প্রণব রায় চৌধুরীর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
তাজমহল

ছোটো থেকে আমরা জানি আমাদের গর্বের তাজমহল,
সাত আশ্চর্যের এক বলে এখনও লোকেরা দেয় টহল |
জানি আগরার যমুনাতটে অনেক শিল্পীর চোখের জলে
সম্রাট শাহজাহান এই সুন্দর সৌধটি তুমি বানিয়েছিলে
স্মৃতিরক্ষায় মমতাজের যে তোমার সুয়োরাণী ছিল
কেন না সে খুব সুন্দরী ও অকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল |
কিন্তু আসল কথা যদি জানতে চাও, আমায় বিশ্বাস কর,
যা বলি তা মন দিয়ে শোনো, না হলে মিথ্যে জেনেই মর |
সম্রাট চেয়েছিল ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম রাখতে,
প্রেমের গন্ধ মাখানো একটা বিরাট কোনো স্থাপত্য গড়তে |
তাই সে খুন করেছিল তাঁর অনেক বিবির এক বিবিকে,
যে তাঁর প্রাণ দিয়ে ভালবাসতো সেদিনের কোনো কবি কে |

.        ***************************                                            
উপরে
প্রেমিক

ইতিহাসে খোঁজ মিলেছে মমতাজের প্রেমিক এক কবি
মুঘল হারেমের খোজাদের জীবনী লেখা যার হব্বি |
ওর আচরণে প্রাসাদের সবার, ওর প্রতি সন্দেহ হয়েছিল,
মমতাজের সঙ্গে, শাহজাহান ওকেও গুম খুন করিয়েছিল |
কিন্তু মমতাজের সমাধি যমুনাতীরে আগরার তাজমহলে,
আর ওর কবর, ওর সব জিনিষের সঙ্গে, এক আস্তাবলে |
পুরানো দিল্লীর সেই জায়গা খুঁড়ে, ওর কবর বেরিয়েছে,
কবরের সাথে অনেক হাতে লেখা কাগজও পাওয়া গেছে |
সেই সব লেখা থেকে জানা যায়, অনেক সব অজানা কথা,
হারেমের ভিতরে আছে, কত না চোখের জল, কত না ব্যথা |
অনেক বেগমের কোনোদিনই সম্রাটের সঙ্গে হয়না শয়ন,
খোজাদের সাথেই তাদের করতে হয়ে পুরোটা জীবন যাপন |
নিজেস্য দাস ও প্রেমিক ছিল একই খোজা অনেক বেগমের,
সন্তানের কামনার জন্য একমাত্র উপায় পুরুষ বেশ্যালয়ের |
কোনো খোজার ভালবাসা কোনো বেগম, কারুর অন্য খোজা,
সম্রাটের সাথেও প্রেম ছিল নানা খোজার, কি মজা কি মজা!
মাঝে মাঝে কোনো বেগম নয় কোনো খোজা হারিয়ে যেতো,
আসলে প্রত্যেকেই, সম্রাটের রোষের আগুনে গুম খুন হোতো |
কবির মত কোনো পুরুষ অন্দরমহলে পেতো না ঢুকতে,
কোনো বেগমকে দেখতে, ফরগেট্ এবাউট্ আদর করতে |
তাই দুজনেরই প্রাণ গিয়েছিল গুপ্তচরের ছোরার আঘাতে,
একজনের কবর তাজমহলে, আর একজনের আস্তাবলেতে |

.        ***************************   

.                                                                         
উপরে
.                            সিঙ্গুরের অন্যান্য কবিদের সূচির পাতায় ফেরত
.                               সিঙ্গুরের কবিতার মূল সুচির পাতায় ফেরত
বৃষ্টির দিন

ঘুম যখন ভাঙলো, তখন সবে মাত্র সকাল হয়েছে,
আকাশ মেঘে ঢাকা, সামনের রাস্তায় বিরাট জল জমেছে |
হাসিখুসী বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে জল ছপ্ ছপিয়ে,
খোলা দোকানের সামনে বিরাট সাদা দুধের গাড়ী দাঁড়িয়ে |
লোকেরা অনেক দেরীতে বিছানা ছেড়ে প্রাতঃরাশ করে,
বেশীর ভাগ, বাস-ট্রাম না চলায়, অফিস ফোনে সারে |
বুড়োদের জন্য দুঃখ হয়, স্কুলও নেই, অফিসও নেই,
বাড়ী বসে জল দেখা ছাড়া পড়ার খবর কাগজ শুধুই |
ভাবি এক সময় এদের সবার স্কুলও ছিল, অফিসও ছিল,
তখন কেউ কি বৃষ্টিকে উপভোগ করার সময় পেয়েছিল |
আজ যখন সময় হয়েছে, উপরের থেকে ডাকও এসেছে,
কারুর হার্টব্ লক, কারুর হাই সুগার নিত্য সঙ্গী হয়েছে |
কেউ বা প্রিয়জন বিয়োগে রয়েছে শোকেতে খুবই মুহ্যমান,
কাউকে না পারলেও, অনেক কষ্টে করতে হচ্ছে অর্থোপার্জন |
ভাবতে দুঃখ লাগে, যাদের অরথ আছে শরীরে নেই কষ্ট,
তারাও হাহুতাস করছে, পাওয়া যায়নি তো এখনও কেষ্টো |
কেবল হিসেবে ব্যস্ত কি পায় নি অখচ পাওয়া উচিত ছিল,
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখছে না, কি সুন্দর শোভা চারিদিকে হল |
যা কিছু করেছি বা যা কিছু করব তার কারণ উপভোগ,
এই সৌন্দর্য, যা পাওয়া যায় বিনা পয়সায় কেন করব না ভোগ |
আর পিছু টান থাকলে কি উপভোগ খুব ভালভাবে করা যায়,
নিজেকে সব কিছু থেকে ও সবের থেকে পুরো সরিয়ে নিতে হয়,
যেই একা হয়ে এই বিনা পয়সার শোভা দেখি পুরোপুরি মন দিয়ে,
চিন্তা চলে যায় এই শোভার সৃষ্টি ও রক্ষার কর্তাকে নিয়ে |
ভেবে অবাক! কি অদ্ভুত নিয়মে সবকিছু বাঁধা পড়েছে,
যাতে সব জিনিষ সব সময় পাল্টালেও সমতা ঠিক বজায় রয়েছে |
এই সব সময়ের মধ্যেও কিছু অসাম্য রয়েই গিয়েছে,
যা কি না আমাদের জীবনে নানা রকম বৈচিত্র এনেছে |
কোনো কিছুই পুরো অস্থির নয় আবার পুরো স্থির নয়,
সব মিলিয়েই থাকে সমতা বজায়, আর তার মধ্যে অসাম্যও রয় |
কষ্টকর হলেও বাবনো সম্ভব এমন জিনিষ যা পুরোপুরি সাম্য,
প্রায় অসাধ্য বানানো এমন সাম্য যাতে রয়েছে অল্প অসাম্য |
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কিন্তু রয়েছে সাম্যে আর অসাম্যে আশ্চর্য মিল,
যা হঠাত্ ক'রে হয়ে গেছে, ভাব আমাদের পক্ষে খুব মুশকিল |
তাই বিশ্বাস করতেই হয়, কেউ বা কিছু নিশ্চয় করেছে সৃষ্টি,
যাকে বুঝতে ও জানতে গেলে আমাদের লাগবে তীব্র দিব্যদৃষ্টি |

.        ***************************                                             
উপরে

গানমেলা

আজ সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম বার্ষিক গান মেলাতে,
সময় কাটাতে আর ভাল বাংলা গান শুনতে |
রবীন্দ্রসদন চত্তরে খোলা আকেশের নিচে,
মুক্তমঞ্চে সাপ্তাহিক সান্ধ্য আসর বসেছে |
প্রত্যেকজন শিল্পী দুটো করে গান গাইছে,
আরম্ভ-শেষে তাদের নাম ঘোষিত হচ্ছে |
শিল্পীদের গায়কী রেখেছে সবার সম্মান,
যদিও এটা সম্পূর্ণ বিনা পয়সার অনুষ্ঠান |
বাত্সরিক এই আনন্দ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে,
ভাল গায়ক পরিচিতি পায় দর্শক সমাগমে |
নামী দামী গায়কদেরও তথা থাকে অনুষ্ঠান,
শুনতে হলে মূল প্রেক্ষাগৃহে ঢোকার টিকিট কাটান |
পুরো ব্যাপারটাই হয় সরকারী ব্যাবস্থাপনায়,
সুন্দর বন্দোবস্ত যাতে কোনোরকম ভুল না হয় |
অনেকগুলো বছর ধরে এই অনুষ্ঠান চলছে,
খুব একটা বড়সড় ত্রুটি কোথাও না মিলছে |
ভেবে অবাক হই যে এ ব্যবস্থাও বামফ্রন্টের,
কেন করে না তবে বদল সরকারের মুখের |

.        ***************************                                   
 উপরে
প্রেম

এখন আমার হয়েছে বয়স এত,
তখন এইচ-এস এর পরে হবে আর কত |
বাবা বলতো হয় ষোলো নয় সতেরো,
মা বলতো না না, হবে অনেক কম আরও |
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সবে ঢুকেছি,
টি-স্কোয়ার নিয়ে একা বাসে চলেছি |
এই রকম সময় একদিন আলাপ হয়েছিল,
দাদার কলেজের সোস্যালে এসেছিল |
আমাদের ক্লাসের মৃত্যুঞ্জয় ওর দাদা,
এমনিতে হুল্লোড়ে, বাবার নামে কাদা |
থাকে ওরা নৈহাটিতে ছোট বাড়ীতে,
প্রায় যেতাম সেথা একটু বেরিয়ে আসতে |
ভালবাসতে কখন যেন শুরু করলাম,
তবু তাকে কখনও জানাতে না পারলাম |
সর্বদা ভয় ছিল যদি রিফিউস করে,
বাবাকে বলে ও সবাই আমাকে মারে |
মৃত্যুঞ্জয় শেষ দিকে বছর মিস্ করল,
আমার ওখানে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল |
বোনের বিয়ে ছিল বছর পাঁচেক পরে,
নৈহাটি যেতে হয়েছিল নেমন্তন্ন তরে |
গিয়ে শুনি সে নাকি আগে এক বছর,
থাকতে গিয়েছে মৃত্যুর সঙ্গে ওপার |
মরার আগে দাদাকে সে বলে গিয়েছে,
'আমার বিয়ে অনেক আগে ঠিক হয়েছে |
বাবা বকছে, কিন্তু সে তো আর এল না,
মরা ছাড়া কিছু আর উপায় হল না |'
জানতে চাই সে বরের নাম বলেছে,
সবাই বলে, কেমন নেকামো করছে |
কাঁদি আর ভাবি ফেরার পথে ট্রেনে,
আমার জন্য তার প্রেম সবাই তা জানে |
জানার আমার দরকার কিন্তু আমি জানি না,
কি যে এখন করবো, তা ভাবতে পারি না |
যদিও আজও আমি পারিনি তার কথা ভুলতে,
কিন্তু সে আমার অপেক্ষায় পারিনি বুঝতে |
ঠিক করলাম এক্ষুনি তাকে বিয়ে করবো,
উল্টোদিকের ট্রেন এলেই ঝাঁপিয়ে পরবো |
হঠাত্ জেগে, বুঝি স্বপ্ন দেখছিলাম,
কিছুটা তার সত্যি সেই প্রথম জানলাম |

.        ***************************                                    
উপরে
আশা  

