কবি বিপ্লব চক্রবর্তীর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
ছুটি
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী


ছুটতে ছুটতে সকাল ভেসে যায়,ছুটতে ছুটতে রাত্রি নেমে আসে।
ছুটতে ছুটতে ছোটাই শুধু হয়, যেখানেই ছিল সেখানেই ফেরে সে।
ধারকরে ভীর যখন ছুটেছিলাম, পেরিয়ে রোদ কাঁদা আর জল।
জীবন শুধুই নিজের জন্য ছুটে মণকে কি দিলি তুই বল?
একটু যখন গাছের ছায়া পেলি, ক্লান্ত হয়ে হঠাৎ থেমে গেলি।
একটু যখন খেললি প্রানবাতাসে ছোটা শুরু পৃথিবীর চারপাশে।
বইখাতা নিয়ে সকাল সকাল ছোটা, দুপুরবেলা যৌবনেতে ছুট।
রাতের আঁধার যখন ঘনিয়ে আসে , বল হরি দিয়ে বাতাসা লুট।
তবুও যদি থামে ছোটা ছুটি, ঘুমে ভাবনা স্বপ্নেরদিকে ছোটে।
পঞ্চভূতে বিলীন হওয়ার পরেও স্মৃতি নিয়ে ছোটার জন্য জোটে।

.                      *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম তুই অনেক ভালো থাকিস ।
আর চার দেওয়ালে বন্দিকরে স্বপ্নগুলো রাখিস।

আমি আবছা হয়ে গেলাম অনেক,অনেক লোকের ভীরে।
আবার যদি ডাকিস দেখবনা আর ফিরে।

তোর অনেক ভাষা আছে তবু নেই তীব্রতা।
তুই পাথর হয়ে গেছিস তাই আসেনা কবিতা।

তোকে বাঁচতে শেখাতে গিয়ে আমি বাঁচা ভুলে গেছি।
আজ জীবন থেকে দূরে আর মৃত্যুর কাছাকাছি।

আর লুকোচুরি কেন ?আজ তোকে মুক্তি দিলাম।
তুই নিজের মতই থাক আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম

.                 *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
নিয়ম ভাঙ্গার নিয়ম
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

তোর আকাশ ছোঁয়ার আজ স্বপ্ন চার দেওয়ালে আটকা।
তাই অনেক জমেছে স্মৃতি কিছু বাসি কিছু টাটকা।

আমি যেদিন তোকে প্রথম দেখেছিলাম, তোর সহজ সরল সবুজ অবুঝ হাসি।
আজ পাতার উপর শহরের সব ধুলো,তোর এলোমেলো মণ তুই আজ উদাসী।

তোর চোখে আমি জীবন দেখেছি সত্যি,তবে দেখিনি চোখেতে পিঁচুটি জমেছে কত?
আমার শহরে ধুলো বেশি কম মাটি, নিজেই চলে নিজের নিয়ম মত।

তুই কার কাছে হাতপাতিস বল, তোকে দেবার মতন ওদের আছে কি?
তুই বুকের ওপর রবীন্দ্রনাথ ধরিস, এসব সবই ওদের কাছে মেকি।

আয় যদি তোর কুয়াসা ভাল-লাগে, দেওয়াল ভাঙলে হালকা আমায় পাবি।
আর যদি চুন-খসা দেওয়ালে আমায় খুঁজিস যা ছিল তাও হারাবি

দেখ আকাশ খোলা নিয়ম ভাঙ্গার-পর, জীবন বাঁচতে স্বপ্ন দরকারি।
তোর জন্য সাজিয়ে রেখেছি, তোর আমার তালপাতার বাড়ি।

.                        *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ব্রেকআপ
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

আমার সঙ্গে পথ চলা যায় না, পালিয়ে গেলে তাই।
আমার খামখেয়ালীপনা আর শহর কিছুটা দায়ী।
আমি ছিলাম লোকের ভিড়ে, তুমি ভাবলে লুকোচুরি।
ব্রেক করে রাস্তা বদলে আমরা এখন পালিয়ে ঘুরি।

ব্রেকআপ তাই তোমার আমার,অনেক ভাল হারিয়ে যাক সব।
আমিও কাল খুঁজে নেব ভোরের বাতাস আর পাখির কলরব।

জানি তোমার ভুল হয়েছে ,আমার চোখে স্বপ্ন খোঁজা।
অনেক তো পথ চললেই নিয়ে সম্পর্কের বোঝা।
অভিমানকে জিতিয়ে প্রেম পেল পরিণতি।
ব্রেকআপ তাই তোমার আমার,স্তব্ধ হোক প্রেমের গতি

তাই ব্রেকআপ তুমি ভাল থেকো, জীবন জিও নতুন করে।
আমি তো পথের ছেলে স্বপ্ন আমার ধুলোয় ওড়ে।

সত্যি কি ব্রেকআপ মানে পালিয়ে চলে জাওয়া , তবে কেন উদাস করে খামখেয়ালী হাওয়া।
তবে কেন পাতার ওপর শিরির কণা ভাসে, চোখের কোঠায় বাতাস পেলে বৃষ্টি নেমে আসে।

ব্রেকআপ সুধু সম্পর্কের মনের ব্রেক আপ নয়।
ভালবাসা কষ্ট পেয়ে মনেই পরে রয়।

.             *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
আর নয়
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

আর কবিতা নয়, কল্পনায় দিগন্ত ছুঁতে চাইনা আর।
অনেক জমানো হাই প্রোটিনের নেশায় জীবন আজ ছারখার।
তাই ফুরিয়ে গেলাম, নিয়মের সঙ্গে ।
লড়বো আবার অনেক পরে সময়ের প্রশ্রয়ে।
যেদিন খুব প্রয়োজন, ধুলো মুছলে পাবে খুঁজলে।
তবে কবিতা থাকবে লুকোনো খাতায় আমার বুকের ওপরে,
আমার প্রেয়সী হয়ে সুখ দুঃখে, আর মুজরো নাচবে না অন্ধের জলসাঘরে।

.             *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
আর একটু যদি সমায় পেতাম
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

আর একটু যদি সমায় পেতাম,বন্ধু ফিরিয়ে দিতাম হারানো সে নাম।
আমিও তো বন্ধু চলছি আবিরাম,ক্লান্তি কবিতাতে মাথাতে কালঘাম।
কবিতারা শব্দ খোঁজে চোখ বোঝে কপালেতে ভাঁজ।
বন্ধু ধুঁকছি তবুও পরে আছে অনেক কাজ।

প্রতিদিন সূর্য হারায় তোমার আমার আকাশ থেকে।
অভ্যাসে যন্ত্রণারাও ঘুমিয়ে পরে কারো বুকে মাথা রেখে।
আর একটু রাত যদি জাগতে পেতাম আমি দেখিয়ে শরীরের কি দাম।
আর একটু যদি সমায় পেতাম,বন্ধু ফিরিয়ে দিতাম হারানো সে নাম।

বন্ধু মেখেছি আমি অনেক শরীর আমার শরীরে।
বন্ধু তলিয়ে গেছি অনেক চোখের ভীরে।
পাপ পুণ্য আজ কিছুই বুঝি না।
একটু আরাম চাই তাই স্বপ্ন খুঁজি না।
আর একটু যদি কাঁদতে পেতাম, ঘর বেঁধে নিতাম বড় শান্তি পেতাম।

.             *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
যা তা
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

কটা ঘর একটা শহর ছাল চামরাহীন কিছু পাখি,
রাস্তার ধারে কিছু জঙ্গল তাতে ধুলোর মাখামাখি।
চলছে গাড়ি চলছে ঘোড়া, পা আছে তবুও খোঁড়া।
এই জগতটাই এভাবে মোরা, তবে বাঁচবে কিভাবে ওরা।
চলছে না, চলবে না বলে চলে যায় সব।
চিড়িয়াখানায় পাবে পাখির কলরব।
হৃদয় পাবেনা খুঁজে, তবু হার্ড অ্যাটাক।
গোমরা মুখে উত্তর বেঁছে আছি ঠিক ঠাক।
আমরা সবাই একই রকম, সবাই খুব একা।
রাত বাড়ে সাথে বাড়ে চোখের বলিরেখা ।

.             *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
আমি তখনো তোমাকে চাই
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

আমি তখনো তোমাকে চাই।
যখন ক্লান্তিরা আমার কোমর ভেঙ্গে দেয়, বিছানায় শামুকের মতন গুটিয়ে যাই।
নিদ্রা আরও গভীর নিদ্রা আমাকে পৃথিবীর মোহ মায়া থেকে সমাধিতে নিয়ে যায়।
ধ্যান,ধারনা সুপ্ত থাকে আমার অবচেতন মণে, আমার অজান্তেই আমি বিলীন হয়ে যাই পরমাত্মায়।
আমি তখনো তোমাকে চাই তাই পারিনা পরমাত্মায় বিলীন হতে।
মণের টানে পথ হারাই।
কারণ আমি তখনো তোমাকে চাই।

.             *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কবে আমার হবি
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

সময় আমার চোখের কোঠায় ঝাঁপটামারে জলের মতন,
কুঁচকে যাওয়া চামড়াগুলো বার্ধক্যের দৃশ্য দেখায়।
কানের-পাশে ফরফরিয়ে নিস্তব্ধতা বোবা বানায়।
ফুরিয়ে গেছে অনেক চুল, সাদা কালো বাংলা ছবি।
তাকিয়ে তোর অপেক্ষাতে মৃত্যু কবে আমার হবি।
হারিয়ে যাব ঢেউয়ের মাঝে, আধার আলোর সন্ধিক্ষণে,
নেই পরোয়া কেউ যদি নাইবা রাখুক আমায় মণে।
জমবে ধুলো স্মৃতির মাঝে, থাকবে পরে আমার ছবি।
আছি তোর প্রতীক্ষাতে, মৃত্যু কবে আমার হবি।

.                *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
নোনতা
কবি বিপ্লব চক্রবর্তী

যখন নুন চাই জীবনে জীবন যেন নুন ছাড়া বাদাম ভাঁজা।
ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সরদার,ভিখারি হয়ে রাজা সাজা ।
একটু নুন চাই জীবনে,প্রেম এ একটু যৌনতা।
ছানা থেকে ক্ষীর ডাক্তারের কাছে ভিড়,জন্মের আগে মৃত্যুর বাস্ততা।
একটু নুন চাই জীবনে,ডাল ভাতে নুন অনেক কম।
চোখের জল ও বিক্রিহয়,চলচ্চিত্রের পর্দাতে কাভি খুশি কাভি গম।
নুন ঝরে শ্রমিকের শ্রমে,নুন ঝরে কৃষকের ঘামে।
আমরা তো আছি অনেক আরামে।
তবে গুন গাই কেন? না আমরা নুন খাই চরি গাড়ি ন্যানো   ।
মিথ্যে রাজার গানে তবলা বাজাই,।
ঐ সত্যি কে মিথ্যে বানিয়ে ভিখারি কে রাজা সাজাই।

.                *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর