বিদ্যাসাগরকে উত্সর্গিত কবিতা ও ছড়া
*
বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধ
কবি মানকুমারী বসু
কবি মানকুমারী বসুর কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

"বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধ" বালাই!
হৃদয় চমকি ওঠে          শোণিতে আগুন ছোটে,
ছয় কোটি প্রাণ পুড়ে হয়ে যায় ছাই!
এ দীন পতিত দেশে          পতিতপাবন-বেশে---
দয়ার দেবতা আহা আজ আর নাই!
বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধে বুক ফাটে তাই
আজ যদি "পিতৃশ্রাদ্ধ" সারা বঙ্গময়---
"পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম,"          দেখিব তাহারি কর্ম,
হৃদিপিণ্ডে পিণ্ডদান কর সমুদয় ;
পদধূলি রাখি শিরে,          চল যাই গঙ্গা-তীরে,
ঘরে ঘরে হবে সেই দেব-অভ্যুদয়---
এ যে গো প্রতিষ্ঠা---এতো বিসর্জন নয় ||

বিষাদের দিনে এই নব মহোত্সব,
দিয়া ভক্তি উপহার---          "ষোড়শ" সাজাও তাঁর
কোটি ভাই বোন কেউ থেকো না নীরবে ;
কি করিবে "বৃষোত্সর্গ"          এ বিধি যে "আত্মোত্সর্গ"
ফিরে যাহে প্রাণ পাবে কুড়ি কোটি শব |
খুলিয়া বুকের পাতা          দেখ সঞ্জীবনী গাথা,
পড় সে "বিরাট পুঁথি" বীরত্বের স্তব |
আজি পিতৃপ্রীতি লাগি          হও সবে স্বার্থত্যাগী,
উঠুক দিগন্ত ভেদি কোটি কণ্ঠ-রব,
বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধ---নব মহোত্সব ||

বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধে আত্মা দাও ডালি---
কাঙালী "বিদায়" যাচে          দুয়ারে দাঁড়ায়ে আছে---
বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধে ভারত কাঙালী !
টাকা পয়সার তরে          আসেনি মা শোক ভরে---
কাঁদিছে সে, কোল তার হয়ে গেছে খালি,
দাও মা'রে দাও ভিক্ষা,          মহামন্ত্রে লও দীক্ষা,
"ঈশ্বরের" ভাই হও ছ'কোটি বাঙালী !
জননী হয়েছে আজি "ঈশ্বর-কাঙালী" ||

"বিদ্যাসাগরের শ্রাদ্ধ" বড় গালাগালি---
ক'স্ নে  ও কথা ফিরে          কোটি বুক যায় চিরে,
ছয় কোটি প্রাণ পুড়ে হয়ে যায় কালি!
এ জাতীয় পিতৃকৃত্য          তবেই হিবে "নিত্য",
হীনতা নীচতা দাও গঙ্গাজলে ঢালি!
শেখ সে উদ্যম-আশা          বুকভরা ভালবাসা,
পূরাও পরাণ দিয়ে মার কোল খালি!
মহাশ্রাদ্ধ হোক্ শেষ,          "ঈশ্বরে" ভরুক দেশ,
পূজিব সে পিতৃমূর্তি হৃদয়ে উজালি,
নিতি দিব---প্রাণগলা আঁখিজল ঢালি ||

.     *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
বিদ্যাসাগর স্মৃতি
কামিনী রায়
কবি কামিনী রায়ের কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

ঘন আঁধারের                   মত বঙ্গদেশ
ছেয়েছে গভীর শোক,
করি উদ্ যাপন জীবনের ব্রত,
এথাকার রবি আজি অস্তগত,
কোথায় উদিছে                নূতন দিনেশ
উজলিতে নবলোক  |
সেই দানশীল                   বিধাতার দান
জ্ঞান পুণ্য তেজোময়,
কাঙাল ভারতে দিয়াছিলা বিধি
কি তপস্যা ফলে সে অমূল্য নিধি ?

.     *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কে বলে ঈশ্বর নাই
ভূপেন্দ্রবালা দেবী

কে বলে ঈশ্বর নাই  ?
ঈশ্বর জীবনে             ঈশ্বরের কার্য
জ্বলিছে দেখিতে পাই |
মৃত লোকে ভরা,         স্বার্থপর ধরা
ঈশ্বরে হারায়ে আজ,
মৃত শোক ভরে,           কাঁদিতেছে সবে
ধরিয়া শোকের সাজ  |
বুঝে না তাহারা,             অমর ঈশ্বর --
মরণ তাঁহার নাই ;
নিঃস্বার্থ প্রেমের,            অমৃতের ছবি
সংসারে রহিল তাই  |



এ ছবি দেখিয়া                কত মৃত প্রাণ
নূতন জীবন পাবে  |
পরবর্তী কত                    নূতন জীবন
আদর্শে গঠিত হবে |
অমৃতের পুত্র                   অমর ঈশ্বর
অমর-ভবন-বাসী,
প্রেম বিলাইয়া,                  অনন্ত প্রেমেতে
গিয়াছেন শেষে মিশি  |


অমৃতের পুত্র,                     অমর ঈশ্বর
তাঁহার বিরহে আজ---
কাঁদিতেছে লোক,                 অমৃত ভাষায়
দেখে হৃদে পাই লাজ !
অমর বিরহে,                    কাঁদিবার তরে
চাই গো অমর ভাষা  |
মৃত লোক তোরা,                 তুলেছিস্ কেন
তোদের এ মৃত ভাষা  ?


অমৃতের পুত্র                       অমর যাহারা
এসো অগ্রসর হয়ে-----
অমর ভাষায়                        বিরহ সঙ্গীত
উঠ গো তোমরা গেয়ে
সে সঙ্গীত গিয়ে                      প্রতি মৃতপ্রাণে
ঢালুক অমৃতধারা,
মুহূর্তের তরে                       সজীব হইয়া
হউক আপন হারা |

.     *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
সাগর তর্পণ
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তর কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

বীরসিংহের সিংহশিশু !  বিদ্যাসাগর !  বীর !
উদ্বেলিত দয়ার সাগর, ----বীর্য্যে সুগম্ভীর !
সাগরে যে অগ্নি থাকে কল্পনা সে নয় ;
তোমায় দেখে অবিশ্বাসীর হ’য়েছে প্রত্যয়  |
নিঃস্ব হ’য়ে বিশ্বে এলে দয়ার অবতার |
কোথাও তবু নোয়াওনি শির জীবনে একবার
সৌম্য মূর্ত্তি তেজের স্ফুর্তি চিত্ত-চমত্কার !
নামলে একা মাথায় নিয়ে মায়ের আশীর্বাদ,
করলে পূরণ অনাথ আতুর অকিঞ্চনের সাধ ;
অভাজনে অন্ন দিয়ে ---- বিদ্যা দিয়ে আর-----
অদৃষ্টেরে ব্যর্থ তুমি করলে বারম্বার  |
বিশ বছরে তোমার অভাব পূরল নাকো , হায়,
বিশ বছরের পুরানো শোক নূতন আজো প্রায় ;
তাই তো আজি অশ্রুধারা ঝরে নিরন্তর  !
কীর্ত্তিঘন মূর্ত্তি তোমার জাগে প্রাণের’ পর |
স্মরণ-চিহ্ন রাখতে পারি শক্তি তেমন নাই,
প্রাণ প্রতিষ্ঠা নাই যাতে সে, মূরৎ নাহি চাই  ;
মানুষ খুঁজি তোমার মত,--- একটি তেমন লোক,---
স্মরণ-চিহ্ন মূর্ত্ত ! --- যে জন ভুলিয়ে দেবে শোক |
রিক্ত হাতে করবে যে জন যজ্ঞ বিশ্বজিৎ---
রাত্রে স্বপন চিন্তা দিনে দেশের দশের হিত,---
বিঘ্ন বাধা তুচ্ছ করে লক্ষ্য রেখে স্থির
তোমার মতন ধন্য হ’বে, --- চাই সে এমন বীর
তেমন মানুষ না পাই যদি খুঁজব তবে, হায়,
ধূলায় ধূসর বাঁকা চটি ছিল যা’ ওই পায় ;
সেই যে চটি উচ্চে যাহা উঠত এক একবার
শিক্ষা দিতে অহঙ্কৃতে শিষ্ট ব্যবহার  |

সেই যে চটি দেশী চটি----বুটের বাড়া ধন,
খুঁজব তারে, আনব তারে, এই আমাদের পণ
সোনার পিঁড়েয় রাখব তারে, থাকব প্রতীক্ষায়
আনন্দহীন বঙ্গভূমির বিপুল নন্দিগাঁয়  |
রাখব তারে স্বদেশ-প্রীতির নূতন ভিতের প’র
নজর কারো লাগবে নাকো, অটুট হবে ঘর  |
উঁচিয়ে মোরা রাখব তারে উচ্চে সবাকার,----
বিদ্যাসাগর বিমূখ হ’ত ---- অমর্য্যাদায় যার |
শাস্ত্রে যারা শস্ত্র গড়ে হৃদয়-বিদারণ,
তর্ক যাদের অর্কফলার তুমুল আন্দোলন ;
বিচার যাদের যুক্তিবিহীন অক্ষরে নির্ভর,----
সাগরের এই চটি তারা দেখুক নিরন্তর  |
দেখুক. এবং স্মরণ করুক সব্যসাচীর রণ,---
স্মরণ করুক বিধবাদের দুঃখ-মোচন পণ  |
স্মরণ করুক পান্ডারূপী গুন্ডাদিগের হার,
‘বাপ, মা, বিনা দেব্ তা সাগর মানেই নাকো আর |’
অদ্বিতীয় বিদ্যাসাগর ! মৃত্যু-বিজয় নাম,
ঐ নামে হায় লোভ করেছে অনেক ব্যর্থকাম ;
নামের সঙ্গে যুক্ত আছে জীবন-ব্যাপী কাজ,
কাজ দেবে না ? নামটি নেবে ?-----একি বিষম লাজ !
বাংলা দেশের দেশী মানুষ ! বিদ্যাসাগর ! বীর !
বীরসিংহের সিংহশিশু ! বীর্য্যে সুগম্ভীর !
সাগরে যে অগ্নি থাকে কল্পনা সে নয়,
চক্ষে দেখে অবিশ্বাসীর হ’য়েছে প্রত্যয়  |

.     *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
দয়ার পুরীধাম
কুমুদরঞ্জন মল্লিক
কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক-এর কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

বিদ্যা তোমার সাগর, তুমি দয়ার পুরীধাম
উচ্চারণে পুণ্য দেহ, ধন্য তোমার নাম |
সকল জাতির জ্ঞাতি তুমি মুক্ত চিরদিন,
আপন তোমার পথের কাঙাল আতুর দীনহীন’
তোমার বুকে মঠ বেঁধেছে, এক সাথেতে সব,
হিন্দু তুমি, বৌদ্ধ তুমি, শাক্ত ও বৈষ্ণব |

বঙ্গভাষা শকুন্তলা কোথায় ছিল পড়ি’
হে মহর্ষি ব্রহ্মচারী আনলে বুকে করি,
কন্যা করি ধন্যা করি অরণ্যেতে তায়
শিক্ষা দিলে, দীক্ষা দিলে, কুটীর আঙিনায়,
বনের বনজ্যোত্স্না সে গৌরব অতুল
পরাজিত পারিজাত ও রাজোদ্যানের ফুল |

মায়ের মতো স্নেহ তোমার ; দেবের মত দয়া
পতিত তাপিত উদ্ধারিতে সর্বজয়া গয়া
পরের দুখে অমনি গল কঠিন হিমাচল
হৃষীকেশের গঙ্গা তুমি শান্ত সুশীতল  |
উচ্চারণে পুণ্য দেহ, ধন্য তব নাম

.     *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
মহাসাগর
কালিদাস রায়    
কবি কালিদাস রায়ের কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

.        কত রূপে হেরি তোমা বহুরূপী হে মহাসাগর,
দুঃখের আঁধার রাতে দীপ্তচূড় তরঙ্গে ভাস্বর |
পূর্ণিমার চন্দ্রিকায় করুণাক্ত আনন্দে উজ্জ্বল ,
.        সংগ্রামে ঝঞ্ঝার সাথে উদ্বেল উচ্ছল ;
.        বিগলিত মর্মের নীলিমা
মিশিয়া ব্যোমের অঙ্গে খুঁজিয়াছে অনন্তের সীমা  |
.        তোমার ঘটনাঘন জীবনের কথা-----
স্মরিয়া স্তম্ভিত কভু , কখন ও বা পাইয়াছি ব্যথা
সকলি ভুলিয়া গেছি, স্মরি যবে জীবন তোমার,
একটি নগণ্য তুচ্ছ চিত্র মনে জাগে বার বার |
দরিদ্র সংসারে তৈল , বাতি কোথা পাবে  ?
.        গৃহে তাই আলোর অভাবে
পথের আলোর পাশে পুঁথিখানি হাতে
পড়িছ তদগত চিত্তে দাঁড়াইয়া একা ফুটপাতে |
জনকোলাহলময় পাশে রাজপথ
নিনাদি চলিয়া যায় কত অশ্ব রথ |
.        রজনী ঘনায়
কার্ত্তিকে মুঠা মুঠা শ্যামা পোকা ঝরে তব গায়,
.        উড়িছে শলভকুল মাথার উপরে,
বাহ্যজ্ঞান-শূন্য তুমি পুঁথির অক্ষরে |
কত লোক যায় আসে, চাহিল কি কেহ অপলকে  ?
.        চিনিল কি মহামানবকে  ?
দেখিল কি সর্বংসহ হিমদৈন্য মাঝে
স্ফুলিঙ্গাবস্থায় বহ্নি এধাপেক্ষ’ হইয়া বিরাজে ?

.             *************************  

.                                                                                      
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
একটি ঘটনা
অমিয় চক্রবর্তী    
কবি অমিয় চক্রবর্তীর কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

কী হৈল , কী হৈল
সইলো সইলো
রুক্ষ্ণ চুল নিম্মজাত মেয়েদের মাথায়
ওরা দাঁড়িয়ে ঠায়
কেউ না কথা কৈল----
লুকিয়ে হেসে মরি আমরা
বাবুরা তো গেলেন চটে
বটে বটে
দেখব কেমন শক্ত চামড়া
বজ্রপাত
চটি-পায়ে ঐ ব্রাহ্মণকে করব চপেটাঘাত-----
সবার জাত মারল
বিদ্যার সাগর আহা দয়ার ভান্ড
ম্লেচ্ছের কান্ড
বিধবার বিয়ে দেয়া এর কম্ম
বলে নাস্তিক শাস্ত্র পড়ে পেয়েছে ঐ ধম্ম
সমাজটাকেই মারল ( নারল
বামুনে চন্ডালে ভাঙাতে ভেদ )
আগেই হয়েছে পুণ্য সতী-দাহের উচ্ছেদ
সইলো
দিনদুপুরে
চলো একটা ডুব দেই পুকুরে
উঠে চন্ডীমন্ডপে
একটা হত্তুকি দেবো পুরুৎকে জপে
এ কী মারীর হাওয়া বইল
সইলো সইলো ||

.       *************************  

.                                                                                      
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
চিরদীপ্যমান
প্রেমেন্দ্র মিত্র    
কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রর কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

স্তব্ধ বিস্ময়ে
তোমাকে আজ স্মরণ করি,
মহাকাল চক্রের পরমাশ্চর্য
অতিবিরল সেই আবির্ভাবকে,
মানব ইতিহাসের ধারা
যার পদাঙ্ক করে অনুসরণ,
যুগে যুগে মানবসত্তার বিবর্তন
যার জীবনদ্যুতি থেকে পায়
মৃত্যু-তরণ বেগ ও প্রেরণা |

আবির্ভাব তোমার অতর্কিত অভাবিত |
ইতিহাসের কোন গণনা তার হদিশ পায় না |
আমাদের ধন্য করতে
ইতিবৃত্তের কোন মহৎ ক্ষণ
.        তুমি খোঁজনি,
সময়ের স্রোত যেখানে উত্তাল
পৃথিবীতে মানব বিবর্তনের
তেমন কোনো কেন্দ্রবিন্দুও নাওনি বেছে |
বণিক বৃত্তির প্রসাদে সহসা স্ফীতকায়
পশ্চিমের লুব্ধ গ্রাসে শোষিত
নগন্য এক পলিমাটির দেশ
তুমি খুঁজে নিয়েছ তোমার পদার্পণের জন্য |
অন্ধ সংস্কারের জরত্বে পঙ্গু
সেই ভূমিখন্ডের পরম লজ্জার
একটি সময়সীমা করেছ নির্বাচন |
কিন্তু সমস্ত মানবেতিহাস
সার্থক করা সেই আবির্ভাব
মানব জন্মকেই এক নতুন মহিমায়
.        করেছে উত্তীর্ণ |
তুমি ত বিগত কালের নও
নও তুমি শুধু বর্তমানের |
বহুভাবী শতাব্দী পার হ’য়েও
তোমার উজ্জ্বল উপস্থিতি
অম্লান উদ্ ভাসনে থাকবে চিরদীপ্যমান |

.       *************************  

.                                                                                      
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
বিদ্যাসাগর
মনীশ ঘটক    
কবি মনীশ ঘটকের কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .     

জ্ঞানহবি সঞ্জীবিত পঞ্চপ্রদীপের
জ্যোতির্ময় রশ্মিপাতে অবিদ্যা তিমির
করি দূর, মূঢ় মূক বঙ্গ সন্তানের
কন্ঠে দিলে ভাষা তুমি হে ব্রাহ্মণ বীর |
সিংহসম দৃপ্ততেজা হে বঙ্গগৌরব
দেশ আজ তোমা চাহে |  আজিকে সেথায়
পূজার বেদীর পরে শিবার তান্ডব,
ক্লীব পূজারীর দল লুটে লাঞ্ছনায় |

সমাজের ক্লেদ গ্লানি কলুষ হরণে
যে শৌর্য উঠিল ঝলি কর্মে ও চেতনে
মহেশের মধ্যনেত্র সম অকস্মাৎ
জ্বলি ওঠো সেই শৌর্যে, হানো অপঘাত
পরধর্মী পরাশ্রয়ী বাঙালীর শিরে
মৃত্যুর অমৃত সিঞ্চি বাঁচাও জাতিরে |

.         *************************  

.                                                                                      
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
বকুল বৃক্ষের মত
সুশীল রায়    

যে জানে প্রকৃত তথ্য সে’ই শুধু জানে
কী জন্যে বকুল বৃক্ষ স্থান পায় ফুলের বাগানে
তার যে নক্ষত্রতুল্য জাদুগন্ধে ভরা ফুলগুলি  |
আমরা কুড়িয়ে নিয়ে সাজি ভরে তুলি  |
বিদ্যার সাগর বটে, সে সাগরে কত রত্ন আছে
তার খোঁজ করবার মতন যোগ্যতা কার কাছে
করি যে সন্ধান পাব কোনখানে তেমন ডুবুরি  |
তোমার সন্ধান জানা হল না তাইতো পুরোপুরি
যেটুকু জেনেছি তাই ঢের, তাই অশেষ অগাধ,
অতিরিক্ত জান্ বার নেই কোন সাধ |
এতটুকু  স্ফুলিঙ্গেই বিশ্বলোক আলো করা যায়  |
জেনেছি সে আলোকের তুমিই সহায়  |
কঠোর বজ্রের মত, কুসুমের মতন কোমল
বকুল বৃক্ষের মত, অটল দাঁড়িয়ে
দাও ফুলের সম্বল  |

.         *************************  

.                                                                                      
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর