কবি বাসুদেব ঘোষ এর বৈষ্ণব পদাবলী |
আজুকার স্বপনকথা, শুন গো মালিনী! সই!. আজিকার স্বপনের কথা শুনলো মালিনী সই আজিকার স্বপনের কথা শুনো লো মালিনী আজিকার সপনের কথা শুনলো মাল্যানি সই ভণিতা বাসুদেব ঘোষ কবি বাসুদেব ঘোষ এই পদটি নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সাল নাগাদ বিরচিত এবং ৪২৬ গৌরাব্দে (১৯১৩ খৃষ্টাব্দ), রামদেব মিশ্র দ্বারা প্রকাশিত “ভক্তিরত্নাকর” গ্রন্থ, ৯৮২-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ গীতে যখা - কামোদ॥ আজুকার স্বপনকথা, শুন গো মালিনী! সই!. নিমাই আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিণাতে দাঁড়াইয়া, গৃহ পানে চা’য়া চা’য়া, মা বৈলা ডাকিয়া ছিল মোরে॥ গৃহেতে শয়নে ছিনু, অচেতনে বারি হনু, নিমাইর গলার সাড়া পা’য়া @। মায়ের চরণ ধূলি, নিল নিমাই শিরে তুলি, মা! বোলে কাঁদিয়া কাঁদিয়া॥ “তোর প্রেমের বন্দী হৈয়া, বেড়াইনু ভরমিয়া. রহিতে নারিনু নীলাচলে। তোরে দেখিবার তরে, আইনু নদীয়াপুরে” কাঁদিতে কাঁদিতে ইহা বোলে॥ আইস মোর বাছা বুলি, হিয়ার উপরে তুলি, হেন বেলে নিদ দূরে গেল। পুন না দেখিয়া তারে, পরাণ কেমন করে, কাঁদিয়া রজনী পোহাইল॥ কাঁদিতে কাঁদিতে শচী, মুরছি পড়ল ক্ষিতি, মালিনী কাঁদয়ে উভরায়। কি বলিব হায় হায়, এ দুখ না সহে গায়, বাসু কেনে মরিয়া না যায়॥ @ - পা’য়া। গ্রন্থে সম্ভবত মুদ্রণ প্রমাদের জন্য “পা,য়া” দেওয়া রয়েছে। আমরা “পা’য়া” করে দিয়েছি। এই পদটি আনুমানিক ১৭৫০ সালে, বৈষ্ণবদাস (গোকুলানন্দ সেন) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের ১৩৩০ বঙ্গাব্দের (১৯২৩ সাল) ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২১শপল্লব, শ্রীগৌরাঙ্গের সন্ন্যাস ইত্যাদি, পদসংখ্যা ২২৭০। এটি নিমানন্দদাসের পদরসসার পুথির ২৩৭৪ সংখ্যক পদ। ॥ বিভাষ॥ আজিকার স্বপনের কথা শুন গো মালিনী সই নিমাঞি আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহ পানে চাইয়া চাইয়া মা বলিয়া ডাকিল সে আমারে॥ ঘরেতে শুতিয়াছিলাম অচেতনে বারাইলাম নিমাঞির গলার সাড়া পাইয়া। আমার চরণ-ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুন কান্দে গলায় ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে দেখিবার তরে আইলাম নদীয়া পুরে কান্দিতে কান্দিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার মাঝারে তুলি হেন কালে নিদ্রা-ভঙ্গ হৈল। পুন না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কান্দিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কান্দে হিয়া থির নাহি বান্ধে কি কহিব কহ না উপায়। বাসুদেব ঘোষে কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি উনিশ শতকে প্রকাশিত, নিমানন্দ দাস সংকলিত “পদরসসার” পুথির ২৩৭৪-পদসংখ্যায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। আমরা পুথিটি হাতে পাইনি। সতীশচন্দ্র রায়ের পদকল্পতরুর টীকা-পাঠান্তর দেখে এখানে উপস্থাপন করা হলো। ॥ বিভাষ॥ আজিকার স্বপনের কথা শুন গো মালিনী সই নিমাঞি আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহ পানে চাইয়া চাইয়া মা বলিয়া ডাকিল সে আমারে॥ ঘরেতে শুতিয়াছিলাম অচেতনে বাহির হইলাম নিমাঞির গলার সাড়া পাইয়া। আমার চরণ-ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুন কান্দে গলায় ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে সে দেখিবারে আইলাম নদীয়া পুরে কান্দিতে কান্দিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার উপরে তুলি হেন কালে নিদ্রা-ভঙ্গ হৈল। পুন না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কান্দিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কান্দে হিয়া থির নাহি বান্ধে কি কহিব কহ না উপায়। বাসুদেব ঘোষে কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত, মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” ২য় সংস্করণ (১ম সংস্করণ ১৯০২), ২৫১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ পাহিড়া॥ আজিকার স্বপনের কথা শুন গো মালিনী সই নিমাই আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহ পানে নেহারিয়া মা বলিয়া ডাকিল আমারে॥ ঘরেতে শুইয়া ছিলাম অচেতনে বাহির হৈলাম নিমাইর গলার সাড়া পাইয়া। আমার চরণের ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুনঃ কাঁদে গলাটী ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে দেখিবার তরে আইলাম নৈদ্যাপুরে কাঁদিতে কাঁদিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার মাঝারে তুলি হেন কালে নিদ্রাভঙ্গ হৈল। পুনঃ না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কাঁদিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কাঁদে হিয়া থির নাহি বাঁধে কি করিব কহ গো উপায়। বাসুদেব ঘোষে কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি ১৯৩৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত “বৈষ্ণব পদাবলী” নামক বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন, ১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। গৌরাঙ্গ-বিষয়ক আজিকার স্বপনের কথা শুন গো মালিনী সই নিমাই আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহপানে নেহারিয়া মা বলিয়া ডাকিল আমারে॥ ঘরেতে শুতিয়াছিলাম অচেতনে বাহির হৈলাম নিমাইয়ের গলার সাড়া পাঞা। আমার চরণের ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুন কাঁদে গলায় ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে দেখিবার তরে আইলাম নৈদীয়াপুরে কাঁদিতে কাঁদিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার মাঝারে তুলি হেন কালে নিদ্রাভঙ্গ হৈল। পুন না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কাঁদিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কাঁদে হিয়া থির নাহি বাঁধে কি করিব কহ না উপায়। বাসুদেব ঘোষে কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৭৪-পৃষ্ঠায় ভণিতায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। জননীর স্বপ্নে গৌরাঙ্গ দর্শন ॥ পাহিড়া॥ আজিকার স্বপনের কথা শুনো লো মালিনী নিমাই আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহ পানে নেহারিয়া মা বলিয়া ডাকিল আমারে॥ ঘরেতে শুইয়া ছিলাম অচেতনে বাহির হৈলাম নিমাইর গলার সাড়া পাইয়া। আমার চরণের ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুনঃ কাঁদে গলাটি ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে দেখিবার তরে আইলাম নৈদ্যাপুরে কাঁদিতে কাঁদিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার মাঝারে তুলি হেন কালে নিদ্রাভঙ্গ হৈল। পুনঃ না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কাঁদিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কাঁদে হিয়া থির নাহি বাঁধে কি করিব কহ গো উপায়। বাসুদেব ঘোষে কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি ১৯৫২ সালে প্রকাশিত খগেন্দ্র নাথ মিত্র, সুকুমার সেন, বিশ্বপতি চৌধুরী, শ্যামাপদ চক্রবর্তী সম্পাদিত “বৈষ্ণব পদাবলী (চয়ন)”. ১১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওযা রয়েছে। আজিকার স্বপনের কথা শুনলো মালিনী সই নিমাই আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহপানে নেহারিয়া মা বলিয়া ডাকিল আমারে॥ ঘরেতে শুতিয়াছিলাম অচেতনে বাহির হৈলাম নিমাইয়ের গলার সাড়া পাঞা। আমার চরণের ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুন কাঁদে গলায় ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে দেখিবার তরে আইলাম নদীয়া পুরে কাঁদিতে কাঁদিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার মাঝারে তুলি হেন কালে নিদ্রাভঙ্গ হৈল। পুন না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কাঁদিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কাঁদে হিয়া থির নাহি বাঁধে কি কহিব কহ না উপায়। বাসুদেব ঘোষে কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্র সম্পাদিত মহাজন পদাবলী “শ্রীপদামৃতমাধুরী” ৪র্থ খণ্ড, ৪৬৯-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীশচীমাতার খেদ। ॥ বিভাস - একতালা॥ আজিকার স্বপনের কথা শুনলো মালিনী সই নিমাঞি আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে দাঁড়াইয়া গৃহপানে চাইয়া চাইয়া মা বলিয়া ডাকিল সে মোরে॥ ঘরেতে শুতিয়াছিলাম অচেতনে বারাইলাম নিমাঞির গলার সাড়া পাইয়া। আমার চরণ-ধূলি নিল নিমাই শিরে তুলি পুন কান্দে গলায় ধরিয়া॥ তোমার প্রেমের বশে ফিরি আমি দেশে দেশে রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোমারে দেখিবার তরে আইলাম নদীয়াপুরে কান্দিতে কান্দিতে ইহা বলে॥ আইস মোর বাছা বলি হিয়ার মাঝারে তুলি হেনকালে নিদ্রাভঙ্গ হইল। পুন না দেখিয়া তারে পরাণ কেমন করে কান্দিয়া রজনী পোহাইল॥ সেই হৈতে প্রাণ কান্দে হিয়া থির নাহি বান্ধে কি করিব কহ না উপায়। বাসুদেব ঘোষ কয় গৌরাঙ্গ তোমারি হয় নহিলে কি সদা দেখ তায়॥ এই পদটি ১৯৯২ সালে প্রকাশিত, ডঃ চিত্রা রায়ের, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচ.ডি. কলা (বাংলা) উপাধির জন্য প্রদত্ত গবেষণা নিবন্ধ (সৌজন্যে শোধগঙ্গা ওয়েবসাইট, https://shodhganga.inflibnet.ac.in ) “বৈষ্ণব সংস্কৃতি ও সাহিত্যে গোবিন্দ, মাধব ও বাসুদেব ঘোষ”, ৭ম অধ্যায়, বাসুঘোষের পদাবলী সংকলন, ৬৬৭-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ বিভাষ রাগ॥ আজিকার সপনের কথা শুনলো মাল্যানি সই নিমাই আসিয়াছিল ঘরে। আঙ্গিনাতে ডাড়াইয়া গৃহ পানে চাঞা চাঞা মা বলি ডাকিয়াছিল মোরে॥ ঘরেতে শুয়্যাছিলাম অচেতনে বাব়্যাইলাম নিমায়ের গলার সাড়া পাঞা। আমার চরণ লয়্যা আপন মস্তকে দিয়্যা কান্দে নিমাই মোর মুখ চাঞা॥ তোর প্রেমে বন্দি হয়্যা দেশে দেশে ভরমিয়া রহিতে নারিলাম নীলাচলে। তোরে দেখিবার তরে আইল্যাম নদ্যাপুরে কান্দিতে কান্দিতে ইহা বলে॥ সচেতন হইয়া দেখি নিমাই বলিয়া ডাকি পুন নিমাই না দেখিয়ে আর। পুন করি হায় হায় এ দুখ কি সহা জায় বাসু ঘোষ পড়িলা পাথার॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় কি লাগিয়া দণ্ডধরি অরুণ বসন পরি ভণিতা বাসু ঘোষ কবি বাসুদেব ঘোষ আনুমানিক ১৭৫০ সালে, বৈষ্ণবদাস (গোকুলানন্দ সেন) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের ১৩৩০ বঙ্গাব্দের (১৯২৩ সাল) ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২১শপল্লব, শ্রীগৌরাঙ্গের সন্ন্যাস ইত্যাদি, পদসংখ্যা ২২২৯। এটি নিমানন্দদাসের পদরসসার পুথির ২৩৩৪ সংখ্যক পদ। ॥ ভাটিয়ারি॥ কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ-চাঁদে রাধা রাধা বলি কান্দে কি লাগিয়া ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চরায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাই ফিরে তমু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি লাগি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরমে বেথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মুরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত, মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” ২য় সংস্করণ (১ম সংস্করণ ১৯০২), ২৪২-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ভাটিয়ারি॥ কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখচাঁদে রাধা রাধা বলি কাঁদে কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিবে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাঞা ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি লাগি ত্যজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে খরমে @ ব্যথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবা নিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মূরছিয়া॥ @ - খরমে - গ্রন্থে খরমে দেওয়া রয়েছে। অন্যান্য গ্রন্থে মরমে রয়েছে। এটা মুদ্রণ-প্রমাদ হতে পারে। এই পদটি ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত, মহানামশুক নবদ্বীপচন্দ্র ঘোষ সম্পাদিত পদাবলী সংকলন শ্রীশ্রীগৌরপদরত্নমালা, ৭৫-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে পদটি “কি লাগিয়া দণ্ড ধরে” শিরোনামের পদের প্রথম দুটি পংক্তি বাদ দিয়ে তার পরে শুরু হচ্ছে। তাই আমরা এটিকে ভিন্ন পদ বলে ধরলাম না। ॥ বরাড়ী - একতালী॥ শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জীয়ে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা, মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত ঘরে, বিধাতা বুঝাই ফিরে, তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন, রমণী ছাড়িল কেন, কি লাগি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুঃখের কথা, কহিব মরম ব্যথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি, বিরহে আকুল প্রাণী, বাসু ঘোষে পড়ে মূরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৩৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত “বৈষ্ণব পদাবলী” নামক বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন, ৩-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ-বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ-চাঁদে রাধা রাধা বলি কাঁদে কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও-দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত-ঘরে বিধাতা বুঝাইয়া ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি লাগি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরম ব্যথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মুরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৬৮-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীগৌরাঙ্গের সন্ন্যাস লীলা ॥ ভাটিয়ারি॥ কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখচাঁদে রাধা রাধা বলি কাঁদে কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জীবে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাঞা ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি লাগি ত্যজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরমে ব্যথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবা নিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মূরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৫২ সালে প্রকাশিত খগেন্দ্র নাথ মিত্র, সুকুমার সেন, বিশ্বপতি চৌধুরী, শ্যামাপদ চক্রবর্তী সম্পাদিত “বৈষ্ণব পদাবলী (চয়ন)”. ৮-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওযা রয়েছে। কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ-চাঁদে