বিজয় কেতন        
বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য

‘৯৫- এ ঘটে যাও           দুটি ঘটনা,
বিজ্ঞান ধর্ম্মে কত            টনা |
দেখিলাম, শুনিলাম,      লাম কিছু,
বিজ্ঞান ধাওয়া ক          স্কার পিছু |        

সেপ্টেম্বরের ২১ তা      ‘ ৯৫ সালে,
ধর্ম্মচক্রী ফেললো              বিস্ময়কর জালে |
হঠাৎ সেদিন শো              গনেশ খাচ্ছেন দুগ্ধ,
ষাঁড় খাচ্ছেন, শিব            ন, দেখে সবাই মুগ্ধ |

দেখতে দেখতে শো     গেল, সারা দেশের সাড়া,
পাশ্চাত্যের দেশগুলিতেও লাগলো বিষম নাড়া |
দুধের দাম এক রাতেতে দুশো টাকায় ওঠে,
দীর্ঘসারে ভক্তজনে দেবালয়ে ছোটে |

সংশয়ী আর যুক্তিবাদী সত্যটুকু খোঁজে,
ধর্মান্ধরা ব্যাখ্যা করে, যে যেমন বোঝে |
.          মুচি তাহার লৌহযন্ত্রে
.          দুধ খাওয়ালো বিনামন্ত্রে |
ধর্মান্ধদের যুক্তিটুকু এবার হ’ল নিঃস্ব,
অবাক হয়ে এই ঘটনা দেখলো সারা বিশ্ব |

সংসক্তি, আসক্তি আর কৈশিকত্ব,
এরই মাঝে লুকিয়ে আছে ঘটনাটার সত্য |
বন্ধ হ’ল অন্ধ ভাবে ছোটা ভ্রান্ত পথে,
সত্যের আজ জয় পতাকা উড়লো বিজয় রথে |

সেই বছরেই কালীপূজার মহানিশা শেষে,
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ এলো বঙ্গ দেশে |
‘গ্রহণ দেখা ঠিক হবে না’ কিছু বিজ্ঞ কহেন,
ধর্ম্ম নামে ভ্রান্ত পথে সদাই যারা রহেন |
আরও কিছু বিজ্ঞ কহেন ‘দৃষ্টি শক্তি যাবে
কোনো বাধা না মানিলে চক্ষু দুটি খাবে |’

অভয় বানী দিল আনি’  বিজ্ঞানীরা সবে,
তাঁদের প্রথায় দেখলে গ্রহণ, ক্ষতি নাহি হবে |
কৌতুহলী জনগণ মানি’ সে সব প্রথা,
পূর্ণগ্রাস দেখিবারে ছোটে হেথা হোথা |
কপি পেস্ট করা মিলনসাগর থেকে।
সার্থক হয় জীবন তাদের হেরি’ মহাদৃশ্য,
অজ্ঞ-বিজ্ঞ বাধা সব হইল অদৃশ্য |
তেত্রিশ দিন ব্যবধানে বড় দুটি ঘটনা
সত্যেরই হ’ল জয়, মিথ্যাই রট না  ||

.           ******************     
.                                                                                     
সুচিতে...   


মিলনসাগর
কবি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্যর কবিতা
যে কোন গানের উপর ক্লিক করলেই সেই গানটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
সুনামী         
বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য












কোথা তব বেদন আঘাত
প্রত্যাঘাত হ’য়ে উঠিল ফুঁসিয়া
.           বুঝিবার আগে
.           দিবসের পুরোভাগে
মহাঘাতে গেল যে ভাসিয়া
.                ইন্দোনেশিয়া |
.      সুমাত্রা তাহারই অঙ্গ
সেথা হতে উচ্ছ্বসিল
ধরাতলে
.      যে মহাতরঙ্গ মিলনসাগরবঙ্গভঙ্গ
.  মিলনসাগর বিভৎস করালরূপে,
মাল - ব্রহ্ম - শ্যাম - লঙ্কাসহ
ভারত ও আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে সে
.      মহাধ্বংস হানিল নিশ্চুপে |
মিলনসাগর.কম থেকে কপি করা কবিতা
ভূ-গর্ভস্থ লাভা ও গ্যাসের উল্লম্ব আঘাতে,
বাধিল সংঘর্ষ জলধিগর্ভের দুই পাতে |
দ্বীপগুলি সব কেহ বা ডুবিল,
.      জলোপারে উঠিল কেহ বা,
উভয়ের দূরত্ব কমিল
ও জমিল
.     নিশ্চিহ্ন হইল কেহ বা |
পার্থিব ঘূর্ণন গতি বাড়িল সামান্য
অহোরাত্র দৈর্ঘ্য তাহে কমিল নগণ্য |

