কবি মনিরা খাতুন-এর কবিতা
*
স্পন্দন
কবি মনিরা খাতুন
মহম্মদ আলি সম্পাদিত “প্রগতি” পত্রিকার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ, ১৪১৮বঙ্গাব্দের (২০১১ খৃষ্টাব্দ)
ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত।

পেঁচে থাকার স্বপ্ন মাথায় নিয়ে অন্তর ধ্যানে নতুন বিন্যাসে
আমার চোখ দেখতে পায় সব কিছুই যেন আধুনিক কবিতা।
বেঁচে থাকা মানে ফসলের ডালি মাথায় কৃষকের আনন্দ
বেঁচে থাকা মানে চৈত্রের দুপুরে খালি পায়ে রিক্সা টানা।
বেঁচে থাকা মানে শীতের রাতে ফুটপাথে বস্ত্রহীন শিশুর কাঁপন
অথবা জীবনকে খুঁজে নিতে দেশের জন্য প্রাণ দেয় কারগিলে।
আমার চোখ দেখতে পায় সব কিছুই যেন আধুনিক কবিতা
বেঁচে থাকা মানে নিশান উড়িয়ে মিছিলে সামিল
বেঁচে থাকার জন্য  রেশনের দোকানে লাইন।
বেঁচে থাকার জন্য এখনও শিশু শ্রমিকের দল নাম লেখায় কারখানায়
বেঁচে থাকার স্বপ্ন মাথায় নিয়ে অন্তর ধ্যানে নতুন বিন্যাস।

.                   ****************                   
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
সোপান
কবি মনিরা খাতুন
মহম্মদ আলি সম্পাদিত “প্রগতি” পত্রিকার ৪৪তম বর্ষ, ১৪১২বঙ্গাব্দের (২০০৫ খৃষ্টাব্দ) ঈদ
সংখ্যায় প্রকাশিত।

অন্তর শুদ্ধিকরণের সোপান হয়ে পৃথিবীর মানুষের
ব্যখ্যা ক্ষণিকের জন্য ভুলিয়ে দিতে পারে অনুভবে
তোমার পবিত্রতা মানুষের অন্তর ছুঁয়ে যায়
সংযম ও ত্যাগের পরীক্ষা নিতে বসে থাকে বছর বছর
নিঃশব্দে মনের ভিতর রেখাপাত করে
ত্রিশ দিন যেন উত্সবের হৈচৈ মেতে ওঠে মন
খুশী হয়ে উপবাসী মানুষ দুহাত ভরে দান করে
চারিদিকে আনন্দের ঢেউ গড়াতে থাকে
সাম্য ও সম্প্রীতির আলোয় বিশ্বের মানুষ এক হয়ে
ধনী ও গরীবের মিল হয় যেন প্রতিদিন।

.                   ****************                   
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
অন্যায় অপবাদে
কবি মনিরা খাতুন
মহম্মদ আলি সম্পাদিত “প্রগতি” পত্রিকার ৪৩তমবর্ষ, ১৪১১বঙ্গাব্দের (২০০৪ খৃষ্টাব্দ) ঈদ
সংখ্যায় প্রকাশিত।

দিনরাত খুনখনি লেগে আছে পৃথিবীর বুকে
মানুষ দেখছে অট্টহাসিতে মেতে উঠেছে ঘাতক
কাতর চোখে অন্যের দিকে চেয়ে না থেকে
মজবুত হাতে হবে নিজেকে বাঁচার জন্যে
নিজেতে বাঁচিয়ে অপরের কথা যদি না
.                                        ভেবে এগোই
তবে জাতির জন্য হবে কলঙ্ক ফাঁসির দড়িতে
ঝুলাবে তারা দুর্বল পেয়ে অন্যায় অপবাদে
যারা অত্যাচারিত তাদেরই গলায় দেবে
শানিত তরবারি একটু সুযোগ পেলেই
সকলের সাথে হাতে হাত ধরে এগিয়ে গেলে
আসবে সাহস শক্তি যোগাবে মনের মাঝে
যারা মানুষ মেরে সাহস দেখায় সমাজে
সেই ব্লেয়ার বুশের আগ্রাসী মন দিনের মত সাফ
শয়তান শক্তির ধ্বংস হবার দিন মানুষের
.                                        হাতেই আজ তৈরি।

.                   ****************                   
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
কে যায় ওই দিকে
কবি মনিরা খাতুন
মহম্মদ আলি সম্পাদিত “প্রগতি” পত্রিকার ৫৫তমবর্ষ, ১৪২৩বঙ্গাব্দের (২০১৬ খৃষ্টাব্দ) ঈদ
সংখ্যায় প্রকাশিত।

কে যায় ওই দিকে হাতে মশাল নিয়ে---
সারা পৃথিবী যেন জয় করবে শুধু লড়াই করে।
অবিরাম গতিতে ছুটছে মানুষ ক্ষুধার জ্বালায়
যদি একটু আশ্রয় পাওয়া যায়।
চারিদিকে মানুষের মিছিল ছুটছে মাটির বুকে
সারাজীবন ছুটছে শান্তির বার্তা দেবে বলে।
অন্যায়ভাবে কিছু না করে বলে দাও সকলকে
যদি যাবে চলো পুরানো স্মৃতির মূল্য দিতে।

.                   ****************                   
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
পাওনা পাবে সে
কবি মনিরা খাতুন
মহম্মদ আলি সম্পাদিত “প্রগতি” পত্রিকার ৫৫তমবর্ষ, ১৪২৩বঙ্গাব্দের (২০১৬ খৃষ্টাব্দ) ঈদ
সংখ্যায় প্রকাশিত।

পথ চলতে চলতে রাস্তার ধারে দেখি
জীর্ণ শরীর নোংরা কাপড় দিয়ে ঢাকা।
জানি না রোন বয়সে সে এসেছিল শৈশবে না যৌবনে
হঠাৎ একদিন আর পরেনি হাঁটতে তাই শুয়ে আছে।
কোনো ভাবনা নেই মনে ঋণী শুধু পথের কাছে।
কেন যে জন্ম হয়েছিল এই বিশাল পৃথিবীর এক কোণে।
চিন্তা নেই মনে কিভাবে উঠে দাঁড়াবে আগের মত
হাত দুটি বাড়ালে তবেই তো মানুষ কিছু দেবে হাতে।
পাওনা পাবে সে নিজের জীবন দিয়ে পথের মাঝে
আশ্রয় পেয়েছিল বলে।

.                   ****************                   
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর
*
অচেনার সন্ধান
কবি মনিরা খাতুন
মহম্মদ আলি সম্পাদিত “প্রগতি” পত্রিকার ৫৪তমবর্ষ, ১৪২২বঙ্গাব্দের (২০১৫ খৃষ্টাব্দ) ঈদ
সংখ্যায় প্রকাশিত।

মনে পড়ে বাড়িতে বারান্দায় সন্ধ্যায়
পড়তে বসে শৈশবে মারামারি হতো কত।
পড়ার শেষে বই গুছিয়ে আবার লুডো খেলা
ভাইবোনেরা গল্পে মাতা একসাথে বসে।
খাবার খাওয়ার সময় হলেও গল্প হতো না শেষ।
মায়ের ডাক শুনে কি মজা পেতাম তখন
এখন আর ডাক নেই, নেই মা আমাদের কাছে।
তাই অচেনার সন্ধানে তাকিয়ে থাকি বহুদূর
খুঁজে ফিরি সেই চেনা মুখ কোথায় হারিয়ে গেল।

.                   ****************                   
.                                                                               
সূচীতে . . .   


মিলনসাগর