কবি মাধবী দাসীর বৈষ্ণব পদাবলী |
নীলাচল হৈতে শচীরে দেখিতে কবি মাধবী দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ (১৯২৩), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ১০ম পল্লব, নানাবিধ বিরহ, পদসংখ্যা ১৮৫৩। ॥ ধানশী॥ নীলাচল হৈতে শচীরে দেখিতে আইসে জগদানন্দ। রহি কথো দূরে দেখে নদীয়ারে গোকুলপুরের চন্দ॥ ভাবয়ে পণ্ডিত রায়। পাই কি না পাই শচীরে দেখিতে এই অনুমানে যায়॥ ধ্রু॥ তরু লতা যত দেখে শত শত অকালে খসিছে পাতা। রবির কিরণ না হয় স্ফুটন মেঘগণ দেখে রাতা॥ ডালে বসি পাখী মুদি দুটি আঁখি ফুলজল তেয়াগিয়া। কান্দয়ে ফুকরি ডুকরি ডুকরি গোরাচাঁদ নাম লৈয়া॥ ধেনু যুথে যূথে দাঁড়াইয়া পথে কার মুখে নাহি রা। মাধবী দাসের ঠাকুর পণ্ডিত পড়িলা আছাড়ে গা॥ এই পদটি, ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৮৯৩ পৃষ্ঠায় এভাবে রয়েছে। গৌরবিরহে শ্রীনবদ্বীপ ধাম ॥ বসন্ত॥ নীলাচল হৈতে শচীরে দেখিতে আইসে জগদানন্দ। রহি কথো দূরে দেখে নদীয়ারে গোকুলপুরের ছন্দ॥ ভাবয়ে পণ্ডিত রায়। পাই কি না পাই শচীরে দেখিতে এই অনুমানে যায়॥ তরু লতা যত দেখে শত শত অকালে খসিছে পাতা। রবির কিরণ না হয় স্ফুরণ মেঘগণ দেখে রাতা॥ ডালে বসি পাখী মুদি দুটি আঁখি ফুলজল তেয়াগিয়া। কান্দয়ে ফুকরি ডুকরি ডুকরি গোরাচাঁদ নাম লৈয়া॥ ধেনু যূথে যূথে দাঁড়াইয়া পথে কার মুখে নাহি রা। মাধবী দাসের ঠাকুর পণ্ডিত পড়িল আছাড়ে গা॥ . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
পরশিতে রাই-তনু আপনে ভুলল কানু কবি মাধবী দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮), ২য় খণ্ড, ৩য় শাখা, ১০ম পল্লব, রূপানুরাগ, পদসংখ্যা ৭৭৬। ॥ মঙ্গল॥ পরশিতে রাই-তনু আপনে ভুলল কানু মুরছি পড়ল ধনি-কোর। শ্যামকে হেরইতে ধনি ভেল গদগদ ঢরকি ঢরকি বহে লোর॥ শ্যাম মুরছিত হেরি চকিতে ললিতা ফেরি রাধা-মন্ত্র শ্রুতি-মূলে দেল। অঙ্গ মোড়াইয়া কানু নিরখই রাই-তনু হেরি সখী সচকিত ভেল॥ চিত্র-পুতলি যেন বেঢ়ল সখিগণ নিরখই শ্যাম-মুখ-চন্দ। কি ভেল কি ভেল বলি ধাওল বিশাখা আলি সব জনে লাগল ধন্দ॥ শ্যামর-সুন্দর- বদন-সুধাকর সুমুখি নেহারই সাধে। উপজল উল্লাস কহই মাধবি দাস বিদগধ মাধব রাধে॥ এই পদটি, দ্বিজ মাধব দ্বারা সংকলিত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে অনুলিখিত, বিশ্বভারতীর গ্রন্থশালায় সংরক্ষিত ১৩৮১টি পদবিশিষ্ট “শ্রীপদমেরুগ্রন্থ”-এর ১৭৯ পৃষ্ঠায় এভাবে দেওয়া রয়েছে। ॥ তুড়ি তাল ভাঁসপেড়ি॥ পরশিতে রাইতনু আপনে [আকুল] কানু মুরছি পড়ল ধনিকোড়। শ্যামক হেরইতে ধনি ভেল গদগদ ঢরকি ঢরকি বহে লোর॥ শ্যাম মুরছিত [হেরি] চকিতে ললিতা ফিরি রাধামন্ত্র শ্রুতি [মূলে] দেল। অঙ্গমোড়া দিয়ে কানু নিরখই রাইতনু সখী হেরি চমকিত ভেল॥ চিত্রপুথলি জেন বেঢ়ল সখীগণ নিরখই শ্যামমুখচান্দ। [কি ভেল কি ভে]ল বলি ধায়ল বিশাখা আলি সব জনে লাগল [ধন্দ]॥ শ্যামর সুন্দর বদন সুধাকর সুমুখে নেহারই সাধে। উপজল উল্লাস কহই মাধবীদাস [বিদ]গধ মাধব রাধে॥ . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
কলহ করিয়া ছলা আগে পহু চলি গেলা কবি মাধবী দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ (১৯২৩), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২১শ পল্লব, গৌরাঙ্গের সন্ন্যাস ইত্যাদি, পদসংখ্যা ২২৩৯। ॥ বরাড়ী॥ কলহ করিয়া ছলা আগে পহু চলি গেলা ভেটিবারে নীলাচল-রায়। যতেক ভকতগণ হৈয়া সকরুণ-মন পদ-চিহ্ন-অনুসারে ধায়॥ নিতাই বিরহ-অনলে ভেল ধন্দ। আঠারনালাতে হৈতে কান্দিতে কান্দিতে পথে যায় নিতাই অবধৌত-চন্দ॥ ধ্রু॥ সিংহ-দুয়ারে গিয়া মরমে বেদনা পাইয়া দাঁড়াইল নিত্যানন্দ রায়। হরে কৃষ্ণ হরি বলে দেখিয়াছ সন্ন্যাসীরে নীলাচল-বাসীরে সোধায়॥ জাম্বুনদ-হেম জিনি গৌর-বরণ-খানি অরুণ বসন শোভে গায়। প্রেম-ভবে গরগর আঁখিযুগ ঝর ঝর হরি হরি বোল বলি ধায়॥ ছাড়ি নাগরালি-বেশে ভ্রমে পহু দেশে দেশে এবে ভেল সন্ন্যাসীর বেশ। মাধবী দাসেতে কয় অপরূপ গোরা রায় ভট্ট-গৃহে করল প্রবেশ॥ . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |
আনন্দে নাচত সঙ্গে ভকত কবি মাধবী দাস আনুমানিক ১৭৫০ সালে বৈষ্ণবদাস ( গোকুলানন্দ সেন ) সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থের, সটীক সংস্করণ ১৩৩০ বঙ্গাব্দ (১৯২৩), ৩য় খণ্ড, ৪র্থ শাখা, ২১শ পল্লব, গৌরাঙ্গের সন্ন্যাস ইত্যাদি, পদসংখ্যা ২২৯০। ॥ বসন্ত॥ আনন্দে নাচত সঙ্গে ভকত গৌরকিশোর-রাজ। ফাগু উঝালি করে ফেলাফেলি নীলাচল-পুরী মাঝ॥ শুনিয়া নাগরী প্রেমেতে আগরি ধাইয়া চলিল বাটে। হেরিয়া গৌরে পড়িয়া ফাঁফরে বদন চাহিয়া থাকে॥ দু বাহু তুলিয়া বেড়ায় নাচিয়া ভকত-গণের সঙ্গ। নীলাচল-বাসী মনে অভিলাষী কৌতুকে দেখয়ে রঙ্গ॥ বাজে করতাল বোলে ভালি ভাল আর বাজে তাহে খোল। মাধবি দাস মনেতে উল্লাস সদা বলে হরি বোল॥ এই পদটি, ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “বৈষ্ণব পদাবলী”, ৮৯৩ পৃষ্ঠায় এভাবে রয়েছে। ॥ বসন্ত॥ আনন্দে নাচত সঙ্গে ভকত গৌর কিশোর-রাজ। ফাগু উঝলি করে ফেলাফেলি নীলাচল-পুরী মাঝ॥ শুনিয়া নাগরী প্রেমেতে আগরি ধাইয়া চলিল বাটে। হেরিয়া গৌরে পড়িয়া ফাঁফরে দূরে থাকি দেখে নাটে॥ দু বাহু তুলিয়া বেড়ায় নাচিয়া ভকত-গণের সঙ্গ। নীলাচল-বাসী মনে অভিলাষী কৌতুকে দেখয়ে রঙ্গ॥ বাজে করতাল বোলে ভালি ভাল আর বাজে তাহে খোল। মাধবি দাস মনেতে উল্লাস সদা বলে হরি বোল॥ এই পদটি, ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত, জগবন্ধু ভদ্র সংকলিত ও মৃণালকান্তি ঘোষ সম্পাদিত, বৈষ্ণব পদাবলী সংকলন “শ্রীগৌরপদ তরঙ্গিণী”, পৃষ্ঠা ১৬৫-এ এভাবে রয়েছে। ॥ বসন্ত॥ আনন্দে নাচত, সঙ্গে ভকত, গৌরকিশোর-রাজ। ফাগু উঝালি, করে ফেলাফেলি, নীলাচলপুরী মাঝ॥ শুনিয়া নাগরী, প্রেমেতে আগুরী, ধাইয়া চলিল বাটে। হেরিয়া গৌরে, পড়িয়া ফাঁপরে, বদন চাহিয়া থাকে॥ দুবাহু তুলিয়া, বেড়ায় নাচিয়া, ভকতগণের সঙ্গ। নীলাচলবাসী, মনে অভিলাষী, কৌতুকে দেখায় রঙ্গ॥ বাজে করতাল, বোলে ভালি ভাল, আর বাজে তাহে খোল। মাধবিদাস মনেতে উল্লাস, সদা বলে হরি বোল॥ . ************************* . সূচিতে . . . মিলনসাগর |