কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তর গান ও কবিতা
*
আচার ভ্রংশ
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৮৮৫ সালে প্রকাশিত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টেপাধ্যায় সম্পাদিত ও সংগৃহীত “ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের
জীবনচরিত ও কবিত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ এবং কবিতা সংগ্রহ” গ্রন্থের পাঁচ খণ্ডে ঈশ্বর গুপ্তের
কবিতার সংগ্রহের ২য় খণ্ড সামাজিক কবিতা।

কালগুণে এই দেশে বিপরীত সব।
দেখে শুনে মুখে আর, নাহি সরে রব ॥
এক দিকে দ্বিজ তুষ্ট, গোল্লাভোগ দিয়া।
আর দিকে মোল্লা বোসে, মুর্গি মাস নিয়া॥
এক দিকে কোশাকুশী, আয়োজন নানা।
আর দিকে টেবিলে, ডেবিলে খায় থানা॥
ভূতের সংসারে এই, হোয়েছে অদ্ভূত।
বুড়া পূজে ভূতনাথ, ছোঁড়া পূজে ভূত!
পিতা দেয় গলে সূত্র, পুত্র ফ্যালে কেটে।
বাপ পূজে ভগবতী, ব্যাটা দেয় পেটে!
বৃদ্ধ ধরে পশু-ভাব, জশু-ভাব শিশু।
বুড়া বলে রাধাকৃষ্ণ, ছোঁড়া বলে ঈশু॥
হাসি পায় কান্না আসে, কব আর কাকে?
যায় যায় হিঁদুয়ানী, আর নাহি থাকে॥
ওহে কাল কালরূপ, করালবদন।
তোমার রদনযুক্ত, মরালবাহন॥
দেব দেবী কত তুমি, করিয়া সংহার।
ভারতের স্বাধীনতা, করিলে আহার॥
কিছু বুঝি নাহি পাও, চারি দিক চেয়ে।
এখন ভরাবে পেট, হিন্দুধর্ম খেয়ে?
দোহাই দোহাই কাল, শান্তিগুণ ধর।
উঠ উঠ পান লও, আঁচমন কর॥

.              ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
বাবাজান বুড়াশিবের স্তোত্র
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৮৮৫ সালে প্রকাশিত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টেপাধ্যায় সম্পাদিত ও সংগৃহীত “ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের
জীবনচরিত ও কবিত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ এবং কবিতা সংগ্রহ” গ্রন্থের পাঁচ খণ্ডে ঈশ্বর গুপ্তের
কবিতার সংগ্রহের ২য় খণ্ড সামাজিক কবিতা, ১৩৪-পৃষ্ঠা।

Marshman যখন ভারতবর্ষ পরিত্যাগ করিয়া দেশে যান, তখন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত এই কবিতা
লিখিয়া, তাঁহাকে বিদায় দেন। দুইজনে বড় বনিবনাও ছিল না।

॥ রঙ্গবিলাস ছন্দ॥

বম্‌ বম্‌ বম্, বব, বম্‌ বম্ বম্।
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস্‌ শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্‌।
বম্‌ বম্ বম্‌, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌॥
.        _______________

শ্রীধাম শ্রীরামপুর, কৈলাস শিখর।
বিশ্বমাঝে অপরূপ, দৃশ্য মনোহর॥
কোম্পানির প্রতিষ্ঠিত, তুমি বুড়া শিব।
তথায় বিরাজ করি, তরাতেছ জীব॥
শুভ্রদেহ ভূতনাথ, ভোলা মহেশ্বর।
গঙ্গার তরঙ্গ তব, মাথার উপর॥
কখনো প্রখর বেগ, কভু থম্‌ থম্‌।
বম্‌ বম্‌ বম্, বব, বম্‌ বম্‌ বম্॥
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্।
বম্‌ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম্ বম্‌॥
.        _______________

“ফ্রেও অব ইণ্ডিয়া” বৃষতে আরোহণ।
অহঙ্কার অলঙ্কার, ভূজঙ্গ-ভূষণ॥
পক্ষপাত হাড়মালা, সদা সুশোভন।
মিথ্যা, ছল, তোষামোদী, ত্রিশূল ধারণ॥
ধূম্রপান ছল তব, কাগজের কল।
ঊর্দ্ধভাগে ধক্‌ ধক্, জ্বলিছে অনল॥
দমে দমে দমবাজী, নাহি খাও দম।
বম্‌ বম্‌ বম, বব, বম্ বম্‌ বম্।
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটি শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্।
বম্ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌॥
.        _______________

টাউন্সেণ্ড #, রবার্টসন্ ## , নন্দী ভৃঙ্গী দুটো।
নিয়ত নিকটে আছে, দাঁতে করি কুটো॥
ছাই-ভস্ম-বিভূষিত এটোকাঁটা খায়।
গালবাদ্য করি সদা, বগল বাজায়॥
“ডেবিল" দুপাশে তারা, টেবিল ধরিয়া।
“এবিল" হতেছে সুখে, তোমায় ম্মরিয়া॥
কাজ ভাল, লাজহীন, রাজপ্রিয়তম্।
বম্‌ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম্ বম্‌॥
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্।
বন্‌ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌॥
.        _______________

লাঞ্ছনার বাঘছাল, বঞ্চনার ঝুলি।
এক মুখে পঞ্চানন, সাধে বলি শূলী॥
তিরস্কার পুরস্কার, অতুল বিভব।
নিজ নিন্দা শ্রবণেতে, হোয়ে থাক শব॥
কালীরূপে কালী তব, হদয়ে বিহরে।
সৃষ্টির মড়ার কাঁথা, জমা আছে ঘরে॥
ত্রিভুবন জয় করে, তব পরক্রম।
বম্‌ বম্‌ বম্, বব, বম্ বম্‌ বম্॥
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্ ভম্।
বম্‌ বম্‌ বম্, বব, বম্ বম্ বম্‌॥
.        _______________

কাউন্সিল কোচের গৃহে, বড় সমাদয়।
অনুরক্ত তক্ত তব, যত গবানর॥
সিবিল শৈবের দল, স্তব পাঠ করে।
হরে হরে বাবাজান, বাবাজান হরে॥
ষোঢ়শোপচারে পূজা, ভক্তে করে যোগ।
মন্দিরে বসিয়া সুখে, খাও রাজভোগ॥
তোমার গুণের কেহ, নাহি পায় ফম্‌।
বম্‌ বম্‌ বম্, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌॥
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্‌।
বম্‌ বম বম্, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌॥
.        _______________

“ধর্মতলা” ধর্ম্মহীন, গোহত্যার ধাম।
“ফ্রণ্ড অব ইণ্ডিয়া” সেরূপ তব নাম॥
বিশেষ মহিমা আমি, কি কহিব আর।
“ফ্রেণ্ড” হয়ে, ফ্রেণ্ডের, খেয়েছ তুমি আর (R)॥
কত ভাব ধর তুমি, কত ভাব ধর।
রাজায় করিলে খুন, গুণ গান কর॥
ভ্রমিতে অন্যায় পথে, কিছু নাছি ভ্রম।
বম্‌ বম্ বম্‌, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌।
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্‌।
বম্‌ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম্‌ বম্‌॥
.        _______________

কালো তুমি শাদা কর, শাদা কর কালো।
আলো কর অন্ধকারে, অন্ধকারে আলো॥
স্থলেরে আকাশ কর, অকাশেরে স্থল।
জলেরে অনল কর, অনলেরে জল॥
কাঁচারে বানাও পাকা, পাকা কর কাঁচা।
সাঁচারে বানাও ঝুঁটো, ঝুঁটো কর সাঁচা॥
কাঙ্গালির দুখদাতা, বাঙ্গালীর যম্‌।
বম্‌ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম বম্‌।
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে ভম্‌ ভম্‌ ভম্‌।
বম্‌ বম্‌ বম্‌, বব, বম্ বম্‌ বম॥
.        _______________

শুনিতেছি বাবাজান, এই তব পণ।
সাক্ষ্য দিতে করিতেছ, বিলাত গমন॥
যোড়করে পশুপতি, করি নিবেদন॥
সেখানে কোরোনা গিয়া, প্রজার পীড়ন॥
ভূত প্রেত সঙ্গী গুলি, সঙ্গে লোয়ে যাও।
এখানে বসিয়া কেন মাথা আর খাও?
বাজাই বিদায়ী বাদ্য, টম্ টম্ টম্।
বম্ বম্‌ বম্‌, বব, বম্ বম্ বম্॥
.        কিসে তুমি কম?
বাজাও ব্রিটিস শিঙ্গে, ভম্‌ ভম্‌ ভম্‌।
বম্ বম্‌ বম্‌, বব, বম্‌ বম্ বম্॥
.        _______________

# Metedith Townsend যিনি পরে লণ্জনে Spectator পত্রের সম্পাদক হইয়াছিলেন।
শ্রীরামপুরে ইনি “সমাচার দর্পনের” সম্পাদক ছিলেন।
## তখনকার Government Translator.

