কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৪
যাত্রা করি সাধু লড়ে ব্রাহ্মণেতে বেদ পড়ে হাতে ধান্য দূর্বা গঙ্গা জল | ঘৃত মধু দধি খন্ড থুইল অমৃত ভান্ড সম্মুখে থুইল নানা ফুল || আশ্বাসিয়া জনে জনে প্রধান যত পাত্রগণে নানা বস্ত্রে করিয়া ভূষণ | যত দিন না আসি আমি সাবধানে থাক তুমি পুরীতে না আসে অন্যজন || তোলা নিয়া বাটাবাটি বসিবার রাঙ্গাপাটি জল খেতে সুবর্ণের ঝারি | সঙ্গে যে যাইতে চায় তারে নিয়া তোল নায় হুকুম করিল অধিকারী || ধেনু বৎস কৃষ্ণসার নানা পুষ্প আনে আর যাত্রা করি চলে সদাগর | বিজয় গুপ্ত কবি ভণে শুনহ রসিক জনে দোলায় চলিল চন্দ্রধর ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
|
ক্ষার চূণের গন্ধ পাইয়া পলাইল ডরে |
সমুদ্র বাহিয়া যায় চান্দ সদাগরে ||
এক বাঁক হইতে সাধু আর বাঁকে যায় |
মালিমে ডাকিয়া বলে শুন মহাশয় ||
শঙ্খ সমুদ্রে আছে বুঝিলাম সন্ধান |
চাপিয়া ধরিল নৌকা নহে আগুয়ান ||
এতেক শুনিয়া চান্দর স্থির নহে মন |
মালিমে বলেন ঠাকুর চিন্ত কি কারণ ||
চান্দর নফর ধনা জানে নানা সন্ধি |
লোহার চাই পাতিয়া শঙ্খ করে বন্দী ||
চরের উপর সাধু থুইল পুতিয়া |
যাবার কালে নিব শঙ্খ নৌকা ভরিয়া ||
এইরূপে চলে যায় হরষিত মন |
মধ্য গাঙ্গে এক পুরী দেখিল তখন ||
দূরে থাকি তাহা দেখে চান্দ সদাগর |
কার পুরী দেখি এই সমুদ্র মাঝার ||
কেহ বলে ডাকাতে ভাত রান্ধি খায় |
কেহ বলে রাজা বুঝি জলকর লয় ||
কাহার হইতে পাব পুরীর বার্তা সার |
জলমধ্যে পুরীখান ঐ দেখি কার ||
হেনকালে কৈবর্ত দেখে সমুদ্র মাঝার |
নিকটে আনিয়া তারে বলে সদাগর ||
চান্দ বলে বিবরণ কহ মোরে সার |
জলমধ্যে পুরীখান ঐ দেখি কার ||
স্বরূপ কহিলে দিব খাসা ইনাম |
মিথ্যা কহিলে তোর কাটিব দুই কান ||
সেলাম করে কৈবর্ত কৌতুক হইল বড়ি |
এইকালে বল ভাই সরস লাচারি ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
কবি বিজয় গুপ্ত-র মনসামঙ্গল কাব্য যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
|
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৬
চান্দর দেখিয়া ভয় যোড়হস্তে কৈবর্ত কয় অবধান কর মহাশয় | যে মোর পুছিলা সার জলমধ্যে পুরী কার তার নাম লইতে রাসি ভয় || ডিঙা লইয়া সাধু যত আসে যায় এই পথ এখানে রহিয়া পদ্মা পূজে | নাও যায় ভরিয়া ধনে পদ্মাবতী পরশনে ঘরে গিয়া নানা সুখ ভুঞ্জে || কহিলাম যে কিছু জানি দেবের দেব শূলপাণি তাহার তনয়া মনসা | তোমারে কহিলাম শুন চৌদ্দডিঙ্গা ভরি ধন ধূপ দীপ দিয়া পূজহ মনসা || পদ্মার অভক্ত যে অবিলম্বে তার ক্ষে ততক্ষণ তার সর্বস্ব যায় | আপনে দিয়াছ আশা ইনাম আমারে দিবে খাসা ঘরে যাই পাইলে বিদায় || কহিতে কৈবর্ত হাসে বিষ হেন চান্দ বাসে ধীবর বান্ধিয়া তোল নায় | আমারে ভান্ডিয়া কানি ভাল পাইয়াছ ঠাঁইখানি বর্বর ভাঁড়াইয়া পূজা খায় || পদ্মাবতী পরশণে সানন্দে বিজয় ভণে ঘট ভাঙ্গিতে চান্দ যায় | যত লোক নহে বুঝে মহাদেব নহে পূজে তেকারণে এত দুঃখ পায় ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
|
ব্রাহ্মণ জাতি বসে যত সকলের চর্মকাটি ||
ভাইর বধূ করে কনিষ্ঠে বদলা |
ভগ্নী লইয়া ঘর করে ভাইরে বলে শালা ||
সকল জাতির নারী বেড়ায় দীর্ঘ ছান্দে |
বিচিত্র বসন দিয়া দিই স্তন বান্ধে ||
সব জাতি একাচারী নাহিক আচার |
ধর্মাধর্ম জ্ঞান নাই কুত্সিত আকার ||
পশ্চিম দেশের কথা শুন সদাগর |
সেই দেশের লোক বড়ই বর্বর ||
সেই দেশের লোক চলে গলায় দিয়া পাটা |
হিন্দু ব্রাহ্মণের চিহ্ন নাই সকলের কান কাটা ||
ষোল বত্সরের হইলে যুবতীর বিয়া |
পুরোহিতে বাড়ি থাকে দক্ষিণার লাগিয়া ||
বিবাহ করিয়া দেয় ভগ্নীপতির ঘরে |
অপত্যাদি হয় যদি তাহার উদরে ||
দেশেতে আনিয়া শেষে সমভাগ করে |
সেই ভাগসহ তার স্ত্রীকে নেয় ঘরে ||
ভট্টাচার্য হাল চষে গলায় পৈতা দিয়া |
স্ত্রীলোকেতে ঘুটা বাছে বিবস্ত্র হইয়া ||
দক্ষিণ পাটনের কথা শুন সদাগর |
অবোধ নগরে সেই পরম সুন্দর ||
সেই দেশের রাজার কথা শুন সদাগর |
রাজার নাম তথা বিক্রমেশ্বর ||
সে দেশের লোক অতি বড় ধনী |
ভেলায় করিয়া রাখে মাণিক্য দোহারী ||
অমাবস্যার তিথি আসে পৌর্ণমাসী |
ঢেউতে নিয়া শঙ্খ মুক্তা তোলে রাশি রাশি ||
হাট কুড়াইয়া খায় হাটুরিয়া কাঙ্গাল |
পাটিচে করিয়া শুকায় মুকুতা প্রবাল ||
এতেক শুনিয়া সাধুর আনন্দিত মন |
নিশ্চয় কহিল যাব দক্ষিণ পাটন ||
এবার কৃপা মোরে কর চন্ডী আই |
আজুকার দিন গেলে দিনের কূল পাই ||
চৌদ্দ ডিঙ্গা ভরিলেক বহুমূল্য ধন |
এতেক শুনিয়া তবে হরষিত সর্বজন ||
এইরূপে সদাগর চলিল সত্বর |
মালিমে ডাকিয়া বলে শুন সদাগর ||
দশ কূল পাবা হেন অনুমানি |
এবার তারাইলা বুঝি শঙ্কর ভবানী ||
বিজয় গুপ্ত বলে গাইন কৌতুক হইল বড়ি |
এই কালে বল ভাই সরস লাচারি ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
ততক্ষণে মেলে গিয়া সদাগর যথায় || বর্ধকী দেখিয়া বলে সাধুর নন্দন | ইঙ্গিত করিল এখন খসা রে বন্ধন || প্রণাম করিয়া বলে যতেক সূত্রধর | প্রসাদ দিয়া তাহা সবারে করে পুরস্কার || চান্দ বলে ভাই শুন হে বচন | ডিঙ্গা নাও করিতে তোমারা করহ গমন || গহন সমুদ্র তরিব প্রসার বিস্তর | নৌকা ভাও করিয়া আনহ সত্বর || প্রণাম করিয়া তারা চলিল ত্বরিত | সুতার বিদায় দিয়া চান্দ চলিল পুরীত || স্নান পূজা করিল তবে সাধুর নন্দন | বিনোদ মন্দিরে গিয়া করিল শয়ন || কহিল সকল কথা নাহি লেখা যোখা | চান্দ বলে শুন বাক্য সুন্দরী সোনেকা || ঘরে বসিয়া খাইতে ফুরাইল ধন | কল্যআমি যাইব দক্ষিণ পাটন || পুত্র নাই মিত্র নাই সবে দুইজন | বৃদ্ধকালে আমারে পুষিবে কোন জন || সোনাই বলে প্রাণনাথ রাজ্যের ঠাকুর | কোন কাজে ডিঙ্গা লইয়া যাবে বহুদূর || সংসারের মধ্যে সার আছি দুই জন | কোন দুঃখ যারা তুমি দক্ষিণ পাটন || চরণে পড়িয়া সোনা উচ্চৈস্বরে কান্দে | এই কালে বল ভাই লাচারির ছন্দে ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
|
নিকটে মিলিল সাধুর শুভ লগন ||
দুর্গা শিব চান্দ বলে ঘন ঘন |
যাত্রা করিতে বসে সাধুর নন্দন ||
( শুভক্ষণে যাত্রা করে সাধু সদাগর ) |
শিবদুর্গা বলিয়া গেল বাহির দখল ||
বাহির হইতে গিয়া সাধু বসিল দেয়ানে |
( সংবাদ দিয়া আনিল যত পাত্রগণে ) ||
সোমাই পন্ডিত আসিল কুলের ব্রাহ্মণ |
শান্তিরব চতুরঙ্গ আসিল সর্বজন ||
চান্দ বলে শুন সোমাই আমার বচন |
দেশ ছাড়ি যাব আমি দক্ষিণ পাটন ||
দেশের যত ভার দিলাম তোমার তরে |
সর্বলোকে পালন করিও আমার অগোচরে ||
মহানন্দের তরে পুরিল হাহাকার |
সত্বরে চল তুমি নৌকা সাজাবার ||
হাতে সাজি লইয়া ধাইল তখন |
চৌদ্দ ডিঙ্গায় ভরিলেক বহুমূল্য ধন ||
হরষিতে সদাগর তুলিলেক গাও |
শিবদুর্গা বলি চান্দ বাড়াইল পাও ||
চান্দ বলে ধনা তুই মোর কথা ধর |
নানা দ্রব্য তোল নিয়া ডিঙ্গার উপর ||
লোকে কলরব করে জয় হুলাহুলি |
জয় জয় করি দ্রব্য ডিঙ্গায় নিয়া তুলি ||
হরষিতে চলিলে চান্দ বড় আনন্দিত |
এই কালে বল ভাই লাচারির গীত ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৮
চৌদিকে বার্তা পায় পর দলে রাজ্য লয় কোতয়ালে কেমনে রহিছে ঘর | এতকাল চৌকি রাখি এমন সাধু নাহি দেখি প্রতি নায়ে চৌসারি ঘর || রক্ত পাটের শরৈ চামরে ঢাকিছে গলই দুই দিকে কামান সিপাই | শ্বেতচামরে বাও করে মযূরে আড়ানী ধরে দুই দিকে কামান সিপাই || সকল কোতোয়ালমিলি রাজার ঠাঁই গেল চলি মাথা নোয়াইয়া কহে কথা | পদ্মাবতী দরশনে সানন্দে বিজয় ভণে পরদল আসিছে হেথা ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
|
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৩
আগে তোল ধনখন্ড স্বর্ণ তোলে ঙান্ড ঙান্ড সাধু নহে ধনেতে কাতর | হীরামন মাণিক্য ডিঙ্গায় তুলিল সারা আর তোলে বিচিত্র পাথর || ছোলঙ্গ জামীর ফল মিষ্ট তোলে নারিকেল গুয়ার পাকড়ি ছড়া ছড়া | সুতার কাপড় গড়া তোলে জোয়ান ঘড়া ঘড়া আর তোলে চটের ধোপড়া | মাষ মশুরী ছোলা আদা হরিদ্রা মূলা নানা দ্রব্য তোলে নিয়া নায় | জিনিষ তুলিল নায় সানন্দে বিজয় গায় সাধুরে জানাতে ধনা যায় ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
|
কবি বিজয় গুপ্তর
মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৯
রাজা বলে কোতোয়াল মোর কার্যে যাও |
শীঘ্রগতি তথা গিয়া তথ্য লইয়া আও ||
লক্ষের পুটুলি ফেলে জলের ভিতর |
তবে সে আসিবে ডিঙ্গা ঝোপের ভিতর ||
রাজার আজ্ঞায় কোতোয়াল চলিল সত্বর |
অবিলম্বে গেলা যথা চান্দ সদাগর ||
ডিঙ্গা রাখ পরদেশী বলে কোতোয়ালগণে |
ঝোড়ে না লাগাও ডিঙ্গা বিনা পরিমাণে ||
পর দল হও তুমি নহে মহাজন |
এত বড় ডিঙ্গা নাহি আনে কোন জন ||
কোতোয়াল পাইক রহিল থরে থরে |
মধুকরে থাকি চান্দ পরিচয় করে ||
আপন কুশল যদি চাও দেও পরিচয় |
যে সব আড়ম্বর দেখি কভু সাধু নয় ||
থাকুক অন্যের কাজ বলে কোতেয়াল |
জনে জনে কাটিয়া তুলিয়া দিব শালে ||
ডাক দিয়া বলে তবে রোঙ্গাই ব্রাহ্মণ |
তোমার দেশেতে আইল সাধু মহাজন ||
চম্পক নগরে রাজা চান্দ সদাগর |
বাণিজ্য করিতে আইল কহিল সত্বর ||
যদি তোমরা হও লক্ষের সদাগর |
লক্ষের পুটলি ফেল জলের ভিতর ||
এতেক নিষ্ঠুর বাক্য বল কি লাগিয়া |
না রব তোমার রাজ্যে দেশে যাব ধাইয়া ||
চান্দর যতেক সৈন্য সকলি ইতর |
হুড় হুড়ি করিয়া গেল ঝোপের ভিতর ||
ভাই ভাই বলি সাধু বলিল উত্তর |
বৃদ্ধ কোতোয়াল গেল চান্দের গোচর ||
সোনার বাটিতে চান্দ খায় গুয়াপান |
দুই বিড়া পান দিল তাহার বিদ্যমান ||
দুই বিড়া পান দিল চার ঘা গুয়া |
হস্তে করিয়া বলে কি করিব ইহা ||
চান্দ বলে হের দেখ সাক্ষাতে খাই |
চূণ গুয়া পান একত্রে খাইলে বড় স্বাদ পাই ||
এতেক কোতোয়াল আনন্দ হৃদয় |
দধি জ্ঞানে চূণ বেটা কতগুলি খায় ||
চূণ খাইয়া তার জিহ্বার গেল ছাল |
থুথু করি ফেলে বেলে ঘটিছে জঞ্জাল ||
ধনার দিকে চাহিয়া হাসেন সদাগর |
বুঝিলাম এদেশের লোক বড়ই বর্বর ||
ঠাকুর চতুর যার সেবক বিচক্ষণ |
সমুখে বসিয়া যোগায় তখন |
পানখাইয়া কোতোয়ালের আনন্দিত মন |
রাঙ্গা জিহ্বা করিয়া চাহে ঘন ঘন ||
চান্দ বলে কোতোয়াল শুনহ বচন |
দর্পণ আনিয়া দেখ মুখের পত্তন ||
বিদায় লইয়া কোতোয়াল চলিল তখন |
ত্বরিত গমনে গেল রাজার সদন ||
রাজ ব্যবহারে কোতোয়াল নোয়ায় মাথা |
দেখিল শুনিল যত কহিল সব কথা ||
চারিবার গিয়াছিলাম ডিঙ্গার বার্তা পাইয়া |
অনেক আসিছে দেখি চৌদ্দ ডিঙ্গা লইয়া ||
এতেক শুনিয়া রাজা স্থির করে মন |
কোতোয়ালের মুখ সবে করে নিরীক্ষণ ||
চারিভিতে লোক সব কানাকানি করে |
আজি কেন কোতোয়ালের মুখে রক্ত পড়ে ?
কোতোয়াল বলে রাজা করি নিবেদন |
কিছু বস্তু খাইতে দিল সাধুর নন্দন ||
বড়ই আশ্চর্যের বস্তু খাইতে অনুমান |
পথে আসিতে তার হারাইলাম নাম ||
আনিল যতন করি যত গুয়া পান |
সত্বরে ফেলাইয়া দিল রাজার বিদ্যমান ||
এইমতে হেথায় রহিল সদাগর |
যাত্রা পাটন পালা এইখানে সোসর ||
বৈদ্য বিজয় গুপ্তে মনসার দাস |
সংক্ষেপে মনসা গীত করিল প্রকাশ ||
. **************** সূচি...
মিলনসাগর
কবি বিজয় গুপ্তর মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
১ প্রণমি মনসা দেবী নমি বিষহরি | জীবনে মরণে যেন তব পদ স্মরি || ছয় পুত্র মরিল চান্দর অতিশয় | হোথায় চান্দ আছে আপনার আলয় || কুল পুরোহিত আছেন সোমাই পন্ডিত |
|
কবি বিজয় গুপ্তর
মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
২
যথা তথা যাও সহায় করি শিব |
এবার পাটনে গেলে হারাইবে জীব ||
আজি নিশি দেখিলাম স্বপন বিকট |
যাত্রাকালে তোমার ভাঙ্গিল পূর্ণঘট ||
বেলা দুই প্রহরে শৃগালের কোলাহল |
কবি বিজয় গুপ্তর
মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৫
হেতালবাড়ি কান্ধে করি চলে সদাগর |
হরষিতে চলে সাধু দোলার উপর ||
সত্বর হইয়া সাধু ডিঙ্গায় চড়িল |
একে একে চৌদ্দ ডিঙ্গা বাওয়াইয়া দিল |
প্রথমে বাওয়াইল ডিঙ্গা নাম মধুকর |
সেই নায় চলিল লক্ষের সদাগর ||
তার পাছে বাওয়াইল ডিঙ্গা নামে বিজু সিজু |
গাঙ্গেয় দুই কূল ভাঙ্গিয়া বেকা করে উজু ||
তারপাছে বাওয়াইল ডিঙ্গা শঙ্খচূড় |
সমুদ্রের দুইকূল ভাঙ্গে পাতালে ঠেকে মূড় ||
তারপাছে বাওয়াইল ডিঙ্গা অজয় শেলপাট |
কবি বিজয় গুপ্তর
মনসা মঙ্গল
যাত্রাপাটন পালা
৭
এতেক শুনিয়া সাধুর সর্বাঙ্গ কাঁপে |
হাতে হাত কচালে দশনে ওষ্ঠ চাপে ||
মহাকোপে কাঁপে তনু সাধুর নন্দন |
ঘট ভাঙ্গিতে সাধু চলে ততক্ষণ ||
দারুণ হৃদয় চান্দ বড়ই নিষ্ঠুর |
এই পাতায় কোনো ভুল-ত্রুটি চোখে পড়লে অথবা যদি কোথাও ভুল বলে মনে হয়, তাহলে আমাদের এই ইমেলে জানাবেন। আমরা শুধরে নেবার চেষ্টা করবো। srimilansengupta@yahoo.co.in
|
|
|