কবি তানসেন-এর কবিতা |
হোলি খেলা কবি তানসেন তোমার আঁচল খানি উড়িয়ে দিল আমার হাতে আবির যত ছিল। ধুলোর পরে পড়লো হঠাৎ কত ঘাসগুলি সব রঙিন হল পূব আকাশের মত। আজ ভেবেছি রং দেব না তোমায় আপন হাতে, হোলি যে খেলেছি কত তোমার সাথে। আজকে সুধু চোখ দুটি মোর করবে খেলা আদুড় চাহনি প্রাণে যে তোমায় দেবে দোলা। চোখেরই আবির তোমায় রাঙিয়ে দেবে মরমের যত শরমেতে তুমি রঙিন হবে। . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
ঠোঙার নিচে এক সঙ্গে মাঠে নেমেছি । বল্ সাজিয়ে দিয়েছি ওকে একটার পর একটা । যেন ফুটন্ত ফুল সমেত টব --- তুলে নিয়ে সবুজ লনে বসিয়ে দেওয়া । বিশ্বজোড়া না হলেও যথেষ্ট সুনাম হয়েছে সমাদর পেয়েছেও । আমি পড়ে আছি ঠোঙায় মোড়া ঠান্ডা পেঁয়াজির মত । গরমটা উঠে গেছে টপাটপ্ ঠান্ডাটা থেকে গেছে চোপসানো ঠোঙার নিচে । . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
স্বপ্নে শুধু বেঁচে আছে কবি তানসেন জীবনানন্দ দাশের জন্ম শতবর্ষ ১৯৯৮ সালে তাঁরই স্মরণে লেখা এই কবিতাটি " একলব্য " ম্যাগাজিনের জুন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এখনও সকালবেলা শান্ত স্নিগ্ধ ঘাসের বুকে শালিকের হুটোপুটি দেখে, অথবা দুরন্ত কাকের তাড়া খেয়ে যে শালিক উড়ে বসে আমগাছে -- দেখে মনে হয় তোমার কথা। আবার কখনো জোড়া চিল, চিল কালো -- মেঘমুক্ত আকাশের নীলে ভেসে ভেসে খেলা করে দ্বিপ্রহরে, বিজন ঘরের কোণে তালগাছে -- ঘুঘু পাখি ডেকে ডেকে ক্লান্ত করে আমার উদাসী মন, থেকে থেকে খণ্ড খণ্ড বাতাসের আলতো ছোঁয়ায় বিশ্বাসী সবুজ ঘাস নুইয়ে পড়ে বুকে, কখনো সোনার ধানে অশান্ত ফড়িং একদণ্ড স্থির বসে খুঁজে ফেরে খুব চেনা মুখ, কখনো ধানকাটা শূন্য মাঠে -- স্পষ্ট আলের পথে যেতে যেতে, ফণীমনসার ঝোপঝাড় ঠেলে, যে পর্ণকুটির চোখে পড়ে সেখানে পৃথিবীর ধুলোমাখা নগ্ন শিশুকে চাল-ধোয়া ভেজা হাতে তুলে নিয়ে কাঁখে -- নরম আঁচলে মুছে দেয় মুখ, -- মনে হয় তোমার কথা। বাংলার রূপ আমি কোনোদিন দেখিনি তোমার মত। দেখিনি জলঙ্গীর ঢেউ, রূপসার ঘোলা জল অথবা মেঘের দুপুর, কখনো দেখিনি আমি জোনাকির রাত জাগা রাতে উদ্বিগ্ন শিশিরবিন্দু -- নির্ভয়ে বেঁচে আছে শান্ত পাখীর নীড়ে। হয়তো এ মন আর চোখ দুই অন্ধ ছিল। আমার স্বপ্নে শুধু বেঁচে আছে সেই ছবি -- একদিন কতদিন আগে এঁকেছিলে তুমি, হে কবি, তার যেন না হয় মরণ।। . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |