কবি গোপীচরণ - সম্ভবত জন্মগ্রহণ করেন মেদিনীপুর জেলার কেশবপুর থানার অন্তর্গত আনন্দপুর গ্রামে। সেই গ্রামের জগন্নাথ গুঁই এর পুত্র হারাধন গুঁই এর পুত্র কবি গোপীকৃষ্ণ গুঁই, যিনি গোপীচরণ ভণিতায় পদাবলী লিখেছেন।
১৯১৭ খৃষ্টাব্দে (৪৩০ শ্রীচৈতন্যাব্দ), গোপীকৃষ্ণ গুঁই সম্পাদিত ও সংকলিত “শ্রীশ্রীহরিনাম সংকীর্ত্তন-মালা” পদাবলী সংকলন, ৩-পৃষ্ঠায়, গ্রন্থের মঙ্গলাচরণে এইরূপে তাঁর নিজের পরিচয় দেওয়া রয়েছে।
মধ্যবঙ্গ মেদিনীপুর, গ্রাম আনন্দপুর, . কেশবপুর থানারান্তর্গত। দক্ষিণ বাজারে ধাম, জগন্নাথ গুণধাম . গুঁইবংশ সমুদ্ভুত॥ সেই জগন্নাথ সুত, হারাধন গুণযুত, . তস্যাত্মজ শ্রীগোপীচরণ। (হরি) নাম-সংকীর্ত্তনমালা, রচিতে অতি উথলা . কর হরি বাসনা পূরণ॥
১৯১৭ খৃষ্টাব্দে (৪৩০ শ্রীচৈতন্যাব্দ), মেদিনীপুর জেলার, আনন্দপুর গ্রামের, দক্ষিণ বাজারের শ্রীশ্রী হরিসভা থেকে প্রকাশিত হয় “শ্রীশ্রীহরিনাম সংকীর্ত্তন-মালা” নামক একটি বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন। গ্রন্থটি সংকলকন করেছিলেন গোপীকৃষ্ণ গুঁই। সেই গ্রন্থের মঙ্গলাচরণে “গ্রন্থকারস্য” একটি পদে তিনি “গোপীচরণ” ভণিতা দিয়েছেন। ওই পদটিতে তাঁর পরিচয় ইত্যাদিও দেওয়া রয়েছে যা আমরা উপরে উল্লেখ করেছি। ওই গ্রন্থে ওই ভণিতার আর কোনও পদ নেই। কিন্তু ৩৯টি ভণিতাহীন পদ রয়েছে ওই গ্রন্থে। ওই পদগুলির মধ্যেও তাঁর কোনও পদ রয়েছে কি না তা জানা যায় না। তবে মঙ্গলাচরণের পদটিতে “গ্রন্থকারস্য” উল্লেখ রয়েছে দেখে এমন হতেও পারে যে এই গ্রন্থে তাঁর রচিত আর কোনও পদ নেই।
উপরোক্ত পদটি ছাড়া “গোপীচরণ” ভণিতার আরও দুটি পদ আমরা পেয়েছি ১৯৪৬ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সংকলিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলনে। এর পূর্বের কোনও পদাবলী সংকলনে এই ভণিতার কোনও পদ আমরা পাইনি। আমরা অনুমান করছি যে এই ”গোপীচরণ” ভণিতার কবি গোপীকৃষ্ণ গুঁই আর হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সংকলিত “বৈষ্ণব পদাবলী”-তে ধৃত “গোপীচরণ দাস” ভণিতার “সই গো আমার মনেতে কিছু ভায় না” এবং “যত প্রবোধিয়ে মনে প্রবোধ নাহিক মানে” পদ দুটির রচয়িতা, অন্য কোনও প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত, এক ও অভিন্ন ব্যক্তি।