সদর দরোজার পাশে আমার বুকের মধ্যে তোমার বুক সজোরে চেপে ধরলে আমিও তোমার বুকের মধ্যে নষ্ট হলাম নষ্ট হলাম উথালপাথাল বুকের চাপে
এখন আমিও খুব সাদামাটা ভাবেই একটা নষ্ট মেয়ের গল্প বলতে পারি বলতেই পারি শিমুলপলাশ দেশের সেই মেয়েটির খথা যে কবিতা লিখতো আর নিষিদ্ধ রাজনীতি করা মানুষদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ সলিল চৌধিরী গাইতো
একবার এক ঘন আষাঢ়ের প্রথম দিনে মেয়েটির ঘরে মেঘদূত এলো বাষ্পশরীরে সারা আষাঢ় মাস ধরে মেঘদূত শুধু তোমার গাথা শোনালো তাকে ঘুমে জাগরণে
ভোরবেলায় বাগান পরিচর্যার ফুরসতে দুপুরে কালিদাস রচনাবলীর পাতায় সন্ধ্যায় কুয়োর জলে শুকতারার ছায়াতে গভীর রাতে ‘তব শয্যা যে কণ্টকশয্যা’য় শুধু তোমার কথা শোনালো মেঘদূত সরল অনুভূতি আর সহজ পদ্ধতিতে
কপালে তুমিও বদলাও পার্বণে উত্সবে বাকি জীবনচিত্র অপেক্ষা নিপাট নিখুঁত প্রগাঢ় জন্মমুহুর্ত থেকে বদলে যাই আমিও ঊষার চাদরে অথবা সায়াহ্নের পরিধানে নষ্ট প্রসাধনের ঘ্রাণ আর শরীরের বন্ধন বদলে বদলে অবশেষে নিঙড়ানো শাড়ি
শ্রীমতীর শাড়ি লুটোয় পায়ের তলায় ণৌন থাকে শিমুল-পলাশের করুণ ছায়া সামান্য তফাতেই আমার সোহাগের ঘর ঘরের মধ্যে অন্য ঘর শুধুই তোমার
তোমার ঘরে এখন সেই মেয়েটির ঘ্রাণ মাঝে মাঝে নীল চিঠি উষ্ণ প্রেমেরও অধিক ঘরের কোথাও কোনো বিরোধ বিচ্ছেদ নেই রঙের সঙ্গে রঙ মিলিয়ে শার্ট আর ব্লাউজ পুরুষটির গলার সঙ্গে গলা মিলিয়ে মেয়েটি আলস্যে গেয়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথ সলিল চৌধুরী
সাথী প্রিয় সহযোদ্ধা একদিন এই বাংলার মসৃণ পিঠ বেয়ে গোটা পৃথিবীর সমস্ত জনগণ আপনার ঘরে পৌঁছে যাবে। একদিন আপনার জন্মদিনে পৃথিবীর সব মানুষ, টিভি কভারেজ, নিউজ ম্যাগাজিন আর টাওয়ার থেকে টাওয়ারে পৌঁছে যাবে আপনারই হাত ধরে। মানুষ আজকে ভালোবাসতে ভুলে গেছে বড়। ভালোবাসতে ভুলে যাওয়া মানুষেরা আবার নতুন করে ভালোবাসতে শিখবে আপনার ফেলে আসা দিনগুলো ঘিরে। বিগত বছরগুলোতে আপনি অনেক দিয়েছেন মার্ক্সও দিয়েছিলেন --- কিন্তু এই সমস্ত জনগণকে আপনি কি ভাবে দেখবেন আপনার জন্মদিনে। এরা বেশির বাগই তো দিনান্তের যুটপাথের মতো ধুঁকতে থাকা মানুষ। এদের রবীন্দ্রনাথ নেই, নন্দন প্রাঙ্গণ নেই, মাল্টিপ্লেক্স নেই, একটি অতি সাধারণ মাটির চামচও নেই। পুরনো ঘূণধরা চেয়ারে এরা গা থেকে জামা খুলে রাখে আর জিজ্ঞাসিত জীবনের আঙুল ধরে পা টিপে টিপে ছ্যাতলানো কলঘরে যায়।
সহযোদ্ধ প্রিয় কমরেড। রোজ কবিতা পড়ুন আর জন্মদিনের কবিতা শোনান। কারণ কবিদের জন্মদিন পালন হয় যাপনে জড়ায়ে। কবিতার মধ্যে আপনি অন্ধকারের শব্দ শুনুন, নিস্তব্ধতার শব্দ শুনুন, বোবাকান্না আর বাতিল সম্পর্কের শব্দ শুনুন। এইসব শব্দ শুনতে শুনতে আপনি সতত পৌঁছে যাবেন সদ্যজাত পরিপূর্ণ শিশুদের কাছে, আপনার প্রিয় সহযোদ্ধাদের কাছে। শিশুরা ভারি জেদি আর অবুঝ হয়। কাঁদলে আপনাকেই সামলাতে হবে, চাইলে আপনাকেই দিতে হবে। যদিও এখন শিশুরা আর কাঁদে না, কিছু চায়ও না। হাত বাড়িয়ে কেড়ে নেয় শুধু এবং ওরাই আপনার জন্মদিনে পিঠে পিঠ রেখে, শব্দে শব্দ জুড়ে, গলায় গলা মেলায় --- হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ।
কমরেড প্রিয় সাথী, সেদিন ঐ সমস্ত শিশুদের মধ্যে থেকে মোটা লেন্সের আড়ালে আপনি ঠিক চিনে নেবেন আমার শান্ত অথচ দৃপ্ত বন্দিত সন্তানদের। আমার পুত্রকন্যাদের। আমার এক কন্যা কবিতা অন্যজন সংস্কৃতি। আমার পুত্রেরা ভাষা ও ভালোবাসা। আমার সাধ্যে যত্সামান্যে আমি ওদের লালন করি। প্রিয় মানুষ আপনার জন্মদিনের জ্বলন্ত মোমবাতিগুলোকে নিভিয়ে দিয়ে আপনি ওদের হাতে একটু পায়সান্ন দিন, নাথায় হাত রাখুন প্রত্যয়ের। দেখবেন --- আমার সন্তানেরা একদিন একরাশ রোদ্দুর মাখানো ঘাসে লালিত হতে হতে মুক্তপট এই সীমারেখা ধরে হেঁটে যাচ্ছে ঢের দীর্ঘপথ আপনারই প্রিয় জনগণকে পাশে নিয়ে আর মাতৃভাষায় শুভেচ্ছার গান গাইছে আপনারই জন্মদিনে।