কবি চন্দন ভট্টাচার্য্যর কবিতা ও ছড়া
অহংকার
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

পিছনের দরজা দিয়ে
            পালিয়ে যাওয়া অন্ধকার,
মিষ্টি-মধুর গাছে ছেঁড়া সবুজ রোদ,
আহত পাখির ডানায় ভড় করে
                স্বপ্ন হয়ে নামে –

ঘুমের কবিতায় আলগোছা ছোঁয়া
         দিয়ে গেল ব্যর্থ কবিরা,
শাসানো তর্জনি তুলে   
         নিস্ফল হুঙ্কার দিয়ে গেল
                সমাজপতিরা ;

কেউ ঠেকাতে পারল না –
আমার বেদ , আমার সৃষ্টি , আমার সাম্রাজ্য
গোলের ব্যপ্তি বিস্তার করে
      ঘিরে নিল গোটা জীবন –
                মন – প্রাণ ;

আধফোঁটা ভুলুন্ঠিত জুঁইফুল
      আমাকে শেখালো
           ঝরে পরার গান –

.                 ************
.                                                                                             
সূচী . . .    




মিলনসাগর
*.
সময় দেব তাকে
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

দাবানলের ক্রোধের শিখা -   
  বাতাস বাড়াক তাকে ,
বর্ষ-আলোক তারার কথা
   জোনাক্‌ ধরে রাখে ;
তীব্র জলের ঘূর্ণিপাতে
  দেয়না চোখে ধরা
কল্পনার ওই স্বয়ম্বরে
  আলোর মালা পরা  ;
শান্ত-গভীর সাগর জলে
  সময় থেমে থাকে ;
অনেক কথা বলে যারা
  অল্প কথার ফাঁকে –

সময় করে সময় নিয়ে  
  সময় দেব তাকে ।

.           ************
.                                                                                             
সূচী . . .    




মিলনসাগর
*.
শুক ও সারী
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

      বৃন্দাবনের পথে পথে বেড়ায় শুক ও সারী
      কৌতুক আর রঙ্গে করে ভক্তি মাধুকরী –
      দুরে বসে রাই আমাদের কুঞ্জবনের কাছে
      ভক্তি রসে কৃষ্ণ-বসে উষ্ণ হয়ে আছে ;
      রাধার কাতর আনন দেখে সারী বলে “শুক,
      তোর বাঁকা কালা নন্দলালা মহাজনের রুক -
      আসল মন লুকিয়ে ধন বাড়ায় প্রেমের সুদ্‌” ,
      শুক বলে – “কৃষ্ণ আমার অধরা বিদ্যুৎ ;
      তোর রাধা ধোপার গাধা পিঠে ভবের বোঝা,
     কৃষ্ণ ধনে মুক্ত মনে সহজে যায় খোঁজা।”
      সারী বলে, “বলিস না লো, সুখেই ছিলো রাই ,
      সাধলো আসি মোহন বাঁশী  ফুসলালো বড়াই –
      জটিলা কুটিলা আয়ান – বয়ান করি কত ?
      সব ছাড়ি তোর বদের ধাড়ি কেষ্ট প্রেমে রত –
      বার অঙ্গনা , সগঞ্জনা , বীরাঙ্গনা রাধা
      ভিতর বাহির সব ঘুচালো কানু হারামজাদা।

.                                 ************
.                                                                                             
সূচী . . .    




মিলনসাগর
*.
অমিত ও লাবণ্য
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য
                       
অতীতের সংজ্ঞাহারা
.        ছায়াপথ মায়াভরা
.                ডেকেছিল রাতে –
স্বপ্নের সৌধের পরে
.        আলোড়িত পথ ধরে
.                  সময়ের হাতে ।

ছিন্ন নিয়মের খেলা
.        ছিন্নকক্ষ গ্রহ তারা
.                 পতনের বেগে –

ভস্ম-নীল স্পর্শ ক্ষীণ
.        উল্কায় উত্তপ্ত দিন
.                 প্রেম ওঠে জেগে।

নিয়মের রীতি মেনে
.        একই পথ রাখে চিনে
.                 গ্রহ চন্দ্র তারা –
            
যা ছিল ব্যতিক্রম
.        বক্ষ পিষ্ট হর্ষ-রোম
.                বেদনার ধারা;
             
এনেছিলে পথ হতে
.        উদ্যম জীবনস্রোতে
.               মুক্ত প্রেম বাণী –
                
কালের দাবীর কাছে
.        সযত্নে গচ্ছিত আছে
.                মুহুর্ত ক’খানি।


.            ************

(বরোদায় ২০১১ সালের দুর্গাপূজায় আয়োজিত  শেষের কবিতা নৃত্যনাট্যে ব্যবহৃত।)

.                                                                                             সূচী . . .    




মিলনসাগর
*.