গোরাচাঁদের নাগরালি যত ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
গোরাচাঁদের নাগরালি যত। কহয়ে সকলে কত কত কত॥ যেন বরিষয়ে অমিয়ার ধার। না জানি কি সুখ অন্তরে সবার॥ অর এক নব যূথের রমণী। আইলেন তথা শুনিয়া এ বাণী॥ নরহরি তার রীতি না জানয়ে। এ সবার প্রতি সাহসে ভণয়ে॥
কি বলিব ওগো তোমাদের প্রতি মুই সে পড়িনু ধন্দে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
কি বলিব ওগো তোমাদের প্রতি মুই সে পড়িনু ধন্দে। কি লাগিয়া এত নিন্দহ এমন সুজন নদ্যার চন্দে॥ পরম পণ্ডিত জগন্নাথ মিশ্র কেবা না জানয়ে তায়। তার নিরমল কুলের প্রদীপ জগতে যাহারা গায়॥ যে দিগ্বিজয়িজয়ী নদীয়ার পণ্ডিত অধীন যার। সদা ধর্ম্মপথে রত বেদাদিক বিনা না জানয়ে আর॥ প্রকৃতি প্রসঙ্গ কভু না শুনয়ে শুনিতে বাসয়ে দুখ। ভুলিয়া কখন না দেখয়ে পর রমণীগণের মুখ॥ যদি কভু সুরধুনীস্নানে নারী বসন ঠেকয়ে গায়। তখনি উচিত করে পরাচিত তবু না সম্বিত পায়॥ তাহে সাধ করি মিছা অপবাদ দিলে অপরাধ হবে। নরহরি সাখী শিখাই সবারে এ কথা কভু না কবে॥
হের আইস ওগো ও সব সহিতে কি লাগি করিছ দ্বন্দ্ব ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
হের আইস ওগো ও সব সহিতে কি লাগি করিছ দ্বন্দ্ব। সুপপুরে মিছা প্রপঞ্চ ঘটিল ইথে না বাসহ ধন্দ॥ যত সদাচার সব গেল দূরে কেহ না কাহুক মানে। এ বড় বিষম কিসে কিবা হয় তাহা না কিছুই জানে॥ দোষযুক্ত জনে দূষিতে নিষেধএ কথা সকলে কয়। দোষহীন জনে যে দূষে অবশ্য সে দোষী জগতে হয়॥ পরম সুজন শচীসুত ইহা বিদিত ভুবন মাঝে। কারি পানে কভু চাহিবে থাকুক বদন না তোলে লাজে॥ কখন যে পরপ্রকৃতিগণের ছায়া না পরশে পায়। না বুঝিয়ে কিছু অঙ্গ-পরশাদি কিরূপে সম্ভবে তায়॥ সুরধুনীঘাটে যুবতীর ঘটা জানি না যায়েন তথা। সরোবরে গিয়া করয়ে সিনান দেখয়ে নিভৃত যথা॥ নহে নিজ ঘরে সারে ক্রীড়া হিয়া কাঁপয়ে কলঙ্ক ডরে। মহাজিতেন্দ্রিয় প্রিয় সবাকার কেবা না প্রশংসা করে॥ হায় হায় হেন জনে হেন কথা কহয়ে কিরূপ করি। অনুপম যার যশ রসায়ন রৈয়াছে জগত ভরি॥ তাহে হেন কথা কে যাবে প্রতীত ইহাতে বাসিএ লাজ। সুজন জানে কি সুজন নিন্দয়ে কুজন জনের কাজ॥ তথাপি বলি এ সহবাসী জানি মানিবে বচন সার। ভুলিয়া কখন নরহরিনাথে কেহ না নিন্দিহ আর॥
ভাল ভাল ওগো এসব কথাতে ভয় না বাসিএ মোরা ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৪-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
ভাল ভাল ওগো এসব কথাতে ভয় না বাসিএ মোরা। যেরূপ সুজন তুমি সেই রূপ সুজন তোমার গোরা॥ আহা মরি মরি কিছু না জানয়ে না দেখি এমন জনা। অতি জিতেন্দ্রিয় মুনীন্দ্র সদৃশ বিদিত ধার্ম্মিকপনা॥ প্রকৃতিপ্রসঙ্গ না শুনে এ যশঃ প্রসিদ্ধ জগত মাঝে। নিজ গৃহ ছাড়ি কারি গৃহ কভু না জান কোনই কাজে॥ এইরূপ বহু গুণ অনুপম তুমি বা কহিবা কত। বাহিরে প্রকট না করয়ে আর অন্তরে আছয়ে যত॥ তাহে বলি শুন সে গুণ জানিতে আনের শকতি নয়। কেবল এ নব যুবতী-কটাক্ষ-ছটায় প্রকট হয়॥ তোমাদের আঁখি পাখী সম দেখি না দেখে রজনীচাঁদ। আনে কি জানিবে নরহরিনাথ রমণীমোহনফাঁদ॥
হের আইস প্রাণ সজনি ইহাতে সুখ না উপজে মনে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৪-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
হের আইস প্রাণ সজনি ইহাতে সুখ না উপজে মনে। এ সব নিগূঢ় রসকথা বৃথা কহিছ উহার সনে॥ রসিকিনি বিনা বুঝিতে পারে কি রসিক জনের হিয়া। তাহে এহ অতি সরলা কখন না চলে এ পথ দিয়া॥ যত তত তুমি বুঝাহ তাহাতে নাহিক উহার দায়। নিরাকারে যার আরতি তারে কি আকার কখন ভায়॥ যদি অকপটে কখন করয়ে দুলহ তোদের সঙ্গ। তবে সে বুঝিতে পারিবে নদীয়াচাঁদের যেরূপ রঙ্গ॥ এ সকল কথা থাকুক এখন বারেক সুধাহ তারে। অতি জিতেন্দ্রিয় হইয়া কেমন এরূপ বিলাস করে॥ যে জন কিছু না জানে যার নাহি কোনই সুখের লেশ। সে কেনে নদীয়ানগরের মাঝে ধরে নাগরালি বেশ॥ ইহা কোনখানে না শুনি উদার জনের কি হেন কাজ। অঙ্গের সৌরভে নারী-ভ্রমরীর ভঙ্গয়ে ভরম লাজ॥ অতি ধীর যেহ তার কি এ ক্রিয়া কিরূপে মনেতে ভায়। পুরুষবদন হেরি নারী মুখ ভরমে মূরছা যায়॥ এ বড় বিষম বহু লাজ যার তার কি এমন কাম। সতের সমাজে নাচে অবিরত লইয়া নারীর নাম॥ প্রকৃতি-প্রসঙ্গ যে জন কখন না শুনে আপন কানে। সে জন কেমন করিয়া সতত প্রকৃতি জপয়ে মনে॥ যহ জগতের মাঝে অতিশয় অনন্যধার্ম্মিক বড়। সে নিজ ভবনে কি কারণে এত যুবতী করয়ে জড়॥ নরহরিপহুঁ এই রীতি ইথে বলহ উত্তর দিতে। হেন জনে হেন প্রত্যয় কিরূপে হৈয়াছে উদার চিতে॥
শুন শুন ওগো সকল বুঝিনু ইহার নাহিক দোষ ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৪-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন ওগো সকল বুঝিনু ইহার নাহিক দোষ। বিচার করিতে তোমা সবা প্রতি হইছে আমার রোষ॥ যদি না বুঝিয়া কেহ কিছু কহে তাহে কি করিএ হাসি। যেরূপে বুঝিতে পারয়ে সেরূপ বুঝালে সুবুদ্ধি বাসি॥ এহ সুচরিত আহা মরি হেন জনে না বুঝাইতে জান। থাকহ নীরহ হইয়া এখন আমি যে কহি তা শুন॥ হের আইস ওহে সুজন সুন্দরি মনে না বাসিহ দুখ। তোমার বচন শুনি মোর মনে হৈয়াছে পরম সুখ॥ তুমি বল গোরা পরপ্রকডতি না দেখে নয়ানকোণে। এ সকল কথা কি রূপে প্রত্যয় হইবে আমার মনে॥ যেরূপ প্রশংসা কর তার দি কিঞ্চিৎ দেখিতে পাই। নিশ্চয় বলিয়া শপথ খাইয়া তথাপি প্রত্যয় যাই॥ নদীয়ানগরে নাগরালি যত নাহিক তাহার লেখা। আনের কথাতে যে হৌক সে হউক ইহা ত আমার দেখা॥ যদি বল এই অবতারে ইহা সম্ভব কিরূপে হয়। আছয়ে তাহার কারণ প্রসিদ্ধ সকল লোকেতে কয়॥ যার যে স্বভাব থাকে তাহা কেহ কভু না ছাড়িতে পারে। স্বভাবানুরূপ করে ক্রিয়া কারু নিষেধে কিছু না করে॥ যদি মনে কর এই রূপ ইহার স্বভাব কোথাও না দেখি। তাহাতে তোমারে নিবেদিএ শুন ইহাতে জগত সাখী॥ এই শচীসুত যশোদানন্দন তাহা কি জান না তুমি। বৃন্দাবনে যত নিগূঢ় বিলাস তাহা কি জানাব আমি॥ গোপিকার লাগি গোচারণ গিরিধারণ আদিক যত। গোপিকা সহিত যেখানে যে লীলা তাহা বা কহিব কত॥ তা সবার অতি অধিক তিলেক না দেখি কলপ বাসে। কত ছল করি ফিরে অনুখন অঙ্গের পরশ-আশে॥ মানবতী কেহ মান করি কানু-পানে না ফিরিয়া চায়। তার মান অবসানের কারণে ধরেন সখীর পায়॥ কান্ধেতে করিয়া বহে আপনার পরম সৌভাগ্য মানি। বেদস্তুতি হৈতে পরম আনন্দ শুনিয়া ভর্ৎসনা বাণী॥ যুতী লাগিয়া জগতে বিষম কলঙ্ক না গণে যেহ। বল বল দেখি এরূপ স্বভাব কিরূপে ছাড়িবে তেঁহ॥ ইহাতে নিশ্চয় জানিহ তোমরা বিচার করিয়া চিতে। স্বভাবে করয়ে সকল ক্রিয়া বুঝিবা আপন হৈতে॥ নহরিপহুঁ রসিকশেখর উপমা নাহিক যার। এ সব চরিত কেবা নাহি জানে ইথে কি সন্দেহ আর॥
ব্রজপুরে রসবিলাস বিশেষ ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
ব্রজপুরে রসবিলাস বিশেষ সে সকল কেবা কহিতে পারে। গুপতে রাখিহ দিত চিত যাহা কহিয়া আপনা জানিয়া তোরে॥ এই সেই সেই এই সেই সব প্রিয়পরিকর সঙ্গেতে লৈয়া। বিহরয়ে সদা নদীয়ানগরে নিজগুণগানে মগন হৈয়া॥ অপরূপ রূপমাধুরী-অমিয়া পিয়াইয়া আগে আপন জনে। উনমত মত মতি গতি করু তাহে তারা কেহ কিছু না গণে॥ নব নব কুলবতী কুল কুল- কলঙ্ক লাজে তিলাঞ্জলি দিয়া। নরহরি সাখী সার কৈল সবে সুখময় গোরা পরাণপিয়া॥
গৌরাঙ্গচাঁদের সুচারু চরিত ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
গৌরাঙ্গচাঁদের সুচারু চরিত শুনি শুনি ধনী পরমসুখী। ধৈরজ ধরিতে নারে বারে বারে প্রেমনীরে ভরে যুগল আঁখি॥ যুড়ি করে কর করিয়া প্রণাম কহে পুনঃ মৃদু মধুর কথা। নিজ জন জানি এত দিনে যেন ঘুচাইলে সব হিয়ার ব্যথা॥ নিবেদিয়ে এই নদীয়ানগরে বারেক বসতি কিরূপে পাব। আর নব নব রঙ্গিণীগণের সহ্গিনী হইয়া কিরূপে রব॥ নরহরি প্রাণপিয়া হিয়া মাঝে রাখিয়া ঘুচাব দারুণ বাধা। কহ কহ ওগো উপায় কিরূপে সফল হবে এ সকল সাধা॥
সুরপুর মাঝে বসতি করিয়া ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
সুরপুর মাঝে বসতি করিয়া এত অহঙ্কার করিছ কেনে। নদীয়ার নারীগণে পরিবাদ দিতে ভয় কিছু না হয় মনে॥ হায় হায় হেন বিপরীত বাণী শুনিয়া কি আমি সহিতে পারি। না জানিয়ে তোমা সবার কি দোষ করিলে এ সব নদ্যার নারী॥ নিজ নিজ রাতমত জান আনে না জান আনের মরম কথা। না বুঝনু কিছু কিসে কিবা হয় তেই বলি দেহ ধরিলে বৃথা॥ যেরূপ কহ সে সম্ভব কেবল ব্রজপুরে নব রমণীগণে। নদীয়ার যত যুবতী অতি সু- পতিব্রতা জানে জগত জনে॥ পরপতি মুখ না দেখে স্বপনে না চলে কভু কুপথ দিয়া। না জানে চাতুরি কপট শঠতা সতত সবার সরল হিয়া॥ ধৈর্য্যবতী কার্য্যে বিচক্ষণা চারু প্রবৃত্তি পরম ধরম পথে। অতুলিত কুল-লাজ-ভয় কভু ভুলি না বৈসয়ে কুজন সাথে॥ গুরুজন প্রাণসম বাসে সবে শুভ রাশি গুণ গণিতে নারি। মোর মনে এই এ সবারে সদা আঁখি মাঝে রাখি যতন করি॥ তাহে কহি সহবাসী জানি বাণী মানিবে নিশ্চয় না কহি আনে। পরের কলঙ্ক গায় যেই সেই কলঙ্কী এ নরহরি তা জানে॥
ভাল ভাল ইহা শিখাতে হবে না ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৪৬-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
ভাল ভাল ইহা শিখাতে হবে না এ সকল কথা জানিএ আমি। অবনীতে নৈদানারী পত্ব্রতা সুরপুর মাঝে কেবল তুমি॥ অনুখন পর কলঙ্ক গাইয়া কলঙ্কিনী মোরা সকলে হব। ইহা চিন্তা তুমি না করিহ তোমা ইহার ভাগী না করিতে যাব॥ তাহে তুমি অতি চতুরা রমণী একা সুপুরে কিরূপে রবে। অসতীর সহ বসতী করিলে অনায়াসে তুমি অসতী হবে॥ তাই বলি এই নদীয়ানগরে যাহ নিজ ধর্ম্ম লজ্জাদি লৈয়া। নরহরি ইথে সুখী সদা সাব- ধানে থাক সতী সংহতি হৈয়া॥