শীক সংগ্রাম কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ১৮৮৫ সালে প্রকাশিত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টেপাধ্যায় সম্পাদিত ও সংগৃহীত “ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের জীবনচরিত ও কবিত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ এবং কবিতা সংগ্রহ” গ্রন্থের পাঁচ খণ্ডে ঈশ্বর গুপ্তের কবিতার সংগ্রহের ২য় খণ্ড, “যুদ্ধবিষয়ক” কবিতা।
বিজ্ঞবর গবর্ণর, হিতবাক্য ধর। শঙ্কটে সমর সজ্জা, সম্বরণ কর॥ নরবর গবর্ণর, মনে এই ভয়। রণে পাছে বকারে আকার যুক্ত হয়॥ যুদ্ধ হেতু ক্রুদ্ধভাব, লাগিয়াছে ধুম। ঊর্দ্ধভাগ রুদ্ধ করে, কামানের ধুম॥ শীকের এবার বুঝি, নাহিক নিস্তার। বিপক্ষ বিনাশ হেতু, বিক্রম বিস্তার॥ ব্রিটিসের জয় জন্য, অভিলাষ মনে। এক হস্তে অস্ত্র ধরি, অগ্রসর রণে॥ আপনি চালাও সেনা, রণক্ষেত্রে রয়ে। এমন কে করে আর, গবর্ণর হয়ে? মহামতি সেনাপতি, সঙ্গে সঙ্গে যোড়া। বিপক্ষের গুলি খেয়ে, মলো তাঁর ঘোড়া॥ বড় বড় বলবান্, বোদ্ধা যোদ্ধা যত। ভূমিতলে নিদ্রাগত, জনমের মত॥ লিখিতে উদয় দুঃখ, লেখনীর মুখে॥ সেলের মরণ শুনি, শেল ফুটে বুকে॥ এডিকম্প ছেড়ে কেম্প, অস্ত্র ধরি বলে। মরিল শীকের হস্তে, সমরের স্থলে॥ হায় হায় এই দুঃখ, কিসে হবে দুর। ব্রিটিসের রক্ত খায়, শৃগাল কুকুর! স্বামির মরণ শুনি, বিবিলোক যাঁরা। নিয়ত নয়ন-মেঘ, বহে শোকধারা॥ শ্রীযুতের মনে মনে, অতিশয় ক্রোধ॥ অবশ্য হইবে তার, হিংসা পরিশোধ॥ নিশ্চয় মরিবে রণে, সমুদয় শীক। ধর্ম্মরাজ খাতা খুলে, কষিবেন ঠিক॥ অমর সমরকল্পে, ব্রিটিসের সেনা। পিপীড়ার মৃত্যু হেতু, উঠিয়াছে ডেনা॥ লইতে লাহোর রাজ্য, হেনরির কোপ। নির্ভয়েতে যোদ্ধা সব, কর ভাই হোপ॥ শতলজ পার হয়ে, জোরে ছাড় তোপ। উড়ে যাক্ শীকমুণ্ড, পুড়ে যাক্ গোঁপ॥ বিপক্ষের পরাক্রম, সব করি লোপ। শতদ্রতে স্নান করি, গায়ে মাখ সোপ॥ কিরূপেতে পরিপূর্ণ, সমরের স্থল। কিরূপে করিছে যুদ্ধ, ইংরাজের দল॥ যুদ্ধভূমি রুদ্ধ করি, কাটাকাটি যথা। ইচ্ছা হয় পক্ষী হয়ে, উড়ি যাই তথা॥ দূরে থেকে দৃষ্টি করি, ইচ্ছা অনুরাগে। গুলি যেন ছুটে এসে, গায়ে নাহি লাগে॥