প্রতিবাদী কবিতার দেয়ালিকা
|
|
|
এই পাতাটি পাশাপাশি, ডাইনে-বামে ও কবিতাগুলি উপর-নীচ স্ক্রল করে! This page scrolls sideways < Left - Right >. Poems scroll ^ Up - Down v.
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
কোর্টে দেওয়া হলফনামা…
ফালতু হাসির গল্প থামা
জ্বরের কারণ পুজোয় নাকি
বাইরে ঘুরতে গিসল মামা।
'যাচ্ছিস যা লালপাহাড়ি,
সঙ্গে কিন্তু নিস্ মশারি',
পিসির হুকুম।( সেই যে পিসি,
ভাইপোরা যার বদের ধাড়ি)।
সেই মশারিই গেছিস ভুলে?
ভিন রাজ্যের মশক ছুঁলে,
ঘটার যে'টা ঘটল সে'টাই,
ডেঙ্গি ছিল তাদের হুলে।
কামড়াল তো, তার পরে কী?
অবাক হয়ে সবাই দেখি
সবার গাত্রে জ্বরের তাড়স।
চেঁচায় পিসি রিপোর্ট মেকি।
গুল্প-সমগ্র কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। ডেঙ্গি
মুকাবিলায় সরকারের ভূমিকা এবং প্রতিক্রিয়া নিয়ে মুখ খোলা এবং
এই কবিতাটি লেখার জন্য তাঁকে সাসপেণ্ড করা হয় ১০.১১.২০১৭ তারিখে। মৃত
রোগীর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ “ডেঙ্গু” না লিখে অজানা জ্বর লেখার হুকুম
দিয়েছিল সরকার কোনো অজ্ঞাত(!) কারণে। তার বিরুদ্ধে খেলাখুলি প্রতিবাদ
করার ওই ফল, একে বারে হাতে হাতে পেয়েছিলন!
এই সে'দিনও ঢাক পিটিয়ে
দিচ্ছিল এই বিকট ইয়ে
হঠাৎ কেন ডেঙ্গি কথা
করছে স্বীকার কোর্টে গিয়ে?
জিভের গোড়ায় বেজায় মিথ্যে।
ক্লাব অনুদান পাগলু নৃত্যে
ভোটের হিসেব। আজকে বুঝি
ভয় জেগেছে ও'টার চিত্তে?
অন্য রাজ্যে ভ্রমণ পাড়ি ,
দেয় যারা সব দেগঙ্গারই?
বাদুড়িয়ার বসিরহাটের?
এ' গুল কি কেউ মানতে পারি?
তার চাইতে বল্ না সোজা
ইচ্ছে করেই চক্ষু বোজা
কার্নিভ্যাল আর মেলায় খেলায়
যায়নিকো রাজধর্ম খোঁজা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমার ডেঙ্গু বলা মানা
তাই নাম রাখি অজানা
রাখিস শরীরে হুল যদি
আর প্ল্যাটেলেট না ওঠে
আমার টাল খেয়ে যায় গদি
আমায় হারাতে চাস ভোটে?
আমার ডেঙ্গু বলা মানা কবি ডঃ অরুণাচল দত্তচৌধুরী (জন্মকাল
অজ্ঞাত)। রচনা ৭.১১.২০১৭, রাত্রি ৯:২৯ ঘটিকা। সম্ভবত এরকম সব ছড়া তাঁর
ফেসবুকে লেখার ফলেই শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের সরকার তাঁকে
সাসপেণ্ড করেন। মৃত রোগীর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ “ডেঙ্গু” না লিখে
অজানা জ্বর লেখার হুকুম দিয়েছিল সরকার কোনো অজ্ঞাত(!) কারণে। তার
বিরুদ্ধে খেলাখুলি প্রতিবাদ করার ওই ফল, একে বারে হাতে হাতে পেয়েছিলন!
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
প্রশাসন যেথা শ্রেফ্ জো হুজুর
প্রশ্নতো মুখে দে কুলুপ
প্রায় ক্রীতদাস ডাক্তার যেথা
ভরসা বলতে মশার ধূপ
প্রশাসন যেথা শ্রেফ্ জো হুজুর
কবি ডঃ অরুণাচল দত্তচৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। রচনা ৭.১১.২০১৭, রাত্রি ৯:২৯
ঘটিকা। সম্ভবত এরকম সব ছড়া তাঁর ফেসবুকে লেখার ফলেই শ্রীমতী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের সরকার তাঁকে নিলম্বিত করেন। মৃত রোগীর ডেথ
সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ “ডেঙ্গু” না লিখে অজানা জ্বর লেখার হুকুম দিয়েছিল
সরকার কোনো অজ্ঞাত(!) কারণে। তার বিরুদ্ধে খোলাখুলি প্রতিবাদ করার ওই
ফল, একে বারে হাতে হাতে পেয়েছিলন!
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ডেমোক্রেসি… দেখলে পেশি… কেমন যেন যাচ্ছ দমে
বুঝতে পারো, বঙ্গদেশে ধরল তোমায় কী' সিনড্রোমে?
মলম দিয়ে… ওষুধ দিয়ে সারবে না এই দারুণ ক্ষত
ফ্যাসিবাদের সিনড্রোমটার স্থানীয় নাম অনুব্রত।
ডেমোক্রেসি… দেখলে পেশি
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত) । পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সন্ত্রাস
নিয়ে লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ ২২.৪.২০১৬।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
চালু সিস্টেমে ভোট করাবই, শান্তি ওঠাব লাটে
চড়াম চড়াম ঢাকের আওয়াজ 'কেষ্ট'র তল্লাটে।
গুড় জলে সব ম্যানেজ করব… ভ্যানিশ করব 'ইসি'
ট্রেনিংএ পোক্ত 'ভাইপো'রা পাশে, মাথার ওপরে 'পিসি'।
চালু সিস্টেমে ভোট করাবই
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সন্ত্রাস নিয়ে লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ
২২.৪.২০১৬।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বলেছি বাধ্য থাকতেই হবে, নতজানু হতমান…
অনাচার সয়ে গেয়ে যেতে হবে শাসকের জয়গান।
তা'ও যদি তোরা বিরোধী থাকিস, চামড়াটা যদি পুরু…
কথা দেওয়া ছিল। হুমকির পরে হামলাপর্ব শুরু।
বলেছি বাধ্য থাকতেই হবে
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সন্ত্রাস নিয়ে লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ
২২.৪.২০১৬।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শৃণ্বন্তু এই বঙ্গের অমৃতস্য পুত্রাঃ
লিস্টি মেনে সকল ভোটই দিয়ে দেবেন ভূতরা।
সময় বুঝে ওঝার সাথে ভাব করে নেয় ভূতে
কাজে কাজেই কষ্ট করে আর যেও না বুথে
শৃণ্বন্তু এই বঙ্গের অমৃতস্য পুত্রাঃ
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সন্ত্রাস নিয়ে লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ
২২.৪.২০১৬।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
প্রতুলদা'গো প্রতুলদা'গো কিচ্ছুটি বলবেন না
এমনিতেইতো বিদ্দ্বজ্জন বললে জোটে ঘেন্না।
আমরা 'সুবোধ' আমরা সু-'শীল'। বঙ্গদেশের দর্প।
সদ্য সদ্য খোলসত্যাগী ফোঁস শেখা সব সর্প।
এ' বাংলা ঢের পাল্টে গেছে। কুশ্রী ছিল কালকে।
রাস্তাগুলো হার মানাচ্ছে নায়িকাদের গালকে।
মাথার ওপর ভাঙল ভাঙুক সিন্ডিকেটের সাঁকো...
ল্যাম্পোস্টে টুনির চমক। শাক দিয়ে মাছ ঢাকো।
অ্যাকাডেমির পুতুল আমরা পয়সা পেলেই নাচি।
ভেঙ্কটেশের গুড়ের গায়ে লেপটানো মৌমাছি।
কুৎসাকারী আর যা পারি, সব্বাই তা' জানত
পরকীয়ার তুঙ্গ গিয়ার… চূড়ান্ত সম্ভ্রান্ত।
সুমন বেজায় ঘুমোয়... ঘুমোক। জাগলে ছেটায় খিস্তি
বলছে সবাই, একটু যদি হিসেব করে মিশতি।
মনের মধ্যে জ্বলছে ব্যথা, একটু তাতে ফুঁ দাও।
আমরা কেমন বকবকাচ্ছি। কাকপ্রসন্ন উধাও।
প্রেসক্লাবের মিটিং
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। বঙ্গের বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায়
প্রকাশ ২২.৪.২০১৬।
ভোট পুজোতে ভিক্ষে সমান … সাইকেল... চাল… গমকে
করলে তুচ্ছ, পদ্যগুচ্ছে দিতেই পারি চমকে।
দিচ্ছি নকল উন্নয়নের বিকটতম লিস্টি।
পারিতোষিক পাবার লোভেই দিচ্ছি এ' সার্ভিসটি।
প্রতিবাদের কন্ঠ উঠলে, দমিয়ে রাখে চাবকে
তার জন্যই অনুদানের দু'লাখ টাকা ক্লাবকে।
দু'হাত তুলে সাপোর্ট করো, এ'সব সমীকরণ
ষোলোর লড়াই বড়ই কঠিন… বোধহয় সহমরণ।
প্রশ্ন করুক… প্রতুল দা' গো, কিচ্ছুটি বলবেন না।
হারলে দিদি বদলাব ফের। জিতলে? পাবই পেন্নাম।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
প্রথমে বন্দনা করি যতেক বিদ্বজ্জনে
তাদেরকে যদিও ঈর্ষা করি মনে মনে
আমরা বঙ্গবাসী
আমরা বঙ্গবাসী সর্বনাশীর উন্নয়নে মুগ্ধ
পিটুলির গোলাকে ভাবি খাঁটি গরুর দুগ্ধ
আহা ভাষণ শুনি
মাইকে ভাষণ শুনি... জ্বলছে টুনি ল্যাম্পোস্টের গায়ে
ঘাড়ের ওপর পড়ছে সেতু অন্য কারোর দায়ে
সে তো রাণীর দোষ না
রাণীর দোষ না… অবাক হোস না এ’সব নানান ছুতোয়
জিভ বেরোবে… হয় তো প্রাণও… উন্নয়নের গুঁতোয়
সবই প্রচারগুণে
আহা প্রচারগুণে মিথ্যে শুনে আমরা যে খুব ক্লান্ত
কেউ না জানুক এই কথাটি নেত্রী বোধহয় জানত
তাই দিল হুকুম
তাই এল হুকুম পাড়াও গে ঘুম বর্গী ডাকো পাড়ায়
কেউ না যেন ভোট দিতে আর তর্জনীটা বাড়ায়
ভুল সাহস করে
গাজীর গান- ২০১৬ কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সন্ত্রাস
নিয়ে লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ ৭.৫.২০১৬।
কেউ সাহস করে সাড়ম্বরে যদি বা যায় বুথে
ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করো। ভোট দিয়ে দিক ভূতে।
এ’টাই ডেমোক্রেসি
এ’টাই ডেমোক্রেসি। একটু বেশি ভাববে সবাই কবে
নিও কমিউনিজম আসছে কাজেই ট্রাবল নিতে হবে
আসছে ঊনিশে মে
আসছে ঊনিশে মে হয় তো প্রেমে পড়তে হবে আবার
স্বপ্নে পাবো গণতন্ত্র স্বপ্নে খাবো খাবার
শুনুন বঙ্গবাসী
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এইটিই তো ওই দু'জনের সার্টিফায়েড কায়দা
এক ইস্যুতেই দিল্লি এবং কলকাতা নেয় ফায়দা।
দিল্লি চেঁচায় ঠিক করেছি কলকাতা কয় ভুল।
দুই পক্ষই আসল দুঃখ ভোলাতে মশগুল।
দুইজনাতে দারুণ বোঝাপড়া
এ ও'র দিকে আঙুল তুলে বিবৃতি দেয় কড়া।
দিনাজপুরে আমার মেয়ের শরীর ছিন্নভিন্ন
কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না কেউ রাজধর্মের চিহ্ন
আমার ঘরে ডেঙ্গু যখন মৃত্যুতে জমকালো...
নাট্যবতী নাটক করে করছে ডিপি কালো।
নোটবন্দী খেলা
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। নোটবন্দী বা
ডিমনিটাইজেশন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের তঞ্চকতাকে নিয়ে
লেখা। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ ২০১৭।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
উন্নয়নের চিঠি সে পড়েনি
চোখে অভাবের চালশে
কার্নিভ্যালের মঞ্চে না গিয়ে
বিষ খেয়ে নিল কাল সে।
প্রায় মরীচিকা চাষের গর্ভে
বাড়ির মেয়ের গয়না
বন্ধক রাখে যে বোকা মানুষ
উৎসব তার সয় না।
থাই পাসপোর্ট, কিলো কিলো সোনা
দেশমুখ্যর ছল
সে তত বোঝে না, অল্পবুদ্ধি
ভালোবাসা সম্বল।
কে চৌকিদার, কে বা ফেডারেল...
কলরব দিবানিশি।
সব ধাপ্পাই ঢেকে দিল তার
কীট নাশকের শিশি।
উন্নয়নের চিঠি সে পড়েনি
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। মিলনসাগরের
দেয়ালিকায় প্রকাশ ২১.৩.২০১৯।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
একটা ছেলের অভিজ্ঞতার ডেমোক্রেটিক নোট শিটে,
সুগার-কোটেড কোট-আনকোট রক্ত জমাট কালশিটে।
নেপোর গুষ্ঠি মারছে দধি, তার কোনও ভাগ চায়নি সে।
একান্ত তার প্রাপ্য যা যা বুঝতে সেটাই চায় নিজে।
বেকুব বনা বাপ-পিতামোর রাস্তাতে তার ভক্তি নেই।
কিন্তু সত্যি, এই ছেলেটার কলম ছাড়া শক্তি নেই।
নকুড়-দানা গুড়-জল আর চড়াম-ঢাকের কলঙ্কে
জড়িয়ে দিতে চায় না ছেলে, একান্ত তার কলমকে।
পরের টাকা করের টাকা চুরির পরিপক্বতা
চায় না পেতে। সম্বল তার বোকার মতন হক কথা।
কাজেই কলম আগুন লেখে। আর কী বলো পারতো সে!
সে জানতে চায় জাতের পাতের বিভেদ আজও কার দোষে?
শক্তিমান
কবি ডঃ অরুণাচল দত্ত চৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। মিলনসাগরের দেয়ালিকায় প্রকাশ ২১.৩.২০১৯।
জানতে চায় না বাম-দক্ষিণ কোথায় জন্মেছিলেন রাম!
সে জানতে চায় কোন ঠিকানায় আলুর এবং ধানের
দাম?
সে চায় খুবই ঝলসে উঠুক শিক্ষা-আলোক যা মুক্ত।
মৌ-জমানার পাথর ভেঙে শিল্প জোয়ার নামুক তো।
যন্ত্র চালায়, অঙ্ক কষে, যুদ্ধে সে যায়, ফলায় ধান
সেই কলমই চাইছে হিসেব, শুনতে পাচ্ছো সংবিধান?
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
খিদের জ্বালায় ভিনরাজ্যে গেছ
মানচিত্রের আঁধারে ঘুপচিতে
মুখ লুকিয়ে বেঁচেছ কোনওমতে
ভেবেছ বুঝি লড়াই গেছ জিতে!
আজ দুর্যোগ, খিদে মেটার আশা
এই প্রবাসে সুদূর পরাহত
কাজেই ফিরে যাবে নিজের গ্রামে
ইতিহাসের প্রাচীন প্রথামতো।
মানুষ তুমি ঘরে ফেরার পথে।
হয়তো মৃত্যু রয়েছে... গায়ে মুখে।
খাবার না দিক, সভ্য রাষ্ট্র জানে
স্প্রে-গান দিয়ে মুছতে জীবাণুকে।
হাজার পাখি, পর্বত টপকিয়ে
প্রাণ বাঁচাতে আসত গৃহহারা।
ঠিক এই ভাবে ছররা গুলি দিয়ে
খুন করত মাংসলোভী যারা।
পরিযায়ীনামা
কবি ডঃ অরুণাচল দত্তচৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। করোনা মহামারীর কালে পরিয়াযীর
শ্রমিকদের দুর্দশা ও মৃত্যুর প্রতিবাদ। মিলনসাগরে তোলা হয়েছে ৩১.৩.২০২০।
সেই খুনিরা তখতে বসে আজ
শাসনবিধির নিখুঁত অছিলায়,
তোমায় স্নান করিয়ে দেয় বিষে
ভাবছে... বুঝি এতেই বাঁচা যায়।
ছড়িয়ে দেওয়া গরল কিম্বা খিদে
মারলে তোমায়, কেউ হবে না দায়ী।
এক কথাতে নিকেশ করা যায়
মানচিত্রে যারাই পরিযায়ী।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
গুজব রটেছে... মেড ইন চায়না…
ভালোবাসা তাই টেকানো যায় না।
ঘৃণাও এসেছে। কিছুটা পলকা।
গায়ে লাগে তার আগুন হলকা।
শব্দ ভাঁড়ার খুব দরিদ্র।
ঘুণপোকা কাটে গোপন ছিদ্র।
লকডাউনের দিন কাটে বৃথা।
বড় অসময়ে এলে... হে কবিতা।
এসে দেখে যাও মরতে মরতে
কী রোগ পাচ্ছি... রাজার শর্তে।
মিছে তমসুক... কাগজপত্রে
আমাকে পোড়ায় ছত্রে ছত্রে।
একলা
কবি ডঃ অরুণাচল দত্তচৌধুরী (জন্মকাল অজ্ঞাত)। মলয় পাত্রর পরামর্শে এডিটেড!
করোনা মহামারীর কালে প্রতিবাদ। মিলনসাগরে তোলা হয়েছে ১৫.৪.২০২০।
রোগ তাণ্ডবে ঝাপসা দৃষ্টি
বিষতেতো হল বাঁচা জিনিসটি।
হড়কা বানের জলতরঙ্গে
ভাইরাস মেখে নিচ্ছি অঙ্গে।
এসো সভ্যতা, পৃথিবীগর্ভে
শোক হয়ে শুই, নিহত গর্বে।
গণকবরের জাপটাজাপটি
ঢেকে দিক আহা... শেষ বিলাপটি।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
নগ্ন উঠে দাঁড়াল আমার মণিপুরের মা
এই মায়ের দু'চোখ থেকে চোখ পেয়েছি
আশিরনখ ভাষা পেয়েছি, পেয়েছি সা রে গা মা
নগ্ন উঠে দাঁড়াল আমার মণিপুরের মা।
যা খুশি তাই করতে পারে আর্মি আর
পুলিশ, পথে কার্ফ্যু, জ্বলে চারমিনার
কারও কিছু বলার নেই, বলার কথা না
নগ্ন উঠে দাঁড়াল আমার মণিপুরের মা।
আর্মি জিপ চলে গগনতলে
আর্মি জিপ "সারে জাঁহাসে" বলে
আর্মি জিপে মেয়েটি আছড়ায়
আর্মি জিপে বোতাম খোলা চলে।
ও মেয়ে যদি ফিরেও আসে ঘরে
ও মেয়ে যদি গগনতলে মরে
পুলিশ মুছে দিয়েছে তার নাম
বাড়ি কোথায়? ইম্ফলের বাইরে কোনও গ্রাম!
এ সব ঘটে রোজ
কোথায় কোন তরুণী পড়ে আছে
কোথায় তার অন্য বোন নিখোঁজ
শুধু তাদের চুনুরি ঝোলে গাছে
মণিপুরের মা কবি সুবোধ সরকার (জন্ম ২৮.১০.১৯৫৮)। জুলাই.২০০৪ এ আসাম
রাইফেলস দ্বারা মনোরমার হত্যার বিরুদ্ধে মণিপুরের মায়েদের নগ্ন-প্রতিবাদ নিয়ে লেখা কবিতা।
কিন্তু আজ জুলাই মাসে হারাল বিপদসীমা।
উঠে দাঁড়ান মণিপুরের মা
উঠে দাঁড়ান নগ্ন হয়ে স্তন্যদায়িনীরা
পৃথিবী দেখ্ , মায়ের বুকে ক'খানা উপশিরা!
কেমন লাগে নগ্ন হলে তোর নিজের মা?
আসাম রাইফেলস যেই বন্দ করে গেট
যেখানে আমি ছিলাম সেই মায়ের তলপেট
সেখান থেকে বেরিয়ে এল এক গরম গঙ্গা
মণিপুরের মায়েরা দিল মা-কে নতুন সংজ্ঞা।
যেখানে আজ মায়েরা হাঁটে নগ্ন হয়ে মিছিলে
স্থলনায়ক, জলনায়ক, তোমরা তখন কী করছিলে?
ভাবছ নাকি তোমার মা এখনও আছেন পরমা?
পুড়ে গিয়েছে, পুড়ে গিয়েছেন...
সব মায়ের মধ্যে থাকা নিজের সেই বড় মা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
নামী এন জি ও, নাকি পার্টি ইঞ্জিন?
গ্লোবাল রোবোট, নাকি ঘাতক মেশিন?
একা বোকা বই-পোকা? নেতা হরিদাস?
অবলা গোপাল? মাঠময় ঘাস?
ক্যম্পাস-জব? পম্পাস শো?
চোখেতে পট্টি বাঁধা কানামাছি ভোঁ |
ভীষণ ট্রেণ্ডি - একবার থিমাচারী
মার্কিনী ব্লেণ্ড সব জাহাজ ব্যপারী |
ধানক্ষেতে ফনফন বেড়ে ওঠে 'হাব'
এভাবে এগোয় দেশ, মরে যায় বাপ্!
টিনা = TINA = There Is No Alternative
টিনা-মডেল
কবি সুখেন্দু সরকার (জন্ম ৫.৯.১৯৫৭)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ও বোকা ক্ষুদিরাম কেন তুই দিলি প্রাণ
এ জাতির সম্মান গেলি রাখিতে
শ্যাওলা জমেছে শহিদ বেদিতে॥
শহিদের রক্ত হলো যে ব্যর্থ
স্বার্থ নিয়ে মানুষ ভোগে মেতেছে
কেহ বা মাষ্টার কেহ মিনিস্টার
কেহ super star প্রোমোটারিতে॥
মোরা যে ধন্য তাই জোটেনা অন্ন
গন্য করে কুকুর শিয়ালের সাথে
ঘাতক আর বেইমান তাদেরি সম্মান
নিঃস্ব শাজাহান বসে গদিতে॥
এ স্বাধীন রাষ্ট্র কি দুঃখ কষ্ট
যদি পারো ভাই একবার এসো দেখিতে
বন্দুক আর পিস্তল এ শুধু সম্বল
ঢুকেছে বেনোজল সব ঘরেতে॥
সিরাজের অন্তর পলাশী প্রান্তর
কাঁদে নিরন্তর নিশুথী রাতে
অভাগা দেশটা যাবে কি শেষটা
অমল বলে বুঝি ওদেরি হাতে॥
ও বোকা ক্ষুদিরাম কেন তুই দিলি প্রাণ
কথা, সুর ও শিল্পী - কবি অমল বাওয়ালী। কবির “ঝান্ডা নিয়ে ধান্দাবাজি” অ্যালবামের গান। ভিডিওটি
সৌজন্যে INRECO BENGALI YouTube Channel.
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ও রবি ঠাকুর গো
কেমন আছে তোমার শান্তিনিকেতন
পলাশ তোমার তালাশ করে
দুঃখে ঝরে দুই নয়ন॥
বিশ্ব জানে ভূবনডাঙ্গা রাঙা মাটির গাঁ
শাল পিয়ালের মধ্যে ঘেরা তোমার মহিমা
আজকে সেথা মন টানেনা
চায় না যেতে বাউল মন॥
বিশ্বকবি তুমি নাকি মোদের অহংকার
তাই কি সেদিন করল চুরি নোবেল পুরস্কার
কিছু তকমা আঁটা জ্ঞানের আঁধার
করছে দখল সিংহাসন॥
চলছে খেলা সন্ধ্যাবেলা নাই মাদলের তাল
ভাঙছে গেলাস কাঁচের চুড়ি, পাঠ ভবনের হাল
কিছু জুটেছে শিক্ষিত মাতাল
গড়ছে নতুন বৃন্দাবন॥
ও রবি ঠাকুর গো কথা, সুর ও শিল্পী - কবি অমল বাওয়ালী।
রচনা ২৫-০৭-২০০৮। কবির “ঝান্ডা নিয়ে ধান্দাবাজি” অ্যালবামের গান। ভিডিওটি সৌজন্যে INRECO BENGALI
YouTube Channel.
কি আশ্চর্য্য উপাচার্য্য সেওতো নাকি জাল
চোর পুলিশে লুকোচুরি কেই বা ধরে হাল
বিশ্ববাসী হচ্ছে নাকাল ফসকা গেরো প্রশাসন॥
কোনটা আসল কোনটা নকল আমরা জানি কি
জহুরী জহর চেনে গয়লা চেনে ঘি
এখন নাক দিয়ে নরুন পেয়েছি,
সেই আনন্দে হই মগন॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ধর্ম্ম তোকে স্বর্গে নেবে
ডুবাবে এই মর্ত্তে
খাস না এ আফিমে গুলি
পারবি না তো ছাড়তে॥
মানুষ নামে একটাই জাত
আছে ভালো মন্দ
পুরুষ নারী কেউ আনাড়ি
তাদের নিয়েই দ্বন্দ্ব
চোখ থেকেও থাকে অন্ধ
( শেষে ) তারাই পড়ে গর্তে॥
ধর্ম্ম নিয়ে গলদ ঘর্ম্ম
বলদ কিছু লোক
নারীও নয় পুরুষো নয়
অন্ধতাই তার চোখ।
ধর্ম্ম মানে ধারণ করা
বলছে ব্যাকরণে
দেব-দেবী নয় মানুষ সত্য
এই কথা কে শোনে ?
অমল বলে এই কারণে
চাইনা মানুষ ছাড়তে॥
ধর্ম্ম তোকে স্বর্গে নেবে
কথা ও সুর - কবি অমল বাওয়ালী (জন্ম ৬.৯.১৯৫৭)।
রচনা ০৫.০৯.২০১৩।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এ দেশে আর কি হবে, ঘুষ কে বলে জল-পানী
কি কমু দুঃখের কথা ঘা শুকাতে চুলকানি।
পশুর সমাজ অনেক ভালো
জাত পাতের সব বালাই নাই
কুকুর বিড়াল কোলে তোলে
মানুষ ছুঁলে নাইতে যাই
মানুষ রূপে পশু যারা
জাতের বিচার করে তারা
কোরাণ পুরাণ একই ধারা
কেউ বলে জল কেউ পানি॥
মানুষ মরে অনাহারে কে করে তার প্রতিবাদ
আমলারা সব ভাবে বসে কি সে তবে পকেট ভার
গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে লুট করে দিন দুপুরে
মান, নিল সব চোর ছ্যাচোর
মূর্খ হলো সব গুণী॥
( এখন ) চাম চিকেতে ধরে পেখম
ময়ূর দেখে লজ্জা পায়
ত্যালা পুইয়া কূলিন হলো
ইলিশ বিকায় বিশ টাকায়
এ দেশে আর কি হবে, ঘুষ কে বলে জল-পানী
কথা - কবি অমল বাওয়ালী। রচনা ০৯-০৫-১৯৯৫।
মদ মাতাল জমির দালালে
দেশটা নিল রসাতলে
ছলে বলে রূপের জালে
দেউলিয়া ভারত জননী॥
এই নাকি সেই রাম রাজত্বে গণতন্ত্র এরি নাম
এর তরে কি প্রাণ দিয়েছে বিনয় বাদল ক্ষুদিরাম
সাগর পারে গেল মশা জুটল এসে রক্ত চোষা
ছাড়তে চায় না গদির নেশা
Democracy জাহান্নামে॥
এখন আবার নতুন কায়দা ফয়দা নেবার নতুন রূপ
নেতায় নেতায় হাতাহাতি জনগণ হয় ভলিবল
দুঃখের কথা বলব কারে বাঘে ছুঁলেও বাঁচতে পারে
পড়বি যদি লবির ফেরে
বুঝবি শেষে কি হয়রানি॥
চাইনা মোরা দলাদলি হিন্দু বুদ্ধ মুসলমান
পাশাপাশি থাকবো নিয়ে অন্ন বস্ত্র বাসস্থান
অমল কয় ছিল না পুঁজি সর্ব্ব হারা কয় রিফিউজি
আমরা ঠ্যালায় পড়ে সবি বুঝি
করছে কারা এ শয়তানি॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
তোরা মাটির মাকে করিস পূজা
‘মা’ কে দিয়ে বিসর্জন
যদি ঘরে ‘মা’ না খেয়ে থাকে
ব্যর্থ সবই আয়োজন॥
মাটির মাকে দিস গহনা
তোর ‘মা’র জোটেনা ছেঁড়া ত্যানা
মাটির ‘মা’ র কাছে মানত করিস
‘মা’ কে করিস নির্যাতন॥
তোর দুখেতে কাঁদেন যে মা
ফেলে আঁখি জল
তাঁর চরণে দিলি না তুই
প্রেমের শতদল॥
বৃথা ঘুরিস তীর্থ ধামে
( তোর ) ‘মা’কে দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে
অমল বলে মার কারণে
দেখলি রে এই ত্রিভুবন॥
তোরা মাটির মাকে করিস পূজা
কথা ও সুর - কবি অমল বাওয়ালী। রচনা ১৭-১০-২০০৯।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
তুমি ভাবো আমি তোমার বিবাহিতা স্ত্রী
আমাকে ব্যবহার করা যায়, যে ভাবে খুশি
অঢেল রোদের তাপ থেকে সরিয়ে নিয়ে ছায়া
অথবা লালসার নিভু-নিভু আঁচে
সেঁকে নেওয়া মাংসের স্বাদু যৌনতায়
আমাকে ব্যবহার করা যায়
যেহেতু আমি তোমার স্ত্রী, বিবাহিতা
অতএব স্ববিরোধ অপ্রতিরোধ্য এবং
ঝগড়া বিবাদের মাঝে আহত গর্জন,
থাবা গুটিয়ে রাখে নির্জন শাসনে,
ঝলসে ওঠে খর জিভ অবাধ্য আঙুল
শ্বদন্তে লেগে থাকে অতৃপ্ত ঢেকুর
তুমি ভাবো আমি তোমার একান্ত নির্ভরতা
ছুঁয়ে আমি বেঁচে আছি কৃতজ্ঞ হারেমে
প্রতি রাতে ছুটে আসে বিষ তির, তীক্ষ্ণ হারপুন
আদিমব্যাধের হাসি হালাল উল্লাস
খোজা হাবসির দল জ্বলন্ত মশালে ঘিরে রাখে
দাহ্য উত্সব, দগ্ধ শিকার বধ্যভূমির মাচান
হিংসারগৃহ থেকে গৃহহিংসা
কবি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ৬.১২.১৯৫৭)
ঝরোখায় বসে আমি তুমুল আহ্লাদে
বয়নের সুতো দিয়ে বুনে তুলি নানা রঙ
হর্ষ-বিষাদের ফুল, ক্ষত সেলাই-এর ভাঁজে
লুকিয়ে রাখি চামড়া গোটানো চাবুক
নিপুণ শিল্প কাজ প্রবাদবচন কথামুখ
‘সংসার সুখের স্থান পুরুষ প্রধান’
তুমি ভাবো এ সবই তোমার বিবাহ অধিকার
বহির্ভূত প্রেম অবৈধ যৌন বিকার জ্বরে
আমাকে বিলুপ্ত করে একান্ত তোমার
বিষাক্ত করোটি থেকে বিষলালা ঝরে
মাংসতন্তুস্নায়ু শিরাধমনীর প্রাত্যহিকে
সমবেত আর্তনাদে জেগে ওঠে ভোর।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
বাকি কথা লিখি পদ্যে অসময়
ধ্বংস হত্যা ক্রোধের রক্তে লাল
ঘামমাটিময় এখন দঃসময়
জেগে থাকে চোখ কোটরে কঙ্কাল
আলজিব চাটে কার্তুজসিসাবিষ
শস্যের মাঠ শ্মশানের প্রান্তর
এক হয়ে আছে মৃত্যুর কাছে হিম
ত্রাসের কাছে স্তব্ধ বোবাভয়
বারুদ বুলেট জিহাদের হুংকারে
উড়ে আসে চোখে পোড়া মানুষের ছাই
রক্ত জমাট কালশিরা পাঁজরে
আকাশে মিনার গম্বুজ ছুঁয়ে চাঁদ
খুনখোশরোজ গ্রাম থেকে শহরে
কবে মুছে দেবে রক্তের নোনাদাগ
চেয়ে আছো তুমি ক্লান্ত আকাশ ভরে
তুমি যে কবি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ৬.১২.১৯৫৭)।
সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের এই কবিতাটি 'একুশে ফেব্রুয়ারি
উদযাপন কমিটি'-র পত্রিকার ১লা জুলাই ২০০৭ এর সংখ্যায়
প্রকাশিত হয়েছিল।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এক নিষ্পাপ কিশোরীর
জীবন প্রদীপ নিবে যাওয়ার কাহিনীর
স্মৃতিচারণ করি-------
লোভ, লালসা, ক্রোধ, কাম, চরিতার্থ করার বাসনায়
হিংসায় পরিপূর্ণ এক নররাক্ষস যেমন থাবা বসায়।
এক ক্ষুধার্ত বাঘ যেমন, তার শিকার ধরার পথে
ছন্দে ছন্দে চলা এক রূপসী হরিণীর সাথে।
নির্মম ভাবে শিকার ধরার পর, মৃত্যুকে দিয়েছে উপহার
তার ফুলের মত সুন্দর, জীবন যৌবনকে করে ছারখার।
উপভোগ, নৃশংসতা, খতবিক্ষত করে সারাটা অঙ্গ
মুহূর্তে জাগ্রত হয়ে ওঠা, দুষ্টু রিপুগুলির আক্রমন হলো সাঙ্গ।
ধীরে ধীরে শান্ত হলো , দুজন - প্রাণহীন একটি নিষ্পাপ জীবন,
অপরটি মহাপাপের -- একটি নিকৃষ্ট উদাহরণ।
নৃশংস অপরাধ মহাপাপের, শুরু হলো বিচার সমাচার
একটা মৃত্যুর জন্য ঘোষিত হলো, আর একটা মৃত্যুর প্রচার।
সংগঠিত হলো মৃত্যুদন্ড, ফাঁসি - অপরাধীর সাজা দেওয়ার পালা,
আর এক দিকে চলল, মুক্ত করার নানান কৌশল, ছলাকলা।
নিন্ম আদালতে, উচ্চআদালতে - রায়, ফাঁসি, দড়ি ধরে মারো টান
দ্বিধাবিভক্ত সভ্যসমাজ, বিপদে পড়লেন জ্ঞানীগুনিজন।
চলল দেশব্যাপী আবেদন নিবেদন - জল্পনা, কল্পনা, প্রার্থনা,
স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধান মহান দায়িত্ব পালনে , সংশয়ে ছিলেন দোমনা।
মানুষ অমানুষ
কবি পরিতোষ ঘোষ (জন্ম ২.৫.১৯৫৮)
অবশেষে করলেন ঘোষনা হ্যাঁ, দেওয়া হোক মৃত্যুদন্ডই,
আইনি মারপেচে চলল লড়াই, আইনজীবিদের কথার কতনা বড়াই।
আইনের বেড়াজালে জ্বরিত, পেশাদারী মানুষজন
আরোও যারা সমাজের, সংবেদনশীল বিশিষ্ট স্বজন।
আইনের কচকচানি শেষ, এলো এক নির্মম কালো রাত
সর্বশেষ হয়ে গেল ফাঁসি, যবনিকা পাত।
জ্বলল মোমবাতি হাতে হাতে
হলো প্রার্থনা গির্জায়, মন্দিরে, মসজিদে।
একসাথে চলল - মৃত্যুর প্রতি নিরবতা পালন,
লেখা হলো শোকবার্তা, শোকগাথা, শোক জ্ঞাপন।
প্রলোভন, ক্রোধ , কাম, লালসা, হিংসায়-
জর্জরিত সমাজ থেকে পাপ মুক্ত হবার আশায়।
“বন্ধ হোক, এই সামাজিক পাপক্ষয়”,
আর যেন না হয় -- হেঁতাল পারেখ , ধনঞ্জয়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শিমুলকুঁড়ির হারানিধি ক্ষেত মজুরি করে
গাঁয়ের লোকের হারা ডাকে হারাই হোলো পরে।
গ্রামের শেষে ডোবার পাশে খড়ের চালায় থাকে
ভালো করে চেনার আগেই হারায় সে তার মাকে।
হারার বাবা করত যখন ক্ষেত মজুরির কাজ,
ক্ষেতের ভিতর চলে গেল মাথায় পড়ে বাজ।
বাবা যখন চলে গেল হারা তখন স্কুলে,
সেদিন থেকেই বই পরা কি হারা গেছে ভুলে।
বাবার পেশায় সেই থেকে সে, ক্ষিদে বালাই বড়
দিনের কামাই দিনেই সরে কামাও যত পার
একটা কথা বোঝে হারা পার্টি কতো দড়ো,
কাজ যদি চাও তবেই পাবে পার্টির নেতা ধর।
ছোটোবেলায় প্রথম যেবার পার্টির ডেরা থেকে
লোক এসে তাদের ঘরের দেওয়াল দিল এঁকে,
মাটির দেওয়াল সাদা মাটা কিই বা ছিরি তার,
ছবি দেখে হারার মনে খুশী ধরেনা আর।
ভোট বলে এক বসত মেলা বাবা তখন বেঁচে
পার্টির থেকে ঠেলায় করে নিয়ে যেত যেচে।
ভোট মানেই বলত বাবা এই ছবিতেই ছাপ
পার্টি থেকে বলা আছে, তেমনই পার্টির চাপ।
বাবা সে তার চলে গেছে এবার আবার ভোট
ক্ষেত মজুরের দিনের কামাই তিরিশ টাকা মোট।
গাঁয়ের ভিতর কানাকানি বাধছে নাকি গোল
অন্য পার্টি ঢুকছে গ্রামে আনছে দল বল।
হারানিধি কবি কৌশিক ভাদুড়ী (২৬.৯.১৯৫৮)
সেদিন ছিল রাত নিশুতি ঘুমিয়ে গোটা গ্রাম
চমকে হারার ঘুম ভেঙ্গে যায় শব্দ দুম্ দাম্।
মাটির ঘরের জানলা মানে কঞ্চি কটা আরে,
সেই ফাঁকেতে দেখল হারা আসছে মানুষ তেড়ে।
বিজলীবিহীন সেই গ্রামেতে রাতের আকাশ কালো,
রাতের বেলায় প্রথম হারার দেখা এত আলো।
ফাটছে বোমা জ্বলছে মশাল আগুন দেওয়াল যেন
ফেলছে ঘিরে গ্রামটা গোটা এমন করে কেন?
জ্বলছে মশাল, জ্বলছে কুঁড়ে , জ্বলছে পাকা ধান,
গাঁয়ের লোকের আর্ত্তনাদে রাত হোলো খান্ খান্।
কুঁড়ে ঘরের কপাট খুলে দাঁড়িয়েছিল হারা,
ঝোপের ভিতর আবছায়াতে নড়ছে ওরা কারা
ঠিক করে তা বোঝার আগেই কচলে দুটি চোখ,
দেখল হারা চারপাশে তার মজুদ কটি লোক,
নোংড়া ভাষার তুবড়ি মুখে, হাতে আগুন শলা-
'তোর কুঁড়েতে জ্বালব চিতা গাঁ ছেড়ে তুই পালা'
'ও ভাই শোনো, তোমরা কারা, কেন এমন কর'-
মুখের কথা মুখেই থাকে, মাথায় আঘাত বড়।
যেমন চমক ঘুম ভেঙেছে তেমনই চমক খ্যালে,
জ্বলছে কুঁড়ে দুলছে হারা, পড়ল ঘুমে ঢলে।
জ্ঞান ফিরেছে ভোরের হাওয়ায় পূবে আকাশ আলো
গ্রামখানি তার ভষ্ম চিতার ক্ষেতে ফসল কালো
মাথার পাশে বিষম ব্যথা, কি আর যাবে করা।
ঘর পুড়েছে ভাত পূড়েছে পূড়েছে কাজ করা।
আগুন এবার জ্বলছে পেটে, এখন দিনের আলো
হোক বুঝি তার জন্ম ভিটে পালিয়ে যাওয়াই ভাল
সেই যে হারার শুরু হোলো বাঁচতে পথ চলা
বছর কতক ঘুরে গেছে, কতই বা যায় বলা।
ইস্টিশনের একচালাতে হারার রাত্রি কাটে
দিনের বেলায় বাজার হাটে ফাই ফরমাশ খাটে।
যেদিন হারার কাজ জোটেনা হয় না কিছু আয়
পেটের জ্বালায় হারা সেদিন ভিক্ষে করে খায়।
গাঁয়ে ঢোকার নিষেধ আছে, পুড়েছে তার ঘর
ভোটের নামে সিঁদুরে মেঘ যে পার্টিকেই ধর্।
শিমুলকুঁড়ির হারানিধির বয়স হোলো কুড়ি,
ক্ষেত মজুরি ছেড়ে এখন করে মাধুকরী।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ভাল লাগে ডালমুঠ বাংলার পাঁইট
জনটানা রিকশায় হিলতোলা বাইট
আমি নাগরিক দেখি দিনরাত
শহরের শিয়রে যে অতিপাত
গান লিখি পদক পুরস্কার
বিদেশ যাত্রার ডাক মিডিয়ার
নাচানাচি নিন্দামন্দা
এভাবেই আমার ধান্দা
কবি নাম নিয়ে যুগযুগ (করে) খাক!
ভাল লাগে ডালমুঠ বাংলার পাঁইট
কবি কৌশিক ভাদুড়ী (২৬.৯.১৯৫৮)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
সর্বহারা সর্বহারা সর্বহারা বলে যারা মিটিং মিছিল করে
তারা সর্বহারা নয়, সবাই সর্বহারা নয়
ওদের ঘর আছে, জমি আছে
বিলাসিতার জিনিস আছে
ওদের অভাব বলে যা কিছু সব
স্বভাব বই তো নয়
ওরা সর্বহারা নয়, সবাই সর্বহারা নয়।
মোরা যারা সর্বহারা
মোদের কথা ভাবে না ওরা
স্বাধীন ভারতবর্ষ, স্বাধীন মোরা কোথায়
বলো স্বাধীন মোরা কোথায়, বলো স্বাধীন মোরা কোথায়
সর্বহারা নয় ওরা সর্বহারা নয়
মোদের ঘর নাই, জমি নাই
পেট ভরে দুটো ভাত নাই রে
জামা কাপড়ের অভাব মোদের
. লজ্জামৃত্যু হয়
সর্বহারা নয়, ওরা সর্বহারা নয়।
সর্বহারা সর্বহারা সর্বহারা বলে যারা মিটিং মিছিল করে
কবি অনুপ চক্রবর্তী (জন্ম ১৯৫৮)। আমরা গণসঙ্গীতটি পেয়েছি ১৯৯০ সালে প্রকাশিত সুব্রত
রুদ্র সম্পাদিত ও সংকলিত গণসংগীত সংগ্রহ সংকলন থেকে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
কাটে পাট কাটে, গাড়ে ধান গাড়ে
রোদে জলে মাঠে ঘাটে পাট কাটে, গাড়ে ধান গাড়ে
ওদের ক্ষমতায় ক্ষমতাশালী যারা
. তারাই কি ভুলে যায় ওদের
. তারাই কি ভুলে যায় ওদের
ওই কিষাণের ঘরে সেই সংশয় বাঁধে ভয়
ওই কিষাণীর মনে সেই হুঁশিয়ার
কাটি পাট কাটি, গাড়ি ধান গাড়ি |
রোদে জলে মাঠে ঘাটে---
লেনিন স্তালিন কেবা, কেবা রাজা ইংরেজ
. চেনেনা জানেনা তো ওরা
বন্ধুরা বলেছিলো ওদের নীতিটা নাকি
. এদের সুখের তরে গড়া
তাই কিষাণ আর কিষাণী আনমনে ভেবে চলে
. ওদের আপন কেবা, কেবা পর
কাটে পাট কাটে, গাড়ে ধান গাড়ে
রোদে জলে মাঠে ঘাটে ---
কাটে পাট কাটে, গাড়ে ধান গাড়ে
কবি অনুপ চক্রবর্তী (জন্ম ১৯৫৮)। আমরা গণসঙ্গীতটি পেয়েছি ১৯৯০ সালে
প্রকাশিত সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত ও সংকলিত গণসংগীত সংগ্রহ সংকলন থেকে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ক্রোধ : মানো যা ঈশান কোণে ঘনায়
ক্রোধ : মানে যা হলদি নদীর বাঁক
ক্রোধের আগুন পুড়িয়ে দিল ঘর
এবার তোরা শিল্পে বেঁচে থাক
ধানের চারা দোলে না এই দেশে
এদেশ ভরা শিশুর লাশে লাশে
কবন্ধেরা অস্ত্র চালায় শুধু
ধাতুর নিচে নিহিত উল্লাসে
আমারও হাত নিশপিশিয়ে ওঠে
আমার হাতে, একটি ধানের শিষ
লাল পতাকা উড়িয়ে নিল হাওয়ায়
ভয়ের মত বাঁচা অহর্নিশ
ভয় : মানে যা আবার ফিরে আসা
ভয় : মানে যা হলদি নদীর বাঁকে
প্রত্যাঘাত, ঘনিয়ে আসা মেঘ
সব শেষে আর ভয় পাবে কে কাকে
দ্বৈরথ
কবি সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৫৮)। এই কবিতাটি সিঙ্গুর
নন্দীগ্রাম আন্দোলন চলাকালীন, 'নন্দীগ্রাম থেকে কলিঙ্গনগর' কাব্য
সংকলনে মে ২০০৭ তে প্রকাশিত হয়েছিল।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
চা বাগানে হঠাৎ দুটি তরুনীর সাথে আলাপ কয়েক বছর আগে,
ওদের কারখানা বন্ধ। অনেক মেয়ে কারখানা বন্ধ বহার পর ঠিকানাহীন।
উন্নয়নের বিজ্ঞপ্তিতে আমর সরকার, শিল্পীত রূপে শিল্প গড়ার কারিগর রূপে
বিশেষ অর্থনীতি অঞ্চল গড়ে উঠছে ওরা কোথায় যাবে। রাঙা সন্ধ্যার বারান্দা
ধরে দাঁড়াবে।
হাতে শিল্প পায়ে শিল্প উন্নয়নের বান,
উত্তরে তাই বন্ধ হলো ১৬টা চা বাগান।
বীণা ওঁরাও নামে একটি মেয়ে, যার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল, ওর বাবা
আর দাদা দুজনেই মারা গেছে। ও এখন ছোট ভাইটাকে পড়ায়, মটরদানা বেচে।
আর ফ্যান্সিস্কো, সে এখনও সি.আই.টি. ইউ. করে। অনেকদিন তার সাথে আমার
দেখা নেই। কিন্তু ফ্রান্সিস্কোর বিশ্বাস, সি.আই.টি.ইউ. আর সি.পি.আই.এম.
দল এক নয়। একদিন নিশ্চয়ই মুক্তি আসবে। এখনও লাল স্বপ্ন দেখে যায় সে।
বীণা ওঁড়াও বাগান ছেড়ে বেচে মটর দানা
বাবা দাদা মরে হেই গল বন্ধ কারখানা।
হাতে শিল্প, পায়ে শিল্প উন্নয়নের বান
উত্তরে তাই বন্ধ হলো ১৬টা চা বাগান।
ফ্রানসিস্ কোর পেটের আগুন চোখের তারায় নাচে ,
হয়তো বা সে হারিয়ে যাবে অন্ধকারের রাতে।
হাতে শিল্প পায়ে শিল্প উন্নয়নের বান কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। ২০০৭
সালে প্রকাশিত এলবাম “রাস্তা থেকে” এর গান। রচনাকাল ২০০৭। গানটি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
হাতে শিল্প পায়ে শিল্প উন্নয়নের বান
উত্তরে তাই বন্ধ হলো ১৬টা চা বাগান।
কাঁঠালগুড়ি চা বাগানে চা শ্রমিকের লাশ
চাঁদমনিতে বিগ কমপ্লেস ,উঠছে মদের গ্লাস।
হাতে শিল্প, পায়ে শিল্প উন্নয়নের বান
উত্তরে তাই বন্ধ হলো ১৬টা চা বাগান।
আদিবাসী যে মেয়েটার শরীর চা বাগানে
ভয় নেই, তোর ভয় নেই ওরে বুলাদি-বিজ্ঞাপনে।
সবচেয়ে ভাল দেহ শিল্প বেচো শরীর খানা।
কবি যতীন সেনগুপ্ত একটা কবিতায় লিখেছিলেন ---
রাঙা সন্ধ্যার বারান্দা ধরে রঙিন বারাঙ্গনা।
সবচেয়ে ভাল দেহ শিল্প বেচো শরীর খানা।
রাঙা সন্ধ্যার বারান্দা ধরে রঙিন বারাঙ্গনা ।
হাতে শিল্প পায়ে শিল্প উন্নয়নের বান
উত্তরে তাই বন্ধ হলো ১৬টা চা বাগান।
ধান জমি পানি মাটি কামরায় ক্যাডার
চা গাছগুলো কামরে ধরে যত রেড স্পাইডার।
শিল্প হাঁকে শিল্প ডাকে দক্ষিণ ও উত্তরে
বিশেষ অর্থনীতি অঞ্চল যায় যে কড়া নেড়ে।
আমি চারণ তোমার সাথে যে যেখানে লড়
দোহাই তোমার তর্ক ভুলে জোটটা ঠিক করো।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শিশুরা নেয় বারুদের দুধ চেটে
মেয়েদের ঠোঁটে বুলেটের চুম্বন।
এখনও আমরা দাঁতে নিয়ে কলকাতা
সভ্যতা শিখি মিছিলেই পথ হেঁটে,
কি হবে আর শুনিয়ে তোকে গান
চিতায় জ্বলছে আমার নন্দীগ্রাম
বল আমাকে বুকের ভেতর থেকে
বিদ্রোহ যদি না করিস এখনও তবে
গান ছেড়ে আমি বুকে বুকে দেব শান।
শিশুরা নেয় বারুদের দুধ চেটে
মেয়েদের ঠোঁটে বুলেটের চুম্বন
এখনও আমরা দাঁতে নিয়ে কলকাতা
সভ্যতা শিখি মিছিলেই পথ হেঁটে।
অফিস কাছারি বাচ্চা পয়দা করি
পূজোর ছুটিতে ট্রেনের টিকিট কাট
বৌ মেয়ে নিয়ে চল নৈনিতাল
রক্তে ভাসুক নন্দীগ্রামের আল।
শিশুরা নেয় বারুদের দুধ চেটে
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। ২০০৭ সালে প্রকাশিত কবির এলবাম
“নন্দীগ্রাম টু মেগাসিটি” এর গান। রচনাকাল ২০০৭। গানটি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
মিছিলের পরে চায়ের দোকানে বসে
কোনটা সঠিক তুই মেপে মেপে দেখ
মেকি ঝুটা তর্ক শেষ হলে
দেখবি সামনে জ্বলছে নন্দীগ্রাম।
ভোট আসবে ভোট ভাসবে যখন
সাদা জামাটায় ইস্ত্রী করে রেখো
ত্রিস বছরে তুমিই তো মহাবাম
ভোট দিয়ো তাই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে।
চ্যানেলে চ্যানেলে প্রবুদ্ধরা হাসে
এ ফ্রন্ট ও ফ্রন্ট বাজায় শুধু ফুলু
মৃতের ভাগাড়ে শিল্প পাঁচীল তোলে
পুলিশ ক্যাডার শিল্পায়নের গুন।
আমি বিদ্রোহী পতাকার রং নেই
নৈশব্দ ভেঙ্গে করি খান খান
চাঁদমনি থেকে সোনাচূড়ার লাশে
চিত্কার আর কান্নার শ্লোগান।
আমি শুধু খুঁজি দুধের শিশুর মুখ
খুজি প্রেমিকায় আমার বোলার মা
ভাবতে চাই না বাম অথবা ডান
রক্তে সাজাই আমার নন্দীগ্রাম।
ক্রোধেও সাজাই আমার নন্দীগ্রাম
ঘৃণায় সাজাই আমার নন্দীগ্রাম
শোকেও সাজাই আমার নন্দীগ্রাম
বিদ্রোহে আমার নন্দীগ্রাম।
শিশুরা নেয় বারুদের দুখ চেটে
মেয়েদের ঠোঁটে বুলেটের চুম্বন
এখন আমরা দাঁতে নিয়ে কলকাতা
সভ্যতা শিখি মিছিলেই পথ হেঁটে।
কি হবে আর শুনিয়ে তোকে গান
চিতায় জ্বলছে আমার নন্দীগ্রাম
বল আমাকে বুকের ভেতর থেকে
বিদ্রোহ যদি না করিস এখনও তবে
গান ছেড়ে আমি বুকে বুকে দেব শান।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বছর কেটেছে প্রাচীর উঠেছে লড়াই লড়াই চাই,
আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়েছে বলো আর কটা লাস চাই।
সিঙ্গুরের বড় রাস্তা ধরে যতই চরেছি গাড়ি,
হেডলাইটের আলোতে দেখেছি তাপসীর অশরীরী।
নন্দীগ্রামে ঘুরতে গিয়েছি, ওটা পবিত্র স্থান,
ধর্ষিতা নারী খুবলে নিয়েছে আমার বিপ্লবের গান।
ভাষণে নাটকে গানেতে মেতেছে কঙ্গো ভিয়েতনাম
রাশিয়া চীন আফগান আর নিগ্রো সন্তান।
কটা দিবস হলো ক্যালেন্ডারে মারো দাগ মেরে যাও তুমি
বিপ্লব আনো বিপ্লব বেচো হে আমার জন্মভূমি।
হাততালি মারো প্রগতির পথে এগিয়ে চলো হে ভাই
সাউথ সিটিতে বিপ্লব নাচে শপিং মলে যে যাই।
কেমিক্যাল হাব হবেই হবে, তোরা ঠেকাবি তোরা ?
লজ্জা দিবস, কলঙ্ক দিবস, শুধু কালো পতাকাই নাড়া।
শ্লোগানে শ্লোগানে মাতোয়ারা কবি ধর্মতলার কবি
হেরে গেছি ভাই বলব থোড়াই গলায় পরেছি দড়ি।
কে ঠেকাবে কি ঠেকাবে তোদের পরোয়া থোড়াই ,
সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম হয়েছে বলেই শিল্প বেঁচে আমি খাই।
বছর কেটেছে প্রাচীর উঠেছে লড়াই লড়াই চাই
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। ২০০৭
সালে প্রকাশিত কবির এলবাম “রাস্তা থেকে” এর গান। গানটি শুনুন নীচের
প্লেয়ারে ক্লিক করে . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ভাগ্যিস মরেছিস, আমরা এখন ক্রিকেট খেলা দেখছি। সারাদিন ইনসাল্লা,
তোর মা আজও ইনসাফ চেয়ে বেরাচ্ছে আমিও , মরবেনা ভালবাসার
শপথ, আল্লার কসম বিচার হবেই।
রেজওয়ান তুই মর মুসলমানের ছা,
ক্রিকেট প্রেমিক রাষ্টীয় জীবি চাটুক পূঁজির পা।
রেজয়ান তুই মর, প্রিয়াকে পাশে পেলে
কানে কানে কত কথা বলতিস একসাথে মরলে।
রেজওয়ান তুই মর মুসলমানের ছা,
ক্রিকেট প্রেমিক রাষ্টীয় জীবি চাটুক পূঁজির পা।
মরার আগে সিঙ্গুর দেখেছিস, দেখেছিস তাপসী মালিক
ধর্ষণ করে মারে যারা তারা খাকি আর বামাচারী।
শুনেছিস তুই নন্দীগ্রামে আজানের সাথে সাথে
হরির লুটের বাতাসার সাথে কতগুলো লাশ পরে
অনেক দেখেছিস অনেক শুনেছিস এবার না হয় মর ,
আম্মা না হয় বুক চাপরাক পুরে যাক তোর ঘর।
রেজওয়ান তুই মর মুসলমানের ছা,
ক্রিকেট প্রেমিক রাষ্টীয় জীবি চাটুক পূঁজির পা।
রেজওয়ান তুই মর মুসলমানের ছা
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। ২০০৭ সালে প্রকাশিত কবির এলবাম “রাস্তা থেকে” এর গান।
গানটি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
ট্রেনের আওয়াজ শুনতে শুনতে একটু ঘুমিয়ে নে
মহেশ গল্পে যখন গফুর মিঞা আমিনাকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছিল
তখন সে আল্লার কাছে বলেছিলো আল্লা তোমার দেওয়া ঘাস, তোমার
দেওয়া জল, যে তাকে খেতে দিলো না তার কসুর যেন তুমি কখনো মাপ
করো না।
ট্রেনের আওয়াজ শুনতে শুনতে একটু ঘুমিয়ে নে
ওপারে গিয়ে আল্লার কসম ওদের বদলা নে।
রেজয়ান তুই মর, প্রেমের দিব্যি মর
আমরা সবাই মরব যারা প্রেম ছেড়ে করি ঘর।
তোকে লোটে যারা আমাকেও লোটে চুমুর দিব্যি ভাই
বাম বুদ্ধিজীবির বোতলে দেখবি তোর প্রেমিকার ঠাঁই।
রেজওয়ান তুই মর মুসলমানের ছা,
ক্রিকেট প্রেমিক রাষ্টীয় জীবি চাটুক পূঁজির পা।
তোর সাথে মরি বাঁচি গাই আমি তোরই লাশের গান
আসলে তুলছি প্রেমিকের সাথে প্রেমের এক শ্লোগান।
রেজওয়ান তুই মর মুসলমানের ছা,
ক্রিকেট প্রেমিক রাষ্টীয় জীবি চাটুক পূঁজির পা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ধর্মতলার মোরে এক ফালি চাঁদ আটকে গেছে ইলেকট্রিকের তাঁরে | তাই পুরোন কার্নিশের ফাঁকে বট অশথ্বের উঁকি, না মাটি
নেই, ঘাস নেই, জল নেই, জঙ্গল নেই, চড়াই পাখি নেই, শালিখ নেই, হয়তো কাকও থাকবে না | নেই পূর্ণিমা রাতে অদ্ভুত
ধানের রস খেয়ে ফেলে চাষীর মেয়ের নাচ, প্রেম, কিছুই নেই, শূন্যতা, শুধুই শূন্যতা ভালবাসো আর বিদ্রোহ করো , প্রকৃতি
তোমায় তাই শিখিয়েছে, ঋণ শোধ করো, শুধু ঋণ শোধ করো।
মাটি হও, প্রেম হও, হও কামনা,
ঘাস হও গান হও, হও বেদনা
মাটি হও প্রেম হও, হও কামনা,
ঘাস হও, প্রেম হও, হও বেদনা,
কিষাণের পেশী হও হাতের কাস্তে
আদিবাসী বনবালার খোপার জবাতে।
ধামসা মাদল হও টাঙ্গি আর তীর
পাহাড় জঙ্গল আর সাগরের তীর
মাটি হও প্রেম হও, হও কামনা,
ঘাস হও, প্রেম হও, হও বেদনা,
মাটি হও, প্রেম হও, হও কামনা
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। কবির এলবাম “রাস্তা থেকে” এর গান। রচনাকাল- ২০০৯।
গানটি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
এসো ভালবাসি আর বিদ্রোহ করি
ধানের মতই প্রেম কামনার ভূমি
ভালবাসা বিদ্রোহ এক হলো আজ
দেহে মনে ডাক আনে প্রেমের স্বরাজ
হাতে হাত রেখে চাও আকাশের দিকে
ভালবাসা নেই তাই ভালবাসা দিতে
মাটি হও প্রেম হও, হও কামনা,
ঘাস হও, প্রেম হও, হও বেদনা,
গাছ হও ছায়া দাও ফুল আর ফল
পশু আর পাখি হও, হও নদী জল,
এসো আদি মাতা এসো চুম্বন করি
এ সভ্যতা ধ্বংসের প্রতিজ্ঞা করি।
ভালবাসা বিদ্রোহ প্রেমে পরে আজ
হাতে হাতে বানাবে নতুন সমাজ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আবার উঠে এসেছে ১৯৫৯ সাল, আনন্দ, নুরুল শহীদেরা ওদের হাতে ভাত | খাদ্য মজুত আড়তে, ভাঙছে
ভাঙছে আনন্দ নুরুলেরা সব ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে | রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে তাইতো সরব গ্রাম বাংলা |
রাত্রিটা চুপিচুপি গুমরায়, অনেক বছর ধরে কাঁদে।
গ্রাম বাংলায় এলোকেশি রাত্রি, বন্দী রেশন ডীলারদের ফাঁদে।
অনেক বছর ধরে বন্দী হয়তো বা অনেক দিন ধরে ভুখা
পেটে অন্ধকারে কারা যেন পায়ে পায়ে হাটে।
রাত্রিটা চুপিচুপি গুমরায়, অনেক বছর ধরে কাঁদে।
গ্রাম বাংলায় এলোকেশি রাত্রি, বন্দী রেশন ডীলারদের ফাঁদে।
হঠাৎ জ্বলেছে পেটে আগুন রাত্রিটা আলোকিত হয়
তীব্র চিত্কার হেনে পোড়াও হে আগুনের জয়
পোড়াও হে ক্ষুধিতের রাজ্য, পোড়াও হে রাত্রির অন্ধকারে,
লাঠি দাঁ কোদাল ও সড়কি উঠে আসে জনতার হাতে।
রাজনীতিরই চালে মজুত, মজুত হলো কত চাল
কেরোসিন মিলবে না কেন, মানুষের ক্রোধে ওঠে গান
আমি দেখি ফের ঊনষাট, দেখি আমি আনন্দ, নুরুল
গ্রাম বাংলায় লাঠি হাতে হাতে ভাত দেয় মানুষের পাতে।
গ্রাম বাংলায় লাঠি হাতে হাতে, ভাত দেয় মানুষের পাতে।
রাত্রিটা চুপিচুপি গুমরায় কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)।
কবির এলবাম “রাস্তা থেকে” এর গান। রচনাকাল- ২০০৭। গানটি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আদিবাসীদের জঙ্গল থাক,
মাটির নীচে আমি---
মেরিকা বা জাপানের কাছে
বেঁচে দেব সব খানি।
দান্তেয়ারা থেকে বুড়িশোল নাচে,
বাজে ধামসা-মাদল, হাঁকে হুল ;
“হুল জোহরের” শপথে আপনি
রাষ্ট্রের চক্ষুশূল।
আপনি কে ছিলেন! মাওবাদী নেতা?
নাকি গান্ধীবাদী?
জানতে চায় না হাঁসদা, টুডুরা,
সাঁওতাল মাণ্ডি।
বুনো জঙ্গলের গাছের পাতাও
চিনে রাখে আপনাকে,
জঙ্গল দেয় শেল্টার তাই,
জানে, তাদেরও বাঁচাবে কে?
আপনাকে গাইছি কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায়
(জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। কবি কাঞ্চন কুমার সম্পাদিত “যুদ্ধে ছিলে স্বপ্নে আছো” (২০১২)
কাব্য সংকলন থেকে নেওয়া।
পরিবর্তন এল বাংলার বুকে---
কী হলো মানুষের?
কেন! ভোট দিয়েছ তো?
ব্যস উগ্রপন্থা খতম ; জঙ্গল কারাগারে।
তবুও আপনি বা আপনারা ছিলেন,
হয়তো আছেন আরো---
“এনকাউন্টারে” মরুন আপনি,
তবু---জারি থাকে বিদ্রোহ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
জঙ্গল খাব, আদিবাসী খাব
বাঁধা দেয় কে ছত্রধর ?
দাও জেলে পুরে, মাওবাদী সে যে
লাশ হয়ে যায় বীর শশধর।
জঙ্গলে ঘোরে অজগর ফণা,
রাত্রির চোখে চোখ রেখে,
আদিবাসীরা সব মাওবাদী
ধর বাঁধ রাখো জেলে পুরে।
তবু কারা যেন স্বপ্নই দেখে
জলপাই রঙে জঙ্গলে ঘোরে
চোখে বিদ্যুৎ. প্রতিজ্ঞা হাতে
ওরা বীর আমার ছেলে মেয়ে।
কালো দেহগুলো উঠছে ফুঁসে,
সবুজের সাথে মিশে মিশে ---
মরবে কত শশধরেরা
জন্মায় ওরা রক্তবীজে।
মাওবাদী আদিবাসী
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)
২০০৭ সালে প্রকাশিত কবির এলবাম “রাস্তা থেকে” এর গান।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
নীরবতা ভাঙ্গো
নীরবতা ভাঙ্গো
অনেক তো হলো দেখা
দেখলে কামদুনি,
সুজাট, বারাসাতে
যাদবপুরে রাত
অন্ধকারে নামে
“নতুন হার্মাদ”
গানওয়ালার সুরে ডাকি—
“কন্ঠ ছাড়ো জোরে”
ফের দেখা হোক রাস্তায়
নতুন কিছুর খোঁজে
কি হবে বলো ভেবে
অনেকতো দেখে নিলে
এটাকেও দাও ফেলে
যাক সরকার রসাতলে
আমার ছেলে-মেয়ের গায়ে
রক্তের গন্ধ ওঠে
নীরবতা ভাঙ্গো
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। ২৮শে অগাস্ট ২০১৪ তারিখে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়। নিগৃহীতা ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার
নিরপেক্ষ তদন্তের ক্ষেত্রে, উপাচার্য মহাশয়ের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও কর্তাভজা মনোভাবের বিরুদ্ধে
ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ-অবস্থানে নামেন, যা “হোক কলরব” আন্দোলন নামে খ্যাতি লাভ করে। সেই
আন্দেলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত এই কবিতাটি, সেই সময়ে মিলনসাগরের হোক কলরবের দেয়ালিকায়
তোলা হয়।
ফের বিদ্রোহ তোকে ডাকি
ওদের মৄত্যু কামনা করে
নৈরাজ্যই আসুক নেমে
বিশ্বাস নেই কোনো দলে
প্রস্তুত হও বন্ধু
সবই হয় একজোটে
দেখা হবে তোমায় আমায়
গণঅভ্যুত্থানে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
কিনেছো তো কামদুনিতে
কিনেছো তো কামদুনিতে
আরো কতো কতো অন্যায়
এবারো কিনলে ভাবছো
লেলিয়ে পুলিশ আর গুন্ডায়
মিছিল ছিলো তরুণ-সবুজ
পাল্টা মিছিলে কিনলে কাকে?
ভাবছো বোধহয় কিনে কিনে
কিনে নেবে আমার ভয়
ভুল ভেবেছো থমকে থাকা
সময়টাকে কেনাই যায়
কিন্তু সময় নড়বে যেদিন
দেখবে সেদিন পাল্টা মার
ইতিহাস কি বলেগো?
তোমার হাতে বন্দি সে?
কিনেছো তো কামদুনিতে
কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। ২৮শে অগাস্ট ২০১৪ তারিখে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়। নিগৃহীতা ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার
নিরপেক্ষ তদন্তের ক্ষেত্রে, উপাচার্য মহাশয়ের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও কর্তাভজা মনোভাবের বিরুদ্ধে
ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ-অবস্থানে নামেন, যা “হোক কলরব” আন্দোলন নামে খ্যাতি লাভ করে। সেই
আন্দেলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত এই কবিতাটি, সেই সময়ে মিলনসাগরের হোক কলরবের দেয়ালিকায়
তোলা হয়।
মুচকি হেসে গুনছে প্রহর
দেখছে তোমার মূর্খতা
কিনতে কিনতে নিজের মাকেও
বেচবে নাকি হাটে-মাঠে?
নিজের বাড়ির সব মেয়েকে
তুলে দিও “দলে”-র হাতে
পুলিশ দিয়ে খাইয়ো তাদের
রাতে-দিনে-অন্ধকারে
তারপরেতে সামলাবে তো?
হাসছে তোমার ভাগ্যটা
“মাথার ওপর জ্বলছে রবি”
তৈরি সোনার ছেলে-মেয়ে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
কারা কারা নাগরিক কারা কারা নয়
দেশদ্রোহীরাই দেশপ্রেমী হয়।
কারা কারা নাগরিক কারা কারা নয়
দেশদ্রোহীরাই দেশপ্রেমী হয়।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
জঙ্গলে আদিবাসী উচ্ছেদ চলে
দলিতদের ওরা পুড়িয়ে মারে।
জঙ্গলে আদিবাসী উচ্ছেদ চলে
দলিতদের ওরা পুড়িয়ে মারে।
এদিকে "মেরা দেশ মহান" হলো তাই
ব্যাঙ্ক লোটে নীরব-ললিত-মেহুলি ভাই।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC যাক চুলায়।
NRC যাক চুলায় NRC যাক চুলায়
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
NRC নয় কথা সুর ও কণ্ঠ - কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)। NRC বিরোধী গান
। কবিকণ্ঠে ভিডিওতে গানটি শুনুন। ভিডিওটি সৌজন্যে Punyatoya YouTube Channel.
বন্ধ কারখানা বেকার শ্রমিক
বিষ সারে ক্ষেত মরে, ঘরে বিদেশী বণিক।
বন্ধ কারখানা বেকার শ্রমিক
বিষ সারে ক্ষেত মরে, ঘরে বিদেশী বণিক।
বীজের দাম বাড়ে, নেই ফসলের দাম।
বীজের দাম বাড়ে, নেই ফসলের দাম
হাইটেক সিটির নামে উচ্ছেদ কৃষাণ।
No NRC, No NRC, No NRC, No NRC,
No NRC, No NRC, No NRC, No NRC,
No NRC, No NRC,
ধর্ষিতা কতদিন কতগুলো মেয়ে
লুটেরা সব লোটে মেয়েদেরও লোটে।
ধর্ষিতা কতদিন কতগুলো মেয়ে
লুটেরা সব লোটে মেয়েদেরও লোটে।
লুট হয় পাহাড় জঙ্গল আর
খনি থেকে তামা লোহা পগার পার।
বল NRC নয়, NRC নয়, বল NRC নয়, NRC নয়
বল NRC নয়, NRC নয়, বল NRC নয়, NRC নয়
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
দেশ অধিকার আর পূর্ণ স্বরাজই চায়।
সরকারি কোম্পানি বন্ধ করে
বেচে দেয় সব কিছু বিদেশী বাবুরে।
সরকারি কোম্পানি বন্ধ করে
বেচে দেয় সব কিছু বিদেশী বাবুরে।
ভাষা আর ধর্মের বিভেদ ঘটায়
ওরা হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান চায়।
বিদেশী বাবুদের বেচে দেয়
বেচে দেয়, বেচে দেয়,
বেচে দেয় ওরা হিন্দু হিন্দী হিন্দুস্তান চায়
এদেশ আমার
বল NRC নয়, NRC নয়, বল NRC নয়, NRC নয়
এদেশ আমার, এদেশ আমার, এদেশ তোমার বল
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়, NRC নয়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
নাগরিকপঞ্জী কোথায় গেল
কাগজ দেখানো গেলো কোথায়
করোনা ভাইরাস এসে দেখো
দেশের ব্যবধান মুছে দিল।
মৃত্যু কার নাগরিক বলো
মৃত্যু কার দেশ লেখে
মৃত্যু কিসের পঞ্জী দেখায়
(অথবা) ডিটেনশন ক্যাম্পে ডাকে?
ডিটেনশন ক্যাম্প কেমন আছো
তোমাদের নিয়ে ভাবছে কে ?
রাষ্ট্র মাস্কে মুখ ঢেকে
করোনা ছোবল সামলাচ্ছে।
তবু বলি করোনা যাও
মানুষ ভালো হয়ে উঠুক
করোনা রোগের অবসান হোক
মানুষের সংকট কাটুক॥
নাগরিকপঞ্জী কোথায় গেল
কবি অসীম (গিরি) বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৭.৮.১৯৫৯)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
পোড়া মাংসের গন্ধ বাজেমেলিয়ার অনশন মঞ্চ
পর্যন্ত পৌঁছায়নি অথচ আকাশ বারুদে মেঘের
উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছে......
মা লক্ষ্মী পাটে আসীন হতে গিয়ে নূতন চালের
ভাত ছড়িয়ে কাকে ডেকে এনেছেন?
মুখে ছাই পুরে শেষমেশ তোকেই......
মাঠে ধান, কলামুলো দাঁত বার করে হাসছে
সেচের অপেক্ষায় থেকে পাতার ক্লোরোফিল
জমিয়ে রাখছে শিশিরের অশ্রুকণা
যাবনা বলেও উন্মাদিনী তোকেই যেতে হল?
আর ফিরেই যখন এলি তখন লাশ
'এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়' মাটিও আমার নয়
RAF পুলিশের কনভয় ঘোরে
গৃহদেবতার থানে, প্রিয় পাখীটিও গিয়েছে উড়ে
দেবী কোনদিন পাটে বসবেন না......
পায়ের শর্ষে রেখে যা, এবারের মত ফিরে আয়
তুই ফিরে এলে তোকে শ্মশানের কাঠ চিরে
জলচৌকি গড়িয়ে দেব......
তুই ফিরে আয় কবি তপন কর (জন্ম ১৯৫৯)। সিঙ্গুরের কবিতা। এই কবিতাটি মিলনসাগরে
কবির পাতায় প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৭ সালে। কবিকণ্ঠে আবৃত্তি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শ্মশানে কার লাশ? জানে না প্রতিবেশী
চাষীর মৃতদেহ ঘিরে শকুনের উল্লাস শুনি শুধু
মৃতের চোখ ছুঁয়ে মায়ের কোলে শোয় দামাল শিশু
শ্মশানে কার লাশ? ভয়ে বলেনি কেউ চেনা
মৃত্যু জীবন নয় জানি, মৃতের জীবন থাকে না
শুধু মনে পড়ে
আমিও লাশ হলে মৃতদেহ উঠোনে রেখে
সন্ততি শোকস্তব্ধ আগুনে হাত সেঁকতে সেঁকতে
১৪৪ ধারা পেরোবে?
শ্মশানে কার লাশ জানে না পুলিশ!
শ্মশানে কার লাশ কবি তপন কর (জন্ম ১৯৫৯)। সিঙ্গুরের
কবিতা। এই কবিতাটি মিলনসাগরে কবির পাতায় প্রথম প্রকাশিত হয়
২০০৭ সালে। কবিকণ্ঠে আবৃত্তি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এ জমি আমার বলে চিত্কার করে ওঠে
চাষী, মাঠের ধান পড়ে থাকে মাঠে
সান্ কি মেরে ধান নিয়েছে
কানকি দিয়ে মান বেচেছে
জমিন দিয়ে পেট
জলের দরে ভিটে বাড়ি
পেটের ছেলের জেলেই পাড়ি
বন্ধ হল গেট
মুত্রে ধুয়ে লাল পতাকা, শূলের দণ্ডে
শুকিয়ে নিয়ে লাশ ঢেকেছে এ তল্লাটে
আয় যাবি কে মুক্তি পেতে বর্গা কাণ্ডে
জমিয়ে রাখতে লক্ষ্মীভাণ্ডে মন্ত্রপূত মুণ্ড চারটে
ঠিকঠাক অগ্রপথিক
দলে দলে শিল্প শ্রমিক
এগিয়ে যাচ্ছে কৃষির ভিত্তি স্বপ্ন সফল কারখানাতে
নিজের পিছন নিজেই মেরে হাসছে গাড়ল হাড় হাভাতে !
চাষের জমি কবি তপন কর (জন্ম ১৯৫৯)। সিঙ্গুরের কবিতা।
এই কবিতাটি মিলনসাগরে কবির পাতায় প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৭
সালে। কবিকণ্ঠে আবৃত্তি শুনতে নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করুন . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বাড়ি বাড়ি কাজ করে,
ছোট মেয়ে ঝুমকো।
বয়সটা হবে বারো,
তার বেশি নয়কো॥
বস্তিতে থাকে মেয়েটি,
চেহারাটা শীর্ণ।
মা বাবা থাকে সাথে,
ঘরখানা জীর্ণ॥
ঘর মোছে, ঝাঁট দেয়,
মুখে হাসি লেগে রয়।
ফুরসত মেলে যদি,
পাকা পাকা কথা কয়॥
এক দিন না এলে,
ঝুমকোর ডাক পড়ে।
এরপর ও না এলে,
গিন্নির রাগ চড়ে।
পরিচারিকা
কবি রূপক ঘোষ (জন্ম ১.১.১৯৬০)
রচনাকাল ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৭ (২০২০)।
আমি বলি রাগ কেন?
নাই বা ও আসলো।
মিলে মিশে একদিন,
সবাই কাজ করলো॥
মুখ খানা হাঁড়ি করে,
পাশ থেকে উঠে পড়ে।
সারাদিন গজ্ গজ্,
যাকে পারে মুখ করে॥
তিন দিন পরে কাজে,
ঝুমকো যেই আসলো।
দু-চার কথা তাকে,
শুনিয়েই ছাড়লো॥
কোন কিছু না বলে,
অভিমানে কাজ সারে।
কেন সে যে আসে নি,
জিজ্ঞাসা করে নি তারে॥
মনে মনে ভাবে মেয়েটি,
কি ছিল তার দোষ?
বাপ টা যে মারা গেছে,
হয়নি মরার বয়স॥
এরপর একদিন ঘটনাটা ঘটলো,
সোনার গলার হার ঘর থেকে হারালো।
চিৎকারে বাড়িময় হই চই জুড়লো,
চুরির ঘটনায় ঝুমকো কে জড়ালো॥
নানা জনে নানা ভাবে,
জেরবার করলো।
কিছুই জানি না বলে,
হাত জোড় করলো॥
এরপরে থানা - পুলিশ,
কত কিছু ঘটলো।
হার খানা না পেয়ে,
জেলে তাকে ভরলো॥
হঠাৎ জানা গেল,
হার চুরি যায় নি।
কোথা যেন রাখা ছিল,
মনে কারো পড়ে নি॥
ছাড়া পেয়ে মেয়েটি বলে,
চুরি আমি করি নি।
গরীব বলে মোরে,
বিশ্বাস কর নি॥
এটাই নিয়ত ঘটে থাকে সমাজে,
লজ্জায় মাথা নত হয় না আমাদের।
অপবাদ দিয়ে থাকি খেটে খাওয়া শ্রেণীকে,
তারপর ও নিয়ে থাকি সেবাটুকু গরীবের॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এত দিন তো হয়ে গেল---
কই! আর তো কাউকে সরব হ'তে দেখা যাচ্ছে না!
NEWS এর পর্দায় দেখা যায় লাল ধোঁয়া---
পুলিশের গুলিবর্ষণ আর ভয়ঙ্কর আর্ত চিত্কার
14th March এর শিহরণ ঘটে তখন
হঠাত্ - এক ঝলক্, তাই না?
প্রশাসনিক তর্ক-বিতর্ক-উতোর চাপান-
অসহায়ের অসহ্য রাগের
নিষ্ফল আস্ফালনের শুধুই ভাঙচুর---
জ্বালিয়ে ছাড়াখাড় করে দিতে
পারে না তবুও---
সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের চাষী ও জমির খবরের চূড়োয়
এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অন্যায়ের
ধূষর ধোঁয়া---
চারিদিক স্তব্ধ --- ১০০ ঘর এখনও বন্ধ---
নন্দীগ্রামের উঠোন শূণ্য ---
গাছে ফুল ফোটে না, আকাশে ঘুড়ি ওড়ে না---
নন্দীগ্রামের পাখীরা কি আর ডাকে!?
কবি সোনালী সেনগুপ্তা (জন্ম ৬.২.১৯৬০)। এই কবিতাটি মিলনসাগরেই ৬ এপ্রীল ২০০৭ এ প্রখম
প্রকাশিত হয়েছে। অয়ন সেনগুপ্তর কণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করে . . .।
শিশু বুড়ো নারী পুরুষের দল চলেছে
মৃত্যুর মিছিলে---
শুধুই কান্না - আর্ত চিত্কার - ধ্বীক্কার ---
ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে মায়েদের আঁচল - লাল!
পাখীরাও আতঙ্কিত - কুজন স্তব্ধ চারিদিক
আনন্দ! ওরা কি আর জানে - ভুলেছে সব---
তাই নন্দীগ্রামের পাখীরা আর ডাকে না।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আরো তিনটি দিন গেল চলে ---
অন্যভাবে অন্য রঙে-স্বাদে ---
এখানে গরম নেই ---
নেই কোন হৈ চৈ ---
কোন উত্তপ্ত আবহাওয়া
কি সুন্দর ঠাণ্ডা আর রোদ ঝলমলে ---
নন্দীগ্রাম! সে কোথায়? কতদূর!
TV তে চিত্কার, ঘুরে দেখি কি ব্যাপার!
সবাই সরব! অশান্ত সোচ্চারে!
এখনও তাদের হাতে মশাল যে জ্বলে!
এটাই কি ঠিক তবে ---
দেখছে যা চোখ ভোলে ---
কাছ থেকে দূরে গেলে চলে?
এটাই কি ঠিক তবে ---
রাজারা বলেন যা,
ভুলে যান শতদূর গেলে?
তাই কি পারেন তারা নিশ্চিন্তে
খেতে-শুতে-ঘুমাতে
গনগনে জ্বলন্ত মশালে !!
এখনও যে শুনি তাই
নন্দীগ্রামে শান্তি নেই ---
. অশান্ত খেজুরিও জ্বলে।
খেজুরিও জ্বলছে কবি সোনালী সেনগুপ্তা (জন্ম ৬.২.১৯৬০)। এই কবিতাটি মিলনসাগরেই
১০ এপ্রীল ২০০৭ এ প্রখম প্রকাশিত হয়েছে। কবিকণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করে . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
সুদূর শহরের আমি এক
. সাধারণ গৃহবধু,
শুনেছি - দেখেছি তোমার কোলাহল,
. তোমার দুঃখ কষ্ট অভিমান
. --- তোমার অন্তর্দ্বন্দ্ব
সুস্থ জীবনের আকাঙ্খায়
. ব্যাকুল তুমি ---
. আমরাও !
তোমার আর্তচিত্কার এনেছে ত্রাস
. শহর থেকে শহরান্তরে,
একটি নির্মল - সুস্থ - সুন্দর - সরল
. এই বাংলার পবিত্র গ্রাম ---
. আজ কেন এই দশা?
আমরা এখনও বিচারের আশায় ---
এ এক প্রহসন জেনেও -
টেনে নামাতে পারেনি মূখ্যমন্ত্রীকে
. এখনও, আছেন তিনি
জীবনের চিত্কার সেখানে পৌঁছবে না জেনেও।
হে নন্দীগ্রাম! কবি সোনালী সেনগুপ্তা (জন্ম ৬.২.১৯৬০)। এই কবিতাটি মিলনসাগরেই ২৭
সেপ্টেম্বর ২০০৭ এ প্রখম প্রকাশিত হয়েছে। কবিকণ্ঠে আবৃত্তি শুনুন নীচে প্লেয়ারে ক্লিক করে . . .।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মশারি গুঁজে দিয়ে যেই সে শোয় তার
স্বামীর কালো হাত হাতড়ে খুঁজে নিল
দেহের সাপব্যাঙ, লাগছে ছাড় দেখি
ক্রোধে সে কালো হাত মুচড়ে দিল বুক
বলল, শোনো শ্বেতা, ঢলানি করবে না
কখনও যদি ওই আকাশে ধ্রুবতারা
তোমাকে ইশারায় ডাকছে দেখি আমি
ভীষণ গাড্ডায় তুমিও পড়ে যাবে,
শ্বেতার শ্বেত উরু শূণ্যে দুলে ওঠে
আঁকড়ে ধরে পিঠ, স্বামীর কালো পিঠ।
স্বামীর কালো হাত
কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ২৭.৩.১৯৬০ - ২৮.৫.২০১১)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এ বার পেঁয়াজ আদা টক দই টাটকা রসুন
আলু আর শালগম দিয়ে
ডেকচিতে ঢিমে আঁচে তরুণীর মাংস কষুন
দাউ দাউ আগুনের মধ্য থেকে সিঁদুরের টিপ
একটি কাজল চোখ ভাসলেও
টাকার বান্ডিল ছুঁড়ে রুখে দিন পুলিশের জিপ
মেয়েটির কি কি দোষ ? বাপ দেয় নি যৌতুক
এ তো স্বতঃসিদ্ধ, কালো মেয়ে তবু
মারলেই প্রতিবাদ করে ওঠে এমনই কৌতুক !
ঠাকুরের ঘরে বসে শশুর লেখেন---
"এ মেয়েকে জলজ্যান্ত রাখা খুব মুশকিল ছিল
ভাগ্যবান ছেলে তাই বউটাকে আগুনে সঁপিল"
আগুন
কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ২৭.৩.১৯৬০ - ২৮.৫.২০১১)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আমি বিলাসিনীদের কাপড়ে নক্সা তুলি, সামান্য জীবিকা
পোকা আলু আর আতপ দেয় হাত ভরে
ভাসুরের কাছাকাছি এলোচুলে থাকি না কখনও
খোঁপায় জড়িয়ে নেব লাল ফিতে, কাস্তের ফলক
ক্ষেতের ফসল তিন ভাগ হবে, দুই ভাগ গৃহমূষিকের
উনুনের চার পাশে বসে হাত গরম করছি |
দূরের চাষিকে শালপাতা মুড়ে খবর পাঠাও
আনো কেরোসিন, যদি দরকার হয় আগুন জ্বালাব
তেভাগার ডায়েরি
কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ২৭.৩.১৯৬০ - ২৮.৫.২০১১)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
স্কুলবাসের বাচ্চা মেয়ে
সবার শেষে নামে
সঙ্গীগুলো বিদায় নিলে
তার কেন গা ঘামে !
বাসের কাকু বাসের চাচা
কেমন যেন করে
হঠাত্ গাড়ি থামিয়ে দিয়ে
আমায় নিয়ে পড়ে
কাকু জেঠুর মতন নয়
দুষ্টু লোক ওরা
মাগো আমার বাস ছাড়িয়ে
দাও না সাদা ঘোড়া !
দুষ্টু কাকু দুষ্টু চাচা
থাকুক না তার ঘরে
বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে কেন
অসভ্যতা করে !
বালিকা ও দুষ্টু লোক
কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ২৭.৩.১৯৬০ - ২৮.৫.২০১১)
বালিকাকে যৌনহেনস্থার দায়ে স্কুল বাসের ড্রাইভার ও হেল্পার
ধৃত -- সংবাদ, আগস্ট, ২০০১।
এই পৃথিবী সাদা কালোয়
মন্দ এবং ভাল
তবু কেন এই জীবনে
ঘনিয়ে এল কালো ?
আমার কিছু ভাল্লাগে না
স্কুলের বাসে ভয়
মাগো তোমার পায়ে পড়ি
ওই বাসে আর নয়
আমাকে আর কিছুতেই যেন
না ছুঁতে পারে ওরা
আমাকে দাও সবুজ মাঠ
পক্ষীরাজ ঘোড়া।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ঊর্বশীর মেয়ে ওরা মধু মঞ্চে নাচতে এসেছে
সমস্ত শরীর যেন প্রতিবাদ, সালমা খাতুন
কালো সালোয়ার পড়া মেয়েটি দাঁড়াল মঞ্চে এসে
ওর কণ্ঠে কথা বলে উঠেছিল কথামানবীরা
দৃপ্ত কালো আগুনের মতো ওই মেয়েটিকে দেখে
বুঝতে পারেনি কেউ
ওর রক্তে ঢুকে গেছে পজিটিভ এইচ আই ভি
একটা একটা কোষ মরে যাচ্ছে পল অনুপল
আর মাত্র এক মাস আয়ু আছে ওর
বেবি সিং মঞ্চে এসে দাঁড়াল এ বার
রোগা ঝর্নার মতো তিরতিরে মেয়ে
নাচের মুদ্রায় এত তির্যক বিদ্রোহ !
বাপের হদিশ ঠিক বুঝতে পারেনি কোনও দিন
মায়ের ধারণা, কোনও সর্দারজিই হবে ওর বাপ
বেওয়ারিশ জন্মের লজ্জায় ঘৃণায়
হোমে থাকতে এসেও মাঝরাত্রে কেঁদে ওঠা বেবি
পচা সমাজের দিকে নাচের মুদ্রায় যেন লাথি ছুড়ছিল --
বীণা সর্দার খালি গলায় এমন গান গেয়ে উঠল যে
মধুসূদন মঞ্চের বাতাস করুন হয়ে এল
তেজী হরিণীর মতো সারা মঞ্চে নেচে বেড়াচ্ছে সে
কে বলবে, তিনবার ওকে বিক্রি করে দিয়েছিল ওর বাবা !
রেডলাইট নাচ
কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ২৭.৩.১৯৬০ - ২৮.৫.২০১১)
নেপাল বর্ডার থেকে পুলিশ উদ্ধার করে এখানে এনেছে
পুরনো কথার ঘায়ে মাঝে মাঝেই ওর মাথা খারাপ হচ্ছে।
গঙ্গা মল্লিক এই মঞ্চে এসে কী আশ্চর্য কবিতা বলছে !
কথামানবীর কণ্ঠে শাহবানু, বেহুলা, দ্রৌপদী
কী ভাবে গঙ্গার মধ্যে সব একাকার !
বালিকা বয়সে ওর কাকা ওকে নিয়মিত ধর্ষণ করত
দগদগো ক্ষত নিয়ে কথামানবীর মঞ্চে এখন সে বাঁচতে এসেছে
বীনা গঙ্গা বেবি বা সালমা, ফুটফুটে এই কিশোরীরা
যে কেউ আমার ছাত্রি হয়ে ব্যাগ কাঁধে এসে দাঁড়াতে পারত
মহারাণা কাশীশ্বরী কলেজের দরজায়
বদলে ওদের কোও স্কুল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে
মার খাওয়া জন্তুর মতো পালিয়ে এসেছে ওরা মাথা নিচু
ঊর্বশীর মেয়েগুলি আমাদের পৃথিবীতে বাঁচতে চাইছে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
অন্ধকারে কালো কাপড় পরে
আম্রপালী পালিয়ে যায় বলিদ্বীপের খাঁজে
পেছনে তার সাংবাদিক, গুপ্তচর আর
গণসভার লোলুপ আততায়ী
ত্রস্ত চোখ। লাস্য তার আচ্ছাদিত বিষাদ কালো মেঘে
আম্রপালী বাঁচতে চায়। সমাজ চায় প্রমাণ লোপ হোক
সুনন্দিত কপালে তার সদ্য ক্ষত দাগ
ঢিল মেরেছে পুরুষ, যারা প্রেমিক ছিল আগে
ঢিল মারছে গ্রামের মানুষেরা
"নষ্ট মেয়ে, মেরে তাড়াও", রব তুলেছে পঞ্চায়েত
আম্রপালী ঘুরে তাকায়, দেখে
এরা সবাই রাতনাগর, ওই নন্দ, ওই যে শ্যাম সব
এরাই তাকে নামিয়েছিল চোরাবালির ফাঁদে
গণিকালয়, মীনাবাজার তৈরী করে কারা?
প্রতি যুগেই ইন্দ্র কেন ঊর্বশীর অধীশ্বর হন?
আম্রপালী প্রশ্ন করে, প্রশ্ন মুছে যায়---
অন্ধকারে সাদা কাপড় পরে
আম্রপালী শরণ নেয় অমিতাভর পায়ে
আছড়ে পরে শান্তি চায়। পেছনে ছুটে আসে
হাউস অব কমনস এর গুপ্তচর দল
আম্রপালী
কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ২৭.৩.১৯৬০ - ২৮.৫.২০১১)
হাসপাতালে আম্রপালী আরোগ্যের জন্য শুয়ে থাকে
তখনও তার চতুর্দিকে টেলিভিশন-চোখ
প্রত্যুষের আগেই তাকে বিম্বিসার অস্বীকার করে
এই পুরুষ, এই প্রেমিক, বৈশালীর সুনাগরিকগণ
গণসভায় রায় দিয়েছে---
"আম্রপালী পরম নারী, নিয়তি তার নগরনটী হওয়া"
আম্রপালী পালিয়ে যায়, পেছনে তার সমাজ তাড়া করে
আম্রপালী বাঁচতে চায়, সমাজ চায় প্রমাণ লোপ হোক।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এ মৃত্যু মিছিলের ভূমি , এ পৃথিবী আমার নয়
রেহাই পায় না প্রতিবাদী ডাক্তার , মুক্তমন কবি
ধর্মের নামে জাতের নামে নিত্য হানাহানি
বদ ঔরস জাত এ ভূমি কি করে আমার হয়?
নিত্য ঘুম ভেঙে ওঠার পর প্রস্তুতি শব মিছিলের
মানুষ জানে না কার দোষে কার পাপের ফলে
শুধু দোষারোপ এক থেকে বর্তায় অন্যেতে
আমার জন্ম এ স্থানে ? আমি যাজক এই ভাগাড়ের?
এ ভূমিতে মনুষ্যত্বের মাপকাঠি সাতাশ তলার প্রভু
এ ভূমিতে কই দেখি না তো দাপিয়ে চলা কোনো সাধারণ
এ ভূমি রেষারেষি গণতন্ত্রের একছত্র ময়দান
এ ভূমি বিশ্বের বিষ্ময় ! এ বিষ্ময় আমার কি ছিল কভু?
কারা যেন গড়ার কারিগর, জেহাদ করেছে জারি
যত কিছু এতো কালের, জীর্ণ দীর্ণ যতো রাজ্যের পর
লোপাট করতে হবে । গড়ে দিতে হবে নব্য কারিগর
এ সাফাইয়ের ভূমি কি কোনো কালে আদৌ আমারই?
নিয়ত প্রশ্ন ঠোকর কষায় কাঠঠোকরারা যতো
কোন বেজন্মা জারজ সন্তানের কৃতকর্ম এই হীন
আজকের এই বাঞ্জার পৃষ্ঠভূমি, অক্সিজেন বিহীন
প্রাণ বায়ু বিহীন এই কী অধিকার আমার, তোমার মতো?
এ পৃথিবী আমার নয় কবি অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৮.৭.১৯৬০)। মিলনসাগরে “করোনা
ভাইরাস ও পরিযায়ী শ্রমিকের দেয়ালিকায়” প্রকাশ ২৪.৪.২০২১।
নভে ডানা মেলে উড়ে উড়ে ফেরে শত সহস্র গিধ্
ওরাও যে জেনে ফেলেছে আর বাকী নেই
কিলবিল করতে থাকা মানুষের আয়ু এ ভূমির
এ মাটি আমার ? এই আমার শক্তপোক্ত ভিত?
মানি না । এর চাইতে সে অরণ্যই তো ছিল ভালো
সম্পদ নেই , রেষারেষি নেই , নেইকো গণতন্ত্রই
আগুনের আঁচ নেই , অস্ত্র বলতে ভোঁতা পাথরই সই
এ অনুর্বর আমার নয় ! আমার অরণ্য তবুও ছিল ভালো....
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
অদ্ভুত নিঃসাড় চারপাশে , এত ক্ষয়
কেমন যেন ঘিনঘিনে একক যাপন
চেনা মুখ-সব কঠিন মমি মনে হয়
তারারা জ্বলা-নেভা ভুলেছে অকারণ
তবে কি ঘোর অমাবস্যা এখন পৃথিবীতে
চাঁদ মরে গেছে , ফুল ফুটবে না কখনও
মেঠো ইঁদুর ঘাই মারে বরফ শরীরেতে
এত শবাধার আগে দেখেছ কেউ, কখনও
নোয়া, এবারে নৌকো সাজাও তবে
পাখি চাই, ফুল বীজ সমস্ত প্রজাতি
ভাল যত কিছু সঙ্গে নিতে হবে নীরবে
.....অবশ্য কিছু মানব-মানবীও হবে সাথী
ফেলে যেতে হবে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বিবিধা
...আর ক্লীবতা পাশবতা একমুখীন শ্বাপদ রব
মুঠোয় ভরে নিতে হবে এক সাগর স্পর্ধা
আর....অন্ততঃ ফেলে যেও ধর্মগ্রন্থ স-ব....
নৌকো সাজও এবার কবি অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৮.৭.১৯৬০)।
রচনা ৮.১.২০২১। মিলনসাগরে প্রকাশ ১২.১.২০২১।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আবার মিছিলে হাঁটবো, শত শত মাইল
রক্ত ঝরবে পায়ে আবার কালকের মতো
জল-কামানের মুখোমুখি হবো শীত সকালে
ব্যারিকেড করবো চূর্ন একের পর এক
এবারও কিন্তু তোমার জলপাই সিপাই
আমারই মেহনতের ফসলে পালিত, জানি
তারা থাকবেই আমার পথ আগলে
এবারও তাদের সঙ্গী কাঁদানে গ্যাস, জল
তাদেরকে সঙ্গে নেবো এবার না হয়
তারাও তো জানে কোন সন্ধিক্ষণ এ প্রহর
রাজধানীর বিষ বায়ুতে তাদেরও তো প্রশ্বাস
...না হলে রক্তাক্ত হবো তাদের লাঠির ঘায়ে
তবু রাজধানী পৌঁছে যাবেই আমাদের মিছিল
মানব ব্যারিকেড চূর্ন করবে লোহা লাঠি কামান
বধির কানে তো পৌঁছে দিতে হবে মানুষের কথা
তারপর নয় শান্তিতে শুয়ে পড়ব কঠিন রাজপথে
মানুষের মহামিছিল তারপরও চলবে অন্তবিহীন
যতক্ষণ না তোমাদের বধির কান শুনতে শেখে
অনাহার অত্যাচার অবিচারের সে সব কথা
"আমরা করবো জয় নিশ্চয়....একদিন..."
মহামিছিল কবি অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৮.৭.১৯৬০)।
মিলনসাগরে প্রকাশ ১২.১.২০২১।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
....এবার থামা যাক তাহলে ৷
আর একটুও কোন্দল নয়
বিপ্লবদা' ঘুম গিয়েছে এখন
আমি আছি নারী..আর কবিতায়
হাতে রঙ্গিণীর পান-পেয়ালা...
ও পাড়ার ছেলেটি, মনসুর
ব্যবসার কাজে জখম হয়েছে
সাইকেলে মাংস আনছিল ....
দেখব না ৷ শুনব না অপপ্রচার
সুরায় মত্ত তখন আমি যে
ঈশ্বরের নামে উদ্দাম নৃত্যে
শোর উঠছে আবার যখন যখন
অর্থনীতির গেল গেল ধুন জম্পেস
তখন নীরায় আমি, মেঘবালিকায়
বুকের খাঁজের উদ্দামে সুবাস খুঁজছি
কোমরের খাঁজে চোখ-চাউর নতুন কাব্য
যদি তাও অন্ত্যমিল শব্দ অমিল হয়
পশ্চাতে ওর ঠিক পেয়ে যাব হিন্দোল
সুদূর ইরাক-কথা, চাই না
পাঁচিল ওপারে তিয়ান-আন-মেন
গোধরা লক্ষ্ণৌ কাশ্মীর উত্তর প্রদেশ
কেন অকারণ দিবাস্বপ্নে ছেদ..শুদুমুদু
এবার নাহয় নারী ও সুরায়
কবি অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৮.৭.১৯৬০)। মিলনসাগরে প্রকাশ ১২.১.২০২১।
ঐ যে মেয়েটার লুকনো অঙ্গে
সাত-সাতটা ছুঁচ...আর সেই যে সে..
বাসের মোলায়েম আদরে
যার যোনি এফোঁড় ওফোঁড়...
তুরন্ত পাল্টে ফেলব টিভির চ্যানেল !
বিশ্বাস বাবু তো কবেই গায়েব
আর বিবেক জ্যেঠু সুইসাইড
বিপ্লবদা' চাদর ঢেকে হিম এসি ঘরে
রাতচরা প্যাঁচারা শুধু জাগে
দিনভর অজস্র শকুনি অস্থির
আমি অবশ্য আছি এই বেশ
সুবাসিনী নারী কণ্ঠলগ্ন, হাতে
পান-পেয়ালায় ওয়াইন
শতাব্দী প্রাচীন, তার রং অবশ্য লাল...
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এখানে সুন্দর রাত।
মশারির মধ্যে হাতপাখা।
পালঙ্ক গড়িয়ে নামছে পণ্যের জল,
লিঙ্গ অনুযায়ী।
এখানে মাল্টিপ্লেক্সে একরাশ সিরিয়াস সিনেমা চলছে।
এখানে পাঁঠার ঝোল রাঁধতে-রাঁধতে
আলোচনা চড়িয়েছি ভূমিহীন চাষিদের নিয়ে।
দূর থেকে জানাই দুঃখ,
তিন বা চার ফসলা জমিগুলিকে।
যেখানে,
ধর্ষণের পর নেতিয়ে রয়েছে বীর্য, আর,
মানুষ মারার পরেও গজিয়ে উঠছে শস্যগাছ।
দূর থেকে জানাই দুঃখ,
কাছে গেলে,
মাটি তার বাস্তবসুদ্ধ উপড়ে উঠে এসে
আমাকে লজ্জায় ফেলে দেবে।
উটপাখি চৈতালী চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ৩.৮.১৯৬০)। এই কবিতাটি “নন্দীগ্রাম
থেকে কলিঙ্গনগর” পত্রিকার মে ২০০৭ এর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ভাঙাচোরা পথ, আকাশে ঝুলছে ভাঙাচোরা চাঁদ,
বদ্ধ জলায় ভাসায় নৌকা যত উন্মাদ।
কিলবিল করে চারিদিকে কত বোবাকালা শব,
ঘোলাটে আলোয় নিশাচরদের পরমোৎসব।
মাথা কেন আছে ভুলে গিয়ে ওরা কারা দিনরাত
শরীর শরীর শরীরকে ভ'জে করে প্রাণপাত?
নগর ক্রমশ আগুনের মতো গ্রাস করে গ্রাম,
নষ্ট বাতাসে নষ্ট শিশির ঝরে অবিরাম।
হাহাকার করে চুরি যাওয়া নদী, চুরি যাওয়া বন,
হাহাকার করে মৃত পাখিদের আর্ত কূজন।
লোহা-লক্কড়, ইট-কংক্রিটে গাঁথা অরণ্যে
মানুষের খোঁজে একলা মানুষ বিবশ, হন্যে।
ভাঙাচোরা পথ, আকাশে ঝুলছে ভাঙাচোরা চাঁদ,
অন্ধকারের আলো খুঁজে ফেরে শ্রীতরুণপাদ।
চর্যাপদ
কবি তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
সৃষ্টি আশায গড়ল যেদিন,
. বিধাতা তোর অঙ্গটি
ভাবনায় কি ভেসেছিল,
. ভাবীকালে রঙ্গ টি
তুই যে নিরেট, স্বপ্নহীনা,
. ভাবনাছাড়া দেহের তাল
মত্ত দানব, মাংসদ তাই
. কষছে প্যাঁচ আর চালছে চাল
আঁধার মানে উন্নত বোধ ---
. পাষণ্ড সব খলের দল
সৃষ্টি হেন সত্য শুভয়
. জ্বালছে ভীষণ কালানল!
চোখের কোণের অশ্রুবিন্দু
. হোক আগুনের স্ফূলিঙ্গ
লিঙ্গভেদই তোর অন্তরায়
. উড়তে চাওয়া বিহঙ্গ
স্ফূলিঙ্গ আজ আগুন ছড়াক
. সব লালসা জ্বালিয়ে দিক
লেলিহান সে রুদ্ররোষে
. পুড়ুক যত নরক-কীট।
বিপন্ন সৃষ্টি
কবি সাগরিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ৫.২.১৯৫৮)। অবিশ্রান্ত নারী
ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
হঠাৎ --- তুমুল দারার ফাঁকে ফাঁকে
নীল আকাশের ঝলক ---
মা-র যে আসার সময় হল!
শহর জুড়ে সাজো সাজো রব ---
কুমোরপাড়ায় শিল্পীর ব্যস্ত হাত---
আর কপালে চিন্তার ভাঁজ --- বর্ষা কি এবারও ভিলেন?
এই সময়ে --- কেমন আছো নন্দীগ্রাম?
সিঙ্গুরে টাটার হুহুঙ্কার, ইচ্ছুক-অনিচ্ছুকের হিসাব-নিকাষ
আর প্যাকেজের প্রলেপে ---
তোমাকে কি মনে রেখেছে কেউ?
ক’দিন আগে দেখে এলাম ---
নীল আকাশে পেঁজা তুলো আর
নীচে সাদা কাশের দোলা ---
শহুড়ে চোখে তৃষ্ণার ছোঁওয়া। --- মনে পড়ল
শরৎ তো এখন তোমার আঙিনায় - মায়ের কি বোধন হল?
একটি ঘটো কি বসল এবার?
কেমন আছো নন্দীগ্রাম?
কবি সাগরিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ৫.২.১৯৫৮)। রচনা ষষ্ঠী, অক্টোবর ২০০৮।
দশভূজা মা গো!
মৃন্ময়ী রূপে না হোক, তোমার চিন্ময়ী রূপ জেগে থাক
সেই ইজ্জৎ হারানো কিন্তু মান-হুঁশ সামলে রুখে দাঁড়ানো
মানুষ মায়েদের বুকে।
খড়গ-জ্বলা দুর্বার হাতের অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে ---
যারা আগলেছে তাদের মাটিকে --- তাদের মাকে!
তোমার পূজার নৈবেদ্য সাজিয়েছিল ওরা ---
কারির মেয়ে, কারুর ছেলে, কারুর স্বামী - কেউবা
নিজেকেই দিয়েছিল বলি ---
কিন্তু রক্ষা করেছিল তোমাকে।
তাই, মা গো! ওদের তুমি শক্তি দাও॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
আচমকা একটা গেল গেল রব।
চায়ের ভাঁড় হাতে দোকানী ছেলেটা পড়েছে একেবারে মাঝরাস্তায়
সাইকেলের চাকাটা উঠেছে ওর পায়ের উপর!
ওহ! আজের পথের পরিসরও তো সংক্ষিপ্ত।
পূজো এল যে!
স্পন্সরের পূজোয় চাপা পড়ে যায় মা-দুগ্গা।
এফ-এম চ্যানেলের বিরাট তোরণ,
রখনও বা তারকা-খচিত সিংহ দুয়ার,
সঙ্গে পসরা বা পসারিনীর দেহ-বল্লরীর উন্মত্ত হাতছানি,---
হয়তো বা কিশোর ছেলেটা আনমনা হয়েছিল . . .
তাতেই তো ঘটল অঘটন!
ফুলের মালা, . . . দীপের আলো, . . . ধূপের ধোঁওয়ার আড়াল হলেও
বুঝতাম ---- এ আয়োজন মায়ের পূজার।
. . . ব্যানারে ব্যানারে মুখ ঢেকে - ওপাশের থিরথির জল,
এখন আয়োজকরা ব্যস্ত হাতে গাছের ডাল ছাঁটে ---
. . . থিমটা এবার জমে যাবে ---
পুরস্কারটা পেতেই হবে নিদেন পক্ষে তিন,---
সেলফোনের এস-এম-এস্ ও এখন বড্ড দামী।
কালের দাবীতে মা-দুর্গাও বোধনের আগেই
চতুর্থীতেই উদ্বোধনে সমুজ্জ্বল।
পূজো - জেনারেশন এক্স
কবি সাগরিকা সেনগুপ্ত (জন্ম ৫.২.১৯৫৮)।
ফিতে কাটার লিস্টিতে আজ মহারথীদের ভীড়
রাজনীতির দরবার থেকে অভিনেতা ---
খেলোয়ার থেকে ব্যারিস্টার --- তারকা গুনতিতে
কেউ কম যান না।
হে মা দুগ্গা! তুমি কত নম্বরে পড়লে?
চারদিনের পূজো শেষে সেই হিসাব কষতে কষতেই
পৌঁছে যেও পাগলা-ভোলার ঘরে!
আর শোনো ---
আসছে বছর --- আবার এসো॥
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এখানে যে বাবা বিশ্বনাথের চরণে প্রসাদ পড়ে
তার ইহকাল পরকাল এক, গলিত জীবনস্তূপ
সারারাত ধরে গাঁজা ও জুয়াড়ি, বারবনিতার লীলা
কীবাবে বাঁচাবে তোকে অভাগিনী পূণ্য নরকবাস
সকালে নীর কোলাহল ভেঙে কথকতা উঠে আসে
পায়রার মতো তীর্থযাত্রী খুঁটে খুঁটে খায় দানা
বিকেলে বাতাসা হরির লুটের ঘন্টাধ্বনি ওঠে
আরতিশেষের আঁধারে বিধবা মেয়েরা বেশ্যা হয়
তবু দ্যাখো ওই কাশীবাসিনীর শরত্চন্দ্র এলে
যে বুকে মেরেছে যন্ত্রণাসাড়, সে ঘোমটাগুলি ওড়ে
ঘাটের সিঁড়িতে পড়ে থেকে শুধু বলেছে চোখের জল
সাদা জ্যোত্স্নার কানে সারি সারি সাদা ঘোমটার কথা
কাশীবাসিনী
কবি সুতপা সেনগুপ্ত (জন্ম ৭.১১.১৯৬০)
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
চলো, নিরাপদে থাকা যাক
ওরা হেঁটে হেঁটে মরে না খেয়ে
চলো নিরাপদে থাকা যাক
আজ নতুন রান্না শিখেছি
চলো, নিরাপদে থাকা যাক
ওরা আটকানো যেন জন্তু
চলো নিরাপদে থাকা যাক
দান দিলে কেন ছবি দেব না?
চলো, নিরাপদে থাকা যাক
ওরা রেলের চাকায় পিস পিস
চলো নিরাপদে থাকা যাক
ওফ পার্লার কবে খুলবে?
চলো, নিরাপদে থাকা যাক
ওরা, হাইরোডে ঘুম, পিষে সাফ
চলো নিরাপদে থাকা যাক
ফেবু, 'যে যেমন আছ' পিক দাও
চলো, নিরাপদে থাকা যাক
ওদের শরীরে রক্ত
(চলো নিরাপদে থাকা যাক)
নেই, শুধু ঘাম আর পিণ্ড
চলো, নিরাপদে থাকা যাক
এটা ভারতবর্ষ, চিন নয়
চলো নিরাপদে থাকা যাক
ওরা? জান না? ওয়েট মার্কেট।
চলো, নিরাপদে থাকা যাক কবি সুতপা সেনগুপ্ত (জন্ম ৭.১১.১৯৬০)।
কবিতাটি মিলনসাগরের “করোনা ভাইরাস ও পরিযায়ী শ্রমিকের দেয়ালিকায়” তোলা হয়
১৫.৫.২০২০ তারিখে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শাসক, আমাকে শেখাও দেশপ্রেম
ধর্ষণ করে মা দিদি বৌদি ডাকো
রাম লেখা ইটে আমরা তোমার হারেম
মরদকে খোজা করো, চোখে মারো চাকু
আমাকে তোমার স্বদেশ শেখাও প্রেমিক
গণ নয় আজ আমরা সবাই রায়ত
করসেবা দিয়ে পীড়নের অকাদেমি
ত্রিশূলে বেঁধানো ভ্রূণে ভক্তের চাহত
তবু অ-বশ্য? স্লোগান তুলছে ক্ষত?
লাথি মারো পেটে, ভাঙো স্বাধীনের হাড়
মাটিতে শুইয়ে স্বদেশকে উপগত...
মা কাকে বলছ? তুমি তো মাতৃজার!
লক ডাউন চিৎকার ৩ কবি সুতপা সেনগুপ্ত (জন্ম ৭.১১.১৯৬০)।
কেন্দ্রের শাসক দলের ধর্মের নামে লুঠ ও ধর্ষণের বিভেদ নীতির বিরুদ্ধে।
কবিতাটি মিলনসাগরের দেয়ালিকায়” তোলা হয় ১৬.৫.২০২০ তারিখে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ভারতবর্ষ হাঁ করে দেখছে
ভারতবর্ষ হেঁটে যায়
লাঠি অপমান অনিশ্চয়তা আতঙ্ক খিদে রক্ত
কীটনাশকের ধূম লেগে গেছে যেন সব কিড়ে-মাকোড়া
তৃতীয় যুদ্ধ? ক্রীতদাস প্রথা? পরিযায়ী পথভিখিরি?
নাড়িভুড়ি ছিঁড়ে ছিটকে উঠছে
বমিপেচ্ছাপে একাকার
ভারতসংস্কৃতির পেছনে ঢুকে গেছে এক লিঙ্গ
ভারতবর্ষ হাঁ করে দেখছে, হাঁ-মুখেও তার ঢুকে যায় ...
ব্রাহ্মণ্যের ক্যাপিটাল বাবু হিংস্র মেক ইন ইন্ডিয়া
লক ডাউন চিৎকার ৮ কবি সুতপা সেনগুপ্ত (জন্ম ৭.১১.১৯৬০)।
কবিতাটি মিলনসাগরের “করোনা ভাইরাস ও পরিযায়ী শ্রমিকের দেয়ালিকায়”
তোলা হয় ১৬.৫.২০২০ তারিখে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
প্রকৃত স্বদেশ তুমি দেখে নাও করোনার ঝড়ে
সাদায় কালোয় গুলে, ঘুলে গিয়ে অমৃতে জহরে
থেমে থাকো ভালো থাকো মুঠি নয় থাকো তোলা হাতে
প্রধান জানিয়ে দেন আটটার সকালে বা রাতে
লকডাউন বাতি ধরে লকডাউন হাততালি বাজায়
সিডিশন লেগে যাবে মুখ যদি খুলেছে প্রজার
বলো কবুতর, কী কী পেলে কত শাপে কত বর
নিজেরই দানাকে নিজে চেটে বলো, হলে স্বয়ম্ভর
প্রকৃত স্বদেশ তুমি চিনে নাও ফাকিং স্পিরিটে
স্বয়ম্ভর লাঠি পড়ে স্বয়ম্ভর শ্রমিকের পিঠে
প্রকৃত স্বদেশ তুমি দেখে নাও করোনার ঝড়ে
কবি সুতপা সেনগুপ্ত (জন্ম ৭.১১.১৯৬০)। কবিতাটি মিলনসাগরের “করোনা
ভাইরাস ও পরিযায়ী শ্রমিকের দেয়ালিকায়” তোলা হয় ১৭.৫.২০২০ তারিখে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এক.
এনামুল শেখের চালু চায়ের দোকান
কাপের পরে কাপ উড়ে যায় কলেজ মোড়ে
কিছুদিনের জন্য আমার ছাত্র ছিল
কৃতজ্ঞতায় দাম নিতো না চা-বিস্কুটের
কাল দেখলাম ঠেলাগাড়ি-- ঠ্যালায় পড়ে
অল্প কিছু শসা নিয়ে বিক্রি করছে বাড়ি বাড়ি
-- চায়ের দোকান বন্ধ এখন কি করব স্যার!
--- শুধুই শসা আর কিছু নেই?
-- হয়ে যাবে। দুদিন পরে এটা সেটা নিয়ে আসব
শসা নিলাম। দাম নিলো আজ।
বলতে হল, ঘুরে দাঁড়াবি। আগের মতই ব্যবসা হবে।
--হবে না স্যার। তেমন দিন আর ফিরবে নাকো।
খালার বাড়ি গিয়েছিলাম বসিরহাটে
ফিরে আসতে লোকে ভাবল অন্যকিছু
বাঁকা চাহনি, বিরূপ কথা। বোধহয় আমি---
চায়ের দোকান চলবে না আর
চায়ের কাপ আর ঠোঁটের মাঝে জীবন্ত যা
সন্দেহ--
করুণার বিবরণ॥ খিদে সিরিজ
কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। কবিতাটি লেখা হয় করোনা
ভাইরাসের প্রকোপে জনজীবনের ছিন্নভিন্ন অবস্থার প্রতিচ্ছবি হিসেবে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
রক্তমাখা রুটি, নাকি সংবিধানের পাতা?
রেললাইনে পড়ে আছে পিষ্ট ষোড়শ দেহ
এদিক-ওদিক সস্তা চটি শতচ্ছিন্ন ছাতা
রাষ্ট্রনীতির চোখে মুখে প্রচণ্ড সন্দেহ।
পরিযায়ী শ্রমিক মানে যক্ষপুরীর বিশু?
ঠিকানা নেই আধার আছে--আঁধার চারিদিক
মায়ের কোলে বাপের কাঁধে ফসিল নীরব শিশু
ভোটের সময় ছাড়া যারা নিতান্ত প্রান্তিক।
যাদের হাতে চাকা ঘোরে।একুশ তলা বাড়ি
গড়ে ওঠে যাদের ছোঁয়ায় পারাপারের সেতু
হাজার মাইল পাড়ি দেবে অন্নহীনের সারি
মরলে শবব্যবচ্ছেদে খুঁজবে কারণ, হেতু--
এদিক রোগ, ওদিক খিদে মধ্যিখানে ফেরা
কোন রাজ্যের সীমায় পড়ে কোন রাজ্যের লাশ
ঘর নেই যার ঘরবন্দি! জের নেই তার জেরা!
দাক্ষিণ্যের ছবি তোলা বিপন্ন বিশ্বাস।
রেল লাইনে ষোড়শ লাশ কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। কবিতাটি লেখা হয় করোনা
ভাইরাসের জন্য করা চূড়ান্ত হঠকারীতা সঙ্গে ডাকা লকডাউনের জেরে কর্মচ্যুত লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের
হাজার হাজার মাইল, নিরুপায় হয়ে পদব্রজে নিজেদের রাজ্যে ও গৃহে ফেরার পথে ট্রেন লাইনের উপরে, ক্লান্ত
১৬ জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে। কবিতাটি মিলনসাগরের “করোনা ভাইরাস ও পরিযায়ী শ্রমিকের দেয়ালিকায়”
তোলা হয় ৯.৫.২০২০ তারিখে।
মহারাষ্ট্রে বাংলা কাঁদে, বাংলাতে ঝাড়খন্ড
এনার আঙুল ওনার দিকে--আঙুল কলাগাছে
টম কাকার কুটিরে পায় ক্রীতদাসের বন্ড?
আমার যখন ভোটার নয় ওদের কি দাম আছে!
শ্রমিক হাঁটে উলুবেড়িয়ায়,সুরাতে, ইন্দোরে
গায়ে ছেটাও রাসায়নিক শুদ্ধ করো বিষে
ক্ষুধাদীর্ণ ষোড়শ পদের রুটি ধুলোয় পড়ে
রেশন না থাক বরাদ্দ হোক এক এক গরম শিসে--
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ওরা কি ঘরছাড়া? আঙুলে টিপ--
অকাল ভোট?নাকি নির্বাসন
ওদের দেশ কোথা? ময়নাদ্বীপ?
প্রতিটি পা ফেলায় অনুশাসন।
ওরা কি পরিযায়ী পাখির দল?
সাইবেরিয়া থেকে বঙ্গভূম--
স্বদেশে গর্জালে দল মাদল
ফিরেছে ক'জন? কার মরণঘুম?
আঙুলে কালি যার-- শূদ্র কাল--
হেঁটে বা ট্রেনে ফেরে ইউলিসিস
যুদ্ধশেষে ধোঁয়া ম্লান সকাল
খুঁটেছে মাঠে মাঠে ধানের শীষ।
বম্বে থেকে ফেরে নিঃস্ব প্রাণ
দ্বারকা থেকে ফেরে রিক্ত জীব
শোণপাংশুর ছবি দৃশ্যমান
অশ্বমেধ করে হয়গ্রীব।
আঙুলে টিপছাপ 'পরিযায়ী'--
ডোল না দু'হাতে কর্ম চাই
ছাপ কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। করোনা ভাইরাসের জন্য করা চূড়ান্ত হঠকারীতা
সঙ্গে ডাকা লকডাউনের জেরে কর্মচ্যুত লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের হাজার হাজার মাইল, নিরুপায় হয়ে
পদব্রজে নিজেদের রাজ্যে ও গৃহে ফেরার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। কবিতাটি মিলনসাগরের “করোনা
ভাইরাস ও পরিযায়ী শ্রমিকের দেয়ালিকায়” তোলা হয় ৯.৫.২০২০ তারিখে।
সকল আংকিক ধরাশায়ী
অনড় যোদ্ধা কি বর্ম চাই!
এখানে কাজ নাই অন্নহীন
মানুষ ছুটে যায় কাজ পেতে
লক্ষ-কোটি আজ দীনের দীন
স্বভূম নেবে তার দায় এতে!
অদরকারি এরা সাদা পাতায়
কদর করে নাকো সংবিধান
সরকারি নাম নেই কোনও খাতায়
চরক দিতে পারে শেষ নিদান!
ঘর তো বানভাসি। ঘরে ফেরা!
ভেঙেই শেষ হয় মন দেহ
চৌকিদার বার বার জেরা
চরের মত জাগে সন্দেহ!
উপেক্ষা অবজ্ঞা অনাদরে
পেরোতে হবে রোজ দশটি ধাপ
মোজেস্ এঁকেছেন চরাচরে
এদের পরিচয়--আঙুলে ছাপ--
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
এখন সকাল রাতের থেকেও কালো
ভরা গঙ্গায় লাশ ভেসে যায় জলে
কার মৃতদেহ-- ভেসেছে কঙ্কালও
মৃত্যু--মৃত্যু-- গাঙ্গেয় অঞ্চলে।
এই লাশ কার জানিনা আমি তুমি
শবের গায়ে শিবির-চিহ্ন কিনা!
ঠিকানা ছিল আমার জন্মভূমি
ভাসা লাশের আরেকটি নাম ঘৃণা--
যা ভেসে যায় উপেক্ষা তার নাম
আত্মজনের অসহায়তার ভেলা
বৈতরণী হে, মৃত্যুতে ভাসলাম
জীবনের নাম আজকে অবহেলা।
কবীর ভাসাই জলে, কুবের পানি
মন্দাকিনী পুণ্য মৃত ধরে
বালিতে পোঁতা মানুষের নাম জানি
বর্ণ এখন বিবর্ণসঙ্করে।
লাশও কিছু বলতে চাইছে, শোনো
বলতে চাইছে বিষন্ন দুই তীরও
বিসমিল্লার সানাই ছোঁবে মনও?
নাকি বেহালা বাজান প্রবল নিরো!
এ কার ব্যথা? এ কার অপরাধ?
লাশপদাবলি কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। করেনার ২য় ঢেউয়ে, হঠকারী
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অবৈজ্ঞানিক ও উদাসীন কার্যকলাপের ফলে উত্তর প্রদেশে, অকুলান
জ্বালানী কাঠের অভাবে হাজার হাজার মরদেহ গঙ্গা-যমুনার মতো নদীতে ভাসিয়ে দিতে বাধ্যহয়
মৃতদের অসহায় নিকটজনেরা। গঙ্গার চড়ায় কবর দেওয়া হয় হাজার হাজার মৃতদেহ। সে দৃশ্য
কবিকে নাড়া দিয়েছে।
এ লজ্জা যে তোমার কিংবা আমার
মাথা লুটায় যেখানে বালির খাদ
পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছো নামার?
রাষ্ট্র, তুমি কষ্ট পাচ্ছো নাকো?
শুনতে পাচ্ছো কান্না অসহায়ের?
মরে বাঁচার লাটাই ধরে থাকো
লাশ ভেসে যায় যখন আমার ভাইয়ের
দেশ ডুবে যায় অশ্রুধারায় মায়ের।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
যারা যারা লড়তে যাচ্ছে পরের ভোটে
একবারটি যেতেই হবে পাঠানকোটে
একবারটি দেখতে হবে রক্তমাটি
নির্বাচনে গড়ের খেলা গড়ের মাঠে
পুত্রহারা বাবার চোখে রক্তপলাশ
পিতৃহারা সন্তানদের তত্ত্বতালাস
শহিদজায়া বৈতরণী নিচ্ছে জপে?
একবার হও মুখোমুখি পাঠানকোটে
যার যা গেল ফিরিয়ে দেবে রাষ্ট্রনীতি?
গানস্যালুটে একমিনিটের নীরব স্মৃতি!
কয়মরণের ইক্যুয়েশনে পদ্মফোটে
সীমান্তে আয় সীমন্তিকার পাঠানকোটে
আর কতদিন দেশপ্রেমে স্বাধীনতা?
আর কতদিন নিজের দেশে আলোকলতা!
আর কতদিন আইনসভায় প্রশ্ন ওঠে
উত্তর কি মিলতে পারে পাঠানকোটে!
পাঠানকোটে নিরাপত্তার রঙিন ফানুস
কেমন করে চুপসে গেল দেখছে মানুষ
পাঠানকোটে সংবিধানের মলাট ঢাকা
লজ্জা-স্বদেশ ঘুরিয়ে দেবে কালের চাকা!
পাঠানকোট ১ কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। ১.১.২০১৬ তারিখের
পাঠানকোটের জঙ্গী হামলায় জওয়ানদের বলিদানের প্রেক্ষিতে লেখা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
তোমাদের মৃত্যুতে
লজ্জায়
মরেছে বিশ্বাস
মজ্জায়
ভুলবো শহিদের
প্রাণদান?
বাঁচলো রাষ্ট্রের
খানদান!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জিরিয়ে
কী দামে দেবে প্রাণ
ফিরিয়ে?
শিখণ্ডী রাষ্ট্রের
সামনে
খাদ্য দিয়েছিস
দাম-নে
এ মহাজীবনের কর্জ
মরণে দধীচির বজ্র
পাঠানকোট ২ কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। ১.১.২০১৬ তারিখের
পাঠানকোটের জঙ্গী হামলায় জওয়ানদের বলিদানের প্রেক্ষিতে লেখা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
জোম্যাটোতে খাবার আনে ফজল আলি
শুক্লমশাই ভরে নেবেন ডিনার থালি!
অভিনয়ে আপত্তি নেই। শিল্পে গানে
আপত্তিটা খাদ্যে শুধু? মুসলমানে!
আপত্তি নেই এ পি কালাম-- আগুন ডানায়
আপত্তি কি ফজল আলির আনা খানায়!
হাততালি দাও বামুন-ভারত শামির বলে
এ আর সুরে। খানাতে না! ফজল ব'লে!
কোটি বেকার, খিদের ভূগোল আঁকছে দালি
স্রেফ আপত্তি খাবার আনলে ফজল আলি!
নাম ভাঁড়ানে শুদ্ধ হত পবিভ্রতায়
ফজল রিক্সা টানুক দিল্লি কলিকাতায়--
আর কতদিন সংবিধানের হরফ গুলো
উড়ে যাবে চৈত্র শেষে শিমুল তুলো!
ভারত কবে চিত্তে হবে বিত্তশালী
খাবার আনো, খাবার আনো ফজল আলি
খাবার আনে ফজল আলি কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। খাদ্য বিতরণ সংস্থা
"জোমাটো"-র মুসলমান সরবরাহকারীর পৌঁছে দেওয়া খাবার নিতে অস্বীকার করার পরে লেখা। কবিতাটি
মিলনসাগরের “NPR-NRC-CAA বিরোধী দেয়ালিকায়” তোলা হয় ২৯.১.২০২০ তারিখে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মুখোশে মুখ ঢেকেছ বীর--,চোরের মতো
কিসের আড়াল ঢাকবে বই এর বুকের ক্ষত!
জে এন ইউ --গভীর রাতের সবরমতী
দ'লে পিষে ধ্বস্ত হলেন সরস্বতী
বীনাপাণির পদ্মবনে মত্ত হাতি
পদ্ম-নালের কাঁটায় ক্ষত ছাত্রজাতি
বঙ্গভূমও পোড়ায় শোলক নষ্টক্ষণে
টোল পোড়াবে হিরক রাজা উদয়নের
শিক্ষার্থীর গলা টিপছো তপ্ত রোষে
বন্ধ হবে সামনে চলা ঐশী ঘোষের!
যেখানে যা কণ্ঠ আছে প্রতিবাদের
কোন আঁধারে ঢোকাতে চাও গহিন খাদে!
ক্ষুদিরামের কণ্ঠস্বর কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। দিল্লীর JNU বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে
ABVPর (বিজেপির ছাত্র সংঘটন) গুণ্ডামির পরে লেখা। কবিতাটি মিলনসাগরের “NPR-NRC-CAA বিরোধী
দেয়ালিকায়” তোলা হয় ৭.১.২০২০ তারিখে।
বই থাকবে। জানা থাকবে। আগামীকাল--
মাটির জ্ঞানই মুছতে পারে স্বর্গ-পাতাল
বিদ্যাসাগর। দুশো বছর। শাস্ত্র বাতিল
মুখোশ থেকে আজও ঘোরে গান্ধী-কাতিল
আজও পোড়ে বিদ্যায়তন রক্ত ঝরে
ক্ষুদিরামের কন্ঠ আজও সমস্বরে---
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মেয়েটি কলেজের ছাত্রী
মেয়েটি পথ হাঁটে রোজদিন
মেয়েটির মা বাপ আনপড়
অপুষ্টি উপবাসে সঙ্গিন।
মেয়েটি লেখাপড়া শিখবেই
অদূরে নগরের মায়াডাক
যে নগর জেগে আছে রেনেসাঁস
এ গাঁয়ে বীণাপাণি ঘুম যাক।
মেয়েটি কলেজের ছাত্রী
দুচোখে স্বপনের ইমারত
আরো সে পড়বে, পড়বেই
পড়াবে, পড়বে সে যুগপৎ।
যে আলোক চিনে দেয় অক্ষর
সে আলোয় মেয়েটিকে ধর্ষণ
ছিলোনা সংজ্ঞায় , আঘাতে
সেদিন মেঘ - ভাঙা বর্ষণ।
কামদুনি কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)।
কবিতাটি মিলনসাগরে কবির পাতায় প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে।
মেয়েকে চিরে জরা রাক্ষস
পশুও এর চেয়ে দয়াময়
এ কোন রাত্রির কথা ভাস
সময় বোঝে কি এ সংশয়!
এবার দাম আর দস্তুর
কিশোরী নিলামের পাটাতে
এবার লাশ নিয়ে মেধা-বাদ
কে কাকে পথে নেবে হাঁটাতে!
ও কবি ও গায়ক আঁকিয়ে
মোমবাতি জ্বালো সুতো পাকিয়ে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মঙ্গলবার...রাত দু’টো
সাবাস পুলিশ! পেটাও ওদের অন্ধকারে
হিঁচড়ে টেনে লাথিকষাও
( হিজড়ে গুলোর বন্ধকী ধন মেরুদণ্ড – বঙ্গভূষণ )
মেরে ফাটাও ফোটায় যারা শিমুলতুলো
কুড়ি টাকার আলু যখন বাজার উধাও
কুড়ি টাকায় বোনলেস সাত চিকেন চাপ্ –ও
অভিমন্যু একাই লড়ে একাকারে
কুড়ি টাকায় খরিদ হবে মেয়ের বাপ্- ও?
তোদের দেখে হৃৎপিণ্ডে বলিভিয়া
মনে হচ্ছে আবার ফিরি যযাতিতে
উট পাখি আর শামুক হয়েই থাকতে হবে!
কবে আবার ফিরব মানব প্রজাতিতে?
ফুল নয় রে মুঠো ভরে অঙ্গার দিই
মুঠো খুলে দ্যাখ দধীচি বজ্র পাঠায়
প্রতি বিন্দু রক্তে তোদের ফিনিক্স পাখি
রাষ্ট্র যতই ক্রোধে তোদের অঙ্গ ফাটায়-
মঙ্গলবার...রাত দু’টো কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)
২৮শে অগাস্ট ২০১৪ তারিখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়।
নিগৃহীতা ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের ক্ষেত্রে, উপাচার্য মহাশয়ের
দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও কর্তাভজা মনোভাবের বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ-অবস্থানে নামেন,
যা “হোক কলরব” আন্দোলন নামে খ্যাতি লাভ করে। সেই আন্দেলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত
এই কবিতাটি, সেই সময়ে মিলনসাগরের হোক কলরবের দেয়ালিকায় তোলা হয়।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
অভিজিৎ!
ওইখানে যেওনাকো তুমি
কথা কয়ো নাকো অই বালকের সাথে
কি কথা ওদের সাথে, উহাদের সাথে
অই সব চপলমতি অর্বাচীন তরল প্রকৃতি
নব শ্মশ্রু কিশোরের সাথে
তোমার হৃদয় আজ সমুদ্রের ঢেউ
তোমার দুমুঠোতে আজ ভাদর আকাশ
নীল-সাদা আকাশের গায়ে
দেবদ্যুতি মরালীর ছায়া
কতগুলি ব্রিজ পার হয়ে
তুমি ধরেছ গেলাস
দুর্গাপুর দামোদর
হাওড়া থেকে ঢাকুরিয়া ব্রিজ
গেলাস ঠোঁটের মধ্যে সামান্য ফারাক
যে টুকু ফারাক থাকে মানুষে- নবান্নে
অভিজিৎ তোমার হৃদয় আজ ঘাস
তোমার হৃদয় ঘাসফুল
অইখানে যেওনাকো তুমি কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। ২০১৪
সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রির শ্লীলতাহানী, উপাচার্যের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও
কর্তাভজা মনেভাবের প্রতিবাদে সংঘটিত “হোক কলরব” আন্দোলনের প্রেক্ষিতে লেখা
কবিতা। কবিতাটি সেই সময়ের মিলনসাগরের “হোক কলরবের কবিতার দেয়ালিকা”-তেও
প্রকাশিত হয়ে আছে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
মেয়েটির নাম কি ছিল দামিনী সাহসিনী?
বাড়ি কোথায়? দিল্লি নাকি কোলকাতাতে?
তাঞ্জাভোরে পার্ক স্ট্রিটে না বারাসাতে?
তার নাম কি শর্মিলা-সেই মনিপুরে?
নাকি তারই নাম ভারতবর্ষ ।
ভারতবর্ষ নাকি ভারতবর্ষণ
ইচ্ছে মতো যাকে ধর্ষণ করা যায়!
সেই দামিনীর জন্য আমার পদ্য আঁকা
সেই দামিনীর জন্য স্বদেশ ফুঁসছে রাগে
এক একখানি মোমবাতিটির দাবানলে
এক এক ফোঁটা রক্ত বুকে ছিটকে লাগে
সীতার মতো আর কতদিন পুড়বে নারী
ধরনী কি দ্বিধায় ফেটে কাঁদবে সয়ে
সতীর মতো দক্ষশালায় পুড়বে না আর
অসুর নাশন করবে কবে দুর্গা হয়ে
এই মেয়েটা যাস কোথারে সন্ধ্যেবেলা
কলেজ, অফিস, স্কুল, থিয়েটার, বর্ষবরণ
জানিস নাকি সব নগরী জল জঙ্গল
স্বাধীন ভারত রুখতে পারে লজ্জাহরণ
ছেলের জন্য বিল গেট্স আর স্তিভ জোবস তো
তোর জন্য মনু আছেন পরাশর ও
দামিনী কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। কবিতাটি মিলনসাগরে কবির পাতায়
প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে।
কে বাঁচবে? কে বাঁচাবে? স্বাধীন ভারত
চার দেওয়ালেই তোমার স্বদেশ চরাচর ও
কেন বেরোয় দামিনীরা বোরখা ছেড়ে
কেন ভাঙে দামিনীরা মনুর বাঁধন
তোদের জন্য ভিন্ন রুচির জীব বিজ্ঞান
স্বভাবতই বলাৎকারের অসুর সাধন
তাও মেয়েটার বাঁচার জন্য ব্যাকুল আশা
হাজার কষ্টে বলল “আমি বাঁচব মাগো”
লক্ষ প্রদীপ জ্বলল তবু নিবল প্রদীপ
ঘুমিয়ো না আর দামিনী জাগো জাগো...
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
‘নাম কী?’
‘পারমিতা’।
‘পড়াশোনা করতে করতে ছেড়ে দিলে কেন?’
‘বাবার ক্ষমতা ছিল না আর।দাদাদের পড়াতে গিয়ে’-
‘হুঁ, চুলটা খোলো একবার, গোছাটা টেনে দেখব’।
‘আঃ’-
‘মুখটা এত চ্যাটচেটে কেন?পার্লারে যাও না? ফেসিয়াল
করো না? ব্লিচ করো না?’
‘না’।
‘গায়ের রঙ তো বেশ ময়লা। তোমার বাবা চিঠিতে
লিখেছিলেন শ্যামোজ্ব্ল’।
‘মেয়ের বাপেরা বোধহয় কালো রঙ চেনে না’।
‘জলের উপর পা দাও।এবার একটু সামনে হাঁটো।পায়ের
পাতার ছাপ দেখব।
এবার হাতটা বাড়াও। আঙুলে ফাঁক কেন?জোড়া করো।
উল্টোদিক দেখি।
সেলাই জানো?’
‘জানি’।
‘হেম সেলাই আর ক্রশ সেলাই এর তফাৎ কি?’
‘হেম সেলাই-এ-‘
‘মেগাবাইট মানে কি?
একপলা তেল দিয়ে ধোকার ডালনা রাঁধতে পারবে?
গীতা পড়েছ?
দেখাশোনা কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। কবিতাটি মিলনসাগরে কবির পাতায় প্রকাশিত
হয় ২০১৪ সালে।
‘ইষ্টিকুটুম’ দেখো?
‘গড অফ স্মল থিঙস কার লেখা?’
‘কুলের আচার করতে জানো?’
‘শাহরুখ-ঋত্বিক-আমির কার মধ্যে বেশি ম্যানলিনেস?
বাচ্চার কাশি হলে একসপেকটোরেন্ট না বাসক-তুলসির
রস কোনটা দেবে?’
‘নায়াগ্রা জলপ্রপাত কোথায় আবস্থিত?’
‘ফুজিয়ামাটা আসলে কি?’
‘- একটা আগ্নেয়গিরির নাম।আগে মাঝে মাঝে জাগত।
গনগনে লাভা বেরিয়ে আসত। এখন
আর জাগেনা’।
এই নিয়ে আমার আটানব্বইটা কনে দেখা বিকেল সন্ধ্যে
হয়ে গেল।কালো রাত আলোর
সকাল হয়ে ফিরে আসে।কালো রঙ কিন্তু সকাল হলে
আরো কালো হয়ে যায়। সব স্কুলে
হাফইয়ারলি অ্যানুয়াল আছে।আর আমার আছে উইকলি
টেস্ট।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ছেলেটা গেল অভিমানে
চ্যাঁচালো সাথী পরিজন
যায়নি মেরু অভিযানে
আদতে ছিল সে হরিজন?
রাষ্ট্র এখনো বামুন
আই পি সি পরে উপবীত
যতো বলো একটু নামুন
যত যাক ভোট লেপ শীত
রোহিত কি চণ্ডাল- জাত?
চিতা কি দশাশ্বমেধ?
কাশী কি শিখা সঞ্জাত
শাস্ত্র মানে আজও বেদ!
অপেক্ষা ছিল ছোকড়ার
উপেক্ষা কিঞ্চিৎ বেশি
বামুনে নীলা-পোখরাজ
দলিত এখনো ভিনদেশি।
ছেলেটা সরে গেল ম’রে
কোথা গেল সে শুদ্রযুগ
টান কে দেবে গোঁড়া ধরে
জাত তো ভোটের হুজুগ।
রোহিত কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। হায়দেরাবাদ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্তার পর লেখা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
রবেন দ্বীপের কারাগারে প্রমিথিউস
তেইশ বছর অন্ধকারে – একাকীত্বে
আগুন চুরির অভিযোগে শ্বেতাম্বরে
ছায়াবৃতা জেগেছিল কার চিত্তে!
কনরাড সেই এঁকেছিলেন আঁধার- হৃদয়
সাদা আঁধার উত্তমাশায় ঢেউ তুলে যায়
ম্যান্ডেলা সেই ঢেউ এর উপর ঘোড়সওয়াড়ি
কালো মানুষ ‘মায়াবুয়ে’ সুর ভুলে যায়।
তারপরেতে আফ্রিকা ফের আলোক হল,
আলোকধারা ছড়িয়ে গেল দুই মেরুতে-
ম্যান্ডেলা ভোর জাগল দেশে-দেশান্তরে
মুক্তধারা প্যারিস,প্রাগে,পোল,পেরুতে।
ম্যান্ডেলা কি একটি মানুষ? অনেকগুলো?
সারথি আর যোদ্ধা যখন একত্রিত
সাদা কালোয় নিজস্ব দেশ অবিক্রীত
সকল মনের মণিকোঠায় সমন্বিত।
ম্যান্ডেলাতে একটি আগুন ঠিকরে পড়ে
ম্যান্ডেলাতে পরমপ্রীতির বৃষ্টি এল
ম্যান্ডেলাতে একের স্বদেশ ভূগোল স্বয়ং
ম্যান্ডেলাতে নোয়ার জাহাজ সৃষ্টি হল।
ম্যান্ডেলা কবি দেবেশ ঠাকুর (জন্ম ২০.১২.১৯৬০)। কবিতাটি
মিলনসাগরে কবির পাতায় প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
সাতপাকে বাঁধা --- তুমি নারী
আমার কবজায়,
সিন্দুরের জয়তিলকের দাগ দিলাম তোমার কপালে।
তুমি নারী, আমার ভোগের বস্তু,
তুমি আমার সংসারের "শো পিস"।
রাজাবাবুর জমিদারীতে বহু নারীর সাহচর্যে
ছিল পুরুষত্বের ক্ষমতার আস্ফালন।
সংসারের অটুট বন্ধনের জন্মদাত্রী দায়িত্বে তুমি "মা"।
বিছানায় নিত্যসঙ্গিনী যদি না হও---
যাব তবে কর্দমাক্ত গলিতে।
কন্যাসন্তান ধারণের অপরাধে
পুরুষ সমাজ নারীকে করে দোষারোপ
কন্যাভ্রূণ হত্যাই পুরুষের কাম্য।
আমার শেষ বয়সের দাসী তুমি,
আমি "পতি পরমেশ্বর"।
অকৃত্তিম সেবায় বার্ধক্যে দেবে শান্তি।
ভুলো না তুমি সেবাদাসী।
পুত্র পুরুষের আরেক রূপ
রক্ত বহমান পুরুষতান্ত্রিক,
সেও করে বাবার অনুসরণ।
শেষ বয়সে তুমি কমজোর
আমাদের গলগ্রহ।
আমি পুরুষ কবি রত্না ভৌমিক (জন্ম ১৪.৯.১৯৬১)। এই
কবিতাটি বইমেলা ২০০৮ এর “এ কোন বাংলা” পত্রিকায় প্রকাশিত
হয়েছিল।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
শস্যশ্যামলা ধরিত্রী মাটি মোদের "মা",
চাষ করি, ফসল ফলাই, দেখি স্বপ্ন।
অঘ্রানের পূর্ণিমায় সোনালি পাকা ধান
মাঠে মাঠে শনশন হাওয়ায়
নব আনন্দে মাতোয়ারা নবান্নের আশায়।
পঞ্চায়েতে এল সরকারী সমন
শোনো শোনো ভাই, "টাটা, সালিমদের দাও জমি"
যাবে বেকারত্ব ঘুচে --- রাস্তায় চলবে মোটরগাড়ি।
সার্চলাইটের আলোয় হবে আলোকিত
ছোট্ট কুড়ে ঘরখানি,
ঘরে ঘরে ফিসফিস --- ও মহিম চাচা
চারিদিকে এ কি খবর রটতেসে গো ---
সরকার মোদের "মা" কে কেড়ে নিবে?
ও কার্তিকের মা --- মোদের গাঁয়ে হবে ফ্যাকটো-রি
কার্তিক হবে "ফ্যাকটো-রি বাবু"!
পঞ্চায়েত দাদারা বলতিসে, "লাঙল-গরু আর লয়
বাপের জমি সরকারেরে দে দিকি?
টাটা, মালিম জোগাবে মুখের অন্ন।"
এই বাবুরা? জমি গেলে খাব কী?
মোদের সরকার গরিবের "ত্রাতা"
জমি নিয়া দিবে চেক!
সিঙ্গুর বাঁচাও, আসুক শিল্প কবি রত্না ভৌমিক (জন্ম ১৪.৯.১৯৬১)। এই কবিতাটি
বইমেলা ২০০৮ এর “এ কোন বাংলা” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
স্বামী-পুত্র নিয়া বইসা বইসা খাইবা,
৩০ বছর ধ-ই-রা জমি বাঁচায়েসে মোদের প্রাণ,
প্রাণ দি-ব! মোরা জমি দি-ব না!
পার্টির দাদাদের কপালে ভাঁজ
উন্নয়নের ঝড়ে উন্নততর সরকার!
রাজতন্ত্র প্রথায় বুলি "ডাণ্ডায় কর ঠাণ্ডা"
গর্জে উঠেছে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের মায়ের দল ---
জল-জমি-জীবন বাঁচাব মোরা।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
টোডি, তুমি মহান সামাজিক জীব,
রিজওয়ানুরের প্রেমকে করেছো ঠাণ্ডা,
. পুলিশী ডাণ্ডায়।
বাহুবলে, অর্থবলে অবলা নারীকে
করেছ নীরব, পিতৃত্বের অধিকারে।
বুদ্ধর পুলিশবাহিনীর নীরব অত্যাচারে
জনগণ সামিল মশালের আন্দোলনে।
সালিশিতে পঞ্চায়েতে স্বামী-স্ত্রীকে করে ভিন্ন,
গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে সম্পত্তিতে মারে থাবা।
সি পি এম তিরিশ বছরে গরিবের রক্তে
চাষ করে গোলায় তুলেছে ধান।
শ্রমিকের ঘাম ঝরে লক্ষ লক্ষ শ্রম
. হয়েছে লকআউট।
রেশনের চাল-গম-চিনিতে হয়
. নেতাদের সম্মেলন।
মিড-ডে মিলের চাল পচে
পঞ্চায়েত দাদার ঘরে।
গরিবের ঘরের কেরোসিনের কুপি
তেল ছাড়া দাওয়ায় দপদপ জ্বলে।
নেতারা পালায় হিংস্র জনগণের থাবার ভয়ে।
. "বুদ্ধ" হও সজাগ,
গরিবের রক্তে খেলো না হোলি
লক্ষ লক্ষ রিজওয়ানুর হত্যার
. জবাব চায় জনগণ।
বাম রাজত্বে নরকরাজ কবি রত্না ভৌমিক (জন্ম ১৪.৯.১৯৬১)। এই
কবিতাটি বইমেলা ২০০৮ এর “এ কোন বাংলা” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বিশেষ কারণে এত বছর পর আমি অযোধ্যা এলাম,
মাননীয় বিচারক,
এলাম আমার মায়ের জন্মভূমি খুঁজতে।
না, আমার কী ধর্ম আমি জানিনা,
জানিনা আমার বাবা কে,
আমার মা-ও জানত না এসব।
আমার মা মুন্নাবাঈ জন্মেছিল এখানেই এক ঝোপড়ায়,
কোন্ পুরুষের ঔরসে তার জন্ম তা ঠাহর করে
বলতে পারেনি আমার দাদীও,
সেক্ষেত্রে জাতপাতের কথা তো ওঠেই না,
মা শুধু জানত কে তার মা,
মাননীয় বিচারক,
একে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলা যায় কিনা ভেবে দেখবেন,
যদিও পরিবার শব্দটার অর্থই আমার কাছে পরিষ্কার না।
বরং শুনুন, বালক বয়সে বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়ে বসার আগে
কী আমি দেখেছিলাম?
ভালো মনে নেই আমার, তবু সেই জলহীন, আলোহীন,
পয়ঃপ্রণালীহীন ঘুপচি ঝোপড়া,
ভিখিরি, জোচ্চোর, দাগী, মাতাল… আর
কোন কোন মধ্যরাতে আচম্কা হুইসেল…
ঘরে ঢুকে পড়ত পেটমোটা উন্মত্ত থানেদার…
মুখে মদের গন্ধ… পান খাওয়া কুৎসিত হাসি…
মা আমাকে ঠেলে বার করে দিত- সেই রাত,
ভারত এক খোঁজ কবি জয়দেব বসু (জন্ম ১২.৫.১৯৬২ - ২৩.২.২০১২)। ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের পরে রচিত। আমরা ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ আবৃত্তিকবিতা.ওয়ার্ডপ্রেস.কম ওয়েবসাইটের
কাছে কারণ এই কবিতাটি আমরা সেখান থেকে পেয়েছি। সেই ওয়েবসাইটে যেতে এখানে ক্লিক করুন . . .। শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে আবৃত্তির ভিডিওটি সৌজন্যে Shimul Mustapha Official YouTube Channel.
সেই অসংখ্য নক্ষত্রের রাত, সোনালী হ্যালোজেনের রাত
আমি কাটিয়ে দিতাম রাস্তার পাশে
দেয়ালে ঠেস্ দিয়ে,
অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারতাম
ঠিক কতদিন পর থেকে মা আবার শুরু করবে বমি…
বাস, এইতো সব। অযোধ্যা ছেড়ে আসার পর আমি কী কী করি
তা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। মাননীয় বিচারক,
আমি শুধু শুনেছিলাম, যৌবন থাকতে থাকতেই ঝোপড়া থেকে দালান,
তা থেকে শীষমহল পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছিল আমার মা ;
তারপর, জীবনের লাথ্ খেতে খেতে ঝোপড়ায়
ফিরেই সে মরে।
চোখ ঝাপসা হয়ে ওঠার জন্য মাফ করবেন,
কিন্ত এত বছর পর মায়ের জন্মভূমি খুঁজতে এসে
কী আমি দেখলাম?
কেউ বলেছে- এখানে এসেছিলেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাড়া খাওয়া এক বাদশা।
আমি জানিনা পৌরণিক কোন চরিত্রের পক্ষে
জন্ম নেওয়া আদৌ সম্ভব কিনা, আমি জানিনা এতদিন আগে আসা
কোন সেনানীর পদচ্ছাপ এতটাই নিশ্চিত কিনা,
কিন্তু আমি জানি আমার মা এখানে জন্মেছিল- এখানেই,
কেননা, আমিও যে জন্মেছি এখানে।
আমার এন্তেকালের ভয় নেই, আখেরাতের লোভ নেই,
মন্দার বা অমৃত আমাকে আকৃষ্ট করে না,
শুধু এই ঝোপড়ার জন্য- এই জন্মভূমির জন্য আমার রোযা-আমার উপবাস
অষ্টপ্রহর প্রার্থনা-পাঁচওয়াক্ত নামাজ,
মাননীয় বিচারক,
রহম্ করুন, আমার মাতৃভূমি আমায় ফিরিয়ে দিন।
ফিরিয়ে দিন আমি মরিয়া হয়ে ওঠবার আগেই।
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
বেশ করেছি ভেঙেছি, মাইনফ্যুয়েরর আদভানি
বলেছেন- ওটা আগে মন্দিরই ছিল
আর যদি নাও থাকে তাব্বি বেশ করেছি
মা কাসম, আবার ভাঙবো
জ্ঞান দেবার তুমি কে হে মাল?
তুমি আমায় খেতে দাও?
খোলা বাজারে চালের কিলো কত জান?
জান, ইট আঠারোশ’ টাকা হাজার
এমনকি শঙ্কর মাছও বাইশ টাকা কিলো
এক লিটার কেরোসিন
খুঁজতে হাঁটু খুলে যায় আমার বাপের।
আবে হ্যাঁ,
বাপও একদিন মাস্টারই ছিল,
তুমি শালা পেনশন দিয়েছো?
ফুটানি ছাড়ো ওস্তাদ
তেত্রিশ বছর কাটলো,
লাইফের হার আন্ধি গলি আমি চিনে নিয়েছি
মতিচ্ছন্ন ভবীতব্য
আর এর জন্য তুমিইতো দায়ী
আমার এই কপাল থেকে তলপেট বরাবর
লম্বালম্বি রক্তের দাগ, তার উপর
বিএসএফ ক্যাম্প, তার উপর টহল
তার উপর রাহাজানি, নিরন্ন
নেকড়ে কবি জয়দেব বসু (জন্ম ১২.৫.১৯৬২ - ২৩.২.২০১২)। ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের পরে রচিত। আমরা ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ আবৃত্তিকবিতা.ওয়ার্ডপ্রেস.কম ওয়েবসাইটের কাছে কারণ এই
কবিতাটি আমরা সেখান থেকে পেয়েছি। সেই ওয়েবসাইটে যেতে এখানে ক্লিক করুন . . .। দেবাশীষ তালুকদার শুভ্রর কণ্ঠে আবৃত্তির ভিডিওটি সৌজন্যে Debasish Talukder YouTube Channel.
মানুষের ঝাঁক
এসবই তো তোমারই জন্যে,
তোমারই জন্যেই তো এতো গুন্ডাগর্দি
শহর জুড়ে কারফিউ, বিস্ফোরণ, লুটতরাজ
আর শালা পিরিত মারিয়ে
বলছো- একই বৃন্তে দুটি কুসুম
কুসুম টুসুম আবার কী, এ্যাঁ
কুসুম টুসুম আবার কী
সেই অর্ধেন্দু মুস্তাফির টাইমে কুসুম নামে
একটা মেয়ে ছিল হাড়কাঁটায়।
তারপর থেকে কোনো কুসুম টুসুম নেই
জিন্দেগী বেকুসম- বেরাহাম
বহুত ক্ষতি তুমি আমার করে দিয়েছ গুরু
আমারো এক সময় ছিল টলটলে চোখ,
সেই চোখে ছিল স্বপ্ন,
সেই স্বপ্নমাখা চোখে
তুমিই ঢুকিয়ে দিয়েছো বিষ।
নিজের ঘর, টু-ইন-ওয়ান, ইংরেজি স্কুল,
এলিট সিনেমা, লাল ইয়ামাহা, ইয়ামাহার
পিছনে ডলি, ডলির উড়তে থাকা চুল,
আর যখন বেসাহারা আমি ডুবে যাচ্ছি সেই স্বপ্নে
যখন কলাবাগান থেকে মা-বাপ ছেড়ে
ডলি পালিয়ে এসেছে আমাকে হ্যাঁ হ্যাঁ
একমাত্র আমাকেই বিয়ে করবে বলে।
তখন তুমি আলগোছে আমার চুলে দিয়েছ জট,
ছিঁড়ে দিয়েছ জামা, খুলে দিয়েছ শুকতলা
বার করে দিয়েছ পাঁজর,
ঠায় চার ঘন্টা-
চার ঘন্টা ডলি দাঁড়িয়েছিল রেজিস্ট্রি
অফিসের সামনে।
আমি আসিনি।
না, না না না না, ও মুসলমান বলে নয়,
কী খাওয়াবো আমি?
আমার আয় কী?
নিজের ঘর, টু-ইন-ওয়ান, ইংরেজি স্কুল,
এলিট সিনেমা, আমার যে চাকরি নেই
ব্যবসার পুঁজি নেই, এক লিটার কেরোসিন
খুঁজতে হাঁটু খুলে যায় আমার বাপের
তখন কোথায় ছিলে শালা তুমি?
কোথায় ছিল তোমার সম্পিরিতের
কাননে কুসুম কলি?
বেশ করেছি ভেঙেছি।
হিন্দুর দেশ হলে মন্ত্রী হবো আমি
কিস্সু করতে পারনি তুমি কিস্সু না।
পাক্কা পাঁচ ঘন্টা ধরে ভেঙেছি
আর তুমি ইঁদুরের মতো গর্তে সেঁধিয়ে
থেকেছো পাক্কা ন’ঘন্টা
কিস্সু ছিঁড়তে পারনি
একটা চুলও না
আর পারবেও না।
যাও- ফোটো
নিজের জ্ঞান নিজের কাছেই রাখো
আহ্!
আমি জানি
এসব কোনো পথ না
আমি জানি এইভাবে সব কিছু ভাঙতে
ভাঙতে একদিন আমি নিজেই ভেঙে
চুরমার হ’য়ে যাবো
এ খেলার এটাই নিয়ম।
আমি জানি।
কিন্তু কি করতে পারি আমি?
আমার তো কিচ্ছু নেই।
অতীত নেই, বর্তমান নেই, ভবিষ্যত নেই,
একটা কিছুতো আমায় করতে হবে নাকি?
মনে নেই- এই ভাঙনের নিরাশ্রয়ী
রুদ্ধশ্বাস পথে একদিন তুমি
আমাকে ঠেলে দিয়েছ।
তখন অন্ধের মতো আমি ছুটে গেছি।
সেই অধি বাস্তবতার সুড়ঙ্গ পথে
যেখানে মোড়ে মোড়ে ফুটন্ত জলের
ফোয়ারা, উড়তে থাকা বিশ্বাসের ছাই।
সেইখানে একের পর এক ছায়ামূর্তি
আমাকে শিখিয়েছে, প্রতিহিংসার দোঁহা
শিখিয়েছে- খিদের জ্বালায় মরিয়া যে মানুষ
ঢুকে পড়ছে জয়ন্তি বাজার থেকে বেনাপোলে।
সেই তোমার মূল শত্রু।
তাদের টুটি এক্ষুণি ছিঁড়ে না দিলে
তোমারই একবেলার ভাতে পড়বে টান,
ক্ষুধার্তের বিচারের ক্ষমতা থাকে না
তাই ডান হাতে তার নলি টিপে ধরে
যেই বাম হাত তুলেছি শূন্যে
চিৎকার করে বলতে গেছি ‘হাই আদভানি’
তখন তুমি আমায় থামতে বলছো?
কিন্তু এখন কি থামা যায়
এখন আমার নখগুলো সব ধারালো
আঙুলগুলো সব থাবা
ধমনীর মধ্যে ছুটছে উষ্ণ স্রোতা মদ
এখন কি থামতে বললেই
থামা যায়?
বল
থামা যায়!
এই পাতার পশ্চাৎপটের ছবিটি আন্দামানের সেলুলার জেলের, যা যে কোনো রাষ্ট্র দ্বারা তার জনগণের উপরে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতীক। আবার এই দেয়াল ও গরাদগুলিই স্বাধীনতাকামী মানুষের জীবনপণ করা প্রতিবাদেরও প্রতীক!
|
|
|
ছেলেটির বয়স যখন সাত-
চাঁদা দিতে না পারায় চোখের সামনে তাঁর বাবাকে
সপাটে চড় কষিয়েছিল পাড়ার এক নেতা ;
কেউ কোন প্রতিবাদ করেনি।
দু’বছর—
সরকারী জমিতে শনি-মন্দির তুলতে বাধা দেবার জন্য
‘প্রকাশ্য দিবালোকে’ তার দাদাকে ফেলে পিটিয়েছিল
যেসব ছেলেরা,
একদা তারা অন্য দলের হলেও, এখন ওই নেতারই
অনুগামী।
ছেলেটি এসব দেখেছিল।
সে দেখ