বিশাল কাঁচের বাক্সে, কতদিন সাঁতরে সাঁতরে মৃত্যু-পিরানহা টু গোল্ডফিস ! প্রেম থেকে নিস্প্রেমে ! খেলা জমিয়ে দিচ্ছে, বন্দুক, রাইফেলবাজ, কাল্টু দেড় হাত ঝল্লা কানপুরী ! দুটো ফাইল ঘাঁটলেই একটা আকবরী-কয়েন ! হেড, দাউ দাউ চিতা টেল, ফুরফুরে কবর !
হায় ! একটা বাঙ্গালী, একটা নৈরাজ্য ! একটা বাঙ্গালী, একটা হতাশা ! একটা বাঙ্গালী, নাক কেটে যাত্রা পথ লাল ! একটা বাঙ্গালী, আংটি, জ্যোতিষী, তাবিজ ! একটা বাঙ্গালী, হুড়কো লোহার-ফাটক !!!
একদিকে মাঠ-যা-হাওয়া, নীল-ফাঁসি-নারী মলিন দু হাত ভরা কুটকুটি-ভাঙা-পিস্তল অন্য দিকে রক্তমাখা ঠ্যাং, থুতু নদের নিমাই জং ঠাকুরমার ঝুলি, হালকা গা ছমছম ভূত ! সব রক্ত মানুষের নয় ! কিছু ধর্ষণের রেখা এঁকেবেঁকে ভাটিয়ালি নাও ! বাঙ্গালীর স্থাপত্য, আহা, টেরাকোটা-প্রেত ! বাঙ্গালীর একটা মাত্র ঠোঙা, ভিতরে বাদাম ভাজা বাইরে রাজা, ইঁটের পাঁজরে !
কিশোরী মেয়েটি ভয়ে বাথরুমে ঢুকে কাঁপা হাতে কোনোক্রমে নড়বড়ে ছিটকিনি এঁটেছে | বাতাসে বাউদ গন্ধ, কানে আসছে গুরুম গুরুম মেয়েটি গুলির শব্ দ চেনে, হাত দুটো আড়াআড়ি বুকে রাখে উঠোনে জটলা, অশ্রাব্য ভাষার কূট বৃষ্টিঝড় টিনের ফুটোতে চোখ রেখেছে মেয়েটি, দৃষ্টি স্থির জনা দশ-বারো ছেলে, হাতে রড, কোমরে মেশিন বাপের নাম ধরে দেদার চিত্কার --- কোথায় গেলিরে ? হিম্মত থাকে তো শালা, সামনে আয় | জমি আটকাবি ?
দু এক মুহুর্ত --- অসাবধানে মেয়েটির হাত লেগে হ্যালবেলে টিনের দরজা নড়ে ওঠে, ওরা দেখতে পায় | শুরু হল লাথি-বৃষ্টি, মেয়েটি লুকোতে যায় চৌবাচ্চার পাশে আটকাতে পারল না, দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে হারাল |
এ সবই সত্যের কথা, ফাল্গুনের রোদে পোড়া শিল্পের কাহিনী ; আমরা দেখেছি দিনভর সমস্ত চ্যানেলে, পৃথিবী দেখেছে শিশুটিকে বুকে করে মা ছুটছে, পিঠ ফুটো করে চলে গেল জ্বলন্ত গলন্ত সিসে --- শিল্পের নির্মিতি শিশুটির মুণ্ডু নিয়ে শুরু হল হাতে হাতে লোফালুফি খেলা | আমরা দেখেছি, কাগজে পড়েছি, রোজ গিলে যাচ্ছি সেই কথা আমরা ভেঙেছি রোজ, সেই থেকে নিয়ত ভাঙছি শিবিরে শিবিরে ভেঙে দু-খান হয়েছি মিছিল করেছি, গালগলা তুলে ধিক্কার তুলেছি শাসক না শাসিতের কার দোষ ভেবে ভেবে বিধ্বস্ত হয়েছি |
আমি যে পারিনি এর বেশি কিছু হিম্মত দেখাতে তাইতো অক্ষম হাতে তুলেছি কলম, যদি পারি অক্ষরে অক্ষরে যদি ঢেকে রাখতে পারি মেয়েটির লজ্জা, আর সুরক্ষায় মুড়ে দিতে পারি তত্ত্বের আড়ালে থাকা মা আর বাচ্চাকে |
শিবির বুঝি না, যদি পারি তবে অভিধান থেকে আজই মুছে দেব "সন্ত্রাস" নামের সেই বহুরূপী শব্ দটিকে |
এই তো পুষে রাখি সন্ত্রাস, সারা পৃথিবীময় | সোনালী সকাল, রূপালী দুপুর ও সবুজ সন্ধ্যা জুড়ে ভূত ও ভবিষ্যত | আর কোলো গোলাপের রাতে নেমে আসে সন্ত্রাস,--- বামিয়ান, চেচনিয়া, বলিভিয়া কিংবা খেজুরি ও নন্দীগ্রাম জুড়ে | কে কে তবে ঘর ছাড়া তিন মাস ? কে কে তবে মরলো গুলিতে ? গুলির কি রং থাকে --- লালা অথবা সবুজ |
আমার তো কোনোদিন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা ছিল না | যদি থাকে তবে সে সোনাচূড়া যাক, খেজুরি বা নন্দীগ্রাম | যেখানে গুলির শব্ দ থাকবে না | থাকবে না কোনো এপিটাফ | মানুষ একটু মানুষের মত নিজের ঘরে ঘুমাক,--- মাথার তলায় মাঝিদের বয়ে আনা এক নৌকো নালাকাশ | জোনাকি লাগা দু'চার টুকরো ধান ও একটি হাঁসুলি |
বুকে বুকে আঘাত করে কেউ কেউ সুখী হতে চাইছে বুকে বুকে আঘাত করে মায়ের শরীর থেকে রক্ত ঝরে পড়ছে আমরা কেউ কেউ ত্যাগ না করতে পেরে হিংস্র হয়ে উঠি আমাদের দেবতা রাজা করে পাঠায় শাসন তার হাতে হে শাসন দেবতা তোমার চরণ ছুঁয়ে আজ আশ্রয় চাইছি ঐ গ্রাম তুমি তুলে দিতে চাইছো একতলা, দু'তলা, তিন তলা থেকে আরও উপরে খানে তোমার কোন আত্মীয় নেই লোভের বশে তুমি সন্দেশ প্রিয় মাটি মাটির মানুষদের তুমি কি দিতে চাইছো | বলো ? চাকরি ! যাদের শরীর মাটি দিয়ে গড়া যাদের মনে কোনো পাথরের মূর্তি নেই তাদের তুমি পাথর হতে বলছো !
রবি ঠাকুরের "দুই বিঘা জমি" আজও প্রাসঙ্গিক অনুষঙ্গটা পালটে গেলেও পরম্পরা এক চিরকালই ক্ষমতার কেন্দ্রগুলো যা খুশি তাই করে মহত্বের উর্দি গায়ে চাপিয়ে হত্যা করে নির্যাতন করে ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম সেই বিবমিষার বুদবুদ ফেটে গেল সিঙ্গুর হরিপুর বারইপুর শিলিগুড়ি সর্বত্রই চলছে একই বর্বরতা মহত্বের নামটা এখানে শিল্পায়ন
দেব, কেন দেব, কেন দিতে হবে, নিবি, কেড়ে নিবি জোর করে কেড়ে নিবি গায়ে জোর আছে তাই বলে মারবি কাড়বি অত্যাচার করবি যাতনা দিয়ে হত্যা করবি আবার রক্ত মাখা হাত পাতবি ভোট ভিক্ষে চেয়ে আর কত কেড়ে নিবি কেড়ে নিয়েছিস তো সব কিছু ঐতিহ্য সম্মান আত্মপরিচয় এমন কি বাপ ঠাকুরদার নাম গোত্র আবার চালাকি করে বলিস --- ভুল হয়েছিল ভুলের পাহাড় তো মুখ ঢেকে দিয়েছে তাই লজ্জা বলে তলানিতেও কিছু আর নেই | সেই মুখে একটাই স্লোগান তোরা দিস পকেট ভর্তি উন্নয়ন---চলছ চলবে পকেটবাজির মেকী দরদী, তোরা খুনী হানাদার শোন, তোদের জন্মটাই ভুল হয়েছিল তোরা দুনিয়ার জঞ্জাল
স্তিপাকার করা মৃতদেহগুলোর মধ্যে খুঁজে দেখেছি আমার মুখ---পাইনি আমার স্বস্তি, আমি এখনও বেঁচে আছি ওরা যেভাবে বলেছে সেভাবেই হেঁটেছি যেখানে থামতে বলেছে থেমেছি---যেভাবে মুখ বুজতে বলেছে সেভাবেই---তাই আমি জীবিত, আমার হাঁপর টানা বুকে নড়বড়ে হাতে বিশ্বাস ভাঙে তবে কি এখন আমার সময় মৃতদেহের মাঝে মুখ লুকিয়ে লিকপিকে পা নাড়িয়ে জানাই আমি কিছু করিনি, যদি করি ক্ষমা করুন দয়া করে, পাঠাবেন না লাশ ঘরে---আমি আপনাদের বিশ্বাস করুন আমি এখনই যেতে চাই না পরপারে
আমাকে তোমরা কবিতা লিখতে বলেছো কিন্তু এখন কবিতা লেখার সময় নয়
নরম মনের এই এক মুশকিল তাতে আঘাত করলেই গভীর ক্ষত--- ক্ষতগহ্বর লাল রক্তে ভরা আর তা না শুকোনো পর্যন্ত আগুন জ্বলতে থাকে
সে আগুনে একদিন পুড়েছিলো পর্তুগীজ জলদস্যুরা আজ তার আঁচ পেয়েছে দেশী হার্মাদ বাহিনী আর আগুনের শিখায় শিখায় আমার কবিতা লেখার ইচ্ছে ওরা চাপা দিয়েছে মাটির তলায়, ভাসিয়ে দিচ্ছে নদীর জলে
তবু আমি একটা আশার কথা বলতে চাই--- দুনিয়ার মালিকরা এক হয়ে যে আক্রমণ করছে তার মধ্যে এবং আমার আত্মাকেও কিনে নেওয়ার আগে ভূমিপুত্রদের ধ্বংস করার আগে-আমার এই লেখাকেই তোমরা কবিতা ব'লে বিশ্বাস করো---
আমার ছোট্টো মেয়েটাকে বলেছিলাম যাদুমুকুটের ইতিহাস আমি বাঘের কথা বলেছিলাম জঙ্গলের রাজত্বের কথা বলেছিলাম বলেছিলাম ভয়ানক সব দিনের কথা তারপর বাঘের মুকুট কেড়ে নিয়ে বিড়ালের মাথায় পরিয়ে দেওয়ার কাহিনী
ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছর আগের সে কথা--- তার জন্মের ঢের ঢের আগের--- সে সব সে গল্প মনে করেছিলো, আমি তাকে আরো বলেছিলাম প্রজাপতি একদিন এসে লোহার উপরে বসবে
এখন মেয়ে বড় হ'তে হ'তে সেই বিড়াল বাঘ হয়েছে, এখন সে নিজের চোখে দ্যাখে তার ভয়াল নোখ --- বিশাল থাবা
সে দেখে প্রজাপতি উড়ে এসে লোহা চুষে খায় আর রঙীনপাখা কালো হয়ে লুটিয়ে পড়ে, এখন সে মুকুটের যাদুতে বিশ্বাস করে আর, মুকুটটা সে ভেঙে ফেলতে চায় |
বাকি সব ঋণে যাবার পরও দুই বিঘা জমি ছিল উপেনের, অনেক পড়শি তার শশী বিপিন মকবুল ইয়াসিনদের তা-ও নেই, কবিতাপ সাফল্যে কাঁপে হলদির জল--- চল্ চল্ বিশ্বকবি সম্মেলনে চল্ কবিরা চলেছে দলে দলে প্রশাসক ঘোষক-ঘোষিকা সভাসদ বিদূষক সঞ্চালক দূরে একটু আড়ালে আড়ালে জগৎ শেঠের কোঠি নবায়িত রাজধানী লক্ষণাবাদের ফিনানসিয়ার স্পনসর প্রমোটার অষ্টাদশ শতকের মুরুব্বিরা নতুন ভাষায় নতুন ভাষায় নেই মোসাহেব শব্ দের চলন শব্ দ বড় অর্থ বদলায়--- সময়ের থেকে দ্রুত তালে লয়ে ব্যাঞ্জনায় কবিতায় গানে রাজা হয়ে নার্সিসাস অহরহ মুখ দেখে বিম্বিত দর্পণে যদিও বিম্বিত ছবি বিপ্রতিপ বামই দক্ষিণে, ১৪ই মার্চের থেকে ২৫শে বৈশাখ বলো কতদূর অনন্ত এ চতুর্মাপ কাল আকাশ ক্রমে ? কতটুকু সময় ও স্মৃতি বইবে শিশু নারী পুরুষের লাশ ? মাটির এমন ক্ষুধা, অচিরেই হাড় মাস রক্ত সব খাবে |
তোমার মুখের দিকে সম্ভ্রমে তাকিয়ে একবার তোমার পায়ের কাছে নতজানু হব ইচ্ছায় পঁচিশে | বাইশে শ্রাবণ থেকে মনস্থির করে, দেখি শ্রাবণে কান্নাই চলছে ... সাজানো-গোছানো মঞ্চে শ্বেশুভ্র শোভিত পোশাকে তোমার মুখের দিকে মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুঁড়ে কবিতার অন্তহীন আয়ুকে শাসাবে
সুবর্ণ ? সুবর্ণ, সে কি ভীত, তৃপ্ত স্বর্ণালী আলোকে ?
অন্ধকারের রাজা, আলোক সংকাশ, এ বৈশাখে তবে তুমি থাকো যন্ত্রণায় বিদ্ধ হওয়া মানুষের মনে, অন্ধকারে |
অপমানেও এখন আর লালা হচ্ছে না তোমার মুখ মানুষের অকৃত্রিম ঘৃণাও অস্থির করছে না তোমায় প্রতিক্রিয়াহীন নিশ্চল পাথর হয়ে বসে আছো যেন পাপ পুণ্যে আর কোনো ভেদাভেদ নেই যেন রঙিন মোড়কে ঢাকা লোভ অভিসন্ধি অন্ধকার চোরা অলিগলি এ সমস্ত নিয়ে তোমার অযথা কোনো অস্বস্তিও নেই যেন জেনে গেছো প্রতিবাদ প্রতিরোধ বড়জোর গুটিকয় মৃত্যু ডেকে আনে প্রত্যাশাপূরণ নিয়ে নিঃশব্ দ উল্লাসে অশরীরী মানুষেরা কোনোদিন মাত্রাহীন রক্ত ছড়াবে না
অপমানেও লালা হচ্ছে না তোমার মুখ অকৃত্রিম ঘৃণাও আর স্পর্শ করছে না তোমায় অথচ লজ্জায় নতমুখ আমরা লুকিয়ে বসে আছি
হাজার কংসারি হালদার কাঁদছে কমরেড রাণা চট্টোপাধ্যায়
অতি আপনজনও স্বেচ্ছাচারী, নিষ্ঠুর হতে পারে তখন একটু দূরে থাকাই ভালো | আত্মজন বলেই মেখে নিতে হবে কালো ? আবেগ সরিয়ে বোঝাতে চাই এত খাই খাই ভালো নয়, এক লাফে সাগর ডিঙোবে ?
দু-বছরও যায় নি গুজরাট নিয়ে তুমিই তো মাথা উঁচু করে প্রতিবাদ করেছিলে কমরেড ? তখন মনে হয়েছিল "রণরক্ত সফলতা শেষ সত্য নয়" আজ নন্দীগ্রাম নিয়ে স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছে |
মনে কি পড়ে না স্বাধীনতার পরপর কাকদ্বীপে চলেছিল পুলিশের গুলি--- লাশগুলি শুয়ে ছিল আকাশের নিচে পাকাধান বুকে ? যাদের হাত ধরে হেঁটে এলাম তাদের হাতেও দেখি রক্তের দাগ !
বুদ্ধিজীবীদের দেখেছি, দুর্বুদ্ধিজীবীকেও দেখেছি, চোদ্দোজন মারা গেল কার অভিশাপে এখন হাত ধুয়ে ফেলবে নাকি সকলের হাতে কুষ্ট হয়েছে ? তোমাদের সঙ্গে আছি বলে সাতখুন মাফ ? আমার মুখে তো সেলোটেপ নেই কথা বলতে পারবো না, প্রতিবাদ করবো না ? হাত তুলে বলতে পারবো না--- থামো কমরেড | হয় পতাকার রং বদলে নাও কিংবা দাঁড়াও নিহতের পাশে হাজার কংসারি হালদার কাঁদছে নন্দীগ্রামে |
আপনি যেভাবে বলেছিলেন আমি ঠিক সেইভাবেই ঘাড় গুঁজে লিখে যেতাম রোজনামচার খাতা নির্বাক সেই অক্ষরের মধ্যখানে আজ উঁকি দিচ্ছে দেখি নিষ্পাপ শিশুদের লাশ ধর্ষিতার চোখ | এতদিন আপনার কথামতই তো কাজ করে এসেছি এবার আমাকে মাপ করবেন হুজুর আর পারছি না | আমার হাতের আঙুল ক্রমশ শিথিল হয়ে পড়েছে | হাত থেকে খসে পড়েছে কলম কালো কালির ধারায় অনবরত মিশে যাচ্ছে --- রক্তের স্রোত বুলেবিদ্ধ প্রতিটি মানুষের চিত্কার সাদাপাতাকে উসকে দিচ্ছে---কিছু বলার জন্যে |
ওরাও কিছু বলতে চায় এখন, আপনি শুনুন শুনুন যতই আপনার ক্যাডার বাহিনী এভাবে ভয় দেখাক না কেন কিছুতেই ওরা ওদের জমি ছিনিয়ে নিতে দেবে না না প্রাণ থারতে কিছুতেই নয় |
রাজনীতির ধার ধারি না আমি শুধু বুঝি মানুষ শহর থেকে গ্রাম রক্ত বহন করে শরীরে যার দাম বণিকেরা করে লুণ্ঠন নিয়ে নেয় জমি
রাজনীতির ধার ধারি না আমি শিশু-নারী বাদ যায় নি কেউ রক্ত মেখেছে মাটি অত্যাচারীর শাণিত ঢেউ লুটিয়ে পড়েছে লজ্জায় মুখ ঢেকেছে জমি
রাজনীতির ধার ধারি না আমি মানুষ হিসেবে মানুষের কাছে যেতে চাই বাংলার এই মাট্ আমাকে লালন করে জানি তাই কৃষি না শিল্প ভাবছে নিথর জমি
রাজনীতির ধার ধারি না আমি জমি সে আমার পায়ের তলার নাকি নন্দীগ্রাম শুধু জানি অহংকারের পরাগ ছুঁচ্ছে কৃষকের সম্ভ্রম লাঙল ছুঁতে চাইছে না কারখানার চিমনির আকাশজমি
রাজনীতির ধার ধারি না আমি শুধু জানি কর্ষণের ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতেচায় এই বাংলার ভূমি
মুখে মার্ক্সবাদ পিঠে গাঁটছড়া পুঁজির কেড়ে নেয় চাষি আর শ্রমিকের রুজির জায়গা-জমিন, শুরু করে ঠিকাদারি বুদ্ধ-বিমান, বিনয় কোঙার, নিরুপম... কায়েম করেছে জঙ্গল-রাজ ফ্যাসিজম--- দাঁত-নখ বের করে, তিরিশ বছরে মরিচঝাঁপির পথ ধরে সিঙ্গুরে নন্দীগ্রামের পথে-মাঠে-ঘাটে ফ্রাঙ্কোর বাচ্চারা দাপিয়ে বেড়ায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে