আজ আবার কত দিন পর মনটা বড়ই ক্লান্ত লাগে--- আকাশের ঘোলা রং, মনের জানলায় করে ছায়াপাত বড়ই ব্যথা, বেদনা বাজে, চেতনাহীন অচেনা লাগে নিজেকে - অকারণ এক অব্যক্ত অনুভূতি দাপাদাদাপি করে বুকের ভেতর - কত অশান্তি, অরাজকতা, কষ্ট এই দুনিয়ায় কিছুই না করতে পারার অপারকতা আমার কষ্ট বাড়ায় ফুটপাথের ছোট্ট শিশুটাকে কোলে নিতে না পারা হাড়ভাঙা খাটুনির পর যে মেয়েটি অভুক্ত, ক্লান্ত - ঝোপড়ায় ফেরে - তার ব্যাথা নিতে না পারা লজ্জিতা কুমারী মা - যার জরায়ুতে জ্বলছে একটা অসহায়, লাঞ্ছিত ছোট্ট একটা প্রাণ - তার অসহ্য প্রসব বেদনায় আমার উপায়হীন নীরব, সাহায্য করতে না পারা ব্যথা - উপায়হীন আমি - জ্বলে আমার সারা দেহ - উড়ে যায় সব সুখ-আনন্দ-পাচতারা হোটেলের "বুফে" লাগে বিষাক্ত | আমিও অপাংত্তেয় হয়ে যাই আমার কাছে | নিদারুণ লজ্জায়, ঘৃণায় রি রি করে সারা দেহ পূতিগন্ধময় নর্দমার ফেনা ওঠা পাঁক জ্বলে যেন গা ধুয়ে এসেছি এই মাত্র - এই সভ্যতা - এই আমাদের উন্নত সমাজ যা ছিল শ, হাজার বছর আগে, তার থেকে আমরা উঠছি ? নেমেছি, নেমে গেছি আরও পাঁকে দুর্মূল্য, অবাধ্যতা, মিথ্যচার, নগ্নতা, নিষ্ঠুরতার আবর্জনার সমাজ পঙ্কিল - হাজার নিয়নবাতির আলো তবুও পৃথিবী অন্ধকার ! পৌঁছায় না এখানে মসৃণ চাঁদের স্নিগ্ধ আলো সূর্যের প্রখর রোদ্দুরে ঝলসায় মাটি শুধু প্রাণ প্রাচুর্য ছড়ায় না তাতে - সারা জগৎ জুড়ে যেখানে নোংরামি, দুষ্টতা, পুরুষের হাতে নৃশংস ধর্ষণের কালো ছোরা নারীদের অবাধ নির্লজ্জতা - গা দেখানো সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা - তাতে দেয় আরও ধুনো | আমরা বাস করি সেই জগতে, যেখানে আজও করুণাময়ী পতিতপাবনী "গঙ্গা" তার নির্মল ধারায় বয়ে যায় - তাকেও করেছে বিষাক্ত, ক্লেদময় এই মানুষ - আবার প্রাণ ফাটানো চিত্কারে, জ্বালাময়ী ভাষণে করেছে নিজেকে দায়হীন - "গঙ্গা বাঁচাও" - যেখানে পুরুষের বীর্য - শৌর্য ছিল অহংকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল নারীর সলজ্জ অথছ দৃঢ়তাপূর্ণ মমত্ব - তখনও ছিল নারীত্বের অপমান - এখনও আছে তখনও ছিল অনীতি - সামাজিক দায়বদ্ধতার উল্লঙ্ঘন - এখনও আছে তখনও ছিল সামাজিক বৈষম্য - আজও আছে - এখনও শেষ হয়নি | কবে ভরবে এ পৃথিবী ভালবাসায়, স্নিগ্ধতায়, সাম্যে সেদিনই যাবে আমার এই জ্বালা - এই উগ্র প্রাণ ফাটানো অপ্রশমিত মনের জ্বালা |
সুখ-সে এক মিশতি অনুভব, কথায় পাওয়া যায়? মনের গ হ নে নাকি অন্ত রের অন্ত স্থলে হয়ত বা অন্যের মনের সাথে মনের মিলে! আমার কাছে সুখ মানে অপারথিব কিছু নয় যা চাই তাই পাই-যা ভাবি তাই করি এই কি সুখের বয়ান তাহলে...... || যখন একা ছিলাম-মনে হত আহা কি সুখ সকলের মাঝে থাকার সবার ছওয়া পাবার সরাসরি কথা কইবার – এখন আমি সত্যি সত্যি ‘সুখ’ চিনেছি | যখন এইটুকু একটু সুখ পাবার আশায় ফিরে এলাম |
মানুষ চায় – ঘর বাড়ী টাকা-পয়সা খ্যাতি প্রতিপত্তি চাহিদার কোন কমা সেমিকোলন দাঁড়ি নেই। কিন্তু যখন ঘর পায় তখন ছাদ চায়, বাড়ী পায় অথচ অনুশোচনা – হায় হায় জমি নেই। টাকাপয়সা বিস্তর – তবু মুখ শুকনো - খরচ হয়ে যায়,বেহিশেবী-অঙ্ক মেলে না খ্যাতি-প্রতিপত্তি পাওয়া হল তবু কি যেন নেই-শান্তি! কোথায়? একটু ভেবে দেখ! উঁকি দাও মনের গহনে-অন্দর-মহলে, বার বার কি চাই আমি-কেন চাই? যা আমার নয় , তাই আমি চাই......... যা অপ্রয়োজনীয় তার জন্য উদগ্রীব আমি যা অনিত্য –নিত্য তার পেছনে ধাওয়া, কতটুকু দরকার কি দরকার,কখন – কিছু না জেনেই শুধু চাওয়া-চাহিদার অন্ত নেই, ক্ষান্ত হও – বেহিসেবী হয়োনা যা চাও যতটুকু প্রয়োজন তাই নাও আর যা পেয়েছ – যা আছে তার জন্য হও ধন্য-জানাও ধন্যবাদ।
. জীবন সফল হল তোমার মাঝে, . মাগো, তুমি আমারি মা যে। . তোমার জন্মদিনে কি দেব তোমায় . অন্তর মাঝে ভরে আছে ভালবাসা। . তোমায় আমি দিলাম তাই, তুমি নেবে ভালবেসে . মোর এই আশা।। ছোট্ট একটি শব্দ এটি, সবার সেরা নাম, সবার সেরা সম্বোধন, মধুর মত নাম। সে হল যে “মা,” কি সুন্দর নাম। মা,তোমার জন্মদিনে পাঠাই তোমারি নাম । এ নামেতে জড়িয়ে আছে আমার পরিচয়, এই নামের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। . মা, তোমার জন্মদিন, শুভ জন্মদিন তাই, . রাশি রাশি ভালবাসা প্রণাম জানাই।।
বদলে যায় একটি বছর (এই কবিতাটি পোর্টব্লেয়ারের রবীন্দ্রবাংলা বিদ্যালয়ের প্রক্তনী সংসদের পত্রিকা "রবির আলো"-র প্রথম সংখ্যায় (জানুয়ারী ২০১১) প্রকাশিত হয়েছিল )
যখন তপ্ত তপন আকাশের জানালা দিয়ে এসে . প্রঙ্গন করে তোলে দগ্ধ চৈতালী বেলাকে মনে হয় কি বিরাট! সন্ধ্যাতারার আশায় বসে থাকি - একটু ঝিরঝির বাতাসের . প্রতীক্ষা করি | অলস মধ্যাহ্নে একরাশ উষরতা নিয়ে | . এই দিনগুলি কেন আসে না পৌষালী বেলায় ? . শিরশির আমেজে যখন ফুলগুলি ক্লান্ত - আর . শীতের নিষ্ঠুর আঘাতে পাতাগুলি ঝরে যায় | . নিঃস্ব - নিসম্বল গাছগুলিকে মনে হয় বড় আকুলিত | তখন আবার মনে পড়ে -- . বর্ষার ঝরঝর শব্দ - প্রাঙ্গণময় এলোপাথারি . হাওয়ার আনাগোনা আহত ফুল আর কুঁড়িদের উড়ে যাওয়া--- নিঃশব্দ | নিথর আর পরাস্ত গাছগুলির নত মাথা কি এক অজানা কারণে মনে হয় বড় আকুলিত | . বসন্ত, এই ফুল, গাছ, পাতাদের মর্মরধ্বনির শব্দ . মনকে করে তুলেছিল উদাসী স্বপ্নিল -- সারা প্রকৃতি সেজেছিল বাসন্তী আর লাল রঙে কুহু-কেকা রবে সারা নিখিল ভরেছিল | সঙ্গে এ মনটা . এবার যাবার পালা -- সবাই একে একে চলে গেছে -- যাবে বসন্ত ও আর ফুল . ফোটানোর পালা সাঙ্গ করে -- সেও যাবে -- রয়ে যাবে চৈত্রের ঝরা পাতা -- শাল সেগুনে গল্পে মাখামাখি কিছু স্মৃতি | আবার এক অজানা, অচেনা বর্ষের প্রতীক্ষা . নিয়ে বসে থাকি আমরা | আবার ফুটবে ফুল, আবার ভরবে দীঘি আবার কোকিল তার মিষ্টি কুহু রবে ভরাবে জগৎ | . আবার বাজবে আগমনীর সুর আকাশে বাতাসে . কাশ ও শেফালী ফুলের জলসায় শরতের . আকাশ বাতাস ভরে যাবে | আবার দেখা দেবে এক নতুব ১লা বৈশাখ |