কবি চন্দন ভট্টাচার্য্যর কবিতা ও ছড়া
উলটো পুরাণ
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

শহিদ কিশোর    নবীন দোসর
ভারত মায়ের ছেলে -
তোমার আমার   সুখের তরে
মরল অবহেলে।
আজ বড়রা      দেশের যারা
সেবক হবার ছলে -
তাঁদের মালা     পরিয়ে গলায়
উল্টো পথে চলে।

.                 ************                 
.                                                                                             
সূচী . . .    

শ্রী ক্ষুদিরাম বোস ও শ্রী প্রফুল্ল চাকীর মুক্তিবেদিতলে প্রাণের অর্ঘদানের শতবর্ষ স্মরণে লেখা।
শ্রী প্রফুল্ল চাকী, জন্ম – ১০ই ডিসেম্বর, ১৮৮৮। ধরা না দিয়ে নিজের গুলিতে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ – ১লা মে ১৯০৮।
শ্রী ক্ষুদিরাম বোস, জন্ম – ৩রা ডিসেম্বর, ১৮৮৯। ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ – ১১ই অগাষ্ট ১৯০৮।


মিলনসাগর
*.
*.
মৃত্যুঞ্জয়
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

ছোট্ট ক্ষুদি       খুদের কুঁড়ায়
বিকোয় যাহার প্রাণ -
সেই প্রাণই যে     অবহেলায়
দেশকে করে দান।
ছিলো মহান     নির্ভীক তাঁর
সফল সতেজ মন -
দারুণ রাতে     রক্তে পিছল
পথকে আলিঙ্গন।
দেশকে যারা     ভালোবাসে
রাখতে দেশের মান -
হাসিমুখে       ফাঁসির কাঠে
প্রাণকে করে দান।

.                 ************                 
.                                                                                             
সূচী . . .    

শ্রী ক্ষুদিরাম বোস ও শ্রী প্রফুল্ল চাকীর মুক্তিবেদিতলে প্রাণের অর্ঘদানের শতবর্ষ স্মরণে লেখা।
শ্রী প্রফুল্ল চাকী, জন্ম – ১০ই ডিসেম্বর, ১৮৮৮। ধরা না দিয়ে নিজের গুলিতে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ – ১লা মে ১৯০৮।
শ্রী ক্ষুদিরাম বোস, জন্ম – ৩রা ডিসেম্বর, ১৮৮৯। ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ – ১১ই অগাষ্ট ১৯০৮।


মিলনসাগর
*.
সুনীল হারা
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

মায়ের মনটা বড্ড কঠিন
ভাসিয়ে সবে নয়ন জলে
বিসর্জনের আর্তি দোলে
দশমিতে গেলেন চলে –
ভাসিয়ে গেলেন সুনীল আকাশ
মন মাতানো সুনীল নদী,
সইত এসব দুঃখ তবু –
কবি সুনীল রইত যদি।

.      ************                 
.                                                                                
সূচী . . .    

কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রয়াণে দশমির সন্ধ্যায় কবি স্মরণে রচিত।


মিলনসাগর
*.
ঠাকুর থাকবি কতক্ষণ?
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

ঠাকুর ছিল জম্‌কালো,
.        দেখে সবাই চম্‌কালো -
.                হাল ফ্যাসানের প্রবল চাপে
.                        টি আর পি তাঁর খুব ভালো ;
দেড়শো বছর পার হল,
.        অমিত যতই ধমকালো -
.                নিবারণ তাঁর লেখা পড়েই
.                        বৈতরণী পার হল।
এখন কথায় ভাবগুলো
.        লেপ্‌তোষকে ঠাস্‌তুলো -
.                সুখের ভরে  গদির প’রে
.                        ব্যবসা ফাঁদায় মন দিলো।
ব্যক্তি পূজা খুব হল,
.        ভক্তি ভানের জাঁক জোলো -
.                একলা কেবল বিষ্ণু পূজে
.                        বলির দশার হাল হল।
তাই এ কথা প্রাঞ্জল -
.        ঠাকুর ঠিকই দেয় আলো,
.                রবির কিরণ ছুঁইয়ে কেবল
.                        অবুঝ মনে প্রাণ ঢালো।

.                    ************                 
.                                                                                
সূচী . . .    



মিলনসাগর
*.
অমিত চরিত
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

উল্টো গড়ন      উল্টো ধরন
উল্টো কথা বলি –
যুগের
Latest      ফ্যাসান মেনে
সাবধানেতে চলি ।
নকল করি      সাহেব ভাষা
ওদের কথা বলা -
বিলেত গেলে     বর্তে যাব,
শিখব মর্ডান কলা ।
ওদের মত      সুখে দেব
সিগারেটে টান,
লিপিস্টিকে     ঠোঁট রাঙিয়ে
পিয়ানোতে গান ।
ছেঁটে দেব     নাম আমাদের
কেতকিকে কেটি -
সিসি, লিসি      ইংলিসেতে
ম্যানারস্‌এটিকেট্‌ই
ঝাড়বে ওরা     
India-তে -
অম্ল-মধুর হাসি
ঠোঁট বেঁকিয়ে   ক্যাটের মত
চলতে ভালবাসি ।
যারা থাকে      নাম হাঁকিয়ে
গুন গাইব তার –
চক্ষু বুজে       করব মোরা
ওর
Quotation ধার ;
রবি ঠাকুর      বিশ্বকবি
নজরুল তার পরে –
রাখব মোরা    ওদের লেখা
Shelf ভরিয়ে ঘরে ।
যারা নতুন    নাম জানিনা
হতাশ কবির দল –
ব্যাঙ্গ করে    মুখ বেঁকিয়ে
তাদের কথা বল ।

অমিট রে রা   অন্য ধারা
ছাড়ল নতুন বাণী –
Loyalty    ঘুচবে এবার
কবির মেয়াদখানি ;
কবির লেখা   যাচাই হবে
সত্য নিরূপনে ,
ওদের লেখা   ভুললে তবেই
রাখবে ওদের মনে ।

.                    ************                 
.                                                                                
সূচী . . .    


বরোদায় ২০১১ সালের দুর্গাপূজায় আয়োজিত  শেষের কবিতা নৃত্যনাট্যে ব্যবহৃত

মিলনসাগর
*.
খাদ্য অন্বেষণ
কবি চন্দন ভট্টাচার্য্য

টুম্পা খাবে কাবুলি চানা   তাই কাবুলে চলি,
রিঙ্কা খাবে চাউমিন      যাই চিনের অলিগলি,
মোগলাই পরটা নিতে     মুঘল যূগে হানা –
রোমে গিয়ে পিৎজা নেব   এতো সবার জানা।

সেসব কথা শুনেই দেখি     টুম্পা ওঠে রেগে,
রিঙ্কা বলে –‘গুল মেরো না,  কামান দেব দেগে –
একটু গেলেই মোড়ের মাথায়  এ সব পাওয়া যায়।’
হেসে বলি –‘ও সব ভেজাল,  ও গুলো কেউ খায়?’

লক্ষবারের খোসামদে   আনতে হলাম রাজি-
রাস্তা থেকে এনে দিলাম  চিনে বাদাম ভাজি।
বলল ওরা –‘আনতে এটা যাওনি কেন চিনে?’
আমি বলি –‘দুঃখ পাবি  তাই আনলাম কিনে।’
শুনে বলে –‘চলবেনা আর   এই সব বুজরুকি’,
পালিয়ে এলাম বরোদা তাই  নিই কেন আর ঝুঁকি?

ওমা দেখি রিঙ্কা কখন       বড় হয়ে শেষে
গান্ধীধামের ধামে এসে      জুটলো অবশেষে।
বলি আমি –‘ধোকলা খাওয়া?’ রিঙ্কা বলে-‘মানে ?
উচ্ছের রস পান করে শখ   জুড়াও এখন প্রাণে।’
কি আর করি, শেষে আবার  টুম্পা যখন জোটে-
‘দাভেলি’ ওর হাভেলিতে     খেলাম আমি মোটে।

দুই বোন আজ গিন্নি ভাল    রান্না হরেক জানে –
সুযোগ পেলেই সে সব কথা   তুলি ওদের কানে।
যা’হোক এটা বুঝে গেছি    ভুলবে না আর ভবি,
সব কথা তাই লিখতে গিয়ে  হয়ে গেলাম কবি।
.                    ************                 
.                                                                                           
সূচী . . .    



মিলনসাগর