.              ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
বাঙ্গালীর মেয়ে
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৯১৯ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দ্বারা বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে
প্রকাশিত “ঈশ্বরগুপ্তের গ্রন্থাবলী (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে)” এর “কবিতা-গুচ্ছ” অধ্যায়
থেকে নেওয়া।

লক্ষ্মী মেয়ে যারা ছিল,
তারাই এখন চড়বে ঘোড়া চড়বে ঘোড়া!
ঠাঠ ঠমকে চালাক চতুর
.        সভ্য হবে থোড়া থোড়া !!
আর কি এরা এমন কোরে,
.        সাঁজ সেঁজুতির ব্রত নেবে?
আর কি এরা আদর কোরে,
.        পিঁড়ি পেতে অন্ন দেবে?
কপালে যা লেখা আছে,
.        তার ফল তো হবেই হবে!
(এরা) এ বি পোড়ে বিবি সেজে,
.        বিলিতী বোল কবেই কবে!
(এরা) পর্দ্দা তুলে ঘোম্ টা খুলে,
.        সেজে গুজে সভায় যাবে!
ড্যাম্‌ হিন্দুয়ানী বোলে
.        বিন্দু বিন্দু ব্রাণ্ডি খাবে!
আর কিছুদিন থাক্ লে বেঁচে,
.        সবাই দেখতে পাবেই পাবে!
(এরা) আপন হাতে হাঁকিয়ে বগী,
.        গড়ের মাঠের হাওয়া খাবে!

১২৬৫ বঙ্গাব্দে দেহত্যাগের অব্যবহিত পূর্ব্বে কবিবর এই দৈববাণী করিয়া গিয়াছেন।

.              ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
ভারতভূমির দুর্দ্দশা
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৯১৯ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দ্বারা বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে  
প্রকাশিত “ঈশ্বরগুপ্তের গ্রন্থাবলী (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে)” এর “বিবিধ” অধ্যায় থেকে
নেওয়া।

ভারতের দশা হেরি বিদরে হৃদয়।
জননী দুর্ভাগ্যে যথা তাপিত তনয়॥
মনে হ’লে প্রাচীন সুখের সুসময়।
অসম্ভব বলি কভু প্রত্যয় না হয়॥
কিরূপেতে বিজাতীয় রাজা রাহু আসি।
সুখরূপ শশধরে আহারিল গ্রাসি॥
বেদরূপ সুধাভাণ্ড লয় হলে ক্রমে।
মানুষ মানসফল মোহ আর ভ্রমে॥
ললিত মালতী লতা ভারতের ভাষা।
কটুতা কীটের যাহে নিতি মিলে বাসা॥
কবিতা-কুসুম-কলি ফুটেছিল কত।
সাহিত্য-স্বরূপ মধু পূর্ণ অবিরত॥
অলঙ্কার পদ্মপুঞ্জ লালিত্য পরাগ।
বর্ণরূপ বর্ণ তার সুবিচিত্র রাগ॥
শাস্ত্ররূপ ফল এক ধরেছিল তায়।
ভক্ষণেতে চতুর্ব্বর্গ ফল যাহে পায়॥
বেদবিধি রসভার অপরূপ ভাণ।
ক্ষুধা তৃষ্ণা হত তার যেই করে পান॥
অগিহোত্র আদি নিত্য নৈমিত্তিক ক্রিয়া।
কোথা ক্ষুধা কোথা তৃষ্ণা এ সব আশ্রিয়া॥
বিজ্ঞানস্বরূপ বীজ ছিল সেই ফলে।
অসংখ্য লতিকা যাহে জনিতা বিরলে॥
এমন সুখের লতা আশ্রয় বিহনে।
দিন দিন ম্রিয়মাণা দুঃখের কারণে॥
হায় হায় সত্যাশ্রয়ী মানুষ কোথায়।
অসত্য হইল সত্য মিথ্যার প্রভায়॥
অবিদ্যায় অবসন্ন মানবের মন।
অবিবেকী আবিনয়া আদরভাজন॥
প্রসন্নতা প্রবাহ প্রণয় সাধুজনে।
প্রবোধ-প্রভাব কভু নাহি হয় মনে॥
প্রদীপের দীপ্তিরূপ প্রপঞ্চ আমোদে।
মুগ্ধ মন-মধুকর প্রমদা-প্রমোদে॥
প্রদ্যুম্ন প্রবল অতি প্রসক্তি প্রসঙ্গ।
প্রশ্রয় পাইয়া সদা দগ্ধ করে অঙ্গ॥
রাগে অনুরাদ-হত রসাল রসনা।
নয়নে নয়ন করে আগুনের কোণা॥
গরল মিশ্রিত তাহে মুখের বচন।
ক্ষমা শান্তি আদি হয় যাহাতে নিধন॥
কটাক্ষের শরে করে সকলে অস্থির।
প্রচণ্ড সমীরে যেন সরোবর নীর॥
ললিত হয়েছে পুনঃ লোভরূপ ফাঁস।
পরায় মনের গলে বাসনা-বাতাস॥
পরদারা পরধন হরণে ব্যাকুল।
বিহ্বল লালসা মদে সদা স্থুলে তুল॥
মোহ-মেঘ ক'রে আছে বিবেক আচ্ছন্ন।
চেতনা চন্দ্রিকা আছে গুপ্ত প্রতিপন্ন॥
দারাসুত সহ সমবেশ সর্ব্বক্ষণ।
চিত্তের কমলে মায়া হয় সঞ্চারণ॥
মদেতে প্রমত্ত মন বিপদ্‌ ঘটায়।
পরের সম্পদে সদা কাতর করায়॥
ঈর্ষ্য হিংসা দ্বেষ মদে পূর্ণ এই দেশ।
সকলে সমান নাই ইতর-বিশেষ॥
গরিমা-গরলে গেল গুণের গৌরব।
আপনি কবল্যধাম অপর রৌরব॥
এইরূপ ষড়রিপু নিবারিত নহে।
সোনার ভারতভূমি ভস্ম করি দহে॥
ঘত লোক অলসে অবশ কলেবর।
দরিদ্র পরের ছিদ্র সন্ধানে তৎপর॥
নাহি মাত্র ঐক্য সখ্যভাবের সঞ্চার।
হীন ধর্ম্ম কর্ম মর্ম্ম গুপ্ত সবাকার॥
কুকর্ম্মেতে শূন্য হয় ধনের ভাণ্ডার।
সুকর্ম্মে মুদিত হস্ত কমল-আকার॥
কোনমতে বৃদ্ধি যাহে হয় স্বীয় গর্ব্ব।
করেন বিধিধ পর্ব্ব শ্রাদ্ধ আদি সর্ব্ব॥
কিরূপ পাতক-বৃদ্ধি উৎসবের দিনে।
লিখিতে লেখনি যায় লজ্জার অধীনে॥
হিন্দুধর্ম্ম রক্ষা হেতু যে হয় উদ্যোগ।
বালির সেতুর প্রায় সেই কর্ম্মভোগ॥
ধর্ম-রক্ষা হেতু এক বিদ্যালয় আছে।
কত দিন প্রদেশ অস্থির হইয়াছে॥
অবশেষে ধনাভাবে ছলো ছায়াবাজি।
বিপক্ষে দিতেছে গালি বলি ছুঁচোপাজি॥
ধর্ম্ম-সভাপতি সবে ধর্ম্ম-অধিকারী।
কি কর্ম্ম করিছে যত উত্তরাধিকারী॥
পিতা পৌত্তলিক পুত্র একেশ্বরবাদী।
নাম মাত্র মতাক্রান্ত সর্ব্বধর্ম্মবাদী॥
হিন্দু নাম ইঁহাদের হয়েছে কেমন।
নামেতে বিহঙ্গ মাত্র মরাল যেমন॥
ইঁহারা করেন ঘৃণা খৃষ্টিয়ানগণে।
কোকিল দোষেন যেন কাকের বরণে॥
এরূপেতে পূণ্যভূমি হলো ছারখার।
বিভুর করুণা বিনা রক্ষা নাই আর॥
ভারতের দশা হেরি বিদরে হৃদয়।
জননী-দুর্ভাগ্যে যথা তাপিত তনয়॥

.              ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
ভারতের অবস্থা
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৯১৯ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দ্বারা বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে
প্রকাশিত “ঈশ্বরগুপ্তের গ্রন্থাবলী (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে)” এর “মানস-মোহন” অধ্যায়
থেকে নেওয়া।

শুকায়ে সিন্ধুর জল হইয়াছে দ্বীপ।
নিবিয়াছে একেবারে হিন্দুর প্রদীপ॥
দীনবন্ধু কৃপাসিন্ধু বিভু বিশ্বসার।
ভারতের বন্ধু যদি হন পুনর্ব্বার॥
হিন্দুর সুখের আর ভাবনা কি তবে?
ছিল সিন্ধু, হ'ল বিন্দু পুনঃ সিন্ধু হবে।
দীনবন্ধু বলে হিন্দু যদি সিন্ধু হয়।
সহজে হুইবে তবে হিন্দুর উদয়॥
হিন্দুর কপালক্রমে সুখ-দিনকর।
হয়েছিল এককালে অতি খরতর॥
কালেতে এখন আর নাহি সেই দিন।
দিনকর হীনকর দিন দিন দিন॥
প্রাপ্ত হয়ে ঈশ্বরের কৃপামেঘ-জল।
হয়েছিল ভাগ্যনন্দ প্রচুর প্রবল॥
সুখঢেউ আনন্দ-অনিলে অবিরত।
দ্রুতবেগে নেচে নেচে ছুটেছিল কত॥
অদৃষ্ট অদৃষ্ট হিম পেয়ে নিজ কাল।
কালক্রমে এককালে হইয়াছে কাল॥
এখন হিন্দুর সেই ভাগ্যরূপ নদ।
একেবারে শুকায়েছে হারায়েছে পদ॥
কাল পেয়ে ফুটেছিল কুসুমের কলি।
উঠেছিল গন্ধ তার ছুটেছিল অলি॥
এখন শুকায়ে দল ঝরিয়াছে সব।
নাহি গন্ধ মকরন্দ নাহি ভৃঙ্গ-রব॥
জাগ জাগ জাগ সব ভারত-কুমার।
আলস্যের বশ হয়ে ঘুমাও না আর॥
তোল তোল তোল মুখ খোল রে লোচন।
জননীর অশ্রুপাত কর রে মোচন॥
ভেঙ্গেছে শোবার খাট পড়িয়াছে ভূমে।
এখনো তোমার এত সাধ কেন ঘুমে?
রাত্রি আর কিছু নাই হইয়াছে ভোর।
যে দেখিছ অন্ধকার---কুয়াশার ঘোর॥
তিমিরে রবির ছবি আছে আচ্ছাদন।
তুষার উষার শোভা করেছে হরণ॥
ঈষৎ দিনের দীপ্তি রক্তবৎ রেখা।
এখনি মোলিলে আঁখি স্থির যাবে দেখা॥
কু-আশার এ কুয়াশা কত আর রবে।
প্রভাকর 'প্রকাশেতে সব দূর হবে॥
ঈশ্বর প্রতাপ সিংহ, স্বভাবেই হরি।
তার কাছে কোথা আছে, কুজ্ঝটিকা করী?
আছে গুপ্ত প্রভাকর, ব্যক্ত যদি হয়।
আর না রহিবে তবে, কু-আশার ভয়॥
একেবারে হরে তায়, ভারতের ভালো।
দশ দিকে দীপ্ত হবে, কুশলের আলো॥

.              ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
মাতৃভাষা
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৮৮৫ সালে প্রকাশিত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টেপাধ্যায় সম্পাদিত ও সংগৃহীত “ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের জীবনচরিত ও
কবিত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ এবং কবিতা সংগ্রহ” গ্রন্থের পাঁচ খণ্ডে ঈশ্বর গুপ্তের কবিতার সংগ্রহের ৫ম খণ্ডের
বিবিধ বিষয়ক কবিতা।

মায়ের কোলেতে শুয়ে,               উরুতে মস্তক থুয়ে,
খল খল সাহাস্য বদন।
অধরে অমৃত ক্ষরে,               আধো আধো মৃদুস্বরে,
আধো আধো বচনরচন।
কহিতে অন্তরে আশা,                মুখে নহি কটূভাষা,
ব্যাকুল হোয়েছ কত তায়।
মা-ম্মা-মা-মা-বা-ব্বা বা-বা, আবো, আবো, আবা, আবা,
সমুদয় দেববাণী প্রায়॥
ক্রমেতে ফুটিল মুখ,                     উঠিল মনের সুখ,
একে একে শিখিলে সকল।
মেসো, পিশে, খুড়া, বাপ,           জুজু, ভূত, ছুঁচো, সাপ,
স্থল, জল, আকাশ, অনল॥
ভাল মন্দ জানিতেনা,                   মলমূত্র মানিতেনা,
উপদেশ শিক্ষা হোলো যত।
পঞ্চমেতে হাতে খড়ি,                   খাইয়া গুরুর ছড়ি,
পাঠশালে পড়িয়াছ কত।
যৌবনের আগমনে,                   জ্ঞানের প্রতিভা মনে,
বস্তু বোধ হইল তোমার।
পুস্তক করিয়া পাঠ,                     দেখিয়া ভবের নাট,
হিতাহিত করিছ বিচার॥
যে ভাষায় হোয়ে প্রীত,                  পরমেশ-গুণ-গীত,
বৃদ্ধকালে গান কর মুখে।
মাতৃ সম মাতৃভাষা,                পুরালে তোমার আশা,
তুমি তার সেবা কর সুখে॥

.                          ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
স্বদেশ
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৮৮৫ সালে প্রকাশিত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টেপাধ্যায় রচিত ও সংগৃহীত “ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের জীবনচরিত ও কবিত্ব
বিষয়ক প্রবন্ধ” গ্রন্থের পাঁচ খণ্ডে ঈশ্বর গুপ্তের কবিতার সংগ্রহের ৫ম খণ্ডের বিবিধ বিষয়ক কবিতা।

জাননা কি জীব তুমি,                জননী জনমভূমি,
যে তোমার হৃদয়ে রেখেছে।
থাকিয়া মায়ের কোলে,           সন্তানে জননী ভোলে,
কে কোথায় এমন দেখেছে?
ভূমিতে করিয়া বাস,             ঘুমেতে পূরাও আশ,
জাগিলে না দিবা বিভাবরী।
কত কাল হরিয়াছ,                    এই ধরা ধরিয়াছ,
জননী-জঠর পরিহরি॥
যার বলে বলিতেছ,                যার বলে চলিতেছ,
যার বলে চালিতেছ দেহ।
যার বলে তুমি বলী,               তার বলে আমি বলি,
ভক্তি ভাবে কর তারে স্নেহ॥
প্রসূতী তোমারে যেই,                তাহার প্রসূতী এই,
বসুমাতা মাতা সবাকার।
কে বুঝে ক্ষিতির রীতি,          তোমার জননী ক্ষিতি,
জনকের জননী তোমার॥
কত শস্য ফলমূল,                     না হয় যাহার মূল,
হীরকাদি রজত কাঞ্চন।
বাঁচাতে জীবের অসু,                বক্ষেতে বিপুল বসু,
বসুমতী করেন ধারণ॥
সুগভীর রত্নাকর,                       হইয়াছে রত্নাকর,
রত্নময়ী বসুধার বরে।
শূন্যে করি অবস্থান,                 করে করে কর দান,
তরণি ধরণীরাণী-করে॥
ধরিয়া ধরার পদ,                     পেয়ে পদ নদী, নদ,
জীবনে জীবন রক্ষা করে।
মোহিনী মহীর মোহে,               বহ্নি বারি বন্ধু দোঁহে,
প্রেমভাবে চরে চরাচরে॥
প্রকৃতির পূজা ধর,                     পুলকে প্রণাম কর,
প্রেমময়ী পৃথিবীর পদে।
বিশেষতঃ নিজদেশে,                প্রীতি রাখ সবিশেষে,
মুগ্ধ জীব যার মোহমদে॥
ইন্দ্রের অমরাবতী,                 ভোগেতে না হয় মতি,
স্বর্গভোগ উপসর্গ সার।
শিবের কৈলাসধাম,                     শিবপূর্ণ বটে নাম,
শিবধাম স্বদেশ তোমার॥
মিছা মণি মুক্তা হেম,                   ম্বদেশের প্রিয়প্রেম,
তার চেয়ে রত্ন নাই আর।
সুধাকরে কত সুধা,                  দূর করে তৃষ্ণা ক্ষুধা,
স্বদেশের শুভ সমাচার॥
ভ্রাতৃভাব ভাবি মনে,                   দেখ দেশ্ববাসীগণে,
প্রেমপূর্ণ নয়ন মেলিয়া।
কতরূপ স্নেহ করি,                    দেশের কুকুর ধরি,
বিদেশের ঠাকুর ফেলিয়া॥
স্বদেশের প্রেম যত,                     সেই মাত্র অবগত,
বিদেশেতে অধিবাস যার।
ভাব তুলি ধ্যানে ধরে,                  চিত্তপটে চিত্র করে,
স্বদেশের সকল ব্যাপার।
স্বদেশের শাস্ত্রমতে,                      চল সত্য ধর্ম্মপথে,
সুখে কর জ্ঞান আলোচন।
বুদ্ধি কর মাতৃভাষা,                 পূরাও তাহার আশা,
দেশে কর বিদ্যাবিতরণ॥
দিন গত হয় ক্রমে,                   কেন আর ভ্রম ভ্রমে,
স্থির প্রেমে কর অবধান।
বাস করি এই বর্ষে,                   এই ভাবে এই বর্ষে,
হর্ষে কর বিভুগুণগান।
উপদেশ বাক্য ধর,                 দেশে কেন দ্বেষ কর,
শেষ কর মিছে সুখ-আশা।
তোমার যে ভালবাসা,                সে হোলনা ভালবাসা,
আর কোথা পাবে ভালবাসা?
এ বাসা ছাড়িবে যবে,            আর কি হে আশা রবে?
প্রাপ্ত হয়ে আশা-নাশা বাসা।
কেবা আর পায় দেখা,              এলে একা, যাবে একা,
পুনর্ব্বার নাহি আর আসা।

.                          ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
ভারতের ভাগ্যবিপ্লব
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৯১৯ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দ্বারা বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে প্রকাশিত “ঈশ্বরগুপ্তের
গ্রন্থাবলী (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে)” এর “বিবিধ” অধ্যায় থেকে নেওয়া।

জননী ভারতভূমি,                আর কেন থাক তুমি,
ধর্ম্মরূপ ভুষাহীন হয়ে?
তোমার কুমার যত,                   সকলেই জ্ঞানহত,
মিছে কেন মর ভার বয়ে?
পূর্ব্বকার দেশাচার                   কিছুমাত্র নাহি আর
অনাচারে অবিরত রত।
কোথা পূর্ব রীতি নীতি,             অধর্মের প্রতি প্রীতি,
শ্রুতি হয় শ্রুতিপথহত॥
দেশের দারুণ দুখ                   দেখিয়া বিদরে বুক,
চিন্তায় চঞ্চল হয় মন।
লিখিতে লেখনী কাঁদে                   ম্লানমুখ মসীছাঁদে
শোক-অশ্রু করে বরিষণ॥
কি ছিল কি হ'ল, আহা,            আর কি হইবে তাহা,
ভারতের ভবভরা যশ।
ঘুচিবে সকল রিষ্টি                     হবে সদা সুখ-বৃষ্টি,
সর্ব্বাধারে সঞ্চারিবে রস॥
ভবভূপ-প্রিয়ারাণী,                     বাণীর প্রকৃত বাণী,
মৃতপ্রায় পুরাতন ভাষা।
সচেতন হয়ে পুন,                       গাইবে বিভুর গুণ,
রসনায় নিত্য করি বাসা॥
সভ্যতা সরোজলতা,                   প্রাপ্ত হবে প্রবলতা,
মানুষের মনসরোবরে।
প্রমোদ প্রফুল্ল কায়,                      সুখ-শতদল তায়,
ফুটিবেক জ্ঞানসূর্য্য-করে॥
সুরব সৌরভ হয়ে,                   দশদিকে যশ লয়ে,
প্রকাশিবে শুভ সমাচার।
স্বাধীনতা মাতৃস্নেহে,                ভারতের জরা-দেহে,
করিবেন শোভার সঞ্চার॥
দুর হবে সব ক্লান্তি,                 পলাবে প্রবলা ভ্রান্তি,
শান্তিজল হবে বরিষণ।
পুণ্যভূমি পুনর্ব্বার,                       পূর্বসুখ সহকার,
প্রাপ্ত হবে জীবন যৌবন॥
প্রবীণা নবীনা হয়ে,                      সন্তানসমূহ লয়ে,
কোলে করি করিবে পালন।
সুধা সম স্তনপানে,                     জননীর মুখপানে,
একদৃষ্টে করিবে ঈক্ষণ॥
এরূপ স্বপনমত,                        কত হয় মনোগত,
মনোমত ভাবের সঞ্চার।
ফলে তাহা কবে হবে,                 প্রসূতির হাহারবে,
সূত সবে করে হাহাকার॥

.                          ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
রজনীতে ভাগীরথী
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৯১৯ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দ্বারা বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে
প্রকাশিত “ঈশ্বরগুপ্তের গ্রন্থাবলী (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে)” এর “বিবিধ” অধ্যায় থেকে
নেওয়া।

আহা মরি তরঙ্গিণী কিবা শোভা ধরেছে।
রজতরঞ্জিত সাটী অঙ্গ বেড়ি পরেছে॥
শূন্যপরে শশধরে হেমছটা ক্ষরিছে।
সুশীতল নিরমল কর দান করিছে॥
তটিনী-তরঙ্গে তারা কত রঙ্গে খেলিছে।
পবন-হিল্লোলযোগে ঘন ঘন হেলিছে॥
যেন কোন বিয়োগিনী নিদ্রাভরে রয়েছে।
স্বপ্নযোগে পতিলাভে প্রমোদিনী হয়েছে॥
হাস্যবশে সুবদন ঝলমল করিছে।
থর থর কলেবর নিথর শিহরিছে॥
দেখিয়া স্বভাব প্রিয়া নয়ন প্রকাশিছে।
দেখিয়া এ ভাব কিন্তু হৃদে লাজ বাসিছে॥

.                          ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর
*
সেতার
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৯১৯ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দ্বারা বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে
প্রকাশিত “ঈশ্বরগুপ্তের গ্রন্থাবলী (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে)” এর “বিবিধ” অধ্যায় থেকে
নেওয়া।

কোথায় সেতার তার কোথায় সেতার।
কোথায় সেতার কথা কি কহিব আর॥
সেতার অনেক আছে সে তার ত নাই।
সেতার-বাদক বিনা সে তার কি পাই॥
সেতার সে তার ছিল ভারে তারে তার।
এখন সেতার লাগে কেবল বে-তার॥
তারে দিব তারে হাত যদি পাই তারে।
নতুবা দুঃখের গীত কব তারে নারে॥
সঙ্গীত পলায় ছুটে না পেয়ে সোহাগ।
রাগ তার সঙ্গে যায় প্রকাশিয়া রাগ॥
মানের কে রাখে মান অভিমানে মরে।
তানা নানা সুরে তান তা না না না করে॥
ভূমে পোড়ে কাঁদে ঢোল কে আর বাজায়।
কড়া হয়ে কড়া তার সকল বা যায়॥
দউড় দউড় দেয় যুক্ত নয় সাজে।
হায় রে সে সাজ আর এখন কি সাজে॥
তবে যে ঢোলের শব্দ স্থানে স্থানে বাজে।
ঢোল নব গোল মাত্র সে কেবল বাজে॥
মন্দিরে মন্দিরে পড়ি হইতেছে মাটী।
তাল হয়ে তালছাড়া সার হোল আঁটি॥
বেহালা বেহাল হয়ে ঘেরাটোপে কষা।
ভন্‌ ভন্‌ স্বরে তায় রাগ ভাঁজে মশা॥
তান্ পুরা আছে মাত্র তান পুরা নাই।
খরচ কে সাধে আর খরচ না পাই॥
যোয়ারি সোয়ার ছাড়া মরে অভিমানে।
এখন কে আছে ফের ফের দেয় কানে॥
জোয়ারির যোগে আর নাহি ক্ষরে মধু।
কাট বোয়ে কাট্‌ হয়ে ফেটে যায় কদু॥

.                          ****************                          
.                                                                            
সূচীতে . . .    


মিলনসাগর