|
ভুলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে আমারে যেন এনেছে ডাকিয়া, এসেছি ভুলে | তবু একবার চাও মুখপানে নয়ন তুলে| দেখি, ও নয়নে নিমেষের তরে সেদিনের ছায়া পড়ে কি না পড়ে, সজল আবেগে আঁখিপাতা দুটি পড়ে কি ঢুলে | ক্ষণেকের তরে ভুল ভাঙায়ো না, এসেছি ভুলে | বেল-কুঁড়ি দুটি করে ফুটি ফুটি অধর খোলা | মনে পড়ে গেল সেকালের সেই কুসুম তোলা | সেই শুকতারা সেই চোখে চায়, বাতাস কাহারে খুঁজিয়া বেড়ায়, ঊষা না ফুটিতে হাসি ফুটে তার গগনমূলে | সেদিন যে গেছে ভুলে গেছি, তাই এসেছি ভুলে | ব্যথা দিয়ে কবে কথা কয়েছিলে পড়ে না মনে, দূরে থেকে কবে ফিরে গিয়েছিলে নাই স্মরণে | শুধু মনে পড়ে হাসিমুখখানি লাজে বাধো-বাধো সোহাগের বাণী, মনে পড়ে সেই হৃদয়-উছাস নয়নকূলে | তুমি যে ভুলেছ ভুলে গেছি, তাই এসেছি ভুলে | কাননের ফুল, এরা তো ভোলে নি, আমরা ভুলি ? সেই তো ফুটেছে পাতায় পাতায় কামিনীগুলি ! চাঁপা কোথা হতে এনেছে ধরিয়া অরুণকিরণ কোমল করিয়া, বকুল ঝরিয়া মরিবারে চায় কাহার চুলে ? কেহ ভোলে, কেউ ভোলে না যে, তাই এসেছি ভুলে | এমন করিয়া কেমনে কাটিবে মাধবী রাতি ? দখিনে বাতাসে কেহ নেই পাশে সাথের সাথি ! চারি দিক হতে বাঁশি শোনা যায়, সুখে আছে যারা তারা গান গায়---- আকুল বাতাসে, মদির সুবাসে, বিকচ ফুলে, এখনো কি কেঁদে চাহিবে না কেউ আসিলে ভুলে ? . বৈশাখ, ১৮৮৭ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
ভুল-ভাঙা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুঝেছি আমার নিশার স্বপন হয়েছে ভোর | মালা ছিল, তার ফুলগুলি গেছে, রয়েছে ডোর | নেই আর সেই চুপি-চুপি চাওয়া, ধীরে কাছে এসে ফিরে ফিরে যাওয়া--- চেয়ে আছে আঁখি, নাই ও আঁখিতে প্রেমের ঘোর | বাহুলতা শুধু বন্ধনপাশ বাহুতে মোর হাসিটুকু আর পড়ে না তো ধরা অধরকোণে | আপনারে আর চাহ না লুকাতে আপন মনে | স্বর শুনে আর উতলা হৃদয় উথলি উঠে না সারা দেহময়, গান শুনে আর ভাসে না নয়নে নয়নলোর | আঁখিজলরেখা ঢাকিতে চাহে না শরম চোর | বসন্ত নাহি এ ধরায় আর আগের মতো, জ্যোত্স্নাযামিনী যৌবনহারা জীবনহত | আর বুঝি কেহ বাজায় না বীণা, কে জানে কাননে ফুল ফোটে কি না--- কে জানে সে ফুল তোলে কি না কেউ ভরি আঁচোর ! কে জানে সে ফুলের মালা গাঁথে কি না সারা প্রহর ! বাঁশি বেজেছিল, ধরা দিনু যেই থামিল বাঁশি---- এখন কেবল চরণে শিকল কঠিন ফাঁসি | মধু নিশা গেছে, স্মৃতি তারি আজ মর্মে মর্মে হানিতেছে লাজ— সুখ গেছে, আছে সুখের ছলনা হৃদয়ে তোর | প্রেম গেছে, শুধু আছে প্রাণপণ মিছে আদর | কতই না জানি জেগেছ রজনী করুণ দুখে, সদয় নয়নে চেয়েছ আমার মলিন মুখে | পরদুখভারসহে নাকো আর, লতায়ে পড়িছে দেহ সুকুমার---- তবু আসি আমি পাষাণহৃদয় বড়ো কঠোর | ঘুমাও, ঘুমাও, আঁখি ঢুলে আসে ঘুমে কাতর | ৪৯, পার্ক স্ট্রীট বৈশাখ, ১৮৮৭ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
শূন্য হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আবার মোরে পাগল করে দিবে কে ? হৃদয় যেন পাষাণ-হেন বিরাগ-ভরা বিবেক | আবার প্রাণে নূতন টানে প্রেমের নদী পাষাণ হতে উছল স্রোতে বহায় যদি ! আবার দুটি নয়নে লুটি হৃদয় হরে নিবে কে ? আবার মোরে পাগল করে দিবে কে ? আবার কবে ধরণী হবে তরুণা ? কাহার প্রেমে আসিবে নেমে স্বরগ হতে করুণা ? নিশীথনভে শুনিব কবে গভীর গান, যে দিকে চাব দেখিতে পাব নবীন প্রাণ, নূতন প্রীতি আনিবে নিতি কুমারী ঊষা অরুণা--- আবার কবে ধরণী হবে তরুণা ? কোথা এ মোর জীবন—ডোর বাঁধা রে ? প্রেমের ফুল ফুটে আকুল কোথায় কোন্ আঁধারে ? গভীরতম বাসনা মম কোথায় আছে ? আমার গান আমার প্রাণ কাহার কাছে ? কোন্ গগনে মেঘের কোণে লুকায়ে কোন্ চাঁদা রে ? কোথায় মোর জীবন-ডোর বাঁধা রে ? অনেক দিন পরানহীন ধরণী | বসনাবৃত খাঁচার মতো তামসঘনবরনী | নাই সে শাখা, নাই সে পাখা, নাই সে পাতা, নাই সে ছবি, নাই সে রবি, নাই সে গাথা---- জীবন চলে আঁধার জলে আলোকহীন তরণী | অনেক দিন পরানহীন ধরণী | মায়াকারায় বিভোর-প্রায় সকলি, শতেক পাকে জড়ায়ে রাখে ঘুমের ঘোর শিকলি | দানব-হেন আছে কে যেন দুয়ার আঁটি | কাহার কাছে না জানি আছে সোনার কাঠি ? পরশ লেগে উঠিবে জেগে হরষ-রস-কাকলি ! মায়াকারায় বিভোর-প্রায় সকলি | দিবে সে খুলি এ ঘোর ধূলি আবরণ তাহার হাতে আঁখির পাতে জগতজাগা জাগরণ | সে হাসিখানি আনিবে টানি সবার হাসি , গড়িবে গেহ, জাগাবে স্নেহ জীবনরাশি | প্রকৃতিবধূ চাহিবে মধু, পরিবে নব আভরণ | সে দিবে খুলি এ ঘোর ধূলি- আবরণ | পাগল করে দিবে সে মোরে চাহিয়া, হৃদয়ে এসে মধুর হেসে প্রাণের গান গাহিয়া | আপনা থাকি ভাসিবে আঁখি আকুল নীরে, ঝরনা-সম জগৎ মম ঝরিবে শিরে | তাহার বাণী দিবে গো আনি সকল বাণী বাহিয়া | পাগল করে দিবে সে মোরে চাহিয়া | ৪৯, পার্ক স্ট্রীট আষাঢ়, ১৮৮৭ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
আত্মসমর্পণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি এ কেবল মিছে বলি, শুধু আপনার মন ছলি | কঠিন বচন শুনায়ে তোমারে আপন মর্মে জ্বলি | থাক্ তবে থাক্ ক্ষীণ প্রতারণা, কী হবে লুকায়ে বাসনা বেদনা, যেমন আমার হৃদয়-পরান তেমনি দেখাব খুলি | আমি মনে করি যাই দূরে, তুমি রয়েছ বিশ্ব জুড়ে | যত দূরে যাই ততই তোমার কাছাকাছি ফিরি ঘুরে | চোখে চোখে থেকে কাছে নহ তবু, দূরেতে থেকেও দূর নহ কভু, সৃষ্টি ব্যাপিয়া রয়েছ তবুও আপন অন্তপুরে | আমি যেমনি করিয়া চাই, আমি যেমনি করিয়া গাই, বেদনাবিহীন ওই হাসিমুখ সমান দেখিতে পাই ওই রূপরাশি আপনা বিকাশি রয়েছে পূর্ণ গৌরবে ভাসি , আমার ভিখারি প্রাণের বাসনা হোথায় না পায় ঠাঁই | শুধু ফুটন্ত ফুলমাঝে দেবী, তোমার চরণ সাজে | অভাবকঠিন মলিন মর্ত কোমল চরণে বাজে | জেনে শুনে তবু কী ভ্রমে ভুলিয়া আপনারে আমি এনেছি তুলিয়া, বাহিরে আসিয়া দরিদ্র আশা লুকাতে চাহিছে লাজে | তবু থাক্ পড়ে ওইখানে, চেয়ে তোমার চরণপানে | যা দিয়েছি তাহা গেছে চিরকাল, আর ফিরিবে না প্রাণে | তবে ভালো করে দেখো একবার দীনতা হীনতা যা আছে আমার, ছিন্ন মলিন অনাবৃত হিয়া অভিমান নাহি জানে | তবে লুকাব না আমি আর এই ব্যথিত হৃদয়ভার আপনার হাতে চাব না রাখিতে আপনার অধিকার | বাঁচিলাম প্রাণে তেয়াগিয়া লাজ, বদ্ধ বেদনা ছাড়া পেল আজ, আশা-নিরাশায় তোমারি যে আমি জানাইনু শত বার | জোড়াসাঁকো, ১১ ভাদ্র, ১৮৮৯ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
নিষ্ফল কামনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৃথা এ ক্রন্দন ! বৃথা এ অনল-ভরা দুরন্ত বাসনা ! রবি অস্ত যায় | অরণ্যতে অন্ধকার, আকাশেতে আলো | সন্ধ্যা নত-আঁখি ধীরে আসে দিবার পশ্চাতে | বহে কি না বহে বিদায়বিষাদশ্রান্ত সন্ধ্যার বাতাস দুটি হাতে হাত দিয়ে ক্ষুধার্ত নয়নে চেয়ে আছি দুটি আঁখি-মাঝে | খুঁজেতেছি, কোথা তুমি, কোথা তুমি ! যে অমৃত লুকানো তোমায় সে কোথায় ! অন্ধকার সন্ধ্যার আকাশে বিজন তারার মাঝে কাঁপিছে যেমন স্বর্গের আলোকময় রহস্য অসীম, ওই নয়নের নিবিড়তিমিরতলে কাঁপিছে তেমনি আত্মার রহস্যশিখা | তাই চেয়ে আছি | প্রাণ মন সব লয়ে তাই ডুবেতেছি অতল আকাঙ্ক্ষা-পারাবারে | তোমার আঁখির মাঝে, হাসির আড়ালে, বচনের সুধাস্রোতে, তোমার বদনব্যাপী করুণ শান্তির তলে তোমারে কোথায় পাব--- তাই এ ক্রন্দন ! বৃথা এ ক্রন্দন ! হায় রে দুরাশা ! এ রহস্য এ আনন্দ তোর তরে নয় | যাহা পাস তাই ভালো, হাসিটুকু, কথাটুকু, নয়নের দৃষ্টিটুকু, প্রেমের আভাস | সমগ্র মানব তুই পেতে চাস, এ কী দুঃসাহস ! কী আছে বা তোর, কী পারিবি দিতে ! আছে কি অনন্ত প্রেম ? পারিবি মেটাতে জীবনের অনন্ত অভাব ? মহাকাশ-ভরা এ অসীম জগৎ-জনতা, এ নিবিড় আলো অন্ধকার, কোটি ছায়াপথ, মায়াপথ, দুর্গম উদয়-অস্তাচল, এরই মাঝে পথ করি পারিবি কি নিয়ে যেতে চিরসহচরে চিররাত্রিদিন একা অসহায় ? যে জন আপনি ভীত, কাতর, দুর্বল, ম্লান, ক্ষুধাতৃষাতুর, অন্ধ, দিশাহারা, আপন হৃদয়ভারে পীড়িত জর্জর, সে কাহারে পেতে চায় চিরদিন-তরে ? ক্ষুধা মিটাবার খাদ্য নহে যে মানব, কেহ নহে তোমার আমার অতি সযতনে, অতি সংগোপনে, সুখে দুঃখে, নিশীথে দিবসে, বিপদে সম্পদে, জীবনে মরণে, শত ঋতু-আবর্তনে বিশ্বজগতের তরে, ঈশ্বরের তরে শতদল উঠিতেছে ফুটি ; সুতীক্ষ্ম বাসনা-ছুরি দিয়ে তুমি তাহা চাও ছিঁড়ে নিতে ? লও তার মধুর সৌরভ, দেখো তার সৌন্দর্যবিকাশ, মধু তার করো তুমি পান, ভালোবাসো, প্রেমে হও বলী, চেয়ো না তাহারে | আকাঙ্ক্ষার ধন নহে আত্মা মানবের | শান্ত সন্ধ্যা স্তব্ধ কোলাহল নিবাও বাসনাবহ্নি নয়নের নীরে, চলো ধীরে ঘরে ফিরে যাই | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৮৮৭ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
সংশয়ের আবেগ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভালোবাস কি না বাস বুঝিতে পারি নে, তাই কাছে থাকি | তাই তব মুখপানে রাখিয়াছি মেলি সর্বগ্রাসী আঁখি | তাই সারা রাত্রিদিন শ্রান্তি-তৃপ্তি-নিদ্রাহীন করিতেছি পান--- যতটুকু হাসি পাই, যতটুকু কথা, যতটুকু গান | তাই কভু ফিরে যাই, কভু ফেলি শ্বাস, কভু ধরি হাত | কখনো কঠিন কথা, কখনো সোহাগ, কভু অশ্রুপাত | তুলি ফুল দেব ব’লে, ফেলে দিই ভূমিতলে করি’ খান খান | কখনো আপন মনে আপনার সাথে করি অভিমান | জানি যদি ভালোবাস চির-ভালোবাসা জনমে বিশ্বাস, যেথা তুমি যেতে বল সেথা যেতে পারি--- ফেলি নে নিশ্বাস | তরঙ্গিত এ হৃদয় তরঙ্গিত সমুদয় বিশ্বচরাচর মুহূর্তে হইবে শান্ত, টলমল প্রাণ পাইবে নির্ভর | বাসনার তীব্র জ্বালা দূর হয়ে যাবে, যাবে অভিমান--- হৃদয়দেবতা হবে, কবির চরণে পুষ্প-অর্ঘ্য দান | দিবানিশি অবিরল লয়ে শ্বাস অশ্রুজল লয়ে হাহুতাশ চির ক্ষুধাতৃষা লয়ে আঁখির সম্মুখে করিব না বাস | তোমার প্রেমের ছায়া আমারে ছাড়ায়ে পড়িবে জগতে, মধুর আঁখির আলো পড়িবে সতত সংসারের পথে | দূরে যাবে ভয় লাজ, সাধিব আপন কাজ শতগুণ বলে---- বাড়িবে আমার প্রেম পেয়ে তব প্রেম, দিব তা সকলে | নহে তো আঘাত করো কঠোর কঠিন কেঁদে যাই চলে | কেড়ে লও বাহু তব, ফিরে লও আঁখি, প্রেম দাও দ’লে | কেন এ সংশয়ডোরে বাঁধিয়া রেখেছ মোরে, বহে যায় বেলা | জীবনের কাজ আছে----- প্রেম নহে ফাঁকি, প্রাণ নহে খেলা | ১৫ অগ্রহায়ণ ১৮৮৭ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
বিচ্ছেদের শান্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই ভালো, তবে তুমি যাও | তবে আর কেন মিছে করুণনয়নে আমার মুখের পানে চাও ! এ চোখে ভাসিছে জল, এ শুধু মায়ার ছল, কেন কাঁদি তাও নাহি জানি | নীরব আঁধার রাতি, তারকার ম্লানভাতি মোহ আনে বিদায়ের বাণী | নিশিশেষে দিবালোকে এ জল রবে না চোখে, শান্ত হবে অধীর হৃদয়---- জাগ্রত জগতমাঝে ধাইব আপন কাজে, কাঁদিবার রবে না সময় | দেখেছি আনেক দিন বন্ধন হয়েছে ক্ষীণ, ছেঁড় নাই করুণার বশে | গানে লাগিত না সুর, কাছে থেকে ছিলে দূর --- যাও নাই কেবল আলসে | পরান ধরিয়া তবু পারিতাম না তো কভু তোমা ছেড়ে করিতে গমন | প্রাণপণে কাছে থাকি দেখিতাম মেলি আঁখি পলে পলে প্রেমের মরণ | তুমি তো আপনা হতে এসেছ বিদায় ল’তে--- সেই ভালো, তবে তুমি যাও | যে প্রেমেতে এত ভয় এত দুঃখ লেগে রয় সে বন্ধন তুমি ছিঁড়ে দাও | আমি রহি এক ধারে, তুমি যাও পরপারে, মাঝখানে বহুক বিস্মৃতি --- একেবারে ভুলে যেয়ো, শতগুণে ভালো সেও, ভালো নয় প্রেমের বিকৃতি | কে বলে যায় না ভোলা! মরণের দ্বার খোলা, সকলেরই আছে সমাপন | নিবে যায় দাবানল, শুকায় সমুদ্রজল, থেমে যায় ঝটিকার রণ | থাকে শুধু মহা শান্তি, মৃত্যুর শ্যামল কান্তি, জীবনের অনন্ত নির্ঝর--- শত সুখ দুঃখ দ’লে কালচক্র যায় চলে রেখা পড়ে যুগ-যুগান্তর | যেখানে যে এসে পড়ে আপনার কাজ করে সহস্র জীবন-মাঝে মিশে--- কত যায় কত থাকে, কত ভোলে কত রাখে, চলে যায় বিষাদে হরিষে | তুমি আমি যাব দূরে--- তবুও জগৎ ঘুরে, চন্দ্র সূর্য জাগে অবিরল, থাকে সুখ দুঃখ লাজ, থাকে শত শত কাজ, এ জীবন হয় না নিষ্ফল | মিছে কেন কাটে কাল, ছিঁড়ে দাও স্বপ্নজাল, চেতনার বেদনা জাগাও--- নূতন আশ্রয়-ঠাঁই, দেখি পাই কি না পাই--- সেই ভালো তবে তুমি যাও ! ১৪ অগ্রহায়ণ ১৮৮৭ . *************************** . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
মানসী www.milansagar.com |