সুখেন্দু সরকারের কবিতা যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে। |
||||||||||||||||||||
১। টিনা-মডেল ২। নেতা ৩। শেষ রাত ৪। নীড়-যুদ্ধ ৫। আত্মকথা ৬। এখন |
||||||||||||||||||||
টিনা-মডেল নামী এন জি ও, নাকি পার্টি ইঞ্জিন? গ্লোবাল রোবোট, নাকি ঘাতক মেশিন? একা বোকা বই-পোকা? নেতা হরিদাস? অবলা গোপাল? মাঠময় ঘাস? ক্যম্পাস-জব? পম্পাস শো? চোখেতে পট্টি বাঁধা কানামাছি ভোঁ | ভীষণ ট্রেণ্ডি - একবার থিমাচারী মার্কিনী ব্ লেণ্ড সব জাহাজ ব্যপারী | ধানক্ষেতে ফনফন বেড়ে ওঠে 'হাব' এভাবে এগোয় দেশ, মরে যায় বাপ্! টিনা = TINA = There Is No Alternative ************** |
||||||||||||||||||||
উপরে |
||||||||||||||||||||
সিঙ্গুরের কবিতায় ফেরত |
||||||||||||||||||||
কবি সুখেন্দু সরকারের অন্যান্য কবিতার পাতায় চলুন |
||||||||||||||||||||
নেতা (২৫/৫/২০০৬) খাঁ খাঁ মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছো ... তালগাছ ছাড়িয়ে মাথা ... সমতল থেকে মুখটা ধোঁয়াটে | দীর্ঘ দুই পা জড়িয়ে ঊর্ধ্বমুখী আলোকলতার ঝাঁক | দাঁড়িয়ে আছো জীবন্ত পাথর-মূর্তির মতো | চারদিক থেকে প্রচুর আলোর বর্শা ঝাঁপিয়ে পড়ছে তোমার শরীরে ... পৌঁছে যাচ্ছে রোমকূপের গোড়ায় ... তুমি নড়ছো না | নড়বেই বা কী করে? তোমার পা দুটো তো পা নয় - পিপুল-শিকড়! এত আলোও কিন্তু তোমার মুখ থেকে ঘন ধোঁয়ার পলেস্তরা সরাতে পারছে না ... তোমার বিষন্ন একলা মুখটা কখন যেন গলতে শুরু করেছে ... কেউ জানে না | সমতলে তোমার পায়ের নিচে ভাঙ্গছে অবশ বিহ্বলতার ঢেউ ... গলে যাচ্ছে বিষন্ন একলা মুখ ... চোখের আড়ালে ... | ************ |
||||||||||||||||||||
উপরে |
||||||||||||||||||||
শেষ রাত (২৬/১২/২০০২) পুড়ে যায় আঁখি রোম, তবু পলক পড়ে না চোখে কভু | পাতায় পাতায় বোনে জাল আদিগন্ত দহনের কাল | ভাঙনের শব্ দ ধরা থাকে চলার পথের প্রতি বাঁকে | জলসত্র থাকে পাশাপাশি গাঢ় নীল ভালবাসাবাসি | কতদূর যাবে ঠিক করে মাঝরাতে একা যারা মরে বেঁচেছিল নিমখুন হয়ে দিনরাত তিল তিল ক্ষয়ে | ঐ রাতে মুছে যায় ঘর জেগে থাকে বেতসের চর | ঐ রাতে নেই কোনো মুখ এক বুক শুধু তৃষ্ণা-সুখ | ঐ রাতে খাঁচাটা উধাও থাকে মনপবনের নাও | ঐ রাতে খুলে যায় পাখা অবরুদ্ধ সত্য-আর্তি মাখা | ও মানুষ, সত্য-বজ্র হানো ঘরে ঘরে শেষ রাত হানো! ************ |
||||||||||||||||||||
উপরে |
||||||||||||||||||||
নীড়-যুদ্ধ পেতেছি অমল বুক সবুজ শিখরে, খরবেগে ছুটে এসো মধুক্ষরা অবুঝ পেরেক | মেঘরাজ্যে ভেসে আছি সন্ধ্যাভাষা হয়ে উড়াও খধূপ যদি দিতে পার ছুঁয়ে | ফুটে আছি যুগল কোরক শোনিত-বিবরে ভুল মঞ্চ থেকে বহু আলোকবর্ষ দূরে | পিঞ্জরে তন্দ্রালস শানিত কিরিচ ভুল লক্ষ্যে চূর্ণ হয় চুম্বন-দূরত্বে থাকি অটুট অক্ষয় | ভোরাই খেয়ার টানে যৌবরাজ্যে এই অভিষেক তাকে কেন প্রেক্ষাপটে ফেলা? নিরন্তর তাকে ঘিরে পাপ-পুণ্য খেলা? জীবন আদলহীন | দেওয়ালেরও কোন মানে নেই | কোন পথ ছিল না কোথাও | পথভ্রষ্ট বলে কিছু নেই | নিক্তি-মাপা চেনা ছকে চেনা ঘাটে নিরন্তর স্নান নির্ভুল ভুল তাও | পূর্ণতার নিত্য মেকী ভান | শবরতি ঘৃণা করি | ভেঙে ফেলি নিঠুর জিঞ্জির | ভালবেসে অনন্ত উড়ান, ঈগল-ডানায় বাঁধি নীড় || ************ |
||||||||||||||||||||
উপরে |
||||||||||||||||||||
|| আত্মকথা || ||এক|| সৃষ্টি জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে গা | তবুও কোটাল কাছে ডাকছে না | বুকের মধ্যে কড়া নাড়ছে কে? দোহাই তোদের আগল খুলে দে | ভাঙ্গছি সোপান ভাঙ্গছি জনমভোর | পাই যদি পাই নগ্ন তিতির-ডোর | শোনরে আমার নিত্যযাত্রী ভাই যা নিবি নে ইষ্টিকুটুম চাই | কী পাস তোরা সাজিয়ে দৃশ্যপট ঘনিয়ে তুলে অনর্থ-সংকট? কাক দেখেছিস? সত্যিকারের কাক? কাছেই থাকে | বুকটা পুড়ে খাঁক | পাহাড় কুঁদে তৈরী হচ্ছে মুখ | জমছে কোথাও জমছে বরফ-সুখ | ছাঁচ ভাঙ্গতেই ছাঁচভাঙ্গা এক ছাঁচ খুবলিয়ে খায় বুকের রঙীন আঁচ | বিজন বনে কেউ কি যেতে চাস? দে ফেলে দে মাখন মাখন ফাঁস | আনমনে আয় ঘাট-পৈঠায় শুই | আনবাগানে শব্ দ-বিছন রুই | পথভোলা এক ওলটপালট লোক কোন্ ঘাটে যে ভাসায় তাহার শোক | কোন ঘরে তার কাঁঠাল-পিঁড়ি পাতা? কোন্ শ্মশানে পোড়ায় সৃজন-খাতা? সামনে দাঁড়ায় উদোম আদুড় গা | দুঃখী মানুষ দুঃখ ডরায় না | ও লোক আমায় তোর নৌকায় নে | নিত্যযাত্রী, আমায় ভাসান দে! ************ |
||||||||||||||||||||
|| আত্মকথা || ||দুই|| গভীরে মৌন থাকি | নজর-মিনারে নীড় | রমন-আনন্দ আর নিরাসক্তি-মোহ পালা করে আমাকে নাচায় | তুড়ি মেরে নিজেকে ওড়াই | ভেসে থাকি ভারহীন | শেষ হলে সবই শেষ জেনে বড় কান্না পায় | অস্থির ফাঁপা ফাঁপা লাগে | এলোমেলো আলো ফেলি | যেখানে যতটা পারি | কিছুটা তীব্রতা বুকে বেঁচে থাকি ... থাকতে চেষ্টা করি || ************ |
||||||||||||||||||||
|| আত্মকথা || ||তিন|| স্ববিরোধ বড় মনোরম | প্রতিদিন ক্লান্ত বয়ে যাওয়া | সমগ্রতে তবু বাজে টান || ************ |
||||||||||||||||||||
|| আত্মকথা || ||চার|| এ বাড়িতে/ একটা/ টিকটিকি শুধু বলে/ 'যা বেরিয়ে/ পড় |' তারই পাশে অনিঃশেষ দেখি বাসা বোনে মায়া কবুতর | ************ |
||||||||||||||||||||
|| আত্মকথা || ||পাঁচ|| সুনীল পাগল ডাকে ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে নিত্য স্বপ্নে শপথ ভোলায় | জীবনের আঁকেবাঁকে ভ্রষ্ট ফল পড়ে থাকে মাটি মেখে শূণ্যে উড়ে যায় | ******************************************* |
||||||||||||||||||||
উপরে |
||||||||||||||||||||