তোমার আধার ঐ পাতের বিচলনে
.                    মহাক্ষুব্ধ হয়ে,
নস্যাৎ করিতে উপকূলভূমি
.         মহাবেগে ছোট তুমি |
মহাকাল মহাদেবের চরণচুমি |

.
হে মিলনসাগর হে মহাজলধি, মহাবোধী
আজ তুমি যত প্রাণ-ই নাও,
বহু সম্পদ ক্ষয় ক’রে যতই আঘাত দাও ;
.      এই কথাটুকু শুধু জেনে যাও,
অমৃতস্য পুত্র মোরা, হারিবার নয় ;
*
দূষণ-ভূষণ-পৃথ্বী        
বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য

দূষণ দূষণ দূষণ আজি, দূষণ ভরা দেশ |



অশিক্ষা আজ গ্রাম ভরেছে, রোগ এসেছে সঙ্গে |
কলকারখানা গাড়ীর ধোঁয়ায় বায়ু দূষণ ঘটে,
তারই সঙ্গে শব্দ দূষণ, চিত্ত দূষণও বটে |

বিজ্ঞানের উন্নতিতে শিল্প নগর হ’ল
উত্পাদনের সঙ্গে হাজার রোগের জন্ম হ’ল  |
কারখানার ধোঁয়ায় করে শ্বাসবায়ু গ্রাস,
মাল মেশিনের ধোঁয়া জলে বিশুদ্ধতা নাশ |
ঘড়্ ঘড়্ ঘড়্  দুষ্টশব্দে কর্ণবিদারণ,
ফুসফুসে আজ বিষ জমেছে মারণ রোগের কারণ |

পচাগলা শবদেহ বাহ্য কফ্ মূত্র
সবই পাবে নদীর জলে, গ্রাম্য রোগের সূত্র |
আজও কোথাও নদীর জলে পাক রন্ধন হয়,
পানীয় জল নদীর জলেই সম্বল হ’য়ে রয় |

অশিক্ষা আর                          তারা দেয় দোষ,
লাভের লোভে                            র এই রোষ,
.                               য় কারে দোষ |

অশিক্ষা আর
.         লাভে
দূষণমুক্ত ভূষণ
.         পথের

.         ******************     
.                                                                                     
সুচিতে...   


মিলনসাগর
*
*
গণপতির দুগ্ধপান        
বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য

.               আজও স্মরণে জাগে,
.     ঘটনাটি ঘটেছিল বছর কয়েক আগে |
সেদিন হঠাৎ শুনতে পেলুম
পোস্তা গিয়ে
.                গনেশ খাচ্ছেন দুগ্ধ,
শিব খাচ্ছেন, ষাঁড়ও খাচ্ছেন
.       
মিলনসাগর  শুনে সবাই মুগ্ধ |
কর্ণে কর্ণে বর্ণে বর্ণে খবর এলো ভেসে,
সবত্রই মূর্তি খাচ্ছে, খাচ্ছে সারাদেশে |
জনে জনে শুনছে ফোনে
সারা দেশের কোণে কোণে
.  
মিলনসাগর মাতাল হচ্ছে লোকে,
দেবমূর্তি আজকে কেন
দুগ্ধতৃষায় মত্ত হেন
.   
মিলনসাগর প্রশ্ন সবার মুখে |
উপছে পড়ছে দেবালয় ভক্তজনের সারিতে,
ধন্ধ খোঁচা লাগছে যত কৌতুহলীর নাড়ীতে |
এশিয়া -ইউরোপ - আমেরিকা
সর্বত্র নাকি যাচ্ছে দেখা
.               দুগ্ধ খাচ্ছেন গণপতি |
বুঝতে কেহ পারছেন না
কেন জানিনা
বাড়বে এতে লাভ কি ক্ষতি |
.  
মিলনসাগর দুগ্ধ খাচ্ছেন গণপতি |

আবাক করা এমন কান্ড
দেখতে দেখতে হ’ল প্রকান্ড |
লন্ড ভন্ড যুক্তিদন্ড
এ কি কান্ড !  এ কি কান্ড !!
গনেশের কি ইচ্ছা হতে
.
মিলনসাগর একটি রাতের রাজা ?
পূজায় তার কদর নাই
ব’লে কি তাই
হ’তে চান একটি রাতের রাজা ?

হায় হায় ভাই
সত্যিই তাই
.        ছিল দেব্ তার ভাগ্যে
মুচি তাহার লৌহযন্ত্রে
দুধ খাওয়ালো বিনামন্ত্রে
ভক্তজনের যুক্তি এবে
.
মিলনসাগর যেথায় যাক যাক্ গে |
এই ছিল তার ভাগ্যে !

দুগ্ধ খাচ্ছে সকল মূর্তি
চাবিও খাচ্ছে, ফোনও খাচ্ছে
দেখে বড়ই ফূর্তি !
কাহার ছিল ছলা কলা,
.            কে সে এই ধূর্তি
দুগ্ধ খাচ্ছেন নহে কেবল
.             দেবতারই মূর্তি !

পরের দিন বিজ্ঞান তার কথা কহিল,
ফুৎকারে সব বেলুন ফাটে
.             চুপটি রহিল----
ধূর্ত সে সব ধান্দাবাজ
চেতনাকে পিছে টানা যাদের একটি মাত্র কাজ,
.             চুপটি তারা আজ |
হাতেনাতে দেখিয়ে দিলো
.             দুগ্ধ পানের কলা |
পদার্থ বিদ্যার দুটি সূত্রেই
.             খেলো কানমলা |
তরলের অনুমধ্যে আছে আসক্তি
তরলে-কঠিনে হয় সংসক্তি |
সংসক্তি থেকে আসক্তি যদি হয় কম
কঠিনে তখন তরল ছোটে, থামে না একদম |
সরু এক নালীর মতো পথ ক’রে সে চলে,
তরলের এই গুণকে সবাই কৈশিকত্ব বলে |
আসক্তি আর সংসক্তি এই দুই গুণে,
দেবতারা সব দুধ খেয়েছে,
.  
মিলনসাগর  অবাক সবাই শুনে |
বিজ্ঞানের অগ্রগতি ছুটছে রকেট বেগে,
.          এমন যুগে
কে আসে
.          এই হুজুগে কে জাগে
.                     মেতেছে তেমন লোক
প্রমাণ সহ যুক্তি শুনে
আগাম বিপদ নিল গুণে
ধান্ধাবাজের দল
আজ ভাঙ্গলো তাদের কল |
আর স্বস্তি পেল দেশবাসী
বাড়লো তাদের বল |

স্বস্তিটুকু আশুলাভ,
.            আগাম দিনের ফল ?
অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে
ঘুরছে চক্রকল |
সেই চক্রকলে
পিষবে ব’লে
.            মৌলবাদীর দল,
ব’সে ব’সে ফন্দি আঁটে
বুদ্ধি রাখে গাঁটে গাঁটে
.            দেখায় ধর্মছল |
বিজ্ঞান তাই
করছে লড়াই,
.
মিলনসাগর ধন্ধ যাচ্ছে ঘুঁচে,
সাধারণেরা থাকুক বেঁচে
.             ভন্ডরা যাক মুছে |
আগামী দিনের গণপতি
.             করবে দুগ্ধপান
পাবে তথ্যে ঘেরা সত্যে ভরা
.             যুক্তিবাদীর জ্ঞান
.            করবে সত্য দুগ্ধ পান ||

.              ******************     
.                                                                                     
সুচিতে...   


মিলনসাগর
*

বাঙাল :  নদীর পারেই জন্ম নিল
.                  তোদের যত বরেণ্য
.            মধূকবি সাগর দাঁড়ি
.                  সে ও মোদের জন্য |
.            প্রফুল্ল -বিধান - জ্যোতির জন্য
.            বাংলা দেশ আজও ধন্য |
.            এবার তোরা বলবি কি ?
.            গাওয়া, না ডালডা ঘি !
.            এবার তোরা বলবি কি ?

ঘটী :   বিশ্বকবি মোদের দেশে
.          বিভূতি, কাজী এলেন শেষে |
.          আরও যদি কই বিশেষে
.          এবারও কি যাবি হেসে ?

বাঙাল : হাসবো না ত, কাঁদবো নাকি ?
.          জানতে তোদের আনেক বাকি !
.          বিশ্বকবির জমিদারী
.          শিলাইদহের মস্তবাড়ী |
.          বিভূতি যে বনগ্রামে
.          জেলা ছিল যশোর নামে |
.          কাজীর সখ্য কুমিল্লায়
.          ভগা, না, খোদা তাল্লায় ||

ঘটী  :    সান্ত্বনা তোর ঐ টুকুতে,
.          মানুষ ওরা যে ভাতেতে,
.          সে ত’ মোদের ঘটীর দেশ,
.          দুখের যে তোর নাইকো শেষ
.                           বাঙাল দেশ !
.          অকৃতজ্ঞ বাঙালী,
.          তাড়া খাওয়া যে কাঙালী,
.          বাঙাল তাহার নাম
.          নাইক’ দেশ, নাইক’ ধাম ||

বাঙাল  : বাঙালেরাই দেশের মাথা
.                 তোদের রাখেন মান,
.           বাঙাল বলিস তারে
.                 মহত্বের এই দান |
.                অথিতিরে এমন পূজিস্ ?
.                 কৃতঘ্ন যে তোরা,
.           মোদের মাথা, মোদের বাহু
.                 তোদের দেশে ভরা |
.                 কৃতঘ্ন যে তোরা  ||

ঘটী   :   হাঃ   হাঃ   হাঃ   হাঃ  হাঃ
.           তাড়া খেয়ে অতিথ্ সাজিস্
.           আপন ভুলে ভালই আছিস্ |
.           তাইত’ দিই বাহা
.           হাঃ   হাঃ   হাঃ  হাঃ  হাঃ !

বাঙাল :  পূর্বপাকের পাক করা সব
.                হরেক রকম রান্না,
.           রাঁধতে তোরা জানিসও না
.               দেখে যে পায় কান্না |
.                মোদের সাথে মিশেই তবে
.                 শিখলি হরেক রান্না ||

ঘটী   :  এ কথা যে বল্ লি
.          নিজে নিজেই জ্বল্ লি |
.          ভিখারী আর কাঙাল হ’লে
.          বনের শাক আর কচুর ওলে
.                   ভরাস তোদের পেট্ |
.                            মাথা তোদের হেঁট্ ||

বাঙাল : ঘটীর মধ্যেই নাড়াচাড়া
.           তোদের গামলা হাঁড়ি কই ?
.           বাসীমাছ খাইনে মোরা
.           খাই জ্যান্ত  কই |
.               ‘ময়দা হচ্ছে’ ব’লে তোরা
.                         ধরাস আটার রুটী,
.           ঘি-ভাজা হয় ডালডাভাজা
.                        নাইক’ তোদের জুটি |
.                                    ময়দা হ’ল আটার রুটী !!

ঘটী :  কথা তোদের শুনে,
.         বিপদ বড়ই গুনে
.                লাফায় মরা কই !
.         হেথায় এসে খাচ্ছিস ত’
.            সেই মরা কই !
.         তোরা ত’ চূণকে বলিস
.                পানের দই |
.         রক্তবীজের বংশ তোরা
.                মোদের কোথায় ঠাঁই ?
.         মোদের আপন দেশেই
.                নেই ক’ ঠাঁই,
.         পাড়ায় পাড়ায় দখল ক’রে
.         বাঙালেরা কলোনী গড়ে |
.         সকাল সন্ধ্যা ঝগড়া চলে,
.         কিচির মিচির তালে তালে |
.                 এই না হ’লে বাঙাল বলে ?
.         তাইত’ বলি দিবারাত্র,
.         সূর্য্যদেব ওঠামাত্র
.                 যা ছেড়ে এই দেশ |
.         দেখব’ তোদের মূরদ কেমন
.                আমরা রব বেশ |
.                যা--ছেড়ে এই দেশ |

.            [   বাঙালী- র প্রবেশ  ]

বাঙালী  : তোরা কেন করিস গোল ?
সকল বাধাই মোরা করিব গো

আজিকার মহাক্ষতি আমাদের
.         মানিব না হার,  লব ম
তোমার রুদ্ররূপ আসিবার আ
গোপন লক্ষণ গুলি চিনিব’ পুরো
তারপরে তাহা জানাব’ জনে জ
.               পৃথিবীর কোণে
সকলের সাথে রহিবে নিবিড় যো
তব রুদ্র নৃত্য মোরা করিব উ
শিখাবো সকলেরে বাঁচিবার প
উড়াবো বিজয়ধ্বজা, ছুটাব বি

এ নহে আস্ফালন, বিপক্ষে তো
তোমারেই আদর্শ করি’ শক্তি বাড়াবার
.        মোদের এ একান্ত সাধনা |
তোমার আঘাত তাই বিত্ত করিয়া
.        মঙ্গল শক্তিরে মোরা করি আরাধনা ||

.              ******************     
.                                                                                     
সুচিতে...   


মিলনসাগর
বাঙাল - ঘটী         
বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য

.            ভালা ভালা ভালা ল্যাঠা


.              ******************     
.                                                                                     
সুচিতে...   


মিলনসাগর