কবি সুব্রত দাসের কবিতা যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে। |
|||||||||||||||||||||||
![]() |
|||||||||||||||||||||||
১। আমি.... ২। দূরত্ব ৩। আশঙ্কা ৪। অপূর্ণ ৫। আবর্ত ৬। দূর-সুন্দর ৭। ভালোর চেয়েও ভাল ৮। সাগরের ডাকে সারা দিয়ে ৯। পূর্ণ কুম্ঙ ১০। মাকড়সা ১১। কি করে কবে কোথায় ১২। বিজয় ১৩। হাসি |
|||||||||||||||||||||||
আমি.... দেহ মন নিয়ে এই আমি--- আমি মহাকাব্য মহাভারত | সূর্য, আলো, অমাবস্যা, গুহার আঁধার, আমি ভূষিত আকাশ তারকা খচিত গ্রহ হতে গ্রহান্তর--- সমুদ্র, পার্বতী ঝর্নায় নদীতে জোয়ারে ভাঁটায় | বিদ্যুত্পৃষ্ট রূহ আমি অশথ্ব অক্ষয়, তৃণ সম হীন আমি জয় ও পরাজয় | অম্ল, পিত্ত, বায়ু আর আয়ু সমন্বয় সত্ত্ব, রজ, তম সাথে ভয় বরাভয় | রামধনুপ্রাণ আর বৈরাগী সূর্যাস্ত জীবনানন্দ আমি কাল ভয়ে ত্রস্ত | আমি--- কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধরত সৈনিক অসংখ্য হত, অনাহত | পঞ্চপাণ্ডব তথা পাঞ্চজন্য শঙ্খ ভীষ্ম, শকুনি, শ্রীকৃষ্ণ | অভিমান বধ করি সপ্তরথে চরি | আমি কাম, শ্যাম, কৌরব জতুগৃহ গড়ি ভস্ম করি হরি নিজ ভয়ে ভীত আমি পলায়ে ফিরি | দ্রৌপদীর লাজ অনায়াসে নাশি অজ্ঞান তম সাগরে মহানন্দে ভাসি | আমি মায়া-দাবানলে ময় দানব সম জ্বলি পলে অনুপলে | ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
দূরত্ব দূরে- তপ্ত মরুতে হেরি তরঙ্গিনী, ঘোচালে দূরত্ব, সে যে মরিচীকা তা' জানি | হেলা করি' দূরকে-- আরও কাছে যাই ; তুমি তা' চাও না, চাও না হতাশ বল বারে বারে, থাক দূরে--- দূর আরও দূর থাকতে দাও আমায় সুন্দর, মধুর || মেনে নিয়েও শুধু থেকে যায় তেষা পতঙ্গসম এ যে দহনের নেশা একা বসে ভাবি--- সবেরই আছে বিচ্ছেদ নেই কি বিচ্ছেদ বিরহের? ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
আশঙ্কা মনে শঙ্কা কেন আসে জানি না ভালবাসা কেন আসে জানি না চেয়ে যদি না পাই তবে আসে হতাশা চেয়ে যখন না দেখি সে তো শুধু ধোঁয়াসা মন চাইতে গিয়ে হয় যদি মন লীন দেখতে গিয়ে যদি আমি হই দৃষ্টিহীন চাই না আমি কিছুই, আশা কিবা নিরাশা || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
অপূর্ণ কৃষ্ণচূড়ার চারাটা আলো পেল, পেল বাতাস পাথুরে জমি ভেদ করে খুশীতে পেরুলো কৈশোর | কালো মেঘ, রস-সিক্তা কৃষ্ণচূড়ার প্রিয়া আকাশী শয্যায় ছোঁবে তাকে | সূর্য রভ ভেঙ্গে ফুল সে ফোটাবে মেঘের চুম্বনে সে সবুদ্ধ হবে অযুত নিযুত স্বপ্নবিলাস || ঝড়ের সাখে হ'ল দেখা তার সুবেশা মেঘ সাক্ষী হ'ল যার পরাজিত সে ঝড় পালাল রাবণসম সাথে নিল হরি প্রিয়াকে তার, অভাগা কৃষ্ণচূড়া পেল না প্রাণের ছোঁয়া || ফুলেই যে দেখেছিল পৃখ্বির আলো আজ সে কালের কোপে শুধুই কঙ্কাল, লয় হ'ল অজানা হরপ্পায় || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
আবর্ত যদি ঈগল হ'তাম? অসীমের নীলে সাদা টুকরো মেঘে কালো একটানা মেঘে ঙেসে খেলতাম লুকোচুরি আকাশের সাথে | গলা মেঘের সাথে নিচে মিলতাম জলাশয়ে, রূপোলী মাছ হয়ে তাকাতাম আকাশে ভাবতাম যদি হতেম আকাশের ঈগল---? রূপোলী মাছগুলো হত আমার পাকস্থলির বহুমূল্য অলংকার | ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
দূর-সুন্দর বহুদূর থেকে যবে দেখেছি সাগর শান্ত সুনীল সুরে লেগেছে সুন্দর আকাশের অসীমে যে ভাবছায়া ধরার সাগর যেন অখিলেরই কায়া মোহে অন্ধ, তাই যাই অপারের পার অন্তরঙ্গ-সঙ্গ যেচে দেখি অন্ধকার | দূরের সাগর যা' শান্ত, স্নিগ্ধ, শুদ্ধ দূরকে অদূর ক'রে তাই ক্রুদ্ধ, ক্ষুব্ ধ উত্তাল-অসম নাদ এ বজ্র প্রলয় শান্ত শ্রান্ত হ'ল, বিষাদ অক্ষয় | তাই যেতে চাই ফিরে আবার সুন্দরে বিষাদ-ক্লান্তিতে টানে সুর থেকে দূরে || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
ভালোর চেয়েও ভাল শিউলি সকাল--- বসন্ত বিকেল--- ঝম্ ঝম্ বৃষ্টি, ছুটি--- তানপুরার রেশ--- তন্দ্রা, শীতের দুপুরে ঘরে, কিবা বাইরে--- সূর্যাস্ত - পাহাড়ে--- পূজোয় ষষ্ঠির রাত--- সারারাত সঙ্গীত - উচ্চাঙ্গ--- শ্রীপঞ্চমীর হলুদস্নান--- গ্রীষ্মে কালবৈশাখী অফিস ফেরত - শুধু গায়ে পাঞ্জাবী, প্রথম প্রেমের রোমন্থন | পরকিয়া প্রেম কিংবা তার কল্পনা--- চুরি করা পেয়ারা | শনিবার রাত দ্বিতীয় প্রহরে জোনাকি আলোয় মিষ্টি হাসি, সুরাপান | কিশোর হলুদ গোলাপ--- শাড়ীর গন্ধ--- || আশ্বিনের কাকভোর, শরত্পূর্ণিমা হোক হৃদাকাশ মোর || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
সাগরের ডাকে সারা দিয়ে অসীমে হারাই | তরঙ্গের অঙ্গে নানা রঙ্গে দেখি মরিচিকাই | মরু আর সাগরে প্রভেদ কি নাই ? বালি বেলার কোমল পরশ ঝাউবনের কানাকানি সাগর-ফেরা বাতাসের উদাত্ত আনন্দ বার বার দেয় ডাক -- হাতছানি | এড়াতে পারিনি, তাই--- (অসীমে) নিজেকে হারাই বারে বার | সাগরে জমে মেঘ মেঘমল্লারের সুরে দিশেহারা আমি--- ঢেউয়ের লয়ে হয়ে যাই লীন | বিদ্যুত্ চমকে সম্বিত পাই হাঙরের সারা পেয়ে, ভয়ে দূরে, দূরান্তরে তাই সরে যাই || নিভৃতে থাকি একাকী বাজে তবু তানপুরা অন্তরে, অজান্তে মেলায় সুর আজও হারিয়ে যাওয়া তরঙ্গ নাদে || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
পূর্ণকুম্ভ না পাওয়ার আর কিছু বাকি নাই খুশীর অরণ্যে আমি তোমাতে হারাই | আজ দেখা হবে তাই যে দিকে তাকাই দেখি রামধনু, বাজে কানে সুর নিশিদিন হ'ল লীন সুন্দর মধুর || গন্ধর্ব কণ্ঠে শুনি মিলন সানাই || ফুলের আল্পনা দেখি আকাশে তারায় রঙিন পলাশও আজ গন্ধ ছড়ায় || না পাওয়ার আর কিছু বাকি নাই আজ দেখা হবে তাই || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
