কবি ঘনরাম এর বৈষ্ণব পদাবলী
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
দধি-মন্থ-ধ্বনি শুনইতে নীলমণি
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর
বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৫৭।

পুনশ্চ দিনান্তরে।
॥ মায়ুর॥

দধি-মন্থ-ধ্বনি                             শুনইতে নীলমণি
আওল সঙ্গে বলরাম।
যশোমতী হেরি মুখ                      পাওল মরমে সুখ
চুম্বয়ে চান্দ-বয়ান॥
কহে শুন যাদুমণি                     তোরে দিব ক্ষীর ননী
খাইয়া নাচহ মোর আগে।
নবনী-লোভিত হরি                       মায়ের বদন হেরি
কর পাতি নবনীত মাগে॥
রাণী দিল পূরি কর                       খাইতে রঙ্গিমাধর
অতি সুশোভিত ভেল তায়।
খাইতে খাইতে নাচে                  কটিতে কিঙ্কিণী বাজে
হেরি হরষিত ভেল মায়॥
নন্দ-দুলাল নাচে ভালি।
ছাড়িল মন্থন-দণ্ড                          উথলিল মহানন্দ
সঘনে দেই করতালি॥ ধ্রু॥
দেখ দেখ রোহিণী                        গদ গদ কহে রাণী
যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর।
ঘনরাম দাসে কয়                      রোহিণী আনন্দময়
দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥

ই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-
মালা”, ৫৭-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ মায়ুর॥

দধি-মন্থ-ধ্বনি                        শুনইতে নীলমণি
আওল সঙ্গে বলরাম।
যশোমতী হেরি মুখ                পাওল মরমে সুখ
চুম্বয়ে চান্দ বয়ান॥
কহে শুন যাদুমণি                তোরে দিব ক্ষীর ননী
খাইয়া নাচহ মোর আগে।
নবনী-লোভিত হরি                মায়ের বদন হেরি
কর পাতি নবনীত মাগে॥
রাণী দিল পুরি কর                খাইতে রঙ্গি মাধব
অতি সুশোভিত ভেল রায়।
খাইতে খাইতে নাচে            কটিতে কিঙ্কিণী বাজে
হেরি হরষিত ভেল মায়॥
নন্দ-দুলাল নাচে ভালি।
ছাড়িল মন্থন দণ্ড                     উথলিল মহানন্দ
সঘনে দেয় করতালি॥
দেখ দেখ রোহিণী                   গদ গদ কহে রাণী
যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর।
ঘনরাম দাসে কয়                রোহিণী আনন্দময়
দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥

ই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন
“শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ৭২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে। এখানে পদটির মাঝামাঝি “আদি অনাদি . . . .
শশীশেখর সাথী”  পর্যন্ত অংশটি পদটিকে অনেক দীর্ঘায়িত করেছে। আমরা এই অংশটিকে বোঝাবার
জন্য আলাদা স্তবক করে তুলে দিলাম।

॥ মায়ুর - দশকুশী॥

দধি-মন্থ-ধ্বনি,                              শুনইতে নীলমণি,
আওল সঙ্গে বলরাম।
যশোমতী হেরি মুখ,                       পাওল মরমে সুখ,
চুম্বয়ে চাঁদ বয়ান॥
কহে শুন যদুমণি,                      তোরে দিব ক্ষীর ননী,
খাইয়া নাচহ মোর আগে।
নবনী লোভিত হরি,                      মায়ের বদন হেরি,
কর পাতি নবনীত মাগে॥

আদি অনাদি,                              পরম পুরুষোত্তম,
কপট বালক বেশ ধরি।
চারি বেদ যার,                              অন্ত না পাওত,
সো হরি নবনী-ভিখারী॥ ধ্রু॥
নাচ লালন,                                        মেরি বচন,
হেরি অঙ্গন মাঝে।
কটী মাঝহি,                                     ঘাঘর ঘুঙুর,
অতি সুমধুর বাজে॥
পদ পঙ্কজে,                                      নুপুর বাজে,
ধরি পঞ্চম তান।
ভালে শোভে,                                     অলকাবৃত,
হেরি জুড়াওত প্রাণ॥
সেবি শঙ্কর,                                     দেব দিগম্বর,
দিয়া ঘৃত গঙ্গানীরে।
উড়ি তণ্ডুল,                                       শ্রীফল দল,
দিয়াছিলাম শিবের শিরে॥
নয়ন কমল,                                      ও মুখ মণ্ডল,
হেরি জুড়াওত আঁখি।
খাও মাখন,                                         মেরি বচন,
শশীশেখর সাথী॥

রাণী দিল পুরি কর,                         খাইতে রঙ্গিমাধর,
অতি সুশোভিত ভেল তায়।
খাইতে খাইতে নাচে,                   কটিতে কিঙ্কিণী বাজে,
হেরি হরষিত ভেল মায়॥
নন্দদুলাল নাচে ভাল।
ছাড়িয়া মন্থন দণ্ড,                          উথলিল মহানন্দ,
সঘনে দেয় করতালি॥
দেখ দেখ রোহিণী,                        গদ গদ কহে রাণী,
যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর।
ঘনরাম দাসে কয়,                       রোহিণী আনন্দময়
দুহুঁ প্রেমে ভেল বিভোর॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ৯৯৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ মায়ুর॥

দধি-মন্থ-ধ্বনি                        শুনইতে নীলমণি
আওল সঙ্গে বলরাম।
যশোমতী হেরি মুখ                পাওল মরমে সুখ
চুম্বয়ে বয়ান অনুপাম॥
কহে শুন যাদুমণি                তোরে দিব ক্ষীর ননী
খাইয়া নাচহ মোর আগে।
নবনী-লোভিত হরি                   মায়ের বদন হেরি
কর পাতি নবনীত মাগে॥
বাণী দিল পূরি কর                   খাইতে রঙ্গিমাধর
অতি সুশোভিত ভেল তায়।
খাইতে খাইতে নাচে            কটিতে কিঙ্কিণী বাজে
হেরি হরষিত ভেল মায়॥
নন্দ-দুলাল নাচে ভালি।
ছাড়িল মন্থন-দণ্ড                      উথলিল মহানন্দ
সঘনে দেই করতালি॥ ধ্রু॥
দেখ দেখ রোহিণী                   গদ গদ কহে রাণী
যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর।
ঘনরাম দাসে কয়                 রোহিণী আনন্দময়
দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥

ই পদটি ১৯৯৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত, খগেন্দ্র নাথ মিত্র, সুকুমার সেন, বিশ্বপতি
চৌধুরী, শ্যামাপদ চক্রবর্তী সম্পাদিত “বৈষ্ণব পদাবলী” সংকলন, ১৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।


দধি-মন্থ-ধ্বনি                        শুনইতে নীলমণি
আওল সঙ্গে বলরাম।
যশোমতী হেরি মুখ                পাওল মরমে সুখ
চুম্বয়ে চাঁদ-বয়ান॥
কহে শুন যাদুমণি                তোরে দিব ক্ষীর-ননী
খাইয়া নাচহ মোর আগে।
নবনী-লোভিত হরি                 মায়ের বন্ধন হেরি
কর পাতি নবনীত মাগে॥
রাণী দিল পূরি কর                  খাইতে রঙ্গিমাধব
অতি সুশোভিত ভেল তায়।
খাইতে খাইতে নাচে            কটিতে কিঙ্কিণী বাজে
হেরি হরষিত ভেল মায়॥
নন্দ-দুলাল নাচে ভালি।
ছাড়িল মন্থন-দণ্ড                      উথলিল মহানন্দ
সঘনে দেই করতালি॥ ধ্রু॥
দেখ দেখ রোহিণী                   গদ গদ কহে রাণী
যাদুয়া নাচিছে দেখ মোর।
ঘনরাম দাসে কয়                  রোহিণী আনন্দময়
দুঁহু ভেল প্রেমে বিভোর॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
আজি খেলায় হারিলা কানাই
ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২১শ পল্লব, সখ্য-রস-
গোষ্ঠে গমন, পদসংখ্যা ১১৯৭। এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব
পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৫-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ ধানশী॥

আজি খেলায় হারিলা কানাই।
সুবলে করিয়া কান্ধে                    বসন আঁটিয়া বান্ধে
বংশীবটের তলে যাই॥ ধ্রু॥
শ্রীদাম বলাই লৈয়া                  চলিতে না পারে ধাইয়া
শ্রম-জল-ধারা পড়ে অঙ্গে।
এখন খেলিব যবে                        হইব বলাইর দিগে
আর না খেলিব কানাইর সঙ্গে॥
কানাই না জিতে কভু                  জিতিলে হারায়ে তভু
হারিলে জিতয়ে বলরাম।
খেলিয়া বলাইর সঙ্গে                  চড়িব কানাইর কান্ধে
নহে কান্ধে নিব ঘন-শ্যাম॥
মত্ত বলাই-চান্দে                    কে করিতে পারে কান্ধে
খেলিতে যাইতে লাগে ভয়।
গেড়ুয়া লইয়া করে                    হারিলে সভারে মারে
ঘনরাম দাস দেখি কয়॥

ই পদটিই ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত, সুকুমার সেন সম্পাদিত “বাংলা কবিতা সমুচ্চয়” (প্রথম খণ্ড)
সংকলনে “গোষ্ঠ ক্রীড়া” শিরোনামে এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

গোষ্ঠ ক্রীড়া

আজি খেলায় হারিলা কানাই
সুবলে করিয়া কান্ধে                   বসন আঁটিয়া বান্ধে
বংশী বটের তলে যাই।
শ্রীদাম বলাই লৈয়া                  চলিতে না পারে ধাইয়া
শ্রমজল ধারা পড়ে অঙ্গে।
এখন দেখিব যবে                       হইব বলাইর দিগে
আর না খেলিব কানাইর সঙ্গে।
কানাই না জিতে কভু                 জিতিলে হারায়ে তভু
হারিলে জিতিয়ে বলরাম।
খেলায়া বলাইর সঙ্গে                 চড়িব কানাইর কান্ধে
নহে কান্ধে নিব ঘনশ্যাম।
মত্ত বলাইচান্দে                    কে করিতে পারে কান্ধে
খেলিতে যাইতে লাগে ভয়।
গেড়ুয়া লইয়া করে                   হারিলে সভারে মারে
ঘনরাম দাস দেখি কয়॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব-পদলহরী”,
৪৯৮-পৃষ্ঠায় এই রুপে দেওয়া রয়েছে।

॥ ধানশী॥

আজি খেলায় হারিলা কানাই।
সুবলে করিয়া কান্ধে,                        বসন আঁটিয়া বান্ধে,
বংশীবটের তলে যাই॥
শ্রীদাম বলাই লৈয়া,                       চলিতে না পারে ধাঞা
শ্রম-জল-ধারা পড়ে অঙ্গে।
এখন খেলিব যবে,                            হইব বলাইর দিগে,
আর না খেলিব কানাইর সঙ্গে॥
কানাই না জিতে কভু,                     জিতিলে হারায়ে তবু,
হারিলে জিতয়ে বলরাম।
খেলিয়া বলাইর সঙ্গে,                     চড়িব কানাইর কান্দে,
নহে কান্ধে নিব ঘনশ্যাম॥
মত্ত বলাই চান্দে,                       কে করিতে পারে কান্ধে,
খেলিতে যাইতে লাগে ভয়।
গেড়ুয়া লইয়া করে,                      হারিলে সভারে মারে,
ঘনরাম দাস দেখি কয়॥

ই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন
“শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ২০২-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ সারঙ্গ মিশ্র ভাটিয়ারী - ধামালি॥

( বলরাম বলে ) আজি খেলায় হারিল কানাই।
( কৃষ্ণচন্দ্র ) সুবল করিয়া কান্ধে,                         বসন আঁটিয়া বান্ধে,
বংশীবটের তলে যায়॥
( অমনি ) শ্রীদাম বলাই লৈইয়া,                        চলিতে না পারে ধাইয়া,
শ্রমজলে ধারা পড়ে অঙ্গে।
( শ্রীদাম বলে ) এবার খেলিব যবে,                         হইব বলাইর দিগে,
আর না খেলিব কানাই সঙ্গে॥
কানাই না জিতে কভু,                                      জিনিলে হারায়ে তবু,
হারিলে জিতয়ে বলরাম।
খেলিয়া বলাই সঙ্গে,                                         চড়িব কানাই কান্ধে,
নহে কান্ধে নিব ঘনশ্যাম॥
মত্ত বলাইচান্দে,                                       কে করিতে পারে কান্ধে,
খেলিতে যাইতে লাগে ভয়।
গেড়ুয়া লইয়া করে,                                     হারিলে সভারে মারে,
ঘনরাম দাস দেখি কয়॥

.              ************************          
.                                                                             
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
ফল লেহ ফল লেহ ডাকে ফলাহারী
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ১৯শ পল্লব, কৌমারোচিত বাত্সল্য, পদসংখ্যা ১১৪৭। ১৯২২ সালে প্রকাশিত
নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”,
১০৩-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ তথারাগ॥

ফল লেহ ফল লেহ ডাকে ফলাহারী।
চ্যুত ধান্য শুধা করে আইলা শ্রীহরি॥
পসারে পেলিয়া ধান্য ফল দেহ বোলে।
অনিমিখে পসারিণী সে মুখ নেহালে॥
নয়নে গলয়ে ধারা দেখি মুখখানি।
কার ঘরের শিশু তুমি যাইয়ে নিছনি॥
কোন পূণ্যবতী তোমা করিলেক কোলে।
কাহারে বলিয়া মা স্তন পান কৈলে॥
ঘনরাম দাসে বোলে শুন পসারিণী।
ফলের সহিত কর জীবন নিছনি॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ফলক্রয় লীলা
.        ॥ তথারাগ॥

ফল লেহ ফল লেহ ডাকে ফলওয়ারী।
চ্যুত ধান্য শুধা করে আইলা শ্রীহরি॥
পসারে ফেলিয়া ধান্য ফল দেহ বোলে।
অনিমিখে পসারিণী সে মুখ নেহালে॥
নয়নে গলয়ে ধারা দেখি মুখখানি।
কার ঘরের শিশু তুমি যাইয়ে নিছনি॥
কোন পূণ্যবতী তোমা করিলেক কোলে।
কাহারে জননী বলি স্তন পান কৈলে॥
ঘনরাম দাসে বোলে শুন পসারিণি।
ফলের সহিত কর জীবন নিছনি॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
পঞ্চ-বরিখ-বয়সাকৃত-মোহন
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ১৯শ পল্লব, কৌমার-পৌগণ্ডোচিত বাত্সল্য, পদসংখ্যা ১১৫২।

.        ॥ মায়ুর॥

পঞ্চ-বরিখ-বয়সাকৃত-মোহন
.        ধাবমান পর-অঙ্গনা।
পায়স পাণি উরথলে মাখন
.        খায়ত মিটায়ত বয়না॥
.        দোলে দোলে মোহন গোপাল।
প্রখর চরণ-গতি মুখর কিঙ্কিণি কটি
.        লোটন লোলয়ে বনমাল॥ ধ্রু॥
সোণায় বান্ধিলা ভাল রুরু-নখ উরে মাল
.        পিঠে দোলে পাটকি থোপ।
খেনে আলগছি দেই খেনে ভূমে গড়ি যাই
.        খেনে পরসন্ন খেনে কোপ॥
নন্দ সুনন্দ যশোমতি রোহিণি
.        আনন্দে সুত-মুখ চায়।
নয়ন-দৃগঞ্চল কাজরে রঞ্জিত
.        হাসি হাসি বদন দেখায়॥
কুন্তলে রতন মণি ঝলমল দেখি।
কুণ্ডলে উজ্জ্বল গণ্ড কাজর আঁখি॥
ঘনরাম দাসে বোলে শুন নন্দরাণি।
ত্রিজগত-নাথ নাচাও করে দিয়া ননী॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ মায়ুর॥

পঞ্চ-বরিখ-বয়সাকৃত-মোহন
.        ধাবমান পর-অঙ্গনা।
নবনী পাণি উরথলে মাখন
.        খায়ত মিটায়ত বয়না॥
.        দোলে দোলে মোহন গোপাল।
প্রখর চরণ-গতি মুখর কিঙ্কিণি কটি
.        লোটন লোলয়ে বনমাল॥ ধ্রু॥
সোণায় বান্ধিলা ভাল রুরু-নখ উরে মাল
.        পিঠে দোলে পাটকি থোপ।
খেনে আলগছি দেই খেনে ভূমে গড়ি যাই
.        খেনে পরসন্ন খেনে কোপ॥
নন্দ সুনন্দ যশোমতি রোহিণি
.        আনন্দে সুত-মুখ চায়।
নয়ন-দৃগঞ্চল কাজরে রঞ্জিত
.        হাসি হাসি বদন দেখায়॥
কুন্তলে রতন মণি                 ঝলমল সুশোভনী
.                কুণ্ডলে গণ্ড উজালা।
ঘনরাম দাসের বাণী                শুন শুন নন্দরাণি
.              ননী দিয়া নাচাও গোপালা॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
যমুনার জলে গেলা যশোদা রোহিণী
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬২।

.        ॥ তথারাগ॥

যমুনার জলে গেলা যশোদা রোহিণী।
শূন্য ঘর পাঞা লুটে ও ক্ষীর নবনী॥
পিঁড়ির উপর পিঁড়ি উদুখল দিয়া।
তমু ত শিকার ভাণ্ড লাগি না পাইয়া॥
নড়িতে ছেদিয়া ভাণ্ড হেটে পাতে মুখ।
হেনই সময় দেখে জননী সম্মুখ॥
মায়ের শব্দ শুনি যাদু ধন নাচে।
ধরার অঞ্চল দিয়া চাঁদ-মুখ মোছে॥
এমনে কেমনে গোপাল লুকাইবা আর।
তোমার বুক বাহিয়া পড়ে গো-রসের ধার॥
ঘনরাম দাসে বোলে শুন যশোমতি।
মায়ারূপে তোমার ঘরে অখিলের পতি॥

ই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন
পদাবলী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ১০৬-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ কৌবিভাস - বৃহৎ জপতাল॥

যমুনার জলে গেলা যশোদা রোহিণী।
শূন্য ঘর পাইয়া লুটে এ খীর নবনী॥
পিঁড়ির উপর পিঁড়ি উদুখল দিয়া।
তথাপি নবনী-ভাণ্ড লাগি না পাইয়া॥
লড়িতে ছেদিয়া ভাণ্ড হেটে পাতে মুখ।
হেনই সময় দেখে জননী সম্মুখ॥
মায়ের শব্দ পাইয়া যাদুধন নাচে।
পীত ধরার অঞ্চল দিয়া চাঁদ মুখ মোছে॥
এখনে কেমনে গোপাল লুকাইবা আর।
তোমার বুক বাহিয়া পড়ে গোরসের ধার॥
ঘনরাম দাসে বলে শুন যশোমতী।
মায়ারূপে তোমার ঘরে অখিলের পতি॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৩-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ তথারাগ॥

যমুনার জলে গেলা যশোদা রোহিণী।
শূন্য ঘর পাঞা গোপাল লুটয়ে নবনী॥
পিঁড়ির উপর পিঁড়ি উদুখল দিয়া।
তমু ত শিকার ভাণ্ড লাগি না পাইয়া॥
লড়িতে ছেদিয়া ভাণ্ড হেঁটে পাতে মুখ।
হেনই সময় দেখে জননী সম্মুখ॥
মায়ের শবদ শুনি যাদু ধন নাচে।
ধড়ার অঞ্চল দিয়া চাঁদ-মুখ মোছে॥
এমনে কেমনে গোপাল লুকাইবা আর।
তোমার বুক বাহিয়া পড়ে গো-রসের ধার॥
ঘনরাম দাসে বোলে শুন যশোমতি।
মায়ারূপে তোমার ঘরে অখিলের পতি॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
দুবাহু পসারি আগে যায় নন্দরাণী
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬৪।

.        ॥ শ্রীরাগ॥

দুবাহু পসারি আগে যায় নন্দরাণী।
ধরিতে ধরিতে ধরা না দেয় নীলমণি॥
গৃহে পড়ি গড়ি যায় দধি নবনীত।
কোপ-নয়নে রাণী চাহে চারি ভীত॥
হেদে রে নবনী-চোরা বলি পাছে ধায়।
এ ঘর ও ঘর করি গোপাল লুকায়॥
নড়ি হতে নন্দরাণী যায় খেদাড়িয়া।
অখিল-ভুবন-পতি যায় পলাইয়া॥
এ তিন ভুবনে যারে ভয় দিতে নারে।
সে হরি পলাঞা যায় জননীর ডরে॥
রাণীর কোল হইতে গোপাল গেলা পলাইয়া।
আকুল হইলা রাণী গোপাল না দেখিয়া॥
ঘরে ঘরে উকটিল সকল গোকুল।
তোমার না দেখিয়া প্রাণ হইল আকুল॥
কার ঘরে আছ গোপাল বোল ডাক দিয়া।
তোমার মায়ের প্রাণ যায় বিদরিয়া॥
শ্রীদাম ডাকিয়া বোলে কানাই আমাদের ঘরে।
সভাকার প্রাণ গোপাল লুকাইল মায়ের ডরে॥
ঘনরাম দাসে কহে থির কর মন।
প্রেমের অধীন গোপাল পাবে দরশন॥

টীকা -
ইহা পদরসসার পুথির ১৬৮৭ সংখ্যক পদ। পদরসসার পুথিতে নিম্নলিখিত কলি দ্বারা
পদটী আরম্ভ করা হইয়াছে। যথা,---
বন্ধন ছাড়িয়া দিয়া গোপাল নিল কোলে।
কোল হইতে নামি গোপাল ধাইয়া চলিলে॥
পদকল্পতরু-গ্রন্থে বৈষ্ণবদাস শ্রীকৃষ্ণের বন্ধনলীলার পদ সন্নিবেশিত করেন নাই ; বোধ হয়,
সেই জন্যই অসঙ্গতি-ভয়ে এই পদটির প্রথম দুই পংক্তি পরিত্যাগ করিয়াছেন। পদাংশ-
বর্জ্জনের এইরূপ দৃষ্টান্ত একান্ত বিরল নহে
। ---সতীশচন্দ্র রায়, শ্রীশ্রীপদকল্পতরু॥

আমরা এই পদটির পদরসসার পুথিতে প্রাপ্ত রূপটিকে, এর পরের পদ “
বন্ধন ছাড়িয়া
দিয়া গোপাল নিল কোলে
” এইভাবে প্রকাশিত করছি। মিলনসাগর॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ শ্রীরাগ॥

দুবাহু পসারি আগে যায় নন্দরাণী।
ধরিতে ধরিতে ধরা না দেয় নীলমণি॥
গৃহে পড়ি গড়ি যায় দধি নবনীত।
কোপ-নয়নে রাণী চাহে চারি ভীত॥
হেদে রে নবনী-চোরা বলি পাছে ধায়।
এ ঘর ও ঘর করি গোপাল লুকায়॥
নড়ি হতে নন্দরাণী যায় খেদাড়িয়া।
অখিল-ভুবন-পতি যায় পলাইয়া॥
এ তিন ভুবনে যারে ভয় দিতে নারে।
সে হরি পলাঞা যায় জননীর ডরে॥
রাণীর কাছ হইতে গোপাল গেলা পলাইয়া।
আকুল হইলা রাণী গোপাল না দেখিয়া॥
ঘরে ঘরে উকটিল সকল গোকুল।
তোমার না দেখিয়া প্রাণ হইল আকুল॥
কার ঘরে আছ গোপাল বোল ডাক দিয়া।
তোমার মায়ের প্রাণ যায় বিদরিয়া॥
শ্রীদাম ডাকিয়া বোলে কানাই আমাদের ঘরে।
সভাকার প্রাণ লুকাইল মায়ের ডরে॥
ঘনরাম দাসে কহে থির কর মন।
প্রেমের অধীন গোপাল পাবে দরশন॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
বন্ধন ছাড়িয়া দিয়া গোপাল নিল কোলে
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬৪-এর, নিমানন্দ দাস সংকলিত
পদরসসার পুথিতে প্রাপ্ত রূপ। পদকল্পতরুতে এই পদের প্রথম দুটি পংক্তি বাদ দিয়ে
দুবাহু পসারি আগে যায় নন্দরাণী”, তোলা হয়।

.        ॥ শ্রীরাগ॥

বন্ধন ছাড়িয়া দিয়া গোপাল নিল কোলে।
কোল হইতে নামি গোপাল ধাইয়া চলিলে॥
দুবাহু পসারি আগে যায় নন্দরাণী।
ধরিতে ধরিতে ধরা না দেয় নীলমণি॥
গৃহে পড়ি গড়ি যায় দধি নবনীত।
কোপ-নয়নে রাণী চাহে চারি ভীত॥
হেদে রে নবনী-চোরা বলি পাছে ধায়।
এ ঘর ও ঘর করি গোপাল লুকায়॥
নড়ি হতে নন্দরাণী যায় খেদাড়িয়া।
অখিল-ভুবন-পতি যায় পলাইয়া॥
এ তিন ভুবনে যারে ভয় দিতে নারে।
সে হরি পলাঞা যায় জননীর ডরে॥
রাণীর কোল হইতে গোপাল গেলা পলাইয়া।
আকুল হইলা রাণী গোপাল না দেখিয়া॥
ঘরে ঘরে উকটিল সকল গোকুল।
তোমার না দেখিয়া প্রাণ হইল আকুল॥
কার ঘরে আছ গোপাল বোল ডাক দিয়া।
তোমার মায়ের প্রাণ যায় বিদরিয়া॥
শ্রীদাম ডাকিয়া বোলে কানাই আমাদের ঘরে।
সভাকার প্রাণ গোপাল লুকাইল মায়ের ডরে॥
ঘনরাম দাসে কহে থির কর মন।
প্রেমের অধীন গোপাল পাবে দরশন॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
আমি কিছু নাহি জানি ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর
বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬৫।

॥ সিন্ধুড়া॥

আমি কিছু নাহি জানি                                ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী
তোমারে সোধাই ইহার কথা।
না দেখি গোকুলচান্দ                                   কেমন করয়ে প্রাণ
বোল না গোপাল পাব কোথা॥
আমি কি এমন জানি                                কোলে লৈয়া যাদুমণি
বাছারে করাইছি স্তন পান।
মোরে বিধি বিড়ম্বিল                                   উথলি গো-রস গেল
তা দেখি ধরিতে নারি প্রাণ॥
ভুলিলাম রোহিণীর বোলে                         গোপাল নামাঞা কোলে
সে কোপে কোপিত যাদুমণি।
কোপিত নয়ান-কোণে                              চাইয়াছিলে আমা পানে
আমি কি এমন হবে জানি॥
তোমরা করিছ খেলা                         গোপাল আমার কোথা গেলা
দঢ় করি বোল এক বোল।
ঘনরাম দাসে কহে                                      আকুল হইলা সভে
রাখালের মাঝে উতরোল॥

ই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন পদাবলী সংকলন
“শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ১১০-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ সিন্ধুড়া ও সুহই - দশকুশী॥

আমি কিছু নাহি জানি,                                ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী,
তোমারে শুধাই তার কথা।
না দেখি গোকুল চাঁদ,                                   কেমন করয়ে প্রাণ,
বল না গোপাল পাব কোথা॥
আমি কি এমন জানি,                                কোলে লৈয়া যাদুমণি
বাছারে করাইছি স্তন পান।
মোরে বিধি বিড়ম্বিল,                                    উথলি গোরস গেল,
তাদেখি ধরিতে নারি প্রাণ॥
ভুলিলাম রোহিণীর বোলে,                        গোপাল না লইলুঁ কোলে,
সে কোপে কুপিত যাদুমণি।
কুপিত নয়ন-কোণে,                                চাঞাছিলে আমা পানে,
আমি কি এমন হবে জানি॥
তোমরা করিছ খেলা,                        গোপাল আমার কোথা গেলা,
দঢ় করি বোল এক বোল।
ঘনরাম দাসে কহে,                                      আকুল হইয়া সবে
রাখালের মাঝে উতরোল॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব
পদাবলী”, ৯৯৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ সিন্ধুড়া॥

আমি কিছু নাহি জানি
ভাঙ্গিয়াছে ক্ষীর ননী
.                                তোমারে সোধাই ইহার কথা।
না দেখি গোকুলচান্দ
কেমন করয়ে প্রাণ  
.                                বোল না গোপাল পাব কোথা॥
আমি কি এমন জানি
কোলে লৈয়া যদুমণি
.                                বাছারে করাইছি স্তন পান।
মোরে বিধি বিড়ম্বিল
উথলি গো-রস গেল
.                                তা দেখি ধরিতে নারি প্রাণ॥
ভুলিলাম রোহিণীর বোলে
গোপাল নামাঞা কোলে
.                                সে কোপে কোপিত যাদুমণি।
কোপিত নয়ান-কোণে
চাইয়াছিলে আমা পানে
.                                আমি কি এমন হবে জানি॥
তোমরা করিছ খেলা
     গোপাল আমার কোথা গেলা
.                                দৃঢ় করি বোল এক বোল।
ঘনরাম দাসে কহে
আকুল হইলা সভে
.                                রাখালের মাঝে উতরোল॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
ঘরে ঘরে উকটিতে পদচিহ্ন দেখি পথে
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ২০শ পল্লব, প্রকারান্তর
বাত্সল্য-রস, পদসংখ্যা ১১৬৭। এই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব
পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৪-পৃষ্ঠায় একই রূপে দেওয়া রয়েছে।

॥ ধানশী॥

ঘরে ঘরে উকটিতে                                পদচিহ্ন দেখি পথে
সকরুণ নয়ানে নেহারে।
আহা মরি হায় হায়                                মূরছিয়া পড়ে তায়
কান্দে পদচিহ্ন লৈয়া কোরে॥
মায়েরে কব়্যাছ রোষ                             সঙ্গিয়ার কিবা দোষ
কোথা আছ বোল ডাক দিয়া।
যদি থাকে মনে রোষ                               ক্ষেম ভাই সব দোষ
যশোদা মায়ের মুখ চায়্যা॥
শুনিয়া শ্রীদামের কথা                                মরমে পাইয়া বেথা
তুরিতে আইলা নীলমণি।
মরণ-শরীর যেন                                        পাইল পরাণ দান
শুনিতেই নূপুরের ধ্বনি॥
বসিলা মায়ের কোলে                                 গদগদ বাণী বোলে
অনেক সাধের যাদুমণি।
সব ধন সম্পদ                                      সকল তোমার আগে
চল যাই করিগা নিছনি॥
ধরিয়া বলাইর হাতে                             দাড়াঞা মায়ের আগে
নাচিতে লাগিলা দুই ভাই।
ঘনরাম দাসে কয়                                    হইলা আনন্দময়
গোপালের বলিহারি যাই॥

.              ************************          
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
অভরণ পরাইতে অভরণের শোভা
কবি ঘনরাম দাস
আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায়
সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য়
শাখা, ২১শ পল্লব, গোষ্ঠাষ্টমী-যাত্রা, পদসংখ্যা ১১৮০।

.        ॥ গান্ধার॥

অভরণ পরাইতে অভরণের শোভা।
প্রতি অঙ্গ চুম্বইতে মনে হয় লোভা॥
বান্ধিতে বিনোদ চূড়া নিরখিতে কেশ।
আঁখিযুগ ঝরঝর না হইল বেশ॥
পরাইতে নারে রাণী রঙ্গ পীত ধড়া।
ক্ষীণ মাজা দেখি ভয়ে ভাঙ্গি পড়ে পারা॥
পরাইতে নূপুর কমল সে চরণ।
নারিলুঁ বিদায় দিতে কহে ঘন ঘন॥
স্তন-ক্ষীরে ভিজিল রাণীর সব বাস।
নিছনি লইয়া মরু ঘনরামদাস॥

ই পদটি ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হরিলাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব
পদাবলী সংকলন “শ্রীশ্রীপদরত্ন-মালা”, ২৫৬-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ গান্ধার॥

আভরণ পরাইতে আভরণের শোভা।
প্রতি অঙ্গ চুম্বাইতে মনে হয় লোভা॥
বান্ধিয়া বিনোদ চূড়া নিরখিতে কেশ।
আঁখি যুগ ঝর ঝর না হইল বেশ॥
পরাইতে নারে রাণী রঙ্গ পীত ধরা।
ক্ষীণ মাজা দেখি ভয়ে ভাঙ্গি পড়ে পারা॥
পরাইতে নূপুর কমল সে চরণ।
নারিনু বিদায় দিতে কহে ঘন ঘন॥
স্তন-ক্ষীরে ভিজিল রাণীর সব বাস।
নিছনি লইয়া মরু ঘনরাম দাস॥

ই পদটি ১৯২২ সালে প্রকাশিত নবদ্বীপ চন্দ্র ব্রজবাসী ও খগেন্দ্রনাথ মিত্রের মহাজন
পদাবলী সংকলন “শ্রীপদামৃতমাধুরী”, ১৩৭-পৃষ্ঠায়।

॥ গান্ধার - মধ্যম একতালা॥

অভরণ পরাইতে অভরণের শোভা।
প্রতি অঙ্গ চুম্বইতে মনে হয় লোভা॥
বান্ধিতে বিনোদ চূড়া নিরখিতে কেশ।
আঁখিযুগ ঝরঝর না হইল বেশ॥
পরাইতে নারে রাণী রঙ্গ পীতধড়া।
ক্ষীণ মাজা দেখি ভয়ে ভাঙ্গি পড়ে পারা॥
পরাইতে নূপুর কোমল সে চরণ।
নারিনু বিদায় দিতে কহে ঘন ঘন॥
স্তন ক্ষীরে ভিজিল রাণীর সব বাস।
নিছনি লইয়া মরু ঘনরামদাস॥

ই পদটি ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী
সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৯৯৫-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ গান্ধার॥

আভরণ পরাইতে আভরণের শোভা।
প্রতি অঙ্গ চুম্বইতে মনে হয় লোভা॥
বান্ধিতে বিনোদ চূড়া নিরখিতে কেশ।
আঁখিযুগ ঝরঝর না হইল বেশ॥
পরাইতে নারে রাণী রঙ্গ পীত ধড়া।
ক্ষীণ মাজা দেখি ভয়ে ভাঙ্গি পড়ে পারা॥
পরাইতে নূপুর কমল সে চরণে।
নারিলুঁ বিদায় দিতে কহে ঘন ঘনে॥
স্তন-ক্ষীরে ভিজিল রাণীর সব বাস।
নিছনি লইয়া মরু ঘনরাম দাস॥

ই পদটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত দুর্গাদাস লাহিড়ী সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“বৈষ্ণব-পদলহরী”, ৪৯৭-পৃষ্ঠায় এই রুপে দেওয়া রয়েছে।

.        ॥ গান্ধার॥

আভরণ পরাইতে আভরণের শোভা।
প্রতি অঙ্গ চুম্বইতে মনে হয় লোভা॥
বান্ধিতে বিনোদ চূড়া নিরখিতে কেশ।
আঁখিযুগ ঝরঝর না হইল বেশ॥
পরাইতে নারে রাণী রঙ্গ পীত ধড়া।
ক্ষীণ মাজা দেখি ভয়ে ভাঙ্গি পড়ে পারা॥
পরাইতে নূপুর কমল সে চরণ।
নারিলুঁ বিদায় দিতে কহে ঘন ঘন॥
স্তন-ক্ষীরে ভিজিল রাণীর সব বাস।
নিছনি লইয়া মরু ঘনরাম দাস॥

ই পদটি ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত, দুর্গাচরণ বিশ্বাস সংগৃহীত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন
“কীর্ত্তন-পদাবলী”, ১৩৪-পৃষ্ঠায় এই রূপে দেওয়া রয়েছে।

আভরণ পরাইতে আভরণের শোভা।
প্রতি অঙ্গ চুম্বইতে মনে হয় লোভা॥
বান্ধিতে বিনোদ চূড়া নিরখিতে কেশ।
আঁখি যুগ ঝরঝর না হইল বেশ॥
পরাইতে নারে রাণী রঙ্গ পীত ধড়া।
ক্ষীণ মাজা দেখি ভয়ে ভাঙ্গি পরে পারা॥
পরাইতে নূপুর কমল সে চরণ।
নারিনু বিদায় দিতে কহে ঘন ঘন॥
স্তন-ক্ষীরে ভিজিল রাণীর সব বাস।
নিছনি লইয়া মরু ঘনরাম দাস॥

.              ************************              
.                                                                         
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর