পূর্ণেন্দু পত্রীর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
১।   হে স্তন্যদায়িনী       
২।
  স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল      
৩।   ফটিক টিং     
       
 
       
      
      
*
হে স্তন্যদায়িনী

তোমার দুধের মধ্যে এত জল কেন ?
তোমার দুধের মধ্যে এত ঘন বিশৃঙ্খলা কেন ?

রক্ত ঝরে না ভেজালে
কোনো সুখ দরজা খোলে না
|
ময়ূরও নাচে না তাকে দু-নম্বরী সেলামী না দিলে |
হাতুড়ির ঘায়ে না ফাটালে
রাজার ভাঁড়ার থেকে এক মুঠু খুদ খেতে
পায় না চড়ুই
|
স্বপ্নে যারা পেয়ে গেছে সচেতন ফাউন্টেন পেন
তাদেরও কলমে দেখ
সূর্য কীরণের মত কোনো কালি নেই
|

হে স্তন্যদায়িনী
তোমার দুধের মধ্যে এত জল কেন ?
তোমার দুধের মধ্যে প্রতিশ্রুত ভাস্কর্যের পাথর কেবল
|

***********
উপরে
*
স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল

পুরনো পকেট থেকে উঠে এল কবেকার শুকনো গোলাপ |
কবেকার ? কার দেওয়া ? কোন্ মাসে ? বসন্তে না শীতে ?
গোলাপের মৃতদেহে তার পাঠযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন নেই |

স্মৃতি কি আমারও আছে ? স্মৃতি কি গুছিয়ে রাখা আছে
বইয়ের তাকের মত, লং প্লেইং রেকর্ড-ক্যাসেটে
যে-রকম সুসংবদ্ধ নথীভুক্ত থাকে গান, আলাপচারীতা ?

আমার স্মৃতিরা বড় উচ্ছৃঙ্খল, দমকা হাওয়া যেন
লুকোচুরি, ভাঙাভাঙি, ওলোটপালটে মহাখুশি
দুঃখেরও দুপুরে গায়, গাইতে পারে, আনন্দ-ভৈরবী |

আকাঙ্খার ডানাগুলি মিশে গেছে আকাশের অভ্রে ও আবীরে
আগুনের দিনগুলি মিশে গেছে সদ্যজাত ঘাসের সবুজে
প্রিয়তম মুখগুলি মিশে গেছে সমুদ্রের ভিতরের নীলে |

স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল, দুহাজার বছরেও সব মনে রাখে
ব্যাধের মতন জানে অরণ্যের আদ্যোপান্ত মূর্তি ও মর্মর |
অথচ কাল বা পরশু কে ডেকে গোলাপ দিল কিছুতে বলবে না |


***********
উপরে
*
ফটিক টিং

দেখতে মানুষ চামড়াধারী
নাকের ফুটো, দাঁতের মাড়ি,
কিন্তু বাপু হঠাত্ কেন মাথায় দুটো লম্বা শিং ?
--- আজ্ঞে আমি ফটিক টিং |

শিং দিয়ে কি গুঁতোও নাকি ?
মেজাজ বুঝি আগুন খাকি ?
কিন্তু বাপু পানে সঙ্গে গিলছ
কেন খাবলা হিং ?
--- আজ্ঞে আমি ফটিক টিং |

বেশ তো দেখি হাসতে পারো
যক্ষা কাশি কাশতে পারো
কিন্তু বাপু লেখার সময় লিখছ কেন পিঁপড়ে ডিম ?
--- আজ্ঞে আমি ফটিক টিং |

লিখছ লেখ ভাবনাটা কই ?
চাইছ মুড়কি হচ্ছে
যে খই,
কিন্তু বাপু বেচবে কাকে তোমার এসব ইড়িং বিং?
--- আজ্ঞে আমি ফটিক টিং |

***********
মিলনসাগর
উপরে