ঈশ্বরের কী অবিচার, দৃষ্টিটা একপেশে কবি অমিতাভ চৌধুরী
ঈশ্বরের কী অবিচার, দৃষ্টিটা একপেশে, সাহের মেমের জন্য ভাল, খারাপটা এই দেশে। ওদের যখন নতুন বছর, কেমন ঠাণ্ডা সব, শীতল শীতল বরফকুচি, ঠাণ্ডাতে ধবধব। এই বাংলার নববর্ষে ঘামঝরানো দুপুর সকাল বিকাল ভ্যাপসা গরম রোদের কলস উপুড়। সেই কারণের বাঙালিদের একটি বড় দল, নববর্ষ বলতে ওদের জানুয়ারিই চল। আমরা চালাক ওদের থেকে দুই দিকে চোখ থাকে গাছেরও খাই, তলার কুড়াই, জানুয়ারি বৈশাখে। ঠাণ্ডাতে খাই প্যাস্ট্রি এবং গরমে আইসক্রিম নববর্ষ আর নিউ ইয়ার দুটোই দ্রিদিম দ্রিম। পিঠের সঙ্গে পুডিং খাওয়া হয়েছে অভ্যেস, এই তো ভালো সবচে’ ভালো বলুন বেশ বেশ। একদিকে গিংর্জা গমন, ওদিকে হালখাতা, জয় বাংলা, নিউ ইয়ার্স, বেঁচে থাক কলকাতা।
স্বর্গে যাবার ইচ্ছা তো নেই, . এই বলে ডাক পাঠালে তাইতো আমি ছুটে এলাম . থাকতে ওই হাসপাতালে। সেইখানেতে অনেক মজা . অনেক কারিকরি হাত ভাঙে তো বাঁধে ব্যাণ্ডেজ . দিয়ে শনের দড়ি। খাওয়া দাওয়া মন্দ তো নয় . পেঁপের ডালনা, ভাত, একই খাবার বারংবার . দুপুর এবং রাত। ডাক্তাররা যখন আসেন . সঙ্গে থাকেন নার্স আলাদা কেউ রাখতে গেলে . খালি হবে পার্স। রক্ত নেবে হাজার বার . এক্স রে দশ কি বারো থুতু যাচাই করতে হবে . পেচ্ছাপটা আরও। যাচাই বাছাই করতে করতে . তিন সপ্তাহ পার। মানি ব্যাগটা খালি হলো . উপায় নেই তো আর। পেটের ব্যথা যেমন ছিল . তেমনি থেকে গেছে, বাড়ি ফিরতে পারলে এখন . প্রাণটি যাবে বেঁচে। কিন্তু ফেরার পয়সা কোথায় . নিল পকেট কেটে, ট্যাকসি ছেড়ে বাড়ি পালাই . একাই হেঁটে হেঁটে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে এলেছিল নামজাদা এক ক্যাঙারু, এসেই বলে, সাবধান ভাই, একজনকে খুব ঠ্যাঙারু। নামটি তাহার গ্রেগ চ্যাপেল, সবাই পাশ, একজন ফেল। দলে ছিল যে গৌরব বাদ গেলো সেই সৌরভ। যতই কর ভ্যাঙারু, কামড়ে দেবে ক্যাঙারু।
লম্বা এবং চওড়া ছিল বাংলা নামে দেশ, এক কলমের খোঁচায় কেটে দুই টুকরোয় শেষ। কোথায় গেল ঢাকা শহর কোথায় বরিশাল, পদ্মা এবং মেঘনা গেল রূপসা আড়িয়াল। কাটাকুটি চলল অনেক সব কিছু খান খান, স্বাধীনতার নামে কাটি নিজের নাক ও কান। দু-কান কেটে হইনি খুশি আবার কাটার ঝোঁক, যা পেয়েছি তাকে কাটেন মনে অনেক লোক। উপর দিকে আছে তরাই নীচে সোঁদরবন, উত্তরে আর দক্ষিণেতে ফারাক করার পণ। দক্ষিণকেই পশ্চিম কই ওটা উত্তর বং, অনেক দূরের শহর যেন মালদা কালিম্পং। কোচবিহার আর শিলিগুড়ি ডুয়ার্স বালুরঘাট, উপেক্ষিতার অভিমানে কেঁদে ভাসায় মাঠ! দূরে আরও নিকট টেনে না যদি নিই, পরে কলকাতাটাই বাংলা হয়ে রইবে কেবল পড়ে।
ভাবেন খুকী শান্তা অমিতাভ চৌধুরী যামিনীমোহন কর সম্পাদিত মাসিক বসুমতী পত্রিকার চৈত্র ১৩৫৩ (মার্চ ১৯৪৭) সংখ্যা থেকে নেওয়া।
ভাবেন খুকী শান্তা আর সকলে বেজায় বোকা তিনিই সব জান্তা। বড়দা, ন’দা, পটলা মুখেই কেবল জগৎ মারে করতে বসে জটলা। ভাই-বোনেরা অন্য মাথায় তাদের গোবর পোরা জঘন্য ও বন্য। কেবল তিনি ভীষণ চালাক নহেন দিকভ্রান্তা। ভাবেন খুকী শান্তা।
ভাবেন খুকী শান্তা। গুরুজন যা আদেশ করেন তিনিই করে যান তা’। বড়দা ওরা বিচ্ছু হাবার মতো বেড়ায় ঘুড়ে করবে না তো কিচ্ছু। তাই তো তিনি সাবড়ি খাবেন ঠেসে কোপ্তা কাবাব পায়েস এবং রাবড়ি। বড়দা ওরা খাকগে পচা বেগুনপোড়া পান্তা। ভাবেন খুকী শান্তা। . *****************
গদাধর গুপ্ত গায়ে জোর খুব তো তার কথা না শুনিলে সকলে যে চড় খায় হড়কিয়ে পড়ে গিয়ে এক দম ভড়কায় সব তাই চুপ তো।
বিশুলাল ভঞ্জ বাড়ী মধু গঞ্জ কাঁথা গায়ে মুড়িয়ে চলে পথে খুঁড়িয়ে বিশু বুঝি খঞ্জ?
বিপুলচরণ শর্মা বড়ই করিত্কর্মা গৃহস্থালী কার্য্য সকল তাহার হাতে ন্যস্ত সন্ধ্যা সকাল তাই তো সে যে কাজের মাঝে ব্যস্ত রান্না করে বাসন মেজে কাট্ ছে বসে দরমা।
বেলারাণী বকসী আসে রোজ হেথারে পাকা হাত সেতারে গান গায় বেতারে সিনেমায় যায় খুব ‘রূপবাণী’ ‘রক্সী’। . *****************