আনন্দ মুখর ক’টা দিন . শেষ হ’ল আজ | সুরু হ’ল গোছ গাছ . ফিরে যাওয়া সাজ | আবার সেই প্রতিদিন . একই সুরে গাওয়া, ইচ্ছা আর অনিচ্ছার . বাছা বাছি নাই জীবনের প্রয়োজনে . আয়োজন তাই | সব কিছু সব চাওয়া . সেই একই দিন, সেই রাত, সেই দিন, . সেই প্রতিদিন |
আজ থেকে গোপালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হ’ল | . বাংলা প্রথম পত্র | প্রশ্ন ও ভাল হয়েছে, গোপালের পরীক্ষা ও ভাল হয়েছে |
বড় লোভে হাত বাড়ালাম | নট্টরে ! তোর দেওয়া এই ডায়েরিখানা হাত বাড়িয়ে নিলাম তুলে ! লেখা আমার আর আসেনা , মন ভরানো কাব্য-গাঁথা আর ম্যালেনা ভাবের ডানা | শুকনো মনে, ব্যথার ভারে কোন রসের ঢেউ খ্যালে না | তবু দেখ , নতুন পাতায় নতুন আশার জাল বোনা----
প্রভু আমার! . দেহ আমার বলেছে ডেকে . “আর ত’ পারি না | অনেক খাটা খাটিয়েছিস্ . এবার ওপার যা” | কেমন করে যাব আমি . পথ ত’ চিনি না আদর করে আমার তরে . কেউ ত’ আসে না | বসেই আছি পথটি চেয়ে . আসবে কবে বলে--- আমায় তুলে নিয়ে তুমি . নাও ভাসাবে জলে |
শুধু তুমি বলেছ বলেই . মনের মধ্যে কলরব, আমার লেখা তোমার খাতায় . এত রে ভাই মহোত্সব | অনেক কথার গুঞ্জরণে . মন যখনি মুখর হবে, কলম খানি হাতে নিলেই . মনের আবেগ মুক্তি পাবে | তখন কি আর পড়বে মনে . আমার কথা তেমন করে ? পড়ুক কিংবা নাই পড়ুক . ভালবাসায় থাকুক ভরে |
অনেক দিন ত’ কাটল আমার . এমনি তরো একা - একা | প্রাণ-বঁধুয়া ফাঁকি দিল . কিছুতে আর দেয় না দেখা | আমার দিন, আমার রাত . সব কিছু যে শূন্য লাগে তোমার দেখা আবার কবে ? . দেখার কথায় পুলক জাগে | কিন্তু বৃথাই পুলক জাগা, . বৃথাই আমার বসে থাকা----- ‘তুমি ছিলে’ এই কথাটাই . সারা জীবন আগলে রাখা |
দিয়েছ অনেক প্রভু! ধন, মান, ভালবাসা বেঁচে থাকা মানবের যা কিছু পাওয়ার ----- কম তুমি দাও নাই | আরো কিছু চাই স্বামী, তোমাকেই চাই | আমার হৃদয় জুড়ে অহরহ : সুর তুলে যদি বাজে তব নাম, আমার সকল কাজে, প্রতিটি কথার মাঝে, তুমি থাক :তুমি থাক কেন, প্রভু, স্মরি তব নাম | তোমাকেই যেন আমি স্মরি অবিরাম | ওগো প্রভু, ওগো স্বামী, হে মোর অন্তর্যামী লহ গো প্রণাম |
বীণা হস্তে মা জননী দেখি মোর ব্যথিত মুখখানি বলিলেন “কি হয়েছেরে বল, “জোড়” হাতে বলি “মাগো” কবিকে মনে রেখে কবিতার তৌল করি “সহেনা, সহেনা এ ধকল | তার চেয়ে নীরবতা . অনেক সহজ সরল |” হাস্য দীপ্ত মুখ তুলি মা বলেন ---- কেমনে ভুলি . এই সব কাব্য কলি রঙে, গন্ধে, মাতায় জীবন | এরা আছে, এরা থাকে এরাই ত’ ভরে রাখে আলো আর গান দিয়ে আমার ভুবন |
২
অনেক কথার গুঞ্জরণে মন যখনি মুখর হয় খাতা কলম হাতে নিলেই কাব্য রসের ঝরনা বয় | তাতে কিছু মধুর ভাষা তাতে কিছু ছন্দ রস এসব হলেই বীণাপানি আপশ হতেই হবেন বশ | কবি যখন অতি কাছের তাহার কাব্য তৌল করা অসম্ভব, এ অসম্ভব পরিচয়েই মনটা ভরা ভাষা ছন্দ, ভাবের দ্বন্দ্ব সহজ ত’ নয় বিচার করা | তবু বলব -- লাগল ভালো, কয়েকটি ত’ সত্যি সেরা মনের মধ্যে তুলল সাড়া |
এখন যে কাব্য কথা বড়ই কঠিন, রক্তপায়ী কীটের মতন | হৃদয়ের কোমল বৃত্তিগুলি তীব্র দংশনে জজর্র | হায়রে কবিতা ! দুর্বোধ্য শব্দের ভারে ক্লীষ্ট তুমি | কখনও অর্থ কিছু পারি না বুঝিতে, তুমি ও কি বোঝো কিছু ? একদিন ধীর নম্র পায়ে গাঢ় লাল অলক্তে রাঙিয়ে আমার বুকের গভীরে কত ভাবে শিহরিত করেছে আমাকে | আমার বুকের সেই থর থর কাঁপনের গান তা আজ অতীত -অতীত কবিতা---- ! আজ তুমি আতঙ্ক দুর্বেধ্যতায় কিন্তু,-- সে তো সব নয় সখি ! এখনও, কোন কোন কবিতার ভাষা ছন্দে ও আবেগে আমাকে দোলায় | এখনও, কখনও, কখনও তোমাকে যে ফিরে পাই আমার বুকের মাঝে তেমনি নিবিড় স্পর্শে, পরিচিত অনুরাগে | এখনও কবিতা তুমি, আমার জীবন |
দীপ জ্বালিয়ে ঝোপে ঝাড়ে তুমি কিন্তু খুঁজছ কি ? জোনাক জোনাক জোনাকি ! যখন গভীর নিশুত রাতে, ঘুম নামে না চোখের পাতে, জানলা দিয়ে আমার ঘরে উঁকি দিয়ে দেখছ কি ? জোনাক জোনাক জোনাকি ! এই ত’ দেখি চালের বাতায় এই যে দেখি ঘরের মেজেয়--- কখনও বা দুটি মিলে লুকোচুরি খেলছ কি ? জোনাক জোনাক জোনাকি ! আমার মনে ভাবনা গড়ায় বাবলু বুঝি দেখতে আমায় দীপটি হাতে বাগান-ঘরে ঘুরে ঘুরে উড়ছে কি ? জোনাক জোনাক জোনাকি !
কত কথা ছিল যে বলার, সব কথা হয়নি ত’ বলা,---- ‘এস’ বলে ডাক দিল যেই সুরু হয়ে গেল পথ চলা | আমরা ত’ খেলার পুতুল, সূতো সেই বিধাতার হাতে | সূতোটির টান যেই মত---- আমরাও নাচি সেই সাথে | কেন তবে মন দেওয়া নেওয়া ? কেন তবে হাসি--আঁখি জল ? ‘চল’ বললেই চলে যাওয়া--- হাসি-অশ্রু সবই ত’ বিফল !
কত কিছু বলার ত’ থাকে | সব কথা বলা হয় কবে ? ঝরে পাতা পাতার মতন কথা গুলি ঝরে পড়ে যাবে | কত কথা প্রিয় হ’য়ে ফোটে, হয় মন আনন্দেতে ভরা, সেই প্রিয় কথা গুলি দিয়ে জীবনটা হোক তবে গড়া, শুধু ভালবাসা আর শুধু শুভ ভাবনা সকলের তরে হোক হৃদি সুধা ভরা এ হলেই পূর্ণ হবে সকল সাধনা, ভালো হোক, শুভ হোক, স্বর্গ হোক ধরা |