মুক্তিযুদ্ধের গান ও কবিতার দেয়ালিকা
|
|
|
এই পাতাটি পাশাপাশি, ডাইনে-বামে ও কবিতাগুলি উপর-নীচ স্ক্রল করে! This page scrolls sideways < Left - Right >. Poems scroll ^ Up - Down v.
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
My friend came to me
With sadness in his eyes
He told me that he wanted help
Before his country dies
Although I couldn't feel the pain
I knew I had to try
Now I'm asking all of you
To help us save some lives
Bangladesh, Bangladesh
Where so many people are dying fast
And it sure looks like a mess
I've never seen such distress
Now won't you lend your hand and understand?
Relieve the people of Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
Such a great disaster, I don't understand
But it sure looks like a mess
I've never known such distress
Now please don't turn away
I want to hear you say
Relieve the people of Bangladesh
Relieve Bangladesh
Bangla Desh Lyricist, Composer and Singer: George Harrison .
"Bangla Desh" is a song by English musician George Harrison (The Beatles). It was released as a non-album single in July 1971,
to raise awareness for the millions of refugees from the country formerly known as East Pakistan, following the 1970 Bhola cyclone
and the outbreak of the Bangladesh Liberation War. Harrison's inspiration for the song came from his friend Ravi Shankar, a
Bengali musician, who approached Harrison for help in trying to alleviate the suffering. "Bangla Desh" has been described as "one
of the most cogent social statements in music history" and helped gain international support for Bangladeshi independence by
establishing the name of the fledgling nation around the world. Lyrics Source : https://www.lyrics.com/.
The VDO, courtesy of Beshi Joss Music YouTube Channel.
The background photograph is a darkened collage of famous photos of the Bangladesh War of Liberation or Mukti Juddho, of brave men and women of Bangladesh alongside the photos of the Indian Soldiers whose selfless sacrifice and martyrdom should never be forgotten. This page is the outcome of the research work carried out by Poet Rajesh Datta.
|
|
|
Bangladesh, Bangladesh
Now it may seem so far from where we all are
It's something we can't neglect
It's something I can't neglect
Now won't you give some bread to get the starving fed?
We've got to relieve Bangladesh
Relieve the people of Bangladesh
We've got to relieve Bangladesh
Relieve the people of Bangladesh
এপার বাংলার কলকাতায়, ভারতমাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তির সামনে, ভারতবর্ষের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।
দিল্লীর গেটওয়ে অফ ইণ্ডিয়াতে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ভারতীয় সেনার স্মৃতিতে বিগত ৫০ বছর যাবৎ প্রজ্বলিত "অমর জওয়ান জ্যোতি" নামক অনির্বাণ অগ্নিশিখাকে নিভিয়ে দিয়ে, আমাদের ইতিহাস থেকে, মুক্তিযূদ্ধের কালে, ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রী, সহযোগিতা ও ভারতীয় সেনার আত্মবলিদান এবং ইন্দিরা গান্ধীর অবিস্মরণীয় অবদান মুছে ফেলার বর্তমান ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের আপ্রাণ চেষ্টার প্রতিবাদে আমরা এই ছবিটি এখানে তুলে দিলাম।
মোদী সরকার বলছেন যে তাঁরা নাকি ওই অনির্বাণ অগ্নিশিখাটিকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে অন্যান্য সেনাদের সৌধের অগ্নিশিখার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। যা আমরা হাস্যকর মনে করি।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সারা ভারত তথা এপার বাংলায়, দেশের শাসকদলের ছড়ানো বিদ্বেষ-বিষে বুঁদ হয়ে থাকা নাগরিক সমাজ ও বিরোধী দলগুলি থেকে এই সিদ্ধান্তের কোনো জোরালো প্রতিবাদ চোখে পড়ে নি।
|
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও কথা ও সুর - কবি ভূপেন হাজারিকা (৮.৯.১৯২৬ - ৫.১১.২০১১)। বাংলায় - কবি শিবদাস
বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পী - রুমা গুহঠাকুরতার পরিচালনায় ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার এবং পরে ভূপেন হাজারিকা। কবি গানগুলি নিজের মাতৃভাষা অসমিয়া তে লিখেছিলেন।
আমরা এখানে সেই ভাষায় গানগুলি দিতে পারছিনা কারণ আমরা অসমিয়া ভাষা জানি না। কিন্তু তাঁর গান আমরা বাংলা ভাষায় পেয়েছি কবি শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অসামান্য অনুবাদে। তাই আমরা এখানে কবি ভূপেন হাজারিকার প্রতিবাদী গানগুলি শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনায় তুলে দিচ্ছি। এই গানটি শুনে লেখা। ভিডিওটি সৌজন্যে
Saregama Bengali YouTube Channel.
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
নৈতিকতার স্খলন দেখেও, মানবতার পতন দেখেও
নির্লজ্জ অলসভাবে বইছো কেন ?
সহস্র বরষার উন্মাদনার মন্ত্র দিয়ে লক্ষজনেরে
সবল সংগ্রামী আর অগ্রগামী করে তোলোনা কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
জ্ঞান-বিহীন নিরক্ষরের, খাদ্যবিহীন নাগরিকের
নেতৃবিহীনতায় মৌন কেন?
সহস্র বরষার উন্মাদনার মন্ত্র দিয়ে লক্ষজনেরে
সবল সংগ্রামী আর অগ্রগামী করে তোলোনা কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
ব্যক্তি যদি ব্যক্তিকেন্দ্রিক, সমষ্টি যদি ব্যক্তিত্বরহিত
তবে, শিথিল সমাজকে ভাঙো না কেন ?
সহস্র বরষার উন্মাদনার মন্ত্র দিয়ে লক্ষজনেরে
সবল সংগ্রামী আর অগ্রগামী করে তোলোনা কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
স্রোতস্বিনী কেন নাহি বও, তুমি নিশ্চয়ই জাহ্নবী নও
তা হলে প্রেরণা দাও না কেন?
উন্মত্ত ধরার কুরুক্ষেত্রের শরশয্যাকে আলিঙ্গন করা
লক্ষ কোটি ভারতবাসীকে জাগালে না কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নিঃশব্দে নিরবে, ও গঙ্গা তুমি গঙ্গা বইছো কেন?
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের লেখা 'একাত্তরের মুক্তির গান:
পর্ব ১ ও পর্ব ২' শীর্ষক একটি গবেষণামুলক নিবন্ধ
থেকে জানা যায় যে ভূপেন হাজারিকার
দুটি লোকপ্রিয় গান "বিস্তীর্ণ দুপারে" এবং "হে দোলা
হে দোলা" ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচারিত হয়
। অসমিয়া ভাষায় মূল গানের গীতিকার, সুরকার ও
শিল্পী: কবি ভূপেন হাজারিকা। বাংলা রূপান্তর: কবি
শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।
তথ্যসূত্র - একাত্তরের মুক্তির গান: পর্ব ২, ইন্দিরা
মুখোপাধ্যায়, বাংলালাইভ.কম।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
হে দোলা হে দোলা হে দোলা হে দোলা কথা, সুর ও শিল্পী - কবি ভূপেন হাজারিকা (৮.৯.১৯২৬ - ৫.১১.২০১১)। বাংলায় - কবি শিবদাস
বন্দ্যোপাধ্যায়। কবি গানগুলি নিজের মাতৃভাষা অসমিয়া তে লিখেছিলেন। আমরা এখানে সেই ভাষায় গানগুলি দিতে পারছিনা কারণ আমরা অসমিয়া ভাষা জানি না
। কিন্তু তাঁর গান আমরা বাংলা ভাষায় পেয়েছি কবি শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসামান্য অনুবাদে। তাই আমরা এখানে কবি ভূপেন হাজারিকার প্রতিবাদী গানগুলি
শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনায় তুলে দিচ্ছি। এই গানটি শুনে লেখা। ভিডিওটি সৌজন্যে Saregama Bengali YouTube Channel.
হে দোলা হে দোলা হে দোলা হে দোলা
আঁকা বাঁকা পথে মোরা কাঁধে নিয়ে ছুটে যাই
রাজা-মহারাজাদের দোলা ও দোলা
আমাদের জীবনের ঘামে ভেজা শরীরের
বিনিময়ে পথ চলে দোলা ও দোলা
হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া
এই হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া
হে দোলা হে দোলা হে দোলা হে দোলা
দোলার ভেতরে ঝল্ মল্ করে যে
সুন্দর পোশাকের সাজ
আর ফিরে ফিরে দেখি তাই ঝিকিমিকি করে যে
মাথায় রেশমের তাজ
হায়, মোর ছেলেটির উলঙ্গ শরীরে
একটুও জামা নেই---খোলা
দু’চোখে জল এলে মনটাকে বেঁধে যে
তবুও বয়ে যায় দোলা
হে দোলা হে দোলা হে দোলা হে দোলা
যুগে যুগে চলি মোরা কাঁধে নিয়ে দোলাটি
দেহ ভেঙে ভেঙে পড়ে ও পড়ে
যুগে যুগে চলি মোরা কাঁধে নিয়ে দোলাটি
দেহ ভেঙে ভেঙে পড়ে ও পড়ে
ও ঘুমে চোখ ঢুলু ঢুলু রাজা-মহারাজাদের
আমাদের ঘাম ঝরে পড়ে ও পড়ে
উঁচু ঐ পাহাড়ে ধীরে ধীরে উঠে যাই
ভাল ক’রে পায়ে পা মেলা
হঠাৎ কাঁধের থেকে পিছলিয়ে যদি পড়ে
আর দোলা যাবে না তো তোলা
রাজা-মহারাজার দোলা
বড় বড় মানুষের দোলা ও দোলা
আঁকা বাঁকা পথে মোরা কাঁধে নিয়ে ছুটে যাই
রাজা-মহারাজাদের দোলা ও দোলা
হে দোলা হে দোলা হে দোলা হে দোলা
হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া
এই হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া না হেঁইয়া
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের লেখা 'একাত্তরের মুক্তির গান:
পর্ব ১ ও পর্ব ২' শীর্ষক একটি গবেষণামুলক নিবন্ধ
থেকে জানা যায় যে ভূপেন হাজারিকার
দুটি লোকপ্রিয় গান "বিস্তীর্ণ দুপারে" এবং "হে দোলা
হে দোলা" ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচারিত হয়
। অসমিয়া ভাষায় মূল গানের গীতিকার, সুরকার ও
শিল্পী: কবি ভূপেন হাজারিকা। বাংলা রূপান্তর: কবি
শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।
তথ্যসূত্র - একাত্তরের মুক্তির গান: পর্ব ২, ইন্দিরা
মুখোপাধ্যায়, বাংলালাইভ.কম।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
রক্ত হয় রক্তজবা।
রক্ত হয় রক্তকমল
কোথায় শেষে।
কোথায় আবার?
বাংলাদেশে, বাংলাদেশে।
কুসুমসম কোমলপ্রাণ
বজ্র হয় গর্জমান।
কোথায় শেষে।
কোথায় আবার?
বাংলাদেশে, বাংলাদেশে।
চিরশ্যামল মাঠের তলায়
অগ্নিগিরির খবর মেলে।
কোথায় শেষে।
কোথায় আবার?
বাংলাদেশে, বাংলাদেশে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
কি অপূর্ব কাহিনী
কবি বনফুল, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, (১৯.৭.১৮৯৯ - ৯.২.১৯৭৯)।
২০১১ সালে প্রকাশিত, চিরন্তন মুখোপাধ্যায় দ্বারা সংকলিত, বনফুলের
জীবনের শেষ ৮-৯ বছরেরে দিনলিপি "বনফুলের ডায়েরি মর্জিমহল" ১ম
খণ্ডের, ১০ই ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে ডায়েরিতে লেখা কবিতা।
কি অপূর্ব কাহিনী
ঢাকার দ্বার প্রান্তে
আমাদের বাহিনী
অপরূপ কাহিনী।
মন উঠছে দুলে
বুক উঠছে ফুলে
আশা নদীর কূলে
আজ ভাঙছে ঢেউ
অগণিত উচ্ছ্বসিত
আনন্দদায়িনী
জয়তু জয়তু জয়
সৈন্যবাহিনী।
দেবতা জিতছে দৈত্য হারছে
কবি বনফুল, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, (১৯.৭.১৮৯৯ - ৯.২.১৯৭৯)। ২০১১ সালে প্রকাশিত,
চিরন্তন মুখোপাধ্যায় দ্বারা সংকলিত, বনফুলের জীবনের শেষ ৮-৯ বছরেরে দিনলিপি
"বনফুলের ডায়েরি মর্জিমহল" ১ম খণ্ডের, ৯ই ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে ডায়েরিতে লেখা
কবিতা।
বাংলা দেশে আমাদের সেন্যরা খুব ভিতছে। পালাচ্ছে খান সেনারা।
দেবতা জিতছে দৈত্য হারছে
ধর্ম এবার পাপকে মারছে
ইয়াহিয়াদের গদি যে টুটল
পদ্মার জলে পদ্ম ফুটল।
নতুন পদ্ম --- রক্ত কমল
টকটকে লাল বিমল অমল
সে লাল রঙের নাই যে তুলনা
বুকের রক্ত সেকথা ভুলো না
লড়ছে জোয়ান বইছে খুন যে
দীপক রাগিণী বাজছে দুন যে
আগুন জ্বলছে আগুন জ্বলছে
ধর্ম এবার পাপকে দলছে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধ কিন্তু চলছে কবি বনফুল, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, (১৯.৭.১৮৯৯ -
৯.২.১৯৭৯)। ২০১১ সালে প্রকাশিত, চিরন্তন মুখোপাধ্যায় দ্বারা সংকলিত, বনফুলের জীবনের শেষ ৮-৯ বছরেরে
দিনলিপি "বনফুলের ডায়েরি মর্জিমহল" ১ম খণ্ডের, ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে ডায়েরিতে লেখা কবিতা।
প্রধান খবর আজ ঢাকার পতন, নিয়াজি সাহেব বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ করেছেন জেনারেল
মানেকশর কাছে। আত্মসমর্পণের চুক্তিপত্রে সই করেছেন নিয়াজি এবং আমাদের পক্ষে
অরোরা। জয় বাংলা।
পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধ কিন্তু চলছে
এখনও তড়পাচ্ছে
ইয়াহিয়া মিঞা
ধর্ম-সত্য ন্যায়ের মিথ্যা জিগির দিয়া
দুকান কাটা ভদ্রলোক
থ্যাঁতলানো নাকটিকে
বাঁচাবার চেষ্টা করছেন
আন্টিবায়োটিকে।
কোলাপসিবল টিউব কিনে
চীনা এবং মাকিনে
শুনছি নাকি প্লেনে করে
পাঠাচ্ছে ওটিকে।
থ্যাঁতলানো নাক গোটা হবে
আন্টিবায়েটিকে
এই আশাতে
এই তুফানে ফুটো তরী
চাচ্ছে ভাসাতে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
১৯৭১ হল শেষ কবি বনফুল, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, (১৯.৭.১৮৯৯ - ৯.২.১৯৭৯)।
২০১১ সালে প্রকাশিত, চিরন্তন মুখোপাধ্যায় দ্বারা সংকলিত, বনফুলের জীবনের শেষ ৮-৯
বছরেরে দিনলিপি "বনফুলের ডায়েরি মর্জিমহল" ১ম খণ্ডের, ৩০শে ডিসেম্বর ১৯৭১
তারিখে ডায়েরিতে লেখা কবিতা।
১৯৭১ হল শেষ
বেশ বেশ বেশ বেশ।
সারা বছর জ্বালাল
শেষ কালেতে পালাল।
স্বাধীন হল বাংলাদেশ
এ খবরটি করবে পেশ
ইতিহাসের দফতরে
রক্তমাখা অক্ষরে
স্বয়ং মহাকাল।
চীন-মার্কিন জাল
ছিন্ন করে বেরিয়ে এলেন ইন্দু
উন্মথিত সিন্ধু
দিল যেন আবার
লক্ষ্মী উপহার।
স্বর্ণাক্ষরে থাকবে লেখা এটা।
আর থাকবে রাজনৈতিক
এটা ওটা সেটা
বিশেষ করে কুকুরগুলোর
খেয়োখেয়ি সারাটা দেশময়।
থাকবে, কিন্তু স্বর্ণাক্ষরে নয়।
আর থাকবে হীরক দ্যুতিময়
আমাদের জোয়ানদের বীরত্ব অক্ষয়।
ভারতের দুর্বার যৌবন,
মনে রাখব তুমি মোদের
গর্ব চিরন্তন।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
সুজলা সুফলা দেশ রক্তে ভাসে
মুটে মজুরের রক্ত
তাঁতি জেলে ছুতোরের নিরীহ চাষির রক্ত শস্যে ঘাসে
কামান বন্দুক হাতে পিশাচ হাসে।
শ্যামলা সুফলা দেশ রক্তে ভাসে
গুণী-জ্ঞানীদের রক্ত, যুবা বৃদ্ধ শিশু বনিতার
পবিত্র রক্তের বন্যা চক্ষে ভাসে
বোমারুর আস্ফালন নীল আকাশে।
সুজলা সুফলা দেশ রক্তে ভাসে
সহস্র বীরের রক্ত জন্মভূমির
সমস্ত কলুষ গ্লানি নিমেষে নাশে
জয়ধ্বনি মুখরিত শ্বাসে প্রশ্বাসে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
বঙ্গবন্ধু কবি অন্নদাশঙ্কর রায় (১৫.৩.১৯০৪ -২৮.১০.২০০২)। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে
প্রকাশিত 'গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা' কাব্যসংকলনে এই কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। সম্পাদক ও প্রকাশক
ছিলেন শিশির ভট্টাচার্য এবং অন্যদিন, ৫৮/১২৮ লেক গার্ডেনস, কলকাতা থেকে এটি প্রকাশিত হয়।
আবৃত্তি বাচিক শিল্পী রিংকু চক্রবর্তীর কণ্ঠে, ভিডিওটি সৌজন্যে Suvechha's Corner YouTube Channel ।
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা
গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান।
দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা
রক্তগঙ্গা বহমান
তবু নাই ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবর রহমান।
বি: দ্র: -- পরবর্তীকালে 'বঙ্গবন্ধু' ছড়াটি ১৯৭২ সালে প্রকাশিত কবি অন্নদাশঙ্কর রায়ের ছড়াগ্রন্থ 'শালি ধানের চিঁড়ে'-তে
সংকলিত হয়। সেখানে 'যতকাল'-এর স্থলে 'যতদিন' শব্দটি প্রতিস্থাপিত হয়। পরবর্তী সময়ে ছড়া সংগ্রহ বা রচনাবলীতেও
'যতদিন' শব্দটি রয়েছে। 'গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা'য় প্রকাশিত কবিতাটি ৮ চরণের। ছড়া সংগ্রহেও এটি ৮ চরণ। কবি এটিকে
বড়দের ছড়া হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এটি কবির 'ছড়াসমগ্র - ২' (১৯৮৫) ও 'রচনাবলী - ৩' (১৯৯৮)-এও অন্তর্ভুক্ত
হয়েছে।
তথ্যসূত্র - বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে "অন্নদাশঙ্কর রায়ের 'বঙ্গবন্ধু' কবিতার শুদ্ধ পাঠ প্রসঙ্গে", কামাল চৌধুরী, সমকাল.কম॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
যদি নির্বাসন দাও কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (৭.৯.১৯৩৪ - ২৩.১০.২০১২)। কবির "আমার স্বপ্ন" (১৯৭২) কাব্যগ্রন্থের কবিতা। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে
প্রকাশিত 'গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা' কাব্যসংকলনে এই কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন শিশির ভট্টাচার্য এবং অন্যদিন, ৫৮/১২৮ লেক
গার্ডেনস, কলকাতা থেকে এটি প্রকাশিত হয়। আবৃত্তি বাচিক শিল্পী শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে, ভিডিওটি সৌজন্যে Shimul Mustapha Official YouTube Channel ।
কবিতার কথা সৌজন্যে বাংলাকবিতা.কম॥
যদি নির্বাসন দাও, আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছোঁয়াবো
আমি বিষপান করে মরে যাবো!
বিষন্ন আলোয় এই বাংলাদেশ
নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ
প্রান্তরে দিগন্ত নিনির্মেষ-
এ আমারই সাড়ে তিন হাত ভূমি
যদি নির্বাসন দাও, আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছোঁয়াবো
আমি বিষপান করে মরে যাবো।
ধানক্ষেতে চাপ চাপ রক্ত
এইখানে ঝরেছিল মানুষের ঘাম
এখনো স্নানের আগে কেউ কেউ করে থাকে নদীকে প্রণাম
এখনো নদীর বুকে
মোচার খোলায় ঘোরে
লুঠেরা, ফেরারী!
শহরে বন্দরে এত অগ্নি বৃষ্টি
বৃষ্টিতে চিক্কণ তবু এক একটি অপরূপ ভোর
বাজারে ক্রুরতা, গ্রামে রণহিংসা
বাতাবি লেবুর গাছে জোনাকির ঝিকমিক খেলা
বিশাল প্রাসাদে বসে কাপুরুষতার মেলা
বুলেট ও বিস্ফোরণ
শঠ তঞ্চকের এত ছদ্মবেশ
রাত্রির শিশিরে কাঁপে ঘাস ফুল-
এ আমারই সাড়ে তিন হাত ভূমি
যদি নির্বাসন দাও আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছোঁয়াবো
আমি বিষপান করে মরে যাবো।
কুয়াশার মধ্যে এক শিশু যায় ভোরের ইস্কুলে
নিথর দিঘির পাড়ে বসে আছে বক
আমি কি ভুলেছি সব
স্মৃতি, তুমি এত প্রতারক?
আমি কি দেখিনি কোনো মন্থর বিকেলে
শিমুল তুলোর ওড়াউড়ি?
মোষের ঘাড়ের মত পরিশ্রমী মানুষের পাশে
শিউলি ফুলের মত বালিকার হাসি
নিইনি কি খেজুর রসের ঘ্রাণ
শুনিনি কি দুপুরে চিলের
তীক্ষ স্বর?
বিষন্ন আলোয় এই বাংলাদেশ…
এ আমারই সাড়ে তিন হাত ভূমি
যদি নির্বাসন দাও আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছোঁয়াবো
আমি বিষপান করে মরে যাবো।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
উচ্চারণগুলি শোকের কবি আবুল হাসান। রচনাকাল: ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২। কবির "যে জলে আগুন জ্বলে" (১৯৭২)
কাব্যগ্রন্থের কবিতা। আবৃত্তি বাচিক শিল্পী ফয়সাল আজিজ এর কণ্ঠে, ভিডিওটি এবং কবিতার কথা, সৌজন্যে VoiceArt YouTube
Channel ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
অস্ত্র সমর্পণ কবি হেলাল হাফিজ। রচনাকাল: ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২। কবির "যে জলে আগুন জ্বলে" কাব্যগ্রন্থের কবিতা।
আবৃত্তি বাচিক শিল্পী ফয়সাল আজিজ এর কণ্ঠে, ভিডিওটি এবং কবিতার কথা, সৌজন্যে Subir Modak YouTube Channel ।
মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।
নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে।
বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে
তাঁবুর ভেতরে ঢুকে দেখেছি তোমাকে বারবার কতোবার।
মনে আছে, আমার জ্বালার বুক
তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে উঠে তুমি
বিস্ফোরণে প্রকম্পিত করতে আকাশ, আমাদের ভালবাসা
মুহূর্তেই লুফে নিত অত্যাচারী শত্রুর নি:শ্বাস।
মনে পড়ে তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের
মধ্যভাগ রেখে, বুকে রেখে হাত
কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো কালো রাত!
মনে আছে, মনে রেখো
আমাদের সেই সব প্রেম-ইতিহাস।
অথচ তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে
সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে
মানুষকে ভালোবাসা ভালোবাসি বলে।
যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,
যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে
ভেঙে সেই কালো কারাগার
আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।
লক্ষ্মী বউটিকে
আমি আজ আর কোথাও দেখি না,
হাঁটি হাঁটি শিশুটিকে
কোথাও দেখি না,
কতগুলি রাজহাঁস দেখি
নরম শরীর ভরা রাজহাঁস দেখি,
কতগুলি মুখস্থ মানুষ দেখি, বউটিকে কোথাও দেখি না
শিশুটিকে কোথাও দেখি না!
তবে কি বউটি রাজহাঁস?
তবে কি শিশুটি আজ
সবুজ মাঠের সূর্য, সবুজ আকাশ?
অনেক রক্ত যুদ্ধ গেল,
অনেক রক্ত গেল,
শিমুল তুলোর মতো
সোনারুপো ছড়াল বাতাস।
ছোট ভাইটিকে আমি
কোথাও দেখি না,
নরম নোলক পরা বোনটিকে
আজ আর কোথাও দেখি না!
কেবল পতাকা দেখি,
কেবল উৎসব দেখি,
স্বাধীনতা দেখি,
তবে কি আমার ভাই আজ
ঐ স্বাধীন পতাকা?
তবে কি আমার বোন, তিমিরের বেদীতে উৎসব?
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় কবি হেলাল হাফিজ। রচনাকাল: ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রাকপর্বে ১৯৬৯-এর
গণঅভ্যুত্থানের সময়ের কবিতা। কবির "যে জলে আগুন জ্বলে" কাব্যগ্রন্থের কবিতা। আবৃত্তি বাচিক শিল্পী ফয়সাল আজিজ এর কণ্ঠে,
ভিডিওটি, সৌজন্যে VoiceArt YouTube Channel । কবিতার কথা, সৌজন্যে বাংলারকবিতা.কম॥
এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
মিছিলের সব হাত
কন্ঠ
পা এক নয়।
সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,
কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার।
কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসার
শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে
অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে
অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে,
কেউ আবার যুদ্ধবাজ হয়ে যায় মোহরের প্রিয় প্রলোভনে
কোনো কোনো প্রেম আছে প্রেমিককে খুনী হতে হয়।
যদি কেউ ভালোবেসে খুনী হতে চান
তাই হয়ে যান
উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়ে।
এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে
এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই,
উত্তর পুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো
আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ
শুধু যদি নারীকে সাজাই।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
অগ্ন্যুৎসব কবি হেলাল হাফিজ। রচনাকাল: ৮ ডিসেম্বর ১৯৭২। কবির "যে জলে আগুন জ্বলে" কাব্যগ্রন্থের কবিতা। আবৃত্তি বাচিক শিল্পী
ডাঃ অমিত আহসান এর কণ্ঠে, ভিডিওটি, সৌজন্যে Uddan Television YouTube Channel । কবিতার কথা, সৌজন্যে বাংলারকবিতা.কম॥
ছিল তা এক অগ্ন্যুৎসব, সেদিন আমি
সবটুকু বুক রেখেছিলাম স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে
জীবন বাজি ধরেছিলাম প্রেমের নামে
রক্ত ঋণে স্বদেশ হলো,
তোমার দিকে চোখ ছিলো না
জন্মভূমি সেদিন তোমার সতীন ছিলো।
আজকে আবার জীবন আমার ভিন্ন স্বপ্নে অংকুরিত অগ্ন্যুৎসবে
তোমাকে চায় শুধুই তোমায়।
রঙিন শাড়ির হলুদ পাড়ে ঋতুর প্লাবন নষ্ট করে
ভর দুপুরে শুধুই কেন হাত বেঁধেছো বুক ঢেকেছো
যুঁই চামেলী বেলীর মালায়,
আমার বুকে সেদিন যেমন আগুন ছিলো
ভিন্নভাবে জ্বলছে আজও,
তবু সবই ব্যর্থ হবে
তুমি কেবল যুঁই চামেলী বেলী ফুলেই মগ্ন হলে।
তার চেয়ে আজ এসো দু’জন জাহিদুরের গানের মতন
হৃদয় দিয়ে বোশেখ ডাকি, দু’জীবনেই বোশেখ আনি।
জানো হেলেন, আগুন দিয়ে হোলি খেলায় দারুন আরাম
খেলবো দু’জন এই শপথে
এসো স্ব-কাল শুদ্ধ করি দুর্বিনীত যৌবনেরে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
বলেছিলাম
স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করব তোমাদের কাছে একদিন।
কেবল কিছুটা সময় চেয়ে নিয়েছিলাম তোমার কাছে
নতজানু হয়ে, ভিক্ষুকের দীনতায়।
সময় দিয়েছিলে: তোমারও স্বার্থ ছিল ;
আমার স্বার্থ তোমাকে উদ্ধার করা ;
তোমার দারুণ বন্দিদশা আমার সহ্য হয় নি
আমার লোভ ছিল:
মুক্ত বাংলায় আবার তোমার নূপুর নিক্কণ শুনব,
তোমার সঙ্গে জড়াব নিজের ভাগ্যকে ;
আমার পেছনে ঘুরবে লেজ নেড়ে অর্থ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি
যেমন ঘুরত প্রাক্তন প্রভুর পায়ে পায়ে, দালাল কুকুর।
তোমার মুখে হাসি ফোটাতে, দামি অলঙ্কারে সাজাতে
ভীরু-কাপুরুষ তোমার প্রেমিক এই আমাকে
ধরতে হল শক্ত হাতে মর্টার, মেশিনগান-
শত্রুর বাংকারে, ছাউনিতে ছুড়তে হল গ্রেনেড।
আমার লোভ আমাকে কাপুরুষ হতে দেয় নি।
তুমি জানতে
নিদারুণভাবে কাপুরুষ আমি
কোনোদিন পুরোপুরি তোমাকে দেখার সাহস হয় নি
তোমার সামনে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারি নি
ঊরুদ্বয় দুর্বল ছিল ;
স্পষ্ট করে কোনো কথা বলতে পারি নি-
ঠোঁট জোড়া কাঁপত সর্বদা।
কেবল তোমার দুরবস্থা দেখে ঊরুদ্বয় শক্তিমান হল
হাতিয়ার হাতে দুশমনের মোকাবিলা করলাম,
বারুদের গন্ধ মাখলাম শরীরে
ক্রলিং করে শত্রুর বাংকারে গ্রেনেড ছুড়ে
টুকরো টুকরো করে দিলাম শত্রুর সোনালী স্বপ্নকে।
সব জানি আমি
শত্রুকবলিত ভক্তেরা তোমার
প্রকাশ্যে স্তবস্তুতি করতে পারে নি-
সম্ভব ছিল না তাদের পক্ষে।
তবু অগ্রজ ও অনুজের মধ্যে অনেকের
হৃদয়ের বাণী হয়েছিলো।
ন’মাসে অনেক কৃশ হয়ে গেছ
নীরক্ত হয়েছ,
চাপল্য কমেছে- উজ্জ্বলতা,
তোমার চোখের দীপ্তি নিস্প্রভ হয়ে গেছে,
অনেক অনেক বদলে গেছ তুমি।
তবুও তোমার কাছে আত্মসমর্পণে সুখ আছে।
কিন্তু সাবধান, কোথাও কখনো যদি তোমার সঙ্গে
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দেখা হয়ে যায়, প্লিজ পায়ে পড়ি
এ কথাটি ভুলেও বলবে না-
কেননা, ন’মাসে আমারা তার কাছে
‘হ্যান্ডস আপ’ করা কখনো শিখি নি।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
নেবে স্বাধীনতা কবি রফিক আজাদ। আবৃত্তি বাচিক শিল্পী শফিক আলম এর কণ্ঠে, ভিডিওটি, সৌজন্যে Shafiq Alam YouTube Channel । কবিতাটি শুনে লেখা। কবি
রফিক আজাদ ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কাদেরিয়া বাহিনীর হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এই কবি।
নেবে স্বাধীনতা
নাও
তোমাকে দিলাম অপার আকাশ
উড়বে যদি একটি বেলুন দেবো
হিলিয়াম গ্যাস ভরা রঙীন বেলুন
মধ্য আকাশের বায়ুস্তর ভেদ করে তুমি
বেশ নিশ্চিন্তে পেরিয়ে যাবে
বাংলার আকাশ
নেবে স্বাধীনতা
নাও
তোমাকে দিলাম সবুজ সঙ্কেতময় নাল পাসপোর্ট
সুনিশ্চিত স্বাধীনতা
গুডবাই বাংলাদেশ বলে তুমি খুব অনায়াসে
চলে যেতে পার যে কোনো আকাশে
তবে তোমাকে ছাড়তে হবে দেশের মায়া
দ্বাদশ মাসের ষোলো
মার্চের ছাব্বিশ
সারি সারি গাছপালা, স্বদেশের হাওয়া
নেবে স্বাধীনতা
নাও
তোমাকে দিলাম দশ দিগন্তের পথ
যে কোনো একটি তুমি বেছে নিতে পারো সহজেই
আপত্তি করবো না কোনো
আমিও যে মনে প্রাণে স্বাধীনতা শব্দের কাঙাল
তোমাকে বাঁধবো কেন
স্বাধীনতা নাম নিয়ে এ ঋজু শতস্ফূর্ত সহজ বৃক্ষটি
সর্বদাই স্বাভাবিক আলো হাওয়া চায়
তুমি ওই শব্দের সমান বয়সী নারী
তোমাকে বাঁধবো কেন মলিন রজ্জুতে
আমার দুইটি বাহু প্রসারিত এই বুক যদি
না পারে তোমাকে বাঁধতে
তবে কেন নারী তোমাকে বাঁধতে যাবো অযথা শৃঙ্খলে
নেবে স্বাধীনতা
নাও
তোমাকে দিলাম আকাঙ্খিত নিজস্ব জগত
নাও মগ্ন হও নিজে
নিজের ভিতরে ডুব দাও
মণি মুক্তো তুলে এনে যাকে তাকে বিলাও
ও সুন্দরী
গোপনে কি প্রকাশ্যে তোমার বৈভব বিভা
আমি স্বাধীনতার সৈনিক
প্রায়শঃই মমতাবশতঃ আজ কোলে তুলে নিই
একাত্তরে পরাজিত শত্রুর সন্তান
নেবে স্বাধীনতা
নাও, তোমার দু’হাতে তুলে দিচ্ছি
পঞ্চাশ হাজার বর্গমাইলের ভিতরে যা কিছু
জলে স্থলে অন্তরীক্ষে
সবকিছু তোমার
তোমার
এদেশ স্বাধীন করেছি আমি, আমার দু’হাত
এ আমার একমাত্র অহংকার।
আর কিছু নাই
আমার দেশটি আমি প্রিয়তম নারীর দুহাতে
দ্রুত তুলে দিতে চাই
নাও নাও তুমি নাও
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
সৌন্দর্য-সৈনিকের শপথ প্যারেড কবি রফিক আজাদ।
কবিতার কথা সৌজন্যে কিংবদন্তী কবিতা ব্লগ। কবি রফিক আজাদ ছিলেন
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কাদেরিয়া
বাহিনীর হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এই কবি।
ট্রিগারে আঙুল রেখে, পুনর্বার, বুঝে নিতে চাই
অধিনায়কের কণ্ঠে উচ্চারিত গাঢ় শব্দাবলী,
শপথ-প্যারেড : ‘তোমাদের মনে রাখা প্রয়োজন
এই যুদ্ধ ন্যায় যুদ্ধ; বিশ্বাসঘাতক নয়, আজ
সৌন্দর্যের প্রকৃত প্রেমিক চাই; তোমাদের কাজ
নয় মোটে সাহজিক। আনন্দের রক্ষণাবেক্ষণ
অত্যন্ত দুরুহ কর্ম— অনেকের ঘটে অন্তর্জাল।
সত্যের বিরুদ্ধে নয়, আজীবন সপক্ষে লড়াই।’’
জলপাই-রঙ য়্যুনিফর্ম, সবুজাভ হেলমেটে,
স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত সৈনিক আমি, কর্মরত।
সৌন্দর্যের রাজধানী ঘিরে অসংখ্য বিরোধী বীর
অবস্থান নেয়, সুবিধাজনকভাবে একচেটে
আছে যার শিল্পরুচি, তাকে প্রয়োজন— ব্যক্তিগত
কিংবা সার্বজন্য হরিষে বিষাদে— যে জন সুস্থির।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
দুই বাংলা কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২.৯.১৯২০ - ১১.৯.১৯৮৫)। রচনাকাল: ১৯৭১,।
সূত্র: পুলক চন্দ ও সব্যসাচী দেব সম্পাদিত 'বীরেন্দ্র সমগ্র' (১ম খণ্ড), প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি,
১৯৮৮, প্রকাশক: অনুষ্টুপ প্রকাশনী। কলকাতা-৯। পৃষ্ঠা: ৩২২, কাব্যগ্রন্থ: 'আমার
রাজা হাওয়ার স্পর্ধা' (১৩৭৯ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত)।
কানে আসে
শৃঙ্খল ভাঙার শব্দ, মাথা তোলে
চিকায়ত বাংলাদেশ --- তার ললাটের রক্ত মুছে।
আমার চোখের সামনে
প্রবাহিত
রক্ত নদী --- ক্রমে অন্ধকার হয়ে আসে
অন্য এক অবাক বাংলার
বুকের কল্লোল . . .
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
কান্না এখন আগুন কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২.৯.১৯২০ - ১১.৯.১৯৮৫)।
রচনাকাল: ১৯৭১,। সূত্র: পুলক চন্দ ও সব্যসাচী দেব সম্পাদিত 'বীরেন্দ্র সমগ্র' (১ম খণ্ড), প্রথম
প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮, প্রকাশক: অনুষ্টুপ প্রকাশনী। কলকাতা-৯। পৃষ্ঠা: ৪২৩, 'মুণ্ডহীন
ধড়গুলি আহ্লাদে চিৎকার করে' (১৩৭৮ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত) কাব্যগ্রন্থ থেকে কবি কর্তৃক
বর্জিত কবিতার সংকলনের একটি।
ওপার বাংলার নিহত মানুষদের কথা মনে রেখে
কান্না এখন আগুন, তার ঘৃণা
বজ্র হয়ে জ্বলে :
"যে কাপুরুষ পশুর চেয়ে হীন
তাকে দগ্ধ করব অনলে---"
বলে জন্মভূমির মানুষ তার
জননী জায়া শিশুর অপমানে!
ঈশ্বরের ক্ষমার চেয়ে অমল
এই প্রতিশোধ---নিহত কবি জানে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
আমার মন ভোলানো চোখ জুড়ানো কবি হাবিবুর রহমান। সুর - আব্দুল আহাদ।
শিল্পী - ফেরদৌসি রহমান। প্রবাদপ্রতিম লোকশিল্পী আব্বাদউদ্দীন আহমেদএর কন্যা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের
সময়ে বহুল প্রচারিত গান। ভিডিওটি, সৌজন্যে বিশ্বাসে বাংলাদেশ YouTube Channel । গানটি শুনে লেখা॥
আমার মন ভোলানো চোখ জুড়ানো
কি অপরূপ মরি মরি
সোনার বাংলা আমার ধাত্রী আমার
রূপ দেখে তোর নয়ন ভরি
আমার মন ভোলানো চোখ জুড়ানো
ফাগুনে তোর কৃষ্ণচূড়ায়
আগুন মাখা আদুল গায়ে
বসেছে তোর বাঁশের বাঁশী
প্রাণটি রাখে গাছের ছায়ে
তোর মেঘ মেদুর আশার নামে
সাতনলী হার গলায় পরি
সোনার বাংলা আমার ধাত্রী আমার
রূপ দেখে তোর নয়ন ভরি
আমার মন ভোলানো চোখ জুড়ানো
সাওনে তোর নদীর বুকে
মুর্শিদী গায় নায়ের মাঝি
সবুজ খেতে দোলায় আসি
আলো ছায়া ফুলের সাজি
তোর অঘ্রাণে ধান সোনামুখী
গন্ধে ভুবন উজাড় করি
সোনার বাংলা আমার ধাত্রী আমার
রূপ দেখে তোর নয়ন ভরি
আমার মন ভোলানো চোখ জুড়ানো
কষ্ট হরে নন্দনে তোর
দোয়েল শ্যামার নাচানাচি
রোদের সোনা দেয় ছড়িয়ে
নিত্য প্রাণের কাছাকাছি
তোর কাজল মাখা ধূলের বুকে
নিত্য আমি বাঁচি মরি
সোনার বাংলা আমার ধাত্রী আমার
রূপ দেখে তোর নয়ন ভরি
আমার মন ভোলানো চোখ জুড়ানো
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
প্রতিরোধ আজ কবি সুমিত চক্রবর্তী। দীপেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায় ও তরুণ সান্যাল দ্বারা সম্পাদিত, “পরিচয়” পত্রিকার
ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৭৮ সংখ্যায় (সেপ্টেম্বর ১৯৭১) প্রকাশিত কবিতা।
প্রতিরোধ আজ --- দুর্মর হাতে প্রাণ
অভ্র আকরে ঋজু রৌদ্রের গান
গতায়ু দিনের অশ্রু অবসান।
প্রতিরোধ আজ --- অনুকম্পার ঋণ
মুছে ফেলে প্রিয় দুর্বার সঙ্গীন
গ্রানিট শপথ দুর্জয় প্রতিদিন।
প্রতিরোধ আজ --- নখাগ্রে কাঁপে ঘৃণা
জারী মৃত্যুর গ্রেপ্তারী পরোয়ানা
গণচেতনার বিচারের ব্যঞ্জনা।
প্রতিরোধ আজ --- বুকে দুর্জ্ঞেয় ভাষা
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-কীর্তিনাশা
স্বপ্ন করবে প্রাঞ্জল ভালবাসা।
প্রতিরোধ আজ --- প্রতিরোধে উত্তাল
বাঙলায় খোঁজে ইতিহাস মহাকাল
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
জয় বাংলার হত্যাকাণ্ডের কবিতা ১ম কবিতা
বাউল কবি রাইমোহন দেবনাথ। পাথারকান্দি থানার অন্তর্গত হাটখলা
নিবাসি বাউল কবি রাইমোহন দেবনাথ। পোঃ কানাইবাজার, জিলা -
কাছাড়, আসাম (বরাক উপত্তকা)। রচনাকাল ১৩৭৮ বঙ্গাব্দ (১৯৭১)।
বাংগালী সব টের পাইল, সকলের ঘুম ভাঙ্গিল,
হিন্দু মুসলিম দল বান্দিল, এক হইয়া।
বলে সবে ভোট দিব এবার, নৌকার ছবির মাঝার,
পাশ করাব মজিবুর আমরা ভোট গোলা দিয়া।
সকলেই এই যুক্তিকরে ঠিক করে রাখল অন্তরে,
ভোটের ধীরে ধীরে যায় চলিয়া দেখিয়া
নৌকার ছবি খান, ভোট দিল হিন্দু মুসলমান,
পাশ হইল মুজিবুর রহমান, লক্ষ লক্ষ ভোট পাইয়া।
তারপরে কি হইল শুনেন শুনেন বন্ধু ভাই সকল
ভোটেতে ফেইল মারিল, খান ইয়া ইহা
(ভোটে) ফেইল মারিয়া ইয়াইহা খানে যুক্তি করে গিয়া
ভুট্টুর সনে, মুল সয়তান ঠিকা খানে সঙ্গে করিয়া।
যুক্তি করে তিন জনে, হঠাৎ ঠিককাখানে কয় তখনে,
ইয়া ইহা খান যাও একনে ঢাকায় চলিয়া।
ঢাকার গিয়া মুজিবুরকে বুঝাইয়া কইও তাকে,
এক মাসের টাইম আমাকে দাও হে দিয়া।
এই সল্লা লইয়া কানে, কি করল ইয়া ইহা খানে
হেলিকাপটার লইয়া তখনে যায় চলিয়া।
তখন হেলিকাপটার ছাড়ে, আধা ঘন্টার ভিতরে
মুজিবুর রহমানের ধারে, পৌঁছিল গিয়া।
গিয়া মোজিবুরের ধারে, কয় কথা প্রকাশ করে,
এক মাসের টাইম আমারে দাও হে দিয়া।
আমি একটি মাস পরে আসিয়া আপনার ধারে,
ছিট দিয়া আপনারে যাব চলিয়া।
আমি আমার দেশে যাব, আপনাকে গদী সমজাইব
(পূর্ব্ব) পাকিস্তানে আর আসিবনা ফিরিয়া।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-
এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য ভূমিকা। একদিকে
তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা,
মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে একাত্তরে
সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির
পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
কবি গান
শুনেন সবে মনদিয়া, দুঃখের কথা যায় বলিয়া,
পূর্ব বাংলাতে দুঃখ ঘটল আসিয়া।
বলি শুনেন মূল বিবরণ, ১৩৭৮ সন,
মহা মারি শুরু হল হঠাৎ, করিয়া।
ভোটে দাঁড়ান খহইয়া খান, লুটিতে পূর্ব পাকিস্তান,
পাকিস্তানের ধন ধান্য নিতে হরিয়া।
এই কথা বলিয়া এখনে, কি করিল ইহ ইহা খানে,
ভুটু আর টীককার সনে নিলেন আসিয়া।
তিন জন তখন কি কাজ করে,
জানাই সিপাই সৈন্যের ধারে,
পূর্ব্ব পাকিস্তানে সত্বরে, যাও চলিয়া।
যাও পূর্ব্ব পাকিস্তানে, মার গিয়া বাংগালী গনে,
এই শুনিয়া সিপাই গনে উঠল জাগিয়া।
সিপাই গন জাগিয়া উঠল, নয়টি জাহাজ সাজ করিল,
বোমা কামান মেশিনগান লইল, বুজাই করিয়া
বন্দুকেতে গুলি ভরি জাহজ তখন দিল ছাড়ি,
পাকিস্তান গেল ভরি, পাঠান সৈন্য আসিয়া।
প্রথম গিয়া ঢাকার সহরে, হাজার হাজার নর নারীকে মারে,
বোমা গোলা কত ছাড়ে কি বলব যাইয়া।
কুমিল্লা আর ময়মন সিং, রংপুর জেলা একই দিন,
সিলেটেও বোমা সেই দিন দেয় ছাড়িয়া।
সহরের লোক যত মারা গেল শত শত
শাজালালের দরগায় কত গেল দৌড়িয়া।
প্লেইন হইতে বোমা ছাড়ে, শাজালালের দরগার ধারে,
শাজালালের নামের জুরে বোমা ফাটল না পড়িয়া।
শা পরান আউলীয়া জানি, শাজালালের ভাগিনা তিনী
তিন মাইল দুরে মোকাম খানি, যাই বলিয়া।
সেজ জায়গাতে বোমা ছাড়ে, বোমা ছাড়তে প্লেইন পড়ে,
পুষ্করিণীর শীরির ধারে রয় পড়িয়া।
অত্যাচার করায় ইয়া ইহা খানে, ধর্ম্মা ধর্ম্ম নাহি মানে,
ভুটু আর টিক্কা খানে, দেখে চাহিয়া।
ঘরে আগুন মানুষ মরে, বোমা কামান কতই ছাড়ে
গরু বাছুর জলিয়া মরে আগুনে পড়িয়া।
যুবতী নারী গন ধরে, পথে ঘাঠে জিনা করে
আদামরা করিয়া পরে যায় চলিয়া।
ছাইয়া দেখে পূরুষ গনে, আড়ালে রইয়া তখনে,
দেখা পাইলে পাঠান গনে ফেলবে মারিয়া।
শুনেন সভে স্বাধীন বাসী, হইতেছে ভাই সর্ব্বনাশী
এখন গিয়া ধর আশী সভে মিলিয়া।
মাতা পিতা শিশুকে ফেলে, ঘর বাড়ি ছাড়িয়া চলে
প্রাণের ভয়ে তিন লক্ষ লোক, আসল ইণ্ডিয়া।
ভাইরে মনের দুঃখ মনে রয়, আর কি রে ভাই প্রাণে সয়,
আগে বাড় নাইরে ভয় দেশের লাগিয়া।
ক্ষুদিরাম বাঙ্গালী ছিল দেশের জন্য প্রাণ তেজিল,
বাংলা দেশ স্বাধীন হইল, নাম গেছে রইয়া।
মুক্তি ফৌজেরা সভাই কয় বুকের রক্ত দিতে হয়,
পাঠান সৈন্য করব ক্ষয়, সবে মিলিয়া।
অবিছার অত্যাচার করে, বাঙ্গালীরে প্রানে মারে
বোমা কামান কত ছাড়ে, গ্রামান্তরে গিয়া।
মুক্তি ফৌজেরা আগে বাড়ে, প্রাণের মায়া সভাই ছেড়ে,
পাঠান সৈন্য কত মারে, ভয় না করিয়া।
মুক্তি ফৌজের হাতে পড়ে, আড়াই হাজার পাঠান সৈন্য মরে,
৩০/৫/৭১ যে নিউজে যায় শুনাইয়া।
এখন সবে বলে জয় জয়, বাংলার দাবি দিতে হয়,
আগে বাড় হবে ভাই আগুন লাগাইয়া।
গিয়া কুলাউড়ায় ২ বড় লেখায় তার মধ্যে যা ছিল।
আগুন দিয়া বাড়ি ঘর ছায় করিয়া দিল।
সিলেট টাউনের উত্তর কোনে যত গ্রাম ছিল।
বোমা ছাড়ি ঐ সকল ধবংশ করে দিল।
সিলেটের দরগায় গিয়া ২ বোমা ছাড়িয়া দংশ করতে চাইল।
শাজালালের নামের গোনে বোমা না ফাটীল।
বোমা ছাড়ল জখন ২ শব্দ হয় তখন ভয়ঙ্কর হইয়া।
শব্দের চোটে দরজা তিনটি গেলেন ফাটিয়া গিয়া
গ্রামান্তরে ২ অত্যাচার করে বাঙ্গালীর উপরে।
রাস্তা ঘাটে হাটে মাটে যেখানে পায় যারে।
হায়রে সুনামগঞ্জে ২ দল সোজা ষ্টীমার ঘাট গিয়া।
বড় বড় মাল গোদাম ফেলিলেন ভাঙ্গিয়া।
তারা বোমা চালায় ২ কামান চালায় মেশিন গান।
হাজার হাজার বাঙ্গালীর বধিল পরান।
ছাতক বাজারে ২ অত্তাচার করে বলা নাহি যায়।
দুতালা তিতালায় বিল্ডিং ভাঙ্গিয়া ফালাই।
হায়রে কত দুকান ২ খান খান খান করিয়া ফেলিল।
জীবন লইয়া মহাজনে পলায়ন করিল।
হায়রে গ্রামে গিয়া ২ বন্দুক দিয়া কি কাম করে
শিয়াল কুকুর মথ মানুষকে মারে।
মনের হদ মিঠায় ২ শুনেন সভাই বাংঙ্গালীর উপরে।
স্ত্রী এর সামনে স্থামীকে মারিয়া অত্যাচার করে।
বাংলা দেশ বাঙ্গালীর স্বাধীন ২ পরাধীন থাকব কেন হইয়া।
বাংলা দেশের জয় গান গাব আমরা গাইয়া।
বাংলা দেশের জন্যে ২ বাংঙ্গালী গনে দিতেছে পরান।
মারা গেল লক্ষ লক্ষ হিন্দু মুসলমান।
শান্ত লিখা আছে ২ সভার কাছে যায় এখন বলি।
পশ্চিম পাকিস্তান পশ্চিমাদের পূর্ব বাংলা বাঙ্গালীর।
আমরা উড়াব নিশান ২ গাহিব জয়গান বাংলা দেশের জয়।
বাঙ্গালী সব এক থাকিলে সবই জয় হয়।
ধূর্ত্ত ইহাইয়া খানের ২ বেইমানের আশা না পুরিবে
মিজ্জাফরের দুর্দ্দশার মত তার ও প্রান জাবে।
রাই মোহন কয় দিন কাটাও হইয়া একতা।
কবি শেষ করিলাম দিয়ে দিলাম
কবিতার দাম মূল্য মাত্র ২০ পয়সা সভাই জানাইলাম।
কবি শেষ হইল।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
জয় বাংলার হত্যাকাণ্ডের কবিতা ২য় কবিতা
বাউল কবি রাইমোহন দেবনাথ। পাথারকান্দি থানার অন্তর্গত হাটখলা
নিবাসি বাউল কবি রাইমোহন দেবনাথ। পোঃ কানাইবাজার, জিলা -
কাছাড়, আসাম (বরাক উপত্তকা)। রচনাকাল ১৩৭৮ বঙ্গাব্দ (১৯৭১)।
ভোটেতে মুজিবুর রহমান জয়
বাংলা দেশে বাঙ্গালী রবে জয় হইয়া।
ধুর্ত্ত ইহাইয়া খাঁনে ২ মনে মনে বুঝিতে পারিয়া।
সোনার বাংলা দিলরে ভাই ছারকার করিয়া।
হিন্দু মুসলমান ২ পেয়ে অপমান বাড়ি ঘড় ছাড়ি।
দ্বারে দ্বারে ঘুরে হইয়া পথের ভিখারি।
বাংলাদেশের জন্য ২ বাঙ্গালী গণে দিতেছে পরান।
মারা গেল লক্ষ লক্ষ হিন্দু মুসলমান
প্রথম ঢাকার শহরে ২ অত্যাচার করে ইহাইয়া খানের দলে
হাজারে হাজার নর নারী কে মারিয়া ফেলে।
যত অফিস খানা ডাক্তার খানা সহরেতে ছিল
বোমা ছাড়ি ঐ সব ধ্বংস করি দিল।
কত এক তালায়, দু তালায়, শাত তালায় গিয়া।
চৌদ্দ তালা বিল্ডিং পর্যন্ত ফেলিল ভাঙ্গিয়া।
লোক মারা যায় ২ হায়রে হায় সংখ্যা নাইরে তার।
মেয়ে লোকের উপর করে অন্যায় অত্যাচার।
মেয়ে লোকের উপরে ২ অত্যাচার করে গ্রামান্তরে গিয়া
স্ত্রীর সামনে স্থামীকে ফেলেন কাটিয়া।
ঢাকা ফরিদপুরে ২ লোক মওয়ে বলা নাহি যায়।
রাস্তা ঘাটে, হাটে, মাঠে যেখানে যারে পায়।
জিলা যশোহর ২ গুর চর হইল ঘটনা।
বোমা ছাড়ি বঙ্গালীরে মারল সবজনা।
হায়রে পাঞ্জাবী জাতী ২ ধূর্ত্ত অতি কি কাম করে।
অত্যাচার করে গিয়া গ্রামের ভিতরে।
জিলা খুলনায় ২ গেল ভাই বাঙ্গালীর পরান।
নারী পুরুষ শেষ করিল ছাড়িয়া কামান।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-
এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য ভূমিকা। একদিকে
তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা,
মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে একাত্তরে
সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির
পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
কবিতা আরম্ভ .
..
প্রভু বিশ্বপতি ২ শত ভক্তিরাখি তবু ঠাই।
তুমি বিনে ত্রিভুবনে বন্ধু কেহ নাই।
আমি বিদ্যা হীন বুদ্ধি হীন লিখিতে না জানি
সাহসে ধরিলাম আমার ভাঙ্গা কলম খানি।
শুনেন দুঃখের কথা ২ কহিতে ব্যেথা মুখে না জুড়ায়।
হঠাৎ এসে ঘটল দুঃখ পূর্ব্ব জয় বাংলায়।
বুদ্ধি করিয়া পূর্ব্ব বাংলায় নিতে চাইল ভোটে জয় হইয়া।
বিধির কি যে লীলা কি যে খেলা কি খেলা খেলাইল।
গ্রামের ভিতরে ২ অত্যাচার করে পাঞ্জাবী জাতী গিয়া।
আগুন দিয়ে বাড়িঘর দেয় পুড়াইয়া।
জিলা ময়মনসিংহ ২ ঘটল দুর্দিন বাঙ্গালীর উপরে।
হাজার হাজার বাঙ্গালীরে প্রানেতে মারে।
লোকে বাড়ি ঘর ছাড়ি করে পলায়ন।
শূন্য হাতে পালায় লোকে লইয়া জীবন
সারা জয় বাংলায় ২ উঠিয়া যায় হাহাকার ধনী।
পাঞ্জাবীয়ে শেষ কবিল বাংঙ্গালীর প্রাণী।
ঢাকা নারাইনগঞ্জে ২ দল সেজে পাঞ্জাবী জাতী
গিয়া বোমা ছাড়ি টাউনটারে দিল শেষ করিয়া।
লোক মারা যায় ২ হায়রে সংখ্যা নাইরে তার।
কোন রাষ্ট্রে শুনিনা এমন অন্যায় অত্যাচার।
গিয়া ভৈরব বাজার ২ পুলের মাঝে বোমা যে ছাড়িলো
মেঘনা নদীর মধ্যে বোমা পড়িয়া রইল।
হইল ট্রেন বন্ধ ২ মটর বন্ধ বন্ধ হাট বাজার।
ব্রাহ্মন বাড়িয়া হইল ভাই গুরতর কারবার।
গিয়া গ্রামন্তরে ২ বোমা ছাড়ে প্লেনেতে থাকিয়া।
তারপর টাউনেতে আগুন দেয় লাগাইয়া।
রাস্তার উপরে ২ বাংঙ্গালীরে যারে পায় যে খানে
বন্দুক দিয়া গুলি করি মারেন পরানে।
হায়রে আখাইড়ায় ২ কুমিল্লায় তার মধ্যে যা ছিল।
মেসিনগান দিয়া লোকেরে মারিয়া
নিউজে শুনা যায় ২ শুনতে পায় যায় বলিয়া।
লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালীরে ফেলিলেন মারিয়া।
গিয়া চট্টগ্রামে ২ চিটাগাঙ্গ ইহাইয়া খানের দলে
বোমা ছাড়ে কামান ছাড়ে থাকিরা নিরলে।
ঘরে গরু বাছুর ২ শিয়াল কুকুর জীব জন্তুগন
শব্দ শুনে মানুষের বাহির জীবন।
জিলা রাজশাই ২ শুনেন ভাই হইল ঘটনা।
জুলুম বারে বাংলার উপর দুষ্ট গনা।
হয়রে স্ত্রীয়ের ধারে ২ স্বামীর যারে বানের সানে ভাই
মাতার সামনে পিতার মরণ চক্ষে দেখতে পায়।
মারে অবিরত ২ মরে কত সিমানাইরে তার।
টাউন বন্দর হাট বাজার করে ছারখার
লোকে ঘরের ভিতরে ২ গর্ত করে বাচিবার কারণ।
মাঠীর নীচে থাকে লইয়া জীবন।
লোকের ঘটল কষ্ট ২ করল নষ্ট ছাড়ে ঘর বাড়ি
বরিশালের কথা এখন যায় প্রচার করি।
জিলা বরিশালে ২ শুনেন সকলে টাউন একটি ছিল।
বোমা ছাছি টাউন টারে নষ্ট করে ছিল
লোকের হাহাকার ২ নাই পারাপার সেই জাগার ভিতর।
খেতের ফসল খেতে রইল লোকের নাই খবর।
জিলা নয়াখালি ২ হইল বলী বাঙ্গালীর পারান।
হাজার হাজার মারা গেল হিন্দু মুসলমান।
হয়রে চানপুরেও ২ অত্যাচার করে বিদেশী দল গিয়া।
বাড়ি ঘর ছায় করে দেয় আগুন লাগাইয়া।
লোকে পলায়ন ২ করে তখন ছাড়িয়া সকল।
কোন দিকে আসিয়া পড়ে ইহইয়া খানের দল।
লোকে প্রাণের ভয়ে ২ যায় পালাইয়ে যেখানে যে পারে।
সিলেটের কথা এখন যাই প্রকাশ করে।
হায়রে হবিগঞ্জ নবিগঞ্জ সাস্তাগঞ্জ লইয়া
জকিগঞ্জ দিল যে জয়, ভয় না করিয়া।
দেশের জন্য দিব প্রাণ, বুকের রক্ত করব দান,
মুক্তি ফৌজের গায়ে জয় বাংলার নাম, রাখৰ লেখিয়া।
সেখ মুজিবুর রহমানে, বাংলা ছাড়া নাহি মানে,
আবেদনে জানাই ছাত্রগনে, মিটিং করিয়া।
সত্যাগ্রহী হইল কত, ইয়াইহা খান হয় রত,
পরের সত্ব লইয়া অশান্তি দিলেন ঘটাইয়া।
ভোট তারে দিলনা কেনে মিলিয়া।
দিয়েছে শক্তি সাইকিব্রিয়া।
শাসক হয়ে শোন করে, সুনার বাংলা আধার কত্তে
বোমা ছাড়ে আর ছাড়ে রাজত্বেও
লাগিয়া এলেও ভাই ঘোর কলি,
প্রজার উপর গোলা গোলি,
করলেন প্রজামারি খালি কোন শাসত্রে পাইয়া।
ভাইরে শরনার্থিও দুঃখ দখলে
বুক ভেসে যায় নয়ন জলে,
কলমে না কালী চলে লেখতে বসিয়া।
যথাধর্ম্ম তথা জয় সর্ব ধর্ম্মে শাসত্রে কয়,
দুর্য্যধনের রাজ্যক্ষয়, অবিচার করিয়া।
অবিচারে রাজ্য নষ্ট প্রজায় মনে কত কষ্ট
চতুরদিকে যতরাষ্ট দেখতেছেন বসিয়া
এখন কেহ কিছু নাহি বলে, কি যে হবে শেষ কালে,
রাষ্ট্র সংঘের হলে শুনব বসিয়া।
বলে বাউল এই রাইমোহন সভরে কাছে
জানাই নিবেদন ভুল ত্রুটি করবেন মার্জ্জনা অধীন জানিয়া।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
বিংশ শতাব্দীর এজিদ ইয়াহিয়া খান ও
ভূট্টর বর্ব্বরতায় লক্ষ লক্ষ নিরস্ত্র শহীদের
কবি গান ৩য় সংকলন। কবি মো : আবুবক্কর। সাকিন - ধুমকর,
পো - কালাইন, জিলা - কাছাড়, আসাম। রচনা ১৩৭৮বঙ্গাব্দ (১৯৭১)।
মুজিব নেতা বন্ধ করিয়া রাখিয়াছে জেলে সকলে
প্রতিজ্ঞা করল, এই সংখামে মরা ভাল।
সেইদিন হইতে শুরু হইল শুনেন সকলে রে।
বির মুজাহিদ নাই ভয়, জয় আমাদের হবে নিশ্চয়,
প্রভু তুমি সব সময় রাখিও কোলে।
এরুপ আশ্চর্য ঘটনা ভাই জীবনে কেউ শুনি নাই,
ইতিহাসে নাহি পাই কিবা দলিলে রে।
পাকিস্তানের জন্ম হইল লিয়াকত জিন্না চলে গেল
কয়েকদিন (Lasting) করল,
আযুবের আমলে ভুট্টু শালা গরু চুর,
ইয়াহিয়া পাগলা কুকুর।
টিককা খানের গায়ের জ্বর আর নাহি দেখাইলে রে।
সুভাস আনল স্থাধীনতা ক্ষুদিরামের ফাসীর কথা,
বিনয় বাদল দীনেশ যথা সেথা যাই চলে।
জগতে রহিল কির্ত্তী, আমরা তাদের হইয়া সাথী,
নিবাইবে ইয়াহিয়ার বাতি মুজিব বাচিলে রে।
বিশ্বের সারা যাগায় যাগায় ইতিহাসের পাতায় পাতায়
মক্তবে মাদ্রাসায় কিবা পাইবে স্কুলে।
মুখ পুড়া ভুট্ট চাচা, সবে পড়বে তোমার কিচ্ছা,
ইণ্ডিয়ার শুষা কুকুর চাচ্ছ। পাকিস্তান গেলে রে।
২৫ এপ্রিল হইতে ২৪ জুন পাইকার দরে করল খুন,
বাংলাদেশে জ্বলল আগুন সকাল বিকালে।
মাথা ব্যথা হবে কার প্রতিবেশী ইন্ডিয়ার,
মানচিত্রে আছে পরিষ্কার দেশ ভূগোলে রে।
আরব প্রজাতন্ত্র দেশে সৌদি আরব অবশেষে,
কাবুলে শুনিয়া হাসে বাঙ্গালী মরলে।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-
এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য ভূমিকা। একদিকে
তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা,
মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে একাত্তরে
সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির
পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
কবিতা আরম্ভ .
..
শুন দুঃখ সারাসরি বিষয় বলি জয় বাংলার।
কি ভাবের অত্যাচার করল এজিদের দলে রে।
কি ভাবের অত্যাচার করল, এজিদের দল।
চক্ষে কিন্তু দেখিনাই (নিউজ পেপারে) পড়িয়া চাই,
রেডিওতে খবর পাই, কাছে বসিলে।
পড়িওনা সয়তানের ধুকায়, খবর যদি ধর ঢাকায়
এই ভাবের মিথ্যা কথায় রাজ্য কি চলেরে।
সরকারী পাঠা ইয়াহিয়া, ভুট্ট কুত্তার কথা শুনিয়া,
চিন রাজ্যে সুযোগ পাইয়া পাকিস্তানের পক্ষ লইয়া
কাস্ট্র সঙ্গে কি বুজিয়া কথা না বলে রে
শুন ভাই আশ্চর্ষ্যের বিষয়, মুশলিম রাস্ট্র অনেক হয়
কেউ না কোন কথা কয় এই গণ্ডগোল।
এতদিন ধরিল ধর্য্য কয় দিন ভারত করবে সহ্য,
বিচার হবে নায্য পিটে ডাণ্ডা পড়িল রে।
আমরা মরব পিচে যাব না, মুজিবের নিতি ছাড়বো না,
শত্রুকে দেশে রাখব ন,
মারবো সমুলে, শুনরে ভুট্ট পাগল কুত্তা
তর চামড়ায় বানাইয়া জুতা।
দুর করিব মনের ব্যথা বান্ধিয়া তর গলে রে।
সুভাষ বসু, বল্লব ভাই, বাঘা জতীণ, সত্যেন কানাই,
স্বাধীনতার করিয়া লড়াই শিখাইয়া গেলে।
আমরা ৭ কোটি দিব রক্ত, হইবনা পাঠানের রক্ত
মরিব মারিব সামনে শত্রু পাইলে রে।
মার জঙ্গী শাহির দল, মুক্তী সোনা ভাই সকল,
প্রভুর কৃপা মোদের সম্বল এই বিপদকালে।
উপযুক্ত দিব শিক্ষা, দিব না প্রাণ ভিক্ষা
বাংলা দেশ করিব রক্ষা গেরিলা কোশলে রে।
৫০ লক্ষ বাস্তুহারা ভারতে আসিয়াছেন তারা
১০ লক্ষ গেছেন মারা খবরে মিলে।
এইটা কি হয় গরুয়া ব্যাপার, রাষ্ট্র সঙ্গে কর বিচার,
আরব মিশরের দুই ভিজা ছাগলে।
এই কি তোদের বাহাদুরী ধরিয়া যৌবতি নারী
এক লাইনে ধরাইয়া সারী গুলি করিলে।
বেইমান দস্যু গরু দালাল, মারলে বেগম ছুফিয়া কামাল,
কি দুষ করলা প্রপেছার মনিরুজ্জামালে রে।
প্রফেছার জি, ছি দেব নাই দুনিয়ায়,
নিলিমা ইব্রাহিম কোথায়, ঘুমন্ত অবস্থায় রাত ১২ টায়
২৫ এপ্রিলের নির্ল্লজ্য শুয়রের জাতে অধ্যাপক মারল কি দুসেতে,
ছাত্র মারল শতে শতে সেই রাত্রি কালে।
একি তাদের বিরত্ত শিল্পী যে মারিল কত,
প্রাক্তন মন্ত্রী বীরেন দত্ত প্রাণে মারিলে।
মারল কত বৈজ্ঞানিক, না রাখিল সাহিত্যিক,
তার মত কত পাব্লিক কিনিতে মিলে রে।
ব্রেইনে তার ছিল দুস গদি পাইয়া হইল বেহুস,
লক্ষ লক্ষ মারলে মানুষ কোন আকেলে।
মাথা তোমার হইল নষ্ট, কেমনে চালাইবে রাষ্ট্র
বিশ্ববাসী অসন্তুষ্ট কবিকার বলে রে।
গরু, ছাগল, ঘোড়া, রেহাইনা পাইল তার,
বাঘ, হাতি যত যারা ছিল জঙ্গলে।
গাছ বৃক্ষ তরু লতা সকলের আজ এক অবস্থা
পাখী সবে কয়না কথা বসিয়া ডালে রে।
চার দফা দাবি জানাই, বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই,
নতুবা তর উপায় নাই মানিলে।
ইয়াহিয়া তর গদী ছাড়, এইটা কি তর বাবার চেয়ার,
করিয়া অহঙ্কার কেনে জাহান্নামে গেলে রে।
পাকিস্তান নাম গিয়াছে ডুবি ইয়াহিয়া তুই গদীর লোভী,
পূর্ব্ব বাংলার ক্ষতির দাবি জানাই সকলে।
সঙ্গে লইয়া গুণ্ডা পার্টি ধন সম্পত্তি নিলে লুটি
তোর বাপ দাদা চৌদ্দ গুষ্টির শ্রাদ্ধে লাগাইলে রে।
গুলি বারুত কামান যত কামান যত জঙ্গী শাহি শত শত
এই আমাদের তিনটি সর্ত কানে কি শুনিলে,
নিয়ে যা তর নিজ দেশে বিপদে পড়িবে শেষে
মিটিবে না আপুসে তর বাবা আসিলে রে।
মক্কার বদ্দু জাতে পাঠান কামে নাই নামে মুসলমান,
ধর্ম্ম যার নাই ইমান নাই সব শাস্ত্রে বলে।
বক্করেরি নিবেদন ৩য় খণ্ড হইল বারণ
৪র্থয় হবে দরশন বাঁচিয়া থাকিলে রে।
ইতি-
জয় বাংলা জয় মুজিবর
আমার গান কেহ নকল করিবেন না নতুবা বিপদ হবে।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
পল্লী কবি অতুল চন্দ্র দাশ
|
জয় বাংলার কবিতা
পল্লী কবি অতুল চন্দ্র দাশ। সাকিন পোঃ - পশ্চিম গোবিন্দপুর, থানা -
কাটিগড়া, জিলা - কাছাড়, আসাম। রচনা ১৩৭৮ বঙ্গাব্দ (১৯৭১)।
বিবিধ কিযে লীলা ২ কি যে খেলা কি খেলা খেলাইল।
ভোটেতে মুজিবুর রহমান জয়ী হইয়া গেল।
আমরা বাঙ্গালী ২ থাকব মিলি বাংলা দেশ নিয়া।
বাংলাদেশে বাংগালী রব জয়ী হইয়া।
ধূর্ত্ত ইয়াহিয়া খাঁনে ২ মনে মনে বুঝিতে পারিয়া।
সোণার বাংলা দিলেও ভাই ছারকার করিয়া।
হিন্দু মুসলমান ২ পেয়ে অপমান বাড়ি ঘর ছাড়ি।
দ্বারে দ্বারে ঘুরে হইয়া পথের ভিখারী।
বাংলা দেশের জন্যে ২ বাংগালীগণে দিতেছে প্রাণ।
বাংলা দেশে বাংগালী রব নাইরে অন্যের স্থান।
ঢাকার সহরে ২ অত্যাচার করে ইয়াইয়া খানের দলে।
হাজার হাজার নর-নারীকে মারিয়া ফেলে।
যত অফিসখানা ২ ডাক্তারখানা সহরেতে ছিল।
বোমা ছাড়ি ঐ সব ধ্বংস করে দিলে।
কত এক তালায় ২ দু তালয় সাত তালায় গিয়া।
চৌদ্দ তালা বিলডিং পর্যন্ত ফেলিল ভাঙ্গিয়া।
লোক মারা যায় ২ হায়রে হায় সংখ্যা নাইরে তার।
মেয়েলোকের উপর করে অন্যায় অত্যাচার।
মেয়েলোকের উপরে অত্যাচার করে গ্রাম গ্রামান্তরে গিয়া।
স্ত্রীর সামনে স্থামীকে ফেলে যে কাটিয়া।
ঢাকা ফরিদপুরে ২ লোক মওয়ে বলা নাহি যায়।
রাস্তা ঘাটে হাটে মাঠে যেখানে যারে পায়।
জিলা যশোহর ২ গুরুতর হইলো ঘটনা।
বোমা ছাড়ি বাংগালীরে মারল সব জনা।
হায়রে পাঠান জাতি ২ ধূর্ত্ত অতি কি কাম করে।
অত্যাচার করে গিয়া গ্রামের ভিতরে।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-
এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য ভূমিকা। একদিকে
তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা,
মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে একাত্তরে
সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির
পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
কবিতা আরম্ভ .
..
প্রভু বিশ্বপতি ২ শত ভক্তি রাকি তব ঠাঁই।
তুমি বিনে ত্রিভুবনে বন্ধু কেহ নাই।
আমি বিদ্যাহীন ২ বুদ্ধিহীন লিখিতে না জানি।
সাহসে ধরিলাম আমার ভাঙ্গা কলম খানি।
শুনেন দুঃখের কথা ২ কহিতে ব্যথা মুখে না জুয়ায়।
হঠাৎ এসে ঘটল দুঃখ পূর্ব্ব জয়বাংলায়।
ধূর্ত ইয়াহিয়া খাঁন ২ (তীক্ষ্ণ) বুদ্ধিমান
বুদ্ধি করিয়া পূর্ববাংলা নিতে চাইল ভোটে জয় হইয়া।
জিলা খুলনায় ২ গেল ভাই বাংগালীর পরাণ।
নারী পুরুষ শেষ করিল ছাড়িয়া কামান।
গ্রামের ভিতরে ২ অত্যাচার করে ভিন্ন জাতি গিয়া।
আগুন দিয়ে বাড়ি ঘর দেয় পুড়াইয়া।
জিলা ময়মনসিং ২ ঘটল দুর্দ্দিন বাঙ্গালীর উপরে।
হাজার হাজার বাংগালীরে প্রাণেতে মারে।
লোকে বাড়ি ছাড়ি ঘর ছাড়ি করে পলায়ণ।
শূন্য হাতে পালায় লোকে লইয়া জীবন।
সারা জয় বাংলায় ২ উঠিয়া যায় হাহাকার ধ্বনি
ভিন্ন জাতি শেষ করিল বাঙ্গালীর প্রাণ।
হায়রে নারাইনগঞ্জে ২ দল সেজে পাঠান জাতি গিয়া
বোমা ছাড়ি টাউনটারে দিল শেষ করিয়া।
লোক হায় মারা যায় ২ সংখ্যা নাইরে তার।
কোন রাষ্ট্রে শুনিনা এমন অন্যায় অত্যাচার।
গিয়া ভৈরব বাজার ২ পুলের মাঝার বোমা যে ছাড়িল।
মেঘনা নদীর মধ্যে বোমা পড়িয়া রহিল।
হইল ট্রেন বন্ধ ২ মটর বন্ধ বন্ধ হাট বাজার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া হইল ভাই গুরুতর কারবার গিয়া
গ্রামান্তরে ২ বোমা ছাড়ে দুরেতে থাকিয়া।
তারপর টাউনেতে আগুন দেয় লাগাইয়া।
রাস্তার উপরে ২ বাঙ্গালীরে যারে পায় যেখানে।
বন্দুক দিয়া গুলি করি মাত্তে পরাণে।
হায়রে আখাউড়ায় ২ কুমিল্লায় তার মধ্যে যা ছিল।
মেসিনগান গিয়া ভাই লোকেরে মারিল।
নিউজেতে শুনা যায় ২ শুনতে পাই যাই বলিয়া।
লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালীরে ফেলিলেন মারিয়া।
গিয়া চট্টগ্রামে ২ চিটাগায়ে ইয়াহিয়া খানের দলে
বোমা ছড়ে কামান ছাড়ে থাকিয়া নিরলে।
ঘরে গরু বাছুর ২ শিয়াল কুকুর জীব জন্তুগণ।
শব্দ শুনে মানুষের বাহির হয় জীবন।
জিলা রাজশাই ২ শুনেন ভাই হইল ঘটনা।
জুলুম করে বাংলার উপরে দুষ্টগণা।
হায়রে স্ত্রীয়ের ধারে ২ স্বামীরে মারে বোনেরে সামনে ভাই।
মাতার সামনে পিতার মরণ খবর শুনে যায়।
মারে অবিরত ২ মরে কত সীমা নাইওএ তার।
টাউন বন্দও হাট বাজার করে ছারখার।
ঘরের ভিতরে২ পাতা করে নষ্ট ছাড়ে ঘর বাড়ি।
বরিশালের কথা এখন যাই প্রচার করি।
জিলা বরিশালে ২ যাই বলিয়ে টাউন একটি ছিল।
বোমা ছাড়ি টাউনটারে নষ্ট করি দিল।
লোকের হাহাকার ২ নাই পারাপার সেই যাগার ভিতর।
ক্ষেতের ফসল খেতে রইল লোকের নাইরে খবর।
জিলা নয়াখালি ২ হইল বলি বাঙ্গালীর পরাণ।
হাজার হাজার মারা গেল হিন্দু মুসলমান।
হায়রে চান্দপুরে ২ অত্যাচার করে পাঠান দল গিয়া।
বাড়ি ঘর ছাপ করে দেয় আগুন লাগাইয়া।
লোকে পলায়ন ২ করে তখন ছাড়িয়া দখল।
কোন দিক আসিয়া পড়ে ইয়াহিয়া খানের দল।
লোকে প্রাণের ভয়ে ২ যায় পলায়ে যেখানে যে পারে।
সিলেটের কথা এখন যাই প্রকাশ করে।
হায়রে হবিগঞ্জ নবিগঞ্জ সাইস্তাগঞ্জ লইয়া।
হাজার হাজার লোক মার যায় বোমার তলে পড়িয়া।
লোকে প্রাণের ভয়ে ২ যায় পলায়ে যেখানে যে পারে।
সিলেটের কথা এখন যাই প্রকাশ করে।
হায়রে হবিগঞ্জ নবিগঞ্জ সাইস্তাগঞ্জ লইয়া।
হাজার হাজার লোক মার যায় বোমার তলে পড়িয়া।
সিলেট টাউনের উত্তর কোণে যত গ্রাম ছিল।
বোমা ছাড়ি ঐ সকল ধ্বংস করে দিল।
সিলেটের দরগায় গিয়া ২ বোমা ছাড়িয়া ধ্বংস করতে চাহিল।
শাহ-জালালের নামের গুনে বোমা না ফাটিল।
বোমা ছাড়ল যখন ২ শব্দ তখন ভয়ঙ্কর হইয়া।
শব্দের চুটে দরজা তিনটি গেল যে ফাটিয়া।
গিয়া গ্রামান্তরে ২ অত্যাচার করে বাংগালীর উপরে।
রাস্তা ঘাটে হাটে মাঠে যেখানে পায় যারে।
হায়রে সুনামগঞ্জে ২ দল সেজে ষ্টিমার ঘাটে গিয়া।
বড় বড় মাল গোদাম ফেলিল ভাংগিয়া।
তারা বোমা চালায় ২ কামান চালায় চালায় মেসিন গান।
হাজার হাজার বাংগালীর বধিল পরাণ।
ছাতক বাজাত্তে ২ অত্যাচার করে বলা নাহি যায়।
দুতালা তিতালা বিলডিং ভাংগিয়া ফেলায়।
হায়রে কত দোকান ২ খান খান করিয়া ফেলিল।
জীবন লইয়া মহাজনে পলায়ন করিল।
হায়রে গ্রামে গিয়া ২ বন্দুক দিয়া কি কাম করে।
শিয়াল কুকুরের মত মানুষকে মারে।
মনের হদ মিটায় ২ শুনেন সবাই বাংগালীর উপরে।
স্ত্রীর সামনে স্থামীকে মারিয়া অত্যাচার করে।
বাংলা বাংগালীর স্বাধীন ২ পরাধীন থাকবে কেন হইয়া।
বাংলা দেশের আমরা যাব গাইয়া।
বাংলা দেশের জন্যে ২ বাংগালীগণে দিতেছে পরাণ।
বাংগালী বাংগালীয়ে রাখবে বাংগালীর সম্মান।
শাস্ত্রেতে লিখা আছে ২ সবার কাছে যাই এমন বলি।
পশ্চিমবঙ্গ পশ্চিমাদের পূর্ব্ব বাংলা বাংগালীর।
আমরা উড়াব নিশান ২ গাহি জয় গান বাংলা দেশের জয়।
বাংগালী সব এক থাকিলে সবই জয়ী হয়।
ধুর্ত্ত ইয়াহিয়া খানের ২ বেইমানের আশা না পূরিবে।
মির্জাফরের দুর্দ্দশার মত তারও প্রাণ যাবে।
এখন এই পর্যন্ত করি ক্ষান্ত আমি যে অজ্ঞান।
মুসলিমকে ছালাম বলি হিন্দুকে প্রণাম।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
ও ভাই মুজিব নাইয়া হে কবি অশ্বিনীর কবিগান ১। বরাক উপত্যাকার গান। তাঁর একটি
গানের ভণিতায় রয়েছে যে তিনি বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন, বরাক উপত্যকায়।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়,
হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক
উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক
শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের
দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম
দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও
কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক
উপত্যকার কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
ও ভাই মুজিব নাইয়া হে ও ভাই বাংলার নাইয়া হে
পাল উড়াইয়া দাও হে তোমার ময়ুরপঙ্খী নায়
আমরা পূর্ববাংলার ভাইদের নিও
তোমারই নৌকায়।
দালালরা করছিল কানাকানি,
নায়ের ধন লুটিবে মনে মনে গুনি
এবার পবন বেগে ময়ুরপঙ্খী
উড়া দিয়া যায়।
তোমার নায়ের যত গুন বাখানী,
পুলক ভরে উঠে প্রাণে,
ও ভাই তোমার লাইগ্যা
ওই নৌকা খান পাঠাইলো খোদায়।
নৌকার দাঁড়ি - মাঝি সব এক কথায় রাজি
সব এক কথায় রাজি।
কেবল জয় বাংলার জয় বলিয়া সারি গান গায়
যদি আসে তুফান
সবাই হব সাবধান,
পাগল অশ্বিনী কয়
মুজিবের নাও লাগল কিনারায়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
মুজিবের নাও রে সুন্দর করিয়া কবি অশ্বিনীর কবিগান ২। বরাক উপত্যাকার গান।
তাঁর একটি গানের ভণিতায় রয়েছে যে তিনি বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন, বরাক উপত্যকায়।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়,
হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক
উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক
শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের
দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম
দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও
কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক
উপত্যকার কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
মুজিবের নাও রে সুন্দর করিয়া
জয় বাংলার জয় গানে দুই গালই ভরিলারে
বানাইলা মুজিবের নাও রে।
আশক্তির তক্তারে নৌকার
অনুরাগের বাতা
সাত কোটি লোহা আছে
সেই নৌকাতে গাঁথারে
বানাইলা মুজিবর নাওরে।
আশে পাশে আছেরে নৌকার
মন পবনের গুড়া
নিজে মুজিব হাল ধরিয়া
নৌকায় আছেন খাড়ারে।
অন্ধকারে চলেরে নাও
মশাল লণ্ঠন ছাড়া
বাংলার যত ভাই বোনেরা
পথ দেখাইয়া নেয় তারারে।
ঘাঠে ঘাঠে আছেরে নৌকা
কোন ঘাঠ নয় ছাড়া
শেখ মুজিবের ভোট ভারিয়া
নায়ে শূন্য করল উড়ারে
এ দীন অশ্বিনী বলে
মাঠে আছে যারা (ভাইরে মাঠে আছে যারা)
ওই নৌকায় না হইলে পার
শেষে যাবে মারা রে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
হায় হায় করে কান্দে কবি অশ্বিনীর কবিগান ৩। বরাক উপত্যাকার গান। তাঁর একটি গানের
ভণিতায় রয়েছে যে তিনি বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন, বরাক উপত্যকায়।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়,
হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক
উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক
শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের
দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম
দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও
কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক
উপত্যকার কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
হায় হায় করে কান্দে
সারা বাংলার প্রাণ
কোথায় মোদের বংগবন্ধু মুজিবর রহমান
সরল প্রাণে ঢাকা সহরে
ইহাইয়ার সংগে বৈঠক করে
পরে গুপ্ত ভাবে বন্দী করে
রাখল কোন স্থান।
যেখানে সেখানে থাক
গ্রাণে বাঁচাইয়া রাখ
নইলে তাঁর বদলে দিতে হবে
হবে ইহাইয়ার জান।
দুষ্ট ইহাইয়া কর্মনাশা
করল বাংলার এই দুর্দশা।
দয়া নাই তার রতি মাষা
বিশ্বে তার প্রমাণ।
উড়ো জাহাজ শূন্যে উড়ে
লাখে লাখে বাংগালি মারে
পাগল অশ্বিনী কয় তুশানলে
দহে বাংলার প্রাণ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
চক্ষে না দেখিলে ভাইসব কবি অশ্বিনীর কবিগান ৪। বরাক উপত্যাকার গান। তাঁর একটি
গানের ভণিতায় রয়েছে যে তিনি বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন, বরাক উপত্যকায়।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়,
হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক
উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক
শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের
দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম
দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও
কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক
উপত্যকার কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
চক্ষে না দেখিলে ভাইসব,
বুঝে উঠা দায়।
পূর্ব বাংলার জনগণের
কি হবে উপায়। (ভাই সব কি হবে উপায়)
নিরিহ হরিণীর মত
পূর্ব বাংলার মানুষের মত
শার্দূল রূপি ইহাইয়ায়
বুকের রক্ত যায় (মোদের বুকের রক্ত যায়)
ইহাইয়ার সৈনিকরা
গ্রামে গ্রামে প্রবেশিয়া
মা বোনদের ইজ্জত নিয়া
ছিনিমিনি খেলায়।
রাইফেল বন্দুক হাতে নিয়া
নিরীহ মানুব মারিয়া
হায়রে ঢাকা সহর ধ্বংস করল
কামানের গোলায়।
ভারত সরকারের হল দয়া
বাংলার লোককে আশ্রয় দিয়া।
এ পর্যন্ত বাঁচাইলেন
বিশ লক্ষের প্রাণ
আশ্বিনী কান্দে বসে
বাংলার সাগরে ভাসে।
কতদিন বংগ বাসী
লাগবে কিনারায়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
মাগো ইহাইয়ার ঘরনী কবি অশ্বিনীর কবিগান ৫। বরাক উপত্যাকার গান। তাঁর একটি গানের ভণিতায় রয়েছে যে তিনি
বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন, বরাক উপত্যকায়। .
গানটি “ইহাইয়ার ঘরনী”-কে উদ্দেশ্য করে লেখা। কবি শুনেছিলেন যে ইহাইয়ার ঘরনী নাকি ইয়াহিয়া খানের বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতিবাদে অনশন করেছিলেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত খবরটি সত্য ছিল না। সুরাসক্ত লম্পট ও দুশ্চরিত্র ইয়াহিয়া খানের বিবাহিত স্ত্রী সম্বন্ধে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। কিন্তু তাঁর খুব কাছের নারী ছিলেন
আকলীম আখতার যিনি আসলে ছিলেন একটি বেশ্যালয়ের চালিকা এবং জেনারেল ইয়াহিয়া খানের রক্ষিতা। ইয়াহিয়া খানের উপরে তাঁর প্রভাব এতটাই ছিল যে তাঁকে পাকিস্তানে
“জেনারেল রাণী” নামে ডাকা হতো। জানা যায় যে বাংলাদেশের গণহত্যার পেছনে এই মহিলার উপদেশ বা উসকানিও কাজ করেছিলো। তিনি নাকি ভারতীয় সেনার থেকে মুক্তি
বাহিনীকেই বেশী ভয় করতেন কারণ তিনি মনে করতেন যে ভারতীয় সেনা তাঁকে কোনোদিন প্রাণে মারবে না। কিন্তু মুক্তি বাহিনী তাঁকে কোনোদিনই মাফ করবে না। ইয়াহিয়া
খানের অপর সঙ্গিনী ছিলেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী নূরজাহান। সূত্র - 1971 War: Order of Massacre in Bangladesh… Story of General Rani and the
Desperate President of Pakistan.
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়,
হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক
উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক
শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের
দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম
দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও
কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক
উপত্যকার কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
মাগো ইহাইয়ার ঘরনী
সাড়ে সাত কোটি বাংলা বাসীর তুমিও এক জননী
মাগো রাষ্ট্রের নায়ক যারা
পিতা বলে গণ্য তারা ।
পিতা হয়ে পুত্র মারা
শুনিনি তার কাহিনী
পিতা করেন বিজ বপন
মা করে গর্ভে ধারণ
কত কষ্ট করলেন মায়ে
মা মোদের সোহাগিনী।
মাগো শুনলাম তুমি অনশনে
বাংলার সন্তানের জন্য
বুঝলেম দশমাস দশদিনের ব্যথায়
হইয়াছ পাগলিনী।
মা গো ভারত মাতার প্রথমা কন্যা
ইন্দিরা গান্ধি নামেতে ধন্যা
এক মুখেতে বলা যায়না
মায়ের সুনামের কাহিনী
তোমরা দোঁহে মাতৃজাতি
হয়ে এবার এক মতি
দয়া কর বাংলার প্রতি
দেশে যেতে দাও মেলানী
মাগো বাড়ি আমার জয় বাংলায়
এখন আশ্রয় দিলেন ভারত মাতায়
নামটি যে হয় অশ্বিনী।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
বাংলাদেশের কবিতা
কবি সেখ জমির আলী। গ্রাম - গুলের হাওর, পোঃ - পাথরখলা, থানা -
কমলগঞ্জ, জিলা - সিলেট, বাংলাদেশ। বরাক উপত্যাকার গান। তিনি
সম্ভবত শরণার্থী হিসেবে এসেছিলেন।
ইয়াহিয়া গদী পাইল করিয়া দিল মারসেললো প্রচার।
কিছুদিন চালায় রাজ্য জোর দেখাইয়া তার।
তারপর দেয় ইলেকশন ২ দিল মন বাংগালী সব মিলিয়া।
এক বাক্যেতে দিল ভোট হিন্দু মুসলমানে নেতা মুজিবুর ২
হইল ঘোর সারা বাংলাদেশে কয়েক দফা
বৈঠক করল জালিম ইয়াইয়া
ভুট্টোর সাথে মুজিব দাবী করে ২
বাংলার তরে ছয় দফা চাইয়া।
না মানিয়া জোর করিয়া নেতা নেয় ধরিয়া
রাত্রি বারোটায় ২
হায়রে হায় কি বলবরে ভাই অবিচারে
হানা দিল জালিম ইয়াইয়া
খায় পড়ে জয়ধ্বনি চক্ষের পানি পড়ে নিরালায়
এমন অন্যায় কাজ সংসারেতে নাই।
বলে কবিকার ন্যায় বিচার আসিবে ফিরিয়া,
এখন কিছু দুঃখের কথা যাইতেছি লিখিয়া।
লাগলো ঘোর যুদ্ধ যুবক বৃদ্ধ সব আগুয়ান
রাস্তা ঘাটে কারফি দিল জালিম টিক্কা খান।
টিক্কা হুকুম করে ২ ঘিরাও করে ঢাকারই শহর।
লাইন ধরিয়া মানুষ মারে হাজারে হাজার।
ছাত্র বন্ধুগণ ২ আগামন ভয় নাইরে তাদের
বি, এ, এম, এর ছাত্র মরে রাস্তারই উপর।
শুনেন দুঃখের কাহিনী ২ চক্ষের পানি বুক ভাসিয়া যায়।
এমন কাণ্ড হইছে না ভাই কোন দুনিয়ায়।
তখন ছাত্রগণ ২ জনগণ পলইতে লাগিল।
কেমনে দড়াবো ভাই অস্ত্র নাই হাতে।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-
এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য ভূমিকা। একদিকে
তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা,
মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে একাত্তরে
সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির
পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
কবিতা আরম্ভ .
..
প্রথমে আল্লা নবী ২ মনে ভাবী লেখা করি সুরু।
নতুন কবিতা লিখি আশীর্ব্বাদ করিও গুরু।
আমি মুর্খ অতি যথারীতি বিদ্যা বুদ্ধি নাই
সাহসে ধরিলাম কলম শাহজালালের দোয়ায়।
এখন লিখে যাই শুনেন ভাই যত বন্ধুগণ।
বাংলাদেশের দুঃখের কাহিনী করে যাই বর্ণন।
শুনেন শোষনকুলদের কথা ২ প্রাণে ব্যথা উঠিল ভাসিয়া
আয়ুব গুণ্ডা পাইয়া তাড়া গদী দিল ছাড়ি
ইয়াহিয়া শালার হাতে ক্ষমতা দিল তাড়াতাড়ি।
লাশ রাস্থার ধারে আছে পড়ে কুকুরে না খায়,
গাড়ী দিয়া নেয় তুলিয়া নদীতে পালায়।
রাখি এইসব কথা চলো হেথা চিটাগাংয়ে যাই
যাইয়া চিটাগাংয়ে ২ জেঠি ভাংগে মারে শ্রমিকগণ।
রেজিমেন্ট করে যুদ্ধ সঙ্গে ছাত্রগণ আরো শ্রমিকগণ ২
করে রণ কি বলবোরে ভাই
কত কত পাঞ্জাবী মরে লেখা যুখা নাই।
পরে সেলিং করে মুক্তির তরে কত মারা যায়।
না পারিয়া যায় পালাইয়া ইন্ডিয়ার মাঝার।
হইল শরণর্থী গভর্মেন্ট খাটি, ইন্ডিয়া সরকার
লালন পালন করে ভাই দেখে অত্যাচার ৷
তখন জালিম সৈন্য ২ করে ধন্য সারা বাংলা দেশে।
থানায় থানায় যাইয়া ভাই শাসন করিয়া আসে।
করে শান্তি কমিটি ২ পিছ কমিটি যত দালারেই দল।
রেজাকা গঠন করে শাসনের কারণ।
হইল রেজাকার ২ অবিচার সারাদেশ জুড়ি
পীছ কমিটির হুকুম মত করে হুড়াহুড়ি
যায় গ্রাম ঘরে ২ লোকের তরে বলে এই কথা
মুক্তিবাহিনী তোমার বাড়ি লুকাইয়াছ কোথায়।
তুমি খাওয়াইছ ২ জায়গা দিছো তোমার নাই রেহাই।
পাঞ্জাবীরও হাতে তরে হাওলা করবো ভাই।
তারা এই বলিয়া দেয় নিয়া পিছ কমিটির হাতে।
পীছ কমিটি রিপোর্ট খাটি লিখে দেয়রে ভাই
একেবারে যমের ঘরে তারে দেয় পাঠাই।
এইরূপ শত শত মরছে কত লেখা যুখা নাই।
পুলিশ ই, পি, আর, ২ আগেকার বাড়িতে আসিল
সবাকারে ধরে নিয়া পাঞ্জাবী মারিল।
কত রাস্তার লোক পাইছে দুখ রেজাকারের দায়
দুরাবস্থা ঘটাইল দারুন ইয়াইয়া খায়।
যত বিহারীরা ২ সি, আই, ডি তারা সকলও হইল
বিনা দোষে কত লোক মারাইয়া দিল।
তারা রিপোর্টার ২ ডেইলি তার রিপোর্ট দিতে হয়।
সত্য মিথ্যা কত কিছু বানাইয়া কয়।
পাঞ্জাবী রিপোর্ট পাইয়া ২ যায় চলিয়া গ্রামের মাঝার
মেয়েলোককে ধরি আনিয়া করে অত্যাচার।
পরে আগুন দিয়া দেয় জালাইয়া সবের বাড়ি ঘর।
কত বেনেট মারিয়া পেট চিরিয়া দেখেরে সন্তান,
যুবকেরে নেয় ধরে রক্তেরই কারণ।
ইনজেকশন মারিয়া রক্ত করে অন্যাসন।
পরে দেয় ছাড়িয়া ঘুরিয়া ফিরিয়া আপন বাড়ি যায়।
দুই চার দিন থাকার পরে ইন্তেকাল ও সে পায়।
এইসব দুঃখের কথা শুনলে ভাইরে বিদুরে পরাণ।
এইরূপ অত্যাচার সয়না আর কখনও না চলে
বাংলাবাসী মরে ভাই স্বাধীনের কারণ।
মরা স্বাধীন করবো ২ না ছাড়িব থাকিতে জীবন
বিনা অস্ত্রে মরি ভাই।
অস্ত্র পাইলে হাতে যারা পলাই গেছে ২
মুক্তি হইছে আজরাইল সমান।
পাঞ্জাবীরে পাইলে তারা করে মিছমার
এইরূপ আট মাস উপবাস, কত কষ্ট পাইল।
এপ্রিল মাসে পচিশ হাজার পাক সৈন্য মারা পড়ল
তারপর কি করিল চলিয়া গেল আপনও জায়গায়।
দুই চারি দিন পরে আবার মাঠে নামিয়া যায়।
নাগলো ঘোর যুদ্ধ নাই সাধ্য পাঞ্জাবী টিকিতে
না পারিয়া বিমান লইয়া লাগিল মারিতে।
বোমা বর্ষণ করে যাইয়া ভাইরে ইন্ডিয়ার মাঝার।
আগরতলা বোমা মারে করিমগঞ্জে যাইয়া
আরও কত স্থান পাক বিমান ঘুরিতে লগিল।
ইণ্ডিয়া নলিশ করে ২ বিশ্বের তরে না পায়রে সন্ধান।
বোমা খাইয়া রাগ হইয়া স্বীকৃতি করে দান।
তারপরে ইন্দিরা গান্ধী বলছে আজি সৈন্যগণের
১৪ দিন দেখাইয়া দেও বোমা মারে কারে।
লাগলো শেষের যুদ্ধ ২ অতি ক্ষুদ্র বিভাগও
করিয়া যত পাক সেনা ২ নাই গনা গুলি খাইয়া মরে।
আটিলারি সেল, কামান ঝর ঝরাইয়া পড়ে।
যত পাঞ্জাবীরা ২ দিশেহারা বিপাকে পড়িয়া
হয় আত্মসমর্পন ২ হইল বন্ধন যত খানের দল।
এখন যত দালালগণ হবে মরণ এই পাপেরই দায়।
বর্ষারই বন্যার পানি হেমন্তে শুকায়
বলছে কবিকার বারে বার সবাই
চরণ ভুল ত্রুটি হইলে ভাই মাফ করবেন আমায়।
আমি বিদ্যাহীন ২ বুদ্ধিহীন না জানি রচনা
বাংলা দেশের লোক সংখ্যা হইয়াছে গণনা।
মরছে যত লোক ২ শুনলে দুখ হিসাব ও
তাহার সামরিক মরছে কত লেখা যুকা নাই।
বেসামরিক ত্রিশ লক্ষ মারা গেছে তাই
এই সব ছাড়ান দিয়া ২ যাই লিখিয়া ইয়াহিয়ারই খবর।
ইয়াহিয়া চাচা হইল বাচা বিষম ও সঙ্কট
ভুট্রো চাচা না পায় দিশা বলে হয়রে হায় আমি কি করিব ২
কোথায় যাইব বুদ্ধি নাইরে আর
বাংলার নেতা সেখ মুজিবকে করিব উদ্দার।
নয়তো উপায় নাই ২ ওহে ভাই হিন্দু মুসলমান
জাতির পিতা আসলেন দেশে মোদের নাই নিদান।
করবো গণতন্ত্র ২ সমাজতন্ত্র, প্রজাতন্ত্র আর
স্থাধীন দেশে থাকবো মরা করিবে বিচার ;
এখন পয়ার থইয়া যাই লিখিয়া গানেরও সুরেতে।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
(উল্লিখিত গানটি এর পরেই দেওয়া রয়েছে)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
মরী হায়রে হায় দুঃখে জীবন জ্বলে
কবি সেখ জমির আলী। গ্রাম - গুলের হাওর, পোঃ - পাথরখলা, থানা - কমলগঞ্জ, জিলা - সিলেট, বাংলাদেশ।
বরাক উপত্যাকার গান। তিনি সম্ভবত শরণার্থী হিসেবে এসেছিলেন।
ইলেকশন করলো ভোট পাইল
লেখা যোকা নাই শতকরা আটানব্বই ভোট
গণনাতে পাই। ঐ তবু হায়রে হারামকুরে রাখতে
রাজ্যপাট। ঠেলা খাইয়া গেছে চলে পেটে নাই
তার ভাত। ঐ আমার খাইয়া আমায় মারে এই
জালিমের বিচার। ইসলামে কি বলিয়া দিছে
করিতে অত্যাচার। ঐ
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ)-
এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই
বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য ভূমিকা। একদিকে
তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় , ত্রাণ ও সেবা,
মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই উপত্যকার
সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে একাত্তরে
সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫ জন কবির
পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বদরপুর,
শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
গান .
..
মরী হায়রে হায় দুঃখে জীবন জ্বলে,
সোনার বাংলা শুষিয়া খাইল পাঞ্জাবীরই দলে
মরী হায়রে হায়।
২৪ বৎসর শোষণ গুণ্ডামি করিয়া
ইসকন্দরে গদী ছাড়ে প্রাণে ভয় পাইয়া। (ঐ)
আয়ূব যাইয়া জয় করিয়া গদীতে বসিল
মার্শেল লর ই আলামত দেশে দেখা দিল। ঐ
পাচ বৎসর গত করল গুণ্ডামি করিয়া
আরো পাচ বৎসর গত করল মৌলিকতন্ত্র দিয়া। ঐ
মেম্বার করে চেয়ারম্যান দেয় স্বার্থেরই লাগিয়া
টাকা দিয়া নেয় কিনিয়া চক্ষুয়ে ধুলি দিয়া। ঐ
ন্যায়বাদী যত লোক বাংলা দেশে ছিল
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজাই দিল। ঐ
মহান নেতা জাতির পিতা মুজিবুর রহমান
এগারো বৎসর কারাদণ্ড গত করি যান। ঐ
এই রূপেতে কত দিন গত হইয়া যায়
লণ্ডন হইতে তিন ব্যারেষ্টার সরকারে পাঠায়। ঐ
ব্যারেষ্টার আসিয়া মোভ করিয়া উদ্ধারও করিল
এইবার জাতির পিতা মাথা তূলা দিল। ঐ
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
ওহে সদাশয় ২ দয়াময় তুমি কর্ণধার
কবি দিপেন্দ্র কুমার দাস। সাকিন - বৈঠাখাল, পোঃ ছলগই, জিলাঃ কাছাড়, অসম। অনুমোদনে
স্বাধীনবাংলা দপ্তর, মুজিবনগর, বাংলা দেশ ত্রাণ কমিটী, করিমগঞ্জ (কাছড়)। বরাক উপত্যকার গান। মুক্তি
সংগ্রামে জয়বাংলার কবিতা।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি,
করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের
সীমান্তবর্তী এই বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় ,
ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই
উপত্যকার সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫
জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ,
হাইলাকান্দি, বদরপুর, শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
কবিতা আরম্ভ .
..
ওহে সদাশয় ২ দয়াময় তুমি কর্ণধার।
অকুল পাথারে তুমি ভরসা আমার।
তুমি ত্রাণকর্তা ২ হে বিধাতা সকল আশার স্থল।
তোমা ছাড়া এ ধরাতে সকল বিফল।
আমি মুঢ়মতি ২ এই মিনতি মনেতে বাসনা
কবিতা লিখিতে দয়াল করেছি কল্পনা।
পুরাও মনের আশা ২ পাই দিশা ভাবি নিরন্তর।
শাসকের পীড়নে জ্বালা বাড়িল বিস্তর।
শুনেন দুঃখের কথা ২ পাক বার্ত্তা কলম নাই চলে।
বাংলাদেশে জন্ম নিয়া এ দুঃখ কপালে।
যত ক্রেশ যাতনা ২ বন্ধুগণা লিখার নাই শেষ।
শাসন নামে শোষণ করে সোনার বাংলা দেশ।
হায়রে বাংলাদেশ ২ সোনার দেশ রক্ষা করে কে।
রক্ষণকানী ভক্ষণ করে মরি সেই দুঃখে।
চলছে শাসনতন্ত্র ২ গণতন্ত্র দুই দেশে মিলিয়া।
যুক্তফ্রন্টতন্ত্র হইল বাংগালীর লাগিয়া ;
শাসন দুরাবস্থা ২ নাই আস্থা বাংগালীর উপরে।
সামরিক আইন জারি করল বাংলা মায়ের তরে।
তখন ইস্কন্দর মির্জা ২ নিল সোজা গদি দখল করে।
তাহা দেখি ছি, এন. ছি. মহা জ্বালায় মরে।
তারপর আয়ুব খান ২ পেরেসান ভাবে নিরবধি।
রাতের বেলা জোর করিয়া নিল শাহী গদি।
কায়েম জঙ্গীশাসন ২ জনগন শোকসাগরে ভাসে।
প্রেসিডেন্ট সর্ব্বময় গনতন্ত্র বিনাশে।
এবার চললো শাসন ২ দিয়া মন শুনেন সব শ্রোতা।
প্রেসিডেন্ট সর্ব্বেসর্ব্বা নাই নাই অন্য কথা।
গত দশ বছরে ২ শাসন করে আয়ুব মোনায়েম।
ইচ্ছামত রাজ তক্ত করেছিল কায়েম।
নেয় শোষন করে ২ পাক বাংলারে সম্পদ আরো যত।
নিরাপত্যে গড়ে নিয়া কলকারবানা কত।
করছে সর্ব্বহারা ২ বাঙ্গালীরা অন্নাভাবে মরে।
দেশের মধ্যে হাহাকার দেখেনা নজরে।
থাকে মহাসুখে ২ হাসি মুখে কত ভাবনা নেয়।
মরুভূমে ক্ষেতের জমি বানাইয়া দেয়।
তিনটি রাজধানী ২ গড়লো জানি বহু টাকা দিয়া
সোনার বাংলা শুন্য রাখে কি দোষও পাইয়া।
কত ব্যবধান ২ চাউলের মণ বিশ টাকা হয়।
সোনার বাংলায় পঞ্চাশ টাকা হয় যে বিক্রয়।
পশ্চিম পাকিস্থানে ২ সোনা কিনে একশ ত্রিশে ভরি।
এ দেশেতে একশ আশি গেলাম প্রচার করি।
তেল পাঁচ টাকা ২ জানেন পাকা প্রতি সের হয়।
সেই দেশে ভাই আড়াই টাকা জানাইলাম নিশ্চয়।
বাংলার ঘরে ঘরে ২ উপাস করে কাল যে কাটায়।
তাদের দেশে মহানন্দে বিরাণী ভাত খায়।
কত দুঃখের কথা ২ শুনেন শ্রুতা কত ব্যবধান।
সব বিষয়ে গরমিল কেমনে বাঁচে প্রাণ।
আছে সবার জানা ২ চন্দ্রঘোনা কাগজ তৈরি হয়।
দেশের জিনিষ সস্তায় পাইনা দুঃখেরও বিষয়।
সৈন্য বিভাগেতে ২ চাকুরীতে দশ ভাগ ভাই নেয়।
তাতে নিপুণ ব্যক্তির পদোন্নতি বন্ধ করে দেয়।
এইরূপ সব বিভাগে ২ পাই জানিতে দাবাইয়া রাখে।
ন্যায় কথা বললে তারা বিষম ভাবে রুখে।
যারা ন্যায়বাদী ২ বাংলা দরদি খাটে অবিরত।
টের পাইয়া আয়ুব খান করতে চায় বিরত।
বলে সব নেতাকে ২ দাও লিখে জীবনের তরে।
রাজনীতি খেলিবেনা দেশেরও মাঝারে।
শুনে এই কথা ২ কতেক নেতা ইস্তিফা যে দিল।
বাকী কতেক তাহার ভয়ে পলাইয়া গেল।
এই সময় মুজিবুর ২ বিষম জোর বাধা দিয়া বলে।
যাহা খুসী তাহা কর যাবনা কবলে।
তখন মুজিবুর ২ বাংলায় মশহুর আওয়ামীলীগের নেতা।
কুড়িঘামের জনসভায় করিলেন বক্তৃতা।
নানা প্রশ্ন করে ২ সভার তরে ন্যায় পীড়ন কথা।
বাংগালীদের পরম বন্ধু হেট করিল মাথা।
বাংলার সুস্তান ২ মহা প্রাণ জাগিয়া উঠিল।
হাজার ফণী রূপ লাবণী ফটা মেলি দিল।
বলে সেক মুজিবুর ২ বন্ধুবর বাংলা ভাষীযারা।
শোষণ করেছে বাংলা মাকে করছে সর্ব্বহারা।
বাইশটি পরিবার ২ জানেন এবার শোষক বণিক গোষ্ঠী।
জুঁকের মতো চুষে নিলো তবুনা হয় তুষ্টি।
তাইতো মুজিবুরে ২ দাবী করে আয়ুব খানের তরে
ন্যায্য কথা বলতে গিয়া মহা দুঃখ করে।
শুনেন বন্ধুগণ ২ আজব রচন আগরতলার মামলা।
ছলনা করিয়া সাজায় ষড়যন্ত্র যন্ত্রে ডালা।
রাখিয়া জেলখানায় ২ শাসন চালায় আয়ুব মোনায়েমখানে।
অশেষ যাতনা দিল সেক সাহেবের প্রাণে।
তাহা শুনলে পরে ২ প্রাণ বিদরে উঠে শিহরিয়া।
খোদার দরগায় দোয়া কর তাহার লাগিয়া।
তবু সেক কয় ২ ছাড়বনায় প্রাণ থাকতে কায়ায়।
সারা জীবন সংগ্রাম করব বাংলা মায়ের দায়।
কত লোভ দেখাইল ২ না পারিল করতে তারে বশ।
ছদ্দবেশী বংগালীরা ঘুরে পাগল বেশ।
করে আহাকারী ২ দুঃখে মরি কন্দোল স্থানে স্থানে।
শাসন ছিন্ন করতে গেল জমিরা ময়দানে।
তুলি মহাধ্বনি ২ মুক্তি বাণী সারা দেশ জুড়িয়া।
হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী উঠে মাতিয়া।
এদিকে সভাপতি ২ নাই গতি কারফিউ দিল করে।
ছাত্র-ছাত্রী অমান্ত (অমান্য) করি শত শত মরে।
তবু ছাড়লোনা ভাই ২ প্রকাশি যাই রেসকোর্স ময়দানে।
লাখ লাখ জনগণে সেকের মুক্তি আনে।
তখন আয়ুবখান ২ মোনায়েমখান পরামর্শ করি।
ইয়াহিয়াকে বসাইয়া ছাড়লো সোনার পুরী।
১৯৭০ সনে ২ ইয়াহিয়াখানে গণভোট দিল।
এক চেটিয়া আওয়ামী লীগ পাশ করিয়া গেল।
হইলেন মুজিব নেতা ২ শুনেন শ্রুতা দলের প্রধান হয়।
ছয় দফাতে বাংলার দাবী উজ্জল হইয়া রয়।
দেখ বঙ্গবন্ধু ২ তারার সিন্ধু যত নীরব প্রাণ।
জনগণের মুখে মুখে জয় বাংলার গান।
কত আশার আলোক ২ পাইয়া লোক জাগরিত রয়।
প্রাণে প্রাণে মহানন্দ সঞ্চারিত হয়।
যেন মুক্ত তারা ২ সর্ব্বহারা পাকবাংগালী ভাই।
মধুর কণ্ঠে জয় বাংলার গান শুনিবার পাই।
গড়বে শাসনতন্ত্র ২ গণতন্ত্র দুই দেশে মিলিয়া।
চলতি সনের ৩রা মার্চ্চ যাই যে লিখিয়া।
স্থান ঢাকার পরে ২ প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট ভবনে।
ভুট্টো সাহেব তা শুনিয়া ভাবে মনে মনে।
সে তো কুটনীতিবিদ ২ সবার বিদিত কুমন্ত্রণা করে।
বাংগালীরা গদী নিবে এই হিংসায় মরে।
বাংলার ভাগ্যাকাশে ২ রাহু আশে গ্রাসিবারে চায়।
শোষনকারী শয়তান দল সবাই মিলে যায়।
বাংলার আধিপত্য ২ নায়কত্ব চায় না যে তারা।
দমাইয়া রাখতে চায় সর্ব্বহারা যারা।
দিল ধমক বাণী ২ ভুট্ট আলী ইয়াহিয়া খানে।
খাইবার হতে ইসলামাব করিব শ্মাশন।
তাদের ছল চাতুরী ২ বুঝা ভারী যেমন বোদ শিয়াল।
বাংলার টাইগার পাইলে তারে করিবে নাকাল।
এদিকে ইয়াহিয়া খান ২ রাষ্ট্র প্রধান করিলেন ঘোষনা।
৩রা মার্চ বাতিল গন্মে জানান সব্বর্জনা।
জানায় পঁচিশ তারিখ ২ বসবে ঠিক জাতিয় সভার।
মতানৈক্য ঘটছে এবার নেতাদের মাঝার।
নেয়না মুজিবের মত ২ কুমতলব হইয়া যে তৎপর।
সামরিক শ্বাসক দল বাংলারও উপর।
হয়রে মুজিব নেতা ২ মনের কথা দেশকে জানায়।
অসহযোগ আন্দোলন করে যে সবায়।
করল অসহযোগ ২ পায়না সুযোগ শোষকগণ যারা।
ঘরে ঘরে রব উঠে যে হয়ে মাতোয়ারা।
হবে বাংলার জয় ২ সুনিশ্চয় স্বাধীন বাংলা দেশ।
হাজার হাজার নর নারী হইয়া সমাবেশ।
যত সরকারী ২ বেসরকারী কর্ম্মচারী ভাইয়া।
চাষ-ভূষা শ্রমিক সবাই উঠিল গর্জিয়া।
এদিকে মুজিবুরে ২ সকাতএও ডাকেন সব নেতা।
জাতীয় সভায় যোগ দিবেন না এই মোর কথা।
তাহার বচন শুনি ২ ভাসানী আর নেতা সহয়োগে।
জাতীয় সভায় যোগ দিবেনা ইন্দ্রসম বুঝে।
হয়ে একমত ২ জন স্রোত শহর বন্দরে বহে।
রণ রঙে কেলি করে জ্বলায় অন্তর দহে।
জানে ভাব ধারা ২ কাজ সারা ইয়াহিয়াকে পাঠায়।
দশই মার্চ্চ কর্ণনার আসিলেন ঢাকায়।
করতে আলাপন ২ নেতাগন আওয়ামী লীগের মত।
বারে বারে বাক্ বিতন্ডা করলেন আরও কত।
তবু হয়না সিদ্ধি ২ কুবুদ্ধি আলী ২ আসেন চলি রাজধানী ঢাকায়।
সেতো মোদের প্রধান শত্রু মহা অন্তরায়।
তারপর সবাই সনে ২ আলপনে না পাইল আশা।
বাংলা ভুমি শ্মশান করবে ধরণ করে নেশা।
গেল পালাইয়া ২ ইয়াহিয়া রাত্র ২ টার পর।
বাহাত্তর ঘন্টা কারফিউ দিল সাঁঝ সকাল ভোর।
নিয়া এই আশা ২ করে ভরসা কারফিউর তরে।
সায়েস্তা এবার করে দিব বাংগালীকে মেরে।
লাগলো হুলস্থুল ২ গন্ডোগোল সারাদেশ জুড়িয়া।
নির্দোষী বাংগালীকে মারে বুলেট দিয়া।
মারে মেসিন গানে ২ ব্রেইন গানে যুবা বৃদ্ধ যত।
গ্রামে গ্রামে গৃহ জ্বলায় বলব আরও কত।
হয়ে গৃহহীন ২ আশ্রয় হীন ঘুওয়ে অবিরত।
জঙ্গী প্লেনে মারিতেছে হইয়া উন্মাত্ত।
মারে টেস্ক চালাইয়া ২ নিষ্ঠর হিয়া বে-সামরিক লোকে।
শত শত শিশু মারে রাখিয়া মায়ের বুকে।
করে পুত্র হারা ২ মাতৃহারা হিসাব নিকাশ নাই।
শত শত জড় করে পুড়িয়া করে ছাই।
করলো পুড়ামাটী ২ পরিপাটী ধুঁয়ায় দেখা যায়।
থরে থরে ধুম্ররাশি অম্বর খানি ছায়।
এদিকে বাংলার মাটী ২ সোনা খাঁটী রক্তে লালে লাল।
হাট ঘাট নদ নদী আর যত খাল।
বহে শোণিত ধারা ২ প্রোত ধারা মন্দ মন্দ যায়।
কাক শকুনী শিয়াল কুকুর মরা লাশ খায়।
কত রোদে শুকায় ২ মেঘে ভিজায় হিসাব নিকাশ নায়।
বাংলার মাণিক ঝরে পড়ছে খুঁজিয়া না পাই।
এ সব শুনলে পরে ২ অশ্রু বারী ২ দুঃখে মরি পশু পাখী যত।
আকাশ বাতাস গ্রহতারা কাঁদছে অবিরত।
ওহে বিশ্ববাসী ২ দেখছে আসি সব লীলা খেলা।
জঙ্গী শাসক পরছে এবার নরমুন্ডের মালা।
তারা ইসলাম ধর্মী ২ সবার জার্নি কোরাণের দোহাই দেয়।
মুসলিম হইয়া মুসলিম মাওয়ে কোন কেতাবে রয়।
দেখে ই, পি, আর ২ সমাচার চিন্তে ঝারে ঝারে।
বাংলা ভূমি জন শুন্ন হইবে এবার।
দেখে তাদেও গতি ২ ক্রোধে অতি মারতে শুরু করে।
এক লাইনে দাঁড় করাইয়া শত শত মারে।
মারে বেঙ্গল রেজিমেন্টে ২ কেন্টনমেন্টে অস্ত্র ছাড়া করে।
করুণ দৃশ্য দেখে ভাই গাছের পাতা ঝরে।
হইয়া নিরুপায় ২ হায়রে হায় পালাইয়া যায়।
মেয়ে ছেলে মারে তাদের রাখিয়া বাসায়।
তারা জড় হইয়া ২ শপথ নিয়া লড়িতে লাগিল।
আছার মুজাহিদ ছাত্রগনা তাতে যোগ দিল।
করে মরন পন ২ করবে বারণ স্বীয় মাতৃভূমি।
ঢাকার বুকে লড়াই করে বাংলার রাজধানী।
চললো মহা সংগ্রাম ২ চট্টগ্রাম সিলেট ও কুমিল্লায়।
পূর্ব্ব বাংলার নানা স্থানে উনিশটা জেলায়।
এবার এ পর্যন্ত ২ করি ক্ষান্ত ইতির রেখা টানি।
পয়ার সুরে শুনুন এবার বিভৎস কাহিনী।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
উল্লিখিত পয়ারটি পাশেই দেওয়া রয়েছে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
পাক শাসকদের অত্যাচার বলিব হায় হায়
কবি দিপেন্দ্র কুমার দাস। সাকিন - বৈঠাখাল, পোঃ ছলগই, জিলাঃ কাছাড়, অসম। অনুমোদনে স্বাধীনবাংলা দপ্তর, মুজিবনগর, বাংলা
দেশ ত্রাণ কমিটী, করিমগঞ্জ (কাছড়)। বরাক উপত্যকার গান। মুক্তি সংগ্রামে জয়বাংলার কবিতা।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি,
করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের
সীমান্তবর্তী এই বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় ,
ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই
উপত্যকার সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫
জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ,
হাইলাকান্দি, বদরপুর, শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
॥ পয়ার॥.
পাক শাসকদের অত্যাচার বলিব হায় হায়।
সোনার বাংলা শ্মশ্বান হইয়া যায়।
শুনেন শুনেন ভাই হিন্দু মুসলমান্
হিংসা বিদ্বেষ পাশরিয়া হওরে ভাই ম্লান।
বাংলার তরে বরণ করছে কত মহাপ্রাণ।
স্থানে স্থানে সংগ্রাম করেছে হইয়া আগুয়ান।
পাক সেনার জুলুম দেখে হাতিয়ার ধরছে সেনা ভাইরায়। ঐ।
দেশের যত শহর, বন্দর, গঞ্জ আর নগর।
মাওয়ে বিজ্ঞ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর প্রফেসর।
শিল্পি, সাহিত্যিক, লেখক, গায়ক, আলিম উলেমা যত।
মসজীদ, মন্দির, মঠ, ধ্বংসে বলব আরো কত।
নির্ব্বিবাদে ধ্বংস করে যথায় তথায় আগুন লাগায়।
ঐ মারে টেষ্ক চালাইয়া, রকেট দিয়া চট্টগ্রাম ও ঢাকায়।
লাখে লাখে মরা লাশ মেঘে ভিজে রৌদ্রেতে শুকায়।
দাহন নাহি করে ভাইরে যেখানে সেখানে রয়।
করুণ দৃশ্য দেখলে পরে হৃদয় চৌচির হয়।
কোন ধর্ম্মমতে পাও জানিতে মরা শিয়াল কুকুরে টেনে খায়। ঐ।
এস হে তরুন নওজোয়ান হয়ে তোরা আগুয়ান।
অস্ত্র ধর সংগ্রাম কর বাংলা মায়ের বীর সন্তান।
বিলম্বেতে ধৈর্য ধর শৌর্য্যে বীর্যে হও বলিয়ান।
মুক্তি সেনায় যোগদান কর বাংলা দেশের আহবান।
শিক্ষ কেন্দ্র খোলা আছে বাংলা দেশের নানা যায়গায়।
তোরা দেশের বল ভরসা তোরা আশার স্থল।
দীক্ষা নিয়া শিক্ষা লও গড় আজব রণকৌশল।
সাড়ে সাত কোটি অধিবাসী হতে পারি দীন।
মোদের কাছে পাক সেনা হয়ে যাবে ক্ষীন।
বাধা বিপদ দূর করিয়া ঝাপিয়া পড় শক্র সেনায়। ঐ।
অধম লেখকেরই এই মিনতি হইওনা ভাই পেরেসান।
শোনিতে দানে গড়ব প্রাচীর বিলায়ে শত শত প্রাণ।
হার মানিবে নরপিশাচ বিশ্ব জানবে মোদের দান।
ত্রান করিব বাঙলা মাকে আছি যত ম্রিয়মাণ।
ভুল ত্রুটি মাফ করিবেন এই আবেদন রইল সভায়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
মাঝি চইলা যাওরে অকুল পাথারের কবি দিপেন্দ্র কুমার দাস। সাকিন -
বৈঠাখাল, পোঃ ছলগই, জিলাঃ কাছাড়, অসম। অনুমোদনে স্বাধীনবাংলা দপ্তর, মুজিবনগর,
বাংলা দেশ ত্রাণ কমিটী, করিমগঞ্জ (কাছড়)। বরাক উপত্যকার গান। মুক্তি সংগ্রামে জয়বাংলার
কবিতা।
ভারতের দক্ষিণ আসামের তিনটি জেলা (কাছাড়, হাইলাকান্দি,
করিমগঞ্জ)-এর সাধারণ অভিধা বরাক উপত্যকা। বাংলাদেশের
সীমান্তবর্তী এই বরাক উপত্যকা একাত্তরে পালন করেছিল এক অনন্য
ভূমিকা। একদিকে তারা দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় ,
ত্রাণ ও সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছিল প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র। অন্যদিকে এই
উপত্যকার সাধারণ মানুষজন গানে-কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে
একাত্তরে সহমর্মিতার এক অনবদ্য ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল। প্রায় ১৫
জন কবির পঞ্চাশটি কবিতা ও কবিগান। একাত্তরে করিমগঞ্জ,
হাইলাকান্দি, বদরপুর, শিলচরের জনজীবনকে মুখরিত করেছিল।
উৎস - চৌধুরী শহীদ কাদের সম্পাদিত "মুক্তিযুদ্ধে বরাক উপত্যকার
কবিতা ও গান"। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ।
॥ গান-সুর ভাটিয়ালী॥
মাঝি চইলা যাওরে অকুল পাথারের মাঝে সোনার বাংলার নাও।
ওরে মাঝি ছয়দফার ও নৌকাখানি এগার দফায় ছইয়া।
বাংগালীর ও মহাসম্পদ চলছে ধাইয়া ধাইয়া।
কাল মেঘে সাজ করিয়াছে শঙ্কা বুঝা যায়।
দৃঢ় মুঠে ধরিও কান্ডার সাত কোটি মাল্লায়। ধু।
শত শত ঢেউএর দোলায় অবিরত দোলে।
শোক সাগরের বিশাল পাড়ি, কেমনে যাব চলে।
সাবধানে চালাইও তরী জয় নিশান উড়াইয়া।
দিগেন বলে হাল ধরিও জয় বাংলার গান গাইয়া। ওরে মাঝি।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
রক্তচোখের আগুন মেখে ঝলসে যাওয়া আমার বছরগুলো
আজকে যখন হাতের মুঠোয় কণ্ঠনালীর খুন পিয়াসী ছুরি
কাজ কি তবে আগলে রেখে বুকের কাছে কেউটে সাপের ঝাপি
আমার হাতেই নিলাম আমার নির্ভরতার চাবি
তুমি আমার আকাশ থেকে সরাও তোমার ছায়া
তুমি বাংলা ছাড়ো
অনেক মাপের অনেক জুতোর দামে তোমার হাতে
দিয়েছি ফুল হৃদয় সুরভিত
সে ফুল খুঁজে পায়নি তোমার চিত্তরসের ছোঁয়া
পেয়েছে শুধু কঠিন জুতোর তলা
আজকে যখন তাদের স্মৃতি অসন্মানের বিষে
তিক্ত প্রানে শ্বাপদ নখের জ্বালা
কাজ কি চোখের প্রসন্নতায় লুকিয়ে রেখে প্রেতের অট্টহাসি
আমার কাঁধেই নিলাম তুলে আমার যত বোঝা
তুমি আমার বাতাস থেকে মুছো তোমার ধূলো
তুমি বাংলা ছাড়ো
একাগ্রতার স্বপ্ন বিনিময়ে মেঘ চেয়েছি
ভিজিয়ে নিতে যখন পোড়া মাটি
বারে বারেই তোমার খরা আমার খেতে বসিয়ে গেছে ঘাঁটি
আমার প্রীতি তোমার প্রতারনা
যোগ বিয়োগে মিলিয়ে
নিলে তোমার লাভের জটিল অঙ্কগুলো
আমার কেবল হাড় জুড়ালো হতাশ শ্বাসের ধূলো
আজকে যখন খুঁড়তে গিয়ে নিজের কবরখানা
আপন খুলির কোদাল দেখে সর্বনাশা বজ্র দিয়ে গড়া
কাজ কি দ্বিধায় বিষন্নতায় বন্দী রেখে ঘৃনার অগ্নিগিরি
আমার বুকেই ফিরিয়ে নেব ক্ষীপ্ত বাঘের থাবা
তুমি আমার জল স্থলের মাদুর থেকে নামো
তুমি বাংলা ছাড়ো
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
কতোদিন কোথাও ফোটে না ফুল, দেখি শুধু
অস্ত্রের উল্লাস
দেখি মার্চপাস্ট, লেফট রাইট, কুচকাওয়াজ ;
স্বর্ণচাঁপার বদলে দেখি মাথা উঁচু করে আছে হেলমেট
ফুলের কুঁড়ির কোনো চিহ্ন নেই, গাছের আড়ালে থেকে
উঁকি দেয় চকচকে নল,
যেখানে ফুটতো ঠিক জুঁই, বেলি, রঙিন গোলাপ
এখন সেখানে দেখি শোভা পাচ্ছে বারুদ ও বুলেট ;
প্রকৃতই ফুলের দুর্ভিক্ষে আজ বিরান এদেশ
কোথাও সামান্য কোনো সবুজ অঞ্চল নেই, খাদ্য নেই,
শুধু কংক্রিট, পাথর আর ভয়ল আগুন
এখানে কারফিউ-ঘেরা রাতে নিষিদ্ধ পূর্ণিমা ;
আজ গানের বদলে মুহুর্মুহু মেশিনগানের শব্দ-
সারাক্ষণ বিউগল, সাইরেন আর বিকট হুইসিল
বুঝি কোথাও ফুলের কোনো অস্তিত্বই নেই।
ফুলের শরীর ভেদ করে জিরাফের মতো আজ
অস্ত্রই বাগয়েছে গ্রীবা
পাতার প্রতীক তাই ভুলে গেছি দেখে দেখে অস্ত্রের মডেল!
খেলনার দোকানগুলিতে একটিও গিটার, পুতুল কিংবা
ফুল পাখি নেই
শিশুদের জন্য শো-কেসে সাজানো শুধু অস্ত্রের সঞ্চার
বাইরেবাতাস শ্বাসদুদ্ধকর, রাজপথে সারি সারি বুট,
সব কিছু চেয়ে আছে অস্ত্রেরই বিশাল ডালপালা ;
কোথাও ফোটে না ফূল, কোথাও শুনি না আর
হৃদয়ের ভাষা,
কেবল তাকিয়ে দেখি মার্চপাস্ট, কুচকাওয়াজ, লেফট রাইট
এই রক্তাক্ত মাটিতে আর ফুল কই, শুধু অস্ত্রের উল্লাস।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
আমি যখন মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি তখন তেরোশত নদী
গেয়ে ওঠে আমার সোনার বাংলা,
সহস্র পাখির কণ্ঠে জয় বাংলা ধ্বনিত হতে থাকে ;
আমি যখন মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি তখন সাতই মার্চ
জেগে ওঠে,
শেখ মুজিব ঘোষণা করেন স্বাধীনতা।
আমি যখন মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি তখন পর্ণকুটিরে
জ্বলে ওঠে আলোকশিখা,
শহীদজননীর প্রাণ গর্বে ভরে ওঠে, চোখের জল মুছে ফেলে,
তখন বাংলার সবুজ প্রান্তর শস্যে ভরে যায়, পদ্মায় চলে
ইলিশের ঝাঁক,
তখন লক্ষ লক্ষ রক্তগোলাপ ফুটে ওঠে বাগানে, আকাশে হয় নতুন সূর্যোদয়,
হৃদয়ে-হৃদয়ে জেগে ওঠে বাংলাদেশ, আমার সোনার বাংলা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
তোমরা কি জানো এ শহর কেন হঠাৎ এমন
মৌনমিছিলে হয়ে ওঠে ভারী, অশ্রুসিক্ত? কেন
বয়ে যায় শোকার্ত মেঘ আর থোকা থোকা শিশিরবিন্দু
পথে কেন এতো কৃষ্ণচূড়ার গাঢ় সমাবেশ ; আমি জানি এতো
মেঘ নয়, নয় শীতের শিশির ; প্রিয়হারা এ যে
একুশে রাজপথ জুড়ে এতো রঙিন আল্পনা আঁকা
তোমরা কি জানো সে তো নয় কোনো রঙ ও তুলির ব্যঞ্জনা কিছু
এই আল্পনা, পথের শিল্প শহীদেরই তাজা রক্তের রঙ মাখা!
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
একজন মুক্তিযোদ্ধার ডায়েরিতে কবি মহাদেব সাহা। আবৃত্তি শিল্পী সারোয়ার আলম দীপ এর কণ্ঠে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রচিত অথবা প্রচারিত কবিতা। ভিডিওটি, সৌজন্যে Sarower Deep YouTube Channel । কবিতাটি শুনে লেখা।
একজন মুক্তিযোদ্ধার ডায়েরি খুলে
আমি এখনো শুনতে পাই জয় বাংলা ধ্বনি
এখনও দেখতে পাই রমনার মাঠে জনতার উত্তাল সমুদ্র
ডায়েরির পাতায় এখনও পদ্মা-মেঘনা ধীরে বহে যায়
এখনও প্রত্যহ হয় সূর্যোদয় জ্বলে হৃদয়ের আলো
একজন মুক্তিযোদ্ধার ডায়েরিতে আমি এখনো প্রত্যহ দেখি
রূপসী বাংলার মুখ
দেখি তার আম জাম কাঁঠালের সারি
সেই ডায়েরির পাতায় পাতায় গান করে
এ দেশের গায়ক পাখিরা
আমি বুক ভরে গন্ধ নিই আউস খেতের
এই মলিন ডায়েরির পাতা জুড়ে ফুটে আছে সুরভিত ফুল
ফুটে আছে আকাশের তারা
একজন মুক্তিযোদ্ধার এই ডায়েরিতে আমি
বঙ্গোপোসাগরের কলধ্বনি শুনি
শুনি অপূর্ব লালিত্যময় কণ্ঠে গাওয়া
আমার সোনার বাংলা
একজন মুক্তিযোদ্ধার সমগ্র ডায়েরি জুড়ে আমি লেখা দেখি
শেখ মুজিবের নাম
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
‘হল্ট’ বলে হুঙ্কার ছেড়েই যম সামনে খাড়া।
লোমশ কর্কশ হাত ঢুকে গেলো প্যান্টের পকেটে
কিছু পয়সা দুটি ফুল সুতোর বান্ডিল অতঃপর
ভারী হাতে কোমর জরীপ। কিছু নেই।
কুছ নেহি? বোমাওমা? সাচ্ সাচ্ বাতাও, নেহিত…
দেখুন দেখুন
নিজেই নিজের হাতে শার্টের প্যান্টের সব পকেট ওল্টায়
বলে দেখুন দেখুন।
ছেলেটির পাতলা ঠোঁটে হাসির প্রলেপ না কি?
চাপা কিছু কৌতুক? আহারে সরল কিশোর,
তার হয়তো-বা চেনা নেই
মৃত্যুর চেহারা!
‘যাও’ বলে আবার গর্জন আর ছেলেটি অটল
ধীর পায়ে চলে গেলো আপন গন্তব্যে
তার গন্তব্য কোথায়?
তার গন্তব্য কোথায়? তার ভয় নেই?
ভয় নেই। দুর্জনের হাত
বারবার পকেট ওল্টাবে
রাখবে কোমরে দানব থাবা অতঃপর
অক্ষম আক্রোশে গর্জাবে এবং
ফিরে যাবে দুর্বোধ্য তিমিরে।
ফিরে যাবে
কেননা ছেলেটি
সেই কিশোর সৈনিক
সেই দেবশ্রী কিশোর
রাখেনি তেমন কোনো অস্ত্র সঙ্গে। তার
বুকের গভীরে
মহত্তম সেই অস্ত্র যার
দানবের স্পর্শযোগ্য অবয়ব নেই কোনো
ধ্বনি যার অহরহ প্রাণে তার বাজায় দুন্দুভি:
স্বাধীনতা স্বাধীনতা স্বাধীনতা!
আর সেই প্রিয়তম মহত্তম অস্ত্র বুকে
লুকিয়ে সন্তর্পণে ধীর পায়ে
অনন্য কিশোর তার
সঠিক গন্তব্যে যায় হেঁটে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
আমার নিঃস্বাসের নাম স্বাধীনতা
আমার বিশ্বাসের নখর এখন ক্রোধের দারুণ রঙে রাঙানো
দুঃস্বপ্নের কাল বন্দী আমার ভালোবাসা
এখন কেবলই এক অহরহ চিৎকার
হত্যা কর হত্যা কর হত্যা কর
হেনতম বিভীষিকার কালো দাহে মোড়া
বাংলার গর্জমান বাতাস
এখন আর কিচ্ছু বোঝে না
এখন সকল শব্দের একটাই মাত্র আওয়াজ
অবিনাশী হুংকার
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
এখন সকল শব্দই কবি হাসান হাফিজুর রহমান। আবৃত্তি শিল্পী কাজী বাটার কণ্ঠে। মুক্তিযুদ্ধের সময় রচিত অথবা
প্রচারিত কবিতা। ভিডিওটি সৌজন্যে Quazi Bata YouTube Channel । কবিতাটি শুনে লেখা।
জেলের সেলে বন্দী ছিলো
মৃতের স্তুপের অন্ধকারে বন্দী ছিলো
বন্দী ছিলো বন্ধ দুয়ার
ভয় থমথম ঘরের মাঝে।
শহর জুড়ে কারফ্যু তার কাফন ছড়ায়
সেই কাফনে বন্দী ছিলো।
ওরা তখন মন্ত্রপুত মশাল নিয়ে নামলো পথে
মৃতের স্তুপে ফোটালো ফুল
নতুন প্রাণে গাঁথলো নতুন দীপাবলি।
আগুন জ্বলে। জ্বলতে থাকে পাশব আঁধার
গ্রাম নগরে রাত পেরিয়ে, রাত পেরিয়ে
রাত পেরিয়ে
সূর্য নামে।
তখন দেখি
আলোর মুকুট মাথায় পরে
ভুবন জুড়ে বাইরে এলো বন্দিনী মা বাংলা আমার
স্বদেশ আমার।
এবার মোছাবো মুখ তোমার আপন পতাকায়
হাজার বছরের বেদনা থেকে জন্ম নিলো
রক্তিম সূর্যের অধিকারী যে শ্যামকান্ত ফুল
নিঃশঙ্ক হাওয়ায় আঁচড়ে দুঃখ ভুলানিয়া গান গায়
মুছাবো তোমার মুখ আজ সেই গাঢ় পতাকায়
দূর পদাতিক যত যুগে যুগে
উদ্ধত পায়ের দাগ রেখে গেছে কোমল কলির ত্বকে
বিভিন্ন মুখের কোটি অশ্বারোহী এসে
খুরে খুরে ক্ষতময় করে গেছে লহনিয়া মাটি
লালসার লালা মাখা ক্রোধে এবং বন্দুক কামান কত
পশুর গর্জনে চিরেছে আকাশ পরিপাটি
বিদীর্ণ বুক নীলবর্ণ হয়ে গেছো তুমি বাংলা ভূমি
নত হয়ে গেছো মুখ ক্ষোভে ও লজ্জায়
এবার মোছাবো সেই মুখ শোকাগ্র হত
তোমার আপন পতাকায়
কে আসে সঙ্গে?
দেখো চেয়ে আজ
কারখানার রাজা, লাঙলের নাবিক,
উত্তাল ঢেউয়ের শাসক, উদ্ধত বৈঠা হাতে মাল্লা দল
এবং কামার কুমোর তাঁতী
এরা তো সবাই সেই মেহনতের প্রভু
আনুগত্যের শাণিত রক্তের ঢল বয়ে বয়ে যায়
তোমার শিরাময় সারা পথে পথে
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
তোমার আপন পতাকায় কবি হাসান হাফিজুর রহমান। আবৃত্তি শিল্পী গোলাম শোবাহানী কুরেশি এর কণ্ঠে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রচিত অথবা প্রচারিত কবিতা। ভিডিওটি সৌজন্যে Dipro Quraishy YouTube Channel । কবিতাটি শুনে লেখা।
দু হাতে সরায় দ্রুত শহরের জটিল পঙ্কিল মধ্যবিত্ত অনড় আবিল
একে একে সকলকে নামায়ে মিছিলে
ডাকে আপামর ভাইবোন
একসাথে মিলে নিশ্ছিদ্র বিশাল শিলাদ্রির পাহাড় বানায়
সেই কোটি হাত এক হয়ে মোছাবে তোমার মুখ
তোমার আপন পতাকায়
সমস্ত শূন্যতায় আজ বিশুদ্ধ বাতাস বয়ে যায়
আকাশ চাঁদোয়া জলে রাহু মুক্ত ঘন নীলিমায়
অকলুষ বাংলা ভূমি হয়ে ওঠে রাতারাতি আদিগন্ত তীর্থ ভূমি
অন্তহীন মিছিলের দেশ
সারি সারি মানুষের আকারে হলে দ্যূতিময়ী
সমস্ত স্বদেশ আজ রাঙা রাজপথে
দেবালোক হয়ে ফোটে প্রাঞ্জল বিপ্লব
সাত কোটি মুখ হাসে মৃত্যুর রঙীন তীর হাতে নিয়ে
শ্রেণীবদ্ধ এই ভীড়ে সকলেই সবার আগে
একবার শত্রুকে শেষ দেখা দেখে নিতে চায়
দুঃসাহস চমকায় বরাভয় হিল্লোলিত তোমার আপন পতাকায়
তুমি আছো কাজলদীঘির পারে
কোকিলের মধুক্ষরা স্বরে হরিৎ স্বপ্নে ফুলে ওঠা প্রান্তরের
উর্বর আদরে
সিংহপ্রাণ গিরিবক্ষে এবং বঙ্গপোসাগর সাগর নামক আকুল
অস্থিরতার তুমুল গভীরে
আছো দিন রাত্রি অগ্নিমুখ অশনির অশেষ অধীরে
তুমি আছো আজও ছিলে চিরকাল
বিশ্বের সেরা সুন্দর বলে লুটেছো প্রবাদের খ্যাতি
যদিও রক্তখচা তোমার সৌন্দর্য সেই অবিরত
তোমারই হয়েছে কাল
তোমাকে মুঠোতে ভরে আনন্দের ঝুমঝুমি বাজাতে এসেছে যারা
সকালের ভোজ সভায় ক্ষুধার্ত তিথি
রক্ত নিয়ে মুখে ধিক্কারে ধিক্কারে পলাতক তারা
আবহমান বাংলার বর্বরতম দখলদার দেখ আজ
কুৎসিততম আঁধারে নির্ঘাত হবে লীন
তুমি আছো তুমি ছিলে তুমি অমলিন আজও আছো অমলিন
শত কোটি লাঞ্ছনার তিক্ত দাগ সারা দেহে সয়ে
আজও তুমি মাতা শুচি শুদ্ধ মাতা
সাত কোটি সংশপ্তক সন্তানের অকাতর তুমি মাতা
প্রেম অবারিত হবে বিজয়ের ধারা জ্বলে
রৌদ্রে জোছনায় শত শতাব্দীর অবগুণ্ঠিত ও আশা পূর্ণ করে মোছাবো
তোমার মুখ তোমারি আপন পতাকায়
কিশোর তোমার দুই
হাতের তালুতে আকুল সূর্যোদয়
রক্ত ভীষণ মুখমণ্ডলে চমকায় বরাভয়।
বুকের অধীর ফিনকির ক্ষুরধার
শহিদের খুন লেগে
কিশোর তোমার দুই হাতে দুই
সূর্য উঠেছে জেগে।
মানুষের হাতে অবাক সূর্যোদয়,
যায় পুড়ে যায় মর্তের অমানিশা
শঙ্কার সংশয়।
কিশোর তোমার হাত দুটো উঁচু রাখো
প্রবল অহংকারে সূর্যের সাথে
অভিন্ন দেখ অমিত অযুত লাখ।
সারা শহরের মুখ
তোমার হাতের দিকে
ভয়হারা কোটি অপলক চোখ একাকার হলো
সূর্যের অনিমিখে।
কিশোর তোমার হাত দুটো উঁচু রাখো
লোলিত পাপের আমূল রসনা ক্রর অগ্নিতে ঢাক।
রক্তের খরতানে
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
জাগাও পাবক প্রাণ
কণ্ঠে ফোটাও নিষ্ঠুরতম গান
যাক পুড়ে যাক আপামর পশু
মনুষ্যত্বের ধিক অপমান
কিশোর তোমার হাত দুটো উঁচু রাখো
কুহেলী পোড়ানো মিছিলের হুতাশনে
লাখ অযুতকে ডাক।
কিশোর তোমার দুই
হাতের তালুতে আকুল সূর্যোদয়
রক্তশোভিত মুখমণ্ডলে চমকাক বরাভয়।
আম্মা তাঁর নামটি ধরে একবারও ডাকবে না তবে আর?
ঘূর্ণিঝড়ের মতো সেই নাম উন্মথিত মনের প্রান্তরে
ঘুরে ঘুরে জাগবে ডাকবে,
দুটি ঠোঁটের ভেতর থেকে মুক্তোর মতো গড়িয়ে এসে
একবারও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে না, সারাটি জীবনেও না? তবে আর?
কি করে এই গুরুভার সইবে তুমি, কতোদিন?
আবুল বরকত নেই ; সেই অস্বাভাবিক বেড়ে ওঠা
বিশাল শরীর বালক, মধুর স্টলের ছাদ ছুঁয়ে হাঁটতো যে
তাঁকে ডেকো না ;
আর একবারও ডাকলে ঘৃণায় তুমি কুঁচকে উঠবে ---
সালাম, রফিকউদ্দিন, জব্বার --- কি বিষণ্ণ থোকা থোকা নাম ;
এই এক সারি নাম বর্শার তীক্ষ্ণ ফলার মতো এখন হৃদয়কে হানে ;
বিচ্ছেদের জন্যে তৈরী হওয়ার আগেই
আমরা ওদেরকে হারিয়েছি ---
কেননা, প্রতিক্রিয়ার গ্রাস জীবন ও মনুষ্যত্বকে সমীহ করে না ;
ভেবে ওঠার আগেই আমরা ওদেরকে হারিয়েছি
কেননা, প্রতিক্রিয়ার কৌশল এক মৃত্যু দিয়ে হাজার মৃত্যুকে ডেকে আনে।
আর এবার আমরা হারিয়েছি এমন কয়েকজনকে
যাঁরা কোনদিন মন থেকে মুছবে না,
কোনদিন কাকেও শান্ত হতে দেবে না ;
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
যাঁদের হারালাম তারা আমাদেরকে বিস্তৃত ক’রে দিয়ে গেল
দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, কণা কণা ক’রে ছড়িয়ে দিয়ে গেল
দেশের প্রাণের দীপ্তির ভেতরে মৃত্যুর অন্ধকারে ডুবে যেতে যেতে।
আবুল বরকত, সালাম, রফিকউদ্দিন, জব্বার
কি আশ্চর্য, কি বিষণ্ণ নাম ! এক সার জ্বলন্ত নাম॥
২
কৃষাণ যেমন বর্ষার পলিসিক্ত মাঠে রোয়া ধানের চারাগুলো
রেখে আসে সোনালী শস্যের জন্মের আকাঙ্খায়
তেমনি আমার সরু সরু অনুভূতিগুলো জনতার গভীরে বুনে এসেছি ;
দেশ আমার, ইতিহাসের ধারা যে জ্ঞান আমাকে দিয়েছে তারই
পবিত্র সন্তান একটি দিনে তোমার হৃদয়ের বিদীর্ণ আভাকে
দেখিয়েছে --- বিদীর্ণ আভায় জ্বলেছিলে ;
যে আভারই আকস্মিক স্পর্শে হয়তো
কহিতুর চূর্ণ চূর্ণ হয়ে ছড়িয়েছিল প্রাণপ্রার্থী প্রান্তরে প্রান্তরে।
দেশ আমার তোমার প্রাণের গভীর জলে স্নান করে এবার এলাম।
তোমার প্রাণের গভীর জলে স্নান করে এবার এলাম ;
শ্রমিক তার শিল্পে প্রতিভার স্বাদ মেশাতে পেরে
যে-তৃপ্তিতে বিশাল হয়ে ওঠে তারই স্পর্শের পরাগ
সারা চেতনায় মেখে একবার আকাশের দিকে তাকালাম,
একবার তোমার গ্রাম যমুনার ঘোলা স্রোতে দৃষ্টিকে ডুবিয়ে নিয়ে
লক্ষ লক্ষ চারা ধানের মতো আদিগন্ত প্রাণের সবুজ শিখাগুলো দেখি,
কি আশ্চর্য প্রাণ ছড়িয়েছ --- একটি দিন আগেও তো বুঝতে পারি নি,
কি আশ্চর্য দীপ্তিতে তোমার কোটি সন্তানের প্রবাহে প্রবাহে
সংক্রমিত হয়েছে ---
একটি দিন আগেও তো বুঝতে পারি নি, দেশ আমার॥
জন্মদাতা পিতার বাষ্পস্তব্ধ চোখ দুটোকে একবার মনে করো,
একটি মাত্র ভাইকে হারিয়ে বোনের অকস্মাৎ আর্ত চিৎকারকে ;
সময়ের নিভৃত মন্দিরে সংগোপনে এসে যারা পরস্পরে
হৃদয়ের সততার কথা বলে গেছে
তাদের একজন আজ নেই
যুগল পাখির একটি আজ নেই
করুণ আঁখি হরিণী তার কোমল শাবকটিকে হারিয়েছে,
সমুদ্রের আকুল ঢেউয়ের মতো সীমাক্লান্ত কান্না,
দিকে দিকে প্লাবিত কান্না, দৃষ্টিমান তার চক্ষুকে হারিয়েছে
হে আমার জ্ঞান, একটিমাত্র উচ্চারণের বিষ আমাকে দাও
যা হৃদয় থেকে হৃদয়ে ছড়ায়,
ওষধি জন্মের মতো একবার স্পন্দিত হয়ে যে ঘৃণা আর
কখনো মৃত্যুকে জানে না, হে আমার জ্ঞান !
আয়ুর প্রথম হৃদয়মন্থিত শব্দ,
মনুষ্যত্বের প্রথম দীক্ষা যে উচ্চারণে
তারই সম্মানের জন্যে তাঁরা যূথবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
বুদ্ধ আর মোহম্মদের দৃষ্টির মতো দীপ্তি
ফল্গুর মুখদেশের মতো উন্মথিত আবেগ,
আকাশের যে-সাতটি তারা সমস্ত নীলিমার ভেতর চিহ্নিত হয়ে আছে
তাদের মতো অনন্য ---
আর জীবনের শত্রু শয়তানেরা সেই পবিত্র দেহগুলো ছিনিয়ে নিয়ে গেছে
আর তাদের আত্মা এখন আমরা হৃদয়ে হৃদয়ে পোষণ করি।
তাঁদের একজন আজ নেই ---
না, তাঁরা পঞ্চাশ জন আজ নেই---
আর আমরা সেই অমর শহীদদের জন্যে,
আমার প্রিয় মুখের ভাষা বাংলার জন্যে একচাপ পাথরের মতো
এক হয়ে গেছি,
হিমালয়ের মতো অভেদ্য বিশাল হয়ে গেছি॥
হে আমার দেশ, বন্যার মতো
সমস্ত অভিজ্ঞতার পলিমাটিকে গড়িয়ে এনে একটি চেতনাকে
উর্বর করেছি ;
এখানে আমাদের মৃত্যু ও জীবনের সন্ধি,
সমুদ্র সৈকতে দুঃসাহসী নাবিকের করোটির ভেতর যেমন
দূরদিগন্তের হাওয়া হাহাকার করে
তেমনি এখানে রয়েছে একটি কোমল নারীর আশাহত সখিনা হৃদয়,
এখানে রয়েছে মা আর পিতা,
ভাই আর বোন, স্বজনবিধুর পরিজন
আর তুমি আমি, দেশ আমার !
এখানে আমরা ফ্যারাউনের আয়ুর শেষ একটি বছরের
ঔদ্ধত্যের মুখামুখি,
এখানে আমরা পৃথিবীর শেষ দ্বৈরথে দাঁড়িয়ে,
দেশ আমার, স্তব্ধ অথবা কলকন্ঠ এই দ্বন্দ্বের সীমান্তে এসে
মায়ের স্নেহের পক্ষে থেকে কোটি কন্ঠ চৌচির ক’রে দিয়েছি :
এবার আমরা তোমার।
৩
বস্তীবাসিনী মা অকস্মাৎ স্বাস্থ্যবান একটি সন্তানকে
বুকের কাছে ধরতে পারলে
যেমন করে আহত দিনের অসংখ্য মৃত্যুকে ভুলে থাকতে পারে
তেমনি পঞ্চাশটি শহীদ ভাইয়ের মৃত্যুকে ভুলেছি
মা, তোমাকে পেয়েছি বলে।
আজ তো জানতে একটুকু বাকী নেই মাগো,
তুমি কি চাও, তুমি কি চাও, তুমি কি চাও।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
এখানে যারা প্রাণ দিয়েছে
রমনার উর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার তলায়
যেখানে আগুনের ফুলকির মতো
এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি।
আজ আমি শোকে বিহ্বল নই
আজ আমি ক্রোধে উন্মত্ত নই
আজ আমি প্রতিজ্ঞায় অবিচল।
যে শিশু আর কোনোদিন তার
পিতার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ার
সুযোগ পাবে না
যে গৃহবধূ আর কোনোদিন তার
স্বামীর প্রতিক্ষায় আঁচলে প্রদীপ
ঢেকে দুয়ারে আর দাঁড়িয়ে থাকবে না
যে জননী খোকা এসেছে বলে
উদ্দাম আনন্দে সন্তানকে আর
বুকে জড়িয়ে ধরতে পারবে না
যে তরুণ মাটির কোলে লুটিয়ে
পড়ার আগে বারবার একটি
প্রিয়তমার ছবি চোখে আনতে
চেষ্টা করেছিলো
সে অসংখ্য ভাইবোনদের নামে
আমার হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কিছু বিখ্যাত ছবির কৃষ্ণকায় করা কোলাজ! রয়েছে বাংলাদেশের বীর নারী ও পুরুষ স্বাধীনতা সৈনিকদের ছবির পাশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছবিও, যাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানের কথা কখনোই ভুলবার নয়। এই পাতার গান কবিতা ও তথ্য, কবি-গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর গবেষণালব্ধ সংগ্রহ।
|
|
|
কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি কবি মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী। আবৃত্তি শিল্পী ফয়সাল আজিজ এর কণ্ঠে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রচিত অথবা প্রচারিত কবিতা। ভিডিওটি সৌজন্যে VoiceArt YouTube Channel । কবিতাটির কথা সৌজন্যে https://www.ppbd.
news/ ।
যে ভাষায় আমি মাকে সম্বোধনে অভ্যস্ত
সেই ভাষা ও স্বদেশের নামে
এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে
আমি তাদের ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি
যারা আমার অসংখ্য ভাইবোনকে
নির্বিচারে হত্যা করেছে।
ওরা চল্লিশজন কিম্বা আরো বেশি
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে রমনার রৌদ্রদগ্ধ
কৃষ্ণচূড়ার গাছের তলায়
ভাষার জন্য মাতৃভাষার জন্য বাংলার জন্য।
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে
একটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য
আলাওলের ঐতিহ্য
রবীন্দ্রনাথ, কায়কোবাদ, নজরুলের
সাহিত্য ও কবিতার জন্য
(যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে
পলাশপুরের মকবুল আহমদের
পুঁথির জন্য
রমেশ শীলের গাথার জন্য,
জসীমউদ্দীনের ‘সোজন বাদিয়ার ঘাটের’ জন্য।)
যারা প্রাণ দিয়েছে
ভাটিয়ালি, বাউল, কীর্তন, গজল
নজরুলের “খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি
আমার দেশের মাটি।”
এ দুটি লাইনের জন্য
দেশের মাটির জন্য,
রমনার মাঠের সেই মাটিতে
কৃষ্ণচূড়ার অসংখ্য ঝরা পাপড়ির মতো
চল্লিশটি তাজা প্রাণ আর
অঙ্কুরিত বীজের খোসার মধ্যে
আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের অসংখ্য বুকের রক্ত।
রামেশ্বর, আবদুস সালামের কচি বুকের রক্ত
বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সেরা কোনো
ছেলের বুকের রক্ত।
আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের প্রতিটি রক্তকণা
রমনার সবুজ ঘাসের উপর
আগুনের মতো জ্বলছে, জ্বলছে আর জ্বলছে
এক একটি হীরের টুকরোর মতো
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছেলে চল্লিশটি রত্ন
বেঁচে থাকলে যারা হতো
পাকিস্তানের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ
যাদের মধ্যে লিংকন, রঁল্যা,
আরাগঁ, আইনস্টাইন আশ্রয় পেয়েছিল
যাদের মধ্যে আশ্রয় পেয়েছিল
শতাব্দীর সভ্যতার
সবচেয়ে প্রগতিশীল কয়েকটি মতবাদ,
সেই চল্লিশটি রত্ন যেখানে প্রাণ দিয়েছে
আমরা সেখানে কাঁদতে আসিনি।
যারা গুলি ভরতি রাইফেল নিয়ে এসেছিল ওখানে
যারা এসেছিল নির্দয়ভাবে হত্যা করার আদেশ নিয়ে
আমরা তাদের কাছে
ভাষার জন্য আবেদন জানাতেও আসিনি আজ।
আমরা এসেছি খুনি জালিমের ফাঁসির দাবি নিয়ে।
আমরা জানি তাদের হত্যা করা হয়েছে
নির্দয়ভাবে ওদের গুলি করা হয়েছে
ওদের কারো নাম তোমারই মতো ‘ওসমান’
কারো বাবা তোমারই বাবার মতো
হয়তো কেরানি, কিংবা পূর্ব বাংলার
নিভৃত কোনো গাঁয়ে কারো বাবা
মাটির বুক থেকে সোনা ফলায়
হয়তো কারো বাবা কোনো
সরকারি চাকুরে।
তোমারই আমারই মতো,
যারা হয়তো আজকে বেঁচে থাকতে পারতো,
আমারই মতো তাদের কোনো একজনের
হয়তো বিয়ের দিনটি পর্যন্ত ধার্য হয়ে গিয়েছিল,
তোমারই মতো তাদের কোনো একজন হয়তো
মায়ের সদ্যপ্রাপ্ত চিঠিখানা এসে পড়বার আশায়
টেবিলে রেখে মিছিলে যোগ দিতে গিয়েছিল।
এমন এক একটি মূর্তিমান স্বপ্নকে বুকে চেপে
জালিমের গুলিতে যারা প্রাণ দিল
সেইসব মৃত্যুর নামে
আমি ফাঁসি দাবি করছি।
যারা আমার মাতৃভাষাকে নির্বাসন দিতে
চেয়েছে তাদের জন্যে
আমি ফাঁসির দাবি করছি।
যাদের আদেশে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের জন্য
ফাঁসি দাবি করছি
যারা এই মৃতদেহের উপর দিয়ে
ক্ষমতার আসনে আরোহণ করেছে
সেই বিশ্বাসঘাতকদের জন্য।
আমি ওদের বিচার দেখতে চাই
খোলা ময়দানে সেই নির্দিষ্ট জায়গাতে
শাস্তিপ্রাপ্তদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায়
আমার দেশের মানুষ দেখতে চায়।
পাকিস্তানের প্রথম শহীদ
এই চল্লিশটি রত্ন,
দেশের চল্লিশ জন সেরা ছেলে
মা, বাবা, বৌ, আর ছেলে নিয়ে
এই পৃথিবীর কোলে এক একটি
সংসার গড়ে তোলা যাদের স্বপ্ন ছিলো।
যাদের স্বপ্ন ছিল আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে
আরো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার,
যাদের স্বপ্ন ছিল আণবিক শক্তিকে
কীভাবে মানুষের কাজে লাগানো যায়
শান্তির কাজে লাগানো যায়।
তার সাধনা করার।
যাদের স্বপ্ন ছিল-রবীন্দ্রনাথের
‘বাঁশিওয়ালার’ চেয়েও সুন্দর
একটি কবিতা রচনা করার,
সেই সব শহীদ ভাইয়েরা আমার
যেখানে তোমরা প্রাণ দিয়েছ
সেখানে হাজার বছর পরেও
সেই মাটি থেকে তোমাদের রক্তাক্ত চিহ্ন
মুছে দিতে পারবে না সভ্যতার কোনো পদক্ষেপ।
যদিও অসংখ্য মিছিল অস্পষ্ট নিস্তব্ধতাকে ভঙ্গ
করবে একদিন তবুও বিশ্ববিদ্যালয়ের
সেই ঘণ্টা ধ্বনি প্রতিদিন তোমাদের
ঐতিহাসিক মৃত্যুক্ষণ ঘোষণা করবে।
যদিও আগামীতে কোন ঝড়-ঝঞ্ঝা
বিশ্ববিদ্যালয়ের
ভিত্তি পর্যন্ত নাড়িয়ে দিতে পারে
তবুও তোমাদের শহীদ নামের ঔজ্জ্বল্য
কিছুতেই মুছে যাবে না।
খুনী জালিমের নিপীড়নকারী কঠিন হাত
কোনোদিনও চেপে দিতে পারবে না
তোমাদের সেই লক্ষদিনের আশাকে,
যেদিন আমরা লড়াই করে জিতে নেবো
ন্যায়-নীতির দিন
হে আমার মৃত ভায়েরা,
সেই দিন নিস্তব্ধতার মধ্য থেকে
তোমাদের কণ্ঠস্বর
স্বাধীনতার বলিষ্ঠ চিৎকারে
ভেসে আসবে
সেই দিন আমার দেশের জনতা
খুনি জালিমকে ফাঁসির কাষ্ঠে
ঝুলাবেই ঝুলাবে
তোমাদের আশা অগ্নিশিখার মতো জ্বলবে
প্রতিশোধ এবং বিজয়ের আনন্দে।
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সংকলক, কবি গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর কী সম্পর্ক?
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে মিলনসাগর.কম এর পরিচালক মিলন সেনগুপ্তর কী সম্পর্ক?
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সংকলক, কবি গণসঙ্গীতকার রাজেশ দত্তর কী সম্পর্ক?
|
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে মিলনসাগর.কম এর পরিচালক মিলন সেনগুপ্তর কী সম্পর্ক?
|
আজ তোমার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, জয়
কিন্তু সে কথা বলা আমার সাজে না …
আমার সমস্ত শরীর তরুণ শষ্পের মতো উদ্গত করে দিয়ে
বলতে চাই জয়
তবু গলায় ঠিক সুর বাজে না
আমার মুখে আন্তহীন আত্মলাঞ্ছনার ক্ষত
আমার বুকে পালানোর পালানোর আরও পালানোর দেশজোড়া স্মৃতি
তাই আজ যদি দুহাতে তুলতে চাই অভয়
কেঁপে যায় হাত, মনে পড়ে
এত দীর্ঘদিন আমি কখনই তোমার পাশে ছিলুম না
না
সুখে না দুখে না লাজে না
তবু তোমার সামনে আজ বলতে চাই জয়
যে কথা বলা আমার সাজে না ।