শুন শুন ওগো পরাণ সজনি নিবেদি তোমার আগে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন ওগো পরাণ সজনি নিবেদি তোমার আগে। দিবস রজনী ভাবিয়া মরিএ ঘর পর সম লাগে॥ ননদী কঠিন সে কথা কি কব কহিতে বাসিয়ে দুখ। পরের বেদন কিছু না জানে সে জানয়ে আপন সুখ॥ যদি কার মুখে শুনয়ে গৌরাঙ্গ আইলা কাহার বাড়ী। তবে কত ছল করয়ে তাহা না বুঝয়ে ঘরের বুড়ী॥ ঝাঞা যায় তথা এ বড় বিষম আমারে করয়ে মানা। নরহরি কহে ইহাতে কি দোষ জানায় ননদ-পনা॥
সজনি তো সবে দেখে সুখ পাই তেঁই সে এথায় আসি ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
সজনি তো সবে দেখে সুখ পাই তেঁই সে এথায় আসি। বালিকার কথা পুছহ আমারেইহাতে উপজে হাসি॥ বল বল দেখি কিরূপে আমারে সাজিবে এসব কথা। জানিয়া শুনিয়া এরূপ বলহ ইহাতে পাইএ ব্যথা॥ নরহরি কহে যে বল সে বল এ কথা কাণে না ধরে। কিছু না থাকিলে মিছামিছি কেহ কারে কি কহিতে পারে॥
মোর পতি অতি সুজন সজনি শুন লো তাহার রীতি ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
মোর পতি অতি সুজন সজনি শুন লো তাহার রীতি। গত দিন তেঁই বিরলে বসিয়া কহয়ে পিতার প্রতি॥ নদীয়ানগরে নিমাই পণ্ডিত ঈশ্বর-শকতি তার। কেবা সিরজিল না জানি এ রূপ গুণের নাহিক পার॥ হেন জীতেন্দ্রিয় ধার্ম্মিক কখন না দেখি আপন আঁখে। দুর্ম্মতি-জনের প্রতি অতি দয়া ভাসয়ে কীর্ত্তনসুখে॥ তাহে বলি নিজ বধূগণে কভু ভুলি না নিষেধ তুমি। তার দরশনে অশুভ বিনাশে নিশ্চয় জানিয়ে আমি॥ ভাগ্যবতী সব বহু কি কহব অধিক করিতে নারি। তাহে ধন্য এই নারী-জনমের বালাই লইয়া মরি॥ মিছা অভিমানে মাতি রাতি দিন রহিএ অন্ধের পারা। নদীয়ার মাঝে হেন অপরূপ চিনিতে নারিয়ে মোরা॥ ব্রজে ব্রজনাথে দ্বিজে না জানিল পাইল দ্বিজের নারী। সেইরূপ এথা ইথে না সন্দেহ বুঝিনু বিচার করি॥ এইরূপ পিতাপুত্র দুহে কথা কহয়ে অনেক মতে। আড়ে থাকি তাহা শুনিয়া শুনিয়া হনু উলসিত চিতে॥ মনে হৈল হেন বেলে যদি গোরাচাঁদে দেখিতে পাতু। নয়নের কোণে এসব কাহিনী তাহারে কহিয়ে দিতু॥ এই কালে পাড়া পানে ঘন ঘন উঠিল আনন্দ-ধ্বনি। তরাতরি পথে দাঁড়াইনু গিয়া গৌরগমন জানি॥ দুরে থাকি আঁখি ভরি নিরখিলু কিবা অপরূপ শোভা। ঝলমল করে চারি দিকে হেন জিনিয়া অঙ্গের আভা॥ তার বামে গদাধর নিত্যানন্দ দক্ষিণে আনন্দরাশি। চারি পাশে আর পরিকর তারা নিরখে ও মুখশশী॥ নিজগণ সঞে রসিকশোখর আইসে রসের ভরে। সে চাহনি চারু হেরিয়া এমন কে আছে পরাণ ধরে॥ হাসি হাসি কথা-ছলে সুধারাশি বরিখে নদ্যার চাঁদ। অঙ্গ-ভঙ্গী ভারি ভুলালে ভুবন যেন সে মদন ফাঁদ॥ প্রাণনাথ গতি জানি পাড়াবাসী যুবতী আসিবে ধাঞা। তা সবার শাশুড়ী ননদী দারুণ নিবারি অনেক কৈঞা॥ মোরে কেহ নাহি নিবারিল মুই পূরালু মনের সাধা। নরহরি কহে যার পতি অতি প্রসন্ন তার কি বাধা॥
শুন শুন সই বিধি অরসিক বুঝিনু কাজের গতি ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৩-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন সই বিধি অরসিক বুঝিনু কাজের গতি। নহিলে এমন দুঃখ কি কারণে দিবেক দিবস রাতি॥ যদি গৌর-পরিকর মাঝে কারু বসতি করাইত এথা। তবে এ পাড়াতে নদীয়াক শশী আসিয়া ঘুচাইত ব্যথা॥ তাহে বলি ওগো কালিকার কথা গৃহেতে সকল ছাড়ি। মাসৈসের সনে গেলাম সেপাড়া মুরারি গুপ্তের বাড়ী॥ তথা বধুগণ উলসিত অতি সুখের নাহিক পার। প্রাণপিয়া লাগি ঘষয়ে চন্দন গাঁথয়ে কুসুমহার॥ তা সবার মুখে শুনিতে পাইনু গৌরাঙ্গ আসিয়ে হেথা। কাজ সমাধিয়া আইল মাসৈস রহিতে না পাইনু তথা॥ ভাবিতে ভাবিতে কতদূর আসি চাহিলুঁ পথের পানে। নদীয়ার নব-যুবরাজ সাজি আইসে স্বগণ সনে॥ কিবা অপরূপ অধরের শোভা দশন মুকুতাছটা। হাসি সুধারাশি বরষিয়ে মুখ শরদ-শশীর ঘটা॥ কিবা ভুরুভঙ্গী বঙ্কিম-লোচন চাহনি অনেক ভাঁতি। কপালে চন্দন তারু হেরইতে মজায় যুবতী জাতি॥ গলে দোলে হেম মণিমালা আলা করয়ে ভুবন ভালে। মনোহর ছাঁদে গতি তাহা দেখি জগতে কেবা না ভুলে॥ সে রূপ-সায়রে সিনাইনু সুখে রহিয়া মাসৈস কাছে। ফিরিয়া দেখিলু পড়ুয়ার সহ ভাসুর আইসে পাছে॥ ভাগ্য ভাল তেঁহ মোরে না দেখিল ছিল গোরা পানে চাঞা। ঘুঙটে মুখ ঢাকিয়া আঁখি সম্বরি চলিলু যতনে ধাঞা॥ নরহরি কহে ভাসুরে যে লাজ তাহা কি না জানি আমি। সে সকল সথা বেকত করিলে দেশে না থাকিবে তুমি॥
শুন শুন সই নিশির কাহিনী যতনে কহিয়ে তোরে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৪-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শুন শুন ওহে পরাণ সজনি কহিয়ে তোমার ঠাঁই ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৪-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন ওহে পরাণ সজনি কহিয়ে তোমার ঠাঁই। আজুক যেরূপ স্বপন এমন কখন দেখিএ নাই॥ নিকুঞ্জভবনে বসিয়া আছুলুঁ করিয়া বিবিধ বেশ। ভাবিতে ভাবিতে দেহ ক্ষীণ মোর না ছিল সুখের লেশ॥ চঞ্চল নয়ানে চাহি চারি পানে না জানি কি হৈল মোরে। তথা আচম্বিতে দেখিলুঁ জনেক আইল বাহির দ্বারে॥ কিবা অপরূপ বয়স কিশোর রসের মূরতি জনু। নাগর গরিমা কি কব তাহার মেঘের বরণ তনু॥ অরুণ জিনিয়া করপদতল নখরনিচয় চাঁদ। অলকা তিলক ভালে শোভে যেন ভুবনমোহন ফাঁদ॥ চূড়ার টালনি চারু নিরুপম উভয়ে ময়ূরপাখা। তাই সুকসুম-সৌরভে ভ্রমর ভ্রময়ে নাহিক লেখা॥ অধরের অধঃ ধরিয়া মুরলি রহিয়া রহিয়া পূরে। জগতের মাঝে কে আছে এমন শুনিয়া ধৈরজ ধরে॥ গলায় দোথরি মুকুতার মালা সুরধুনীধারা প্রায়। চলিতে কিঙ্কিনী কটিতটে বাজে সুন্দর নূপুর পায়॥ ভুরুযুগবর ভঙ্গী করি মোর নিকটে আসিয়া সে। কত কত ছলে করে পরিহাস তাহা বা বুঝিবে কে॥ হাসিয়া হাসিয়া আমা পানে চাঞা ঠারয়ে আঁখির কোণে। ঘুচয়ে ঘুঙট কপটে কি করে পরাণ সহিত টানে॥ আর এপরূপ দেখিতে দেখিতে শ্যাম হৈল গোরা। কি দিব উপমা কত কত সতী যুবতী-পরাণচোরা॥ ধীর ধীর করি নিকট আসিয়া বসিয়া আমার পাশে। মধুর মধুর বচনে তোষয়ে অঙ্গের পরশ-আশে॥ মিছা ক্রোধে মুই মুখ ফিরাইলুঁ সুখের নাহিক ওর। ক্ষম অপরাধ বলিয়া সে পুনঃ আঁচরে ধরল মোর॥ অঙ্গ পরশিতে অবশ হইয়া মজিলুঁ উহার সনে। নরহরি-প্রাণপতি সুরসিক কৈল যে আছিল মনে॥
আজুক রজনি সুখময় স্বপন দেখিনু সই ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
আজুক রজনি সুখময় স্বপন দেখিনু সই। তোমরা পরমধন্যা জগমাঝে শুনহ সেই কথা কই॥ নিজ নিজ বেশ বিরচি চঞ্চল তোমরা বিরলে বসি। গোরাগুণ গান গাইয়া গাইয়া গোঙালা প্রহর নিশি॥ সময় জানিয়া দূতি পাঠাইলা গোবিন্দ আছেন যথা। সে অতি তুরিতে যাইয়া গৌরাঙ্গে কহিল সকল কথা॥ পুন সে তুরিতে তোমাদের পাশে আইলা আতুর হৈয়া। প্রাণপ্রিয় কথা তার মুখে শুনি চলিল সকলে ধাঞা॥ দূরে থাকি গোরা রূপের মাধুরী গেরিয়া মোহিত হৈলা। নিকুঞ্জ-ভবনে প্রবেশিয়া প্রাণনাথের নিকটে গেলা॥ সে অতি আদর করি বসাইল ধরিয়া সবার করে। হাসিয়া হাসিয়া কত পরিহাস করিলা পরশ পরে॥ গোরা সুচতুর নয়নের কোণে হানিল বিষম বাণ। তাহাতে বিবশ হইয়া রাখিতে নারিলা যৌবন মান॥ তোমা সবাকার ভুরু-ভুজঙ্গমে সঘনে দংশন কৈল। নদীয়াচাঁদের যে ছিল ধৈরজ তা মনে তখনি গেল॥ দুবাহু পসারি করে আলিঙ্গন অতুল উহার লেহ। সুবহু হরষে ঠারিনু বুঝিয়া অধিক মাতিল সেহ॥ তোমাদের মনে যে ছিল সে সাধ পূরিল রসিকরাজ। নরহরি বলে নিজ কথা কেন কহিতে বাসহ লাজ॥
শুন শুন সই স্বপনে দেখিনু নিকুঞ্জ কাননে গোরা ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন সই স্বপনে দেখিনু নিকুঞ্জ কাননে গোরা। তুয়া পথ পানে নিরখি কাতরে ঝরয়ে লোচনলোরা॥ মোর মুখে তুয়া গমন শুনিয়া কত না সাধিল মোরে। অতি তরাতরি হেরি তার দশা আসিয়া কহিনু তোরে॥ শুনিয়া উলসে বেশ বনাইয়া ভেটিল নিকুঞ্জ মাঝ। দূরেতে আদরি ধরি করে কোরে করিল রসিকরাজ॥ উপজিল কত কৌতুক ছলেতে মানিনী হইলা তুমি। নরহরি পহুঁ করয়ে মিনতি জাগি বিয়াকুল আমি॥
শুন শুন ওগো তোমারে বলিএ নিশির স্বপনকথা ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন ওগো তোমারে বলিএ নিশির স্বপনকথা। শ্রীবাস পণ্ডিত ঠাকুরের বাড়ী গেলাম গৌরাঙ্গ যথা॥ কিবা সে শ্রীবাস-অঙ্গনের শোভা দেখিয়া জুড়াল আঁখি। মনের হরিষে নিভৃতে দাঁড়ালুঁ ধৈরজে ধরম রাখি॥ তথা পরিকরগণ মনসুখে খোল করতাল লৈয়া। গায়য়ে মধুর সুর সুধাময় অতি উনমত হৈয়া॥ সে মণ্ডলি মাঝে সাজে শচীসুত কিবা অদভুত বেশ। নানাজাতি ফুলে রচিত রুচির চিকণ চাঁচর কেশ॥ শ্রুতিমূলে দোলে কুণ্ডল ললিত অতুল গণ্ডের ছটা। ভালে সুচন্দন বিন্দু বিন্দু যেন শারদ শশীর ঘটা॥ মৃদুতর পরিসর উরঃপরি তরল বিবিধ হার। পহিরণ নব ভূষণ লসয়ে কি দিব উপমা তার॥ ভুজভঙ্গী করি নাচে সুচতুর চরণ চালনি চারু। হরি হরি বোল বলে তাহা শুনি ধৈরজ না রহে কারু॥ না জানিয়ে তার কি ভাব উঠিল সঘনে কাঁপয়ে তনু। দু নয়নে ধারা বহে নিরন্তর নদীর প্রবাহ জনু॥ নিবিড় নিস্বাস ছাড়ি বিয়াকুল ভূমিতে পড়িল সেহ। সোণার কমল সম গড়ি যায় ধরিতে নারয়ে কেহ॥ তাহা দেখি মোর কাঁপিল অন্তর লাজে তিলাঞ্জলি দিনু। কি হৈল কি হৈল বলি উচ্চ করি কাঁদিয়া বিকল হনু॥ হেন কালে নিঁদ ভাঙ্গিল জাগিয়া বসিনু শয়ন যথা। কি কি বলি সবে ধাইয়া আইল পুছয়ে রোদন-কথা॥ কারে কি কহিব পুনঃ মনোদুখে ঘুমানু চাতকীপারা। ফিরিয়া স্বপন দেখিনু আমার অঙ্গনে আইলা গোরা॥ আইস আইস বন্ধু বলিয়া তুরিতে বসানু পালঙ্কপরি। শ্রম জানি নিজ আঁচরে বাতাস করিনু যতন করি॥ সাজাইয়া নব তাম্বুল সাজিয়া দিলাম সে চাঁদমুখে। নরহরি প্রাণনাথেরে লইয়া বসিনু মনের সুখে॥
শুন শুন ওগো রজনি-স্বপন কহিয়ে আছিয়ে মনে ভণিতা নরহরি কবি নরহরি সরকার ঠাকুর ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” (১৯৩৪, প্রথম সংস্করণ ১৯০২), ১৩৫-পৃষ্ঠা। শ্রীখণ্ড থেকে প্রকাশিত শ্রীল রাখালানন্দ ঠাকুর শাস্ত্রীর সম্পাদনায় “শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গমাধুরী” নামক পত্রিকায় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের, ১০৮টি পদের মধ্যে এই পদটিও গৌরপদতরঙ্গিণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
. ॥ যথারাগ॥
শুন শুন ওগো রজনি-স্বপন কহিয়ে আছিয়ে মনে। জগতের লোক পাগল হইল গৌরাঙ্গচাঁদের গুণে॥ কুমতি কুটিল কপটী নিন্দুক আদি যত যত ছিল। ছাড়ি বিপরীত স্বভাব সকলে গৌর-অনুগত হৈল॥ এইরূপ কত দেখিতে দেখিতে বারেক জাগিনু সই। পুনঃ ঘুমাইতে আর অপরূপ দেখিনু সে সব কই॥ যমুনাপুলিনে রাস-বিলাসাদি যেরূপ করিল শ্যাম। সেইরূপ গোরা সুরধুনীতীরে রচিল রসের ধাম॥ লাজকুলভয় সব তেয়াগিয়া নদীয়া নাগরী যত। মনোরথে চড়ি চলে যুথে যুথে এড়ায়ে কণ্টক শত॥ গৃহকাজ ত্যজি মু বড় চঞ্চল তথা যাইবার তরে। আচম্বিতে পতি আসিয়া তুরিতে কপাট দিলেক ঘরে॥ পড়িনু সঙ্কটে কারে কি কহিব অধিক বিকল হৈনু। মনে গেন প্রাণ না রবে পিয়ারে পুনহুঁ দেখিতে পাইনু॥ সে সময়ে ছলে কপাট খুলিল চতুর আমার জা। ধরমে ধরমে ধীরে ধীরে গৃহ-বাহিরে বাড়ানু পা॥ প্রফুল্লিত হৈয়া ধাইনু কাহার পানে না পালটি আঁখি। লোহার পিঞ্জর হইতে যেমন পালায় নবীন পাখী॥ যাইয়া তুরিতে নয়ান ভরিয়া দেখিনু গৌররায়। যুবতী মণ্ডলী মাঝে সাজে ভাল কি দিব উপমা তায়॥ নানাজাতি যন্ত্র বাজে চারি দিকে সুখের নাহিক পার। গাওয়ে মধুর সুরনারীগণ বরিষে অমিয়ধার॥ ও মুখ-কমল-মধুপানে মাতি মো পুনঃ নাচিনু সুখে। নরহরিনাথ তা দেখি হাসিয়া আমারে করিল বুকে॥