কবি আনন্দ ঘোষ হাজরা  - বীরভূম জেলার বোলপুরের কাছে ধল্লা নামক গ্রামে জন্মগ্রহন করেন |
রবীন্দ্রনাথও একসময় আশ্রয় নিয়েছিলেন এখানে, কলকাতা ছাড়ার পর | তার পিতার নাম প্রয়াত কানাইলাল
ঘোষ হাজরা এবং মাতার নাম প্রয়াত কণকলতা ঘোষ হাজরা |

কবি ১৯৫৩ সালে স্কুল ফাইনাল পাশ করেন বোলপুর হাইস্কুল থেকে | তারপর বর্দ্ধমান রাজ কলেজ থেকে
১৯৫৭ সালে বি.এস.সি পাশ করেন |

প্রথম জীবনে শিক্ষকতা শুরু করেন আসানসোল-এ উপেন্দ্র নাথ ইনস্টিটিউশন -এ |  তারপর ১৯৬০ সালে
বীরভূমে পাঁচড়া হাট হাই স্কুলে কিছু দিন শিক্ষকতা করেন | এরপর ১৯৬০ সালে ক্লার্কের চাকুরী নিয়ে
রাইটার্সে-এ আসেন | ১৯৬৩ সালে  
W.B.C.S (West Bengal Civil Service) পাশ করার পর পশ্চিম বঙ্গের
বিভিন্ন শহরে চাকুরী করেছেন |  এরপর ১৯৯৭ সালে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা হিসেবে অবসর
গ্রহণ করেন |

কবি কবিতা  লেখা শুরু করেন ১৯৫৭ সাল থেকে |  কবি ষাটের দশকের কবিদের হুল্লোর থেকে একা মগ্ন
থেকেছেন নিজেকে নিয়ে, এ কারণেই তার কাব্য ভাষা অনেক কবিদের থেকে একেবারে আলাদা |  তিনি
সম্ভবত ষাটের সেইসব কবিদের ভেতরে অন্যতম যাঁরা অদম্য নিষ্ঠায় পৃথিবীর অন্য ভাষা খুঁজে এনেছেন
মহার্ঘ সব কাজের নিশানা, স্থাপন করেছেন বাংলায় |  তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ   “দ্রুত ধাবমান স্বয়ংম্বরে”
প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালে।   

অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে "শীত চলে যাচ্ছে"  (১৯৭১), "পাঞ্চজন্য মেঘ”, “বনস্থলী জুড়ে শব্দ হোক”,
“হোম চিহ্ন পুরোনো সমিধ”, “নিদ্রিত শিলালিপি”, “সাইলেন্স টাওয়ারে কিছুক্ষণ”, “লেনা বেসিনে সন্ধ্যা”, “গ্রস্ত
উপত্যকার কবিতা”,  “শুধু ঢেউ”, “শ্রেষ্ঠ কবিতা”, “রেললাইন ধরে হেঁটে যাচ্ছি”, “জল জঙ্গল  ভুবনরেখা”,  
“প্যান্ পটিকন ও অন্যান্য কবিতা”, “মারুসুপিয়াল ও অন্যান্য কাব্যনাটক”, “ভাঙন”,   “সংখ্যার পরিরা”,  
“বেলা শেষের কবিতা” প্রভৃতি |

কবি অনুবাদ করেছেন “মিরোস্লাভ হলুব ও তার কবিতা”, “মারিণ সোরেস্কুর কবিতা”, “স্টুয়ার্ট ফ্রিবার্টের
কবিতা”, “ জুডিথ হারজবার্গের কবিতা” |

প্রবন্ধ লিখেছেন, কবির মনোভূমি : কবিতার জগৎ, কবির দায় : কবিতার বিষয়, যুগদর্শন ও জীবনানন্দ,
জীববিবর্তনের ইতিহাস ( প্রসাদ রায়ের সঙ্গে ) , মানুষ প্রাণী ও সংস্কার, অবয়ববাদ থেকে  উত্তর
আধূনিকতা, সাহিত্যে অবয়ব বাদ, উত্তর অবয়ববাদ ও উত্তর আধূনিকতার প্রয়োগ ,  এই  সময়ের
রবীন্দ্রনাথ প্রভৃতি।

প্রকাশ হতে চলেছে প্রবন্ধ “রবীন্দ্রনাথ ও তিন ব্যক্তিত্ত” ( আইনস্টাইন, ক্রোচে, ও জগদানন্দ )।

কবি মিরোশ্লাব হলুব--এর কবিতা অনুবাদের জন্য প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয় ( চেকোশ্লোভাকিয়া )  থেকে
অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রণ পান এবং ওখানে কবি মাসাধিক কাল আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন |
কবি বাংলা একাদেমী থেকে বিভা চট্টোপাধ্যায় পুরস্কার পেয়েছেন | মহাদিগন্ত প্রমূখ লিটিল ম্যাগাজিনের পক্ষ
থেকে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন |

আধুনিক কবিতার জগতে একটা মজার ব্যাপার আছে! কবিরা যা রচনা করছেন তার নাম "আধুনিক
কবিতা"! কিন্তু বহু ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই যে এই আধুনিক কবিতা শুধু শব্দমালার নীহারিকা বুননের
মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। দেখা যায় যে অনেক আধুনিক কবিতার কবি মননে মোটেও আধুনিক নন। সময়ের
সাথে এগিয়ে যেতে তাঁরা বহুক্ষেত্রেই উদাসীন। এমন কি ব্যক্তিগত জীবনে, যা কিছু আধুনিক তা বর্জন করার
জেদও অনেকের মধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি। যার ফলে বহু কবিকে আমাদের এই আধুনিক প্রযুক্তির
ইন্টারনেটের কাব্য জগতে নিয়ে আসতে পারিনি। বা আনতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
কারণ সেই কবিরা আধুনিক কবিতা লিখে থাকলেও, এই নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে চান না। তাঁদের কাছে
ছাপা-মাধ্যমেরই যা কিছু দাম। তাঁরা এরকম ওয়েবসাটে কবিতা প্রকাশিত করার কোনো মূল্যই আছে বলে
মনে করেন না।

কবি আনন্দ ঘোষ হাজরা যেন তার ঠিক বিপরীত মেরুর। তাঁর রচনা তো আধুনিক বটেই। তাঁর মননেও
তিনি প্রকৃত আধুনিক। তাঁর কবিতায় স্বাভাবিক কবিসুলভ ভাবনার সাথে এসেছে "নিউট্রিনো"-র মত
বিজ্ঞানের সূক্ষ্ম তত্ত্বের ভাবনা-চিন্তা। এমন কি "সাইবোর্গ" নারী যায় নি বাদ! সর্বোপরি আমাদের
সাক্ষাত্কারের জন্য সময় দেওয়া থেকে শুরু করে সব বিষয়ে যে সহযোগিতা আমরা তাঁর কাছ থেকে
পেয়েছি, তাঁর জন্য একটাই কথা আমরা বলতে পারি যে এই কবি প্রকৃত আধুনিক।  


আমরা
মিলনসাগরে , তাঁর কবিতা প্রকাশিত করার অনুমতি দেবার জন্য, তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

কবি আনন্দ ঘোষ হাজরার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।    

কবির সঙ্গে যোগাযোগ -
ঠিকানা - বেঙ্গল অম্বুজা হাউসিং, উদয়ন, ফ্ল্যাট নং-- ইউ ভি ১৮০৩ বি, ১০৫০/১ সার্ভে পার্ক, সন্তোষপুর  
.          কলকাতা--৭০০০৭৫


উত্স - ২৯শে এপ্রিল ২০১২ তারিখে, কবির সঙ্গে, তাঁর বাসভবনে নেওয়া একটি সাক্ষাত্কার।
.         মিলনসাগরের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মানস গুপ্ত।

আমাদের ই-মেল -  
srimilansengupta@yahoo.co.in     




এই পাতা প্রকাশ - .০৫.২০১২    
...