এখন ( ১ ) স্বপ্নে পাওয়া একটা কথা আলতো করে ভাসিয়ে দিল কেউ | কথাটা বুড়ির চুল | নিশি-ডাকে হাওয়া-পথে এসে কিছুকাল সেঁটে আছে ছাদের সিলিংয়ে | কথাটা সেবিকা মেঘ নয় | কথাটা কথাই | ছায়ার মত কিছু | ঘুম ভেঙে উঠে এসেছে বনমর্মে পাতায় ঢাকা কুয়োর অতল থেকে | কথাটা কিছুকাল মধুমাস ... কিছু কাল বোধনের ঢাক ... কিছু কাল মুরলী বাঁশের বেড়া ... কথাটা থির বিজুরী ... উত্সব রাত শেষে কথাটা কালচে সবুজ | এর পর অপেক্ষা আর একটা কথার জন্য | **** **** **** ( ২ ) বিশেষ বিশেষ ভাবনারা দল বানায় | বিশেষ বিশেষ ভাবনারা ব্যাকরণ বই | বিশেষ বিশেষ ভাবনারা অতিমানী শিক্ষক ... ভয়ংকর নির্ভুল | বিশেষ বিশেষ ভাবনারা সংগঠিত চূনকাম বিপন্ন একলা মানুষটার মুখে | **** **** **** ( ৩ ) জ্ঞানীদের দিগভ্রষ্ট কোরে প্রতিপক্ষকে নিরস্ত্র কোরে কেজোদের নষ্ট কোরে দুনিয়া পকেটে পুরে এক আকাট মুখ্যুর লাথিতে মাথা ঘুরে পড়ে গেল ... বিজ্ঞাপন | **** **** **** ( ৪ ) দায়বন্দী দশা বদ্ধ জলার মশা | **** **** **** ( ৫ ) এক জনমেই জন্মান্তর | মহাভোজ আর মন্নন্তর | **** **** **** ( ৬ ) সত্যি, কারণ তা মনে হচ্ছে | মনে হচ্ছে, কারণ তা সত্যি | সব বৃষ্টিটুকু দিয়ে 'সত্যি' তাই চলে গেল ফেরারী মেঘ হয়ে অন্য কোন শূণ্যতায় | **** **** **** ( ৭ ) জ্ঞানীরা গাভিনী মানি | বিনাযুদ্ধে ছেড়ে দেব সব | ঠারে ঠোরে কানাকানি কে কখন কি করে প্রসব! **** **** **** ( ৮ ) অবিরাম বিনুনি পাকাই জন্মছক ভুলে ভুলে যাই | কবে শুরু? ঠিক কবে শুরু? কতকাল বুক দুরু দুরু? **** **** **** ( ৯ ) একটা কুকুর যখন দশটা মানুষকে কামড়ায় দশজনই দৌড়ায় ইঞ্জেকশান নিতে | কুকুর জব্ দ করার দায় পুরসভার হাতে ছেড়ে | পুরসভা - যাকে কুকুরটা কামড়ায় নি | দশটা মানুষ কিছুতেই এক হয় না কুকুরটাকে ধরতে | দশজনের মধ্যেই একটা করে অমনই কুকুর ... | ভিতর-কুকুর আর রাস্তার কুকুরে গলাগলি চলতেই থাকে | **** **** **** ( ১০ ) পথে পড়ে থাকে আত্মপরিচয় | কুড়িয়ে নিতে বারবার ভুল হয় | **** **** **** ( ১১ ) 'হারিয়ে যেওনা' বলে লোকটাই হারিয়ে গেল | ক্যানিং থেকে শিয়ালদা থেকে ক্যানিং লোকটা নিত্য বয়ে যেত | একই কামরা-জানালার ধার-ডিএ-ইনক্রিমেন্ট-বাজারদর- অফিসপাঁচালি-ঘোষদা-বোসদা-সাহাবাবু-ঝন্টুর ঝালমুড়ি-সশব্ দ জল-হুল্লোড়-বিজয়ার লাড্ডু- লোকটা নিত্য বয়ে যেত | শুধু একদিন প্রসঙ্গ-ছুট কাকে যেন বলেছিল 'হারিয়ে যেও না |' ... তাকে আর দেখা যায় না | অনিশ্চিত ধোঁয়া পাক খায় ক্যানিং লোকালের কামরায় | **** **** **** ( ১২ ) স্বেচ্ছাসেবী | ব্যস্ত 'বেবি'| মারলে লাথি ভাঙবে পা | পাহাড় কিন্তু নড়বে না | **** **** **** ( ১৩ ) অনাহারে মরে গেলে আগুন-খবর! কেউ কি রাখছো লিখে পলে পলে ক্ষয়ে যাওয়া? **** **** **** ( ১৪ ) মেঘের ছায়ায় খাঁচা দ্বন্দ্ববিধুর বাঁচা | **** **** **** ( ১৫ ) কেন কিছু বলতেই হবে? নীপ-কেশরের মতো সারা রাত কেন ঝরে যাব না নীরবে? প্রবুদ্ধ শোনিত-পথে আজীবন মোক্ষলোভে কেন হেঁটে যেতে হবে? মুছে যেতে ভয় কেন? যত কাঁটা এযাবত বিঁধছে আমায় সব কটা তুলে নেব আত্মরোষে একা ... তারপরে 'নেই' হবো ... তীব্র অবিনাশী! **** **** **** ( ১৬ ) নির্বোধ উল্লাসে স্পনসরশিপ | আগুন লেগেছে ঘাসে জাগে ভোগ-দীপ | ************************************************ |
||||||||||||||||||||
মিলনসাগর |
||||||||||||||||||||
উপরে |
||||||||||||||||||||