কবি চম্পা রায়চৌধুরী -র বাবার নাম কবি শচীন্দ্র নাথ সেন ও মা শ্রীমতী প্রমীলা দেবী। বাড়ী ছিল
অবিভক্ত বাংলার, খুলনা জেলার, বাগেরহাট মহকুমার, মুলঘর গ্রামে। কবির ছোট ভাই
কবি নবেন্দু সেন
এবং মেজদা ছিলেন প্রখ্যাত ছান্দসিক
কবি নীলরতন সেন। কবির জন্ম তাঁদের মুলঘরের গ্রামের বাড়ীতেই।

তিনি ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত দেশের বাড়ীর স্কুলে পড়েছিলেন। তাঁর ঠাকুরদাদা শ্রী রজনীকান্ত সেন তাঁদের বাড়ীতে
একটা মেয়েদের অবৈতনিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। সেখানে তাঁদের বাড়ীর ও গ্রামের দিদিরা এবং
গ্রামের বিজ্ঞজনেরা, অবসর গ্রহণের পর যাঁরা গ্রামে থাকতেন, তাঁদের কেউ কেউ সেই স্কুলে ছাত্রীদের
পড়াতেন।

ছোটবেলায় গ্রামের বাড়ীতে থাকতে, তাঁর বাবা কবি শচীন্দ্রনাথ সেনের চোখে গ্লোকুমা হওয়াতে তিনি অন্ধ
হয়ে যান কিন্তু কবিতা রচনা করে যেতেন রোজ, কাউকে না কাউকে কাছে বসিয়ে, যিনি তা লিখে রাখতেন।
এমনও হতো যে অনিদ্রার জন্য শচীন্দ্রনাথ সারা রাত না ঘুমিয়ে, বিছানার মধ্যে বালিশের পাশে রাখা একটি
খাতায়, একটি রুলার ও একটি পেনসিলের সাহায্যে ওই অন্ধকারের মধ্যেই কবিতা লিখে রাখতেন। পর দিন
সেই কবিতা ভাল করে লিখে রাখতেন অন্য কেউ। বাবার এই কবিতা লেখার কাজটি করতেন চম্পা দেবীও।
তাই শৈশব থেকেই তাঁর কবিতায় আনাগোণা!     

দেশ ভাগ হবার পর তাঁরা এপার বাংলায় চলে আসেন এবং কবির বড়দা লালমোহন সেনের কাছে দমদম
এয়ার পোর্টের কোয়ার্টারে থেকে, মতিঝিল স্কুলে পড়েন। ওখানে পড়তে পড়তে তাঁর দাদা গৌহাটীর দিকে
বদলী হয়ে চলে গেলে, তাঁরা বোলপুরে বাসা ভাড়া করে উঠে যান।   

সেখান থেকেই তাঁর বিয়ে হয় কাটিহারের রেলের চাকুরিজীবি ছেলে, শ্রী বিজয় রায় চৌধুরী সাথে। তখন
থেকে যাযাবরের মত, যত জায়গায় তাঁর স্বামী বদলী হয়েছেন, দুই মেয়েকে নিয়ে থেকে থেকে পাড়ী দিতে
হয়েছে তাঁর সঙ্গে। অবশেষে তাঁর স্বামীর অবসর গ্রহণের পর, বিরাটীতে বাড়ী ক'রে স্থিত হন তাঁরা। তাঁর
দুই মেয়েই বিবাহিত। ২০০৫ সালে স্বামী বিজয় রায় চৌধুরী পরলোক গমন করেন।

গৃহবধু এই কবির, জীবনের একটি স্মরণীয় অধ্যায় ছিল ১৯৭৪ সালে, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা জর্জ ফার্নান্ডেজের
নেতৃত্বে হওয়া, বিখ্যাত রেল ধর্মঘট। সেই সময় তাঁরা পোস্টেড ছিলেন শিলিগুড়ির কাছে নিউ জলপাইগুড়ি
রেল স্টেশনে। স্বামী বিজয়বাবু স্থানীয় আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং দীর্ঘকাল ধরে চলা এই
ধর্মঘটে, তাঁদের পরিবারদের ভরণপোষণের জন্য ব্যাবস্থা করার কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন নিজের গ্রেফ্তার
হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও। আজ জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে, চম্পা দেবী সেই দিনগুলির স্মৃতি রোমন্থন করেছেন
আমাদের জন্য। সেই লেখাটি পড়তে
এখানে ক্লিক করুন।   

বিনয়ী এই কবি মনে করেন, যে তিনি একজন অতি নগন্য ব্যক্তি! তাঁর কোন গুণ নেই! তবু তারই মাঝে
নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাওয়ার তাগিদে এই সব হিজিবিজি লেখেন! যা মনে আসে লেখেন!

আমরা
মিলনসাগরে কবির কবিতা প্রকাশিত করার অনুমতি পেয়ে আনন্দিত।    

কবি চম্পা রায়চৌধুরীর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন


কবির সঙ্গে যোগাযোগ -

দূরভাষ - ৯১৩৩২৫৩৯৫৬৯২  

উত্স : কবি চম্পা রায়চৌধুরীর সঙ্গে ১১.১২.২০১১ তারিখে নেওয়া একটি সাক্ষাত্কার। মিলনসাগরের পক্ষে
সাক্ষাত্কারটি নিয়েছিলেন মানস গুপ্ত।


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     

...
কবি চম্পা রায়চৌধুরীর স্মৃতিচারণ ১৯৭৪ সালের রেল ধর্মঘটে . . .