কবি ভাস্কর চক্রবর্তী – বিংশ শতকের ষাটের দশকের বিশিষ্ট কবি। তিনি পেশায় শিক্ষক ছিলেন।

কবি তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর জীবনী . . .

ভাস্কর চক্রবর্তীর বাবা ও মায়ের নাম যথাক্রমে ব্রহ্মময় চক্রবর্তী ও সর্বমঙ্গলা দেবী। ভাস্করের পিতৃদত্ত নাম
বিষ্ণুময়।

ভাস্করের জন্ম কলকাতার দর্জি পাড়ায়। বরানগর অঞ্চলের বেনিয়াপাড়া লেনে অবস্থিত পৈত্রিক বাড়িতেই  
তাঁর সমস্ত জীবন কেটেছে। কবি গোবিন্দ চক্রবর্তীর কন্যা বাসবীর সঙ্গে ১৯৮৩ সালে তাঁর বিবাহ হয়।

বরানগর অঞ্চলের গোপেশ্বর দত্ত ফ্রি স্কুল থেকে ভাস্কর স্কুল ফাইনাল পাস করেন। তাঁর বাবা এইস্কুলের
‌ই সংস্কৃত ভাষার শিক্ষক ছিলেন। ব্রহ্মানন্দ কেশব চন্দ্র কলেজ থেকে পাসকোর্সে বি.এ. পাস করে ভাস্কর এই
একই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে বি.এড. পাস করেন। চাকরির শেষ
দিকেও ভাস্করের মাসিক বেতন পাঁচ হাজার টাকার খুব একটা বেশি ছিল না। অনুমান করা কঠিন নয়
সারাটা জীবন তাঁকে কী ভয়ানক আর্থিক অসচ্ছলতার মধ্যে কাটাতে হয়েছিল।

জীবনানন্দের পরবর্তী বাংলা কবিতায় অল্প সংখ্যক যে -কয়েকজন কবি বাংলাভাষাকে সম্পূর্ণ নিজস্ব সুরে
বাজাতে পেরেছেন ভাস্কর চক্রবর্তী তাঁদের মধ্যে একজন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা'
-য় ভাস্কর অসাধারণ কবিত্বশক্তির পরিচয় দিয়েছেন। এই গ্রন্থে কবির উনিশ থেকে পঁচিশ বছর বয়সের
মধ্যে লেখা কবিতাবলি সংকলিত হয়েছে।কবির প্রথম গ্রন্থ হলেও এতে নবীন কবিসুলভ কোনো জড়তা নেই।
পূর্ববর্তী কোনো কবির স্পষ্ট কোনো প্রভাব ‌ও এই গ্রন্থে খুঁজে পাওয়া যাবে না।এই গ্রন্থে ভাস্কর তাঁর নিজস্ব
কাব্যভাষাকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন যা আশ্চর্য রকমের সরল ও সঙ্গীতময়,যা নিমেষে পাঠককে
অভিভূত করতে সক্ষম। দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ 'এসো, সুসংবাদ এসো' তে ভাস্করের নিজস্ব কাব্যভাষা সৌন্দর্যের
শিখর স্পর্শ করেছে বলা যায়। বহু কবিই ভাস্করের কাব্যভাষার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। বাংলা গদ্য  
কবিতা তাঁর হাতে নতুন জীবন লাভ করেছে। তাঁর অন্যান্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থের নাম হল : রাস্তায় আবার,
আকাশ অংশত মেঘলা থাকবে, জিরাফের ভাষা ইত্যাদি।

ভাস্কর সম্পূর্ণতই একজন আধুনিক নাগরিক কবি। কলকাতা মহানগরের জটিল ও কুটিল আবর্তে রক্তাক্ত,
ক্ষতবিক্ষত তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের যে কথা তিনি আমাদের শুনিয়েছেন তা অনবদ্য, বাংলা ভাষার কোথাও
তার তুলনা নেই।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০০৫ সালে কবির মৃত্যু হয়।

আমরা কৃতজ্ঞ কবি তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যিনি এই কবির ছবি এবং জীবনী লিখে আমাদের
পাঠিয়েছেন নিজে বাংলায় টাইপ করে। মিলনসাগরে কবি তরুণ বন্ধ্যোপাধ্যায়ের পাতায় যেতে
এখানে ক্লিক
করুন . . .।    

তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা” (১৯৭১), “প্রিয় সুব্রত”
(১৯৭৮), “এসো সুসংবাদ এসো” (১৯৮২), “রাস্তায় আবার” (১৯৮৩), “দেবতার সঙ্গে” (১৯৮৬), “আকাশ
অংশত মেঘলা থাকবে” (১৯৮৯), প্রভৃতি।
  

আমরা
মিলনসাগরে  কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর কবিতা তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে  পারলে এই
প্রচেষ্টার সার্থকতা।


উত্স
 

কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।    


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ০১.১২.২০১৩  
কবি
তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো কবির ছবি ও জীবনীর সংযোজন - ২৯.১১.২০১৮

...