|
বিদ্যাসুন্দর অন্নদামঙ্গল কাব্য (দ্বিতীয় খণ্ড), কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র শ্রী ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রী সজনীকান্ত দাস সম্পাদিত, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, ১৯৪৩ (ভাদ্র ১৩৫০) |
কোটালে শাসন বিদ্যাসুন্দর, অন্নদামঙ্গল কাব্য (২য় খণ্ড) কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রাজা কহে শুন রে কোটাল। নিমকহারাম বেটা আজি বাঁচাইবে কেটা দেখিবি করিব যেই হাল॥ রাজ্য কৈলি ছারখার তল্লাস কে করে তার পাত্র মিত্র গোবরগণেশ। আপনি ডাকাতি করি প্রজার সর্ব্বস্ব হরি হয়েছিস দ্বিতীয় ধনেশ॥ লুঠিলি সকল দেশ মোর পুরী ছিল শেষ তাহে চুরি করিলি আরম্ভ। জানবাচ্চা এক খাদে গাড়িব হারামজাদে তবে সে জানিবি মোর দম্ভ॥ তোর জিম্মা মোর পুরী বিদ্যার মন্দিরে চুরি কি কহিব কহিতে সরম। মাতালে কোটালি দিয়া পাইনু আপন কিয়া১ দূর গেল ধরম২ ভরম॥ প্রাণ রাখিবার হেতু নিবেদয়ে ধূমকেতু অবধান কর মহারাজ। সাত দিন ক্ষম মোরে ধরি আনি দিব চোরে প্রাণ রাখ গরীবনেবাজ॥ পাত্র মিত্র দিল সায় ভাল ভাল বলি রায় নাজীরের হাবালে করিল। কোটাল বিনয়ে কয় মহল হাবালে হয় ভাল বলি রাজা সায় দিল॥ রাজার হুকুম পায় আগে আগে খোজা ধায় সমাচার কহিল দোপটে। বিদ্যা সখীগণ লয়ে বারি হৈলা দ্রুত হয়ে রহিলেন রাণী নিকটে॥ কোটাল বিদ্যার ঘরে সুরাখ৩ সন্ধান করে কোন্ পথে আসে যায় চোর। কি করিব কোথা যাব কেমনে চোরেরে পাব কেমনে বাঁচিবে প্রাণ মোর॥ কি জানি কেমন চোর কাল হয়ে এল মোর দেবতা গন্ধর্ব্ব যক্ষ নাগ। হেন বুঝি অভিপ্রায় শূন্যে শূন্যে আসে যায় কোমনে পাইব তার লাগ॥ পূর্ব্ব শুভাশুভ ফলে জনম ধরণীতলে কে পারে করিতে অন্যমত। পরে করি গেল সুখ আমার কপালে দুখ ধন্য রে কোটালি খেদমত॥ রসময়ী রাজকন্যা রূপগুণময়ী ধন্যা চোর বুঝি উপযুক্ত তাঁর। দুজনে ভঞ্জিল সুখ আমার কপালে দুখ এ বড় বিধির অবিচার॥ কূট বিদ্ধি কোটালের কিছু নাহি পায় টের ভাবে বসি বিষণ্ণ৪ হইয়া। ঘরের ভিতরে গিয়া শয্যা ফেলে টান দিয়া৫ দশ দিক দেখে নিরখিয়া॥ কপালে আঘাত হানি পালঙ্ক ফেলিতে টানি দেখিলেক সুড়ঙ্গের পথ। ভরত সরস ভণে কোটাল সানন্দ মনে কালী পুরাইলা মনোরথ॥ ******************* ১ – পু১, পী --- ক্রিয়া ২ – পু১, পী --- সরম ৩ – পু১, পু২, পী --- সুলুক ৪ – পু১ --- বিরস ৫ – পু১, পু২, পু৩, পী --- . . . শয্যা ফেলে উঠাইয়া **************** . কবির মূল সূচিতে ফেরত . . . মিলনসাগর |
বিদ্যাসুন্দর কাব্যের সূচি |