কবি ঘনরাম এর বৈষ্ণব পদাবলী যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে। |
দধি-মন্থ-ধ্বনি শুনইতে নীলমণি কবি ঘনরাম দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৫৭। পুনশ্চ দিনান্তরে। ॥ মায়ুর॥ দধি-মন্থ-ধ্বনি শুনইতে নীলমণি আওল সঙ্গে বলরাম। যশোমতী হেরি মুখ পাওল মরমে সুখ চুম্বয়ে চান্দ-বয়ান॥ কহে শুন যাদুমণি তোরে দিব ক্ষীর ননী খাইয়া নাচহ মোর আগে। নবনী-লোভিত হরি মায়ের বদন হেরি কর পাতি নবনীত মাগে॥ রাণী দিল পূরি কর খাইতে রঙ্গিমাধর অতি সুশোভিত ভেল তায়। খাইতে খাইতে নাচে কটিতে কিঙ্কিণী বাজে হেরি হরষিত ভেল মায়॥ নন্দ-দুলাল নাচে ভালি। ছাড়িল মন্থন-দণ্ড উথলিল মহানন্দ সঘনে দেই করতালি॥ ধ্রু॥ দেখ দেখ রোহিণী গদ গদ কহে রাণী যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর। ঘনরাম দাসে কয় রোহিণী আনন্দময় দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥ এই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন- মালা”, ৫৭-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ মায়ুর॥ দধি-মন্থ-ধ্বনি শুনইতে নীলমণি আওল সঙ্গে বলরাম। যশোমতী হেরি মুখ পাওল মরমে সুখ চুম্বয়ে চান্দ বয়ান॥ কহে শুন যাদুমণি তোরে দিব ক্ষীর ননী খাইয়া নাচহ মোর আগে। নবনী-লোভিত হরি মায়ের বদন হেরি কর পাতি নবনীত মাগে॥ রাণী দিল পুরি কর খাইতে রঙ্গি মাধব অতি সুশোভিত ভেল রায়। খাইতে খাইতে নাচে কটিতে কিঙ্কিণী বাজে হেরি হরষিত ভেল মায়॥ নন্দ-দুলাল নাচে ভালি। ছাড়িল মন্থন দণ্ড উথলিল মহানন্দ সঘনে দেয় করতালি॥ দেখ দেখ রোহিণী গদ গদ কহে রাণী যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর। ঘনরাম দাসে কয় রোহিণী আনন্দময় দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥ এই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৭২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে পদটির মাঝামাঝি “আদি অনাদি . . . . শশীশেখর সাথী” পর্যন্ত অংশটি পদটিকে অনেক দীর্ঘায়িত করেছে। আমরা এই অংশটিকে বোঝাবার জন্য আলাদা স্তবক করে তুলে দিলাম। ॥ মায়ুর - দশকুশী॥ দধি-মন্থ-ধ্বনি, শুনইতে নীলমণি, আওল সঙ্গে বলরাম। যশোমতী হেরি মুখ, পাওল মরমে সুখ, চুম্বয়ে চাঁদ বয়ান॥ কহে শুন যদুমণি, তোরে দিব ক্ষীর ননী, খাইয়া নাচহ মোর আগে। নবনী লোভিত হরি, মায়ের বদন হেরি, কর পাতি নবনীত মাগে॥ আদি অনাদি, পরম পুরুষোত্তম, কপট বালক বেশ ধরি। চারি বেদ যার, অন্ত না পাওত, সো হরি নবনী-ভিখারী॥ ধ্রু॥ নাচ লালন, মেরি বচন, হেরি অঙ্গন মাঝে। কটী মাঝহি, ঘাঘর ঘুঙুর, অতি সুমধুর বাজে॥ পদ পঙ্কজে, নুপুর বাজে, ধরি পঞ্চম তান। ভালে শোভে, অলকাবৃত, হেরি জুড়াওত প্রাণ॥ সেবি শঙ্কর, দেব দিগম্বর, দিয়া ঘৃত গঙ্গানীরে। উড়ি তণ্ডুল, শ্রীফল দল, দিয়াছিলাম শিবের শিরে॥ নয়ন কমল, ও মুখ মণ্ডল, হেরি জুড়াওত আঁখি। খাও মাখন, মেরি বচন, শশীশেখর সাথী॥ রাণী দিল পুরি কর, খাইতে রঙ্গিমাধর, অতি সুশোভিত ভেল তায়। খাইতে খাইতে নাচে, কটিতে কিঙ্কিণী বাজে, হেরি হরষিত ভেল মায়॥ নন্দদুলাল নাচে ভাল। ছাড়িয়া মন্থন দণ্ড, উথলিল মহানন্দ, সঘনে দেয় করতালি॥ দেখ দেখ রোহিণী, গদ গদ কহে রাণী, যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর। ঘনরাম দাসে কয়, রোহিণী আনন্দময় দুহুঁ প্রেমে ভেল বিভোর॥ এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ মায়ুর॥ দধি-মন্থ-ধ্বনি শুনইতে নীলমণি আওল সঙ্গে বলরাম। যশোমতী হেরি মুখ পাওল মরমে সুখ চুম্বয়ে বয়ান অনুপাম॥ কহে শুন যাদুমণি তোরে দিব ক্ষীর ননী খাইয়া নাচহ মোর আগে। নবনী-লোভিত হরি মায়ের বদন হেরি কর পাতি নবনীত মাগে॥ বাণী দিল পূরি কর খাইতে রঙ্গিমাধর অতি সুশোভিত ভেল তায়। খাইতে খাইতে নাচে কটিতে কিঙ্কিণী বাজে হেরি হরষিত ভেল মায়॥ নন্দ-দুলাল নাচে ভালি। ছাড়িল মন্থন-দণ্ড উথলিল মহানন্দ সঘনে দেই করতালি॥ ধ্রু॥ দেখ দেখ রোহিণী গদ গদ কহে রাণী যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর। ঘনরাম দাসে কয় রোহিণী আনন্দময় দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥ এই পদটি ১৯৯৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত, খগেন্দ্র নাথ মিত্র, সুকুমার সেন, বিশ্বপতি চৌধুরী, শ্যামাপদ চক্রবর্তী সম্পাদিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলন, ১৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। দধি-মন্থ-ধ্বনি শুনইতে নীলমণি আওল সঙ্গে বলরাম। যশোমতী হেরি মুখ পাওল মরমে সুখ চুম্বয়ে চাঁদ-বয়ান॥ কহে শুন যাদুমণি তোরে দিব ক্ষীর-ননী খাইয়া নাচহ মোর আগে। নবনী-লোভিত হরি মায়ের বন্ধন হেরি কর পাতি নবনীত মাগে॥ রাণী দিল পূরি কর খাইতে রঙ্গিমাধব অতি সুশোভিত ভেল তায়। খাইতে খাইতে নাচে কটিতে কিঙ্কিণী বাজে হেরি হরষিত ভেল মায়॥ নন্দ-দুলাল নাচে ভালি। ছাড়িল মন্থন-দণ্ড উথলিল মহানন্দ সঘনে দেই করতালি॥ ধ্রু॥ দেখ দেখ রোহিণী গদ গদ কহে রাণী যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর। ঘনরাম দাসে কয় রোহিণী আনন্দময় দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
আজি খেলায় হারিলা কানাই ঘনরাম দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২১শ পল্লব, সখ্য-রস- গোষ্ঠে গমন, পদসংখ্যা ১১৯৭। এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৫-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ধানশী॥ আজি খেলায় হারিলা কানাই। সুবলে করিয়া কান্ধে বসন আঁটিয়া বান্ধে বংশীবটের তলে যাই॥ ধ্রু॥ শ্রীদাম বলাই লৈয়া চলিতে না পারে ধাইয়া শ্রম-জল-ধারা পড়ে অঙ্গে। এখন খেলিব যবে হইব বলাইর দিগে আর না খেলিব কানাইর সঙ্গে॥ কানাই না জিতে কভু জিতিলে হারায়ে তভু হারিলে জিতয়ে বলরাম। খেলিয়া বলাইর সঙ্গে চড়িব কানাইর কান্ধে নহে কান্ধে নিব ঘন-শ্যাম॥ মত্ত বলাই-চান্দে কে করিতে পারে কান্ধে খেলিতে যাইতে লাগে ভয়। গেড়ুয়া লইয়া করে হারিলে সভারে মারে ঘনরাম দাস দেখি কয়॥ এই পদটিই ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত, সুকুমার সেন সম্পাদিত “বাংলা কবিতা সমুচ্চয়” (প্রথম খণ্ড) সংকলনে “গোষ্ঠ ক্রীড়া” শিরোনামে এই রূপে দেওয়া রয়েছে। গোষ্ঠ ক্রীড়া আজি খেলায় হারিলা কানাই সুবলে করিয়া কান্ধে বসন আঁটিয়া বান্ধে বংশী বটের তলে যাই। শ্রীদাম বলাই লৈয়া চলিতে না পারে ধাইয়া শ্রমজল ধারা পড়ে অঙ্গে। এখন দেখিব যবে হইব বলাইর দিগে আর না খেলিব কানাইর সঙ্গে। কানাই না জিতে কভু জিতিলে হারায়ে তভু হারিলে জিতিয়ে বলরাম। খেলায়া বলাইর সঙ্গে চড়িব কানাইর কান্ধে নহে কান্ধে নিব ঘনশ্যাম। মত্ত বলাইচান্দে কে করিতে পারে কান্ধে খেলিতে যাইতে লাগে ভয়। গেড়ুয়া লইয়া করে হারিলে সভারে মারে ঘনরাম দাস দেখি কয়॥ এই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৪৯৮-পৃষ্ঠায় এই রুপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ধানশী॥ আজি খেলায় হারিলা কানাই। সুবলে করিয়া কান্ধে, বসন আঁটিয়া বান্ধে, বংশীবটের তলে যাই॥ শ্রীদাম বলাই লৈয়া, চলিতে না পারে ধাঞা শ্রম-জল-ধারা পড়ে অঙ্গে। এখন খেলিব যবে, হইব বলাইর দিগে, আর না খেলিব কানাইর সঙ্গে॥ কানাই না জিতে কভু, জিতিলে হারায়ে তবু, হারিলে জিতয়ে বলরাম। খেলিয়া বলাইর সঙ্গে, চড়িব কানাইর কান্দে, নহে কান্ধে নিব ঘনশ্যাম॥ মত্ত বলাই চান্দে, কে করিতে পারে কান্ধে, খেলিতে যাইতে লাগে ভয়। গেড়ুয়া লইয়া করে, হারিলে সভারে মারে, ঘনরাম দাস দেখি কয়॥ এই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ২০২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ সারঙ্গ মিশ্র ভাটিয়ারী - ধামালি॥ ( বলরাম বলে ) আজি খেলায় হারিল কানাই। ( কৃষ্ণচন্দ্র ) সুবল করিয়া কান্ধে, বসন আঁটিয়া বান্ধে, বংশীবটের তলে যায়॥ ( অমনি ) শ্রীদাম বলাই লৈইয়া, চলিতে না পারে ধাইয়া, শ্রমজলে ধারা পড়ে অঙ্গে। ( শ্রীদাম বলে ) এবার খেলিব যবে, হইব বলাইর দিগে, আর না খেলিব কানাই সঙ্গে॥ কানাই না জিতে কভু, জিনিলে হারায়ে তবু, হারিলে জিতয়ে বলরাম। খেলিয়া বলাই সঙ্গে, চড়িব কানাই কান্ধে, নহে কান্ধে নিব ঘনশ্যাম॥ মত্ত বলাইচান্দে, কে করিতে পারে কান্ধে, খেলিতে যাইতে লাগে ভয়। গেড়ুয়া লইয়া করে, হারিলে সভারে মারে, ঘনরাম দাস দেখি কয়॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
আমি কিছু নাহি জানি ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী কবি ঘনরাম দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬৫। ॥ সিন্ধুড়া॥ আমি কিছু নাহি জানি ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী তোমারে সোধাই ইহার কথা। না দেখি গোকুলচান্দ কেমন করয়ে প্রাণ বোল না গোপাল পাব কোথা॥ আমি কি এমন জানি কোলে লৈয়া যাদুমণি বাছারে করাইছি স্তন পান। মোরে বিধি বিড়ম্বিল উথলি গো-রস গেল তা দেখি ধরিতে নারি প্রাণ॥ ভুলিলাম রোহিণীর বোলে গোপাল নামাঞা কোলে সে কোপে কোপিত যাদুমণি। কোপিত নয়ান-কোণে চাইয়াছিলে আমা পানে আমি কি এমন হবে জানি॥ তোমরা করিছ খেলা গোপাল আমার কোথা গেলা দঢ় করি বোল এক বোল। ঘনরাম দাসে কহে আকুল হইলা সভে রাখালের মাঝে উতরোল॥ এই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ১১০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ সিন্ধুড়া ও সুহই - দশকুশী॥ আমি কিছু নাহি জানি, ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী, তোমারে শুধাই তার কথা। না দেখি গোকুল চাঁদ, কেমন করয়ে প্রাণ, বল না গোপাল পাব কোথা॥ আমি কি এমন জানি, কোলে লৈয়া যাদুমণি বাছারে করাইছি স্তন পান। মোরে বিধি বিড়ম্বিল, উথলি গোরস গেল, তাদেখি ধরিতে নারি প্রাণ॥ ভুলিলাম রোহিণীর বোলে, গোপাল না লইলুঁ কোলে, সে কোপে কুপিত যাদুমণি। কুপিত নয়ন-কোণে, চাঞাছিলে আমা পানে, আমি কি এমন হবে জানি॥ তোমরা করিছ খেলা, গোপাল আমার কোথা গেলা, দঢ় করি বোল এক বোল। ঘনরাম দাসে কহে, আকুল হইয়া সবে রাখালের মাঝে উতরোল॥ এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ সিন্ধুড়া॥ আমি কিছু নাহি জানি ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী . তোমারে সোধাই ইহার কথা। না দেখি গোকুলচান্দ কেমন করয়ে প্রাণ . বোল না গোপাল পাব কোথা॥ আমি কি এমন জানি কোলে লৈয়া যদুমণি . বাছারে করাইছি স্তন পান। মোরে বিধি বিড়ম্বিল উথলি গো-রস গেল . তা দেখি ধরিতে নারি প্রাণ॥ ভুলিলাম রোহিণীর বোলে গোপাল নামাঞা কোলে . সে কোপে কোপিত যাদুমণি। কোপিত নয়ান-কোণে চাইয়াছিলে আমা পানে . আমি কি এমন হবে জানি॥ তোমরা করিছ খেলা গোপাল আমার কোথা গেলা . দৃঢ় করি বোল এক বোল। ঘনরাম দাসে কহে আকুল হইলা সভে . রাখালের মাঝে উতরোল॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |
ঘরে ঘরে উকটিতে পদচিহ্ন দেখি পথে কবি ঘনরাম দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬৭। এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৪-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে। ॥ ধানশী॥ ঘরে ঘরে উকটিতে পদচিহ্ন দেখি পথে সকরুণ নয়ানে নেহারে। আহা মরি হায় হায় মূরছিয়া পড়ে তায় কান্দে পদচিহ্ন লৈয়া কোরে॥ মায়েরে কব়্যাছ রোষ সঙ্গিয়ার কিবা দোষ কোথা আছ বোল ডাক দিয়া। যদি থাকে মনে রোষ ক্ষেম ভাই সব দোষ যশোদা মায়ের মুখ চায়্যা॥ শুনিয়া শ্রীদামের কথা মরমে পাইয়া বেথা তুরিতে আইলা নীলমণি। মরণ-শরীর যেন পাইল পরাণ দান শুনিতেই নূপুরের ধ্বনি॥ বসিলা মায়ের কোলে গদগদ বাণী বোলে অনেক সাধের যাদুমণি। সব ধন সম্পদ সকল তোমার আগে চল যাই করিগা নিছনি॥ ধরিয়া বলাইর হাতে দাড়াঞা মায়ের আগে নাচিতে লাগিলা দুই ভাই। ঘনরাম দাসে কয় হইলা আনন্দময় গোপালের বলিহারি যাই॥ . ************************ . সূচীতে . . . মিলনসাগর |