কবি সৈয়দ আইনদ্দিনের বৈষ্ণব পদাবলী |
বিনোদিয়আ জলদ বরণ কালা গ সই ভণিতা আএনদ্দিন কবি সৈয়দ আইনদ্দিন এই পদটি “সম্মিলন” পত্রিকায় ১৩২৪ বঙ্গাব্দের (১৯১৭খৃষ্টাব্দ) ভাদ্র ও আশ্বিন সংখ্যায় প্রকাশিত, মুনশী আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের “মুসলমান কবির বৈষ্ণব পদাবলী” প্রবন্ধে, ১৮২-পৃষ্ঠায়, এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ধানশী গুঞ্জরী॥ বিনোদিয়আ জলদ বরণ কালা গ (গো) সই১। ধু। আপন মঅনে কভু নাহি দেখি জলদ বরণ কালা গ সই। হাটিআ যাইতে নপূর বাজএ কেলি কদম্বেরি তলে গ সই। কহে আএ নদ্দিনে কেলি অনুক্ষণ। সাহা আকবর পদে করিআ চুম্বন॥ ১। মুলে ‘জলদ’ স্থলে ‘জলধ’ ও ‘সই’ স্থলে ‘সৈ’ আছে। . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
মরম দগধে প্রেমবাণে! ভণিতা সৈয়দ আইনদ্দিন কবি সৈয়দ আইনদ্দিন ব্রজসুন্দর সান্যাল সম্পাদিত, মূলত আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ও রমণীমোহন মল্লিক দ্বারা সংগৃহীত, “মুসলমান বৈষ্ণব কবি, ৩য় খণ্ড”, ১৯০৪, ১৩-পৃষ্ঠা। ॥ রামকেলি॥ মরম দগধে প্রেমবাণে! বন্ধুয়ারে শরীর ভেদিল কামবাণে॥ ধু॥ তোমা সঙ্গে করি প্রেম, হারাইলাম জাতি ধর্ম্ম, আর মরি লোক পরিবাদে। তোমা কি কহিব বন্ধু, আমার কপাল মন্দ, কি করিল! অই দীন নাথে॥ তোমার কঠিন হিয়া, ভজ নানা নারী লৈয়া, কোথা গেলা বসি রৈনু আমি। পালঙ্গ সাজাই নারী, জাগিয়া কান্দিয়া পুড়ি, নিশি গেল না আসিলা তুমি॥ কহে সৈয়দ আইনদ্দিনে, প্রভু ভাব রাত্র দিনে, মায়াজালে না করিও হেলা। আমারে অনাথ করি, তুমি যাও মধুপুরী, আর কি পাইব তব মেলা॥ এই পদটি ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত যতীন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য্য সম্পাদিত “বাঙ্গালার বৈষ্ণব-ভাবাপন্ন মুসলমান কবি”, ৯৮-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ রামকেলি - মাথুর॥ মরম দগধে প্রেমবাণে! বন্ধুয়ারে শরীর ভেদিল কামবাণে॥ ধু॥ তোমা সঙ্গে করি প্রেম, হারাইলাম জাতি ধর্ম্ম, আর মরি লোক পরিবাদে। তোমা কি কহিব বন্ধু, আমার কপাল মন্দ, কি করিল! অই দীন নাথে॥ তোমার কঠিন হিয়া, ভজ নানা নারী লৈয়া, কোথা গেলা বসি রৈনু আমি। পালঙ্গ সাজাই নারী, জাগিয়া কান্দিয়া পুড়ি, নিশি গেল না আসিলা তুমি॥ কহে সৈয়দ আইনদ্দিনে, প্রভু ভাব রাত্র দিনে, মায়াজালে না করিও হেলা। আমারে অনাথ করি, তুমি যাও মধুপুরী, আর কি পাইব তব মেলা॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
বৃন্দাবনে রাধা কানু রঙ্গের রঙ্গিআ ভণিতা সৈয়দ আইনদ্দিন কবি সৈয়দ আইনদ্দিন ব্রজসুন্দর সান্যাল সম্পাদিত, মূলত আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ও রমণীমোহন মল্লিক দ্বারা সংগৃহীত, “মুসলমান বৈষ্ণব কবি, ৩য় খণ্ড”, ১৯০৪, ১৩-পৃষ্ঠা। ॥ দেশকারী॥ বৃন্দাবনে রাধা কানু রঙ্গের রঙ্গিআ। চল রে সখী সব রূপ দেখি গিআ॥ ধু। তুমিত চিকণ কালা রূপেতে মোহন। কনক বরণ রাধে মিলিছে(১) আপন॥ রাধা বালা নব শশী কানু পূর্ণ চান্দ। একি অপরূপ দেখি চান্দের উপরে চান্দ॥ রূপেতে নৈরূপ বৈসে রূপে অনুপাম। রূপ না থাকিলে কার রাধা কানু নাম॥ কহে সৈয়দ আইনদ্দিনে হেরি রূপ পূর। সব রূপ একই রূপ পুষ্প কি মধুর (?)॥ ১। চিন কি -- পাঠান্তর। . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
মলআনিল বন্ধুতে কহিঅ পরণাম ভণিতা ছৈয়দ আইনদ্দিন কবি সৈয়দ আইনদ্দিন জলধর সেন সম্পাদিত “ভারতবর্ষ” পত্রিকার কার্তিক, ১৩২৩ সংখ্যায় (অক্টোবর ১৯১৬), আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের “বৈষ্ণব-কবিগণের পদাবলী” প্রবন্ধ, ৭৩৫-পৃষ্ঠা। ॥ রাগ - পাহিরা॥ মলআনিল বন্ধুতে কহিঅ পরণাম। জাইতে না পারি ডরে রিপুগণ আছে ঘরে দগধএ হিআ বাণ কাম॥ ধু॥ সোআমী দুর্জ্জন অতি শাশুড়ি চঞ্চল মতি দেঅরিআ বড়হি চতুর। ভাই শ্বশুরে না বাসে ভাল জালের বিষম জ্বাল(১) নিতি কহে বচন কঠোর॥ সতিনী রিসাল(২) অতি ননদী চাণক্য(৩) ভাতি নেপুর আছএ মোর পাএ। পদ অনুসারি জবে ঝুনাঝুনি বাজে তবে কোলের ছাবাল(৪) কান্দে রাএ॥ জদি বন্ধু আইস এথা বিরলে কহিমু কথা খণ্ডিব মনে দুঃখের ভার। ছৈয়দ আইনদ্দিনে কহে কিরূপে জীবন রহে সুজন বিচ্ছেদ হএ জার॥ ১। জাল - জা, স্বামীর ভাতৃ জায়া। জ্বাল - জ্বালা। ২। রিসাল - ঈর্ষা-পরায়ণা। ৩। ‘চাণক্য’ স্থলে মূলে ‘চানাক্য’ আছে। ছাবাল - ছাওয়াল ; ছেলে। . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |