স্নান করে শাস্ত স্নিগ্ধ হবো বলে, যদিও জানি---
সমুদ্র থেকে কোনো নদী কখনও ফেরেনি
ফিরে ফিরে আসে শুধু স্মৃতি : প্রথম কবিতা লেখার
ব্যাধের তীরের মতো বিঁধে থাকে।
. ******************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
কেলেঙ্কারি সাতকাহন করে কী আর বলব! শুধু জানিয়ে
রাখতে চাই, মেয়েটিকে ভালবাসার আগে এসব অসুখ
ছিল না আমার। হাসপাতালের মতো এই বাড়িটায়
এসে মেয়েটি কি একবার আমার জন্য গেটওয়েল কার্ড,
আরোগ্যের কুসুম রেখে যাবে!
. ******************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
সংবহনে বিলম্বিত লয়
আজ রাতে কণ্ঠনালীতে বিঁধে যাক সিসের অক্ষর
. ******************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
স্মৃতি : প্রথম কবিতা লেখার
কবি অমিতেশ মাইতি
২০১৩ সালে প্রকাশিত (৩য় মুদ্রণ) মেঘ বসু সম্পাদিত “আবৃত্তির কবিতা কবিতার
আবৃত্তি” কাব্যসংকলন থেকে নেওয়া।
বৃষ্টি থেকে তুমি একদিন অক্ষর খুঁজে পেয়েছিলে
মেয়েটিকে ভালবাসার পর
কবি অমিতেশ মাইতি
২০১২ সালে প্রকাশিত পার্থ ঘোষ ও অনিশ ঘোষ সম্পাদিত “বড়োদের আবৃত্তির কবিতা
সমগ্র” কাব্যসংকলন থেকে নেওয়া।
রাত্রি ও দিনের মাঝখান থেকে যাত্রা শুরু করে সেই আলোর
প্রতিশ্রুতি
কবি অমিতেশ মাইতি
একেকদিন সারাটা জীবন হয়ে যায়
সিসের অক্ষর
কবি অমিতেশ মাইতি
অবিরাম বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে সিসের অক্ষর
সুখী মানুষ দুঃখী মানুষ
কবি অমিতেশ মাইতি
২০০৪ সালে প্রকাশিত শ্যামলকাম্তি দাশ ও বিমল গুহ সম্পাদিত “হাজার কবির হাজার
কবিতা” কাব্যসংকলন থেকে নেওয়া।
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ৪.১.২০১৯।
বহুদূর যাবো বলে
আমরা গুছিয়ে নিয়েছি জামাকাপড় বাক্স ইত্যাদি
আমাদের মনের পিঠে ছটফটাচ্ছে
কচি দুটি ডানা
চোখের কোণে সুদূর একবার ঝিলিক দিয়ে
পরক্ষণে মুখ থুবড়ে পড়ছে অন্ধগলিতে,
তবু আহ্ ডানা...
মানচিত্রে আঙিল রেখে সবাই বলতে লাগল
পাহাড়ের কথা সমুদ্রের কথা অরণ্যের কথা
আমরা মানচিত্রের পাহাড় অনায়াসে ডিঙিয়ে গেলাম
মানচিত্রের নদীতে আঙুল ছোঁয়ালাম
মানচিত্রের অরণ্যে জিপ নিয়ে তাড়া করলাম ময়ূর
তারপর গতজন্মের ঘুমভাঙা গলায়
সবাই বলে উঠল, কেন যাব---কোথায় যাব আমরা?
এখানে আমাদের স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন চাকরি-সম্পত্তি
এখানে বউ ছেলেমেয়ে
এখানে বাড়ির আরাম
কেন যাব?
আমাদের আলোচনার মুহুর্ত স্তব্ধ হয়ে রইল
আমাদের মাঝখান দিয়ে আস্ত একটা নদী
নিঃশেষ হয়ে গেল সমুদ্রে
একজন শুধু সেই নির্জনতা সাঁতরে
সামনে এসে বলল, আমার কিন্তু ওসব কিছে নেই
তবু থাকব
একসঙ্গে অনেক সুখী মানুষ থাকলে
একজন দুঃখী মানুষের দিকে
তাকাবার ফুরসত থাকে না তাদের
থাকে শুধু নির্বান্ধব ছায়া, আমিও ভাল থাকি
বুঝতে পারি
আমাদের ইহজন্ম তুচ্ছ হয়ে ওঠার আগে
শেষবারের মতো ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে
. ******************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর
আমাদের গল্প
কবি অমিতেশ মাইতি
২০০৩ সালে প্রকাশিত শ্যামলকাম্তি দাশ ও পীতম ভট্টাচার্য সম্পাদিত “দুই বাংলার
আবৃত্তির সেরা কবিতা” কাব্যসংকলন থেকে নেওয়া।
মিলনসাগরে প্রকাশকাল ৪.১.২০১৯।
আমরা কয়েকজন বন্ধু তনুকা নামের একটি সাদা রক্তশূন্য নারীকে রোজ
কবিতা শোনাতাম। তার ঘোলাটে চোখে পড়ত আমাদের ছায়া। তখন শহর
থেকে দূরে সরে যাওয়া নদীও এসে করাঘাত করত দরোজায়। আমাদের
বড় সাধ ছিল নারীটিকে বাঁচিয়ে তুলব। তার রক্তমাংস থেকে খুঁটে নেব
জীবনের মানে ও কবিতা।
সেদিনও আমরা কেউ পাখির কেউ সাপের কেউ ঘাসের কেউ মাছের
কবিতা পড়ছিলাম...। বাইরে জ্যোত্স্না। এখানে মায়াকানন। তারই দু-একটা
পংক্তি গোখরে সাপের সঙ্গে উষ্ণ খেলছিল। এক সময় সবাই যখন বেরিয়ে
আসছিলাম --- আশ্চর্য, নারীটি করুণ জল ভেঙে উঠে দাঁড়াল। রক্ত লাবণ্য
খুশিতে সে তখন টসটস করছে। যেন বা শিশির। দরজা পর্।ন্ত এসে বলল
‘আবার আসবেন।’ আমরা সমস্বরে বলে উঠলাম : না, কাল থেকে আর
আসছি না। তুমি এখন যথেষ্ট সুন্দর। যে কোনও পুরুষেরই কাম্য হতে পারো।
জলের নিজস্ব বিবর্ণতা ততদিনে রঙ হয়ে উঠেছে আমাদের!
. ******************
. সূচীতে . . .
মিলনসাগর