কবি সালবেগ-এর বৈষ্ণব পদাবলী
বায়ে সখিগণ বিবিধ বাজন
কবি সাল বেগ
১৯২৬ সালে প্রকাশিত সতীশচন্দ্র রায় সংকলিত সম্পাদিত “অপ্রকাশিত পদ-রত্নাবলী” সংকলনের পদ
সংখ্যা ৪৪৩।    


ঝুলন-লীলা

বায়ে সখিগণ                  বিবিধ বাজন
বায়ে অতি অনুপাম রে।
মৃদঙ্গ চঙ্গ                      উপাঙ্গ সুমধুর
সপ্তসুর তিন গাম রে॥
কোই নাচত                    তাল বজায়ত
নাচত শ্যামা শ্যাম রে।
আনন্দে তরঙ্গিত                  বহই যমুনা
এ রূপ সখি-সুখ ধাম রে॥
নব-নাগর কানুরাধা সে তরুণী।
নব-জলধরে কিয়ে শোভিত দামিনী॥ ধ্রু॥
মোহিত নারদ                    সূর নর মুনি
মোহিত ব্রহ্মা শঙ্করে।
চাঁদ-কিরণহি                  বিকসি কুমুদিনি
শোভিত সুভগ সরোবরে॥
হংস-সারস-                     তবকি-তাণ্ডব
ডাহুকি-শবদ মনোহরে।
সালবেগ-পিয়                    নিরখি লাবণি
বরণি নহি কছু যাত রে॥

.          ************************          
.                                                                                              
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
হের হো নিলগিরি-রাজহি
কবি সাল বেগ
পদকর্তা বৈষ্ণবদাস সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় দ্বারা পরিবর্ধিত ও সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থ,
দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮ সাল) পদ সংখ্যা ১৫৪২।    

স্নানযাত্রা

॥ আশোয়ারি, উড়িয়া খেমটা॥

হের হো নিলগিরি-রাজহি।
সুভদ্রা বলরাম                           সঙ্গে অনুপাম
সিনান-মণ্ডপ মাঝহি॥ ধ্রু॥
শঙ্খ ঘন্টা কাঁশী                        বেণি বিণা বাঁশি
মধুর দুন্দুভি বাজন্তি।
সেবাতি পড্যারি                         ঘট ভরি বারি
ঢাউর তাকঙ্কু মাখন্তি॥
জয় জয় ধ্বনি                             সুর নর মুনি
স্তুতি নতি প্রণিপাত হি।
শ্রীমুখচন্দ্রকু                              সৌরভ আউছ
গজেন্দ্র বেশউঁ আপহি॥
জয় যদুপতি                           তিন-লোক-গতি
বহু উপহার ভোজন্তি।
মণিকোঠাচলে                             সালবেগ বলে
দেব-নারিগণ নাচন্তি॥

.          ************************          
.                                                                                              
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
নাগরি নাগরি নাগরি
কবি সাল বেগ
পদকর্তা বৈষ্ণবদাস সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় দ্বারা পরিবর্ধিত ও সম্পাদিত
শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থ, দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮ সাল) পদ সংখ্যা
২৪৭২।    


নাগরি নাগরি নাগরি।
কত প্রেমের আগরি নব নাগরি॥
কনক-কেতকী-চম্পা-তড়িত-বরণী।
ইন্দীবর-নিলমণি-জলদ-বসনী॥
মৃগজ-বঙ্কজ-মিন-খঞ্জন-নয়নী।
কাম-ধনু ভ্রমর-পংক্তি ভুরু ভুজঙ্গিণী॥
নাসা তিল-ফুল-খগ-চম্পা-কলি-জিতা।
জামি জল বহন্তি বেণি ঝাঁপি ঝলকিতা॥
ভালে সে সিন্দুর-বিন্দু শোভে কেশ-শোভা।
জিনি ইন্দিবর বাহু তমালের আভা॥
ভালে বিরাজিত উরে মোতিম-হারা।
হংস-বক-শ্রেণী গঙ্গা-জল দুগ্ধ-ধারা॥
কহ সালবেগ হীন জগত-পামরা।
রসের কলিকা রাই কানু সে ভ্রমরা॥

.          ************************          
.                                                                                
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
জয় জয় রাধে গোপাল গোপাঙ্গনা রে
কবি সাল বেগ
পদকর্তা বৈষ্ণবদাস সংকলিত এবং সতীশচন্দ্র রায় দ্বারা পরিবর্ধিত ও সম্পাদিত শ্রীশ্রীপদকল্পতরু গ্রন্থ,
দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় শাখা, ১৩২৫ বঙ্গাব্দ (১৯১৮ সাল) পদ সংখ্যা ২৯৭২।    


॥ বিহগড়া, তাল চর্চ্চরী॥

জয় জয় রাধে গোপাল গোপাঙ্গনা রে॥ ধ্রু॥
শীশ মোর-মুকুট নট                        শোহে কটি পীত-পট
কিঙ্কিণি অধিক শোহাওনা রে॥
ভাল কোশর-তিলক                        কাণে কুণ্ডল ঝলক
অধর পর মুরলি সুখ পাওনা রে।
যমুনা-তট-রঙ্গিণি                        সকল রমণী-মণি
রূপ নব-দামিনি-গঞ্জনা রে॥
ঘন্নন ননঘ রব-বর                        উঘট ঙেদ যন্ত্র-বর
সাত স্বর তান বিশ মুর্চ্ছনা রে।
থিগিনি গিনি ধিদ্ধিকট                        তগ্ ধেনাংতিন্তিগট
সালবেগ পুরল মন-কামনা রে॥

.          ************************          
.                                                                                
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর
কি করিল সখি মোরে নিঁদে জাগাইয়া
কবি সাল বেগ
এই পদটি আমরা পেয়েছি আবদুল কাদির ও রেজাউল করীম সম্পাদিত, বাংলা সাহিত্যে মুসলমান
কবিদের কাব্যের সংকলন “কাব্য মালঞ্চ” (১৯৪৫) সংকলন থেকে।    

স্বপ্নাধ্যায়

কি করিল সখি মোরে নিঁদে জাগাইয়া।
আইল চিকন কালা স্বপন জানিয়া॥
কহিল বিনয় করি’ হাত দিয়া উরে।
চৈতন্য পাইয়া দেখি পিয়া নাই মোর কোরে॥
মনের সঙ্গেতে মুঞি এক্ লা নিঁদ যাম।
কেন রে দারুণ বিধি মোরে হৈলে বাম॥
কহে কবি সালবেগ স্বপ্নেতে জাগিয়া।
খণ্ডিল জন্মের দুঃখ চাঁদ-মুখ চাহিয়া॥

.          ************************          
.                                                                                     
সূচীতে . . .   



মিলনসাগর