তিরিশটা বছর কম নয়, তিরিশ বছরে অনেক ফুল ফুটেছে | অনেক চিতা জ্বলেছে | সেই তিরিশ বছর পার করে যুবক আজ বৃদ্ধ হয়েছে বৃদ্ধ যুবক | বোকা কি চালাক হয়েছে? কিংবা চালাক বোকা?
ঘাসের উপর দর্প-দৃঢ় পদক্ষেপ, নেই কোনো আক্ষেপ
যারা দাঁড় টেনে তোমায় নিয়ে গেল সাগরের পারে তারা এখনও দাঁড় টানে | তুমি পকেটের উপর পকেট তার উপর পকেট লাগিয়ে মণি মুক্তাকে দিয়েছ নিরাপদ আশ্রয় | পৌরুষ আর মহাপৌরুষ ঔদ্ধত্যের কাঁধে হাত রেখে মহাসুখে দিন কাটান |
এই কবিতার শুরুতে সন্ত্রাস ধরা পড়ে . মার খাচ্ছে | আর প্রতিটি প্রহারে উঠে আসছে রক্তের আভা | . তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে একটা আধপোড়া শিশুকে নিয়ে . মায়ের বাঁধভাঙা চোখের জল |
দিগন্তের কোণে রামধনুর খেলা কালোমেঘের হৃদয় চিরে উড়ে চলা একদল সাদা বকের মেলা | আঠারোর মেয়েটি ছুটতে ছুটতে আলের ধারের বাবলা গাছটার আড়ালে এসে হাঁপাতে থাকে | ধান বাদার পাশের মেঠো পথের ধারে, দাঁড় করিয়ে রাখা তার জোয়ান প্রেমিকের সাইকেল | বিকেলের প্রেমে তাদের ক্লান্তি ছিল না ছিল কিছু নিজস্ব মুহুর্ত নামে কাল সন্ধ্যা কাটা হয় ধান বিকেলের প্রেম পেল না সম্মান | সেই রাতে .... একদল স্তাবক লোভী, ক্ষমতা পিপাসুর দল ধান বাদার আলের ধারে বাবলা গাছের তলায় শুষে খেল আঠারো বছর ধরে জমিয়ে রাখা যৌবন তাদের উল্লাসনৃত্যে আতঙ্কিত পেঁচারাও মাঠের ধান নিল, যৌবন নিল, জীবন নিল | বাকি রইল লাশগুলো ... আজ রামধনু লাল রং রক্ত হয়ে ঝরে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে | বাবলা গাছটা আজও স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে | তার ডালে কাটা ঘুড়ির সাথে ঝুলছে রক্তদাগা একটা নীল ওড়না |
. ফুটপাথ হবে উঠোনটা তোর | দোকানটা যাবে বাদ দাম কত পাবি, ঢালাই তো নেই, কেবল টিনের ছাদ | . কত দাম! . তা আমি কী বলব? এল.আর.ও-র কাছে যাবি | "দুই বিঘা জমি" মনে আছে, এখানে তবুতো কিছুটা পাবি | . পড়িসনি তুই! টিপছাপ দিস! শোন তবে যা যা বলি | তার আগে বল্ জমিটা কেমন? কত মাপ, ক'ফসলি? . বাপের জমিন? তবে বুঝে দেখ, এ আমলেই পেয়েছিস | কেড়ে তো কেউ নিচ্ছে না তাকে, শুধু শুধু ভাবছিস | . একটু আগেই জানতে চাইছিলি কত দাম জমিটার! এখন বাপের সেন্টিমেন্ট, ছোটলোক কোথাকার | . জমিগুলো পেলে কী কী হবে তা তো জেনেছিস এতদিনে | বহুতল হবে, কারখানা হবে যা চাই উন্নয়নে | বহুতল হলে মজুরি খাটবি, কারখানা হলে জব | তোদেরই জন্য শিল্পনগরী, তোদেরই জন্য সব | . আমরা তো সেই তেমনই থাকব, যে যেমন আছি আজ | তোরাই যাবি পালটিয়ে সেই নতুন শহুরে সাজ | . অনেক বোঝাব, আলোচনা হবে বসে তোর পাশাপাশি | না বোঝা কথাটা বুঝিয়ে ফোটাব চিন্তিত মুখে হাসি | নিজের ভালটা বুঝতেই হবে, জানতেই হবে তোকে | উলটো-পালটা যত শত কথা বলুক বেবাক লোকে | সবার উপরে জেনে রাখ তুই ঠিকঠাক সব কথা | এর আগে তোকে জানতে পারিনি, জানিস তো ব্যস্ততা | . তবে বুঝে দেখ সব ঠিক তবু, তুই যদি বাধা দিস! কাজ তো হবেই শুধু শুধু কেন এরকম রিস্ক নিস! . তাহলে রইল ওই কথাটাই, টিপছাপে চলে যাবে | তোদের সঙ্গে নিয়েই এবার উন্নয়নটা হবে | . ব্যাস্ ব্যাস্ ব্যাস্, আর কথা নয়, বড়ো তোরা চালবাজ | কাল দেখা হবে, ওই কথা হল, এখন অনেক কাজ |
ছেলের নামে ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স বউ-এর নামে বাড়ি | মেয়ের নামে আছে শুধু একটি ন্যানো গাড়ি || নিজে আমি মুক্ত পুরুষ সব বন্ধন-ছাড়া | পুঁজির সাথে লড়াই করি আমি সর্বহারা ||
বক্ষে আমার লাল পতাকা কণ্ঠে লেনিন বাণী | সালিম-টাটা মাথার 'পরে বহুৎ মেহেরবানি || দিনের বেলায় বিপ্লবী আর রাতের বেলায় ফিস্ট | পুঁজির কোনও জাত মানি না আমি কমিউনিস্ট ||