বিশ্বাস হয় না ----- তুমি আজ আমার পাশে নেই, কিন্তু সকলে বলে--- এটাই নাকি একান্ত সত্যি, আমার বুকের মাঝে যে আছে -- সে যে সেই সেই | কেন মনে নাই তোমার গুরুদেব বলেছিলেন--- মৃন্ময়ী যায় জলের তলায়, চিন্ময়ী রয় হৃদে | সেই বিশ্বাস, সেই শক্তি বাবাই ত’ দিলেন | তাইত’ একা একাই ছয় বছর কাটিয়ে দিলাম, এমনি ক’রে কত বছর, কত যুগ কেটে যাবে---- মনে মনে ভাবি ----- আমরা কত আনন্দে ছিলাম | কাউকে বুঝতে দিইনা--- আমার মনের কষ্ট সবাই ব’লে --- বেশ তো আছিস, ভালই আছিস, ফিরতি জবাবে করতে চাইনা, তাদের ধারনা অস্পষ্ট | চিৎকার ক’রে বলতে ইচ্ছা ক’রে --- ভাল আছি, আমি ভাল নাই ব’লে সকলের সহানুভূতি চাই না---- বড় ছোট লাগে নিজেকে, সকলের সহানুভূতি নিয়ে বাঁচি | তুমি ত’ জান --- কেমন আছি সেটাই বড় সান্ত্বনা | যদি কোন দিন প্রয়োজন হয়, ডেকো আমাকে সব ফেলে দিয়ে তোমার মত চলে যাব------ . আর চাই না আত্মলাঞ্ছনা |
কবির কবিত্বে ------ আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবস আজ, আকাশেতে নব মেঘের ঘন ঘটার সাজ | কিন্তু একফোঁটাও বর্ষার মুক্তর মতো জল ঝ’ড়ল না, কালীদাসের মেঘদূতের মতো বারতা পাঠাতে পারলাম না | মেঘেরা নিতে চাইল না আমার “কদম” পাতায় লেখা চিঠি, ডেকেছিলেম তাদের, এড়িয়ে সবার দৃষ্টি | কিন্তু না, আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবস বৃথাই গেল, একা একাই চোখ দুটি এক ফোঁটা মুক্তের মত জলে ভ’রে এলো | নাঃ --- আমারই ভুল, কালীদাসের কাল ত’ আর নাই মেঘেরা বুঝবে কি ক’রে, এই মুহূর্তে আমি কি চাই ||
ওঃ--- তোমাকে বলিনি বুঝি------ . আমার ছোট্ট বেলার কথা--- সেই দিন গুলো ভাবনায় এলে, . মনে জাগে বড়ই ব্যথা | কত সুন্দর ছিল-সেদিন গুলো-- আজ হঠাৎ করে মনটা যেন ছুঁলো | সেই যে সুন্দর গ্রামটি . যেখানে রাস্তা গুলো মাটির সেই পথটি ধ’রে এগোতে গেলে -- . মনে হয় “বড্ড” ব্যথা লাগেছে আমার “মা” টির | স্বচ্ছ পুকুরের জলে কত ফুল, . জান না বুঝি ! ঐ ফুলকেই বলে “শাপলা” | ওহো ! তুমি বুঝবে কি ক’রে . তুমি যে শহরকে করেছ আপনা | ঐ গুলিকেই বলে “শাপলা” ফুল | গ্রামে ছিল না বিজলী আলো জামরুল গাছের তলে মাদুর বিছিয়ে সুন্দর পড়ার জায়গা হ’তো তৈরি, ‘প্রকৃতিমা’ গাছের পাতা নাড়িয়ে দিতেন মিষ্টি হাওয়া------- . সে যে কি মিষ্টি, কি ভালো | ভাদ্দর মাস এলেই বেশ বোঝা যে’ত . বাতাসে ঠিক পূজো পূজো গন্ধ, ভাবছ, আবোল তাবোল বকছি, . না --- একটুও ক’রো না সন্দ | প্রতিমা গড়তে ঠিক সময় . চলে এলো ‘নিবারণদাদা’ আর ‘কাঙ্গাল ভাই’, আরও কত জন, মা ব্যাস্ত তাদের খাবার ব্যবস্থায়, . বই থেকে আমাদের মনটা উধাও হতো তাই | যেই না কুমোরেরা খাবার জন্যে যেত ভিতরে, অমনি টুক ক’রে সুন্দর পলিমাটি . তুলে নিয়ে লুকিয়ে ফেলতাম কোঁচরে | উঃ--- সে যে ছিল কি আনন্দের দিন . তোমরা পেলে না কোন স্বাদ তার, যখন ভাবি আমাদের ছেলে বেলা, . আর কত তফাৎ তোমাদের ছেলেবেলা----- মনটা হ’য়ে যায় ব্যাথাতুর----- ভার | কাশের বনে হাওয়ার হিল্লোল, শিউলি ফুলের মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ, মনে তোমায় করিয়ে দেবে-ই . মায়ের আগমনের আর নেইকো দেরী, ‘সোনাদি’ ‘মঞ্জুদি’ তাড়াতাড়ি বসো . আমাদের নতুন জামা করতে তৈরী | আজ আর হলো না সারা . আমার ছোট বেলার গল্প | আবার যদি মন চায় . বলবো তোমাদের সেই আমার ছোট্ট বেলার মিষ্টি গল্প সল্প |