কদিনের জন্যে গিয়েছিলাম ভুটান সিকিম বেড়াতে ,   
আশা ছিল  ফিরে এসে  দেখব ইনবকশ ভর্তি ছড়াতে ।
খুব দুঃখের সঙ্গে এখন দেখি সে গুড়েতে বালি ,    
ইনবকশে অন্য চিঠি আছে ছড়ার ব্যাগ খালি ।
ব্রজেশ  বলেছিল লিখবে ছড়া শুভ   নববর্ষের  পরে ,
পরমেশের উচিৎ  ছিল লেখা ম্যানিলা থেকে ফিরে ।
রুদ্রও শারীরিক কুশলতা ছড়ায় জানাতে পারতো ,
শুভু বোধহয় এখন ব্যস্ত নয়তো নিশ্চয় লিখতো ।
আবেশ কাবলি সুর্বণ সুযোগের সদ্‌ব্যবহার করেনি ,
চাঁদুর অন্য কাজের ওজর আছে তাই ও লেখেনি ।
পড়ে যাওয়া দুধের জন্য দুঃখ করে কি লাভ বল ,
নিযেই  লিখে যাই না হয় দারুন সার্থপরতাই হল ।
আশা করি পুরোটা না পড়েই মুছে ফেলে দেবে না ,
দয়া করে নিযেদের লেখা ছড়া পাঠাতে ভুলবে না ।
কিন্তু  এত করেও তোমাদের যদি জাগান না যায় ,
‘বল হরি হরি বোল ` বলা ছাড়া আর পথ কোথায় ।   



.               ***************************                                    
উপরে
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান  

ঘরের খেয়ে বনের মোষ                                                                                  
                      তাড়ান নয় সোজা ,
পেটে খেলেই পিঠে সয় ,
  নয়ত নেই মজা ।
দিব্যি দিয়ে বলতে গেলেও
  লাগে না তো ভয় ,
বনের মোষ নিয়ে  খেললে
  পিঠে খেতেই হয় ।
বনের থেকেই মারের ভয়
  বেশী সময় থাকে ,
কখন মোষ অথবা ঘরেও
  গুঁতোর গুটি পাকে ।
কিন্তু এটা   সোজা কথা
  পেট ভর্তি থাকা দরকার ,
তাই বেশি সময় তাড়ায়
  শুধু দেশের সরকার ।
খাবারের কোনো অভাব
  যদি নাহি থাকে ঘরে ,
মোষ, যে বনেরই হোক ,
  তাড়াতে ইচ্ছা করে ।
কিন্তু যদি খাবারের
  কোনো অভাব বোধ হয় ,
বনের মোষ তাড়ান
  খুব ইচ্ছা হোলেও নয় ।
পুরোটা সময় দিতে হবে
   খাদ্য যোগান প্রক্রিয়ায়       
যাতে স্ত্রীপুত্র পরিবার
   নিয়ে ভাল থাকা যায় ।
মনের যত ইচ্ছেকে
   তখন  রাখবে তালা বন্ধ ,
দেখবে শুধু বাড়ীগাড়ী
   কিন্তু মনের মধ্যে অন্ধ ।
বর্তমান ও ভবিষ্যতেও খাবার
   চিন্তা না থাকলে ,
তবেই যেমন চাই ইচ্ছে-  
   ঘুঁড়ি ওড়াতে পারলে ।
দেশের সেবা করার ইচ্ছা  
   তখন যদি কারও হয় ,
ইচ্ছে ভেবেই করতে হবে
   দেশ সেবা ভেবে নয় ।

.               ***************************                                    
উপরে
একা লাগে

বড়ই যে এখন লাগে একা         
কারুর যে আর নাই যে দেখা।
ভেবেছিলাম সবাই এবারে ,
বলে হরি , লিখবে ছড়ারে।
বেশীর ভাগই  ব্যস্ত আছে ,
কাজটা শুধু বদলে গেছে।
ভাবে ছড়া তারাই লেখে  
সময় যাদের অনেক থাকে।
শুভু মাঝে বেশ লিখল ,
প্রেগে গিয়ে কিযে হল।
ও এখন ব্যস্ত বড়ই  ,
দেবী-তেনারও  নো  রিপ্লাই।
ওরা খালি আমায় শুধোয়  ,
উত্তর কি দিয়েছে শুভোয়।
রুদ্রর কাছে আছে সময়  ,
ছড়া লেখায় অপমান হয়।
ও লিখতে পারে মহাকাব্য  ,
আমরা তার কি বুঝব  ?
এখন গ্লোবালি চ্যাট করে  ,
সবাই  লেখা  বুঝতে পারে।
পরমেশ ভালই লিখছিল  ,
মোষ তাড়াতে  ব্যস্ত হল।
তাড়ানো , এটা বলা যায়  ,
নিশ্চয় হাত খুলে দেয়। (লেখার)
প্রবালের কিছু সময় আছে  ,
হাসপাতাল থেকে ছাড়া  পেয়েছে।
ওকে নিয়ে  ভরসা  কত  ,
এখনই  ফ্যান  শত শত।
ছড়ার  প্রসাদও যদি  পেত  ,
তারা  কি  পড়তে  পারত।
শুভু শুধু তোকেই  বলি  ,
নাহয়  কটা  ছড়া  লিখলি।
তবেই  হবে  ছড়া  চালাচালি  ,
নাহয়  সব দিক  হাততালি।
মুখ্য ছড়া  লেখা/পড়া  নয়  ,
সম্পর্ক যেন  গভীর  হয়।

. ***************************                                      
উপরে
বোঝার চেষ্টা  (সিঙ্গুরের কবিতা)          

গাছ করে খাবার তৈরী যা সে নিজে খায় ও অন্য সব প্রাণীরা খায় ,
সব প্রানীই শ্বাসপ্রক্রিয়ায় অক্সিজেন নেয় যা গাছ ফিরিয়ে দেয় ।
তেমনি ভাবে চাষা মাঠে ফসল ফলায় আর অন্য সবাই মিলে খায় ,
কিন্তু আমরা মানুষ আবার ভারতীয় , তাই নিয়ম মানি না হায় ।
চাষাকে প্রায় খেতেই দিই না, আধপেটা খাইয়ে ভাগচাষ করিয়ে নেই ,
আবার যখন তখন যে কোনো অজুহাতে চাষের জমি কেড়ে নেই ।
তাদের খুব দরকারে টাকা আর চালডাল খুব  চড়া সুদে ধার দিই  ,
তাদের ফলন সুদাসল হিসাবে কেটে নিয়ে তাদের বাংলা মদে চোবাই।
এই সব চাষাদের বেশীর ভাগই নিরক্ষর ও দারিদ্র্যসীমার নীচে ,
সরকারেও নিজেদের তেমন আধিপত্য নেই তাই পরনির্ভরতাতে বাঁচে ।
বামপন্থাই তাদের কাছে বাঁচার জন্য একমাত্র পরিশুদ্ধ অক্সিজেন ,
কেননা বিশ্ব জুড়ে কৃষক মজদুররাই হল বামপন্থীদের আসল ওজন ।
তাই তারা তুলনামূলকভাবে সুখে আর শান্তিতে ছিল বেশ কিছু বছর ,
যতক্ষণ না বাম সরকারই তাদের কর্মচ্যুত করল - শিল্প ওজর ।
যদিও আমাদের দেশ এখনও পুরোপুরি কৃষিপ্রধান আর  উন্নতিশীল,  
কেন হটাৎ কৃষির বদলে শিল্পেই আমাদের উন্নতি বোঝা মুশকিল ।
যদিওবা সমষ্টিগতভাবে তা হয় , তাও মেনে নেওয়া যায় না কিছুতেই
কিকারণে সরকার তাদের জমি কিছু শিল্পপতিকে হস্তান্তর করবেই ।
এব্যাপারটা তাও যদি ওদের সবার মনের মতো ও সম্মতিতে হত  ,
হয়তো সবদিক ভেবে, সমষ্টির কথা চিন্তা করে মেনে নেওয়া যেত ।
কিন্তু সরকারের আলোচনার দৃষ্টিভঙ্গীর অভাব ও জোর খাটান ,
তাদের মূলনীতি কি ও তা বামপন্থী রাজনীতি কিনা তুলেছে এ প্রশ্ন।
সাধারণ নাগরিক হিসাবে জানাই, সরকার দেশের লোকের ভাল করুক ,
বিদেশীয় শক্তি বা ব্যক্তিমালিকানার স্বার্থে একেবারেই না চলুক ।


.                   ***************************
.                                                                                 
উপরে
.                                    সিঙ্গুরের অন্যান্য কবিদের সূচির পাতায় ফেরত
.                                       সিঙ্গুরের কবিতার মূল সুচির পাতায় ফেরত
প্রয়োজন  

পরে যা আমি লিখতে চাই তার জন্য একটা  স্বতঃসিদ্ধহবে  যে মানতে ,
প্রকৃতিতে অকারণে যে কিছুই ঘটে না এটা হবে যে স্বীকার করতে  ।
এই সব কারণের অনেক কিছুই আমাদের আগে ছিল না জানা বা বোঝা ,
এখন বিঙ্গানের জন্য তার বেশ কিছু কারণ হয়ে গেছে আমাদের খোঁজা ।
কিন্তু অনেক  কারণই এখনও আমাদের কাছে রয়ে গেছে যেন গোলকধাঁধাঁ ,
বেশ কিছু ঘটনার কারণ বুঝতে এখনও আমরা হয়ে যাই পুরো হাঁদা ।
যারা ব্যাপারটা বিশ্বাস করে না , স্বতঃসিদ্ধ হিসাবে স্বীকার করে না ,
তারা যেন পরের লাইনগুলো আর কষ্ট করে পড়ে সময় নষ্ট করে না ।
উপরের স্বতঃসিদ্ধ অনুযায়ী যা কিছু আছে, সবই প্রয়োজনপ্রকৃতি মাঝে,
যদিও এখনও আমরা জানিনা অনেক প্রাকৃতিক জিনিষ লাগে কি কাজে  ।
কিন্তু জানা আছে , বহু জিনিষের প্রয়োজনেরকারণ আমরা সবে জেনেছি ,
প্রয়োজনজানিনা  বলেই কোনো জিনিষ  অপ্রয়োজনীয়নয় তা  মেনেছি ।
প্রকৃতিতে যখন  আমরাও আছি , তা হলে আমাদেরও  প্রয়োজন আছে   ,
প্রকৃতির মূল কাজ সৃষ্টি যার জন্য অন্য সব ও আমাদের দরকার রয়েছে ।
এখন যদি খুঁজি কি সৃষ্টির কাজ আমরা করছি যার জন্য আমাদের প্রয়োজন,
দেখা যাবে নিরানব্বই দশমিক নয় নয় শতাংশ মানুষের সৃষ্টি তার সন্তান।
খুব অল্পসংখ্যক মানুষের প্রয়োজন মাণব সভ্যতার অগ্রসর ও উন্নতিতে,
আর সব মানুষের  প্রয়োজন পরের প্রজন্মের সৃষ্টি ও বংশবৃদ্ধিতে ।
আমাদের প্রকৃতিতে প্রয়োজন বংশবৃদ্ধি, যাতে আমাদের শ্রেণী বাড়তে পারে ,
আমাদের শ্রেনীর  এখনও-অজাতকেরা  ভবিষ্যতের দিকে হাত বাড়াতে পারে ।
তবে এটা বুঝতে হবে শুধু জন্ম দিলেই আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে  যায় না ,
যতক্ষন না  নবজাতককে  বড় , সুস্থ ও আদর্শ করে  গড়ে তোলা হয় না ।
প্রয়োজন তখনই  ফুরাবে যখন সে আবার নিজে বংশবৃদ্ধি করতে সমর্থ হবে ,
কি তার প্রয়োজন বুঝতে  পারবে ও তার সন্তানকে তা বোঝাতে পারবে ।
এখানে কিন্তু আরও একটা কথা বলে রাখা দরকার বলে মনে হয় আমার ,
বায়োলজিক্যাল সন্তান নয় , পরের প্রজন্মের যেকেউই  সন্তান আমার  ।
আমার কথাটা বোধহয় এখনও হয় নি সবাইএর কাছে পুরোপুরি পরিষ্কার,
বলতে চাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন পরের প্রজন্ম সৃষ্টি করার ।
নানা কারণে কারুর যদি নিজস্ব সন্তান না  হয় , তবু তার রয় প্রয়োজন,
পরের প্রজন্ম সৃষ্টিতে নানা দিকে নানা রূপ সাহায্য দিয়ে  মাণব গঠন ।



.                   ***************************
.                                                                                 
উপরে
প্রশ্ন

পৃথিবীতে এত ধরনের জীব আছে ,
কিন্তু মানুষ ছাড়া কেউই কেন সভ্য নয় ?
অন্য সবার উন্নতিই পরিবেশ নির্ভর,
শুধু মানুষের উন্নতি কেন  নিজের হাতে রয় ?
বোঝার সুবিধার জন্য এখানে বলি ,
সভ্য বলতে সমাজবদ্ধ বা একত্রিত হওয়া ,     
উন্নতি- শুধু পরিবেশ নির্ভর না হয়ে
নিজের জোরে বাঁচার   লড়াই লঘু ও সুখময় হওয়া ।
ইতিহাস আর পুরাতত্ত্ববিদ্যা বলে
অন্য জীবেদের জীবনযাত্রাপ্রণালী চলে এসেছে
একই রকমভাবে বহুদিন ধরে , আর সেখানে
মানুষ অনেক পরে এসেও অনেক পরিবর্ত্তন করেছে ।
যদিও প্রমাণ দেওয়ার মত কোনো
সিদ্ধান্ত বা তত্ত্ব আমার  কাছে এখন নেই ,
তবুও উত্তর যদি আমাকে দিতেই হয়
তবে নানা রকম চিন্তা করে ‘জিঙ্গাসু’ দিতে চাই ।
জিঙ্গাসুর মানে ধরেছি স্বার্থশুণ্যভাবে
যাহা কিছু ঘটে বা ঘটিতে পারে তাহা জানার ইচ্ছা ,
যেখানে কৌতুহল নিজের স্বার্থে ও
সুবিধার জন্য কোনো জিনিষ জানার ইছা ।
মানুষ ছাড়াও অনেক জীবের আছে কৌতুহল
তাতে তারা প্রয়োজনভিত্তিককাজ করতে পারে ,
কিন্তু পারে না অবস্থার উন্নতি করতে,
যা জন্মসূত্রে জিঙ্গাসু হওয়ার জন্য মানুষ পারে ।   


.                    ***************************
.                                                                                
উপরে
লাবু

আজ  দেখা যাক  , এখন কি অবস্থা তার  ,
টিয়ার সঙ্গে খেলা বিয়ে হয়েছিল যার ।
বেলতলা ইস্কুলে পড়তো , সঙ্গে মোদের ,
মনে পড়ছে না নাম কোনো  মেয়েদের ।
নাম তার ধরা যাক লাবণ্যপ্রভা বসাক ,
ডাক নাম লাবু, এটাই ঠিক করা যাক ।
টিয়ার সাথে শেষ দেখা তার ক্লাশ ফোরে ,
তবুও ভোলেনি সে ক্লাশ থ্রির বিয়েটারে ।
তার ছিল বাবামা ,এক ভাই , দুই বোন ,
তার যখন  বয়স  ষোল বাবা  গত   হন ।
আরম্ভ যখন  চাকরী , বয়স তখন  কুড়ি  ,
বৌদি আসার  পরেই , মা খালি  বলে মরি ।,
বছর  না ঘুরতে দাদাবৌদি আলাদা  হয়  ,
কষ্টে পাত্র পেয়ে বোনের বিয়ে দিয়ে দেয় ।
এর মধ্যে কবার  মা , বিয়ের চেষ্টা করেছিল ,
ও প্রত্যেকবার সেসব কথা উড়িয়ে দিয়েছিল ।
বিশ্বাস করতো টিয়া  নিশ্চয় কখন  আসবে ।
যদি অপেক্ষা না করে,  টিয়া কি ভাববে ।
বোনের বিয়ে দেবার সময় , বয়স   পঁয়ত্রিশ ,
মা মারা যাওয়ায় বুঝল একা থাকা কি জিনিষ ।
বোন এবার নিয়ে গেল , ওদের বাড়ি থাকতে ,
ছেলেমেয়ে সামলাতে আর কিছু টাকা পেতে ।
চাকরি থেকে দুবছর আগে অবসর  নিয়েছে  ,
পিএফ বোনঝির  বিয়েতে  প্রায় শেষ হয়েছে ।
বোনপো  চাকরি পেয়েছে ব্যাঙ্গালোরেতে ,
বোন ভগ্নিপতি সেখানে , সংসার সামলাতে ।

এখন লাবু বুঝেছে তার নিজের কিছুই নাইরে ,
ভাড়ায় থাকার জায়গাও চলে যাবে হায়রে ।
লাবু সস্তা বৃদ্ধাশ্রমের খোঁজে বেরিয়েছিল ,
আমার বাড়ি খুঁজে এসে টিয়ার খবর  নিল  ।
যখন শুনল স্ত্রীপুত্রপরিবার নিয়ে টিয়া কেনিয়ায় ,
মুখটা এমন করল  , দেখে কষ্ট হল হায় ।
বছরখানেক পরে , লাবুর সঙ্গে আবার  দেখা ,
চেতলার নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে থাকে একা ।
বোনভগ্নিপতি ছেলের সঙ্গে থাকে ব্যাঙ্গালোরে ,
ছেলের এখন হয়নি বিয়ে, তাই ঘরের কাজ  করে  ।
যে বোনঝির বিয়েতে বছরদুই আগে অনেক খরচ  হয় ,
বিয়ের কমাস পরেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ।
বোনঝি টুসি চাকরি করে, মেসে থাকে এখন ,
সে চায় একসাথে থাকতে,  দুজনেই একা যখন ।
দেখা হবার পরের মাসে লাবু নবনীড় ছেড়ে দেয় ,
টুসির সাথে টালিগঞ্জে একটা বাড়ি ভাড়া নেয় ।
টুসি সকালে বেরিয়ে যায় ,রাত হয়ে যায় ফিরতে ,
লাবু ঘরের কাজ করে ও অভ্যস্ত হয়  টিভি দেখতে ।
টুসির এখন এমন কাজ  , ছুটির দিনও বেরোতে হয় ,
সকাল হলেই এক বড় গাড়ি এসে , তুলে নিয়ে যায় ।
লাবু সকালসন্ধ্যে এক গৌড়ীয়মঠে  কাটায় ,
গুরুবোনেদের সাথে বেরয় নানা ছুতোনাতায়  ।
সেখানে লোকে টুসির সম্পর্কে নানা কথা বলে ,
বসের সঙ্গে তার নাকি আদিরসের সম্পর্ক চলে ।
টুসি যা মাইনে পায় তা তার সাজেই খরচ হয় ,
সংসারখরচের প্রায় পুরোটাই  লাবুকে চালাতে হয় ।
এক সোমবার  অনেক বেলায়  টুসির ঘর বন্ধ রয়েছে  ,
পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে দেখে, টুসি দড়িতে ঝুলছে ।
বস এলো তার  বউকে নিয়ে , দুঃখ আর  রাগ দেখাল ,
ফেরার পথে অনেকটা  সময়  লোক্যাল থানায়  কাটাল ।
পুলিশ কাটাছেঁড়া না করে দাহ করার দিল অনুমতি ,
পাড়ার লোক খুব ঘটা করে মরদেহের করল গতি  ।
সারাদিন কিছু খায়নি লাবু, চিন্তায় রাত জেগে থাকে ,
পরদিন ভোর না হতেই , পুলিশ ধরল এসে তাকে ।
কেস সাজাল সে নাকি টুসিকে বিষ দিয়েছে ,
আসল  ঘটনা  প্রমাণ দরকারমত  পালটে নিয়েছে ।
পুলিশ-সাজান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও পাওয়া গেল ,
লাবুকে  আইনঅনুযায়ী , ফাঁসির হুকুম শোনান হল ।
তিনবছর  পুলিশ হাজতে,  লাবু অনেক  লাঞ্ছনা সয়েছে ,
ক্ষয়রোগ আর  অচিকিৎসায়  তার মর মর অবস্থা হয়েছে ।
রায় বেরলে অসুস্থুলাবু ডাকে জেলে আমাকে ,
‘সে এখনো মরতে পারছে না ‘ বলতে বলে টিয়াকে ।
টিয়া যেন তাকে মরার অনুমতিটা অন্ততঃ দেয়,
নয়ত  মরা তার কাছে বাঁচার চেয়েও বেশী দায় ।

.             ***************************
.                                                                      
উপরে
রক্ষক যখন ভক্ষক (সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কবিতা)

মানুষ  নিজের  সম্বন্ধে যাই  ভেবে  থাকুক
          একপ্রকার জীব  বইতো তারা  আর  কিছু  নয় ।
কিন্তু বেশীরভাগ  জীব  একা  বাঁচতে  পারলেও
          মানুষকে  বাঁচতে গেলে সবাই  মিলে  বাঁচতে  হয় ।।
বাঁচার  তাগিদেই  মানুষ তার জন্মলগ্নে করেছিল
          সৃষ্টি, ভৌগলিক ও প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধ সমাজের ।   
তার বুদ্ধি আর জিজ্ঞাসু তার জীবনযাত্রার মানে
         খুব তাড়াতাড়ি  এনে দিয়েছিল  উন্নতির জোয়ারের।।  
পুরাকালেই  সে বুঝেছিল  যদিও সে আসলে  স্বার্থপর,
        নিজের  বাঁচার  স্বার্থেই, হতে হবে  সমাজ  নির্ভর।
প্রতিটি মানুষের  মনে তাই চিন্তা দুরকমের
       ব্যক্তিগত স্বার্থপরতা আর সমষ্টিগত কাজ  কর্মের।।
আরো সে বুঝেছিল  নিজে বাঁচার  জন্যই
       প্রথম স্থান সমষ্টিচিন্তার আর  স্বার্থচিন্তা পরে ।
কিন্তু যেহেতু মানুষ আসলে এক স্বার্থপর জীব
       চিরদিনই  দিয়ে এসেছে   সে প্রথম স্থান স্বার্থপরতারে।।
তাই যতক্ষণ না কোনো স্বার্থসিদ্ধির হয়
     দরকার , সে মেনে নেয় সমষ্টিচিন্তার আছে অগ্রাধিকার।
কিন্তু যখনই  কোনো স্বার্থসিদ্ধির হয়
    প্রয়োজন, সমষ্টিচিন্তার থাকে না আর কোনো অধিকার ।।
গণতান্ত্রিক সরকার গড়ার মূল কারণ,  যেন
    কতিপয়ের স্বার্থসিদ্ধির জন্য না ক্ষুন্ন হয় সমষ্টির বাঁচন ।
সরকারের কাজ তৈরী করা এমন আইন যাতে
   ব্যক্তিগত স্বার্থ কোনো কারণেই গ্রাস করেনা সমষ্টিচিন্তন।।
আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান জনবহুল যার বেশীই
  এখনও অশিক্ষিত ও দারিদ্র্যসীমার নীচে করে  কষ্টে কালাতিপাত ।
একারণেই বৃহত্তম গণতন্ত্র হওয়া সত্ত্বেও
  সরকারে নেই তাদের আধিপত্য  যেখানে সমষ্টিগতস্বার্থের ধারাপাত ।।
দেখলেই বোঝা যায় আমাদের সরকারে ভিড়
  শুধু শিক্ষিত আর দারিদ্র্য সীমার অনেক উপরের ধনী লোকেদের।
যারা ব্যস্ত শুধু নিজের কোলের দিকে কিভাবে
  সমষ্টির প্রাপ্য সব কিছু টেনে আনা যায় বোকা বুঝিয়ে ওদের ।।
সত্যি যদি দেশপ্রেম থাকে সরকারে আসীন সেইসব
 শিক্ষিত ও বড়লোকেদের, তাদের হওয়া উচিৎ প্রথম ও প্রধান কাজ  
সারা দেশ থেকে যেভাবেই হক  অশিক্ষা ও দারিদ্র্য
     দূর করে,  সব দেশের লোককে খুব  কাছাকাছি আনার মেজাজ ।।   
যতই দেশের সব লোকের মধ্যে ব্যবধান ঘুচে যাবে
    ততই তাদের মধ্যে দেশপ্রেম আর সমষ্টিগত চিন্তা জাগ্রত হবে ।
সেভাবেই হবে মানুষ হিসাবে বাঁচার সার্থকতা,  তাতে
    যায় তো যাক না পিছিয়ে সেই বাসনা ‘আরও উন্নত হতে হবে’ ।।
আমাদের এখন প্রধান দরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ
      করে সবাইকে শিক্ষিত ও দারিদ্র্য সীমার উপরে নিয়ে আসার ।
ততদিন পর্যন্ত ভুলে থাকা অন্য উন্নতির সোপান,
      যাতে প্রদেশ নয়, লোকে খালি ভাবে পুরো দেশটা আমার ।।
এই অবস্থায় সরকারের জোর করে বাস্তুচ্যুত করে
       কৃষিজমি অশিক্ষিত ও গরিবের হাত থেকে শিল্পপতিকে দেওয়া
একেবারেই যেন অত্যাচারী জমিদারের উপেনের দুবিঘা
       জমি অসৎউদ্দেশে ও স্বাথসিদ্ধিতে না বলেই কেড়ে  নেওয়া ।।
সরকারের এখন প্রথম কাজ সব দেশবাসীকে সব রকম
      ভাবে দেশপ্রেমিক ও সমষ্টি সম্বন্ধে দায়িত্ত্বশীল করে তোলা।
কৃষি দরকার না শিল্প দরকার এ চিন্তা এখনকার
      মতোহাঁড়িতে ঢুকিয়ে ঘরের চালে শিকেয় তুলে রাখতে না ভোলা।।
তাও যখন সরকার বন্দুকের জোরে ও শিল্পবিপ্লবের
      মুখোস পরিয়ে কৃষকের জমি গায়ের জোরে শিল্পপতিদের দিচ্ছে।
তাও আবার এমন ভোগ্যপণ্য তৈরী করার জন্য
        যার ব্যবহারের  কোনোসুযোগ সেই কৃষকেরা না পাচ্ছে ।।
জনসাধারণ এখনও জানেনা কেন এই জোর আর
       কিই বা দেশের সমষ্টিগত লাভ এধরণের  ভোগ্যপণ্য সৃষ্টিতে ।
তাই তাদের মন চলে যায় সঠিক কারণ অনুসন্ধানে
      বোঝা যায় এ সবই হচ্ছে কোনো বিদেশী শক্তিরইঙ্গিতে  ।।


.                            ***************************                                      
উপরে
প্যারাডক্স  (সিঙ্গুরের কবিতা)          

ছোটোবেলা থেকে শুনি বাংলাপ্রদেশ সুজলা সুফলা আর শস্যশ্যামলা,
অল্প আয়াসে হয় অনেক ফলন, আবহাওয়া নিয়েও নেই কোনমামলা ।
তাই এ প্রদেশের উন্নতি সারা  দেশে ছিল স্বাধীনতাকালেবেশী বেশ ,  
তখন বলা হত আজ যা বাঙলা বলে কাল তাই বলবে  সমস্ত দেশ ।
সবাই জানে স্বাধীনতা  সংগ্রামে বাঙালীর নেতৃত্ত্বে বেশী সবার থেকে,
নিজের প্রাণপরিবার তুচ্ছ করে করেছে তারা সদা বিব্রত বৃটিশশক্তিকে।
সেই বাঙালীই স্বাধীনতাউত্তর কাজে দিয়েছে ফাঁকি ভুলে গিয়েছে দেশপ্রেম,
কারণ তাদের তখন নতুন বন্ধু কৃষক ও মজদুরের পরিত্রাতা সিপিএম ।
আধপেটা খাওয়া অশিক্ষিত কৃষক মজদুরদের তখনকার  নতুন বন্ধু বলে ,
তোমরাই প্রাণ তোমরাই আশাভরসা  আমাদের এই সর্বহারাদের দলে ।
তাদের ভোটের জোর ও  বিপক্ষেরঅপদার্থতায় বন্ধু বসে সিংহাসনে,  
মাঝে একবার শুধু সারথি পালটে চল্লিশ বছর  চলেছে সেই রথ সমানে ।
কলকারখানা সব লাটে উঠল , কেন্দ্রীয় সরকার সবচেয়ে বড় শত্রু হল ,  
ইংরাজী পড়ান বন্ধ হল , অনেক মদের দোকান আর সিবিএসই স্কুলহল ।
যে কম্পুটার এখন তাদের  নিত্য সঙ্গী তার কাজে ব্যবহার পিছান হল ,
কাজ না করেই মাইনে বাড়ল, পার্টি ও পার্টির লোক ফুলে ফেঁপে উঠল ।
মিছিলে যোগদানলোকেরএকমাত্র কাজ হল, এল পাইয়ে দেবার রাজনীতি ,
দেশপ্রেমউবে গেল , ঘটল বাংলা ও বাঙালীর অপুরণীয় বিরাট সব ক্ষতি।
আগের প্রায়সব সিদ্ধান্ত হল  ঐতিহাসিক ভুল এটা নতুন সারথি জানাল ,
ভুল শোধরাতে মেরে খোঁড়া করা  শিল্পঘোড়াকেএকেবারে ওড়াতে চাইল ।
ক্ষমতা, লোভ, অর্থের জোরে তারা আজ একথা ভুলে গেছে বেমালুম,
তারা রাজা নয় আর ওই গরিব অশিক্ষিত চাষারাও করতে পারে হালুম ।
আজ তারা শিল্পপতিদের বন্ধু হয়ে করতে চাইছে গরিব চাষাদের সর্বনাশ,
কি লজ্জার কি দুঃখের তাদের নাকি আদর্শ কৃষক-মজুর-দরদী কার্ল মার্ক্স।


.                   ***************************
.                                                                                 
উপরে
.                                    সিঙ্গুরের অন্যান্য কবিদের সূচির পাতায় ফেরত
.                                       সিঙ্গুরের কবিতার মূল সুচির পাতায় ফেরত
    মাতৃ ভাষা

(এই বিষয়ের উপর আপনার মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করুন)

ছোটো বেলার থেকে আমরা বড়দের কাছে শুনি মাতৃভাষায়  শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা ,  
কিন্তু কোনটা  যে আমার  মাতৃভাষা  এ  ব্যাপারে কেউ কি    দিয়েছে  দীক্ষা  ।
মাতৃভূমি  বললে, আমরা  সাধারণতঃ   বুঝি সেই দেশ যে দেশে কেউ জন্ম নেয় ,
তাহলে  মাতৃভাষা    হওয়া উচিৎ  যে ভাষায়  সে দেশের  লোকেরা কথা কয় ।
আমরা   বাঙালিরা  মাতৃভুমি  বলতে   বুঝি  আমাদের  দেশ যার  নাম  ভারতবর্ষ,
আর মাতৃভাষা  বলতে  বুঝি বাংলা ভাষা   যা শুধু বাংলা  প্রদেশে ব্যবহার্য।
বাঙালীদের  মাতৃভূমি  হল  আমাদের  দেশ যাকে  ভারতবর্ষ বা  ইন্ডিয়া সবাই বলে  ,
আর  মাতৃভাষা  হল   বাংলা  যাতে  নাকি  শুধু বাঙালীদের   মায়েরা  কথা বলে ।
কিন্তু এটা বোঝা খুবই মুশকিল  আমরা  সবাই  যদি  হই  ভারত-দেশের  অধিবাসী,  
আমাদের  মায়েরা  কি করে এবং কেন হবে জায়গা-ভিত্তিক নানা  রকমের  ভাষাভাষী  ?
সেই জন্যেই  আমাদের  প্রাদেশিকতাও   ঘোচে না ও স্বদেশ প্রীতিও জাগে না ,
সবাই মিলে এক হয়ে এক সুরে এক ভাবে  লড়াই করে বাঁচার চেষ্টা করি না  ।
ভারতবাসী  হয়ে যদি আমাদের  এ পৃথিবীতে  অন্য সব মানুষের  সাথে বাঁচতে হয়,
মেড়ার যেমন খুঁটির জোর  তেমনি  আমাদের  লড়াই  করতে  দেশপ্রেমের দরকার  হয়  ।
সারা দেশের  লোকের একই রকম  স্বদেশপ্রীতির জন্য একই  ভাষায় কথা বলা  দরকার,
কিন্তু এই  দরকার  মেটাতে  চেষ্টা  করেনি  দেশের বা কোনো প্রদেশের সরকার ।
জোর করে রাজনৈতিক  কারণে  হিন্দীকে রাষ্ট্রভাষা করার  চেষ্টা ব্যর্থ  হয়েছে,
বেশ কিছু প্রদেশে বিশেষ করে পশ্চিম বাংলায়  ইংরাজী   তার আগের গুরুত্ত হারিয়েছে  ।  
মানুষ এখনও এত সভ্য হয়নি  যে সারা পৃথিবীতে  থাকবে  শুধু একটাই মাণবসমাজ ,
বেশীর ভাগ দেশেই এখনও মাথা  তুলে রয়েছে  নানা  ধরণের  খন্ড খন্ড ক্ষুদ্র সমাজ ।
আমাদের  দেশ তো নানা কারণে  অনেকদিন  ধরে  বিভক্ত নানা  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমাজে  ,
কারুর বাইবেল  কারুর  গীতা কারুর  ত্রিপিটক আর  কারুর  পরিচয় কোরান ও নমাজে ।
তাদের যদি অন্ততঃ ভাষা এক না হয় তবে তাদের দেশপ্রেমে কি ভাবে জোর পাওয়া  যায় ,
তাই দেশের প্রথম দরকার  সবার জন্য এক  সাধারণ  ভাষা যা শিখতে  সবার ইচ্ছা হয় ।

এবার যদি চিন্তা করা যায় কিভাবে  এরকম একটা  সাধারণ  ভাষা  তৈরী  করা  যায়,
যা পুরো দেশের সমস্ত লোক খুশী হয়ে , সবাই নিজেদের মাতৃভাষা বলে স্বীকার করে নেয়।
তবে সম ভাবে  গ্রাহ্য হবার  জন্য দেখতে হবে সবার এ ভাষা  শিখতে  একই কষ্ট হয়,
মানে বর্ত্তমানে ব্যবহৃত সব ভাষা  থেকে এই সাধারণ  ভাষা  যেন প্রায় একই দূরত্ত্বে রয় ।
আমাদের  দেশের সমস্ত ব্যাপারে এতই বৈচিত্র যে ভাষার  ব্যাপারেও  কোন মিল  নেই,  
সব ভাষা থেকে প্রায় সম সাদৃশ্য- বৈসাদৃশ্য এরকম  ভাষা  সৃষ্টির আর উপায়  কই ।
সাধারণ ভাষা এরকম হতে হবে যে তা শিখতে  সব  প্রদেশের লোকের লাগবে  সম পরিশ্রম ,
কোন প্রদেশবাসী যেন মনে না  করে অন্য কোন প্রদেশবাসীর তা শিখতে  খাটুনি  কম ।
কিন্তু উত্তর ভারতীয় ভাষার জনক সংস্কৃত আর  দক্ষিণ ভারতীয়  ভাষার  নয় বলে ,
উপরোক্ত চরিত্র অনুয়ায়ী  সাধারণ ভাষা  সৃষ্টির সম্ভাবনার আলোচনা  না চলে ।
কিন্তু এখানেই  দমে না গিয়ে যদি চিন্তা ধনাত্মক দিকে চালিয়ে  নিয়ে যাওয়া  যায় ,
তবে অনেক ভাষাই পাওয়া যায় যা ভারতে ব্যবহৃত সব ভাষার থেকে সমদূরত্ত্বে রয় ।
ইংরাজী  এরকম একটি ভাষা যার সাথে ভারতীয়  কোন ভাষার কোন বিশেষ  মিল  নেই ,
তাই এ ভাষাকে  সাধারণ  ভাষা  মানলে  কোন প্রাদেশিক পক্ষপাতিত্তের  স্থান নেই ।
দুটো জিনিষ  ইতিহাসে ,  ইংরাজী  ভারতের  সাধারণ  ভাষা মানার  জন্য,  করা রয়েছে ,
সব প্রদেশেই নিম্ন  বুনিয়াদী  বিদ্যালয়ে  অনেকদিন  ইংরাজী  শিক্ষার চল হয়েছে  ।
আমাদের  শিক্ষিতরা ইংরাজী  ভাষা শিক্ষায় অভ্যস্ত,  ভাষার  অমিলে  ইংরাজীই ব্যবহার্য,
আর  ইংরাজী  আমাদের  সাধারণ  ভাষা হলে ইংল্যান্ড কোন  royalty করে না ধার্য ।
তাই দেশপ্রেমের তাগিদে  আশা ও আকাঙ্খা রইল ইংরাজী  যেন ভারতের  মাতৃভাষা  হয়,
এখন ব্যবহৃত ভাষাগুলি  যেন প্রাদেশিক গন্ডিতেই ও কথ্য ভাষাতেই  বেঁধে রাখা হয় ।

.                                   ***************************                                           
উপরে

(এই বিষয়ের উপর আপনার মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করুন)
সাদা ধুতি পাঞ্জাবীর উদ্দেশে  
       (সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কবিতা)

সাদা ধুতিপাঞ্জাবি পরে  তিনি নানা কবিতা লিখতেন কলেজ লাইফে
জহ্লাদ প্রায় হয়ে গেছেন রাণী হবার পরে শাসনের beehive-এ |
স্বাধীন ভারত, বাংলা ভাগ আর তাঁর জন্ম হয়েছিল প্রায়একসময়ে
তরুন বয়সে দেশসেবার অনেক স্বপ্ন ছিল যা এখন গিয়েছে হারিয়ে |
প্রথম থেকেই তাঁর চেষ্টাছিল বাংলা ও বাঙালীর করা নানা উন্নতি,
ইংরাজী ও কোটপ্যান্টবর্জন করা  তিনি  ভাবতেন পরম প্রগতি |
মৌচাকে যখন তিনি শ্রমিক ছিলেন, অন্য একজন ছিলেন রাণী ,
তখন প্রদেশেরজনসাধারণ তাঁর ক্ষমতার উপরে কম ভরসা করেনি |
অনেক দিন ধরেই তিনি শ্রমিক হয়ে মৌচাকের মধ্যে ঢুকে আছেন ,
আগের রাণী বুড়ি হয়ে অবসর নেওয়ায় তিনিই এখন রাণী হয়েছেন |
বঙ্গ কৃষ্টি সংস্কৃতিও হারান সম্মান ফেরানোয় তাঁর ভুমিকা প্রধান,
নন্দন, প্রদেশ জুড়ে নানা পার্কও  ফ্লাইওভার তাঁর বিরাট অবদান |
কিছুদিন আগেও সারা বিশ্বের দেশে এমনকি ভারতের অন্য রাজ্যেও
বলা হত সভাসমিতি, মিছিল, স্লোগানছাড়া এখানে আর কাজ না হয় |
অল্প দিনেই এই নেতি অভিমত তিনি প্রায়পালটে  দিতে পেরেছেন ,
সারা পশ্চিমবঙ্গকে তিনি বিশ্বের কাছে  সম্মানের স্থানে এনেছেন |  
নতুন রাণীর সিংহাসনে বসে তিনি বলেন তাঁদের আগের নেওয়া সিদ্ধান্ত
অনেক ঐতিহাসিক ভুলে ভরা ও জনগণমঙ্গলার্থ নীতি হিসাবে ব্যর্থ |
স্কুলে ইংরাজী পুনঃ চালু হল, মুখথুবড়ে পড়া শিল্পপুনঃ মনযোগেলপেল,
সংঘটিত মজুর ও বাবুরা work-culture সম্বন্ধে নানা ভাবে অবহিত হল |
সবচেয়ে বড় কথা এই প্রদেশ নানাভাবে বিদেশীদের দৃষ্টি আর্কষণ করল,
বিশ্বের মানচিত্রে এই রাজ্য ভৌগলিকও রাজনৈতিক নানা গুরুত্ব পেল |
পশ্চিমবঙ্গ সম্বন্ধে বিদেশীরা, বিশেষ করে আমেরিকা, চিন্তাশুরু করল ,
বিশ্বায়নে সারা প্রদেশ ভৌগলিকও ব্যবসায়িক বহু গুরুত্তপেতে থাকল |
কেন্দ্রের নড়বড়ে সরকারে সাদা ধুতির আর তার মৌচাকের গুরুত্ব বাড়ল ,
যদিও‘of the people,for the people,by the people’ খাতায় কলমে রইল,
কেবল ‘HAVES’দেরই people বলে মনে করার প্রবনতা যা আগে সুপ্ত ছিল
তা এখন সারা ভারতেই সমস্ত কাজের ও আইনের ফাঁকের মধ্যে ব্যক্তহল |
কি আছে শুধু টাকা দিয়ে মাপা হল, fine arts and culture হারাল কদর,
যার টাকা আছে তার সব কিছু আছে, যার টাকা নেই সত্যও নেই তার |
এই অবস্থায় আশা করা গেছিল কেন্দ্রের এসইজেড কৃষি জমিতে শিল্প
মৌচাকরাই প্রথম আপত্তি তুলে ভেস্তে দেবে সারা ভারতে এ প্রকল্প |
কিন্তু ফলেন পরিচিয়তে আপন রাজ্যে তারাই এ ব্যাপারে জোরখাটাচ্ছে,
দুফসলি তিনফসলি জমিও অত্যাবশ্যক নয় এমন শিল্পঅধিগ্রহণ করছে |
ভাবতে অবাক লাগে সারা জীবন মার্ক্স আওড়ান তিনিই মৌচাকেররাণী,
‘কৃষক মজদুর এক হও’এর বদলে ‘উন্নতিরজন্যশিল্পচাই’এখন তাঁর বাণী |
বন্দুক যেই চালাক যে কারণেই চালাক বহু লোকমারা গেছে ঘায়েল হয়েছে ,
কিন্তু ব্যাপারটা যে নিন্দনীয় অপরাধ তা না বলে কারণ দেখান হয়েছে |
তাঁর এখনকার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এমনকি সন্তানের শিক্ষা দেখে বোধহয়,
তাঁর জীবন সম্পর্কিত মূল্যবোধের খুব একটা পরিবর্ত্তন হয়নি নিশ্চয় |
বোঝা যায় না কেন এই অনৈতিক জোর, অমানবিক নৃশংসতা আর
যেকোন ভাবেই হোক শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যকেই মহান বলা ও মানা,
ক্ষতিহচ্ছে জেনেও ভবিষ্যতের লোভ দেখান ও অন্যরাজ্যের কথা টানা |
যখন রাণী হলেন আপনি হলেন exception to prove the general rule,
লংকায় এলেও রাবণ হবেন না রাম থাকবেন করবেন না কুরুক্ষেত্রের ভুল |
সবুরে মেওয়া ফলল না, দেখা গেল মহাজনঃ যেন গতা সঃ পন্থামেনে আপনি
আপনাদের আগের রাণীর স্বৈরাচারীপথে গমন করতে একটু দ্বিধাওকরেননি |
কিন্তু আপনাকে জানিয়ে রাখি আপনি হয়ত ভগবানে বিশ্বাস করেন না ,
আমরা বিশ্বাসকরি আর জানি তিনি পাপীকে কখনও ক্ষমা করেন না |  


.                           ***************************                                        
উপরে
টাটাদের খুড়োর কল
 (সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কবিতা)

চল্লিশ বছর আগে যখন তারা যুক্তভাবে সরকারে এসেছিল
‘কৃষক মজদুর সব এক হও’ এই তাদের প্রধান স্লোগানছিল ।
আসার পরে তারা রাজা হয়ে কিন্তু একার শাসন চালাতে লাগল,
অন্যদলের সাথে গণতান্ত্রিক কোনো আলোচনার পথে না গেল।
কিছু অতি বিপ্লবী ছাড়া পেল, কিন্তু তাদের বিপ্লব শুকিয়ে গেল,
জোতদার, জমিদারদের পারিবারিক জমি বিলি করা হতে থাকল ।
ভূমিহীণ দরিদ্র কৃষকরা নিজেদের চাষ করার জন্য জমি পেল,
চারিদিকে ধন্য ধন্য পড়ে গেল , তারা লাল সেলাম করল ।
সেই সঙ্গে স্কুলে ইংরাজী না-পড়ানটা বাধ্যতা মূলক করা হল,
চালু কল কারখানা বন্ধ হল, সমস্ত রকম কাজ কর্মে লাটে উঠল ।
বেশীর ভাগ বা সব শিল্পই পশ্চিম বঙ্গের বাইরে চলে গেল ,
বাঙ্গালীরা বাংলা গান চলচিত্রের বদলে হিন্দীতে অভ্যস্ত হল ।
যেখানে সেখানে আইসিএসই সিবিএসই স্কুল আর মদের দোকান হল ,
মিছিল, হরতাল, আন্দোলন সঙ্গে বিদ্যুত ছাঁটাই এই পরিবেশ হল।
দেশ বিদেশের সবাই পশ্চিম বাংলাকে পুরো খরচের  খাতায় পাঠিয়ে দিল,
আমাদের সবরকম ঘাটতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করা হল।
বিশ্বের মানচিত্র থেকে পুরো মুছে যাওয়ার অল্প কিছুদিন আগে
মাসী বদল হল, আর নতুন মাসী প্রথমেই তাদের ভুল স্বীকার করল ।
ইংরাজী স্কুলে ফিরে এল , কাজের পরিবেশ বেশ কিছুটা পালটাল ,
বিদ্যুৎ ছাঁটাই কমে গেল, বেশ কয়েক জায়গায় ধর্মঘট উঠে গেল ।
রাস্তা পার্ক সব সাজান হল, যান চলাচল অনেক দ্রুত করা হল ,
সবচেয়ে বড় কথা বিশ্বের বাজারে পশিমবঙ্গের ভৌগলিক অবস্থান
বিশ্বায়নের বিকিকিনিতে আপনা থেকেই হয়ে উঠল খুবই মূল্যবান ।
সারা ভারতের ভোগ্যপণ্যের বাজার আর সস্তার কুশলী কারিগর
করে তুলল বিশ্বের ব্যবসাদারদের পুঁজি নিয়োগের এক আদর্শ আধার ।
যদিও গরিব অসংঘটিত মজুর কৃষকরা এখনো যে তিমিরে সেই তিমিরেই,
বড়লোক বেড়ে যাওয়ায় অন্যদের প্রতি সহিষ্ণুতা প্রায় আর নেই ।
সরকারী এমএলএদের ও আমলাদেরও পয়সা হল ফলে লোভ বাড়ল ,
নিজেদের মাইনে ও সরকারী খরচ চালাতে ব্যবসায়ীদের মুখাপেক্ষী  হল  ।
এইরকম সময়ে সিঙ্গুরে সরকারি পরিচালনায় চাষীদের জমি ছলে বলে
কৌশলে অধিগ্রহণ করে তা সঁপে দেওয়া হল টাটাদের খুড়োর কলে ।
এই সব জমির বেশীর ভাগই নাকি খুব ঊর্বর ও সারাবছর ফলনশীল,
ভাল যোগাযোগব্যবস্থা ছাড়া  মটোর কারখানায় এ জমির
         আবশ্যকতা আর কি বোঝা মুশ্কিল ।
বলা হচ্ছে টাটারা এই কলের সামনে একটা ১লাখের গাড়ী ঝুলিয়ে দেবে
সবাই ওই গাড়ীর পিছনে দৌড়বে আর উন্নতি আপনাআপনি হবে ।
যারা দৌড়তে পারবে না তারা সব ঐ গাড়ী চাপা পড়ে মারা যাবে
তাতেও অনেক উন্নতি হবে কেননা লোকসংখ্যা ও ভর্তুকি দুই কমবে ।
তাইত তাদের প্রাক্-নির্বাচন স্লোগান ’উন্নতির জন্য শিল্প চাই’
নিজেদের ও ব্যবসায়ীদের উন্নতির জন্য কিছু গরিব চাষি মরা চাই ।

.                           ***************************                                   
উপরে
বহুরূপীর জবাব
(সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কবিতা)

ভাবতে হাসি লাগে হরিদাস্ পাল কাল্‌কের ,
প্রশ্ন করে কি প্রয়োজন আমাদের কর্ম্মের।
আমাদের কাজ সেতো নয় কোনো ব্যক্তির সিদ্ধান্ত,
পলিট্‌ব্যুরো আর আলিমুদ্দিনের মিলিত বিচার তাৎক্ষনিকঅভ্রান্ত।     
তা যাই হোক,  দেশের লোক মানে এই হরিদাস পালেরা
         যদি নিজেরাই নিজেদের ভালোটা বুঝত ,
তবে কি আর আমাদের এত পরিশ্রম করে প্রায় চল্লিশ বছর ধরে
          ওদের ভাল করতে  হত ।
প্রথমেই বলি হরিদাসের দৃষ্টিভঙ্গী নিজের দিকে তাকিয়ে ,
আর আমাদের দৃষ্টি সমস্ত রাজ্যের দিকে তাকিয়ে ।
এটা তো খুব সোজা কথা কাজ করতে টাকা লাগে ,
আমাদের নিজেদের বাবাদের ট্যাঁকশাল ছিল না
যে ছেলেদের দেশসেবার টাকা তারা মরার আগে গুছিয়ে যাবে ।
আমরাও ছোটো থেকে দেশের কাজই করছি ,
টাকা করবার সময় কখনও কি আগে  পেয়েছি ।
তাই রাজস্ব থেকেই দেশের কাজ করতে হয় ,
রাজস্ব যারা দেয় তাদের মুখের দিকে তাকাতেই হয় ।
আমাদেরও হরিদাসদের মত  ঘর স্ত্রীপুত্রপরিবার রয়েছে ,
তাদের দিকে  হরিদাসদের মত আমাদেরও তাকাতে হয়েছে ।
প্রথম অবস্থায় আমাদের জমি তৈরী করতে হয়েছিল ,
জোতদার জমিদারদের বড় গাছ উপড়ে ফেলে
ভুমিহীণ চাষাদের ছোটো গাছ রুইতে হয়েছিল ।
‘ইংরাজী অচল, বাংলাই চল’ , ‘আগে অধিকার পরে নমষ্কার’ ,
‘আসি যাই মাইনে পাই , কাজ করলে উপরি চাই’ আর
‘কৃষক মজদুর ভাই ভাই’ ছড়াতে হয়েছিল এইসব দ্রুতফলনী সার ।
সেচের জন্য বসাতে হয়েছিল রাজ্যজুড়ে নানা দেশী ভাটিখানা
যাতে ফলন বাড়ে আবার রাখা যায় তাদের কৃষ্টিয় বায়না ।
ফলম ফলে ফলানি , আমাদের গদি রাখতে কোন অসুবিধা  হয় নি ,
রাজ্যের গৌরবগেছে অস্তাচলে, রাজস্ব পৌঁছে গেছে প্রায় তলানি ।
এখনও যদি রাজ্যের সার্বিক সেবায় আমাদের গদি বজায় রাখতে হয়
দেশী-বিদেশী শিল্পপতি আর ব্যবসাদারদের দিকে না তাকালেই নয় ।
জমিতে এখন অগাধ ফলন ‘আমরাই ত্রাতা আমরাই রক্ষাকর্তা’
মেরে ফেললেও ভাববে তাই দরকার , আমরাই যে বিধাতা ।
আমরা অনেক বছর ধরে প্রমাণ করেছি
হরিদাসদের ভাল শুধু আমরাই করেছি ।
তাই এখন যদি আমরা ভাবি যে সার্বিক মঙ্গলের জন্য
কিছু লোককে মারতে হবে আর উপায় নেই অন্য ,
আমরা জানি ওরা মেনে নেবে কেননা যারা বাঁচবে
আমাদের ‘পাইয়ে দেওয়ার’ রাজনীতিতে খেতে পরতে পাবে ।
তাই পরের বার  ভোট যখন আসবে এমন স্লোগান দেব
ওই হরিদাসদের সবাইকে, যেমন প্রত্যেকবার হয়   ,  
        আমাদের ভোট দেওয়াব ।
হরিদাস পাল কিইবা বোঝে তাই এ সব কথা না জানানোও যেত ,
কিন্তু মার্ক্স আমাদের গুরু তাই আমাদের গোপন কিছুই নেইত ।
গতবারে ২৩৫ পেয়েছি এবারে আরো বেশী পাব ,
একাই যখন রাজ্য চালাব তখন আপাতভাবে ভোট তুলে দেব ।
হরিদাস কিছু বলতে এলে অন্য হরিদাসেরা ধরে মারবে ,
আমরা পুলিশ দিয়ে নিয়ন্ত্রনে আনলে আরো কিছু হরিদাস মরবে ।
আমাদের সংবিধান অনুযায়ী মোট লোকসংখ্যার দুটিই মাত্র ভাগ ,
খুব ছোট্ট একটা ভাগ শাসন করবে আর শাসিত হবে
             বড় বা প্রায় পুরো ভাগ ।
শাসিতদের শুধু  একটাই গণতান্ত্রিক অধিকার
সাধারণতঃ পাঁচবছরে একবার ভোট দেবার ।
সেই অনুযায়ী শাসকদল রাজা হয়ে বসবে
শাসিতদের দায়িত্ব ও কর্তব্য শেষ হয়ে যাবে ।
হরিদাস পালেরা কি বললো কি বললো না
তাতে শাসক দলের আর কিছুই আসে যায় না ,
যদি তারা ঠিক করে করে রাজস্ব আদায়
আর পরের বার ফিরে আসার কৌশলের অধ্যবসায় ।
আমাদের কথা বিশ্বাস করার মত বুদ্ধি হরিদাসের কোথায়,
প্রমাণ মিলবে উত্তরপ্রদেশের দিকে আর কিছুদিন তাকিয়ে থাকায়।
এত বোঝাবার পরেও যদি হরিদাস না বোঝে কি করে বোঝাব
চেতাবনি দিয়ে যাই এবার ছেড়ে দিচ্ছি,পরের বার হাতে মাথা কাটব ।   

.                           ***************************                                   
উপরে

এই কবিতাটি কবি প্রণব রায় চৌধুরী একটি জবাবী কবিতা হিসেবে লিখেছেন |
কবি রবিন গাঙ্গুলীর লেখা মূল কবিতা "বহুরূপী"
পড়তে এখানে ক্লিক করুন |
.                 ইউথ্যানাসিয়া     

(
এই বিষয়ের উপর আপনার মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করুন)

মরা বাঁচা কোনোটা সম্বন্ধেই আমাদের সত্যিকারের কোনো রকম  নিয়ন্ত্রণ নেই ,  
তবু ডাক্তারি শাস্ত্রের কৃপায়  আমরা অসুস্থ ও বৃদ্ধের মরণকাল  দেরী করাই ।
কিন্তু এটা খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার যে যেখানে বাঁচার আর কোনো মানেই হয় না
সেখানেও  কষ্ট লাঘব প্রয়াসে ডাক্তার রোগীর মৃত্যুকে ত্বরাণ্বিত করতে  পারে না ।
এটা যেমন প্রগতি যে এখন অনেক দুরারোগ্য রোগ চিকিৎসায় সম্পূর্ণ নিরাময় হয় ,
বিভিন্নরকম ভাবে মানুষের গড় বেঁচে থাকার বয়স অনেক বছর বাড়িয়ে দেওয়া যায় ,
তেমনি এটা চরম দুর্গতি যে , যে  রোগী সুস্থভাবে কোনোদিন বাঁচবে  না আর
প্রতিদিন বাঁচাই যার কাছে দারুণ কষ্টকর ও কারণ, পরিজনের মোটা খরচের  বোঝার
তারও অধিকার নেই চিকিৎসা বন্ধ করে, ডাক্তারকে দিয়ে   মরণ ত্বরাণ্বিত করা
যাতে অহেতুক কষ্টের লাঘব হয় আর বিরাট খরচের হাত থেকে বাঁচে তার পরিজনেরা ।
কয়েকটিমাত্র দেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায়সব দেশেই এ ধরণের করুনা হত্যায় বড়ই ভয়
এতে নাকি সামাজিক নৈতিক  অর্থনৈতিক ও আইনগত নানান  জটিলতা সৃষ্টি হয় ।
সামাজিক - মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার আছে  কিন্তু মরে যাবার অধিকার নেই,  
নৈতিক - ডাক্তারের দায়িত্ব মানুষকে চিকিৎসায় বাঁচিয়ে রাখা, মারার অধিকার নেই,  
আর আজ যে রোগ অনারোগ্য কাল বিজ্ঞানের উন্নতিতে তা সহজে আরোগ্য হয়   
অর্থনৈতিক- ডাক্তার হাসপাতাল  টাকা পায় মানুষকে বাঁচাবার জন্য মারার জন্য নয় ।
আইনগত - কে কখন কিভাবে ঠিক করবে এখন এ রোগীর মৃত্যুর অবশ্য প্রয়োজন
রোগী না ডাক্তার না  পরিজন কার উপর নির্ভর করবে সে ইচ্ছাকৃত করুনা-মরণ ।
কিন্তু কোনএক ব্যক্তির নয়, সমষ্টিগতভাবে ভাল ভাবে বাঁচাই যখন আসল দরকার
তখন যুগপযোগীব্যবস্থা ও বর্তমান আইনের  পরিবর্তন করে না কেন সরকার ।
এটা তো ঠিক সময় যতো কেটে যাচ্ছে লোকসংখ্যা ও মানুষের গড় আয়ু তত বাড়ছে
বাসের জায়গায় দূষণ কলুষণ বাড়ছে ও প্রাকৃতিক সম্পদের মানুষ প্রতি ভাগ কমছে ।
যে ব্যক্তি দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত,  যে বৃদ্ধের স্বাভাবিক বাঁচার  ক্ষমতা নেই
কেন সমষ্টির স্বার্থে সরকার দেখবে না দেশের আর সেই ব্যাক্তিরও ভাল মরণেই ।


.                                  ***************************                                          
উপরে


(ই বিষয়ের উপর আপনার মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করুন)
এই কবিতাটি সম্পূর্ণ কবির নিজের মতামতের উপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন |
আমরা www.milansagar.com এর তরফ থেকে জানাই যে
আমরা এই বিষয় সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করি | আমরা মনে করি যে মাতৃভাষাই ভারতের যে
কোন অঙ্গরাজ্যের প্রধাণ ভাষা হওয়া উচিত এবং ইংরেজী, ভাষা হিসেবে প্রয়োজনের তাগিদে
থাকলেও, মাতৃভাষার কখনও বিকল্প হতে পারে না | মাতৃভাষার প্রতি অবিচল ভক্তি থাকলেও
দেশভক্তি বা দেশপ্রেমে কোনো রকম ভাটা পড়ে না | ভারতের ইতিহাস তাই বলছে | ভারতের
পক্ষে কোনো monolithic সমাজ ব্যবস্থা বা ভাষা তৈরী করা আত্মঘাতী হবে | ভারতের "বিবিধের
মাঝে দেখ মিলন মহান" কথাটা কবি অতুল প্রসাদ সেন ও উপলব্ ধি করেছিলেন |
মানুষের মানসিক খাদ্য

জীবের বাঁচার জন্য প্রয়োজন
খাদ্য, জল আর অক্সিজেন।
গাছ তবু নিজের খাবার
নিজেই তৈরী করে নেয় ,
কিন্ত প্রাণীরা কেউ   
তা পারে কি ?
প্রাণীরা সবাই পরগাছা,
গাছের থেকে খাবার পায়,
গাছ না থাকলে, খাবার
তারা পেত কি ?
গাছ খাবার তৈরী  করে  
‘সালোকসংশ্লেষ’ প্রক্রৃয়ায়
প্রাণীদের দ্বারা তা না হয় ।
এবার দেখা যাক অক্সিজেন,  
গাছ প্রাণী দুয়েরই যা  
শ্বাসপ্রক্রৃয়ায় দরকার  হয় ।  
গাছ উপরের প্রক্রৃয়ায়
অক্সিজেনও তৈরী করে,  
প্রানীর তৈরীর উপায় নেই ।
আর জল সেতো গাছ প্রানী
কারুর তৈরীর সাধ্য নেই ।
তাহলে কি দেখা যাচ্ছে!   
প্রকৃতি যেমন চালাচ্ছে,
জীব অজীব নিজের কাজ
অনুযায়ী শুধু ঠেকা দিচ্ছে।  
মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন
খাদ্য জল বায়ু থেকে
কিছু বেশী আরও ,
কেননা তার মানসিক আহারের
দরকার, শারীরিক ছাড়াও ।  
অন্য বহু প্রাণী একা বাঁচে
মানুষ বাঁচতে পারে না ,
মানুষকে টিকে থাকতে গেলে
থাকতে হবে সবাই মিলে ।
মানসিক আহার তাকে ,
জোগাড় করতে হবে
প্রকৃতি ও অন্য মানুষ থেকে ।
সেই জন্য সে নিজে নিজে তৈরী করেছে
পরিবার, সমাজ, ভাষা, কৃষ্টি,
অর্থনীতি, রাজনীতি আরও কত রয়েছে ।
তার থেকে তৈরী হয়েছে  
কাছের লোকের জন্য আবেগ, অনুভূতি,
যার থেকে পায় সে মানসিক খাদ্যের তৃপ্তি ।
মানুষ বাঁচার তাগিদে এই মানসিক খাদ্য
নিজে নিজে তৈরী করতে হয় যে বাধ্য।
কিন্তু যেহেতু মানুষ আদতে বড়ই স্বার্থপর
তাই খাদ্য কিছুতেই হয়না সবাই মিলবার ।  
যতই মিলিত জীবনযাত্রা হোক না আনন্দের,    
সব হয় ব্যর্থ কেননা মনে মনে খালি আমার।
উপরের আলোচনা বুঝিয়ে দেয় প্রকৃতি ভিন্ন
মানুষের বেঁচে থাকার উপায় নেই আর অন্য।
‘তাই আমরা শ্রেষ্ট, প্রকৃতি আমাদের নিয়ন্ত্রণ  
করে না , আমরাই করি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ,
গাছ ও অন্য প্রাণীদের থেকে অনেক বড় হই ‘  
এ কথা না ভেবে আমরা যদি মন দিই
তৈরী করতে মিলিত বাঁচার প্রকৃষ্টখাদ্য  
আসবে  আমাদের মানব জীবনে অঢেল আনন্দ ।


.              **********************                                    
উপরে
বর্ষার অর্ন্তমুখী কল্পনা

বৃষ্টির সঙ্গে উদাসীনতার  আছে  নিশ্চয় কোনো  যোগ,
না হলে মেঘ করলেই কেন হয় এমন মন-কেমন করা রোগ ।
বাতাসে জলীয়-বাষ্পের শতকরা হার  বর্ষায় বেড়ে যায়,
খাল বিল ডোবা পুকুর নদী-নালা জলে ছাপাছাপি ভর্তি হয় ।
হাওয়া জোরে বইতে থাকে, পাখীরা ডাকতে থাকে একসাথে,
মযুর পেখম মেলে দিয়ে  নাচতে থাকে  মযুরীর আশাতে   ।
আকাশের রঙ কেমন যেন একটা প্রায়-কাল ধূসর হয়ে যায়,
বিদ্যুৎ চমকায়, মাঝে মাঝে বাজ পড়ে  প্রাণী মারা  যায় ।
বিরহের অনুভূতি আপনা থেকে মনের কোনে  কেবল আসে,
বিরহ কার জন্য,  তা প্রাধান্য নির্ভর কে অনুভব করছে ।
ময়ুরী ময়ুরের , হরিণী হরিণের  আর  ভগবান  ভক্তের জন্য,
প্রেমিকের জন্য প্রেমিকা আর দ্রুতফলনহল চাষার জন্য।
শিল্প বিরহী শিল্পীর, আবিষ্কার বিরহী  আবিষ্কারকের,
গাছের তো জলের খুবই দরকার , গাছের বিরহ কি কোরকের ?
বর্ষায়জল  যেমন মাটীর তলায় যায় , সবার মন হয় অন্তর্মুখী,
সবাই মনসা বিরহীর সাথে মেলে আর তাতে দুজনেই হয় সুখী ।
এই সময়েই বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার হয় পুরো মেলবন্ধন,
সব রকমের  সৃষ্টিতে আছে যার অবশ্যম্ভাবী প্রয়োজন ।
চাষার সৃষ্টি আদিমকাল থেকে হল  একমেবদ্বিতীয়ম ফলন ,
যেমনভাবে লেখকের সৃষ্টি, যে  রূপেই হক , সাহিত্য লিখন।
এর জন্য দরকার  হয় বাস্তবের সাথে  কল্পনার  শক্তমিল  ,
তার উপরেই শুধু চাষা নয়  আমরা অনেকেই হই নির্ভরশীল।
মেঘ যেই  আকশে  জমতে থাকে আর গরম শেষ হয়ে যায় ,
চাষার মনে অর্ন্তমুখীকল্পনা  তখন থেকেই  আরম্ভ হয় ।
কি ফলন করবে , কোথায় কখন কোনটা কতটা  ফলন করবে ,
কখন জমি রুইবে , কোন বীজ কতটা বুনবে, কি  সার দেবে ।
কতটা ফলন নিজেদের  রেখে কতটা বাজারে বিক্রি করবে ,
এ সব কিছু করার জন্য কার কাছ থেকে কতটা ধার নেবে ।
তার এই বাস্তবের সাথে কল্পনার মিল যত ভালভাবে হবে ,
ততই ভাল ফলন, মানে আমাদের সবার ভাল খাবার জুটবে ।
সমাজে অন্য সৃষ্টিকার যেমন লেখক,  শিল্পী ও  বৈজ্ঞানিক
পায় বেশ কিছু সম্মান শ্রদ্ধা আর ভুরি ভুরি  পারিতোষিক ।
সেখানে চাষা শ্রদ্ধা সম্মান দূরে থাক খেতেও ভাল পায় না,
পেটে খিদে , চোখে জল , মনে ব্যথা রেখে মহৎ সৃষ্টি হয় না ।
তাই আজ এই  বাদলদিনে  আমি সবার  হয়ে এই কল্পনা করি
চাষার প্রাপ্যসামাজিক  সম্মানজানানোয় যেন দ্বিধানা করি ।  



.              **********************                                               
উপরে
অসংলগ্ন মনের ভাব

বিধানসভা  নির্বাচনের খবর  কাল  বেরিয়েছে
যা হবার কথা সবাই বলেছিল তাই ঠিক হয়েছে  ।
আগে লাল ছিল , এখন রঙ  গাড়  হয়েছে  তার
বুদ্ধবাবুর প্রাক-ভাষণের ছিল জুড়ি মেলা ভার ।
এবার শিল্পোন্নতি তুরুপের  তাস সিপিএমের ,
“কৃষক মজদুর এক হও” এ  স্লোগান বহুদিনের ।
ঘাসফুল , হাত তবুও কিছু কিছু জায়গায় জিতেছে ,
পদ্মফুলের ভাগ্যে শুধু  রসগোল্লাই  জুটেছে ।
নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা  আর  শিল্পেরবন্ধু হয়েও
বামকে বোধহয় বিশ্বাস করে না শেয়ারসূচকও  ।
পশ্চিমবাংলা আর কেরালায়  বামেদের বিজয়ে
শেয়ারবাজারের  তেজী ভাব গিয়েছে  হারিয়ে ।
যতই বুদ্ধবাবুরা তাজবেঙ্গলে করুন  সেমিনার
ব্যাপারিদের কাছে  খবরটা নিশ্চয় খুব করুণার  ।
তারা ভাবে তাদের  সম্পত্তি কোন এক ছলে
চলে যাবে চাষামজুরের  হাতে , তার মানে জলে ।
আমি রাজনীতিক নই , তাই আর পারিনা  বুঝতে ,
আর বুঝলে পারব না , ঠিক জায়গায়  থামতে ।
আমি এখন চলে আসি বলতে আমাদের কথা
যা এনেছে আমার মনে নিঃসঙ্গতা আর ব্যথা ।
একজন ম্যানিলা গেছে , তাই অনুপস্থিত এখন
একজন গেলে কিন্তুউগরোয় না ,ব্যস্ততারকারণ।
দুজন বন্ধুতো করে দিয়েছে আমার সাথে আড়ি
আমি যাই করি তাই ওদের মনে হয় বাড়াবাড়ি ।
এক বন্ধুর শরীর খারাপ, লেখা  তুলেছে  শিকেয়
আমার  অনুরোধ সবাই  যেন ওকে  চাঙ্গা করায়  ।
শুধু  ইংল্যান্ডের একজন  অনেক আশা জুগিয়েছিল
কিন্তু প্রেগ থেকে ফিরে  এসে  তার কিযেন  কি হল ।
শরীর ফিরেছে ইংল্যান্ডে, মন বোধহয়  ফেরেনি
না হলে এতদিনেও ও কেন  একটা ছড়াও লেখেনি ।
যতই  ব্যস্তথাক ডাক্তারি আর   মেয়ের  খিদ্‌মতে  
বিশ্বাস হয় না , সে সময় পায় না নিঃশ্বাস নিতে ।
বোধহয় প্রেগ থেকে রিমোটে আসছে  খাঁটি ওজোন
তাই  আর রুচি  নেই ছড়া লিখে  অক্সিজেন গ্রহণ।
এখনো আমি কিন্তুসজাগ আছি  উনুনে  জল চাপিয়ে
আনন্দ যাতে পাওয়া যায় , তাই সবাইকে চা খাইয়ে ।

এত আমি একলা আর রুগ্ন, যে জেগে থাকাই দায় ,
কখন না আবার বলে ফেলি “বল হরি হরি বল” হায় ।

.              **********************                                               
উপরে  

( ১২/৫/০৬ তারিখে লেখা । দিন কত বদলে যায় । )
এলোপাথাড়ি        
        
একি হল !  সবাই  কি ঘুমিয়ে  পড়ল !
ছড়া লেখা আমাদের বাঁচল না মরল ।
অনিমেষ ছড়া নয় ,তৈরী করে সাহিত্য
আমাদের জানাল তার সৃষ্টির মাহাত্ম্য।
এও ও  ঠারেঠোরে   দিয়েছিল  বুঝিয়ে
এবারে লিখবে  সে যত পারে  রসিয়ে ।
ব্যস্ত সে এখন কারণ ম্যানিলা ভ্রমণ
ওখান থেকে  হবে  যত কাব্যের বমণ।
নিঃশ্বাস না ফেলে গুরু  ডাক্তারি লিখছে
বিভু নাওয়াখাওয়া  ভুলে ছুরি শানাচ্ছে ।
এখন ছড়া-ময়দান আমি ছাড়া পুরো ফাঁকা
কেলে আর মুখোর জায়গা  
surely পাকা ।
নিশির শিশির কি আর পড়ে  না পাতায় ,
কেলে কদিন পিসির অপেক্ষায় থাকা যায়।
মুখো  আলসেমোয়  নিজেরই করছে ক্ষতি
এইবেলা যদি তুই একটু হাত পাকিয়ে নিতি ।
আমাদের  এখানে  কদিন বাদেই  নির্বাচন
এটাই মুখোর ব্যস্ত থাকার আসল কারণ ।

ও নাকি  দিদির  মাসি , দাদার  পিসি  হচ্ছে
বুদ্ধর সঙ্গে যখন তখন  প্রচারে বেরোচ্ছে ।
লিস্টে নাম নেই তাই  দিতে  হবে না ভোট
মানা  তো  নেই  করতে কাউকে  সাপোর্ট।
নিচের ঘরেতে করেছে সে অফিস পার্টির
দুদিন করে দু এর আর একদিন একপার্টির।
ECO বিধিভঙ্গের দায়ে শমন  দিয়েছিল
চাঁচাছোলা  জবাব তারা পেয়ে গিয়েছিল ।
ভাড়া দেওয়া এক গণতান্ত্রিক অধিকার
সেখানে হস্তক্ষেপ হলেই বড় অবিচার।
দিদিকে সাদা জল দেয় , দাদাকে দেয় লাল
বুদ্ধ এলেই বলে , সব  হবে  লালে  লাল ।
ওর  আসল  কাজ ছিল  দেওয়াল  লিখন
EC নোটিশ  দিয়ে  করে  দিয়েছে  বারণ।
ওর কাজ  এখন  হয়েছে  চা - কফি করা
চেলাদের খাইয়ে বলা ‘খুশী তো তোমরা’
এর  বদলে  ও  যদি  দেওয়াল  লিখতো
এতদিনে  ছড়ালেখা  রপ্ত হয়ে   যেত।
যাকগে কেলে  বলি  মুখো  এখন  ব্যস্ত
এইবেলা  লেখো  আর  কবি  হও  মস্ত ।


.           **********************                                          
উপরে  
মর্ষকামী

আমার  কাছে  এসো  না  কেউ , যাকে  তাকে  কামড়ে  দিই ,
আমি  নাকি  মর্ষকামী , লোককে   কষ্ট দিয়ে  আনন্দ পাই ।
সে  লোক  যদি  নিজের  হয়  , আনন্দ আমার  বেড়ে  যায় ,
তাদের  কারুর  যদি  কাটা  ঘা  থাকে , নুন  ছিটিয়ে  মজা  হয় ।
মানুষ  আমি  নই , তাই  আমার  অনুভূতি   থাকার  কথা  নয়,
যখন  তখন  যে  সে , এমনকি  নিজের  কেউও  বেত পেটায়  ।
আমি  হয়  এখনও -ধরা-না-পড়া  খুনী , না  হয়  চাপা -পাগল ,
আমায়  দেখে ভয়ে  পালায় ,  এমনকি  রাস্তার গরু- - ছাগল ।
গুজব  এখন চরমে , তাই তাকিয়ে  কেউ  একবার দেখে  না ,
সত্যি আমি কামড়েছি  বা কাটা ঘায়  নুন  ছিটিয়েছি কিনা ।
আমার কথা কেউ শোনে  না , বলে  খুনী  পাগলের  প্রলাপ,
বাচ্চা সেজে  আমি  নাকি করছি  যত  অসংযত বিলাপ ।
তাই আমি ঠিক করেছি ,  মন রঙিন  রাংতা  মুড়ে  রাখব ,
নিজে কিছুই বলব না  , অন্যলোকেরা যা চায়  তাই বলব ।
এটা কিন্তু ঠিক , আমি যা চাই  তা  একেবারেই  পাব  না,
তাই হয়ত অন্যদের কাছে ঘুণাক্ষরেওনিজে থেকে  যাব না ।
নিয়ম মেনে জামাকাপড় পরে কোন বাধা নেই দেখা করায় ,  
তারা যদি কখন ডাকে , কেউকেউ  গায়ে হাত বোলাতে চায় ।
গাল বাড়িয়ে দেব , চুমুও নেব কিন্তু  নিজে  মুখ খুলব  না ,
এক গালে মারলে আর এক গাল বাড়াব, কখন বাধা দেব না ।
আমি চাই নিয়মছাড়া আনন্দ , তোমরা আর যারা তা চাও ,
দেরী না করে , ফিরতি  মেলে  আমার  দলে  নাম লেখাও ।
আবার বলছি ,  এ দলে কোন  নিষেধ বা কোন  মানা  নেই ,
যার এ সবের সাধ আছে , তার কিন্তু এই  দলে ঠাঁই নেই ।   



.           **********************                                          
উপরে  
পাগল

তখন আমার কতই বা বয়েস , ক্লাস ফোরে  বোধহয় পড়ি
বোনেদের  সাথে বেড়াতে যাই , গণেশ মামার  হাত  ধরি ।
যাচ্ছি একদিন বাড়ীর পাশের রাস্তা ধরে, চড়কডাঙার দিকে
মাঝে হটাৎ  একটা লোকের  উদয়  হল , উল্টোদিক থেকে ।
করল সুরু  ফিসফিস করে  কথাবার্ত্তা,  সাথে গণেশমামার
আমরা ভাবি সম্ভাবনা, কেউ একজন চেনা লোক  হবার ।
চুপ  করে দাঁড়িয়ে আছি আমরা , রাস্তার একদম ধারে গিয়ে
কখন যেন রেগে গিয়ে, লোকটা  গলার স্বর দিয়েছে বাড়িয়ে ।
শাসাচ্ছে, চশমা পরে বাবুগিরি একদম  ঘুচিয়ে  দেবে  বলে
গণেশমামা  কেবল আমতা আমতা করে , মাথা যায় টলে ।
লোকটাকে সে চেনে না মোটে  , আমরা তখন বুঝতে পারি ,
কি যে করি বুঝতে না পেরে আমরা সবাই শুধু  ভয়ে  মরি ।
ধারে কাছে তখন মেলা লোকের হয়েছে ভিড় , চেনা অচেনা
সবাই মিলে নিয়ে যাই তাকে , কাছে  বড়মামার ডাক্তারখানা।
দেখা গেল লোকটাকে কেউ চেনে না , সে কাউকে চেনে না
তখন জোরজার করে অনেক লোক মিলে , থানায় নিয়ে আনা ।
ভবাণীপুর থানার বড়বাবুকে  বলা  হল  যা ঘটেছে সব কথা
লোকটা   নিশ্চয় ছেলেধরা ,নাহলে দিচ্ছে কেন এত ব্যথা।
থানার ভিতর মালবাবুর কাছে লোকটাকে নিয়ে যাওয়া হল
অন্য একজন থানার পুলিশ তখন, তাকে পাগল বলে চিনল ।
আমাদের বলল আপনারা দেখুন, এখন কি কি আমরা করি
তারপর সুরু  করল ওকে পেটাতে , হাতদুটো  শক্ত করে ধরি ।
আমরা তখন খালি কাঁদি , বলি  মেরো  না,  ওর খুব লাগছে
ওরা ততক্ষণে ওর কাছ থেকে বাড়ীর টেলি-নম্বর পেয়েছে ।

থানা থেকে ওকে চা বিস্কুট খাওয়াল ও বাড়ীতে খবর দিল
আমরা বসে থাকলাম যতক্ষণ না  ওর দাদা থানায়  এল ।
থানা থেকে বলল , আজ ওকে জেল হাজতে থাকতে হবে
বিচারের জন্য কাল ওকে দায়রা আদালতে তোলা হবে ।
দাদাকে ঠিকানা জানাল , যেন বিচারের সময় উপস্থিত থাকে
ও তারপরে জরিমানা দিয়ে বাড়ী নিয়ে যেতে পারে ওকে ।
আমরা তখন সবাই মিলে অনেক রাতে বাড়ী ফিরে এলাম
রাগ আর ভয়ের বদলে পাগলের জন্য দুঃখ নিয়ে ফিরলাম ।  

.           **********************                                          
উপরে  
আশঙ্কা

হয়তো  আমার এ শঙ্কা একেবারে ই  সত্যি নয়
তাহলেও  মনে যখন এসেছে , বাজিয়ে  নিলেই  হয় ।
বীতশঙ্কের কথা ছিল  সে আসল সৃষ্টির তুলি ধরবে
‘তুমি ‘ হয়ে  গিয়ে  ‘যা করেনি ‘ তাই  এখন  করবে ।
এখন সে ব্যস্ত হয়েছে  বাংলার  সমুন্নতির স্বপনে
২০২০-র মধ্যে তাকে জগৎসভায়  আনার  বীজ  বপনে ।
নিশ্চয় এটা  ভাল  কাজ  কেননা   দশের   জন্য করা
সবাই  যেখানে  স্বার্থপর, সেখানে  পরের  জন্য লড়া ।
কিন্তু এটা  মানতে  হবে , এ কাজ সৃষ্টির কাজ  নয়
জন্ম দেওয়া  ও বড় করে  তোলা  , এক কখনো   হয় ?
আসল সৃষ্টি আর জন্মদান  দুই ই  , নেহাৎ ই  স্বার্থপর
পরের  কথা  ভাবার  থাকে  না , তার  এতটুকু  অবসর ।
তাই আমি বলি  বীতশঙ্ক!  দুধ  যদি  খাওয়াতে  চাও
নিজ গোয়ালের  গরুর  থেকে  নিজে  দুইয়ে  খাওয়াও  ।
বোনের  মোষের  দুধের  দইয়ের  ঘোলের  স্বাদকে , না !
সত্যি গরুর  দুধের  স্বাদ বলে  চালান  , কখন হয় না !
খুব ভাল  লাগবে  যদি  আমার  এ শঙ্কা মিথ্যা  হয়  
বীতশঙ্কের দিকে  রয়েছি  চেয়ে , ও কি  উত্তর দেয় !

(
পরমেশ  ঘোষের  " West Bengal- 2020” রচনার উপরে )

.           **********************                                          
উপরে
বীতশঙ্কের লেখা জন্মদিনের উত্তরে
         
ছোটর থেকেই কেমন যেন মনে হ’ত তুমি সাধারণ নয়
অনেক বড় মাপের  কিছু করার জন্য তোমার জন্ম হয় ।
আমার আশানুরূপ  তোমার কাজের পাইনি এখনো পরিচয়
তুমি যা করেছো ও এখনো করছো তা সৃষ্টির কাজ নয় ।
আমি চাই আর দেরী না করে , ওঠো তোমার ‘তুমি’ হয়ে
‘কি করিনি’ আর ‘যদি করতুম’ করে ফেল মন দিয়ে ।
আজই হয়েছে ‘তুমি’র প্রথম জনম ,  তোমার জীবনে
আমি ভুলে যাও , নিয়ে এস ‘তুমি’ তোমার পুনর্জীবনে।


.           **********************                                                        
উপরে  


কবি বীতশঙ্কের লেখা কবিতা "৬০ বছরের জন্মদিন" পড়তে এখানে ক্লিক করুন