মাকড়সা অশান্ত আক্ষেপে অধীর আদীম বাসনার পাসে | এত চাওয়া কে মেটাবে ঈশ্বর! বাসনার বাঁধনে জর্জর তবু বাঁধনের খড়গে দিতে চাই আহুতি ভাবি, এ বন্ধনান্তে হবে মুক্তি | কদাপি প্রচণ্ড বিষ্ফোরণে হই আমি একা, বিচ্ছিন্ন--- ভাবি আমি-নিরুপায়ী--- 'পেলাম মুক্তি আসক্তির সুক্তি হ'তে|' সেই থেকে হায়, একাকী আবর্ত্তি নিরালম্ব আমি--- অশান্ত বিশৃঙ্খল ঘূর্ণিতে প'ড়ি শ্রান্ত যাই ফিরি সেই বন্ধন অতীতে | স্বেচ্ছায় শিকল প'ড়ি হই আমি শান্ত | অশান্ত আক্ষেপে অধীর মানি -- বন্ধন অন্য নাম মুক্তির || ************** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
কি করে কবে কোথায় কে জানে, কেমন করে হ'ব শান্ত || আজ আমার আশানিরাশার শেষ হ'ল না দোল খাওয়া | মন --- দেহ যত হয় মন্থর তুই ততই দুরন্ত বেগ পেয়ে তুলিস ঘুর্ণিঝড় তোর দাপটে ক্লান্তি আনে ক্লান্তিতে প্রকাণ্ড কাণ্ডহীন শাখা প্রশাখা মেলে শুধু জড়ায় অষ্টপাশে | মাতাল মনের মত্ততায় মোহ বাড়ে, মায়ায় ভাল লাগে জড়াতে, জ্বলন্ত মোমের মত || জ্বলে জ্বলে শেষ হয়না জ্বালা গলে গলে আবার উদ্দিপ্ত করে জ্বলতে --- শেষ হয়না, হয় না শীতল, তার উত্তপ্ত জ্বালা || *********** |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
বিজয় বুক ফুলিয়ে বলেছিলে তুমি কাঁপিয়ে দেবো ফাটিয়ে দেব আমি --- সবাই তোরা দেখবি সেদিন আমায় | কত বিদ্যা, কত জ্ঞান, কত তব অভিমান খোথায় না তুমি যেতে পারো --- অহং এর বোঝা বয়ে কেন ডুবে মর | এ বছরটাও চলে গেল আগের বারের মত ভাল কিছু, নতুন কিছু করেছ কি? করেছ কি, এমন কিছু মনে রাখার মত? তাজা বারোটা মাস তুমি হাতে পেয়ে আগে যা পার নি, আবার নতুন করে --- সুযোগ আর সাহসের হাত ধরে, অজুহাত ছেড়ে, লেগেছ কি সেই কাজে? দেখিনি তোমায় আজ অবধি কর্মবীরের মাঝে তবে? করলে কি তুমি এ জীবনে? বোলো না কখনও, পাই নি সুযোগ, বুকে হাত রেখে বলো শুধু --- 'কাজ করিনি আমি' | *********** হারবার্ট কফম্যানের Victory কবিতার ভাবানুবাদ |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||
হাসি শুধুই একটা হাসি যে সবাই কে করে খুশী যা পেতে লাগে না পয়সা তারই নাম হাসি || ক্লান্তিতে দেয় আরাম, দুখি হয় সুখী, বিপদে ধৈর্য্য আনেট শান্ত হতে শিখি | ধনি ও গরীব কিংবা চোর ও ভিখারী বিনী পয়সায় সবাই মোরা এটা পেতে পারি || প্রকৃতির এই প্রসাদে খুসী নবীন ও প্রবীন যোদ্ধা নিরস্ত্র হয়, দুরল স্বাধীন | ঈশ্বরের যত ধন আছে এ ধরায় বলতো কি আছে আর-- যত বেশী যত খুশী দিয়ে দাও সবারে অশেষ তোমার ভাণ্ডার আবার যাবে ভরে || *********** কোনো এক অজ্ঞাত কবির Smile কবিতার ভাবানুবাদ |
|||||||||||||||||||||||
মিলনসাগর |
|||||||||||||||||||||||
উপরে |
|||||||||||||||||||||||