরণ॥
কহে নরহরি রাধাভাবে হৈল হেন।
পাই আশোয়াস বঞ্চিত হৈল যেন॥

ই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী মজুমদার সম্পাদিত “পাঁচশত বত্সরের
পদাবলী”, ১০০-পৃষ্ঠা। এখানে এই পদটি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে। পদটি
“পদ সমুদ্র” পুথির ৪২৭-পৃষ্ঠার পদ। এই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী
মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”, ৪২৫-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া
রয়েছে।

.        খণ্ডিতা

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়।
পূরুব প্রেমভরে মৃদু চলি যায়॥
অরুণ নয়ন মুখ বিরস হইয়া।
কোপে কহয়ে পহুঁ গদ গদ হিয়া॥
জানলুঁ তোহারে তোর কপট পিরীতি।
যা সঙ্গে বঞ্চিলা নিশি তাহাঁ কর নতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গের গরগর মন।
ভাবের তরঙ্গে যেন নিশি জাগরণ॥
কহে নরহরি রাধা ভাবে হৈল হেন।
পাই আশোয়াস বঞ্চিত হৈল যেন॥

ই পদটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত, ৩৪৪৫টি পদ বিশিষ্ট, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত  পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, পদ সংখ্যা-২৭, ২৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে
এই পদটি নরহরি কবিরাজ অর্থাৎ চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে
বলা হয়েছে।

আরে মোর আরে মোর গৌরাঙ্গ রায়।
পূরুব প্রেমভরে মৃদু চলি যায়॥
অরুণ নয়ন মুখ বিরস হইয়া।
কোপে কহয়ে পহুঁ গদ গদ হিয়া॥
জানলুঁ তোহারে তোর কপট পিরীতি।
যা সঙ্গে বঞ্চিলা নিশি তাহা কর নতি॥
এত কহি গৌরাঙ্গের গর গর মন।
ভাবের তরঙ্গে যেন নিশি জাগরণ॥
কহে নরহরি রাধাভাবে হৈল হেন।
পাই আশোয়াস বঞ্চিত হৈল যেন॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫), ১ম খণ্ড, ২য়
শাখা, ১২শ পল্লব, ধীরাধীরা মধ্যা খণ্ডিতা, পদসংখ্যা ৪২১। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের
ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি
নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ৫৬৩ সংখ্যাক পদ।

॥ গান্ধার॥

গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া।
অবনত বদন করিয়া॥
ভাবাবেশে ঢুলু ঢুলু আঁখি।
রজনি জাগিল হেন সাখি॥
বিরস-বদনে কহে বাণী।
আশা দিয়া বঞ্চিল রজনী॥
কান্দিয়া কহয়ে গোরা রায়।
এ দুখ সহনে নাহি যায়॥
কাতরে কহয়ে সবিষাদ।
নরহরি মাগে পরসাদ॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত,  উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত,  
বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব
চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত,
১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১২২-পৃষ্ঠায় এইরপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ তত্র গৌরচন্দ্র॥

গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া। অবনত বদন করিএ॥
ভাবাবেশে ঢুলু ঢুলু আঁখি। রজনী জাগিল হেন সাখি॥
বিরস বদনে কহে বাণী। আশা দিয়া বঞ্চিলা রজনী॥
কান্দিয়ে কহয়ে গোরা রায়। এ দুখ সহনে নাহি জায়॥
কাতরে করয়ে সবিষাদ। নরহরি মাগে পরসাদ॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৯৮-পৃষ্ঠায়
এইরূপে দেওয়া রয়েছে। এই পদের রচয়িতা কোন নরহরি তা বলা সম্ভব হয় নি। নরহরি
সরকার ও নরহরি চক্রবর্তী ছাড়াও অন্য কোনো কবি নরহরির পদ কি না তাও বা কে
বলতে পারে!

.        ॥ তত্র গৌরচন্দ্র॥

গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া। অবনত বদন করিয়া॥
ভাবাবেশে ঢুলু ঢুলু আঁখি। রজনী জাগিল হেন সাখি॥
বিরস বদনে কহে বাণী। আশা দিয়া বঞ্চিলা রজনী॥
কাঁদিয়া কহয়ে গোরারায়। এ দুখ সহনে নাহি যায়॥
কাতরে করয়ে সবিষাদ। নরহরি মাগে পরসাদ॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫২৯-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ গান্ধার॥

গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া।
অবনত বদন করিয়া॥
ভাবাবেশে ঢুলু ঢুলু আঁখি।
রজনী জাগিল হেন সাখী॥
বিরস বদন কহে বাণী।
আশা দিয়া বঞ্চিল রজনী॥
কান্দিয়া কহয়ে গোরা রায়।
এ দুখ সহনে নাহি যায়॥
কাতরে করে সবিষাদ।
নরহরি মাগে পরসাদ॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৪৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি
সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে। এই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী
মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”, ৪১৭-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া
রয়েছে।

॥ তথারাগ॥

গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া।
অবনত বদন করিয়া॥
ভাবাবেশে ঢুলু ঢুলু আঁখি।
রজনি জাগিল হেন সাখী॥
বিরস-বদনে কহে বাণী।
আশা দিয়া বঞ্চিল রজনী॥
কান্দিয়া কহয়ে গোরা রায়।
এ দুঃখ সহনে নাহি যায়॥
কাতরে কহয়ে সবিষাদ।
নরহরি মাগে পরসাদ॥

ই পদটি ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, পদ সংখ্যা- ৩৬, ২৫-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি
কবিরাজ অর্থাৎ চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

গোরা পহুঁ বিরলে বসিয়া।
অবনত বদন করিয়া॥
ভাবাবেশে ঢুলুঢুলু আঁখি।
রজনি জাগিল হেন সাখী॥
বিরস বদনে কহে বাণী।
আশা দিয়া বঞ্চিলা রজনী॥
কাঁদিয়া কহয়ে গোরা রায়।
এ দুঃখ সহনে নাহি যায়॥
কাতরে কহয়ে সবিষাদ।
নরহরি মাগে পরসাদ॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
রামানন্দ স্বরূপের সনে
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ১১শ পল্লব, আপেক্ষানুরাগ, পদসংখ্যা ৮২০। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায়
দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি নরহরি
সরকার ঠাকুরের রচনা। এই পদটি পদরসসার পুথির ১৩১০ সংখ্যাক পদ।

পুনশ্চঃ দিনান্তরে।
মুরলীং প্রতি আক্ষেপো যথা।
তত্র গৌরচন্দ্রঃ।
.        ॥ সুহিনী॥

রামানন্দ স্বরূপের সনে।
বসি গোরা ভাবে মনে মনে॥
চমকি কহয়ে আলি আলি।
ক্ষণে রহিয়া বাঁশীরে দেয় গালি॥
পুন কহে স্বরূপের পাশে।
বাঁশী মোর জাতিকুল নাশে॥
ধ্বনি কাণে পশিয়া রহিল।
বধির সমান মোরে কৈল॥
নরহরি মনে মনে হাসে।
দেখি এই গৌরাঙ্গ-বিলাসে॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত,  
বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব
চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত,
১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১০০-পৃষ্ঠায় এইরপে দেওয়া রয়েছে।

ভ্রম অভিসারে পূর্বক্রম। মুরলীর প্রতি আক্ষেপ তথা শ্রীমহাপ্রভু।

রামানন্দ স্বরূপের সনে। বসি গোরা ভাবে মনে মনে॥
চমকি কহয়ে আলি আলি। ক্ষেনে ক্ষেনে রহিয়া বাঁশীরে দেয় গালি॥
পুন কহে স্বরূপের পাশে। বাঁশী মোর জাতি কুল নাশে॥
ধ্বনি কাঁনে পশিয়া রহিল। বধির সমান মোরে কৈল॥
নরহরি মনে মনে হাঁসে। দেখি এই গৌরাঙ্গ বিলাসে॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৯২-পৃষ্ঠায় এই
রূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায়
“শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই
পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

.        ॥ সুহই॥

রামানন্দ স্বরূপের সনে।
বসি গোরা ভাবে মনে মনে॥
চমকি কহয়ে আলি আলি।
খেনে কেনে রহিয়া বাঁশীরে দেয় গালি॥
পুন কহে স্বরুপের পাশে।
বাঁশী মোর জাতিকুল নাশে॥
ধ্বনি কানে পশিয়া রহিল।
বধির সমান মোর কৈল॥
নরহরি মনে মনে হাসে।
দেখি এই গৌরাঙ্গ বিলাসে॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত, দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৫৩০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ সুহিনী॥

রামানন্দ স্বরূপের সনে।
বসি গোরা ভাবে মনে মনে॥
চমকি কহয়ে আলি আলি।
ক্ষণে ক্ষণে রহিয়া বাঁশীরে দেয় গালি॥
পুন কহে স্বরূপের পাশে।
বাঁশী মোর জাতিকুল নাশে॥
ধ্বনি কাণে পশিয়া রহিল।
বধির সমান মোরে কৈল॥
নরহরি মনে মনে হাসে।
দেখি এই গৌরাঙ্গ বিলাসে॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৪৬-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই
পদটি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

.        ॥ তথারাগ॥

রামানন্দ স্বরূপের সনে।
বসি গোরা ভাবে মনে মনে॥
চমকি কহয়ে আলি আলি।
খেনেকে বাঁশীরে দেয় গালি॥
পুন কহে স্বরূপের পাশে।
বাঁশী মোর জাতি কুল নাশে॥
ধ্বনি কানে পশিয়া রহিল।
বধির সমান মোরে কৈল॥
নরহরি মনে মনে হাসে।
দেখি এই গৌরাঙ্গ বিলাসে॥

ই পদটি ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, পদ সংখ্যা-৫১, ২৮-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি
কবিরাজ অর্থাৎ চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।


রামানন্দ স্বরূপের সনে।
বসি গোরা ভাবে মনে মনে॥
চমকি কহয়ে আলি আলি।
খেনেকে বাঁশীরে দেয় গালি॥
পুন কহে স্বরূপের পাশে।
বাঁশী মোর জাতি কুল নাশে॥
ধ্বনি কানে পশিয়া রহিল।
বধির সমান মোরে কৈল॥
নরহরি মনে মনে হাসে।
দেখি এই গৌরাঙ্গ বিলাসে॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
আরে মোর গৌর কিশোর
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ১১শ পল্লব,
আপেক্ষানুরাগ, পদসংখ্যা ৮৪০। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র রায়ের নির্দেশ
অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা। এই পদটি নিমানন্দ দাস
সংকলিত পদরসসার পুথির ১৩২৯ সংখ্যাক পদ। এই পদটি ১৯৬১ সালে প্রকাশিত, বিমান বিহারী
মজুমদার সম্পাদিত “ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী-সাহিত্য”, ৩৯৩-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

অত্র “ধিক্ রহু পরাধিনী নারী” ইত্যাদি গেয়ম্। (এই পদটি পদকল্পতরুর কোনো পুথিতেই উদ্ধৃত হয়নি। তাই
পদকল্পতরুর মুদ্রিত সংস্করণে এই পদটি দেওয়া সম্ভব হয় নি)।

অথ সখীং প্রতি আক্ষেপো যথা।
শ্রীগৌরচন্দ্রঃ।
.        ॥ সুহই॥

আরে মোর গৌর কিশোর।
পুরুব প্রেম-রসে ভোর॥
স্বরূপ দামোদর রামরায়।
করে ধরি করে হায় হায়॥
কহে মৃদু গদগদ ভাষ।
ঘন বহে দীঘ নিশাস॥
মরম না বুঝে কেহ মোর।
কহে পহু হইয়া বিভোর॥
কেনে বা এ প্রেম বাঢ়াইলুঁ।
জীয়ন্তে পরাণ খোয়াইলুঁ॥
নিঝরে ঝরয়ে দুনয়ান।
নরহরি মলিন বয়ান॥

টীকা -
নালাচল লীলায় স্বরূপ দামোদরের গৃহস্থাশ্রমের নাম পুরুষোত্তম আচার্য্য।
ইনি---
সঙ্গীতে গন্ধর্ব্ব সম, শাস্ত্রে বৃহস্পতি।
দামোদর সম আর নাহি মহামতি॥ ---কৃষ্ণদাস কবিরাজ, চৈতন্যচনিতামৃত, মধ্যলীলা, ১০ম পরিচ্ছেদ॥

গ্রন্থ, শ্লোক, গীত কেহ প্রভু পাশে আনে।
স্বরূপ পরীক্ষা কৈলে প্রভু তাহা শুনে॥ ---কৃষ্ণদাস কবিরাজ, চৈতন্যচনিতামৃত, মধ্যলীলা, ১০ম পরিচ্ছেদ॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১৮৮-পৃষ্ঠায় এই
রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি কোন নরহরির, তা বলা হয়নি।

অথ সখীপ্রতি আক্ষেপ আরব্ধ তদুচিত মহাপ্রভু॥ গৌরচন্দ্র॥
.        ॥ সুহই॥

আরে মোর গৌর কিশোর। পুরব প্রেমরসে ভোর॥
স্বরূপ দামোদর রাম রায়। করে ধরি করে হায় হায়॥
কহে মৃদু গদগদ ভাষ। ঘন বহে দিঘ নিশাস॥
মরম না বোঝে কেহো মোর। কহে পহুঁ হইয়া বিভোর॥
কেন বা এ প্রেম বাড়াইনু। জিয়ন্ত পরান খোয়াইনু॥
নিঝোরে ঝোরএ দু নয়ান। নরহরি মলিন বয়ান॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী
সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৯৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল
রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের,
১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

.        ॥ সুহই॥

আরে মোর গৌরকিশোর। পূরব প্রেমরসে ভোর॥
স্বরূপ দামোদর রামরায়। করে ধরি করে হায় হায়॥
কহে মৃদু গদ গদ ভাষ। ঘন বহে দীঘল নিশ্বাস॥
মরম না বুঝে কেহ মোর। কহে পহুঁ হইয়া বিভোর॥
কেন বা এ প্রেম বাঢ়াইনু। জীয়ন্তে পরাণ খোয়াইনু॥
নিঝরে ঝরয়ে নয়ান। নরহরি মলিন বয়ান॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ১৪৬-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

.        ॥ তথারাগ॥

আরে মোর গৌর কিশোর।
পূরব প্রেম রসে ভোর॥
মরম না বুঝে কেহ মোর।
কহে পহুঁ হইয়া বিভোর॥
স্বরূপ দামোদর রাম রায়।
করে ধরি করে হায় হায়॥
কেন বা এ প্রেম বাঢ়াইনু।
জীয়ন্তে পরাণ খোয়াইনু॥
কহে মৃদু গদ গদ ভাষ।
ঘন বহে দীঘ নিশাস॥
নিঝরে ঝরয়ে দুনয়ান।
নরহরি মলিন বয়ান॥

ই পদটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত, ৩৪৪৫টি পদ বিশিষ্ট, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত  পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, পদ সংখ্যা- ২৮, ২৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি কবিরাজ অর্থাৎ
চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

আরে মোর গৌর কিশোর।
পূরব প্রেম রসে ভোর॥
মরম না বুঝে কেহ মোর।
কহে পহুঁ হইয়া বিভোর॥
স্বরূপ দামোদর রাম রায়।
করে ধরি করে হায় হায়॥
কেন বা এ প্রেম বাঢ়াইনু।
জীয়ন্তে পরাণ খোয়াইনু॥
কহে মৃদু গদ গদ ভাষ।
ঘন বহে দীঘল নিশাস॥
নিঝরে ঝরয়ে দুনয়ান।
নরহরি মলিন বয়ান॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
কি লাগি আমার গৌরাঙ্গ-সুন্দর
ভণিতা নরহরি
কবি নরহরি সরকার ঠাকুর
১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-মালা”,
৩৪৪-পৃষ্ঠা।

॥ ধানশী॥

কি লাগি আমার                              গৌরাঙ্গ সুন্দর
বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন                                      রতন ভূষণ
সাজায় অঙ্গের সাজে॥
আপন বপুর                                     ছাছ হেরিয়া
চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহু                                 না মিলল পহু
এত বা বিলম্ব কেন (কেনে ?)॥
কহে নরহরি                                  মোর গৌরহরি
ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল নয়ানে                                 চাহে পথ পানে
কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ১৪৫-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

॥ তথারাগ॥

কি লাগি আমার                           গৌরাঙ্গ সুন্দর
বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন                                    রতন ভূষণ
ত্যজয়ে অঙ্গের সাঝে॥
আপন বপুর                                ছায়া নেহারিয়া
চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ                                না মিলল পহুঁ
এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি                                 মোর গৌরহরি
ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল নয়নে                                 চাহে পথ পানে
কহে গদগদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত, ৩৪৪৫টি পদ বিশিষ্ট, কাঞ্চন বসু সম্পাদিত  পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, পদ সংখ্যা- ৩১, ২৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে এই পদটি নরহরি কবিরাজ অর্থাৎ
চৈতন্য সমসাময়িক কবি নরহরি সরকারের পদ বলে বলা হয়েছে।

কি লাগি আমার গৌরাঙ্গ সুন্দর
.                                        বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন রতন ভূষণ      
.                                        ত্যজয়ে অঙ্গের সাঝে॥
আপন বপুর ছায়া নেহারিয়া
.                                        চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ না মিলল পহুঁ
.                                        এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি মোর গৌরহরি
.                                        ভাবিয়া রাইএর দশা।
সজল নয়নে চাহে পথ পানে
.                                        কহে গদগদ ভাষা॥

ই পদটি আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫), ১ম খণ্ড, ১ম শাখা, ৪র্থ পল্লব,
বসন্তকালোচিত বাসকসজ্জা, পদসংখ্যা ৩০৭। শ্রীশ্রীপদকল্পতরুর ৫ম খণ্ডের ভূমিকায় দেওয়া সতীশচন্দ্র
রায়ের নির্দেশ অনুসারে এই পদটি চৈতন্য সমকালীন কবি নরহরি সরকার ঠাকুরের রচনা। প্রথম পংক্তির
ভিন্নতার জন্য আমরা “কি লাগিয়া মোর গৌর-সুন্দর” শিরোনামে একটি স্বতন্ত্র পদ হিসেবেও এখানে তুলছি।

অথ বাকসজ্জা।
তদুচিত-শ্রীগৌরচন্দ্র।
॥ ধানশী॥

কি লাগিয়া মোর                              গৌর-সুন্দর
বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন                                   রতন-ভূষণ
সাজয়ে অঙ্গের মাঝে॥
আপন বপুর                                 ছাহ হেরিয়া
চমকি উঠয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ                             না মিলল পহুঁ
এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি                              মোর গৌরহরি
ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল নয়ানে                              চাহে পথ পানে
কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায়
সংরক্ষিত, ১৯৮২ সালে বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগ থেকে ভূদেব চৌধুরী, সুখময় মুখোপাধ্যায়, পঞ্চানন
মণ্ডল ও সুমঙ্গল রাণা দ্বারা সম্পাদিত ও প্রকাশিত, ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”, ১১৪-
পৃষ্ঠায় এইরপে দেওয়া রয়েছে।

॥ রাগিণী ধানশী॥

কি লাগিয়ে মোর গৌর-সুন্দর বসিএ গৃহের মাঝে।
বসন ভূষণ রতন আসন সাজএ অঙ্গের সাঝে॥
আপন বপু ছাহ হেরিএ চমকি উঠএ মনে।
কি লাগিএ পহু না মিলে অবহু এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি মোর গৌরহরি ভাবিয়া রাইর দশা।
সজল নয়ানে চাহে পথ পানে কহে গদ গদ ভাষা॥

ই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত,
পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৯৬-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া
রয়েছে। এই পদের রচয়িতা কোন নরহরি তা বলা সম্ভব হয় নি। নরহরি সরকার ও নরহরি চক্রবর্তী
ছাড়াও অন্য কোনো কবি নরহরির পদ কি না তাও বা কে বলতে পারে!

॥ ধানশী॥

কি লাগিয়ে আমার গৌরাঙ্গসুন্দর বসিয়া গৃহের মাঝে।
বসন আসন রতন ভূষণ সাজয়ে অঙ্গের সাজে॥
আপন বপুর ছাছ নেহারিয়া চমকি উঠিয়ে মনে।
কি লাগি অবহুঁ না মিলল পহুঁ, এত না বিলম্ব কেনে॥
কহে নরহরি, মোর গৌরহরি, ভাবিয়া রাইয়ের দশা।
সজল-নয়নে, চাহে পথ পানে, কহে গদ গদ ভাষা॥

.            *************************              

=== নরহরির বিভিন্ন সূচীতে যেতে . . . ===
নরহরি নামের কবিদের একত্রে সকল পদাবলীর সূচীতে . . .   
সকল নরহরি ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরি দাস ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
সকল নরহরিয়া ভণিতাযুক্ত পদের সূচীতে . . .   
বিভিন্ন পদ-সংকলনে প্রাপ্ত অনির্দিষ্ট নরহরির পদের সূচীতে . . .  
নরহরি সরকারের নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর নির্দিষ্ট ভাবে জ্ঞাত সকল পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের পদের সূচীতে . . .   
নরহরি চক্রবর্তীর বিভিন্ন সংকলনে প্রাপ্ত পদের সূচীতে . . .   


মিলনসাগর