আয় না রে ভাই আপনি হাঁটি চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া।
. আয় না রে ভাই আপনি হাঁটি | . কেন পা থাকিতে নিবি লাঠি || দেশী জিনিস থাকতে কেন, . বিদেশীতে মন মজাও ভাই ; মোটা ভাত মোটা কাপড়ে, . চলে না কি মোটামুটি || বীটের চিনি কলের ময়দা, . কাজ কি রে আর খেয়ে তারে | আঁখের গুড় আর যাঁতার আটা, . খাব খানা পরিপাটী || ছেড়ে দেও মা কাঁচের চুড়ী, . শাঁখার কি আর অভাব দেশে | মুকুন্দের কথা ধর, . ভাই বোন সব হয়ে খাঁটী ||
ডাকবো কি শুনবে কে রে চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া।
ডাকবো কি শুনবে কে রে, . আছে কি কারো কান ? পাব কি এমন ছেলে, . যার দেশের লাগি কাঁদে প্রাণ || দেশ বিদেশে ঘুরে ঘুরে, . কত ভাবের গাইনু গান – সে গান শুনলে না কেউ, . বুঝলে না কেউ, . কোন্ সুরেতে ধরছি তান || আমরাই নাকি বিশ্বমাঝে, . বিশ্বপতির শ্রেষ্ঠ দান | আজ উপোস করে দিন কাটাচ্ছি, . থাকতে মোদের ক্ষেতে ধান || ভাব-সাগরে বইছে হাওয়া, . কাল-সাগরে ডাকছে বান | এখনো হাল ছেড়ে দে, ঢেউ কাটিয়ে, . পার হয়ে যাক্ তরীখান ||
মা মা বলে ডাক্ দেখি ভাই চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া।
মা মা বলে ডাক্ দেখি ভাই, . ডাক্ দেখি ভাই সবে রে | মা মা বলে কাঁদলে ছেলে, . মা কি পারে রইতে রে || জাগিবে জননী কুলকুণ্ডলিনী, . জাগিবে শক্তি জাগিবে রে, খুলে যাবে প্রাণ দিতে পারবি প্রাণ, . স্বদেশ কল্যাণ তবে রে || মায়ের শ্রীচরণ তরী ভরসা করি, . ভাসাও দেহ তরী রে | মা হবে কাণ্ডারী সুখে যাবে তরী, . ভয় কি অকূল পাথারে || দেখ্ ভারতবাসী ঐ এলোকেশী, . মায়ের হাতে অসি কেঁপেছে রে | এ মুকুন্দ কয় আর কারে ভয়, . জয় জয় ডঙ্কা বাজা রে ||
আমরা বিচার করে চলবো না চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া।
. আমরা বিচার করে চলবো না | মান অভিমান রাখবো না . ধনী কি দীন বাছবো না || আমরা মোদের ভাই চিনেছি . এখনো কি নেটিভ আছি--- ইউনিটি সার করেছি . কারেও কেউ ছাড়বো না || হিন্দু পার্শী জৈন সাঁই . মুচী ডোম মেথর কসাই— আমরা সকলেই এক মায়ের ছেলে . এই মহামন্ত্র ভুলবো না || পাগল সেজেই বলতে সোজা . তাই মুকুন্দের পাগল সাজা | ছাড়তে হবে জাতের বিচার . নইলে ভারত উঠবে না ||
হবে নামতে ধূলার তলে চারণকবি মুকুন্দদাস ডঃ জয়গুরু গোস্বামী সম্পাদিত “চারণকবি মুকুন্দদাস”, ১৯৭২ থেকে নেওয়া।
. হবে নামতে ধূলার তলে— পথে ঘাটে রৌদ্র মাঠে সবাই যেথায় চলে || অহঙ্কারে উচ্চাসনে বসে বসে আপন মনে, ভাবছিস্ বুঝি তোদের মতো নাইকো ত্রিভুবনে | এতে নিজেদের যে ছোট করে তুলছ প্রতিক্ষণে – যিনি রাজার রাজা তিনি বেড়ান, . ছোট বড় সবার দলে || তাঁরেই শুধু মানী জানি, . সবারে যে করবে মানী, এ নহে মান এ বেইমানী . ফেরা মানের খোঁজে | সবার চেয়ে কাঙ্গাল সেজে, . সে কি গো তা বুঝে | মানের গোড়ায় না দিলে ছাই--- . মান কি মিলে কথার ছলে ||