রাধা রাধা বলি কাঁদে কি লাগিয়া ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত-ঘরে বিধাতা বুঝাইয়া ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি লাগি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরম-ব্যথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মুরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত, সতী ঘোষ সম্পাদিত “প্রত্যক্ষদর্শীর কাব্যে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য”, ১১২-পৃষ্ঠায় ভণিতাহীন রূপে দেওয়া রয়েছে। কি লাগিয়া দণ্ডধরি অরুণ বসন পরি কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ চান্দে রাধাকৃষ্ণ বলি কান্দে কি লাগি ছাড়িল গৌর দেশ॥ শ্রীবাসের উভরায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে নয়ানে ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের শেল হৈল মনে॥ সকল মোহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাইয়া ফিরে তবুত কার না হৈল দেখা। জ্বলন্ত অনল হেন ছাড়িল রমণী কেন কি লাগি ছাড়িল তার লেহা॥ এই পদটি ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্র সম্পাদিত মহাজন পদাবলী “শ্রীপদামৃতমাধুরী” ৪র্থ খণ্ড, ৪৬০-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ভাটিয়ারী - দশকুশী॥ কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ চাঁদে রাধা রাধা বলি কান্দে কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চরায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাই ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি জানি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরমে বেথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মুরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত, দেবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বৈষ্ণব পদসঙ্কলন”, ৩১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ-চান্দে রাধা রাধা বলি কান্দে কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চ রায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে তপতধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাইয়া ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি লাগি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরমে বেথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মুরছিয়া॥ এই পদটি ১৯৯২ সালে প্রকাশিত, ডঃ চিত্রা রায়ের, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচ.ডি. কলা (বাংলা) উপাধির জন্য প্রদত্ত গবেষণা নিবন্ধ (সৌজন্যে শোধগঙ্গা ওয়েবসাইট, https://shodhganga.inflibnet.ac.in ) “বৈষ্ণব সংস্কৃতি ও সাহিত্যে গোবিন্দ, মাধব ও বাসুদেব ঘোষ”, ৭ম অধ্যায়, বাসুঘোষের পদাবলী সংকলন, ৬৩৩-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ভাটিয়ারী॥ কি লাগিয়া দণ্ড ধরে অরুণ বসন পরে কি লাগিয়া মুড়াইল কেশ। কি লাগিয়া মুখ চাঁদে রাধা রাধা বলি কান্দে কি লাগি ছাড়িল নিজ দেশ॥ শ্রীবাসের উচ্চরায় পাষাণ মিলাঞা যায় গদাধর না জিয়ে পরাণে। বহিছে তপত ধারা যেন মন্দাকিনী পারা মুকুন্দের ও দুই নয়ানে॥ সকল মোহান্ত ঘরে বিধাতা বুঝাই ফিরে তবু স্থির নাহি হয় কেহ। জ্বলন্ত অনল হেন রমণী ছাড়িল কেন কি জানি তেজিল তার লেহ॥ কি কব দুখের কথা কহিতে মরম বেথা না দেখি বিদরে মোর হিয়া। দিবানিশি নাহি জানি বিরহে আকুল প্রাণী বাসু ঘোষ পড়ে মুরছিয়া॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি সুধা খাটে দিল হাত বজ্র পড়িল মাথাত শূন্য খাটে দিল হাত বজ্র পড়িল মাথাত ভণিতা বাসু / বাসু ঘোষ কবি বাসুদেব ঘোষ আনুমানিক ১৭৫০ সালে, বৈষ্ণবদাস (গোকুলানন্দ সেন) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের ১৩৩০ বঙ্গাব্দের (১৯২৩ সাল) ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২১শপল্লব, শ্রীগৌরাঙ্গের সন্ন্যাস ইত্যাদি, পদসংখ্যা ২২২১। এটি নিমানন্দদাসের পদরসসার পুথির ২৩২৬ সংখ্যক পদ। ॥ বিভাষ করুণ॥ শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন-মন্দিরে ছিলা নিশাভাগে কোথা গেলা মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে শুনিয়া উঠিলা শচী মাতা। আউদড়-কেশে ধায় বসন না রহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূ সাথে কান্দিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাঞি বলিয়া॥ শুনিয়া নদীয়ার লোকে কান্দে উচ্চস্বরে শোকে যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে যায় দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে কোথা॥ সে বলে দেখ্যাছি পথে কেহো তা নাহিক সাথে কাঞ্চননগর-পথে ধায়। কহে বাসু ঘোষ ভাষা শচীর এমন দশা পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত, মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” ২য় সংস্করণ (১ম সংস্করণ ১৯০২), ২৪০-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। এই পদের প্রথম ২টি ভিন্ন পংক্তি হলেও পরবর্তী পদ কিছু পাঠান্তর সহ একই রকম। ॥ বিভাস বা করুণ॥ সুধা খাটে দিল হাত বজ্র পড়িল মাথাত বুঝি বিধি মোরে বিড়ম্বিল। করুণা করিয়া কান্দে কেশবেশ নাহি বান্ধে শচীর মন্দির কাছে গেল॥ শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের কাছে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়নমন্দিরে ছিল নিশা অন্তে কোথা গেল মোর মুণ্ডে বজর পড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয় মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে শুনিয়া উঠিল শচীমাতা। আলু থালু কেশে যায় বসন না বহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঁই উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধু সাথে কান্দিয়া কান্দিয়া পথে ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ তা শুনি নদীয়ার লোকে কাঁদে উচ্চৈঃস্বরে শোকে যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে ধায় দশ জন পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখেছ যেতে কোথা॥ সে বলে দেখেছি যেতে আর কেহ নাহি সাথে কাঞ্চন নগরের পথে ধায়। বাসু কহে আহা মরি আমার শ্রীগৌর হরি পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-মালা”, ৪৬০-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ বিভাস॥ শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন মন্দিরে ছিলা নিশা কালে কোথা গেলা মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে শুনিয়া উঠিলা শচীমাতা। আয়ুদর কেশে ধায় বসন না রহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিত জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূ সাথে কান্দিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ শুনিয়া নদিয়ার লোক কান্দে উচ্চস্বরে শোক যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে যায় দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে কোথা॥ সে বলে দেখেছি পথে কেহত তা নাহিক সাথে কাঞ্চন নগর পথে ধায়। কহে বাসু ঘোষ ভাষা শচীর এমন দশা পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত, মহানামশুক নবদ্বীপচন্দ্র ঘোষ সম্পাদিত পদাবলী সংকলন শ্রীশ্রীগৌরপদরত্নমালা, ৫৭-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ কেদার - একতালী॥ শচীর মন্দিরে আসি, দুয়ারের পাশে বসি, ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন মন্দিরে ছিলা, নিশিভাগে কোথা গেলা, মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে, নিদ্রা নাহি দুনয়নে, শুনিয়া উঠিলা শচী মাতা। আউদড় কেশে ধায়, বসন না রহে গায়, শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি, দেখিলেন ইতি উতি, কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূ সাথে, কাঁদিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ শুনিয়া নদিয়ার লোকে, কাঁদে উচ্চৈঃস্বরে শোকে, যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে যায়, দশজনে পুছে তায়, গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে কোথা॥ যে বলে দেখেছি পথে, কেহতো নাহিক সাথে, কাঞ্চন নগর পথে ধায়। কহে বাসু ঘোষ ভাষা, শচীর এমন দশা, পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “পদামৃত লহরী”, ১৮৩-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ রাগিণী বিভাষ - তাল দশকুশি॥ শচীর মন্দিরে আসি, দুয়ারের পাশে বসি, ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়নমন্দিরে ছিলা, নিশাভাগে কোথা গেলা, মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে, নিদ্রা নাহি দুনয়নে, শুনিয়া উঠিলা শচীমাতা। আউদর কেশে ধায়, বসন নাহিক গায়, শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি, দেখিলেন ইতি উতি, কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূর সাথে, কান্দিতে কান্দিতে পথে, ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ শুনি নদিয়ার লোকে, কান্দে উচ্চ স্বরে শোকে, যারে তারে পুছয়ে বারতা। একজন পথে যায়, দশজন পুছে তায়, গৌরাঙ্গ দেখেছ যেতে কোথা॥ সে বলে দেখেছি পথে, কেহত নাহিক সাথে, কাঞ্চন নগর পথে ধায়। কহে বাসুঘোষ ভাষা, শচীর এমন দশা, পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৪০ সালে প্রকাশিত, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত “বিদ্যাপতি চণ্ডীদাস ও অন্যান্য বৈষ্ণব মহাজন গীতিকা”, ১০-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শিশু গৌরাঙ্গ সুধা-খাটে দিল হাত, বজ্র পড়িল মাথাত, বুঝি বিধি মোরে বিড়ম্বিল। করুণা করিয়া কান্দে, কেশ বেশ নাহি বান্ধে, শচীর মন্দির-কাছে গেল॥ শচীর মন্দিরে আসি’, দুয়ারের কাছে বসি’ ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন-মন্দিরে ছিল, নিশা-অন্তে কোথা গেল মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয় মনে, নিদ্রা নাহি দু’নয়নে, শুনিয়া উঠিল শচীমাতা। আলু থালু কেশে যায়, বসন না বহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঁই উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধু সাথে কান্দিয়া কান্দিয়া পথে ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ তা শুনি’ নদীয়ার লোকে কান্দে উচ্চৈঃস্বরে শোকে, যারে তারে পুছেন বারতা। একজনে পথে ধায়, দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখেছ যেতে কোথা॥ সে বলে---দেখেছি যেতে আর কেহ নাহি সাথে, কাঞ্চননগরের পথে ধায়। বাসু কহে---আহা মরি আমার শ্রীগৌরহরি পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৬৬-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীগৌরাঙ্গের সন্ন্যাস লীলা ॥ বিভাস বা করুণ॥ শূন্য খাটে দিল হাত বজ্র পড়িল মাথাত বুঝি বিধি মোরে বিড়ম্বিল। করুণা করিয়া কান্দে কেশবেশ নাহি বান্ধে শচীর মন্দির কাছে গেল॥ শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের কাছে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়নমন্দিরে ছিল নিশা অন্তে কোথা গেল মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয় মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে শুনিয়া উঠিল শচীমাতা। আলু থালু কেশে যায় বসন না বহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঁই উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধু সাথে কান্দিয়া কান্দিয়া পথে ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ তা শুনি নদীয়ার লোকে কাঁদে উচ্চৈস্বরে শোকে যারে তারে পুছয়ে বারতা। একজন পথে ধায় দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখেছ যেতে কোথা॥ সে বলে দেখেছি যেতে আর কেহ নাহি সাথে কাঞ্চন নগরের পথে ধায়। বাসু কহে আহা মরি আমার শ্রীগৌর হরি পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্র সম্পাদিত মহাজন পদাবলী “শ্রীপদামৃতমাধুরী” ৪র্থ খণ্ড, ৪৫৭-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ করুণ বরাড়ী - একতালা॥ শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন-মন্দিরে ছিলা নিশাভাগে কোথা গেলা মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে শুনিয়া উঠিলা শচী মাতা। আউদড়-কেশে ধায় বসন না রহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূ সাথে কান্দিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাঞি বলিয়া॥ শুনিয়া নদীয়ার লোকে কান্দে উচ্চস্বরে শোকে যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে যায় দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে কোথা॥ সে বলে দেখ্যাছি পথে কেহো তা নাহিক সাথে কাঞ্চন নগর পথে ধায়। কহে বাসু ঘোষ ভাষা শচীর এমন দশা পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত, সতী ঘোষ সম্পাদিত “প্রত্যক্ষদর্শীর কাব্যে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য”, ১০৮-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন মন্দিরে ছিল নিশা ভাগে কোথা গেল মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে সুনিঞা বধুর মুখে কথা। আলু থালু কেশে ধায় বসন না দেয় গায় তুরিতে ধাইল শচীমাতা॥ শীঘ্র করি জ্বালি বাতি খুঁজিলেন ইতিউতি গৌরাঙ্গের উদ্দেশ না পাঞা। বিষ্ণুপ্রিয়ার ধরি হাথে কান্দিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাই বলিঞা॥ তা শুনিয়া নদীয়ার লোকে কান্দে উচ্চস্বর মুখে যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে ধায় শচীমাতা পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে এথা॥ সে কহে দেখ্যাছি যাইতে জনৈক সন্ন্যাসী সাথে কাঞ্চন নগর মুখে ধায়। সন্ন্যাসীর করে ধরি তোমার নিমাই বলে হরি দ্বিতীয় বসন নাহি গায়॥ বাসু কহে আহা মরি তোমার গৈরাঙ্গ হরি পাছে গিয়া মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত সুকুমার সেন সম্পাদিত “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৬১-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন-মন্দিরে ছিলা নিশাভাগে কোথা গেলা মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে নিদ্রা নাহি দু-নয়নে শুনিয়া উঠিলা শচীমাতা। আউদড়-কেশে ধায় বসন না রহে গায় শুনিয়া বধূর মুখে কথা॥ তুরিতে জালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূ সাথে কান্দিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাই বলিয়া॥ শুনিয়া নদিয়া-লোকে কান্দে উচ্চস্বরে শোকে যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে যায় দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে কোথা॥ সে বলে দেখ্যাছি পথে কেহো তা নাহিক সাথে কাঞ্চননগর পথে ধায়। কহে বাসু-ঘোষ ভাষা শচীর এমন দশা পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ এই পদটি ১৯৯২ সালে প্রকাশিত, ডঃ চিত্রা রায়ের, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচ.ডি. কলা (বাংলা) উপাধির জন্য প্রদত্ত গবেষণা নিবন্ধ (সৌজন্যে শোধগঙ্গা ওয়েবসাইট, https://shodhganga.inflibnet.ac.in ) “বৈষ্ণব সংস্কৃতি ও সাহিত্যে গোবিন্দ, মাধব ও বাসুদেব ঘোষ”, ৭ম অধ্যায়, বাসুঘোষের পদাবলী সংকলন, ৬২৮-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ বিভাষ করুণ॥ শচীর মন্দিরে আসি দুয়ারের পাশে বসি ধীরে ধীরে কহে বিষ্ণুপ্রিয়া। শয়ন মন্দিরে ছিলা নিশাভাগে কোথা গেলা মোর মুণ্ডে বজর পাড়িয়া॥ গৌরাঙ্গ জাগয়ে মনে নিদ্রা নাহি দুনয়নে শুনিয়া উঠিলা সচিমাতা। আউদড়-কেশে ধায় বসন না রহে গায় শুনিয়া বধূর মুখের কথা॥ তুরিতে জ্বালিয়া বাতি দেখিলেন ইতি উতি কোন ঠাঞি উদ্দেশ না পাইয়া। বিষ্ণুপ্রিয়া বধূ সাথে কান্দিতে কান্দিতে পথে ডাকে শচী নিমাঞি বলিয়া॥ শুনিয়া নদীয়ার লোকে কান্দে উচ্চস্বরে শোকে যারে তারে পুছেন বারতা। একজন পথে যায় দশজনে পুছে তায় গৌরাঙ্গ দেখ্যাছ যাইতে কোথা॥ সে বলে দেখ্যাছি পথে কেহো ত’ নাহিক সাথে কাঞ্চননগর পথে ধায়। কহে বাসু ঘোষ ভাষা শচীর এমন দশা পাছে জানি মস্তক মুড়ায়॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
নিরুপম গোরা তনু কষিল কাঞ্চন জনু নিরমল গোরা তনু কষিল কাঞ্চন জনু নিরমল গৌর তনু কষিত কাঞ্চন জনু ভণিতা বাসুদেব ঘোষ কবি বাসুদেব ঘোষ এই পদটি নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম) দ্বারা আনুমানিক ১৭২৫ সালে সংকলিত ও বিরোচিত এবং ৪৬২ গৌরাব্দে (১৯৪৯), হরিদাস দাস দ্বারা সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীগীতচন্দ্রোদয় (পূর্বরাগ)”, ৭২- পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ পুনঃ সিন্ধুড়া॥ নিরুপম গোরা তনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে ভৈগেল ভোর। ভাঙ-ভুজঙ্গমে দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি! যব হাম পেখলু গোরা। আকুল দীগ্ বিদিগ নাহি পাইয়ে মদন-মদালসে ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত নয়নে তেরছ অবলোকনে বরিষে কুসুমশর সাধে। জিবইতে জীবনে থেহ নাহি পায়লু ডুবলু গঙ্গ অগাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ জানসি যদি সো সব করবি উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে কি কহব এ সখি গোরা বিনু প্রাণ মোর যায়॥ এই পদটি আনুমানিক ১৭৫০ সালে, বৈষ্ণবদাস (গোকুলানন্দ সেন) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের ১৩২২ বঙ্গাব্দের (১৯১৫ সাল) ১ম খণ্ড, ১ম শাখা, ২য় পল্লব, শ্রীরাধার পূর্ব্বরাগ, ২৮-পদসংখ্যায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। অথ শ্রীরাধায়াঃ পূর্ব্বরাগঃ। তদুচিত শ্রীগৌরচন্দ্র। নাগরী উক্তি। ॥ কামোদ॥ নিরমল গোরা তনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে ভৈ গেলুঁ ভোর। ভাঙ-ভুজঙ্গমে দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি যব হাম পেখলুঁ গোরা। আকুল দীগ বিদিগ নাহি পাইয়ে মদনলালসে মন ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত-নয়নে তেরছ অবলোকনে বরিখে কুসুম-শর সাধে। জিবইতে জীবনে থেহ নাহি পায়লুঁ ডুবলুঁ গঙ্গ অগাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ জানসি যদি মঝু লাগি করবি উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে শুন শুন এ সখি গোরা লাগি প্রাণ মোর যায়॥ এই পদটি উনিশ শতকে প্রকাশিত, নিমানন্দ দাস সংকলিত “পদরসসার” পুথির ২৫৮-পদসংখ্যায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। আমরা পুথিটি হাতে পাইনি। সতীশচন্দ্র রায়ের পদকল্পতরুর টীকা-পাঠান্তর দেখে এখানে উপস্থাপন করা হলো। ॥ কামোদ॥ নিরমল গোরা তনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে ভৈ গেলুঁ ভোর। ভাঙ-ভুজঙ্গমে দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ যব হাম পেখলুঁ গোরা। আকুল দীগ বিদিগ নাহি পায়লুঁ মদনমদারসে মন ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণ-নয়ানে তেরছ অবলোকনে বড়ই বিষম শর সান্ধি। জিবইতে জীবনে ধৈরজ না বান্ধব ডুবলুঁ গঙ্গা অগাধি॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ জানসি যদি সো তুহুঁ করহ উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে শুন শুন সুন্দরি গোরা বিনু মোর তনু যায়॥ এই পদটি ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত, মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ-তরঙ্গিণী” ২য় সংস্করণ (১ম সংস্করণ ১৯০২), ১০৯-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ কামোদ॥ নিরমল গৌর তনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে পড়ি গেলু ভোর। ভাঙ ভুজঙ্গমে, দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি যব হাম পেখলুঁ গোরা। অকুল দিগ বিদিগ নাহি পাইয়ে মদন লালসে মন ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত লোচনে তেরছ অবলোকনে বরিখে কুসুম শর সাধে। জিবইতে জীবনে থের নাহি পাওব জনু পড়ু গঙ্গা অগাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ যদি জানসি মঝু লাগি করহ উপায়। বাসুদেব ঘোষে কহে শুন শুন হে সখি গোরা লাগি প্রাণ মোর যায়॥ এই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৪৮২-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ নাগরী উক্তি॥ নিরমল গোরা তনু, কষিত কাঞ্চন জনু, হেরইতে ভৈ গেনু ভোর। ভাঙ ভুজঙ্গমে, দংশল মঝু মন, অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি, যবে হাম পেখলু গোরা। আকুল দীগ, বিদিগ নাহি পাইয়ে, মদনলালসে মন ভোরা॥ অরুণিতনয়নে, তেরছ অবলোকনে, বরিখে কুসুমশর সাধে। জীবইতে জীবনে, থেহ নাহি পায়লু, ডুবলু গঙ্গা অগাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি, তুহুঁ জানসি যদি, মঝু লাগি করবি উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে, শুন শুন এ সখি, গোরা লাগি প্রাণ মোর যায়॥ এই পদটি ১৯১০ সালে প্রকাশিত, নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্র সম্পাদিত মহাজন পদাবলী “শ্রীপদামৃতমাধুরী” ১ম খণ্ড, ১৩৪-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীরাধিকার পূর্ব্বরাগ ॥ কামোদ - যোত সমতাল॥ নিরমল গোরা তনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে ভৈ গেলুঁ ভোর। ভাঙ-ভুজঙ্গমে, দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি যব ধরি পেখলুঁ গোরা। অকুল দীগ বিদিগ নাহি পায়লুঁ মদন-লালসে মনভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত লোচনে তেরছ অবলোকনে বরিখে কুসুম শর সাধে। জিবইতে জীবনে থেহ নাহি পাইয়ে ডুবলুঁ গঙ্গা অগাধে॥ মণিমন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ জানসি যদি মঝু লাগি করহ উপায়। বাসুদেব ঘোষে কহে শুন শুন এ সখি গোরা লাগি প্রাণ মোর যায়॥ এই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত, হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-মালা”, ৭৭-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ কামোদ॥ নিরমল গৌর তনু, কষিত কাঞ্চন @@ হেরইতে পড়ি গেনু ভোর। ভাঙ ভুজঙ্গম, দংশল মঝু মন, অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি যব হাম পেখলু গোরা। আকুল দিগ- বিদিগ নাহি পাইয়ে মদন লালসে মন ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত লোচনে, তেরছ অবলোকনে বরিখে কুসুম-শর সাধে। জীবইতে জীবনে, থেহ নাহি পায়লু ডুবলু গঙ্গা অগাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ জানসি যদি মঝু লাগি করবি উপায়। বাসুদেব ঘোষে কহে, শুন শুন হে সখি গোরা লাগি প্রাণ মোর যায়॥ @@ - অপাঠ্য অক্ষর। এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ১৫৫-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। শ্রীরাধার পূর্ব্বরাগ তদুচিত গৌরচন্দ্র ॥ কামোদ॥ নিরমল গোরাতনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে ভৈ গেলুঁ ভোর। ভাঙ ভুজঙ্গমে দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি যব হাম পেখলুঁ গোরা। আকুল দিগ্ বিদিগ্ নাহি পাইয়ে মদন লালসে মন ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত লোচনে তেরছ অবলোকনে বরিষে কুসুম শর সাধে। জিবইতে জীবনে থেহ নাহি পাওলুঁ ডুবলুঁ গঙ্গ অগাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ যদি জানসি মঝু লাগি করবি উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে শুন শুন ওহে সখি গোরা লাগি প্রাণ মোর যায়॥ এই পদটি ১৯৯২ সালে প্রকাশিত, ডঃ চিত্রা রায়ের, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচ.ডি. কলা (বাংলা) উপাধির জন্য প্রদত্ত গবেষণা নিবন্ধ (সৌজন্যে শোধগঙ্গা ওয়েবসাইট, https://shodhganga.inflibnet.ac.in ) “বৈষ্ণব সংস্কৃতি ও সাহিত্যে গোবিন্দ, মাধব ও বাসুদেব ঘোষ”, ৭ম অধ্যায়, বাসুঘোষের পদাবলী সংকলন, ৭১৫-পৃষ্ঠায় এইরূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ সিন্ধুড়া॥ নিরুপম গোরাতনু কষিল কাঞ্চন জনু হেরইতে ভৈগেল ভোর। ভাঙ ভুজঙ্গমে দংশল মঝু মন অন্তর কাঁপয়ে মোর॥ সজনি! যব হাম পেখলু গোরা। আকুল দীগ্ বিদিগ নাহি পাইয়ে মদন মদালসে ভোরা॥ ধ্রু॥ অরুণিত নয়নে তেরছ অবলোকনে বরিষে কুসুমশর সাধে। জীবইতে জীবনে থেহ নাহি পায়লু ডুবলু গঙ্গ অবাধে॥ মন্ত্র মহৌষধি তুহুঁ জানসি যদি সো সব করবি উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে কি কহব এ সখি গোরা বিনু প্রাণ মোর জায়॥ পাঠান্তর - চাঁদ বদনেতে হাসিতে উগরি মণি হেরি কি করব উপায়। বাসুদেব ঘোষ কহে সুন সুন সুন্দরি গোরা বিনে তনু মোর জায়॥ ---চিত্তরঞ্জন সংগ্রহ ৩৫৬-তে শেষ দুই ত্রিপদি। ---চিত্রা রায়॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |